"আইয়ুব খাঁনে'র পালায়ন"---মজিবরের "বঙ্গবন্ধু"উপাদি গ্রহন।
"আইয়ুব খাঁনে'র পালায়ন-- মুজিবরের "বঙ্গবন্ধু" উপাদি গ্রহন।
(রুহুল আমিন মজুমদার)
কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সাহেবের দুরদর্শী নেতৃত্বের গুনে প্রথম দিকে বাঙালী নেতারা মোহচ্ছন্ন থাকলেও অচিরেই তাঁদের মোহমুক্তি ঘটতে থাকে।সম্যক ভাবেই বাঙ্গালীরা অনুধাবন শুরু করেছিল--"এবারও ধর্মের নামে তাঁরা বড় ঠকাই ঠকেছে। ইংরেজ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে হাজার মাইল দুরের আর এক বিজাতীয় উপনিবেশের শাষন শোষনের নিগড়ে বাঙ্গালীরা আবদ্ধ হয়ে গেছে। এবার যাদের নিয়ন্ত্রনে শাষন শোষনের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেল দ্বি-জাতী তত্বের তকমায়--"তাঁদের সাথে না আছে ভাষার মিল না আছে সংস্কৃতী বা কৃষ্টির মিল।যদিও মসুলমান হয় কিন্তু খাওয়া দাওয়া,চলা ফেরা, আচার আচরন, স্বাস্থ্য চেহারা, পোষাক পরিচ্ছেদ ইত্যাদি সম্পুর্ণ আলাদা একজাতীর সাথে বাঙ্গালী জাতীকে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল।এই যেন ঘোড়া আর গাদায় এক ঘাটে বেঁধে হলেও জল খাওয়ানোর ব্যবস্থা।
সর্ব পাকিস্থান ভিত্তিক শাষকদল মুসলিম লীগের দলীয় কাঠামো পশ্চিম পাকিস্থানীদের সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রনে ছিল। তাঁদের নিয়ন্ত্রন থেকে বের করে পুর্ব-পশ্চিম উভয় অংশের দলে রুপান্তর করার কোন উপায়ও ছিলনা। সঙ্গত কারনে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ছাবি কাঠিও তাঁদের হাত ছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাও ছিলনা।সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে নিয়ে গেলেও পশ্চিমের নিকট ক্ষমতা থেকে যায়।কারন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে শতকরা নব্বই ভাগ কর্মকর্তা পশ্চিম পাকিস্থান থেকেই নেয়া হত। বাঙ্গালীরা অধিকতর খাটো জাতি হওয়ার কারনে ভর্তি প্রক্রিয়ার বেষ্টনী বেদ করে প্রশিক্ষন প্রক্রিয়ায় পৌঁছার কোন সুযোগ পেতনা। সঙ্গত কারনে নতুন স্বাধীন হওয়া দেশটির সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তাদের অংশ গ্রহনে পুর্বাঞ্চল অল্প কয়েক বছরের মধ্যে বহুগুন পিছিয়ে যায়।পুর্বাঞ্চল যতই পিছিয়ে যেতে থাকে ততই শোষনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পশ্চিমারা তাঁদের শহর সাজানোর মানষীকতায় প্রথম ১৫ বছরের মধ্যেই পাকিস্তানের তিনটি শহরে রাজধানী পরিবর্তন করে শহর কেন্দ্রিক বিনিয়োগের নামে সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডের বাজেট বরাদ্ধ প্রথম দদশকেই একক ভাবে নিয়ে যায়।
পুর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশনের জন্য বর্তমানের সংসদ এলাকায় জমি আধিগ্রহন করেও কোন উন্নয়ন বরাদ্ধ ২৩ বছরেও দেয়া হয়নি।অথছ কেন্দ্রীয় সরকারের রাজধানী তিন শহরে পরিবর্তন করে স্বল্প সময়ের মধ্যে উক্ত শহরে অধিবেশন কক্ষ নির্মানে টাকার অভাব হয়নি।এই থেকেই বুঝা যায়, আর ২৩ বছর সময় পেলে তাঁরা পুর্ব বাংলাকে শোষনের নিগড় থেকে বের হওয়ার কোন পথই খোলা রাখতেন না। এমন ভাবে রাষ্ট্রীয় কাঠামো সৃষ্টি করা হয়েছিল--"স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কোন প্রকার রাষ্ট্রীয় ঘোষনা ব্যাতিরেকে পুর্ব পাকিস্তানীরা দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরীকে রুপান্তর হতে থাকে। প্রকৃষ্ট উদাহরন একই দেশের নাগরীক হওয়া সত্বেও পুর্ব পাকিস্তানের নাগরীকেরা দলে দলে পশ্চিম পাকিস্তানী নাগরীকদের 'বাসার চাকর বাকর' হয়ে কোন রকমে জীবন যাপন করতে বাধ্য স্বেচ্ছায় বাধ্য হওয়া। এর চেয়ে বড় প্রমান আর কি হতে পারে?
গনতন্ত্র সেতো দুরের থাকুক ২৩ বছরের শাষন শোষন অব্যাহত রাখলেও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্যে একটি লিখিত সংবিধানও রচনা করা হয়নি বা রচনা করতে দেয়া হয়নি।একের পর এক সামরিক জান্তারা নীজেদের মধ্যে খমতার হাতবদল করতে থাকে। সামরিক বাহিনী কতৃক জারী করা অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে থাকে। ইংরেজেরা সাত সমুদ্র তের নদী দূর থেকে এসে ২০০ বছর শাষন শোষন করে বাঙ্গালীদের ছেড়ে গেছে ; কিন্তু তুলে দিয়ে গেছে ২০০০ মাইলের উপরে দুরত্ব থেকে আসা পাঠান পাঞ্জাবীদের হাতে। হিন্দু মুসলিম দুই জাতী সত্তার ভিত্তিতে যদিও পশ্চিমের হাতে তুলে দেন কিন্তু যিনি মুসলমানদের রক্ষার গুরুদায়িত্ব চক্রান্তের মাধ্যমে কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি নীজেই মুসলিম ছিলেন না। তিনি ছিলেন অগ্নি উপাসক তাঁর আবাস ছিল বর্তমান ভারত তখনকার সময়ের ভারতীয় উপমহাদেশে।
এ,কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সরোওয়ার্দীকে ভারতের দালাল এবং হিন্দুদের স্বার্থরক্ষাকারী আখ্যা দিয়ে জোরপুর্বক দেশত্যাগে বাধ্য করে চালাতে থাকে নির্ভেজাল শাষন শোষন। হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বিতাড়িত হয়ে প্রবাস জীবনে দেহত্যাগ করেন। বাংলার অবিসংবধিত নেতা হোসেন শহীদ সরওয়ার্দীর মৃত্যু হলে দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব পান শেখ মজিবুর রহমান। ততোদিনে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে পূর্ব পাকিস্তানে তাঁদের নিষ্পেষণের মাত্রা পুর্বের শাষনকে ছাড়িয়ে যায়। 'পূর্ব বাংলার' নাম পরিবর্তন করে করা হয় 'পুর্বপাকিস্তান'। অভিনব উপায় নতুন মাত্রায় বাঙ্গলীর শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির উপর আঘাত হানা শুরু করে।
আগেই বলেছি --হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর তার নেতৃত্বে গঠিত দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের দায়িত্ব বর্তালো তরুন নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের উপর। পাকিস্তান মুসলিম লীগ হতে বের হয়ে ততদিনে পালটা মুসলিম লীগ গঠন করা হয়।এই দলের নিরংকুস প্রাধান্য বজায় থাকে পুর্বাঞ্চলের বাঙ্গালী নেতাদের হাতের মুঠোয়। মওলানা ভাসানী সহ প্রগতিশীল ধারার আরও কতিপয় নেতার নেতৃত্বে মুসলিম লীগ থেকে বেরিয়ে আসা দলছুট নেতাদের দ্বারা গঠন করা হয় 'আওয়ামী মুসলিম লীগ'।জম্মলগ্নে দলটি দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে বিশেষ করে পাকিস্তানের পুর্বাঞ্চলে।শক্তির উৎস ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সাহসী ও অক্লান্ত পরিশ্রমি নেতা পরবর্তীর বাংলাদেশের 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'। ১৯৫৪ সালে জাতীয় নির্বাচন ঘোষিত হলে পুর্বাঞ্চলের সমমনা রাজনৈতিক দল মিলে গঠন করেন যুক্ত ফ্রন্ট।তৎকালিন পুর্বপাকিস্তানের প্রবীন নেতা শেরে বাঙলা এ,কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে সবাই জোটবদ্ধ হয়ে প্রাদেশিক যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে ৫৪ ইং সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে লড়েছিলেন। নির্বাচনে বিপুল ভোটে কল্পনাতীত জয় পেয়েছিল যুক্তফ্রন্ট। মুসলিম লীগের অবস্থা এমন পয্যায় নেমে এসেছিল যা পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা কল্পনাও করতে পারেনি তাঁদের ভাগ্যে এতবড় ধস নামানো পরাজয় ঘটবে। পূর্ববাংলা মুসলিম লীগের রাজনীতিকেই মুছে দিয়েছিল যুক্তফ্রন্ট।
সংবিধানহীন রাষ্ট্রে নির্বাচনে জীতেও লাভ হয়নি--"যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়নি কেন্দ্রীয়সরকার। সামরিক বাহিনীকতৃক রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারী রাষ্ট্রপতি এক ঘোষনা বলে যুক্তফ্রন্ট সরকার বাতিল করে দেয়।" বাঙ্গালীরা পুর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশীক সরকার গঠন করেও নীজেদের ভুখন্ড শাষন করার সুযোগ হয়নি। এরপরের ইতিহাস ষড়যন্ত্রের ইতিহাস- যখনি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, নির্বাচনের দাবী জোরালো হয়ে উঠেছে তখনি পাক ভারত সীমান্তে নাটকীয় উত্তেজনা সৃষ্ট্রির মাধ্যমে উক্ত দাবীকে নিমিষেই ধ্বংস করে দেয়া হত।
কাষ্মীর ভুখন্ডের দাবীকে কেন্দ্র করে ১৯৬৫ সালে ভারতের সঙ্গে ১৭ দিনের এক রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তান চরমভাবে পরাজিত হলে অসম্মানজনক তাসখন্দ যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধের সময়, পূর্ববঙ্গ ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত,এক ব্যাটেলিয়ন সৈন্যও পুর্বাঞ্চল আক্রান্ত হলে সাময়িক বাধার জন্য মোতায়েন করা হয়নি।পুর্বাঞ্চলের যুবকদের হাতে বাঁশের লাঠি দিয়ে পাহারায় নিয়োজিত রেখে সকল শক্তি পশ্চিমাঞ্চলে সমবেত করেও শেষ রক্ষা হয়নি। যুদ্ধে হেরে গিয়ে অসম তাস খন্দের চুক্তি করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। যুদ্ধকালে পূর্ববঙ্গ আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের জন্য এক ব্যাটেলিয়ন সেনাও মোতায়েন করা হয়নি।
ভারত পূর্ববঙ্গ আক্রমণের চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে সর্বশক্তি নিয়োগ করে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করাই শ্রেয় মনে করে। পুর্বাঞ্চলের সীমান্ত রেখায় ব্যাপক সৈন্য মোতায়েন রেখেও আক্রমন করেনি ভারত। তাঁদের রণকৌশল যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে প্রমান করেছে সঠিক ছিল। পাকিস্তানের মসুলমানদের সামান্য হিন্দুবাহিনীর নিকট চরম পরাজয় পুর্ব পাকিস্তানের জনগন মেনে নিতে পারেনি।তেজস্বি মুসলিম বাহিনীও এতে চরম অপমান বোধ করতে থাকে। পরাজয়, অপমান বাঙালিদের ক্ষুব্ধ করে তুলে। শেখ মুজিবুর রহমান মোক্ষম ক্ষোভের এই মহুর্তকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবিটি সামনে নিয়ে আসেন। তিনি ঘোষণা করেন ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি। সদ্য ঘটে যাওয়া যুদ্ধে পুর্বাঞ্চল অরক্ষিত ছিল যেমন সত্য তেমনি ভারত একটি গুলিও ব্যবহার করে অত্র অঞ্চল দখলে নেয়ার চিন্তা করেনি ইহাও সত্য। জনগনের ক্ষোভ দু:খ্যের সাথে শেখ মজিবুর রহমানের ছয় দফা স্বায়ত্ব শাষনের রুপরেখা হুবহু মিলে যায়। ছয় দফার দাবী ছিল পুর্ব পাকিস্তানের তৎসময়ের বাস্তবতার আলোকে জনগনের মনে পুষে রাখা অগ্নির বিস্পোরন। যে আগুন নেভানোর পানি পশ্চিমাদের ছিলনা।
সারা বাংলার মানুষ এই কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করতে থাকে। ততদিনে যুদ্ধব্যায় মিটানোর কারনে পুর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশের অর্থনৈতিক বৈষম্য তখন আকাশ চুঁই ছুঁই করছিল। পুর্বাঞ্চলের দ্রব্যমুল্য পশ্চিমের চাইতে কোন কোন ক্ষেত্রে দ্বিগুনের বেশিতে ঠেকে।বৈষম্যের মাত্রাবেড়ে চলেছিল প্রতিনিয়ত। দুরদর্শীনেতা সঙ্গে সঙ্গে দাবী উত্থাপন করে বসেন সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সংস্কারের নিমিত্তে ছয়দফা দাবী উত্থাপনের মাধ্যমে। এই দাবি আদায়ের আন্দোলনের তিব্রতা দিনের পর দিন প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠছিল প্রতিদিন প্রতিনিয়ত।
আহম্মক সামরীক জান্তা রাজনৈতিক দাবীকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা না করে মামলা মোকদ্দমার ফাঁদে ফেলে, দমন পীড়নের আশ্রয় নিয়ে--মোকাবেলা করার কৌশল অবলম্বন করে। পাকিস্তানী শাসকরা প্রথমেই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা আগিরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রুজু করে বঙ্গবন্ধুকে প্রধান আসামি করে।এতে হীতে আরো বিপরীত হয়।পুর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালীরা এই মামলাকে বাঙ্গালী জাতীকে আরো নিষ্পেষিত, কণ্ঠরোধ করে রাখার চক্রান্ত, অধিকারহীন, ষড়যন্ত্র অভিহীত করে ব্যাপক হারে আন্দোলনে সম্পৃত্ত হতে থাকে। ছাত্র সমাজ এই মামলার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে এক্যবদ্ধ হতে থাকে। তারা তাঁদের নিজস্ব ব্যানারে ৬ দফার আলোকে ঘোষণা করে ১১ দফা। তখন ছাত্র সমাজের উপর জনগনের আস্থা ছিল প্রশ্নাতীত। ছাত্র সমাজ আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার সাথে সাথে সারা বাঙলা থর থর করে কেঁপে উঠে। অসীম সাহস আর মনোবল নিয়ে জনগন সম্পৃত্ত হওয়ার কারনে একই সময়ের মধ্যে গর্জে উঠে সারা বাংলা।
সামরিক শাসক আইয়ুব খানের গদি টালমাটাল দিকভ্রান্ত,অকেজো হয়ে পড়ে। পূর্ববাংলায় গণআন্দোলন নিমীষেই গ্রাম, পাঁড়া মহল্লায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রচন্ড আন্দোলনের তীব্রতার ঢেউ পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনোইতিক মহলেও আছড়ে পড়ে। জনগনের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহনে সৃষ্ট গনজোয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই রুপান্তরীত হয়েছিল গণঅভ্যুত্থানে। সৃষ্ঠ গনঅভ্যুত্থানের মুখে আইয়ুব শাহী ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেলেন।
ruhulaminmujumder@gmail.com
(রুহুল আমিন মজুমদার)
কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সাহেবের দুরদর্শী নেতৃত্বের গুনে প্রথম দিকে বাঙালী নেতারা মোহচ্ছন্ন থাকলেও অচিরেই তাঁদের মোহমুক্তি ঘটতে থাকে।সম্যক ভাবেই বাঙ্গালীরা অনুধাবন শুরু করেছিল--"এবারও ধর্মের নামে তাঁরা বড় ঠকাই ঠকেছে। ইংরেজ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে হাজার মাইল দুরের আর এক বিজাতীয় উপনিবেশের শাষন শোষনের নিগড়ে বাঙ্গালীরা আবদ্ধ হয়ে গেছে। এবার যাদের নিয়ন্ত্রনে শাষন শোষনের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেল দ্বি-জাতী তত্বের তকমায়--"তাঁদের সাথে না আছে ভাষার মিল না আছে সংস্কৃতী বা কৃষ্টির মিল।যদিও মসুলমান হয় কিন্তু খাওয়া দাওয়া,চলা ফেরা, আচার আচরন, স্বাস্থ্য চেহারা, পোষাক পরিচ্ছেদ ইত্যাদি সম্পুর্ণ আলাদা একজাতীর সাথে বাঙ্গালী জাতীকে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল।এই যেন ঘোড়া আর গাদায় এক ঘাটে বেঁধে হলেও জল খাওয়ানোর ব্যবস্থা।
সর্ব পাকিস্থান ভিত্তিক শাষকদল মুসলিম লীগের দলীয় কাঠামো পশ্চিম পাকিস্থানীদের সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রনে ছিল। তাঁদের নিয়ন্ত্রন থেকে বের করে পুর্ব-পশ্চিম উভয় অংশের দলে রুপান্তর করার কোন উপায়ও ছিলনা। সঙ্গত কারনে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ছাবি কাঠিও তাঁদের হাত ছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাও ছিলনা।সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে নিয়ে গেলেও পশ্চিমের নিকট ক্ষমতা থেকে যায়।কারন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে শতকরা নব্বই ভাগ কর্মকর্তা পশ্চিম পাকিস্থান থেকেই নেয়া হত। বাঙ্গালীরা অধিকতর খাটো জাতি হওয়ার কারনে ভর্তি প্রক্রিয়ার বেষ্টনী বেদ করে প্রশিক্ষন প্রক্রিয়ায় পৌঁছার কোন সুযোগ পেতনা। সঙ্গত কারনে নতুন স্বাধীন হওয়া দেশটির সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তাদের অংশ গ্রহনে পুর্বাঞ্চল অল্প কয়েক বছরের মধ্যে বহুগুন পিছিয়ে যায়।পুর্বাঞ্চল যতই পিছিয়ে যেতে থাকে ততই শোষনের মাত্রা বাড়তে থাকে। পশ্চিমারা তাঁদের শহর সাজানোর মানষীকতায় প্রথম ১৫ বছরের মধ্যেই পাকিস্তানের তিনটি শহরে রাজধানী পরিবর্তন করে শহর কেন্দ্রিক বিনিয়োগের নামে সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডের বাজেট বরাদ্ধ প্রথম দদশকেই একক ভাবে নিয়ে যায়।
পুর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশনের জন্য বর্তমানের সংসদ এলাকায় জমি আধিগ্রহন করেও কোন উন্নয়ন বরাদ্ধ ২৩ বছরেও দেয়া হয়নি।অথছ কেন্দ্রীয় সরকারের রাজধানী তিন শহরে পরিবর্তন করে স্বল্প সময়ের মধ্যে উক্ত শহরে অধিবেশন কক্ষ নির্মানে টাকার অভাব হয়নি।এই থেকেই বুঝা যায়, আর ২৩ বছর সময় পেলে তাঁরা পুর্ব বাংলাকে শোষনের নিগড় থেকে বের হওয়ার কোন পথই খোলা রাখতেন না। এমন ভাবে রাষ্ট্রীয় কাঠামো সৃষ্টি করা হয়েছিল--"স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কোন প্রকার রাষ্ট্রীয় ঘোষনা ব্যাতিরেকে পুর্ব পাকিস্তানীরা দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরীকে রুপান্তর হতে থাকে। প্রকৃষ্ট উদাহরন একই দেশের নাগরীক হওয়া সত্বেও পুর্ব পাকিস্তানের নাগরীকেরা দলে দলে পশ্চিম পাকিস্তানী নাগরীকদের 'বাসার চাকর বাকর' হয়ে কোন রকমে জীবন যাপন করতে বাধ্য স্বেচ্ছায় বাধ্য হওয়া। এর চেয়ে বড় প্রমান আর কি হতে পারে?
গনতন্ত্র সেতো দুরের থাকুক ২৩ বছরের শাষন শোষন অব্যাহত রাখলেও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্যে একটি লিখিত সংবিধানও রচনা করা হয়নি বা রচনা করতে দেয়া হয়নি।একের পর এক সামরিক জান্তারা নীজেদের মধ্যে খমতার হাতবদল করতে থাকে। সামরিক বাহিনী কতৃক জারী করা অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে থাকে। ইংরেজেরা সাত সমুদ্র তের নদী দূর থেকে এসে ২০০ বছর শাষন শোষন করে বাঙ্গালীদের ছেড়ে গেছে ; কিন্তু তুলে দিয়ে গেছে ২০০০ মাইলের উপরে দুরত্ব থেকে আসা পাঠান পাঞ্জাবীদের হাতে। হিন্দু মুসলিম দুই জাতী সত্তার ভিত্তিতে যদিও পশ্চিমের হাতে তুলে দেন কিন্তু যিনি মুসলমানদের রক্ষার গুরুদায়িত্ব চক্রান্তের মাধ্যমে কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি নীজেই মুসলিম ছিলেন না। তিনি ছিলেন অগ্নি উপাসক তাঁর আবাস ছিল বর্তমান ভারত তখনকার সময়ের ভারতীয় উপমহাদেশে।
এ,কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সরোওয়ার্দীকে ভারতের দালাল এবং হিন্দুদের স্বার্থরক্ষাকারী আখ্যা দিয়ে জোরপুর্বক দেশত্যাগে বাধ্য করে চালাতে থাকে নির্ভেজাল শাষন শোষন। হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বিতাড়িত হয়ে প্রবাস জীবনে দেহত্যাগ করেন। বাংলার অবিসংবধিত নেতা হোসেন শহীদ সরওয়ার্দীর মৃত্যু হলে দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব পান শেখ মজিবুর রহমান। ততোদিনে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে পূর্ব পাকিস্তানে তাঁদের নিষ্পেষণের মাত্রা পুর্বের শাষনকে ছাড়িয়ে যায়। 'পূর্ব বাংলার' নাম পরিবর্তন করে করা হয় 'পুর্বপাকিস্তান'। অভিনব উপায় নতুন মাত্রায় বাঙ্গলীর শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির উপর আঘাত হানা শুরু করে।
আগেই বলেছি --হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর তার নেতৃত্বে গঠিত দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের দায়িত্ব বর্তালো তরুন নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের উপর। পাকিস্তান মুসলিম লীগ হতে বের হয়ে ততদিনে পালটা মুসলিম লীগ গঠন করা হয়।এই দলের নিরংকুস প্রাধান্য বজায় থাকে পুর্বাঞ্চলের বাঙ্গালী নেতাদের হাতের মুঠোয়। মওলানা ভাসানী সহ প্রগতিশীল ধারার আরও কতিপয় নেতার নেতৃত্বে মুসলিম লীগ থেকে বেরিয়ে আসা দলছুট নেতাদের দ্বারা গঠন করা হয় 'আওয়ামী মুসলিম লীগ'।জম্মলগ্নে দলটি দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে বিশেষ করে পাকিস্তানের পুর্বাঞ্চলে।শক্তির উৎস ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সাহসী ও অক্লান্ত পরিশ্রমি নেতা পরবর্তীর বাংলাদেশের 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'। ১৯৫৪ সালে জাতীয় নির্বাচন ঘোষিত হলে পুর্বাঞ্চলের সমমনা রাজনৈতিক দল মিলে গঠন করেন যুক্ত ফ্রন্ট।তৎকালিন পুর্বপাকিস্তানের প্রবীন নেতা শেরে বাঙলা এ,কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে সবাই জোটবদ্ধ হয়ে প্রাদেশিক যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে ৫৪ ইং সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে লড়েছিলেন। নির্বাচনে বিপুল ভোটে কল্পনাতীত জয় পেয়েছিল যুক্তফ্রন্ট। মুসলিম লীগের অবস্থা এমন পয্যায় নেমে এসেছিল যা পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা কল্পনাও করতে পারেনি তাঁদের ভাগ্যে এতবড় ধস নামানো পরাজয় ঘটবে। পূর্ববাংলা মুসলিম লীগের রাজনীতিকেই মুছে দিয়েছিল যুক্তফ্রন্ট।
সংবিধানহীন রাষ্ট্রে নির্বাচনে জীতেও লাভ হয়নি--"যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়নি কেন্দ্রীয়সরকার। সামরিক বাহিনীকতৃক রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারী রাষ্ট্রপতি এক ঘোষনা বলে যুক্তফ্রন্ট সরকার বাতিল করে দেয়।" বাঙ্গালীরা পুর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশীক সরকার গঠন করেও নীজেদের ভুখন্ড শাষন করার সুযোগ হয়নি। এরপরের ইতিহাস ষড়যন্ত্রের ইতিহাস- যখনি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, নির্বাচনের দাবী জোরালো হয়ে উঠেছে তখনি পাক ভারত সীমান্তে নাটকীয় উত্তেজনা সৃষ্ট্রির মাধ্যমে উক্ত দাবীকে নিমিষেই ধ্বংস করে দেয়া হত।
কাষ্মীর ভুখন্ডের দাবীকে কেন্দ্র করে ১৯৬৫ সালে ভারতের সঙ্গে ১৭ দিনের এক রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তান চরমভাবে পরাজিত হলে অসম্মানজনক তাসখন্দ যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধের সময়, পূর্ববঙ্গ ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত,এক ব্যাটেলিয়ন সৈন্যও পুর্বাঞ্চল আক্রান্ত হলে সাময়িক বাধার জন্য মোতায়েন করা হয়নি।পুর্বাঞ্চলের যুবকদের হাতে বাঁশের লাঠি দিয়ে পাহারায় নিয়োজিত রেখে সকল শক্তি পশ্চিমাঞ্চলে সমবেত করেও শেষ রক্ষা হয়নি। যুদ্ধে হেরে গিয়ে অসম তাস খন্দের চুক্তি করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। যুদ্ধকালে পূর্ববঙ্গ আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের জন্য এক ব্যাটেলিয়ন সেনাও মোতায়েন করা হয়নি।
ভারত পূর্ববঙ্গ আক্রমণের চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে সর্বশক্তি নিয়োগ করে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করাই শ্রেয় মনে করে। পুর্বাঞ্চলের সীমান্ত রেখায় ব্যাপক সৈন্য মোতায়েন রেখেও আক্রমন করেনি ভারত। তাঁদের রণকৌশল যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে প্রমান করেছে সঠিক ছিল। পাকিস্তানের মসুলমানদের সামান্য হিন্দুবাহিনীর নিকট চরম পরাজয় পুর্ব পাকিস্তানের জনগন মেনে নিতে পারেনি।তেজস্বি মুসলিম বাহিনীও এতে চরম অপমান বোধ করতে থাকে। পরাজয়, অপমান বাঙালিদের ক্ষুব্ধ করে তুলে। শেখ মুজিবুর রহমান মোক্ষম ক্ষোভের এই মহুর্তকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবিটি সামনে নিয়ে আসেন। তিনি ঘোষণা করেন ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি। সদ্য ঘটে যাওয়া যুদ্ধে পুর্বাঞ্চল অরক্ষিত ছিল যেমন সত্য তেমনি ভারত একটি গুলিও ব্যবহার করে অত্র অঞ্চল দখলে নেয়ার চিন্তা করেনি ইহাও সত্য। জনগনের ক্ষোভ দু:খ্যের সাথে শেখ মজিবুর রহমানের ছয় দফা স্বায়ত্ব শাষনের রুপরেখা হুবহু মিলে যায়। ছয় দফার দাবী ছিল পুর্ব পাকিস্তানের তৎসময়ের বাস্তবতার আলোকে জনগনের মনে পুষে রাখা অগ্নির বিস্পোরন। যে আগুন নেভানোর পানি পশ্চিমাদের ছিলনা।
সারা বাংলার মানুষ এই কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করতে থাকে। ততদিনে যুদ্ধব্যায় মিটানোর কারনে পুর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশের অর্থনৈতিক বৈষম্য তখন আকাশ চুঁই ছুঁই করছিল। পুর্বাঞ্চলের দ্রব্যমুল্য পশ্চিমের চাইতে কোন কোন ক্ষেত্রে দ্বিগুনের বেশিতে ঠেকে।বৈষম্যের মাত্রাবেড়ে চলেছিল প্রতিনিয়ত। দুরদর্শীনেতা সঙ্গে সঙ্গে দাবী উত্থাপন করে বসেন সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সংস্কারের নিমিত্তে ছয়দফা দাবী উত্থাপনের মাধ্যমে। এই দাবি আদায়ের আন্দোলনের তিব্রতা দিনের পর দিন প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠছিল প্রতিদিন প্রতিনিয়ত।
আহম্মক সামরীক জান্তা রাজনৈতিক দাবীকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা না করে মামলা মোকদ্দমার ফাঁদে ফেলে, দমন পীড়নের আশ্রয় নিয়ে--মোকাবেলা করার কৌশল অবলম্বন করে। পাকিস্তানী শাসকরা প্রথমেই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা আগিরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রুজু করে বঙ্গবন্ধুকে প্রধান আসামি করে।এতে হীতে আরো বিপরীত হয়।পুর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালীরা এই মামলাকে বাঙ্গালী জাতীকে আরো নিষ্পেষিত, কণ্ঠরোধ করে রাখার চক্রান্ত, অধিকারহীন, ষড়যন্ত্র অভিহীত করে ব্যাপক হারে আন্দোলনে সম্পৃত্ত হতে থাকে। ছাত্র সমাজ এই মামলার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে এক্যবদ্ধ হতে থাকে। তারা তাঁদের নিজস্ব ব্যানারে ৬ দফার আলোকে ঘোষণা করে ১১ দফা। তখন ছাত্র সমাজের উপর জনগনের আস্থা ছিল প্রশ্নাতীত। ছাত্র সমাজ আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার সাথে সাথে সারা বাঙলা থর থর করে কেঁপে উঠে। অসীম সাহস আর মনোবল নিয়ে জনগন সম্পৃত্ত হওয়ার কারনে একই সময়ের মধ্যে গর্জে উঠে সারা বাংলা।
সামরিক শাসক আইয়ুব খানের গদি টালমাটাল দিকভ্রান্ত,অকেজো হয়ে পড়ে। পূর্ববাংলায় গণআন্দোলন নিমীষেই গ্রাম, পাঁড়া মহল্লায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রচন্ড আন্দোলনের তীব্রতার ঢেউ পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনোইতিক মহলেও আছড়ে পড়ে। জনগনের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহনে সৃষ্ট গনজোয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই রুপান্তরীত হয়েছিল গণঅভ্যুত্থানে। সৃষ্ঠ গনঅভ্যুত্থানের মুখে আইয়ুব শাহী ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেলেন।
ruhulaminmujumder@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন