"নাসিক" নির্বাচন, বিমানে নাশকতা-"বিএনপির হাসির তাৎপয্যের সাথে সম্পৃত্ত।"
(রুহুল  আমিন  মজুমদার)
রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনার পর বিএনপি যারপরনাই খুশীর ভাব প্রদর্শনের বহুবিদ কারন রয়েছে।রাজনীতির ধারাবাহিকতা অনুযায়ী গনতান্ত্রিক কোন দলের ভুল সিদ্ধান্তের কারনে একবার যদি জনবিচ্ছিন্ন হয় সেই দলটি ঘুরে দাঁড়াতে বহু সময়ের প্রয়োজন হয়।রাজনীতির এই সুত্রটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়--পাকিস্তান আমলের মুসলিম লীগের ক্ষেত্রে যেমন উদাহরন টি দেয়া যায় তেমনি ভারতের কংগ্রেস দলের ক্ষেত্রেও একই ভাবে উদাহরনটি টেনে আনা যেতে পারে।
'৭৪ ইং সালে ইন্দিরা গান্ধী দেশব্যাপি জরুরী অবস্থা ঘোষনা করে যে ভুলটি করেছিলেন তাঁর খেসারত আজও বয়ে বেড়াচ্ছে দলটি।ভারতব্যাপি একক দল ক্রমান্বয়ে শক্তি হারিয়ে ক্ষমতার বৃত্তের বাইরে চলে যাওয়ার কারনে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে হিন্দুত্ববাদি দলের ক্রমশ উত্থান ঘটাতে সহায়ক ভুমিকা পালন করেছে। হিন্দুত্ববাদি বিজেপির শুধুমাত্র বিস্তৃতি ঘটেছে বললে ভুল হবে-- ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতেও পৌছে গেছে।এবারকার নির্বাচনে সব প্রদেশে ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে তাঁদের শেকড়ের গভীরতাও প্রমান করেছে। কত গভীরে পৌছে গেছে ভারতের সব প্রদেশে উপস্থীতি জানান দিয়ে তাঁর সত্যতা বিশ্ববাসির নিকট তুলে ধরতেও সক্ষম হয়েছে।কংগ্রেস ৭৪ ইং সালের ভুলটি যদি না করতেন তবে অন্য ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটলেও---"হিন্দু জাতিয়তাবাদি দলের উত্থান কোন ভাবেই সম্ভব হতনা।"পাকিস্তান সৃষ্টির প্রথামার্ধে বাঙ্গালীর ভাষা কেড়ে নেয়ার প্রচেষ্টা না করলে মুসলিম লীগের পতন পাকিস্তানের পুর্বাংশে সহজেই ঘটতনা--বাংলাদেশের অভ্যুদয় অন্যকোন ইস্যুতে হলেও ভাষা রক্ষার সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে  ধর্মনিরপেক্ষতার আদলে হয়ত সংঘঠিত হ'ত না।"
 বিএনপি প্রতিনীধি দলের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে উৎফুল্লতার সবিশেষ কারন তাঁদেরকে দেখা করার সুযোগ দেয়া,সামনে অনুষ্ঠিত নাসিক নির্বাচনে নেতাকর্মীদের ভোটযুদ্ধে স্বাভাবিক অংশগ্রহন নিশ্চিত করে সাধারন ভোটারদের তাঁদের প্রতি  মুল্যায়ন কেমন হয় তা যাছাই-- "একমাত্র উদ্দেশ্য।" সারাদেশের স্থানীয় সরকারে অংশ গ্রহন নিশ্চিত করতে না পেরে তাঁরা ঠিকই বুঝতে পেরেছে সরকারের একতরফা নীতির কারনে ভোট একতরফা হয়নি--"তাঁদের অংশগ্রহন নিশ্চিত ছিলনা বলেই একতরফা  হয়েছে অনেকাংশে"।
" নাসিক" নির্বাচনকে বেছে নেয়ার অন্যতম কারন---"বিগত দিনে নারায়নগঞ্জে সাত খুনের কারন সহ সরকার দলের আরো কিছু নেতিবাচক কর্মকান্ডে আওয়ামীলীগ জনগন থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে"।এই সু্যোগে বিএনপি প্রার্থীকে বিজয়ী করে নিয়ে আসতে পারলে জাতীয় ও আন্তজাতিকভাবে বিএনপির অবস্থান জানান দেয়া যাবে এই বলে--"সুষ্ট নির্বাচন হলে বিএনপি সারা দেশে ঠিক নারায়ন গঞ্জের মতই জিততে পারবে"।তাই  সারাদিন দেখা গেছে কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের উৎসাহ দেয়ার লক্ষে ইতিবাচক বিবৃতি দেয়া হচ্ছে এবং কোন অবস্থায় এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বাহিরে না আসার ব্রিফিং দেয়া হচ্ছে।তাঁদের ধারনা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতিবাচক কর্মকান্ডে তাঁদের জেতার পাল্লা ভারী হয়ে আছে--"নীরবে তাঁদের পক্ষে ভোটের বিপ্লব ঘটবে।"
  তাঁদের ধারনা অমূলক হ'তনা যদিনা তাঁদের দ্বারা ২০১৪/১৫ সালে হঠকারি রাজনীতি সংগঠিত না হ'ত।এই লেখাটি যখন শুরু করতে বসেছি তখন সবেমাত্র নির্বাচন শেষ হয়ে গননার জন্য কর্মকর্তারা প্রস্তুতি গ্রহন করছেন।আশা করি স্থানীয় নেতাদের নেতিবাচক কর্মকান্ডকে নারায়নগঞ্জ বাসি খুব বেশী ধর্তব্যের মধ্যে নেয়নি।সকাল থেকে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থীতি তাই প্রমান করে। ভোটারের উপস্থীতির অর্থই হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয়--"সন্ত্রাসী মাস্তানের উপস্থীতির অর্থই হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভরাডুবি"।কারন আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট দেয় সাধারন মানুষ- সাধারন মানুষের সমাগম যেহেতু ভোট কেন্দ্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয়ও অনেকাংশে নিশ্চিত ভাবা অমূলক হবে না।তাঁদের সৃষ্ট হটকারী রাজনীতির কারনে দেশ ও জনগন যে ক্ষতির সম্মুখ্যিন হয়েছিল নারায়ন গঞ্জের সাতখুন এবং আইভি বনাম শামীম ওসমানের কাঁদাছোড়াছোড়ি তাঁর চেয়ে হাজার গুন কম ইহা বুঝতে বিএনপির হাই থর্টের রাজনীতিবীদদের যে ভুল হয়েছে----"রাত পোয়ালেই আমার কথার সত্যতা পাওয়া যাবে আসা করি।" যদিও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতি জনগন বিমূখ হন তাহলেও খুব বেশী ভোটে বিএনপি প্রার্থী যে জিতবেনা ইহা আমি হলফ করেই বলতে পারি। সাত খুনের ঘটনা না ঘটলে কম করে হলেও একলক্ষ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জিতে যেত নির্দ্ধিধায় বলতে পারতাম।
 সংসদ বয়কট, প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন আমন্ত্রণ বয়কট, নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান বয়কট, নির্বাচন বয়কটের পটভূমিতে পাকিস্তানি মদদে পর পর দুইবার আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করার পর বিএনপির হাতে রাজপথে আসার বর্তমানে কোন ইস্যু নেই। আগেই উল্লেখ করেছি---"একবার বাস্তবতাবর্জিত গণবিচ্ছিন্ন  হঠকারী কিছু করে ফেললে বাস্তবভিত্তিক গণসম্পৃক্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল স্বাভাবিক রাজনৈতিক পদ্ধতিতে ফেরা খুবই জটিল কঠিন ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে উঠে।ততদিন ধৈয্য ধরে রাজনীতি করার নেতা বিএনপিতে একজন ও যে নেই--" ইহা বলার অপেক্ষা রাখেনা।"
 তাই দেখা গেছে নির্বাচন বর্জন করে অশুভশক্তিকে ক্ষমতায় আনার চক্রান্তে ষড়যন্ত্রমুলক অপ- প্রচার থেকে হঠকারী নাশকতামূলক কর্মকান্ড কিছুই বাদ যায়নি-- "যাহা তাঁদের দ্বারা সংঘটিত করার বাকী আছে।" সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর দেশ পরিচালনায় শীর্ষস্থানীয়দের চোরাগুপ্তা নাশকতার মাধ্যমে হত্যা করে হলেও শুন্যতা সৃষ্টির একটি লক্ষন ইতিমধ্যেই লক্ষ করা গেছে।আমি সেই দিনেই লিখেছিলাম দায়িত্ব প্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং দলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রধানমন্ত্রীর বিমানের নাটবল্টু খুলে রাখার চক্রান্ত "নাশকতা না অবহেলা" বুঝা যাবে।অবশ্যই ইহা যে একটি বড় ধরনের নাশকতা ছিল ইতিমধ্যেই তা প্রমানীত হয়েছে। একইভাবে রাষ্ট্রপতির বিমানেও দায্য পদার্থের সংমিশ্রন ঘটিয়ে আকাশে অগ্নি প্রজ্জলনের মাধ্যমে হত্যা প্রচেষ্টা হয়েছিল--"ইহাও সত্য হয়ে দেখা দিবে কিছু দিনের মধ্যেই।"
 তাই দেশ পরিচালনায় নেতৃত্বে আসীন এক বা একাধিক নেতাকে হত্যা বা অন্য যে কোনভাবে  ভাগ্যবিড়ম্বিত পথটি লাফ দিয়ে পার হওয়ার একাধিক সুযোগের অপেক্ষার প্রহর গুনছে বিএনপি দলটি।অতি সহজে রাজনীতিতে সচল ও সক্রিয় হয়ে ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে অবৈধ শক্তির হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়ার ইস্যু পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মাথা তুলে দাঁড়ানোর ইস্যু দলটির এখন চাই-ই চাই।
        ইস্যু যদি পেতে হয় তবে দলটিকে এখন খুশি খুশি ভাব দেখাতে হবে। রাষ্ট্রপতি গার্জিয়ান, রাষ্ট্রপতি আশার বাণী শুনিয়েছেন, সংলাপ সৌহার্দ্যপূর্ণ ও উষ্ণতম, সংলাপ ফলপ্রসূ প্রভৃতি বলে রাষ্ট্রপতির প্রশংসায় বিএনপি এখন গদগদ থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই। ভেতরে ভেতরে বিএনপির  ঝুঁকে থাকা অপরিপক্ষ সুশীল সমাজও এই খুশি ভাবটা মধ্যরাতের টকসো গুলীতে সামনে আনতে তৎপর থাকবে। এখন খুশিতে গদগদ না হলে পরে সরকারকে দোষারোপ করে মাঠে নামার ইস্যু পাবে কিভাবে দলটি? জনগনের মধ্যে এখন বিএনপি তীব্র আশাবাদ সৃষ্টি করতে চাইবে --"নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সদিচ্ছা রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা কুক্ষিগত ও দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য সমঝোতা চায়না। প্রকৃতপক্ষে এই আশাবাদ আরো ব্যাপকভাবে সৃষ্টি করতেই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে সরে এসে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি সামনে এনেছে বিএনপি। কেননা জনগণকে তারা এই বুঝ দিতে চায় যে---"বিএনপি এখন নির্বাচন বিষয়ে যে কোনো ধরনের সমঝোতায় রাজি"।
       নির্বাচন কমিশন সংস্কার এবং সহায়ক সরকারের আলোচনায় অনির্ধারীত সময় দিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে এক বা একাধিক হত্যাকান্ড ঘটিয়ে তাঁর প্রতিবাদে হলেও মাঠে আসাই তাঁদের এখন মূর্খ্য উদ্দেশ্য। সরকারের উচ্চ পয্যায় হত্যাকান্ড ঘটানোর কাজটি বাংলাদেশ থেকে মনিটর করা হচ্ছেনা--"ইহা মনিটর করা হচ্ছে তাঁদের কোটি কোটি ডলার ব্যায়ে নিয়োগকৃত লবিষ্ট ফার্মকে দিয়ে। বিমান কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিদেশ সফর বাতিল করে দিলে কখনই বিমানে নাশকতার চেষ্টা পরিলক্ষিত হবে না। অচিরেই ধৃতব্যাক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে দেখা যাবে--"বিদেশ সফর করে আসা কোন এক কর্মকর্তার যোগ সাজসে পর পর দুইবার বিমানে নাশকতা করার চেষ্টা হয়েছিল"।আমার এই বক্তব্য কখনই অসার হবেনা --" এই আমার দৃড বিশ্বাস"।
  ফিরে আসি বিএনপির খুশির তাৎপয্যে---" আমি মনে করি অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ বিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান বিএনপিকে বর্তমান সরকারের গনতন্ত্রের চর্চার প্রতি আগ্রহের বোধোদয় সৃষ্টি করার সর্বৈব চেষ্টা করেছেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে লক্ষ্য করেই  বলেছেন--"যে কোনো আলোচনা সমস্যা সমাধানে বহুমুখী পথ দেখায়।'’ বলাই বাহুল্য, এই বিষয়টা বুঝতেই অতীতে বিশেষত বিগত নির্বাচনের আগে চরম ভুল করেছেন বিএনপি-জামায়াত জোট নেত্রী খালেদা জিয়া। কেবল ভুলই নয়, রাজনীতিতে মাত্রাতিরিক্ত লিফট পাওয়া অর্বাচীন এবং পাকিস্তানি কানেকশনে দুর্দমনীয় হয়ে ওঠা ছেলে তারেকের পরামর্শে এর সম্পূর্ণ বিপরীত পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি।তাঁর খেসারত দিতে দিতেই দলটি সময়ে বিলীন হয়ে যাবে--" মুসলিম লীগ এবং ভারতের কংগ্রেসের প্রতি নজর দিলে বিএনপি কর্মীদের ভালভাবেই উপলব্দিতে আসবে।"
     " নাসিক" নির্বাচনে কোন কারনে যদি বিএনপির ভরাডুবি ঘটে তাহলে ধরেই নিতে পারি আর কোন স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি ভাল ফলাফল করতে পারবেনা বিএনপি দলটি। যদিও কখনও কোথাও জিতে যায় তল্লাসি দিলে দেখা যাবে বিজিত ব্যাক্তি বিএনপির নমিনেশন না পেয়ে-- 'স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি হতেন আরো ভাল ভোট পেয়ে জিতে আসতেন।'প্রত্যেক এলাকায় রাজনীতির বাইরেও কিছু সাদামনের মানুষ আছেন যারা ভোটে দাঁড়ালে দলমত নির্বিশেষে সাধারন মানুষ ভোট দিয়ে জিতিয়ে দেয়-- "সময় সময় বিএনপির ক্ষেত্রেও তাই ঘটবে, এর চেয়ে বেশী নয়।"
     তবে কামনা করি বিএনপির এই হাসি অমলিন থাকুক। গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় তাঁদের অংশ গ্রহন গনতন্ত্রের মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  নিকট " নাই মামার চেয়ে কানা মামার" কাজ দিলেও কোনরকমে চালাতে পারবেন।"যেহেতু ক্ষমতা ভোগের কোন লক্ষন দেশরত্ম শেখ হাসিনার বিগত শাষনকালে ফুঁটে উঠেনি--ভবিষ্যতেও দেখা যাবেনা--এই বিশ্বাস রাখতেই পারি।
       ruhulaminmujumder27@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন