মানবতার নেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা বিরল দৃষ্টান্ত!! ============<=======[====== ২১শে আগষ্ট বোমা ও গুলীর যুগৎপৎ হামলার পর,দেশরত্মকে হত্যায় ব্যর্থ হলে, সারাদেশ স্তব্দতার মধ্যেও স্ফুলিঙ্গের মত ফুঁসে উঠার অপেক্ষায় ছিল।সর্বস্তরের আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা শুধু দেশরত্মের হুকুম আর রাজনৈতিক কর্মসূচির অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলেন।জননেত্রীও কেন্দ্রীয় নেতাদের অব্যাহত চাপের মুখে ছিলেন কর্মসূচি ঘোষনা দেয়ার জন্য।গনহত্যায় ব্যর্থ হয়ে সরকার ছিল টলটলায়মান অবস্থায়।দেশী বিদেশি সমালোচনার মূখে কোনঠাসা।।এমতবস্থায় ধাক্কা দিলে সরকার টিকে থাকার কোন উপায় ছিল না।এমনতর মূহুর্তেও মানবতার নেত্রী ক্ষমতা পাওয়ার লোভ না করে, আহতদের চিকিৎসা এবং নিহতদের লাশ দাফন করার জন্য মনোনিবেশ করেন।দলের কেন্দ্রীয় বেশ কিছু নেতাকে দায়িত্ব দিয়ে হাসপাতাল গুলোতে প্রেরন করেন।রাত জেগে খবরাখবর সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটান।তিনি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন,এই হামলাটি ক্ষমতাসীন বি,এন,পি সরকারের উচ্চপয্যায়ের দিকনির্দেশনার ফসল।মানবতার নেত্রী চরম ধৈয্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে আগে চিকিৎসাকে প্রাধান্য দিলেন। এতবড় ঘটনার পর ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতো দুরের কথা, কোন মামলাও করার চিন্তা করেননি।মামলার ফলাফল আশানুরুপ হবেনা ধারনা টি, নেত্রী ভুল করেননি পরবর্তিতে সাজানো তদন্ত ও জর্জমিয়া নাটক থেকেই তা প্রমানীত।খালেদা জিয়া,তারেক জিয়া,এবং স্ব্ররাষ্ট্র মন্ত্রী বাবর সরাসরী জড়িত ছিলেন,তা আরও স্পষ্ট করে যখন তত্বাবধায়ক সকার গঠন প্রশ্নে কার ও সাথে পরামর্শ ব্যতিরেকে, নীজ দলের প্রেসিডেন্টকে তত্বাবধায়ক প্রধান করে সাজানো নির্বাচন করার জন্য, একের পর এক নিলজ্জ পদক্ষেপ।যেকোন উপায় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে বিচারিক কায্যক্রম বাঞ্চালই ছিল প্রধান উদ্দেশ্য।২১শে আগষ্টের ঘটনার চরিত্রের দিকে তাকালে দেখতে পাওয়া যায়, দেশীয়ভাবে তিনটি পক্ষ হামলায় সরাসরী জড়িত ছিল।প্রথম পক্ষে সরকারের উধ্বতন মহল জড়িত ছিল, এটাতে কোন সন্দেহের অবকাশ এখন আর নেই।দ্বিতীয়ত সরকারের সেনাবাহিনীর একটা অংশ,মামলার তদন্তে তাঁর প্রমান পাওয়া যায়।,তৃতিয়ত জঙ্গিদের সম্পৃত্ততা, তাঁরা নিজেরাই স্বিকার‍ উক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়ে স্পষ্ট করেছে।এখন আছে শুধু বিদেশী কোন শক্তি জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা।বি,এন,পি সরকারীভাবে বিচার পতিদের সমন্বয়ে তদন্ত টিম গঠন করেছিলেন।বিচারপতি জয়নুল আবেদীন প্রধান সমন্বয়ক হয়ে একটা রিপোর্টও দিয়েছিলেন। পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল বাংলাদেশের কোন একটা বন্ধু রাষ্ট্র সরাসরি জড়িত ছিল।সেই রিপোর্ট ও অত্যাবদি আলোরমুখ দেখেনি। তিনি কিসের ভিত্তিতে বিদেশি রাষ্ট্রের সম্পৃত্ততা পেয়েছিলেন এখন ও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়।উক্ত ঘটনার সার্বিক দিক জাতিকে জানানো একান্ত প্রয়োজন।জননেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে ছোট বড় ১৯ বার জীবন হানি ঘটানোর চেষ্টা হয়েছিল।তম্মধ্যে ১৯৮১ ইং সালের ১১ই সেপ্টেম্ভর চট্রগ্রামের লালদীঘি ময়দানে পুলিশ ও বি,ডি,আরের যৌথ ব্রাস ফায়ারে হত্যার চেষ্টা ও একটা বড় ধরনের কিলিং মিশন ছিল।সেই যাত্রায় জীবন রক্ষা পায় আল্লাহর অশেষ রহমতে।লক্ষ করলে সহজেই দেখা যায় আওয়ামী লীগকে ধ্বংশ করার উদ্দেশ্যে যতবার হামলা হয়েছে তদ্রুপ অন্য কোন দলের উপর বা নেতাদের উপর তাঁর ছিটেফোঁটাও হয়নি।একমাত্র জাতির জনকের পরিবার এবং আওয়ামী লীগের নেতারাই হত্যার শিকার হচ্ছেন,অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিচ্ছেন।ইহার কারন বের করতে এখন আর বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।বিশ্বে প্রায় রাষ্ট্রে মাঝে মধ্যেই রাজনৈতিক হত্যার খবর পাওয়া যায়,এই রুপ দল বা পরিবার শুন্য করে দেয়ার জন্য হামলা হয়েছে তাঁর নজির পাওয়া যায় না।একমাত্র জাতির জনকের পরিবার এবং তাঁর নীজ হাতে প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব সমুলে বিনাস করার জন্য যে চেষ্টা স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবদি অব্যাহত রয়েছে।তাঁর পর ও বর্তমান সরকার দুইমেয়াদে ক্ষমতা উপভোগ করতে পারলেও ২১শে আগষ্টের চাঞ্চল্যকর,নজির বিহীন বর্বতা,গনহত্যার মত মানবতা বিরুধি অপরাধের মামলাটি ১১ বছরেও বিচারিক পয্যায় যায়নি। ১৯৭৫ সালে তারিখ হিসেবে ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালে মাস হিসেবে আগস্টের মিলটাও লক্ষণীয়। ১৫ আগস্টের মতোই ২১ আগস্টের ঘটনাটিও ছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার চেষ্টা। আমাদের প্রচলিত অপরাধে বিচার ব্যবস্থা যে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে, তার উদাহরণ হলো ৩০ লাখ মামলা জমে যাওয়ার পরেও রাষ্ট্রযন্ত্র নির্বিকার থাকতে পারছে। আমজনতা আদালত ব্যবস্থা থেকে সহজে কোনো প্রতিকার পায় না। তদুপরি এখনো এই ধারা মোটামুটি ক্রিয়াশীল যে, রাষ্ট্রপক্ষ সক্রিয় হলে এই মামলাজটের বিচার ব্যবস্থার ভেতর দিয়েও প্রতিকার ত্বরান্বিত করা সম্ভব। সামারি ট্রায়াল না করে সাধারণ আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সমাপ্তি তার একটি বড় দৃষ্টান্ত। এখন প্রশ্ন হলো, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ১১ বছর পূর্তিতে মামলার অগ্রগতি এতটা মন্থর কেন?? ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেডটি যদি ট্রাকে পড়ত, তাহলে এটা শেখ হাসিনাসহ বিপুলসংখ্যক জাতীয় নেতার প্রাণ কেড়ে নিত। এটা হতে পারত পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ঘটে যাওয়া দ্বিতীয় বর্বরতম হত্যাকাণ্ড। সুতরাং গুরুত্বের বিচারে এই মামলাটির অহেতুক দীর্ঘসূত্রতা জাতি হিসেবে আমাদের কাণ্ডজ্ঞান, দায়িত্ববোধ ও সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। গ্রেনেড হামলার পরে বিএনপি দুই বছর ক্ষমতায় ছিল। তারা বিচার শুরু দূরে থাক, সুষ্ঠু তদন্তই শেষ করতে পারেনি। আমরা অনুমান করতে পারি যে কেন আওয়ামী লীগ বিচার চায়নি। তারা ধরে নিয়েছিল যে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থেকে যে বিচার করবে, তা বিচারের নামে প্রহসনই হবে। তারা কেবল আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছিল। ২১ আগস্ট ২০০৬ প্রথম আলোতে ‘বিচারের আশা করেন না হতাহতদের স্বজনেরা’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন ছাপা হয়। এতে বলা হয়, আহত ও নিহতদের স্বজনদের একটাই চাওয়া, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।বর্তমান হত্যাকারীদের মদদ দাতা সরকারের কাছে তাঁদের প্রত্যাশা নেই। ঘটনার দুই দিন পর আতাউস সামাদ ‘এরপর আর বাকি থাকল কী’ শিরোনামে প্রথম আলোর প্রথম পাতায় একটি মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছিলেন। সেখানেও তিনি বিচারের প্রসঙ্গ টানেননি। বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া বিচ্ছিন্নভাবে একটি মন্তব্য করেছিলেন যে, সরকার বোমাবাজদের শনাক্ত করে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ দিতে বদ্ধপরিকর। "।প্রয়াত নেতার ঘোষনা পত্রিকা এবং তার মুখেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেল।জাতী পরবর্তিতে দেখলো,কোন এক অজ্ঞাত নামা যুবক,খেটে খাওয়া দিনমুজুরকে ঘটনার প্রধান করে, সাজানো জবান বন্দি নেয়া হচ্ছে,তাঁকে জেলে বন্দি রেখে তাঁর পরিবারকে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে মাসে মাসে খরপোষ দেয়া হচ্ছে।এহেন তামাশা অতিতে কোন দেশে হয়েছে কিনা কেহই বলতে পারবে না।এই এক ঐতিহাসিক তামাশা বলা যেতে পারে। আগেই উল্লেখ করেছি ত্রিধারার সংযোগে বার বার আওয়ামী লীগের উপর নেমে আসে ঘোর অমানিষা।আওয়ামী লীগই একমাত্র সংগঠন,প্রগতির ধারায় এখনও নীজেদের সম্পৃত্ত রেখে দেশ ও জনগনের ভাগ্য উন্নয়নের চেষ্টা অব্যাহত রেখে অবিচল নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে।ক্ষমতা পাওয়ার চাইতে জনগনকে সাথে রেখে প্রগতির ধারা অব্যাহত ভাবে সামনে এগিয়ে নেয়াকে কর্তব্য মনে করে।আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এইডস জাতিকে স্বাধীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য, বিশ্ব দরনবারে বাংলাদেশ নামক একটি দেশ আছে তা প্রতিষ্ঠার জন্য,বাঙালী বীরের জাতি তা প্রমানের জন্য,আজিবন সংগ্রাম করে গেছেন।কোন লোভ লালসা, রক্তচক্ষুকে ভয় করেননি।ইচ্ছা করলে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রধান মন্ত্রী একাধিক বার হতে পারতেন,তিনি পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রীর লোভ করেননি,তিনি চেয়েছেন বাঙ্গালীর মুক্তি,বাংলাদেশের স্বাধীনতা।সেই দলের উত্তরসুরী বর্তমান আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতা পাওয়ার জন্য অদ্যাবদি কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন শুনা যায়নি,নিয়মাতান্ত্রিক ভাবে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে।জনগন যখন চায়,তখন সরকার গঠন করে,জনগন যখন চায় না, তখন বিরুদি দলের ভুমিকা পালন অব্যাহত রাখে। প্রশ্ন হচ্ছে গত দুইবার একটানা সরকার গঠন করেও বোমা হামলার বিচার ত্ব্রারান্বিত করার জন্য সকারী ভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা কেন?ইচ্ছা করলে আর ও দ্রুতগতিতে মামলার বিচার কি করা যায়না?জনমনে নানাহ প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঁকি ঝুঁকি দিতে শুরু করেছে।আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীনতার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মানবতা বিরুদি এই হত্যা কান্ডের বিচার দ্রুত করার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।নচেৎ বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্বদরবারে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক হয়ে দেখা দিতে পারে। " জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন