মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাঙ্গালী আপ্যায়নে বিএনপি উৎফুল্ল---"আওয়ামী লীগের ক্ষমতার মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল
মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাঙ্গালী আপ্যায়নে বিএনপি উৎফুল্ল---আওয়ামীলীগের ক্ষমতার মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল।
(রুহুল আমিন মজুমদার)
অবশেষে বিএনপি তাঁর উধ্বতন নেতাদের নিয়ে আওয়ামীলীগের মনোনীত জাতীয় সংসদ কতৃক নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির নিকট আত্মসমপর্পন করে এলেন। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে উৎফুল্ল চিত্তে প্রসংশা করে বলেছেন--"সংকট নিরসনে তাঁরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন"।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাঁর স্বভাবসূলভ আচরনে এবং বাঙ্গালী ঐতিহ্যবাহি আতিথীয়তায় কোনরুপ কার্পন্য করেছেন বলে মনে হয়না।তদ্রুপ যদি কোন ব্যত্যায়ের ছিদ্র রাখতেন স্বভাবতই বিএনপি তাঁর অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা পরিহার করে খুশিমনে সংকট দুরিকরনে আশার আলো না খুঁজে হতাশার সুরেই বলতেন--"অবৈধ সরকারের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি অবৈধ বাক্যালাপ ছাড়া আর কি-ই- বা করতে পারবেন"।
আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের কথাই বলবে--"আমরা আগে যাহা চিন্তা করেছিলাম তাই হয়েছে।"সুতারাং আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে জনগনের গনতান্ত্রিক সরকার 'আমাদের' কে ক্ষমতায় নিতে হবে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে 'তত্ববধায়ক' সরকারের নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে "লাথি, গুতায়'' ক্ষমতা পরিত্যাগের নীতি বাস্তবায়ন করব ইনশাল্লাহ। জনগন এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক দলসমুহকে শতব্যস্ততার মাঝে কষ্ট না দিয়ে সাংবিধানীক ধারা অনুসরন না করে "পছন্দ সই" নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেব। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তড়িৎকর্মাহেতু তাঁকেই "তত্বাবধায়ক" প্রধান করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করব। যেহেতু উল্লেখিত বিবৃতি বিএনপি দেয়নি সুতারাং ধরেই নেয়া যায়---"রাষ্ট্রপতির আচরণ এবং আপ্যায়ন দুটোই ভাল হয়েছে।"
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা--আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণে আছে--" বিএনপি অবৈধ ভোটহীন সরকারের বিরুদ্ধে গন আন্দোলন গড়ে তোলার একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজপথে আসেনি।" জনগনের চিরায়াত আন্দোলন, সংগ্রাম, হরতাল, অবরোধের হাতিয়ারকে নাশকতার আবরনে ভেঁতু করে আগামী প্রজম্মের ন্যায্য অধিকার আদায়ে কঠিন প্রতিবন্ধকতার দেয়াল তুলে দিয়েছেন।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমতের সত্যতা পাওয়া যায়--"বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির সাথে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে আলোচনা করার জন্য তাঁর নিকট ধর্ণা দেয়ার মধ্যে।"
রাজনৈতিক সচেতন মহল অবগত আছেন-- বিগত সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রশ্নে চার্চকমিটি গঠনের সুনির্দিষ্ট নীতি সংবিধানে সংযোজন করেছে বর্তমান সরকার।বিএনপি এবং অন্যান্ন রাজনৈতিক দল বিষয়টি অবগত নয়- ইহা বিশ্বাস করার কোন কারন নেই।মহামান্য রাষ্ট্রপতিও তাঁদেরকে সংবিধানের বর্নিত বিষয়ের আলোকে কমিশন গঠনের সুস্পষ্ট ধারনাই দিয়েছেন।কারন রাষ্ট্রপতি সংবিধানের রক্ষক---"সংবিধানের বাইরে তিনি কোন আলোচনা করতে পারেননা।"
বিএনপি প্রতিনীধিদল সংবিধানে উক্তরুপ বিধান সংযোজনের কৃতিত্বের সাধুবাদ বর্তমান "সংসদ এবং তাঁর নেত্রী শেখ হাসিনা"কে না দিয়ে তাঁদের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে দিতে গেলেন কেন? তাঁর সাথে আলোচনার পর খুশী হওয়ার মধ্যে বেসুমার রাজনৈতিক লাভালাভের প্রশ্ন জড়িত রয়েছে বিধায় তাঁকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারেন না।
এই 'কেন এবং লাভালাভের' বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে আমার আজকের নিবন্ধটির অবতারনা--আমি আগেও বহুবার বলেছি-" বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে যাদুঘরের পথে রওয়ানা হয়েছে।" বিগত ১৪/১৫ সালের নাশকতামূলক আন্দোলনে জড়িত হয়ে দলটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার বাকী নেই।দলের উধ্বতন নেতাদের মধ্যে হতাশা ভর করেছে।স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য ইতিমধ্যে নির্বাচিত হওয়ার পর পর পদত্যাগ করে কথাটির সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।প্রতিষ্ঠাকালীন ষড়যন্ত্রের জাল চিহ্ন করে আদৌ দলটি গনতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসতে পারেনি।দলের অভ্যন্তরে নুন্যন্নতম গনতন্ত্রের চর্চার অভ্যেস গড়ে উঠেনি।দেশব্যাপি লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর বিচরন থাকা সত্বেও নেতৃত্বের সঠিক নির্দেশনার অভাবে আন্দোলন সংগ্রাম, নির্বাচনে অংশগ্রহন, দেশ, জনগন, দলের জন্যে কোন অবদান কেউ রাখার সুযোগ পাচ্ছেনা। জেলা পরিষদ নির্বাচন বয়কট করে "নাসিক" নির্বাচনে অংশ নিয়ে সর্বশেষ সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছে বর্তমান সরকারের গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় কোন প্রকার ছিদ্র নেই--"আছে শুধুমাত্র আমাদের অপারগতা, সাংগঠনিক দুর্বলতা, নেতৃত্বের দুর্বলতা।"
বিশ্বের দেশে দেশে এবং কি বাংলাদেশেও অতীতে কখনই দেখা যায়নি রাজনৈতিক ইস্যুনিয়ে--"আন্দোলন, সংগ্রাম ব্যাতিরেকে উক্ত ইস্যুর কায্যকর কোন সমাধান হয়েছে।"আলোচনার টেবিলে সমাধান হয় ঠিক তখনি--আন্দোলনের ধাক্কায় বাধ্য হয়ে সরকার যখন আহব্বান করে। বাধ্য হওয়া ব্যাতিরেকে কোন সরকার যুক্তিসঙ্গত দাবি মেনে নেয়ার উদাহরণ আদৌ কোন দেশে সৃষ্টি হয়নি--ভবিষ্যতেও হবেনা।
বিএনপি নির্বাচন কমিশন সংস্কারের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপনের মাসখানেকের মধ্যেই কেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রয়োজন অনুভব করেছে ? রাষ্ট্রপতি তাঁদেরকে ডেকেছেন--? বিএনপি সংস্কারের পক্ষে দেশের জনগনের সমর্থন আছে কি নেই মতামত নিয়েছেন--? মতামত নেয়ার প্রয়োজনে সভা, সমাবেশ, মিটিং, আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন? দেশের বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি, ব্যবসায়ী, ছাত্রসমাজ, রাজনৈতিক দল, ব্যাক্তি, সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের যৌক্তিকতা প্রমানে সচেষ্ট হয়েছেন ? মুলত: এই সমস্ত রাজনৈতিক ধারাবাহিকতার তাঁদের এখন আর আদৌ কোন প্রয়োজন নেই---
কারন---বিএনপি নাশকতার মাধ্যমে রাজপথের অধিকার হারিয়ে চারদেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে গেছে।চারদেয়ালের গন্ডি ভেদ করে রাজপথে আসার যুৎসই কোন কারন খুঁজে পাচ্ছেনা।তাঁরা সরকারের সর্ব উচ্চ পয্যায় আলোচনা করে নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায়; তাঁদের দ্বারা ভবিষ্যতে নাশকতা, ষড়যন্ত্র, বহি:শক্তির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের আর কোন প্রকার কারন সৃষ্টি হবেনা।এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনা-সৃষ্টির প্রধানহেতু বেগম খালেদাকেও রাষ্ট্রপতির নিকট নেয়া হয়েছে। সঙ্গত কারনেই কথাটা বলতে হচ্ছে এই কারনে-- "আলোচনার প্রাথমিক পয্যায় শীর্ষ নেতার অংশগ্রহনে অতীতে কোন দেশেই এইরুপ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি--"বাংলাদেশে তো নহে-ই।"
সুপ্রিয় পাঠকগন --লক্ষ করলে অনায়াসে বুঝা যায় বিএনপি নেত্রী "বারবার" কথাটি উচ্চারন করেছেন-- -" সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে "বারবার অনির্দিষ্টকাল" আলোচনায় অংশগ্রহন করার ইচ্ছা প্রকাশ" করেছেন।অর্থ্যাৎ--'সরকারের মেয়াদ উত্তির্ন হলেও কোন সমস্যা এক্ষেত্রে হবেনা'।যতদিন রাজপথে আসার সুযোগ হবেনা ততদিন শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনা করার সুযোগ দিতেও কোন আপত্তি নেই।"
সরকার বিরুধীদলের অভাব তিব্রভাবে অনুভব করছে।জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর স্থগিত তাই প্রমান করে।শক্তিশালী বিরুদীদলের অভাবে তিস্তাচুক্তি সম্পাদনে ভারতকে যুৎসই চাপ প্রয়োগ করে চুক্তি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে না পেরে--"সফর স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন"। বাংলাদেশের জনগনের স্বতস্ফুর্ত দাবী এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজন ছিল কিন্তু জনস্বার্থে কোন রাজনৈতিক দল দাবী উত্থাপন না করায় ভারত তিস্তাচুক্তির ব্যাপারে বরাবর গড়িমসির আশ্রয়গ্রহন করে সময়ক্ষেপনের নীতি অনুসরন করছে।জাতির জনকের কন্যার অসীম সাহষ, দৃডমনোবল এক্ষেত্রেও তাঁদের জন্যে বড় বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে।বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী জানতে চেয়েছেন তিস্তার ব্যাপারটি কতটুকু অগ্রসর হয়েছে--"যথাযথ উত্তর না পেয়ে একতরফা সফর স্থগিত করে প্রমান করেছেন বাংলাদেশের স্বার্থের বাইরে শেখ হাসিনা পরম বন্ধুরাষ্ট্রকেও ছাড় দিতে রাজী নন।" এক্ষেত্রে একদিকে বিদ্যমান "বিরুধীদলের ভুমিকা পালন অন্যদিকে সরকারের নিয়মিত কর্মতৎপরতা" দুই ভুমিকায় "শেখ হাসিনাকে" অবতীর্ন্ন হতে দেখা যাচ্ছে।
বিএনপির উধ্বতন নেতানেত্রীদের আওয়ামী লীগে যোগদানের চতুর্দিকে হিড়িক পড়ে গেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে শংকায় পড়েন। বিদেশ সফর শেষে বিমানবন্দর থেকেই নির্দেশনা জারি করেন--"বিএনপি জামায়াতের কোন নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করতে পারবে--না"। যোগদান প্রশ্নে তাঁর কঠোর নিষেদাজ্ঞা আরোপ যথারীতি জেলা উপজেলায় কায্যকর করার জন্যে চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়।বিএনপি অস্তিত্ব সংকট থেকে সেই যাত্রা রক্ষা পায়। এবারও সদাশয় "মহামান্য রাষ্ট্রপতি" বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকার প্রয়োজনে "না চাইতেই বৃষ্টি" মনে হলেও সেই কায্যকর সুযোগটি দিয়েছেন----'' এখানেই বিএনপি খুশী"।
আন্দোলন, সংগ্রাম, সরকারপতন, ক্ষমতাদখল, নির্বাচন, সংস্কার তত্বাবধায়ক সরকার, জনগনের কল্যান ইত্যাদি বর্তমান বিএনপির মুল বিষয় বস্তু নয় ; মূল বিষয়বস্তু-" বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্নে যাহাই প্রয়োজন তাহাই করা।"পত্র- পত্রিকায়, সুসীলসমাজের, বরেন্যব্যাক্তিদের আলোচনার টেবিলে থাকার আপ্রান চেষ্টার ফসল--" রাষ্ট্রপতির আপ্যায়নে যারপরনাই খুশির ভাব প্রদর্শন।"
ruhulaminmujumder27@gmail.com
"জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু"
(রুহুল আমিন মজুমদার)
অবশেষে বিএনপি তাঁর উধ্বতন নেতাদের নিয়ে আওয়ামীলীগের মনোনীত জাতীয় সংসদ কতৃক নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির নিকট আত্মসমপর্পন করে এলেন। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে উৎফুল্ল চিত্তে প্রসংশা করে বলেছেন--"সংকট নিরসনে তাঁরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন"।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাঁর স্বভাবসূলভ আচরনে এবং বাঙ্গালী ঐতিহ্যবাহি আতিথীয়তায় কোনরুপ কার্পন্য করেছেন বলে মনে হয়না।তদ্রুপ যদি কোন ব্যত্যায়ের ছিদ্র রাখতেন স্বভাবতই বিএনপি তাঁর অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা পরিহার করে খুশিমনে সংকট দুরিকরনে আশার আলো না খুঁজে হতাশার সুরেই বলতেন--"অবৈধ সরকারের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি অবৈধ বাক্যালাপ ছাড়া আর কি-ই- বা করতে পারবেন"।
আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের কথাই বলবে--"আমরা আগে যাহা চিন্তা করেছিলাম তাই হয়েছে।"সুতারাং আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে জনগনের গনতান্ত্রিক সরকার 'আমাদের' কে ক্ষমতায় নিতে হবে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে 'তত্ববধায়ক' সরকারের নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে "লাথি, গুতায়'' ক্ষমতা পরিত্যাগের নীতি বাস্তবায়ন করব ইনশাল্লাহ। জনগন এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক দলসমুহকে শতব্যস্ততার মাঝে কষ্ট না দিয়ে সাংবিধানীক ধারা অনুসরন না করে "পছন্দ সই" নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেব। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তড়িৎকর্মাহেতু তাঁকেই "তত্বাবধায়ক" প্রধান করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করব। যেহেতু উল্লেখিত বিবৃতি বিএনপি দেয়নি সুতারাং ধরেই নেয়া যায়---"রাষ্ট্রপতির আচরণ এবং আপ্যায়ন দুটোই ভাল হয়েছে।"
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা--আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণে আছে--" বিএনপি অবৈধ ভোটহীন সরকারের বিরুদ্ধে গন আন্দোলন গড়ে তোলার একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজপথে আসেনি।" জনগনের চিরায়াত আন্দোলন, সংগ্রাম, হরতাল, অবরোধের হাতিয়ারকে নাশকতার আবরনে ভেঁতু করে আগামী প্রজম্মের ন্যায্য অধিকার আদায়ে কঠিন প্রতিবন্ধকতার দেয়াল তুলে দিয়েছেন।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমতের সত্যতা পাওয়া যায়--"বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির সাথে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে আলোচনা করার জন্য তাঁর নিকট ধর্ণা দেয়ার মধ্যে।"
রাজনৈতিক সচেতন মহল অবগত আছেন-- বিগত সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রশ্নে চার্চকমিটি গঠনের সুনির্দিষ্ট নীতি সংবিধানে সংযোজন করেছে বর্তমান সরকার।বিএনপি এবং অন্যান্ন রাজনৈতিক দল বিষয়টি অবগত নয়- ইহা বিশ্বাস করার কোন কারন নেই।মহামান্য রাষ্ট্রপতিও তাঁদেরকে সংবিধানের বর্নিত বিষয়ের আলোকে কমিশন গঠনের সুস্পষ্ট ধারনাই দিয়েছেন।কারন রাষ্ট্রপতি সংবিধানের রক্ষক---"সংবিধানের বাইরে তিনি কোন আলোচনা করতে পারেননা।"
বিএনপি প্রতিনীধিদল সংবিধানে উক্তরুপ বিধান সংযোজনের কৃতিত্বের সাধুবাদ বর্তমান "সংসদ এবং তাঁর নেত্রী শেখ হাসিনা"কে না দিয়ে তাঁদের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে দিতে গেলেন কেন? তাঁর সাথে আলোচনার পর খুশী হওয়ার মধ্যে বেসুমার রাজনৈতিক লাভালাভের প্রশ্ন জড়িত রয়েছে বিধায় তাঁকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারেন না।
এই 'কেন এবং লাভালাভের' বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে আমার আজকের নিবন্ধটির অবতারনা--আমি আগেও বহুবার বলেছি-" বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে যাদুঘরের পথে রওয়ানা হয়েছে।" বিগত ১৪/১৫ সালের নাশকতামূলক আন্দোলনে জড়িত হয়ে দলটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার বাকী নেই।দলের উধ্বতন নেতাদের মধ্যে হতাশা ভর করেছে।স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য ইতিমধ্যে নির্বাচিত হওয়ার পর পর পদত্যাগ করে কথাটির সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।প্রতিষ্ঠাকালীন ষড়যন্ত্রের জাল চিহ্ন করে আদৌ দলটি গনতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসতে পারেনি।দলের অভ্যন্তরে নুন্যন্নতম গনতন্ত্রের চর্চার অভ্যেস গড়ে উঠেনি।দেশব্যাপি লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর বিচরন থাকা সত্বেও নেতৃত্বের সঠিক নির্দেশনার অভাবে আন্দোলন সংগ্রাম, নির্বাচনে অংশগ্রহন, দেশ, জনগন, দলের জন্যে কোন অবদান কেউ রাখার সুযোগ পাচ্ছেনা। জেলা পরিষদ নির্বাচন বয়কট করে "নাসিক" নির্বাচনে অংশ নিয়ে সর্বশেষ সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছে বর্তমান সরকারের গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় কোন প্রকার ছিদ্র নেই--"আছে শুধুমাত্র আমাদের অপারগতা, সাংগঠনিক দুর্বলতা, নেতৃত্বের দুর্বলতা।"
বিশ্বের দেশে দেশে এবং কি বাংলাদেশেও অতীতে কখনই দেখা যায়নি রাজনৈতিক ইস্যুনিয়ে--"আন্দোলন, সংগ্রাম ব্যাতিরেকে উক্ত ইস্যুর কায্যকর কোন সমাধান হয়েছে।"আলোচনার টেবিলে সমাধান হয় ঠিক তখনি--আন্দোলনের ধাক্কায় বাধ্য হয়ে সরকার যখন আহব্বান করে। বাধ্য হওয়া ব্যাতিরেকে কোন সরকার যুক্তিসঙ্গত দাবি মেনে নেয়ার উদাহরণ আদৌ কোন দেশে সৃষ্টি হয়নি--ভবিষ্যতেও হবেনা।
বিএনপি নির্বাচন কমিশন সংস্কারের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপনের মাসখানেকের মধ্যেই কেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রয়োজন অনুভব করেছে ? রাষ্ট্রপতি তাঁদেরকে ডেকেছেন--? বিএনপি সংস্কারের পক্ষে দেশের জনগনের সমর্থন আছে কি নেই মতামত নিয়েছেন--? মতামত নেয়ার প্রয়োজনে সভা, সমাবেশ, মিটিং, আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন? দেশের বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি, ব্যবসায়ী, ছাত্রসমাজ, রাজনৈতিক দল, ব্যাক্তি, সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের যৌক্তিকতা প্রমানে সচেষ্ট হয়েছেন ? মুলত: এই সমস্ত রাজনৈতিক ধারাবাহিকতার তাঁদের এখন আর আদৌ কোন প্রয়োজন নেই---
কারন---বিএনপি নাশকতার মাধ্যমে রাজপথের অধিকার হারিয়ে চারদেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে গেছে।চারদেয়ালের গন্ডি ভেদ করে রাজপথে আসার যুৎসই কোন কারন খুঁজে পাচ্ছেনা।তাঁরা সরকারের সর্ব উচ্চ পয্যায় আলোচনা করে নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায়; তাঁদের দ্বারা ভবিষ্যতে নাশকতা, ষড়যন্ত্র, বহি:শক্তির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের আর কোন প্রকার কারন সৃষ্টি হবেনা।এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনা-সৃষ্টির প্রধানহেতু বেগম খালেদাকেও রাষ্ট্রপতির নিকট নেয়া হয়েছে। সঙ্গত কারনেই কথাটা বলতে হচ্ছে এই কারনে-- "আলোচনার প্রাথমিক পয্যায় শীর্ষ নেতার অংশগ্রহনে অতীতে কোন দেশেই এইরুপ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি--"বাংলাদেশে তো নহে-ই।"
সুপ্রিয় পাঠকগন --লক্ষ করলে অনায়াসে বুঝা যায় বিএনপি নেত্রী "বারবার" কথাটি উচ্চারন করেছেন-- -" সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে "বারবার অনির্দিষ্টকাল" আলোচনায় অংশগ্রহন করার ইচ্ছা প্রকাশ" করেছেন।অর্থ্যাৎ--'সরকারের মেয়াদ উত্তির্ন হলেও কোন সমস্যা এক্ষেত্রে হবেনা'।যতদিন রাজপথে আসার সুযোগ হবেনা ততদিন শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনা করার সুযোগ দিতেও কোন আপত্তি নেই।"
সরকার বিরুধীদলের অভাব তিব্রভাবে অনুভব করছে।জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর স্থগিত তাই প্রমান করে।শক্তিশালী বিরুদীদলের অভাবে তিস্তাচুক্তি সম্পাদনে ভারতকে যুৎসই চাপ প্রয়োগ করে চুক্তি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে না পেরে--"সফর স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন"। বাংলাদেশের জনগনের স্বতস্ফুর্ত দাবী এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজন ছিল কিন্তু জনস্বার্থে কোন রাজনৈতিক দল দাবী উত্থাপন না করায় ভারত তিস্তাচুক্তির ব্যাপারে বরাবর গড়িমসির আশ্রয়গ্রহন করে সময়ক্ষেপনের নীতি অনুসরন করছে।জাতির জনকের কন্যার অসীম সাহষ, দৃডমনোবল এক্ষেত্রেও তাঁদের জন্যে বড় বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে।বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী জানতে চেয়েছেন তিস্তার ব্যাপারটি কতটুকু অগ্রসর হয়েছে--"যথাযথ উত্তর না পেয়ে একতরফা সফর স্থগিত করে প্রমান করেছেন বাংলাদেশের স্বার্থের বাইরে শেখ হাসিনা পরম বন্ধুরাষ্ট্রকেও ছাড় দিতে রাজী নন।" এক্ষেত্রে একদিকে বিদ্যমান "বিরুধীদলের ভুমিকা পালন অন্যদিকে সরকারের নিয়মিত কর্মতৎপরতা" দুই ভুমিকায় "শেখ হাসিনাকে" অবতীর্ন্ন হতে দেখা যাচ্ছে।
বিএনপির উধ্বতন নেতানেত্রীদের আওয়ামী লীগে যোগদানের চতুর্দিকে হিড়িক পড়ে গেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে শংকায় পড়েন। বিদেশ সফর শেষে বিমানবন্দর থেকেই নির্দেশনা জারি করেন--"বিএনপি জামায়াতের কোন নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করতে পারবে--না"। যোগদান প্রশ্নে তাঁর কঠোর নিষেদাজ্ঞা আরোপ যথারীতি জেলা উপজেলায় কায্যকর করার জন্যে চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়।বিএনপি অস্তিত্ব সংকট থেকে সেই যাত্রা রক্ষা পায়। এবারও সদাশয় "মহামান্য রাষ্ট্রপতি" বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকার প্রয়োজনে "না চাইতেই বৃষ্টি" মনে হলেও সেই কায্যকর সুযোগটি দিয়েছেন----'' এখানেই বিএনপি খুশী"।
আন্দোলন, সংগ্রাম, সরকারপতন, ক্ষমতাদখল, নির্বাচন, সংস্কার তত্বাবধায়ক সরকার, জনগনের কল্যান ইত্যাদি বর্তমান বিএনপির মুল বিষয় বস্তু নয় ; মূল বিষয়বস্তু-" বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্নে যাহাই প্রয়োজন তাহাই করা।"পত্র- পত্রিকায়, সুসীলসমাজের, বরেন্যব্যাক্তিদের আলোচনার টেবিলে থাকার আপ্রান চেষ্টার ফসল--" রাষ্ট্রপতির আপ্যায়নে যারপরনাই খুশির ভাব প্রদর্শন।"
ruhulaminmujumder27@gmail.com
"জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু"
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন