আওয়ামী লীগের কতিপয় দুবৃত্ত বঙ্গরত্মের মানচিত্র পরিবর্তনের সাফল্যকেও ম্লান করে দিল---- _____________________________________________ কোন দেশের জনসম্পৃত্ত রাজনৈতিক দলের একমেয়াদে একটি সাফল্যই দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে যথেষ্ট।অতিব দু:খ্যের বিষয় বর্তমান সরকারের শত সাফল্য জাতির ললাটে যুক্ত করেও জাতির জনকের পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যা চক্রান্ত রুখতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের হত্যা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জনগনের স্বত:স্ফুর্ত গনজাগরন সৃষ্টি হয়নি , প্রতিবাদ হয়নি, প্রতিরোধ হয়নি। আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি- 'তার একমাত্র কারন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে অতি অল্প সংখ্যক দুবৃত্তের দুবৃত্তায়নে সরকারের সকল সাফল্যকে ম্লান করে দেয়া।' বঙ্গরত্ম শেখ হাসিনার সর্বচ্ছ আন্তরিকতা দিয়ে দেশকে উন্নতি ও অগ্রগতির শীর্ষে নিয়ে গেলেও জনমানসে তাঁর প্রভাব পরিদৃষ্ট হচ্ছেনা-' ঐ সমস্ত জেলা উপজেলায় দায়িত্বরত দলীয় দুবৃত্তদের অপকর্মের কারনে"। জাতির জনকের কন্যার দুরদর্শী নেতৃত্বে তেমনি এক শ্রেষ্ঠ সাফল্য 'মানচিত্র পরিবর্তন'।বিশ্বের একটি দেশও খুঁজে পাওয়া যাবেনা, যে দেশ একটি সাইমানা পিলারের অবস্থান দুই ইঞ্চি পরিবর্তনের জন্যেও যুদ্ধ বিগ্রহ করা লাগেনি।সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান সীমারেখার প্রায় সমপরিমান সীমারেখার ভুখন্ড একটি গোলা বারুদের কণা খরছ ব্যতিরেকে শুধুমাত্র দুরদর্শিতা দিয়ে অর্জন করেছেন জাতির জনকের কন্যা। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি একটি দেশ ও জাতির জন্য আর কি হতে পারে? বাংলাদেশের বর্ধিত ভূখন্ডের নতুন সীমানা অংকিত মানচিত্র সর্বত্র প্রকাশ এবং বহুল প্রচার ও হয়নি।সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যাস্ত,এতবড় সাফল্য তুলে ধরে জনগনকে সংগঠিত করার সময় কোথায়? অথছ বর্তমান সরকারের সাফল্যের এবং নানাবিধ অর্জনের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হল বাংলাদেশের 'নতুন সীমানা' বা সদ্য প্রকাশিত 'নতুন মানচিত্র'। এটা এখন সূর্য্যালোকের মত সত্যি যে, এ অর্জন কোন সাধারণ অর্জন নয়। একটি স্বাধীন দেশের পুরো মানচিত্রে নতুন ভূ-খন্ড এবং জলাভুমি সংযুক্তি সাধারন ব্যাপার নয়। মানচিত্র বদলের সাথে সাথে বদলে গেছে ৪৫ বছরের পুরাতন মানচিত্রের সীমানা রেখা, বদলে গেছে পুরো জাতীর ভবিষ্যৎ। ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময়, অ-দখলীয় জমি একে অপরের কাছে হস্তান্তর, সাড়ে ছয় কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিত হওয়ার পর এখন দুই দেশের নতুন করে মানচিত্র তৈরি করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে নব সূচনা। তবে এখনো সর্বত্র প্রকাশ এবং বহুল প্রচারের অভাবে সাধারণ জনগণ জানতে পারেনি সীমানায় নতুন করে পাঁকাপিলার বসানোর ভারত-বাংলাদেশ এর সর্বশেষ সীমান্ত রেখা সম্পর্কে। তেমন ভাবে জানতে পারেনি জমি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চার রাজ্য- আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের সীমানারেখায় পরিবর্তিত সীমারেখা সম্পর্কেও। ১৯৪৭ সালের ভারত ও পাকিস্তানের সীমানার একটি খসড়া দিয়ে বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তরেখা করা হয়েছিল। এরপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়ার পরও বাংলাদেশের সীমান্ত সমস্যা রয়েই যায়। এ সমস্যা নিরসনে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধী একটি চুক্তি করেছিলেন।সেই বিখ্যাত চুক্তির নাম ভারত -বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি যাহা 'ইন্দিরা-মুজিব মৈত্রী চুক্তি' হিসেবে খ্যাত। তবে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ওই চুক্তি কার্যকরের সব প্রক্রিয়া সেরে উঠতে পারেনি ভারত কিন্তু ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে এ চুক্তি অনুসমর্থনের দলিল হস্তান্তর হয় দুদেশের মধ্যে। এরপর জানানো হয় গত বছর ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়। যার ফলে বিরাট পরিবর্তন এসেছে দুই দেশের মানচিত্রেও। বাংলাদেশ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অবশ্য এই প্রসঙ্গে ২০১৫ সালে বলেছিলেন , "দুদেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি বিনিময়ের ফলে কোথাও ভারতের সীমানারেখা বাংলাদেশের বর্তমান সীমানার ভেতর ঢুকে যাবে। আবার কোথাও বাংলাদেশের আগের জমি ভারতে চলে যাবে। " এবং হয়েছে ও ই, আর এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের আয়তন কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে এটা এখন কমবেশী সকলেই আন্দাজ করছে। তবে কিছু সংখ্যক সচেতন মানুষ ছাড়া, ব্যাপক প্রচারণার অভাবে এখনো দেশের অনেকেই জানেনা সেই নতুন ভাবে আঁকা মানচিত্রের সম্পর্কে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ইন্দিরা-মুজিব মৈত্রী চুক্তির আলোকে চিটমহল বিনিময় চুক্তি সংগঠিত হয় মৌদি-হাসিনার হাত ধরে।এই মৈত্রী চুক্তি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের সর্বমহল হতে দেশরত্ম উপাধি পেলেও মুল কারিগর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা বিরুধীদের অপপ্রচারের শিকার হয়ে স্বপরিবারে নিহত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাফল্যগাঁথা, সুদুরপ্রসারি চিন্তা চেতনার ফসল 'মৈত্রীচুক্তি" অংশবিশেষ' চিটমহল বিনিময়'। তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সাফল্যে রচিত সম্পুর্ণ নতুন করে আঁকা সোনার বাংলার মানচিত্র দেখলে গর্বে বুক ফুলে উঠবেনা এমন বাঙ্গালী একজনও পাওয়া যাবেনা।অতিব দু:খ্যের সংগে বলতে হচ্ছে নিরানব্বই শতাংশ মানুষ এখন পয্যন্ত নতুন অঙ্কিত মানচিত্র দেখেনি, শুনেনি, জানেওনা। শুধু মাত্র ব্যাপক প্রচার প্রচারণার অভাবেই এমনটি হয়েছে মনে করি। বড় একটি অর্জন 'সমুদ্রসীমা' মামলায় নেদারল্যান্ড এর স্থায়ী সালিশি আদালতের রায়ে বঙ্গোপসাগরে ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা পায় বাংলাদেশ। বাকি ছয় হাজার ১৩৫ বর্গকিলোমিটার পেয়েছে ভারত। গত ২০১৪ সালের ৭ জুলাই এই ঐতিহাসিক রায় পাওয়া যায়।অখন্ড পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশের কোন সরকার আদৌ কোন দিন যা চিন্তাও করেনি সমুদ্রে বাংলাদেশের এত বিশাল পরিমান জলাশয় বেহাত হয়ে আছে যুগের পর যুগ। তার আগে মিয়ানমারের সঙ্গে রায়ে বাংলাদেশ পায় ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার নতুন জলাশয়। "" সবসাকুল্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তন সমৃদ্ধ নতুন যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্র।১৯৭১ ইং সালের সার্বভৌম বাংলাদেশের যাহা দ্বিগুনের কাছাকাছি।"" অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের মানচিত্রে যোগ হয়েছে আরো নীট ১০ হাজার ৫০ একর জমি। বাংলাদেশের নতুন মানচিত্র যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়াই অর্জন। এই নতুন মানচিত্র কতবড় বিশাল অর্জন তা সকলের অনুধাবন করার যোগ্যতাও হয়ত নেই। সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের নতুন মানচিত্রের ছবি এবং তথ্য ব্যাপক ভাবে খবরের কাগজ, ইলেকট্রোনিক মিডিয়া এবং অনলাইন মাধ্যমে দেশবাসিকে জানানোর জন্য সদাশয় সরকার, দায়িত্বরত: তথ্য মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সেলকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। স্বাধীনতার ৪৫ বছর বহু আন্দোলন,সংগ্রাম, অসংখ্য স্বাধীনতা প্রীয় মানুষের আত্মত্যাগের পর আজ বাংলার মানুষের প্রাণের দাবী রাজাকার মুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রাপ্তির শুভক্ষনে--নতুন মানচিত্র পাওয়ার আনন্দ নতুন প্রজর্মকে বদলে দিতে পারে তাঁদের ৪৫বছর স্বাধীনতা বিরুধী রাজাকার, জাতির জনকের খুনীচক্রের ধোলাই করা মননকে। অদ্যাবদি যারা বাংলাদেশের সকল মৌলিক সুবিধা গ্রহন করে,সার্বিক নাগরিক সুযোগ গ্রহন করেও প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রের নতুন নতুন দিক উম্মোচন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত বাংলাদেশের আবহাওয়ায় হৃষ্টতা পেয়ে,স্বাধীন বাংলাদেশের ভাত হজম করে বেড়ে উঠে যাদের পরাজিত করে স্বাধীনতা এনেছিল বীর মুক্তিযোদ্ধারা সেই পাকিস্তানী হায়নাদের নীতি আদর্শ, স্বপ্ন বাস্তবায়নে এখনও অহরাত্র ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। জাতির পিতার বদন্যতায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের সমনাগরিক সুবিদা সহ অন্যান্য সকল প্রকার বাড়তি সুবিধা নিয়েও প্রতি মুহূর্তে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করে চলেছে।বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরণের অপপ্রচারে সদা সর্বদা লিপ্ত রয়েছে। আজ সময় এসেছে নতুন করে ষড়যন্ত্রকারিদেরকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্জিত তথ্য সহ মানচিত্র সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেয়ার, নতুন প্রজর্ম্মকে নতুন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ সম্পর্কে জানানোর। সদাশয় জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন থাকবে, 'গুটি কতক দুবৃত্তের কারনে আপনার সরকারের যুগান্তকারি সাফল্য সমুহ বানের জলে ভেসে যাবে,কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিনা।বহু রথি মহারথি আওয়ামী লীগ ছেড়ে, আপনাকে একা পেলে চলে গেছে,আপনার অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি।গুটি কতক দুবৃত্তকে দলছাড়া করলেও আপনার সরকারের তেমন কিছুই হবে বলে মনে করিনা।অভিলম্বে অপরাজনীতি, সন্ত্রাস, মাস্তানী, দুবৃত্তায়ন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করুন।বাংলার জনগন আপনার পাশে থাকবে ইনশাল্লাহ। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন