অ-শুভশক্তির আঁধারকে ফুল দেয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সংজ্ঞায় পড়ে? "অভিলম্বে ব্যাখ্যা চাই"

  অ-শুভশক্তির আঁধারকে ফুল দেয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সংজ্ঞায় পড়ে?                                       "অভিলম্বে ব্যাখ্যা চাই।"
           (রুহুল  আমিন  মজুমদার)

       
          নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফুলের তোড়া হাতে শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যান তিনি।
 প্রায় আধাঘণ্টা কেবিনে থেকে মান্নার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য কামরুল হাসানকে ফোন করে সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।
(ওবায়দুল কাদের বলেন, দীর্ঘদিন আমরা একসঙ্গে রাজনীতি করেছি। রাজনীতির বাইরেও একটা সম্পর্ক থাকে।)
           উল্লেখিত খবরটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।ওবায়দুল কাদের নি:সন্দেহে বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মধ্যে অন্যতম।তাঁর দুরদর্শিতা, বিচক্ষনতা, সাংগঠনিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত।আমার আলোচনা সেই দিকে মোটেই নয়--
      গনতান্ত্রিক রাজনীতিতে শিষ্টাচার বাঞ্চনীয়।আদর্শগত পার্থক্য থাকতে পারে, গনতন্ত্রের চর্চায় পার্থক্য থাকতে পারে, গনতন্ত্রের প্রায়োগিক রীতিতে পার্থক্য থাকতে পারে।গনতন্ত্রে বহুমত ও পথের ভিন্নতা থাকা সত্বেও সকল রাজনৈতিক দলের সহবস্থান নিশ্চিত হয় বিধায় বিশ্বব্যাপি গনতান্ত্রিক শাষনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, সংগ্রাম নিয়ন্তর প্রবাহমান রয়েছে।গনতন্ত্রের সৌন্দয্য, সৌহার্দতা, সংযমতার নিকট বিশ্বের পরাক্রমশালী দর্শনভিত্তিক শাষন ব্যবস্থাও নতিস্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে।একদা সৌভিয়েত ইউনিয়নের জগৎবিখ্যাত দার্শনীক মার্কস, লেলিনের দর্শনভিত্তিক সামাজতান্ত্রিক শাষন ব্যবস্থাও গনমানুষের  আক্ষাংখিত গনতান্ত্রিক দর্শনের নিকট ধরাশায়ী হতে বাধ্য হয়েছে।

     রাজনৈতিক শিষ্টাচার গনতন্ত্রের সৌন্দয্যকে মহিমাম্ভিত করেছে নি:সন্দেহে। কারন গনতন্ত্রে সকল বাহনের উপস্থীতি পরিলক্ষিত হলেও ষড়যন্ত্রের উপস্থীতি আদৌ নেই।যেহেতু গনতন্ত্রের ধর্মই প্রকাশ্য সেহেতু গোপনীয়তা সর্বক্ষেত্রেই পরিত্যাজ্য হিসেবে স্বীকৃত।

       সাংবাদিক, কলামিষ্ট শফিক রেহমান, গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূছ, ব্রাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হোসেন আবেদ, গনস্বাস্থ্যের জাফর উল্যা চৌধুরী উল্লেখিত ব্যাক্তিদের কোন রাজনৈতিক দল নেই।গনমানুষের সাথে তাঁদের কোন সম্পর্ক নেই কিন্তু তাঁরা বাংলাদেশের ভাগ্যনিয়ন্ত্রক হতে আগ্রহী।প্রকাশ্যে সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতিতে তাঁদের বিচরন রয়েছে শুধুমাত্র তাঁদের কায়েমী স্বার্থ্য চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে। এইশ্রেনীটি স্বার্থ্য উদ্ধারে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেও তাঁদের বিবেকে বাঁধেনা। অ-প্রকাশ্য সমগোত্রীয়  আরো বহু সংখ্যক মুখোশধারীর বিচরন আমাদের সমাজে রয়েছে।তাঁদের মধ্যে গর্ত থেকে বের হয়ে খোলানছে  পরিবর্তন করে এসেছিল ২০০৮ ইংরেজী সালে একটি অংশ। তাঁরা সারা বাংলাদেশে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে দীর্ঘ দুইবছর জনগনের রক্ত  শোষন করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।তাঁর আগে উনারাই মিডিয়ায় সুন্দর সুন্দর কথা বলে সরকার সমুহকে গনতন্ত্রের ছবক দিতেন, শাষন ব্যবস্থার পাঠ দিতেন, গনতন্ত্রের বুলিতে জনগনকে মুখরীত করে রাখতেন।তাঁদের আলোচনা শুনে চায়ের দোকানে আমজনতা তর্কের ফানুস উড়িয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর উঠাতেন।

    মাহমুদুর রহমান (মান্না), নুরে আলম সিদ্দিকী(চার খলিফাভুক্ত), সিরাজুল আলম খাঁন (দাদাভাই), ফেরদৌস আহম্মেদ কৌরেশী(ফখরুদ্দিন,মাঈনুদ্দিন সরকারের রাজপথের প্রকাশ্য শক্তি)সর্বদা অ-প্রকাশ্য ষড়যন্ত্রকারী। তাঁদের শক্তির উৎস দেশের অভ্যন্তরে বিদ্যমান রাজনৈতিক দল এবং সরকারের প্রতিটি অঙ্গে সংগোপনে বিরাজমান। প্রয়োজনীয় সময় উক্ত শক্তি দৃশ্যমান হতে দেখা যায়। উনারা প্রত্যেকেই রাজনীতিতে নীজস্ব দলে ভাল অবস্থানে ছিলেন।কেউ কেউ থিংক ট্যাংকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।পর্দার অন্তরালে থেকে কায্যসিদ্ধি করাই তাঁদের মুখ্য ভাবনা।বিদ্যমান সকল রাজনৈতিক দলের ভিতরে এবং বাইরে তাঁদের রয়েছে অসংখ্য মুুরিদান,অনুসারি, শুভানুধ্যায়ী , শুভাকাংখী।

    ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি, ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, রাশেদ খাঁন মেনন, লে, কর্ণেল আকতারুজ্জমান প্রমুখ রাজনীতির সবজান্তাদলের অন্তভুক্ত।দলীয় ছায়ায় উনারা সবাই বাঘের চেয়ে শক্তিধর ছিলেন; ছায়া সরে যাওয়ার পর সবাই কাগুজে বাঘে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের দ্বারা জনগন উপকৃত হতে পারে;দেশ ও জনগনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।তম্মধ্যে রাশেদ খাঁন মেননের নিজস্ব দলীয় অবস্থা ও অবস্থান পোক্ত বিধায় রাজনীতিতে কোন রকমে অস্তিত্ব ধরে রাখতে পেরেছেন।
      গনতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বলতে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের মধ্যে এবং রাজনৈতিক ব্যাক্তির মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ অবস্থান বিরাজমান রাখা; যাহা দেশে উদ্ভুত সংকট, সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারে। আদর্শগত বিরুধ থাকা সত্বেও দেশের বৃহত্তর স্বার্থের প্রয়োজনে সৌহার্দপুর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান জনগনের ঐক্য গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তেমনি ব্যাক্তিগত সম্পর্ককে রাজনৈতিক সৌহার্দপুর্ণ অবস্থান সৃষ্টির লক্ষে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে নেতিবাচক ভাবে দেখার উপায় নেই।উল্লেখিত দিকটি রাজনীতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য মাত্র।

     দেশে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি করে যে সমস্ত ব্যাক্তি বা গোষ্টি বিদেশী রাষ্ট্রের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে অথবা তাঁদের কায়েমী স্বার্থ হাসিলের চেষ্টারত:  থাকে--"রাজনীতির ভাষায় তাঁদের বলা হয় অশুভ শক্তি"।অশুভশক্তির নিজস্ব কোন রাজনৈতিক ক্ষমতা বা গনতান্ত্রিক কোন রাজনৈতিক দল থাকেনা। তাঁরা সাম্রাজ্যবাদি চক্রের এজেন্ডা ববাস্তবায়নের লক্ষে কখনও সামাজিক সংস্থা, কখনও অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান কখনও বা এন, জি ও এর মাধ্যমে তাঁদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করতে থাকে।তাঁদের এই কাজে সাম্রাজ্যবাদি চক্রের একাধিক সংস্থা (বিশ্বব্যাংক সহ) বিভিন্নভাবে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। দেশের ক্রান্তিকাল সৃষ্টির হোতা প্রথমোক্ত শক্তির অন্তরালে অশুভশক্তির অবস্থান ছায়াসদৃস হয়ে নির্বিত্তে আত্মগোপনে অবস্থান গ্রহন করে। উপযুক্ত সময়ে তাঁরা বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে তাঁদের পোষ্যব্যাক্তি, সরকারের উচ্চমহল, বিদেশী দুতাবাস সমুহের মাধ্যমে কায্যসিদ্ধির চেষ্টারত: থাকে।

     প্রথমোক্ত দলটি আচরনে যদিও অনুভব হয় তাঁরা একটা রাজনৈতিক দলের থিমট্যাংক হিসেবে কাজ করছে--' তা কিন্তু আদৌ সত্য নয়'।সর্বসময়ে তাঁরা রাষ্ট্রীয় বেনিফিসিয়ারী।তাঁদের চেনা অত্যান্ত সহজ কিন্তু গোপন ষড়যন্ত্রকারীদের চেনার কোন উপায় থাকেনা।তাঁরা সকল গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের জন্যেই বিপদজনক। প্রতিষ্ঠিত দলে উপদল সৃষ্টি করে তাঁরা তাঁদের কায্যসিদ্ধি করতেও পিছপা হয়না। রাষ্ট্র সমাজ, রাজনৈতিক দল, সরকার সবার জন্যই এই চক্রটি সমান বিপদ বয়ে আনতে পারে।তাই সকল দল তাঁর সরকার পরিচালনায় অশুভ শক্তিটির প্রতি সজাগ দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে হয়। যতদিন পয্যন্ত অশুভ শক্তির ক্ষমতার উৎস নিস্তেজ করা সম্ভব না হয়; ততদিন সরকার স্থীতিশীলতা পেতে পারেনা।

    বর্তমান সরকারের অ-প্রকাশ্য অ-শুভশক্তির প্রকাশ্যরুপ 'মাহমুদুর রহমান মান্না।' তিনি নাগরিক কমিটির অভ্যন্তরে অবস্থান নিয়ে সরকার উৎখাতে সেনাবাহিনীকে প্রলুব্ধ করেছেন; ঢাকা ইউনিভারসিটিতে হত্যাকান্ড ঘটিয়ে অস্থীতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টারত: ছিলেন। সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা জনাব "খোকা" গনতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল বিধায় তাঁর সাথে টেলিফোনের আলাপ প্রকাশ করেছেন।তাঁর আগে সংঘটিত তদ্রুপ 'বি ডি আর' হত্যাযজ্ঞের ষড়যন্ত্র 'পিন্টু' কি প্রকাশ করেছে? অ-শুভশক্তি সময়ের প্রয়োজনে তাঁদের পোষ্যদের ব্যবহার করে থাকে। খোকাও তদ্রুপ পোষ্যই বটে--- 'কি কারনে ঘটনা প্রকাশ করেছেন সময় তা প্রকাশিত হবে'।

      মাহমুদুর রহমান মান্না যতদিন রাজনীতিতে ছিলেন ততদিন তাঁর কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়নি।১/১১ সৃষ্টি হলে তাঁর মত অনেকেরই মুখোশ খুলে পড়ে। রাজনৈতিক ব্যাক্তির জেলমুক্তি বা অন্য কোন কারনে ফুল নিয়ে হাসপাতালে গেলে 'আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদকে'র বিরুদ্ধে প্রশ্ন উত্থাপনের কোন কারনই ছিলনা। "মান্না" বর্তমান সরকারের বিশেষকরে শেখ হাসিনার জন্যে একজন শক্তিধর অ-শুভশক্তির আঁধার।সেই অ-শুভশক্তির  হোতার জন্যে ফুল নিয়ে তাঁর দলের সাধারন সম্পাদক  হাসপাতালে কোন অবস্থায় যেতে পারেন না। 'রাজনৈতিক শিষ্টাচারের কোন সংজ্ঞাতেই অ-শুভশক্তির আঁধারের স্থান নেই।' দেশে বিদ্যমান সকল গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংস্থা, রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্যেই "মান্না গং বিষফোঁড়া।"

      ২০০৯ ইং সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে অদ্যাবদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অশুভ শক্তির সকল উৎস নিস্তেজ করার কাজে রাষ্ট্রশক্তিকে সর্বাত্মক কাজে লাগিয়েছেন।আওয়ামী লীগ অ-শুভশক্তির বিরুদ্ধে প্র
তিনিয়ত তাঁর সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। দলের অন্যতম শক্তিধর ব্যাক্তি অ-শুভশক্তির ছায়ার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে যাবেন- এই সময়ে--"ইহা কাম্য হতে পারেনা।"

    সারাদেশব্যাপি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যখন নারায়নগঞ্জে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিশাল জয়ে আনন্দে আত্মহারা ; তখনই তাঁদের সেই আনন্দের বন্যায় কালমেঘের ছায়ায়  ঢেকে দিলেন জনাব 'ওবায়দুল কাদের সাহেব' ফুল নিয়ে মান্না দর্শন করে।
     অবিলম্ভে জনাব " মান্না" সাহেবকে ফুলের তোড়া উপহার দেয়ার ব্যাখ্যা দাবি করছে দেশব্যাপি চড়িয়ে চিটিয়ে থাকা অসংখ্য মুজিব সৈনিক।আশা করি উপযুক্ত জবাব দিয়ে আশান্ত মনকে শান্ত করার উদ্যোগ নিবেন বিচক্ষন নেতা।
               ruhulaminmujumder27@gmail.com
                   "জয়বাংলা          জয়বঙ্গবন্ধু"
   
   
   
    

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন