মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাঙ্গালী আপ্যায়নে বিএনপি উৎফুল্ল---"আওয়ামী লীগের ক্ষমতার মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল

  মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাঙ্গালী আপ্যায়নে বিএনপি উৎফুল্ল---আওয়ামীলীগের ক্ষমতার মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল।
      (রুহুল  আমিন  মজুমদার)

           অবশেষে বিএনপি তাঁর উধ্বতন নেতাদের নিয়ে আওয়ামীলীগের মনোনীত জাতীয় সংসদ কতৃক নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির নিকট আত্মসমপর্পন করে এলেন। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে উৎফুল্ল চিত্তে প্রসংশা করে বলেছেন--"সংকট নিরসনে তাঁরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন"।
       মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাঁর স্বভাবসূলভ আচরনে এবং বাঙ্গালী ঐতিহ্যবাহি আতিথীয়তায় কোনরুপ কার্পন্য করেছেন বলে মনে হয়না।তদ্রুপ যদি কোন ব্যত্যায়ের ছিদ্র রাখতেন স্বভাবতই বিএনপি তাঁর অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা পরিহার করে খুশিমনে সংকট দুরিকরনে আশার আলো না খুঁজে হতাশার সুরেই বলতেন--"অবৈধ সরকারের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি অবৈধ বাক্যালাপ ছাড়া আর কি-ই- বা করতে পারবেন"।
     আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের কথাই বলবে--"আমরা আগে যাহা চিন্তা করেছিলাম তাই হয়েছে।"সুতারাং আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে জনগনের গনতান্ত্রিক সরকার 'আমাদের' কে ক্ষমতায় নিতে হবে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে 'তত্ববধায়ক' সরকারের নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে "লাথি, গুতায়'' ক্ষমতা পরিত্যাগের নীতি বাস্তবায়ন করব ইনশাল্লাহ। জনগন এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক দলসমুহকে শতব্যস্ততার মাঝে কষ্ট না দিয়ে সাংবিধানীক ধারা অনুসরন না করে "পছন্দ সই" নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেব। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তড়িৎকর্মাহেতু তাঁকেই "তত্বাবধায়ক" প্রধান করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করব। যেহেতু উল্লেখিত বিবৃতি বিএনপি দেয়নি সুতারাং ধরেই নেয়া যায়---"রাষ্ট্রপতির আচরণ এবং আপ্যায়ন দুটোই ভাল হয়েছে।"
     প্রিয় পাঠক বন্ধুরা--আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণে আছে--" বিএনপি অবৈধ ভোটহীন সরকারের বিরুদ্ধে গন আন্দোলন গড়ে তোলার একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজপথে আসেনি।" জনগনের চিরায়াত আন্দোলন, সংগ্রাম, হরতাল, অবরোধের হাতিয়ারকে নাশকতার আবরনে ভেঁতু করে আগামী প্রজম্মের ন্যায্য  অধিকার আদায়ে কঠিন প্রতিবন্ধকতার দেয়াল তুলে দিয়েছেন।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমতের সত্যতা পাওয়া যায়--"বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে  রাষ্ট্রপতির সাথে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে আলোচনা করার জন্য তাঁর নিকট ধর্ণা দেয়ার মধ্যে।"
     রাজনৈতিক সচেতন মহল অবগত আছেন-- বিগত সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রশ্নে চার্চকমিটি গঠনের সুনির্দিষ্ট নীতি সংবিধানে সংযোজন করেছে বর্তমান সরকার।বিএনপি এবং অন্যান্ন রাজনৈতিক দল বিষয়টি অবগত নয়- ইহা বিশ্বাস করার কোন কারন নেই।মহামান্য রাষ্ট্রপতিও তাঁদেরকে সংবিধানের বর্নিত বিষয়ের আলোকে কমিশন গঠনের সুস্পষ্ট ধারনাই দিয়েছেন।কারন রাষ্ট্রপতি সংবিধানের রক্ষক---"সংবিধানের বাইরে তিনি কোন আলোচনা করতে পারেননা।"
             বিএনপি প্রতিনীধিদল সংবিধানে উক্তরুপ বিধান সংযোজনের কৃতিত্বের সাধুবাদ বর্তমান "সংসদ এবং তাঁর নেত্রী শেখ হাসিনা"কে না দিয়ে তাঁদের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে দিতে গেলেন কেন? তাঁর সাথে আলোচনার পর খুশী হওয়ার মধ্যে বেসুমার রাজনৈতিক লাভালাভের প্রশ্ন জড়িত রয়েছে বিধায় তাঁকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারেন না।
        এই 'কেন এবং লাভালাভের' বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে আমার আজকের নিবন্ধটির অবতারনা--আমি আগেও বহুবার বলেছি-" বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে যাদুঘরের পথে রওয়ানা হয়েছে।" বিগত ১৪/১৫ সালের নাশকতামূলক আন্দোলনে জড়িত হয়ে দলটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার বাকী নেই।দলের উধ্বতন নেতাদের মধ্যে হতাশা ভর করেছে।স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য ইতিমধ্যে নির্বাচিত হওয়ার পর পর পদত্যাগ করে কথাটির সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।প্রতিষ্ঠাকালীন ষড়যন্ত্রের জাল চিহ্ন করে আদৌ দলটি গনতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসতে পারেনি।দলের অভ্যন্তরে নুন্যন্নতম গনতন্ত্রের চর্চার অভ্যেস গড়ে উঠেনি।দেশব্যাপি লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর বিচরন থাকা সত্বেও  নেতৃত্বের সঠিক নির্দেশনার অভাবে আন্দোলন সংগ্রাম, নির্বাচনে অংশগ্রহন, দেশ, জনগন, দলের জন্যে কোন অবদান কেউ রাখার সুযোগ পাচ্ছেনা। জেলা পরিষদ নির্বাচন বয়কট করে "নাসিক" নির্বাচনে অংশ নিয়ে সর্বশেষ সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছে বর্তমান সরকারের গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় কোন প্রকার ছিদ্র নেই--"আছে শুধুমাত্র  আমাদের অপারগতা, সাংগঠনিক দুর্বলতা, নেতৃত্বের দুর্বলতা।"
                 বিশ্বের দেশে দেশে এবং কি বাংলাদেশেও অতীতে কখনই দেখা যায়নি রাজনৈতিক ইস্যুনিয়ে--"আন্দোলন, সংগ্রাম ব্যাতিরেকে উক্ত ইস্যুর কায্যকর কোন সমাধান হয়েছে।"আলোচনার টেবিলে সমাধান হয় ঠিক তখনি--আন্দোলনের ধাক্কায় বাধ্য হয়ে সরকার যখন আহব্বান করে। বাধ্য হওয়া ব্যাতিরেকে কোন সরকার যুক্তিসঙ্গত দাবি মেনে নেয়ার উদাহরণ আদৌ কোন দেশে সৃষ্টি হয়নি--ভবিষ্যতেও হবেনা।
       বিএনপি নির্বাচন কমিশন সংস্কারের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপনের মাসখানেকের মধ্যেই কেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রয়োজন অনুভব করেছে ? রাষ্ট্রপতি তাঁদেরকে ডেকেছেন--? বিএনপি সংস্কারের পক্ষে দেশের জনগনের সমর্থন আছে কি নেই মতামত নিয়েছেন--? মতামত নেয়ার প্রয়োজনে  সভা, সমাবেশ, মিটিং, আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন? দেশের বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি, ব্যবসায়ী, ছাত্রসমাজ, রাজনৈতিক দল, ব্যাক্তি, সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের যৌক্তিকতা প্রমানে সচেষ্ট হয়েছেন ? মুলত: এই সমস্ত রাজনৈতিক ধারাবাহিকতার তাঁদের এখন আর আদৌ কোন প্রয়োজন নেই---

        কারন---বিএনপি নাশকতার মাধ্যমে রাজপথের অধিকার হারিয়ে চারদেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে গেছে।চারদেয়ালের গন্ডি ভেদ করে রাজপথে আসার যুৎসই কোন কারন খুঁজে পাচ্ছেনা।তাঁরা সরকারের সর্ব উচ্চ পয্যায় আলোচনা করে নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায়; তাঁদের দ্বারা ভবিষ্যতে নাশকতা, ষড়যন্ত্র, বহি:শক্তির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের আর কোন প্রকার কারন সৃষ্টি হবেনা।এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনা-সৃষ্টির প্রধানহেতু বেগম খালেদাকেও রাষ্ট্রপতির নিকট নেয়া হয়েছে। সঙ্গত কারনেই কথাটা বলতে হচ্ছে এই কারনে-- "আলোচনার প্রাথমিক পয্যায় শীর্ষ নেতার অংশগ্রহনে অতীতে কোন দেশেই এইরুপ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি--"বাংলাদেশে তো নহে-ই।"
           সুপ্রিয় পাঠকগন --লক্ষ করলে অনায়াসে বুঝা যায় বিএনপি নেত্রী "বারবার" কথাটি উচ্চারন করেছেন-- -" সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে "বারবার অনির্দিষ্টকাল" আলোচনায় অংশগ্রহন করার ইচ্ছা প্রকাশ" করেছেন।অর্থ্যাৎ--'সরকারের মেয়াদ উত্তির্ন হলেও কোন সমস্যা এক্ষেত্রে হবেনা'।যতদিন রাজপথে আসার সুযোগ হবেনা ততদিন শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনা করার সুযোগ দিতেও কোন  আপত্তি নেই।"
      সরকার বিরুধীদলের অভাব তিব্রভাবে অনুভব করছে।জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর স্থগিত তাই প্রমান করে।শক্তিশালী বিরুদীদলের অভাবে তিস্তাচুক্তি সম্পাদনে ভারতকে যুৎসই চাপ প্রয়োগ করে চুক্তি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে না পেরে--"সফর স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন"। বাংলাদেশের জনগনের স্বতস্ফুর্ত দাবী এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজন ছিল কিন্তু জনস্বার্থে কোন রাজনৈতিক দল দাবী উত্থাপন না করায় ভারত তিস্তাচুক্তির ব্যাপারে বরাবর গড়িমসির আশ্রয়গ্রহন করে সময়ক্ষেপনের নীতি অনুসরন করছে।জাতির জনকের কন্যার অসীম সাহষ, দৃডমনোবল এক্ষেত্রেও তাঁদের  জন্যে বড় বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে।বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী জানতে চেয়েছেন তিস্তার ব্যাপারটি কতটুকু অগ্রসর হয়েছে--"যথাযথ উত্তর না পেয়ে একতরফা সফর স্থগিত করে প্রমান করেছেন বাংলাদেশের স্বার্থের বাইরে শেখ হাসিনা পরম বন্ধুরাষ্ট্রকেও ছাড় দিতে রাজী নন।" এক্ষেত্রে একদিকে বিদ্যমান "বিরুধীদলের ভুমিকা পালন অন্যদিকে সরকারের নিয়মিত কর্মতৎপরতা" দুই ভুমিকায় "শেখ হাসিনাকে" অবতীর্ন্ন হতে দেখা যাচ্ছে।
          বিএনপির উধ্বতন নেতানেত্রীদের আওয়ামী লীগে যোগদানের চতুর্দিকে হিড়িক পড়ে গেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে শংকায় পড়েন। বিদেশ সফর শেষে বিমানবন্দর থেকেই নির্দেশনা জারি করেন--"বিএনপি জামায়াতের কোন নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করতে পারবে--না"। যোগদান প্রশ্নে তাঁর  কঠোর নিষেদাজ্ঞা আরোপ যথারীতি জেলা উপজেলায় কায্যকর করার জন্যে চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়।বিএনপি অস্তিত্ব সংকট থেকে সেই যাত্রা রক্ষা পায়। এবারও সদাশয় "মহামান্য রাষ্ট্রপতি" বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকার প্রয়োজনে "না চাইতেই বৃষ্টি" মনে হলেও সেই কায্যকর সুযোগটি দিয়েছেন----'' এখানেই বিএনপি খুশী"।
        আন্দোলন, সংগ্রাম, সরকারপতন, ক্ষমতাদখল, নির্বাচন, সংস্কার তত্বাবধায়ক সরকার,  জনগনের কল্যান  ইত্যাদি বর্তমান বিএনপির  মুল বিষয় বস্তু নয় ; মূল বিষয়বস্তু-" বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্নে যাহাই প্রয়োজন তাহাই করা।"পত্র- পত্রিকায়, সুসীলসমাজের, বরেন্যব্যাক্তিদের আলোচনার টেবিলে থাকার আপ্রান চেষ্টার ফসল--" রাষ্ট্রপতির আপ্যায়নে যারপরনাই খুশির ভাব প্রদর্শন।"
          ruhulaminmujumder27@gmail.com
            "জয়বাংলা            জয়বঙ্গবন্ধু"
       

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন