মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরার অবদান অস্বিকার---বাঙ্গালী জাতির হীনমন্যতার পরিচয় বহন করে।

মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরার অবদান অস্বিকার--বাঙ্গালী জাতির হীনমন্যতার পরিচয় বহন করে।
(রুহুল আমিন মজুমদার)
      বাংলাদেশের কিছু কিছু বুদ্ধিজীবি বলতে শুনি---'ভারত তাঁর স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।' আবার অনেকে বলতে শুনা যায় ভারত বাংলাদেশকে গিলে খাওয়ার জন্যে পাকিস্তান থেকে আলাদা করেছে।বিব্রতকর বিষয়টি হচ্ছে -মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা, আবার তাঁদের অবদানের স্বিকৃতি দিতে গেলে ঐ সমস্ত বুদ্ধিজীবিদের মাথায় ভাঁজ পড়া। ইদানিং তাঁরা নতুন একটি বাক্যালাপ বাজারে ছেড়ে দিয়েছে--"ভারত সাহায্য না করলেও মুক্তিযোদ্ধারা এককভাবে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে পারত।"
        ঐ সমস্ত বুদ্ধিজীবিরা কি জানে না-- যে কোন ঘটনার অন্দরে বহু ঘটনা থাকে? সাধারনভাবে গনতান্ত্রিক আন্দোলন রাজপথে সংঘঠিত হতে দেখা যায়, যাহা দেশ বিদেশের জনগনের দৃষ্টিতে থাকে। কিন্তু অন্দর মহলে সরকার এবং আন্দোলনকারী শক্তির মধ্যে কিছু কিছু বুঝাপড়া হয়--তা কি কেউ অস্বীকার করতে পারবে?
        কোন কোন ফ্যাসিবাদি রাজনৈতিক দল তাঁদের কায়েমী স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে সম্পুর্ণ বিপরীত মুখী একাধিক দেশী বিদেশী শক্তির সঙ্গে আঁতাতে লিপ্ত হয়-ইহাও কি অস্বীকার করা সম্ভব? যেমন---''২০১৪/১৫ সালের  বিগত চার দলীয় জোটের আন্দোলনে জঙ্গী সম্পৃত্ততা প্রমানীত সত্য হিসেবে দেরীতে হলেও সর্বমহলের বোধগম্যতায় আসেনি? মুসলিম বিশ্বের শত্রু ইসরাইলের 'মোসাদ' (গোয়েন্দা সংস্থা)এর সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগের ঘটনাটি দিবালোকের মত সত্যি হয়ে বাংলাদেশ সহ ইসলামী বিশ্বকে বিব্রত করেনি?"।
      বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ন্যায় এতবড় একটি ঘটনা, যাহা বিশ্ব ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই, তাঁর নেপথ্যৈ কোন ঘটনা থাকবেনা তাও কি সম্ভব? আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি মিথ্যা? ৭১এর মুক্তিযুদ্ধের কত বছর আগে আগড়তলা ষড়যন্ত্র পাকিস্তান সরকারের নজরে এসেছিল? বঙ্গবন্ধু যদি স্বাধীনতাই না চাইতেন- বাঙ্গালী তরুন সেনা অফিসার সমন্বয়ে অভিযুক্ত দলটিকে কেন আগড়তলা পাঠিয়েছিলেন? তাঁর আগে তাঁর বিশ্বস্ত সহচরকে কেন জহরলাল নেহেরুর নিকট পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিলেন--"বাংলাদেশ স্বাধীন হতে গেলে ভারতের মনোভাব কি হবে? কেমন সাহায্য সহযোগীতা পাওয়া যাবে?"
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঐ মহলটি দীর্ঘ ত্রিশবছরের অধিক সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি,গনতন্ত্রকে বিপথে নিয়ে গিয়েছিল একটিমাত্র সত্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে---"বাংলাদেশে কি আছে, পাকিস্তান থাকাই ভাল ছিল"।২০০১ ইং থেকে ২০০৬ ইং সাল ছিল তাঁদের জন্যে স্বর্ণযুগ--" বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পেরেছিল।"বাংলাদেশ প্রত্যেকটি সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতির সূচকে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে একনম্বর স্থানটি একনাগাড়ে পাঁছবার দখলে রাখতে পেরেছিল।" তাঁরা সম্পুর্ণ একটি হতাশাগ্রস্ত জাতি বিনির্মানে যা যা করার প্রয়োজন ছিল সকল শক্তি উজাড় করে সেই চেষ্টা করে গেছেন।অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁরা সফলও হয়েছেন।
সমাজে বলি আর ব্যাক্তিতে বলি-স্বার্থ ছাড়া কে কাকে সাহায্য করে? স্বার্থ অবশ্যই একটা ছিল।স্বার্থটি হচ্ছে বাংলাদেশের জনগন যে আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একতাবদ্ধ হয়েছিল---"গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ"।ভারতের সংবিধানে দেশটির স্বাধীনতা প্রাপ্তির লগ্ন থেকে  উল্লেখীত চারটি মুলনীতির মধ্যে তিনটিরই অনুসারী(কংগ্রেস দলীয়ভাবেও তাই)। সুতারাং আদর্শিক দিক থেকে সমমনা পাশ্ববর্তী প্রতিবেশী--"সমাজ, রাষ্ট্র, ব্যাক্তি"--কে না চায়?
 ধর্মভিত্তিক দল বি, জি পি ভারতের সাধারন নির্বাচনে জয়ী হলে ঐ সমস্ত বুদ্ধিজীবি এবং তাঁদের অনুসরনকারি, জামায়াত বিএনপি--" সবাই মিলে সারা দেশে মিষ্টির দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিলেন কেন?"
এই কেন এর উত্তর হচ্ছে---"মৌদির বিজিপি দলীয়ভাবে যে আদর্শ ধারন করে, বাংলাদেশের চারদলীয় জোটও একই আদর্শ ধারন করে।সঙ্গত কারনে বিজিপি সংখ্যাগরিষ্ট আসনে এগিয়ে থাকাবস্থায় প্রতিবেশী আনন্দে আত্মহারা হওয়ারই কথা।সুখে দু:খ্যে সাহায্য তো পাওয়া যাবে।" বিজিপি ক্ষমতা পাওয়ার ছয়মাসের মধ্যে মিষ্টিমুখের হাসিতে কালিমা লাগার কারনটি হচ্ছে--"ভারতের শতবছরের গনতন্ত্র চর্চা। বিগ্নহীন চর্চার ফলে বর্তমানে ভারতের গনতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া। ফলে মৌদি দাদা ইচ্ছা করলেও প্রাতিষ্ঠানিক ধারার বাহিরে যেতে পারেন না। যেমন পারেননি বাবরি মসজিদের ক্ষেত্রে।  বিজিপি 'বাবরী মসজীদ'কে ইস্যু করে আঞ্চলিক দল থেকে একলাফে সর্বভারতীয় দলে রুপান্তরীত হয়ে দুইবারের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ করার পয্যায় থাকা সত্তেও বাবরী মসজিদের দিকে তাকালেন না কেন? বিরুধী দলে থাকলে বাবরি মসজিদ "হিন্দুদের মন্দির" ক্ষমতায় গেলে মসুলমানের মসজিদ?

   আমরা জানি-- '৭০ এর দশকে বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত ছিল, একপক্ষে  অধুনা সৌভিয়েত  ইউনিয়নের নেতৃত্বে সামাজতান্ত্রিক বিশ্ব অন্যপক্ষে সাম্রাজ্যবাদি আমেরীকার নেতৃত্বে পুঁজিবাদি বিশ্ব। ভারত-রাশিয়া আন্তজাতিক সংস্থার যে কোন ইস্যুতে  বরাবরই ছিল এক ও অভিন্ন মতাদর্শের বিশ্বস্ত সহচর।চীন, আমেরিকা যেহেতু পাকিস্তানের বন্ধু রাষ্ট্র ছিল সঙ্গত কারনে ভারত রাশিয়া বাংলাদেশের পক্ষেই থাকবে। অন্যান্ন আন্তজাতিক বিষয়গুলীর দিকে চোখ ফেরালেও বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।
তাছাড়াও নিক্সন খুবই অ-পছন্দ করতেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। তাঁর সামনে তিনি বিব্রত বোধ করতেন, তাঁর ব্যক্তিত্বের সামনে নিক্সনের অস্বস্তি হতো।  বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের কর্ণধার উন্নয়নকামী দেশ ভারতের কর্ণধারের সামনে নিস্প্রভ মনে হওয়া কোন অবস্থায় সহ্য হওয়ার কথা নয়।আমেরিকার জনগন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা সত্বেও  নিক্সন এবং কিসিঞ্জার মিলে পাকিস্তানকে সাহায্য করে গেছেন।তাঁদের সাহায্য এমন পয্যায় পৌছানোর সিদ্ধান্ত ছিল বাংলাদেশের অভ্যুদয় নস্যাৎ করার প্রয়োজনে বিশ্বযুদ্ধ অথবা পারমানবিক বোমা ব্যাবহার করার উদ্যোগিও ছিল।    দুই পরাশক্তির আন্তজাতিক রাজনীতির আবর্তে 'নীজ দেশ এবং জনগনের উপর সমূহ বিপদ' মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সফলতার পয্যায় পৌছে দেয়ার কাজটি করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী 'ইন্দিরা গান্ধী'।
           পরাশক্তির আন্তজাতিক রাজনীতি এবং "প্রভাব বলয় ধরে রাখা এবং সৃষ্টি করা"র স্নায়ু যুদ্ধের ফসল---"সহজে চীন, পাকিস্তান, আমেরিকা জোটবদ্ধ হয়েছিল।" পাকিস্তান এবং আমেরিকার সরকার পয্যায় বন্ধুত্ব ছিল খুবই উন্নত । চীন রাশিয়ার বিপরীতমূখি সমাজতান্ত্রিক দেশ হওয়ার কারনে আমেরিকার বন্ধু ছিল। আমেরিকা--'বন্ধু রাষ্ট্র চীন এবং পাকিস্তানকে বলেছিল  ভারত আক্রমন করার জন্য।'আমেরিকার ধারনা ছিল-- "ভারত এবং রাশিয়ার  মৈত্রী চুক্তি" অনুযায়ী ভারতকে রক্ষা করার জন্য রাশিয়া চীন আক্রমনে এগিয়ে আসবে। রাশিয়া কতৃক চীন আক্রান্ত হলে আমেরিকা রাশিয়া আক্রমন করবে। প্রয়োজনে আমেরিকা এক্ষেত্রে পারমানবিক বোমার ব্যবহার করতেও প্রস্তুত ছিল।বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে গেলেও নিক্সন কিসিঞ্জার পিছ পা হতেন না।( তথ্যসুত্র:--হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের অবমুক্ত দলিল। দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম, শ্রীনাথ রাঘবনের ১৯৭১ বই, প্রথমা প্রকাশিত হাসান ফেরদৌসের ১৯৭১: বন্ধুর মুখ শত্রুর ছায়া।)
    এক্ষত্রে প্রনিধান যোগ্য আরো একটি উদাহরন দিতে পারি---  "গ্যারি জে ব্যাস তাঁর দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম বইয়ে বলেছেন, নিক্সন ও কিসিঞ্জার বাংলাদেশের হত্যাযজ্ঞে তাঁদের ভূমিকা আড়াল করতে সক্ষম হয়েছেন, আমেরিকানদের জন্য এটাই উৎকৃষ্ট সময় নিক্সন ও কিসিঞ্জারের সেই ভয়াবহ সময়ের ভূমিকাকে রুখে দাঁড়ানোর (কনফ্রন্ট)"।
          ত্রি-দেশীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাকিস্তান ভারত আক্রমন করলেও চীন অস্বীকৃতি জানায়।  নিক্সন ও কিসিঞ্জারের সাধ ভেস্তে যায়।তাঁদের সেইদিনের ক্ষোভের বহ্নিশিখা ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ ইং স্ব-পরিবারে বঙ্গবন্ধুকে জীবন দিয়ে প্রশমন করতে হল।
        ফিরে আসি মুলবক্তব্যে----পাকিস্তান কতৃক ভারত আক্রান্ত হওয়ার পর ভারতীয় সৈন্যরা মুক্তিবাহিনীর সহযোগে মিত্র বাহিনী গঠন করে দ্রুত ঢাকার দিকে অগ্রসর হয়।পশ্চিমাঞ্চলে পাকিস্তান কতৃক আক্রান্ত সীমান্তে ভারত একাই প্রতিরোধ করে। বরঞ্চ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হাজার হাজার জঙ্গি বিমান বোমাহামলার মাধ্যমে পাকিস্তানী সেনাদের পশ্চিম পাকিস্তানেই ব্যতিব্যাস্ত করে রাখে।
        আমি ঐ সমস্ত বুদ্ধিজীবিদের জিজ্ঞাসা করতে চাই--"পাকিস্তান রক্ষা করার জন্যে স্বার্থ ছিল না আমেরিকার? আমেরিকার ইহুদী রাষ্ট্রের স্বার্থ পুরণ করতে আপনারা রাজী--ভারতের হিন্দুদের স্বার্থ দেখলে ভয় পান কেন? "ইহুদীরা নবী করিম (স:) এর দুশমন --হিন্দুরা বিধর্মী তবে নবীর দুশমন ছিল না"। নবীর দুশমনকে এত ভালবাসেন কেন আপনারা-----আপনারা না আস্তিক??
বাংলাদেশের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধ, তাঁর বিজয়, স্বাধীনতায় ভারতের জনগন এবং তাঁর প্রধানমন্ত্রী ' মহাত্মা ইন্দিরা' গান্ধীর নাম আষ্টেপৃষ্ট্রে জড়িয়ে আছে।ইচ্ছা করেও কেউ মুছে দিতে পারবেনা, হয়ত প্রজম্মকে সাময়িক বিভ্রান্ত করা যাবে। সময়ে ইতিহাস  আপন গতিতেই তাঁর অবদান স্বীকার করে নিতে বাধ্য হবে।
       বাংলাদেশের পক্ষে দূতিয়ালি করার জন্য ইন্দিরা গান্ধী পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশ প্রশ্নে একটি সম্মানজনক সমাধান এবং শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য তিনি বিশ্বনেতাদের কাছে দেন দরবার করেছেন। বিশ্বনেতাদের মনোভাবে পরিবর্তন ঘটাতে পারলেও মার্কিন প্রশাসনের মনোভাব পরিবর্তন করা যায়নি। ইন্দিরা ও মুজিবের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ও তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা অধ্যাপক হেনরি কিসিঞ্জারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ কিংবা শ্রদ্ধাবোধ ছিল না। ৪ ও ৫ নভেম্বর নিক্সন-ইন্দিরা বৈঠক হয়। নিক্সনের মনোভাব ছিল শীতল। দ্বিতীয় দিন সকালের বৈঠকের আগে ইন্দিরা গান্ধীকে প্রায় ৪৫ মিনিট বসিয়ে রাখা হয়েছিল। বাংলাদেশের জন্য ইন্দিরা এই উপেক্ষা ও অপমান নীরবে হজম করেছিলেন।
           ৩ ডিসেম্বর খোলামেলাভাবে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ত্বরান্বিত হয়। ৬ ডিসেম্বর সোমবার লোকসভায়  বিবৃতি দিয়ে ইন্দিরা গান্ধী জানান---"বাংলাদেশকে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।" লোকসভায় ইন্ধীরা গান্ধী বলেন-- '‘উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশ সরকারের বারবার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, সতর্কতার সঙ্গে সবকিছু বিবেচনা করে ভারত "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ"কে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে (গান্ধী, প্রাগুক্ত)।’' পরদিন মঙ্গলবার ৭ ডিসেম্বর "ভুটান বাংলা দেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি" দেয়।মানষিক রোগী বুদ্ধিজীবিরা এক্ষেত্রেও ইন্ধীরা গান্ধীর অবদানকে খাট করে দেখানোর জন্যে ভূটান আগে স্বীকৃতি দিয়েছে প্রচার করে যাচ্ছে।
             ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ইন্দিরা গান্ধী সুইডেনের একটি টেলিভিশনের কর্মীদের সঙ্গে পুর্ব নির্ধারীত সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। এমন সময় জেনারেল স্যাম মানেকশ ডাকার সরওয়ার্দী উদ্যান থেকে  তাঁকে টেলিফোনে জানান--"ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের খবর"। ইন্দিরা গান্ধী দ্রুত চলে যান লোকসভায়---"অধিবেশন কক্ষে তখন উৎকণ্ঠা ও উত্তেজনা।" তৎক্ষনাৎ  লিখিত বিবৃতিতে ইন্দিরা গান্ধী লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেন--"পশ্চিম পাকিস্তানি সেনারা নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করেছে। ঢাকা এখন একটি স্বাধীন বাংলাদেশের দেশের মুক্ত রাজধানী।"
এ যুদ্ধে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর অনেক সদস্য হতাহত হয়েছিলেন। ২৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ যুক্তরাষ্ট্রের এনবিসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় একজন সাংবাদিক ইন্দিরা গান্ধীকে প্রশ্ন করেছিলেন। ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী--" বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে আপনার দেশ অনেক মূল্য দিয়েছে। বিনিময়ে আপনার দেশ ভারত কি পেয়েছে?" এ প্রশ্নের জবাব ইন্দিরা ছোটবেলা থেকে শুনে আসা র্যা লফ চ্যাপলিনের একটি কবিতার চার লাইন উদ্ধৃত করে বলেন---"মৃতের জন্য কেঁদো না, বরং জমে থাকা ভুলের জন্য কাঁদো।জগতের সব দুঃখ আর অন্যায় দেখেওকেন প্রতিবাদ করে না কেউ।" ইন্দিরা গান্ধী আরও বলেছিলেন---'‘ভারত কথা বলেছে কেবল বাংলাদেশের--মানুষের জন্য। ভারতের জন্য নয় শুধু--দুনিয়ার সব নির্যাতিত মানুষের জন্য।(গান্ধী, প্রাগুক্ত) ।’'
        বাংলাদেশ বর্তমানে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার শাষনে মাত্র আটবছরে বিশ্বের বহু রাষ্ট্রকে সকল সুচকে পিছনে ফেলে সার্বিক ভাবে ত্রিশতম অর্থনৈতিক উন্নতির দেশে অবস্থান করে নিয়েছে।অনেক সামাজিক সূচকে বিশ্বে একনম্ভরে অবস্থান নিয়ে প্রমান করেতে পেরেছে বাঙ্গালী সত্যিকার অর্থে বীরের জাতি। যুদ্ধকরে দেশ যেমন স্বাধীন করতে জানে তেমনি সংগ্রাম করে নীজেদের ভাগ্যও পরিবর্তন করে নিতে জানে।বিশ্বব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়া সত্তেও বাংলাদেশ তাঁর জিডিপি ধরে রেখেছে শুধু তাই নয় সামনে দিকে এগিয়েও নিয়ে যেতে পেরেছে।
      ভারত বাংলাদেশকে গত ৪৫ বছর গিলে খায়নি---"বরঞ্চ পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে আঁতাত করে বাংলাদেশের যে সমস্ত অঞ্চল "ভারত ও বার্মাকে" ইংরেজেরা গিলে খেতে দিয়েছিল, সেই সমস্ত এলাকা বর্তমান সরকারের একক কৃতিত্বে তাঁদের পেট থেকে বের করে নিয়ে এসেছে।" বিশ্বব্রমান্ধ সৃষ্টির পর হতে অদ্য পয্যন্ত একটিমাত্র নজিরবিহীন উদাহরন সৃষ্টি হয়েছে শেখ হাসিনার হাতে--"বিন্দু পরিমান বারুদের কণা খরছ ব্যাতিরেকে দ্বি-গুন হজম করা বাংলাদেশ তিনি একক প্রচেষ্টায় তাঁদের পেট থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন"।
     তথাকথিত মাছের কান্নাজীবি(বুদ্ধিজীবি), রাজনৈতিক দল(ফ্যাসিবাদিজোট) পাকিস্তানের শাষনকালের ২৩ বছর(ভারত বিদ্বেসি সামরিক সরকার) কখনই কেউ বলেনি আরেকটি বাংলাদেশ ভারত এবং বার্মার পেটে আছে---" আমরা ক্ষমতা পেলে সেই বাংলাদেশ উদ্ধার করে নিয়ে আসব।" দু:খ্যজনক হলেও সত্য তাঁদের কাছেই আমাদের শুনতে হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, গনতন্ত্র, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সার্বভৌমত্বের ইতিহাস।
masterruhulamin@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা