অর্থনীতিই রাজনীতির চালিকাশক্তি তত্বের সার্থক প্রয়োগ-- বর্তমা সরকারের সাফল্যের অন্যতম ভিত্তি।


     অর্থনীতিই রাজনীতির চালিকা শক্তি 'তত্বের' সার্থক প্রয়োগ~বর্তমান সরকারের সাফল্যের অন্যতম ভিত্তি।
          (রুহুল আমিন মজুমদার)

             উনিশ শতকের প্রারম্ভে রাষ্ট্র ব্যবস্থা বা রাজনীতি প্রাতিষ্ঠানীক ভীত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। তাঁর আগে নগর কেন্দ্রীক রাষ্ট্রব্যবস্থা বা নগররাষ্ট্র, ছোট ছোট সমাজ ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামোর অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যায়। উনিশ শতকের বিপ্লবী মতবাদের ¯স্রষ্টা কার্ল মার্কস এর মতে--"রাজনীতি হচ্ছে অর্থনীতির অন্তনীহিত অংশ। অর্থনীতির ভিত্তির উপর রাজনীতি নির্ভরশীল। অর্থনীতি সুদৃড না হলে রাজনীতি বা রাষ্ট্র ব্যবস্থা টিকে থাকেনা। অর্থনীতির কাঠামোর বৈশিষ্টই রাজনীতি নিয়ন্ত্রনের মূল ভিত্তি।"
         এক কথায় মার্কসীয় তত্ত্ব অনুসারে অর্থনীতিই হচ্ছে রাজনীতির নিয়ামক বা পরিচালক। শ্রেনীবিভক্ত সমাজে উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে উৎপাদন যন্ত্র অর্থাৎ জায়গা জমি,কলকারখানা ইত্যাদির উপর শ্রমিক শ্রেণীর অংশীদারিত্ব না থাকার সুযোগে রাষ্ট্র ও রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে বুর্জোয়া ধনিক শ্রেণি। বুর্জোয়া রাষ্ট্রব্যবস্থার অবসান, সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং শ্রেনীহীন, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা রাজনীতির মর্মকথা হয়ে উঠে উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে। প্রথমোক্তটির গুনে গড়ে উঠে সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারনবাদ, সামন্তবাদী বুর্জুয়া ধনীক শ্রেনী কতৃক শাষন শোষনের নতুন মতবাদ। শঠতায় নিমজ্জিত এই শ্রেনী নীজেদের পরিচিতি--আপন গোত্রের নামে না রেখে 'গনতন্ত্রের' নাম ধারন করে (মুলত সামন্তবাদ)।
      একের পর এক রাজ্য দখল করে শাষন শোষনের নতুন নতুন ক্ষেত্র আবিস্কারের পর--ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে গনতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করে।তাঁদের শাষন শোষন অব্যাহত রাখতে গ্রহন করে জোর যার মুল্লুক তাঁর নীতি। এই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রের মালিকানা বংশানুক্রমিক অর্থাৎ রাজা মারা গেলে যুবরাজ রাষ্ট্রের শাষনভার পাওয়ার অধিকারি হতেন। ক্ষমতাসীনদের আশেপাশের প্রত্যেকটি পরিবার এবং তার সুবিধাভোগীরা হতেন ক্ষমতাবান অভিজাত শ্রেনী। দ্বিতীয়টির উৎসমতে শ্রেনীভেদ লোপ না পেলেও বিশেষ করে ইংল্যান্ডে গনতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে রাণীর শাষনস্থলে জনপ্রতিনীধি কতৃক শাষন এবং ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের উপর জনগণের ক্ষমতা অব্যাহত গতিতে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আমেরিকার স্বাধীনতা ও লিখিত আকারে সংবিধান এই প্রক্রিয়াকে অনেকটাই অগ্রসর করে দেয়। অনেক স্থানে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ হয়ে প্রজাতন্ত্র কায়েম হয়। অনেক স্থানে মার্ক্সীয় মতবাদের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে নতুন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কেবল তাত্ত্বিকভাবেই নয় বাস্তবে রাষ্ট্র শাসনে জনগণের অংশগ্রহন, নির্বাচন ব্যবস্থা, সরকারের জবাবদিহীতা প্রভৃতি ক্রমেই বিকাশমান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। উনিশ শতকের প্রারম্ভে কেবল পুরুষের সীমিত ভোটাধিকার ছিল। ক্রমশ: তাহা প্রক্রিয়াগত সংস্কারে সর্বজনীন ভোটাধিকারের রীতিতে উন্নিত হয়, যাহা জনগনের আন্দোলন সংগ্রামের ফসল হিসেবে অর্জিত।
           অনেকগুলো দেশে বিশেষ করে আমেরীকা ও বৃটেনে বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে নারীর ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। নারী নির্বাচিত হওয়ার অধিকার বিংশ শতাব্দীতে অর্জিত হলেও রাষ্ট্রক্ষমতায় এখনও কোন কোন দেশে সমান অংশীদারিত্ব অর্জিত হয়নি। গনতন্ত্রের ধ্বজাধারী আমেরীকায় এই পয্যন্ত কোন নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারেনি।বৃটেনে মার্গারেট থ্যাচার ছাড়া সম্ভবত: আর কোন নারী নেতৃত্ব উল্লেখ করার মত আসেনি।
      এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শিশু গনতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হলেও জেন্ডার সমতায় বিশ্বের সকল দেশকে পেছনে পেলে উদার গনতান্ত্রিক চর্চায় এবং নারীর অংশীদারিত্বে শীর্ষস্থানটি দখল করে নিতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার থেকে রাষ্ট্রক্ষমতার সর্বোচ্চ পয্যায় পর্যন্ত জনগণের সচেতন সক্রিয় অংশগ্রহণ, জনকল্যাণে রাষ্ট্রের অবদান, আদর্শবাদ, দারিদ্র বিমোচন, সামাজিক বৈষম্য লোপ, সর্বস্তরে নারীর ক্ষমতায়ন, সংসদে নারীর সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচন ব্যাবস্থায় উত্তরন, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি গোষ্টির নাগরীক অধিকার রক্ষা, বিশ্বায়ন ও পরিবেশ দূষণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা প্রভৃতির জনকল্যান মুলক কর্মকান্ড হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের রাজনীতির মূলভিত্তি।
         অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের শতবছর আগে দেয়া সংজ্ঞা "কল্যান মুলক রাষ্ট্রের" দিকে প্রতিনিয়ত ধাবমান।উন্নয়ন অগ্রগতিকে সর্ব উচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নাগরীকদের জীবনমানে বৈসম্যের অবসান ঘটানো বর্তমান সরকারের রাজনীতির উপজিব্য বিষয়। লক্ষ স্থীর হওয়ার কারনে রাষ্ট্রের সকল সামাজিক, অর্থনৈতিক সূচক ইতিমধ্যে উধ্বমুখি হওয়া শুরু হয়েছে। দারিদ্রতা কাটিয়ে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরীত হয়েছে, মঙ্গা দূর হয়েছে, শিক্ষা-বিশেষ করে নারী শিক্ষা ও চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এই সকল ক্ষেত্রে আন্তজাতিক স্বীকৃতি ও সমীহ আদায় করে নিতে সক্ষম হচ্ছে বাংলাদেশ।
      একদা সম্পুর্ন বিদেশনির্ভর বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জনের ফলে স্বাবলম্বি বাংলাদেশে উন্নিত হয়েছে।আমদানী নির্ভর দেশ রপ্তানী নির্ভর বাংলাদেশে রুপান্তরীত হয়েছে। শুন্য টাকা নিয়ে পথচলা বাংলাদেশ গত সপ্তাহে তাঁর আগের হিসেব রিজার্ভমানী ৩০ বিলিয়নকে ছাড়িয়ে ৩২ হাজার বিলিয়নে স্থীর হয়েছে।দ্বিতীয় পদ্মাসেতুর পরিকল্পনা চুড়ান্ত,দ্বিতীয় পারমানবিক চুল্লির পরিকল্পনাও অনেক এগিয়ে গেছে। মহাশুন্যে ২০১৭ সালের শেষদিকেই "বঙ্গবন্ধু স্যটেলাইট" স্থাপনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে সরকার।
             বৃদ্ধভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দ্বিগুন বৃদ্ধি, মেধা বৃত্তি, মেয়েদের প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ শিক্ষা পয্যন্ত শিক্ষা বৃত্তি, কৃষি কার্ড়, চিকিৎসা ভাতা, চিকিৎসা কার্ড়, দুস্ত মাতা ও শিশুদের সাংবাৎসরিক খাদ্য সহায়তা, গরীব পরিবারে দশ টাকা কেজী  চালের কার্ড় বিতরন, চাকুরী জীবিদের উৎসব ভাতা, বাংলা নববর্ষের উৎসব ভাতা, শিক্ষাবৃত্তির আওতা বৃদ্ধি করে ডিগ্রি পয্যন্ত বিনা- বেতনে অধ্যায়নের সুযোগ,শিক্ষায় উপবৃত্তি প্রথা সম্প্রসারিত করে প্রাথমিক স্তর নির্ধারন, বি, এ পয্যন্ত সরকারি পাঠ্যবই বিতরণ ইত্যাদি নানাহ নাগরিক সেবামূলক কর্মকান্ড ফি বছর সম্প্রসারীতের ধারা অব্যাহত রেখেছে।
          আন্তজাতিক সংস্থা সমুহে একের পর এক নেতৃত্বের পদে সমাসীন হচ্ছে। এশিয়ার বৃহত্তম গনতান্ত্রীক ফোরাম সমুহে নেতৃত্ব করায়াত্ব করেছে। মুসলিম দেশ সমুহ বিশেষ করে তেল সমৃদ্ধ আরবদেশ সমুহের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক পয্যায় থেকে উন্নতর পয্যায় নিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে।ফলে তাঁদের দেশে বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগে বিগত সরকার সমুহের সময়ে আরোপিত নিষেদাজ্ঞা একে একে প্রত্যাহারীত হয়ে কাজের বৃহত্তর পরিসর উম্মুক্ত হচ্ছে। জাতির জনকও চেয়েছিলেন গনতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র। মালিকানা ঠিক রেখে উৎপাদনে শ্রমিক শ্রেনীর অংশীদারিত্ব। শোষনহীন সমাজ, সামাজিক বৈশম্য রোধ, অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা, রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগনের সর্বাধিক অংশগ্রহন নিশ্চিত।রাষ্ট্র ও সরকারের সর্বক্ষেত্রে জবাব দিহীতা নিশ্চিত করাই ছিল জাতির জনকের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পুরনে তাঁর জৈষ্ঠ কন্যা রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতিতে সম্ভব দ্রুত সংষ্কার কায্যক্রম গ্রহন করেন। কায্যক্রমের ফলপ্রসু সিদ্ধান্ত সমুহ বাস্তবায়নে যুগ যুগান্তরের অমিমাংশীত বিষয় সমুহ মীমাংসার উদ্যোগ গ্রহন করে সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন। চিরায়ত কৃষি নীর্ভর অর্থনীতির ধ্যান ধারনার সঙ্গে শিল্পসমৃদ্ধ অর্থনীতির সংযোগ ঘটানোর নিয়ন্তর প্রচেষ্টায় সফলভাবেই এগিয়ে নিচ্ছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে অতীতের তলাবিহীন জুড়ীর বদনাম গুছিয়ে বিশ্বদরবারে সম্ভাবনার উর্বরভূমি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
       গত শতাব্দির শেষের দিকে স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পর থেকে চলতি শতাব্দির অনেকটা সময় ক্ষুদা, দারিদ্রতা, সামাজিক বৈষম্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য, দুর্নীতি বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোকে হুমকির মধ্যে পেলে দিয়েছিল। সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রটি টিকবে কিনা অনেকেই সন্দিহান হয়ে উঠেছিলেন। দারীদ্রতা, দুর্নীতি, নেতৃত্বের অ-যোগ্যতা, রাষ্ট্রীয় ভীত্তি "গনতান্ত্রীক প্রজাতন্ত্রের" অংশ থেকে "প্রজাতন্ত্রকে" আড়ালে রেখে "গনতন্ত্র'কে" গ্রহন করার অদম্য বাসনা, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মুলভিত্তি সমুহকে আড়ালে রেখে "প্রভুত্ববাদ" কায়েমের চেষ্টা, আন্তজাতিক সংস্থা সমুহে নেতৃত্বের অপারগতা, প্রতিবেশি রাষ্ট্র সহ মুসলিম রাষ্ট্র সমুহের সাথে সম্পর্কের শীতলতা ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যার্থতার সুযোগে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে জম্ম নিতে শুরু করেছিল--নিয়তিবাদ বা অদৃষ্টবাদ, প্রভুত্ববাদ, সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রধর্মীয় গোষ্টির উত্থান, জঙ্গিবাদ।
      সমাজের অশুভশক্তি সমুহ মারাত্মক আকারে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল। সাম্রাজ্যবাদী চক্র তাঁদের ফর্মুলা সফলভাবে বাস্তবায়নের কারনে চার দলীয় সরকারের সময় বাংলাদেশকে "আধুনীক মুসলিম দেশ(modarete muslim country) উপাদিতেও ভুষিত করেছিল"। মুলত: বাংলাদেশকে ব্যার্থ রাষ্ট্র বানানোর সকল প্রক্রিয়া চার দলীয় জোট সরকারে থাকাকালিন সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। আন্তজাতিকভাবে বাংলাদেশ জোট সরকারের শাষনকালে পরপর পাঁছ বছরে পাঁছবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উপহাসের উদাহরন হয়ে দেখা দিয়েছিল। সঙ্গত কারনে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নিতে পেরেছিল একশ্রেনীর বুর্জুয়া সুবিধাবাদি ধনীক, ব্যবসায়ী, সরকারী আমলা, সেনা আমলা গোষ্টি। শেষ পয্যন্ত একই চক্রের ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তাঁরা ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত "তত্বাবধায়ক সরকারকে বিতর্কিত ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অ-প্রয়োজনীয় ও ভীতিকর শাষন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কারনে তিনমাসের সরকারকে দুইবছর টেনে নিয়ে যেতে পেরেছিল।
       গনতান্ত্রীক আন্দোলনে গড়ে উঠা রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং তাঁর নেত্রী শেখ হাসিনাকে বিতর্কীত করতে সাহষ করেছিল একমাত্র খালেদা জিয়ার পরিবারকে শাষনকালের পাঁছবছর  অবাধ লুন্টন,মেয়াদ শেষে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করার সুযোগ দিয়ে। তাঁদেরই কুপরামর্শে সংবিধান, প্রচলিত ধারা তোয়াক্কা না করে একতফা নির্বচন কমিশন এবং নীজ দলের প্রেসিডেন্টকে 'তত্বাবধায়ক সরকার' প্রধান করার সুযোগ দিয়ে। ক্ষমতার লোভে "স্বল্প শিক্ষিত খালেদা জিয়া এবং তাঁর ছেলে তারেক জিয়া" তাঁদের ষড়যন্ত্রে সহজে ধরা দিয়ে বাংলাদেশের চলমান গনতান্ত্রিক রাজনীতির ধারাকে তাঁদের উদ্দেশ্যের "ষড়যন্ত্রের গর্তে" ফেলে দেয়। সদ্য দুর্নীতিবাজ,  ক্ষমতা লোভীর ক্ষমতাচ্যুতি জনমনে বিরাজমান থাকা অবস্থায় যথারীতি সেই তকমা ব্যবহার করে তাঁর সাথে শেখ হাসিনাকেও একিভূত করে। জনগনের সমর্থন পাওয়ার কৌশল হিসেবে জোটের লুটপাট, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চক্রান্তকে সামনে নিয়ে আসে।

       দুই শীর্ষ নেতাকে বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ অযোগ্য আখ্যা দেয়ার লক্ষে নতুন ফর্মুলা বাহির করে,""মাইনাস টু ফর্মুলা""।.ক্ষমতা দখলের দিনকে ভবিষ্যত প্রজম্মের নিকট বিরত্বের প্রকাশ ঘটানোর লক্ষে তাঁদের পোষ্য শুসিল কতৃক নাম দেয়া হয় '১/১১ এর সরকার।'
   সেনা সমর্থিত আমেরিকার চর "ফখরুল-মঈন তত্বাবধায়ক সরকার" ক্ষমতায় আরোহন করেই বিরাজনীতিকরন প্রক্রিয়ায় মনযোগী হয়ে পড়ে। রাজনীতিবীদদের ঢালাও দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে জেলে নিতে শুরু করে। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের ভয় দেখিয়ে দেশান্তরীত করার কৌশল গ্রহন করে। সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমুহকে নিস্তেজ করে প্রতিবাদের উৎসমুখে বরফ ঢেলে দেয়।তিনমাসের তত্বাবধায়ক সরকার দুই বছর আপ্রান চেষ্টা করেও ফলপ্রসু ভীত গড়তে না পারায় জাতীয় নেতাদের মুক্তি দিয়ে সাধারন নির্বাচনের ঘোষনা দিতে বাধ্য হয়।
   আগেই আলোচনা করেছি এইরুপ পরিস্থীতি সৃষ্টি করে তাঁদের ক্ষমতা দখলের পথটি পরিষ্কার করে দিয়েছিল ফ্যসিস্ট চার দলীয় জোট সরকারের "প্রভুত্ববাদ" প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে নেয়া রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত সমুহ। তাঁদের "প্রভুত্বতন্ত্রের" অদম্য আক্ষাংকা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জাতি অনেকদুর পিছনে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের সংরক্ষিত মুল্যবান বৈদিশীক মুদ্রা, ডলার, স্বর্ণ বিদেশে পাচার হয়ে অর্থনীতিতে তখন বিরাট সংকটের সৃষ্টি করেছিল। তাঁরা সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় সর্বক্ষেত্রে ভীতিকর শাষন কায়েম করতে সক্ষম হয়েছিল। ভয়ে প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী গন----"টাকা, গাড়ী রাস্তার ধারে ফেলে রেখে অজানা উদ্দেশ্যে নিরুদ্দেশ হতে বাধ্য হয়েছিল।"
        বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন রাজনীতি ও রাজনৈতিক ধ্যান ধারনায়  "প্রভুত্বতন্ত্রের" যে ধারানাটি পোষন করা শুরু করেছিল সেই একই ধারনা পরিত্যাগ করতে পারেননি। মুখে 'গনতন্ত্রের' জন্য মায়াকান্না দেখালেও দলীয় গঠনতন্ত্রকে 'প্রভুত্বতন্ত্র' কায়েমের ভিত্তিমূল করে রেখেছেন। এবারকার  কাউন্সিলের আগে দলের দুই শক্তিধর নীতিনির্ধারক পদের নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন বিক্রির চাতুরতার ন্যক্কারজনক এই দৃশ্যটি স্পষ্ট দেখা গেছে। ঐ দুই পদে দলের কোন পয্যায়ের মেম্ভার ফরম খরিদ করেননি। বিনাভোটে "মা-ছেলে" দুই জনই নির্বাচিত হয়েছেন।
         দলের রাজনৈতিক কাঠামোকে "মা-ছেলের" পায়ের নীছে রেখে-- "প্রতিযোগিতার আহব্বান জানালেই দলে গনতন্ত্র কায়েম হয়ে যাবে?" যেখানে তাঁবেদারি সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে দলীয় পদপদবি, মন্ত্রিত্ব, ব্যবসাবানিজ্য--"সেখানে তাঁদের সঙ্গে পদের লড়াইতে নামবে নেতারা--!! মা-ছেলের পাঁয়ের নীছে বসে জুতা পরিস্কার করে যারা উচ্চ পদে সমাসীন হবেন--"তাঁরা কেন প্রতিদ্বন্ধিতা করে দলীয় প্রভু-ভক্তির প্রতিযোগিতায় অযথা পেছনে যাবেন?" "ফ্যসিষ্ট শক্তির উৎসস্থলের প্রধান শক্তি জামায়াত কে প্রশ্রয় দিয়ে সন্ত্রাস অরাজকতার বিষবাস্প সমাজের রন্ধে রন্ধে বপন করে অ-শুভশক্তির আগমনের পথকে সুগম করার চিরায়ত নীতি থেকে দলটি ১/১১ এর বড় রকমের ঝাঁকুনির পরও শিক্ষা নিতে পারেনি। দলীয় কাঠামোতে গনতন্ত্রের চর্চার অভাব রেখে রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে গনতন্ত্রের কথা বলা ফ্যসিষ্ট শাষন কায়েমের পুর্বেকার লক্ষন নয় কি? "গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের "প্রজাতন্ত্রের" অংশকে আড়াল করার কৌশল স্থীর রেখে রাষ্ট্র খমতা দখল করার ইচ্ছা ভবিষ্যত বাংলাদেশে আর সম্ভব নয়।
       বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থায়ও বড় রকমের সংস্কার কায্যক্রম গ্রহন করে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।স্থানীয় সরকার সমুহে দলীয় প্রর্থী ও প্রতিকে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। দলীয় সরকারের রাষ্ট্রীয় কায্যক্রম সফল বাস্তবায়নের লক্ষকে সামনে রেখে চিরায়ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া ভেঙ্গে অধিকতর জবাবদিহীতামুলক, সকল দল ও সামাজিক শক্তির অংশ গ্রহন নিশ্চিতপুর্বক নির্বাচনী ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন।বৃটিশ সরকারের প্রতিষ্ঠিত ত্রিস্তরের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা পুর্ণবহাল করেছেন।"সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি সংস্থায় "গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার" লক্ষে 'দলীয় গঠনতন্ত্রে' যুগোপযোগী সংস্কার সাধন করে দলের "গঠনতন্ত্রের অঙ্গিকার নামায়" অন্যতম অঙ্গিকারের মায্যদায় স্থান দিয়েছেন।
 স্থানীয় সরকারের তিনটি স্তরেই অবাধ নির্বাচনের শুভ উদ্যোগও কায়েমী স্বার্থবাদীদের অপপ্রচার, অংশগ্রহনের অনা-গ্রহ,  বিরুধীতায় সুষ্ঠ ও প্রতিযোগীতামূলক করা যায়নি। তাঁদের সম্মিলীত নেতিবাচক মন্তব্য ও বিবৃতির কারনে স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহন বিঘ্নিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে নির্বাচন একতরফায় পয্যবসিত হয়। গনতনন্ত্রের অভিযাত্রায় প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন যদিও কিছুটা নিস্তেজ, অ-নানন্দদায়ক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়-'অচিরেই তাঁদের সৃষ্ট বন্ধাত্ব কেটে যাবে আশা করি। আগামীতে দ্বিতীয়বারের স্থানীয় সরকারের তিনটি স্তরেই স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন নিশ্চিত হয়ে নির্বাচন রাষ্ট্রীয় উৎসবে পরিনত হবে ইনশাল্লহ---"হতি সংস্কারের বিরুদ্ধে অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র নিস্ফল হবেই হবে"।
        বর্তমান সরকার রাজনীতিকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রগতির গনতান্ত্রিক ধারায় সংযোগ স্থাপন করে সমাজের সর্বক্ষেত্রে সফল বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। "গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ" সাংবিধানিক ভাবে স্বীকৃত সংবিধানের শীর্ষে উপস্থাপিত ব্যবস্থাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সর্বক্ষেত্রে জনগনের নির্বাচিত প্রতিনীধির নিকট জবাবদিহীতার অঙ্গিকার পূরনে নিয়ন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।"" মহান মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকার, ৩০ লক্ষ শহিদের আত্মত্যাগ, প্রায় পৌনে চারলক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলার মহান দায়িত্ব নিয়ে জাতির জনকের কন্যা ২০০৮ইং সালে দায়িত্ব গ্রহন করেন। ইতিমধ্যে সফল ভাবে সরকারের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংস্কার সাধন পুর্বক "অর্থনীতিকে রাজনীতির পরিপূরক" নীতিতে পরিনত করে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। কায়েমী স্বার্থবাদি চক্রের ষড়যন্ত্রকে অসীম ধৈয্যের সঙ্গে মোকাবেলা করে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত সমুহ বাস্তবায়িত করে চলেছেন।"রুপকল্প ২০২১" সফল বাস্তবায়নের কারনে ইতিমধ্যে দেশ দারিদ্রতা জয় করে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরীত হয়েছে। অচিরেই কাংক্ষীত "মধ্যম আয়ের" দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটাতে যাচ্ছে--"জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা।" "রুপকল্প ২০৪১" এর কায্যক্রমও দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সমুহকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বিদ্যুৎ, সমুদ্রবন্দর, সড়ক ও সেতু, বিমান বন্দর, নৌবন্দর, জ্বালানী সহ আনুষাঙ্গিক বিষায়াদির কয়েকটি বড় বড় প্রজেক্টের কাজ উদ্ভোধন করে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অচিরেই প্রকল্পগুলীর সফলতা দৃশ্যমান হবে। উল্লেখিত সংস্কার এবং অর্থনৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতি-রাজনীতির পরিপুরক হওয়ায় দৃশ্যত অগ্রগতির সফলতায় বিশ্ব আজ হতবাক।
        তৃতীয় বিশ্বের দেশ সমুহের উন্নয়নের রোল মডেল বর্তমান জাতির জনকের স্বপ্নের বাংলাদেশ।" গনের সাথে "প্রজা"র সার্থক সমন্বয়ের কারনেই উন্নতি অগ্রগতি দৃশ্যমান হচ্ছে। গনতন্ত্রকে রাষ্ট্র ও সরকারের সর্বক্ষেত্রে "প্রাতিষ্ঠানীক ভিত্তির" উপর দাঁড় করিয়ে "অর্থনীতির" সাথে সফল সংযোগ ঘটিয়েছেন। ইতিমধ্যে জনমনেও নতুন ধারনাটি সফল ভাবে উপস্থাপন করে অগ্রগতি সাধনের  সফলতা দৃশ্যমান করতে পেরেছেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নতুন ধারনার পুরস্কারও বাংলাদেশ নগদেই পেয়েছে। স্বীকৃতি মিলছে বিশ্বজুড়ে---"হার্ভার্ড ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে করা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘দ্য গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট" ২০১৫’-তে রাষ্ট্রক্ষমতায় নারীর অবস্থান বিবেচনায় সবাইকে পেছনে ফেলে বিশ্বের এক নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম।
     তথাকথিত সভ্যদুনিয়াকে বিস্মিত করে বাংলাদেশ "মডারেট মুসলিম কান্ট্রি"র তকমা ঝেড়ে উদার গনতান্ত্রিক দেশের সাটিফিকেট অর্জনে সক্ষম হয়েছে।" জাতির জনক বাঙালী জাতিকে অসীম ত্যাগের বিনিময়ে দিয়েছেন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা ৫৫ হাজার বর্গমাইলের একটি নতুন "বাংলা দেশ।" তাঁর কন্যা জাতির জনকের আদর্শে উজ্জিবীত হয়ে জাতিকে নিয়ন্তর পরিশ্রমের বিনীময়ে, সদা মৃত্যুর ঝুঁকি উপেক্ষা করে, অশুভ শক্তির প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র ধৈয্যের সঙ্গে মোকাবেলা করে বাঙ্গালী জাতিকে দিয়ে যাচ্ছেন অর্থনৈতিক উন্নতি, অগ্রগতি, সম্মান, মায্যদা, বাঙ্গালিত্বের মহিমা সর্বপরি একলক্ষ বর্গমাইলের অধিক "বর্ধিত নতুন বাংলাদেশ"।
      প্রচলিত ধারনার রাজনীতিকে পরিহার করে নতুন ধারার রাজনীতির প্রচলন করার লক্ষে--"রাজনীতিকে গড়ে তুলছেন অর্থনীতির পরিপুরক হিসেবে"। জনগনের আশা আক্ষাংকার প্রতিফলন ঘটাতে স্বাধীনতার স্বাদ ঘরে ঘরে পৌছানোর লক্ষে--"গনতন্ত্রের সঙ্গে অর্থনীতির সার্থক সমন্বয়ের মাধ্যমে দিয়ে যাচ্ছেন--"সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানীকতা।"ইহাই বর্তমানে কায়েমী স্বার্থবাদিদের মাথাব্যাথার অন্যতম কারন।দেশ উন্নত, সমৃদ্ধ হলে তাঁদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন কখনই সম্ভব হবেনা--- " ইহাই মুল চিন্তার বিষয়।"
                   ruhulaminmujumder27@gmail.com
                            "জয়বাংলা            জয়বঙ্গবন্ধু"


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন