দেশরত্মকে সব দায় নিতে হবে কেন,অন্য সবাই কি ভোগেই মত্ত থাকবে==?? =========================== সরকার পরিচালনা,জোট ঐক্যবদ্ধ রাখা,ছাত্র লীগের অপকর্ম সামাল দেয়া,বিদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন,সেনাবাহিনীর প্রতি দৃষ্টি,জেলা আওয়ামী লীগের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা,র‍্যাবকে সামাল দেয়া,দলের প্রভাব শালী নেতাদের লোভ লালসা নিয়ন্ত্রন,ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন,যথার্থ লোককে যথাস্থানে অবস্থান নিশ্চিত করন,নীপিড়িত নেতাদের আর্থিক সাহায্য প্রত্যেক কাজ যদি প্রধান মন্ত্রীকেই করতে হয় তাহলে দলের বাঘা বাঘা নেতাদের মন্ত্রীত্ব দিয়ে কি লাভ?সব কাজ একজনের উপর চাপিয়ে দিয়ে নেতারা ভাল মানুষ সাজার কৌশল নিয়ে প্রকারান্তরে নেত্রীর কর্মক্ষমতাকেই বিনষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত আছেন আমি মনে করি। অশোভন আচরন,অযাচিত বক্তব্য,ক্ষতিকর বিবৃতি দিতে শেখ হাসিনার প্রয়োজন হয়না,দলের একান্ত প্রয়োজনীয় কাজ গুলী করার সময় হলে নেত্রীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ার কি কারন থাকতে পারে।দলের নিয্যাতিত নেতা কে কোথায় অবস্থান করে,কে কি করে ঐ এলাকার সংসদ সদস্য অবশ্যই জানেন।তাদের সামান্য দলের পক্ষ হয়ে সরকার থেকে সাহায্য করতে সংসদ সদস্যরাই যথেষ্ট।প্রধান মন্ত্রীকেও সেখানে ব্যবহার করতে হবে কেন? জেলা ওয়ারী কিছু কেন্দ্রীয় নেতাকে রাজনৈতিক বিষায়াবলী দেখা শুনার জন্য দায়িত্ব আগেই থেকেই দেয়া আছে।আমি জানিনা তাঁরা দলের মৌলিক দায়িত্ব গুলীও কেন পালন করেন না।দলের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা নতুন ছাত্রলীগে আসা কর্মীদের কি প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছেন তা বোধগম্য নয়।দলে দলে মিছিল করালে দলের উদ্দেশ্য আদর্শ্য শিক্ষা হয়ে যাবে।প্রত্যেক নেতাই যদি মন্ত্রী হওয়ার তদবীরেই ব্যাস্ত থাকেন আগামী দিনের জ্ঞান সম্পন্ন নেতা আসবে কোথা থেকে? দল চালাবে কে?ক্ষমতায় থেকেও যদি বুঝ জ্ঞান সম্পন্ন কর্মি সৃষ্টি করতে না পারে ক্ষমতার বাহিরে গেলে তখনতো পালানোর জন্যও সময় করতে পারেন না।ঢাকা শহরে নাই কথা নিয়ে গলাবাজি করার সময় কোথায় পান তাঁরা?।আমাদের সাংবাদিক সমাজের একটা বড় দুষ পরিলক্ষিত হয় যে সমস্ত নেতা উদ্ভট কথা বলে তাঁদের চারপাশে অহেতুক ঘুর ঘুর করা।মুখ থেকে কিছু বের করলো এমনি পত্রিকা অফিসে দৌঁড়।যে সমস্ত নেতা ইতিবাচক কথা বলে তাঁদের কে মনে ধরে না।তোফায়েল,ওবায়দুল কাদের,আমীর হোসেন আমু,,সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত তাঁরা কি বলে সারাদিন তাঁদের পিছনে থাকুক।পত্রিকার ব্যবসার উদ্দেশ্যে তাঁরা বেফাঁস কথা যারা বলে, তাঁদের কাছেই ঘুর ঘুর করে।এমনিতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে প্রতিনিয়ত,কিভাবে সরকারের পতন ঘটানো যায়।জনগনের ভোটে আওয়ামী লীগকে আর পরাজিত করা যাবে না, সম্যক ধারনা তাঁদের হয়ে গেছে।আওয়ামী লীগের উত্থানের পর্বে কি ভাবে বিনাশ করতে চেয়েছিল?আমাদের নেতারা বেমালুম ভুলে গেছে।এখন প্রতিষ্ঠা লগ্ন।এই সময় বেফাঁস কথা বলে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্য কি বোধগম্য নয়। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ একটি অত্যন্ত দামি কথা বলেছেন। সম্প্রতি শ্রমিক লীগের এক সভায় তিনি সকলকে এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, 'বিএনপি-জামায়াত প্রতি মুহূর্তেই সচেষ্ট রয়েছে দেশে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর জন্য।' সুতরাং, এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে দেশে আদর্শভিত্তিক গণঐক্য গড়ে তোলার কোনই বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ মনে হয় বিএনপি-জামায়াত আপাতদৃষ্টে খানিক কোণঠাসা হয়ে পড়ায় ধরেই নিয়েছে যে, তাদের চলার পথ এখন সম্পূর্ণভাবেই নিষ্কণ্টক। কিন্তু এমন ভাবনা যে রীতিমতো আহাম্মকি তা বলাই বাহুল্য! সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ যে অনেক অসংগঠিত বা এলোমেলো এতে কোন সন্দেহ নেই। অভিযোগ আছে যে, সিজনাল বার্ড বা মৌসুমী পাখিদের ভিড় ও দাপটে আওয়ামী বৃক্ষের সকল ডাল-পালা সয়লাব। প্রকৃত ত্যাগী, একনিষ্ঠ ও পরীক্ষিত নেতা কর্মীরা হালে পানি পায় না। ফলে কোন বিপর্যয় দেখা দিলে ঐ ধান্দাবাজ পাখিগুলো এক উড়ালে সাইবেরিয়ায় চলে যাবে, আওয়ামী দুর্গটি অরক্ষিত রেখে। আর সুযোগ বঞ্চিত ত্যাগী কর্মীরা বেঘোরে প্রাণ হারাবে। তাই প্রথমত শেখ সেলিমদের এ জাতীয় আত্মঘাতী কথাবার্তা বন্ধ করার পাশাপাশি ত্যাগী-নিবেদিত-পরীক্ষিত কর্মীদেরকে আবারও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য ময়দানে অবতীর্ণ হতে হবে। গণজাগরণ মঞ্চের প্রয়োজনীয়তা আজকের পরিস্থিতিতে আশাকরি সকলেই অনুভব করছেন। যা হোক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য সততা, সাহস এবং কর্মীদের প্রতি সত্যিকারের আন্তরিক দরদের কোন বিকল্প নেই। চারদিকে শোনা যায় যে, ৬৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আওয়ামী লীগে আদর্শের কোন চর্চা নেই, আছে কেবল চাটুকারিতা। দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা, কর্মীমহলে দলের ইতিহাস পর্যালোচনামূলক নিয়মিত আলোচনা, আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতাকে বেগবান ও সফল করতে যারা যারা ভূমিকা রেখেছিলেন তারা আজ যে যেখানেই থাকুক না কেন দলীয় এবং সরকারিভাবে তাদের সে অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করাটা আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ শক্তিশালী করার জন্য অত্যন্ত দরকার। আওয়ামী লীগ শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, মানিক মিয়া, সিরাজুদ্দীন হোসেন, ইত্তেফাক এবং এমন আরো অনেকের গৌরবজনক ভূমিকা বিষয়ে কোন প্রকার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও আলোচনার আয়োজন করে না, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। স্বাধীনতা যুদ্ধ, ছয়-দফা আন্দোলন, '৬২-এর শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, ১১-দফা আন্দোলন এবং ভাষা আন্দোলনে যাদের (ছাত্র-শিক্ষক-সাংবাদিক-রাজনীতিক) স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে অবদান রয়েছে তাদের সে অবদানের বিষয়গুলো গবেষণার মাধ্যমে খুঁজে বের করা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব।নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনে। বিএনপি-জামায়াতের বর্তমান নীরবতা-দৃষ্টে এমনটা ভাবার কোনই কারণ নেই যে, আমরা এখন সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ। বরং বর্তমানে চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে সদা সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকা সবচাইতে জরুরি। এ সত্য উপলব্ধিতে ব্যর্থ হলে এবং এ লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মহাপ্রলয় ঘটে যাওয়া অসম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের আদর্শগতভাবে আজ কতটা অধঃপতন ঘটেছে তা বোঝা যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আওয়ামী নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের দলে দলে আওয়ামী লীগে যোগদান করতে দেখলে। এতে আবার নাকি ঐ আওয়ামী লীগ নেতারা আনন্দে আত্মহারা হন। এ কি আশ্চর্য অবক্ষয় ও মূঢ়তা! জামায়াত-কর্মী কখনো আওয়ামী লীগার হবে? আলবদর তার খাসলত বদলাবে? বিএনপিকে জামায়াত যেভাবে গিলে ফেলেছে,এই অনুপ্রবেশকারী জামায়াত-বিএনপি ঠিক তেমনিভাবেই আওয়ামী লীগের সর্বনাশ সাধন করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সাধারণ সম্পাদক এমন ক্ষেত্রে দয়া করে কঠিন হউন। বসন্তের কোকিলগুলোকে চিহ্নিত করুন। আগডালে-মগডালে বসে থাকা সুযোগসন্ধানী ও হাইব্রিড বা নব্য আওয়ামী লীগারদের খপ্পর থেকে দলকে মুক্ত করতে সোহরাওয়ার্দী-বঙ্গবন্ধুর মতো দৃঢ়তার সঙ্গে সাংগঠনিক কার্যক্রম গ্রহণ করুন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে কারা বিগত কয়েক দশক যাবৎ মৃত্যুঝুঁকিকে মাথায় নিয়ে মাঠে মাঠে কাজ করেছেন, তা কি সরকারের অজানা? আমরা বুঝতে পারি না যে, সেসব লোককে কেন কাজে লাগানো হয় না! যারা রাতারাতি ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগার বনে গেছে কিংবা স্বজনপ্রীতির বদৌলতে দলের কাছ থেকে নানাবিধ সুবিধা আদায় করে নিয়েছে বা নিচ্ছে তাদের দিক থেকে অতি অবশ্যই মুখ ফিরিয়ে নিতে হবে। ভুললে চলবে না যে, কোন ব্যক্তি দলকে কিছুদূর এগিয়ে নিতে পারেন বটে, কিন্তু দলের স্থায়ী আসনের জন্য চাই আদর্শবাদিতা ও ত্যাগ। এর কোনই বিকল্প নেই। এর সঙ্গে থাকতে হবে দলের ইতিহাসের সত্যনিষ্ঠ পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ। '৭৫ পরবর্তি দুসময়ের ছাত্র নেতারা কে কোথায় আছে,কি অবস্থায় আছে খবর নিন।তাঁদের কে দায়িত্ব দিয়ে দল গোছানোর কাজে লাগানো যায়।অবহেলায় অযত্নে হয়তো অভিমান নিয়ে দলের জন্য নীরবে চোখের পানি ফেলছে,নেত্রী যদি স্মরন করেন সব অভিমান ভুলে তাঁরাই আবার ঝাপিয়ে পড়বে দলের কাজে।তাঁদের সরকারী সুযোগের দরকার নেই,দলের দায়িত্ব ফেলেই তাঁরা খুশি।অনেক ত্যাগী নেতা বিভিন্ন কারনে অকারনে,দলীয় কোন্দলের শিকার হয়ে অন্য দলে চলে গেছেন,বঙ্গবন্ধুর প্রতি অবহেলা সহ্য করতে না পেরে সেখানকার রাজনীতি থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন,এমনতর নেতা কর্মি অনেকেই আছেন। আমি আর ও এক লেখনীতে বলেছি,আজ আবার সেই লেখনীর আংশিক হুবহু আপনাদের জ্ঞাতার্থে তুলে দিচ্ছি-- জাসদ যদি আওয়ামী লীগে ফিরে যায়, সেটা হবে ‘ঘরে ফেরা’। আলাদা দল রেখে নাম বদল করলে, অর্থাৎ দলের নাম থেকে ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দটি বাদ দিলে আলাদা রাজনীতির মাজেজাটাই থাকবে না। সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব সহজ হবে না। আগামী ডিসেম্বরে জাসদের কাউন্সিল সভা। সেখানে জোর বিতর্ক হবে। সাধারণ সম্পাদক আম্বিয়া বেশ ঝুঁকি নিয়েছেন। কাউন্সিলে তিনি সাধারণ সম্পাদকের পদটি হারাতে পারেন। একটা বিষয় অবশ্য দলের ভেতরে-বাইরে বেশ চাউর হয়েছে। ‘বি-টিম’ হিসেবে থাকার চেয়ে ‘এ-টিমে’ যোগ দেওয়াই ভালো। এখন সবাই যখন ‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিক’, তখন আলাদা থাকারই বা প্রয়োজন কী। এর উত্তর পেতে জাসদের আগামী কাউন্সিল সভা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জাসদ ইনু অংশ যদি জোটে থেকে একাদিক মন্ত্রীত্ব পেতে পারে,সংসদ সদস্য পদ পেতে পারে,দলে এসে গেলেই বা ক্ষতি কি?জাসদের আওয়ামী লীগের সাথে লীন হওয়া বাঞ্চাল করার জন্যই আজকের এই বিতর্কের উদ্ভব বলে আমি মনে করি। জামাতের লোক, মুসলিম লীগার পরিবারের সদস্যরা,বি,এন,পি,এর সন্ত্রাসী মাস্তানেরা যদি আওয়ামী লীগে ঠাঁই পেতে পারে,তাহলে জাসদের মত প্রগতিশীল দলের আওয়ামী লীগের সাথে লীন হলে বাঁধা আসবে কেন।আসার আগেই ষড়যন্ত্র করে আসার পথ রুদ্ধ করার কি প্রয়োয়োজন তা আমার মত সাধারন এক সমর্থকের মাথায় আসে না। জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় আরোহণ করেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনাশী যেসব নির্মম-নৃশংস উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে স্বৈরাচারী এরশাদ ও খালেদা-নিজামীদের সরকারগুলো যা আরো বর্বরোচিতভাবে বাস্তবায়ন করেছিলো তার বিপরীতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ আর জাসদসহ আরও কিছু প্রগতিশীল দল এগিয়ে এসেছে সকল প্রকার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে। পঁচাত্তর পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতা জাসদকে আওয়ামী লীগের কাছাকাছি এনে দিয়েছে। বিগত এবং বর্তমান সংসদে এবং বিভিন্ন টকশোতে জাসদ নেতা মঈনুদ্দীন খান বাদল যে যুক্তিনিষ্ঠা ও দৃঢ়তার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রুদের বিরুদ্ধে বক্তব্য উপস্থাপন করেন তাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিরই লাভ হয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে হাতেগোনা দু-চারজন মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে বরাবর আপসহীন, প্রত্যয়দৃঢ় ও সত্যনিষ্ঠ বক্তব্য রাখলেও অধিকাংশ নেতাই যুক্তিসিদ্ধ ও লাগসই জবাব দিতে সক্ষম হন না। যা খুবই দুঃখজনক। বিভিন্ন সময়ে টকশোতে বিএনপি-জামায়াতপন্থী 'টকারদের' বক্তব্য খন্ডন করতে ক'জন আওয়ামী লীগের এমপি বা নেতা সক্ষম হন? এ ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবী-শিক্ষাবিদ-সাংবাদিক-আইনজীবীরা অকুতোভয়ে ভূমিকা পালন না করলে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত মিথ্যাচারে দেশ এতদিন তলিয়ে যেতো! যাহোক, যে বাস্তবতার কারণে পঁচাত্তর পূর্বে আওয়ামী লীগ বিরোধী ভূমিকা পালনকারী জাসদ আজ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ছাতার নিচে একত্রিত হয়েছে সে বাস্তবতাকে সর্বাগ্রে বুঝতে হবে ও মূল্যায়ন করতে হবে। আমাদের সকলের অস্তিত্বের ও দেশের বৃহত্তর স্বার্থে। ভুললে চলবে না যে, রাজনীতিতে অসময়োচিত বক্তব্য বা বিবৃতি প্রাধান্য পেলে ক্ষতি হয় দেশের, ক্ষতি হয় জনগণের! শেখ সেলিম সুদীর্ঘকাল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পঁচাত্তরে তার আপন ভাই শেখ ফজলুল হক মনিও নৃশংসভাবে নিহত হন। সেদিন সেই হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে আপন রক্ত সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গ কেউ কি প্রতিবাদ বা প্রতিশোধ গ্রহণে উদ্যোগী হতে পেরেছিলেন? শেখ সেলিম নিজে কি পেরেছিলেন? কেন পারেননি তা সকলেই বোঝে। সেদিনের শৃঙ্খলিত পরিবেশে তা পারা সম্ভবও ছিলো না। তবে যারা রাজনীতি করেন তাদের ক্ষেত্রে সত্য, সততা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এখন তো আর সেই আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যাবে না। আজ বিরোধী দল বলতে তেমন কিছু নেই। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের হাতে একচ্ছত্র ক্ষমতা। এই ক্ষমতা তো তারা দেশের অগ্রগতির জন্য ব্যবহার করতে পারে। বাধা দেওয়ার কেউ নেই। এই আপাত শূন্যতার সুযোগ নিয়ে সরকার যদি সত্যিই মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলো সমাধানের পথে এগিয়ে যেতে পারে, তাহলেও তো একটা কিছু হয়। এই যে প্রতিবছর দেশে প্রায় ২০ লাখ লোক কর্মজীবনে প্রবেশের বয়সে পা রাখছে, আর তাদের মধ্যে ১৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে ও বাকি সাত লাখের হচ্ছে না, তাদের জন্য যদি একটা সুযোগ সৃষ্টি করা যায়, তাহলেও তো একটা কাজের কাজ হয়। কিন্তু সে রকম লক্ষণ এখনো তেমন চোখে পড়ে না। অথচ আমাদের চোখের সামনেই তো মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড দাঁড়িয়ে গেল। ভিয়েতনাম এগিয়ে যাচ্ছে। এসব দেশেও গণতন্ত্রের একই হাল। আছে আবার নেই। নির্বাচন হয়, আবার প্রশ্নও থাকে। পার্লামেন্ট আছে, বিরোধী দলও আছে, কিন্তু সেটা না থাকার মতোই। এ রকম মডেল আদর্শ নয়। আমরা কেউই চাই না। কিন্তু দেশের রাজনীতির ডামাডোলে যখন এ রকম একটা অবস্থায় আমরা পড়ে গেছি, মন্দের ভালো একটা কিছু হলে দোষ কী? মানুষের ভাগ্য খুলে দেওয়াই তো আসল কথা। এখানেই সমস্যা। যখন সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই গোলাগুলি চলে, ভাগ-বাঁটোয়ারার রাজনীতি মুখ্য হয়ে ওঠে, তখন তো ভরসার আর কোনো জায়গা থাকে না। জননেত্রী জনগনকে যে ভাবে আশা জাগানীয়া কথা শুনিয়ে আস্বস্ত করতে পারেন,তেমন্টি আর কোন দলের নেতা নেত্রী পারেন।আওয়ামী লীগ যখনই সুযোগ পেয়েছে জনগন তখন কিছু না কিছু পেয়েছে।এই দেশের যাহাই অর্জন চোখে পড়ে সবইতো আওয়ামী লীগের অবদান।তাই এই দলের প্রতি মানুষের আশা আখাংকার মাত্রাও একটু বেশী এটাই স্বাভাবিক।যে বাড়ীতে ভিক্ষুক বেশী ভিক্ষা পায়,সে বাড়ি প্রত্যহ সফর চাড়া ভিক্ষুক বাড়ী পেরে না।তেমনি আওয়ামী লীগ ত্যাগে যেমন মহিমাম্বিত তেমনী ভোগে নিস্পৃহ থাকা উচিৎ বলে আমি মনে করি।অর্থ ছাড়াই যদি সম্মান পাওয়া যায়, তবে অর্থ আহরনের প্রতিযোগীতা কেন? মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধার বাহকেরা যদি আওয়ামী লীগে আসতে চায় তবে রাজাকার জামাত শিবিরের প্রয়োজন কি? শোকের মাসে অর্জন যেমন আনন্দদায়ক উৎফুল্ল করেছে, তেমনি অযাচিত বিতর্কে মন ও খারাপ করেছে।সব মিলিয়ে পাওয়ার পাল্লাই ভারী এই ভেবে আনন্দের জোয়ারে কিছুক্ষন অবগাহন করলে ক্ষতি কি.? "জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু" "জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন