বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতের বিদায়, সামনে বিএনপি--- উদ্দেশ্য পরিস্কার, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মান।। ____________________________________________ ১৩ মে-২০১৬ প্রকাশিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বেগম খালেদা জিয়ার একটি বিবৃতি প্রচারিত হয়েছে— ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বলেছিলেন, 'আমি মনে করি- দুর্নীতি, দুঃশাসন, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈরাজ্যের বর্তমান দুঃসহ পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে সবার অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক জাতীয় নির্বাচন ও জনগণের ভোটে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।’ এই খবর পড়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে যদি তাই হয় তাহলে এই নির্বাচনের বাধা কোথায়? বিএনপির কথামতো এখন সরকার যদি জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করে তাহলে বিএনপি তথা ২০ দলীয় ঐক্যজোট কি সেই নির্বাচনে যাবে? সবার অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক জাতীয় নির্বাচন ও জনগণের ভোটে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প না থাকলে ম্যাডাম কি এই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন? তবে কি বিএনপি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি থেকে সরে যাচ্ছে? জানি না বিবৃতিটি প্রকাশ হওয়ার আগে বা প্রকাশ হওয়ার পরেও খালেদা জিয়া দেখেছেন কিনা, হয়তো পরশুরামের ইউএনওর জন্য তার অফিসের কারো কথা শুনে একটি বিবৃতি দিতে কাউকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা অস্বাভাবিক কিছু নয়! কিন্তু সেই বিবৃতিটি যে খালেদা জিয়া পড়ে দেখেননি, সে ব্যাপারে মনে হয় অনেকেই এখন নিশ্চিত। কারণ এই বিবৃতিতে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত রয়েছে। বিবৃতিটি পড়ে অনেকের মনে হতে পারে যদি সরকার ‘সবার অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক জাতীয় নির্বাচন ও জনগণের ভোটে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার’ ব্যবস্থা গ্রহন করে তাহলে বিএনপি হয়তো সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে! তাঁরও আগে জাতিয় কাউন্সিলে খালেদা জিয়া আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচন হবে, এবং তা এই বছরই হবে, হাসিনা বিহীন নির্বাচন হবে। বর্তমান ষড়যন্ত্রের ফসল আসলামের মোসাদ কানেকশান থেকেই কি হাছিনাবিহীন নির্বাচনের কথা বলেছিলেন? ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ দেশে বিদেশে হত্যাকান্ড ঘটাতে পারদর্শী একটি সংস্থা।যিনি মোসাদের সাথে একাধিক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন তিনি চট্রগ্রামের অখ্যাত এক ব্যবসায়ী। গত কাউন্সিলে যে কয়জন কেন্দ্রীয় নেতার নাম ঘোষনা করা হয়েছে তম্মধ্যে আসলামকেও যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই থেকে অনুমান করা যায়, খালেদা জিয়া এবং তাঁর পরিবার মোসাদ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন, আছেন। ষড়যন্ত্র কতটুকু গড়িয়েছিল তা এই মহুর্তে বলা না গেলেও গয়েশ্বরের বিবৃতি থেকে বুঝতে অসুবিধা নেই যে, অনেকদুর এগিয়ে ছিল। বিএনপির অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের জাল আরও বেশি বিস্তৃত হয়ে যাচ্ছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনের খেলোয়াড়রা বাংলাদেশের ম্যাচ ফিক্সিংয়ে এখন তৎপর হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসরায়েল কে নিয়ে আসা হয়েছে।ইসরাইলও এখন নাক গলাচ্ছে এবং তারা ফাঁদে ফেলতে টার্গেট করেছে বিএনপিকে এবং বিএনপিও মনে হচ্ছে সেই ফাঁদে পা অলরেডি দিয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলসহ বিশ্বের অনেক অপশক্তি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে তৎপর। তারা তাদের পাতানো খেলায় নিজ লক্ষ্য অর্জনে বিএনপিকে ব্যবহার করতে চায়। বাংলাদেশের বর্তমান উন্নতি অগ্রগতি এবং ইতিমধ্যে আবিস্কৃত বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি বিদেশীদের লুলপদৃষ্টি থাকবেনা ইহা অস্বাভাবিক বিষয়। আবহমান কাল হতে এই উপমহাদেশের-আমাদের এই জনপথকে শাষন শোষনের লীলাভুমি হিসেবে দেখেছে সাম্রাজবাদী, সামন্তবাদী,পরাশক্তি সমুহ। রাজনৈতিকভাবে বিএনপি অত্যান্ত দুর্বল অবস্থাকে বিদেশী রাষ্ট্র সমুহ তাঁদের দাবার ঘুটি হিসেবে নিয়েছে। বিএনপির উচ্চ পয্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং জিয়া পরিবার--লুটপাটের কারনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিপযস্ত অবস্থায় আছে। তার উপর মামলা সমুহের বিচারিক কায্যক্রম শেষ পয্যায় এসে পৌছে গেছে। প্রত্যেক মামলায় সাজা হওয়ার আশংকা বিদ্যমান থাকায়, নির্বাচন করার যোগ্যতা হারানোর ভয়ে ভীত খালেদা-তারেক। যে কোন বিদেশী রাষ্ট্রের লোভনীয় টোপ--অগনতান্ত্রিকভাবে সরকার পরিবর্তন করে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়ার পরামর্শে, যে কোন শর্তে সাড়া দিয়ে খমতা পাওয়ার উদগ্র কামনায় ব্যস্ত জিয়া পরিবার। বিদেশি শক্তি তাদের অবস্থান থেকে বাংলাদেশে একটি জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায়, যার জন্য তারা উন্নয়ন বনাম গণতন্ত্র এই বিতর্কে সরকারের সঙ্গে দেনদরবার শুরু করে দিয়েছে। সরকারও মনে হয় মানসিকভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। সম্প্রতি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী (১২ মে-২০১৬) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের ২১তম জাতীয় কনভেনশনে বক্তৃতার বলেন, আগামী ২ বছর ৭ মাসের মধ্যেই নির্বাচন হবে, কাজেই এর ৩ মাস আগে চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সেদিন হাস্যরস করে বলেছিলেন, 'প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে অন্য কেউ ক্ষমতায় এসে ভিন্ন কথা বলতে পারে। একটি বিষয় বক্তব্যে বেরিয়ে এসেছে— সরকার আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছেড়ে দিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত—মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এরকম একটি ধূম্রজাল সৃষ্টি করতে পেরেছেন বলে মনে হয়। এখন জনমনে বিশ্বাস অটুট হয়েছে যে, 'যথাসময়েই জাতীয় নির্বাচন হবে।' তাছাড়া জনগনও নির্বাচনের প্রতি তেমন উৎসুক আছে বলে মনে হয়না, সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতির মহাযজ্ঞে জনগন নির্বাচনের কথা ভুলেই গেছে।বিদেশী রাষ্ট্র সমুহ আগের মত নির্বাচন নিয়ে তেমন কথা বলছেন না-তার একমাত্র কারন বাংলাদেশের জনগন উন্নয়নযজ্ঞে নিয়োজিত, নির্বাচনী যজ্ঞে তাঁদের মন নেই।' সরকার ও জনগন এখন গণতন্ত্রের বিকল্প উন্নয়নতন্ত্রের রাজনীতিতে বেশি উৎসাহী। কাজেই বাধ্য না হলে হাতের প্রকল্পগুলো শেষ না করে জাতীয় নির্বাচনে সরকার উৎসাহিত হবে কেন? বরঞ্চ আগামী দুই বছরে বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠ থেকে দূরে রাখতে চূড়ান্তভাবে প্রচেষ্টা চালানোই হবে সরকারের মুর্খ্য কাজ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একক প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যেই জামায়াতকে বাংলাদেশের রাজনীতির বাইরে ছুড়ে ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যে চুড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে জামায়াত। শুধু তাই নয়-যুদ্ধপরাধী সংগঠন হিসেবে দলটিকে কাঠগড়ায় উঠতে হবে অচিরেই। জামায়াত আওয়ামী লীগের জন্য আর কোনো মাথাব্যথার কারন নয়। তবে জামায়াতকে কাবু করতে গিয়ে সরকার যে পরিকল্পিত চরম ঝুঁকিপুর্ন পথ বেছে নিয়েছিল, শতভাগ সফলভাবে সে কাজ করতে পারায় আগামী নির্বাচনে তার সুফল আওয়ামী লীগের ঘোলায় উঠবে নিশ্চিত করেই বলা যায়। ১/১১-উত্তর রাজনীতিতে সরকার ক্ষমতায় এসে প্রথমেই তার লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিয়েছিল। ২০০১ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, সরকারি কর্মকর্তাদের চরম বিরুধীতা ও নির্বাচনে তাদের প্রত্যক্ষ প্রভাব এবং নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সামরিক বাহিনী একতরফা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল।ফলে চরম পরাজয় মেনে নিতে হয়েছিল আওয়ামী লীগকে। জাতির জনকের কন্যা এক্ষেত্রে প্রতিহিংসা পরায়ন না হয়ে কৌশলী ভুমিকা গ্রহন করেন।এইবার সরকার গঠন করেই শেখ হাসিনা কারন গুলীকে সুচিন্তিত, সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে শেখ হাসিনার সরকার সে কারণগুলো দূর করার ব্যবস্থা গ্রহন করেন সর্বপ্রথম । প্রথমেই ১/১১-উত্তর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করার সংসদীয় উদ্যোগ গ্রহন করেন। তৎসময়ের শক্তিশালী বিশদলীয় জোটের সামান্যতম বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি,এখান থেকেই সফলতার শুরু মহাজোট সরকারের। সেই সঙ্গে গত ৭ বছরে মহাজোট সরকার-সরকারি কর্মচারীদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা ও সরকারের ক্ষমতার অংশিদারিত্ব প্রদান করেন। যাতে তারা সরকারের রাজনৈতিক শক্তির সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি সামরিক বাহিনীকে সরকারের উন্নয়নের কাজে অংশীদার করে নেন শেখ হাসিনার সরকার। সরকারের এই ত্রি-সহযোগী সৃষ্টি করার পাশাপাশি জাতির জনকের কন্যা একটি মারাত্মক রক্ষণাত্মক বুদ্ধিমত্বার পদক্ষেপও গ্রহণ করে। শত্রুর ক্রমানুসারে লড়াই করার সিদ্ধান্ত গ্রহন, এক্ষেত্রে জাতির জনকের বুদ্ধিমত্বাকেও ছাড়িয়ে গেছেন তাঁর কন্যা। এই পদক্ষেপটি হলো প্রতিপক্ষের সঙ্গে বোঝাপড়া করার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পদক্ষেপ। যে পদক্ষেপ সম্পর্কে বিরুধীরা সামান্যতম আঁচও করতে পারেনি। বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্রতো নয়ই। আওয়ামী লীগের শত্রুতো বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই। দেশরত্ম সবার সাথে-একসাথে না লড়ে, একদল একদলের সাথে লড়ার কৌশল গ্রহন করেন। প্রথমেই আন্দোলন সংগ্রাম, সন্ত্রাস হত্যায় পারদর্শি এবং আন্তজাতিকভাবে খ্যাতি অর্জনকারি জামায়াত শিবিরকে নি:শেষ করার কৌশল গ্রহন করেন। এক্ষেত্রে বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের টোপ দিয়ে অনেকটাই নিস্ক্রিয় করে দিতে সক্ষম হন জাতির জনকের কন্যা। গনভিত্তিক রাজনৈতিক দল বিএনপি জোটে রেখেও জামায়াতকে রক্ষা করতে কায্যকর উদ্যোগ নেয়নি। জামায়াতকে রক্ষার চেষ্টা না করাই- উভয় দলের জন্য চরম অমঙ্গল ডেকে এনেছে বিএনপি। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের চেয়েও দ্বিগুন ক্ষতির কারন হয়ে দেখা দিয়েছে বিএনপি। শক্তিশালী বিএনপি জোটে না থাকলে অন্তত: সরকারের সাথে সমাঝোতা বা পালিয়ে হলেও বিচার এড়িয়ে যেতে পারতেন অধিকাংশ রাজাকার জামায়াত নেতা। কেউ কেউ বিএনপির শক্তির প্রতি সন্দিহান হয়ে পালিয়েও গেছেন। সফলতার সঙ্গে কৌশল প্রয়োগ করেছে বর্তমান চৌকস সরকার। প্রথমে ধরেছে জামায়াতকে। বিএনপিকে বলেছে, জামায়াতকে জোট থেকে বের না করলে কোন বিষয়ে তোমাদের সাথে আলোচনা হতে পারেনা। আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল যুদ্ধপরাধীর বিচার অনুষ্ঠান করা। বিএনপি ও তাই প্রাথমিক অবস্থায় যুক্তিতর্ক করার চেষ্টা করে এবং আন্দোলনেও সামিল হয়েছিল। শেষ পয্যন্ত রনে ভঙ্গ দিয়ে একতরফা মাঠ ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগকে।যাক বাবা জামায়াতের বিচার হবে- আমরা কেন বাংলাদেশের মানুষের বিরাগ ভাজন হব। বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে ২০ দল করেছে, ক্ষমতায় গিয়ে একাধিক মন্ত্রিত্ব দিয়ে সরকারের অংশিদারিত্ব দিয়েছিল, জামায়াত রাজাকার, তখন মনে হয়নি! কিন্তু জামায়াতকে যখন নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে তখন বিএনপি ক্ষীনস্বরে বলতে থাকে- আমরাও রাজাকারের বিচার চাই, তবে সেই বিচার সূক্ষ্ম হতে হবে,আন্তজাতিক মানের হতে হবে। চাইতে চাইতে বিচার প্রায় শেষ, সরকার তাঁর উদ্দেশ্যের শতভাগ সফল। এখন বানচাল হলেও তেমন কোন সমস্যা সরকার, আওয়ামীলীগ জনগন কারোর জন্যই হবেনা। অন্য ইদলামী দলগুলীও বিএনপিকে ইতিমধ্যে পরিত্যাগ করেছে। জামায়াত তো সব ফাঁসি হয়েই গেছে। এখন বিএনপির পালা। বিগত সাত বছরে যত ষড়যন্ত্র হয়েছে,যত হত্যাকান্ড ঘটনো হয়েছে,সকল হত্যা, হত্যা ষড়যন্ত্রের তালিকা করে বিএনপির বিচার করাই হবে সময়ের দাবি। এইক্ষেত্রে বিএনপি ফেঁসে গেছে ষড়যন্ত্রের কারনে। খালেদা জিয়ার আত্মঅহমিকা, তারেক জিয়ার বাগাড়ম্বরতা, সহজ পথে ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থ্য ভুলে জিয়া পরিবারের স্বার্থ রক্ষা করার অদম্য আখাংকাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে দলটি রাজনীতির স্বাভাবিক গতি ধারা হারিয়েছে। তবে ইহাও সত্যযে বিএনপিতে সৎ সাহসী নেতা নেই। সবাই খালেদার অকর্মণ্য স্তাবক। তৃণমূল বিএনপির কর্মীরা হতাশ। বিএনপির সব পর্যায়ের নেতৃত্ব ভুল লোকদের হাতে। দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচনে যাওয়ার ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দেওয়ার আলামত ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস চরম আকার ধারণ করেছে। বেশির ভাগ নেতা জনবিচ্ছিন্ন। ছাত্র ও যুবসমাজ দিগ্ভ্রান্ত। কৌশল, দিকনির্দেশনা ও নেতৃত্বের অভাবে সরকারি দলের সঙ্গে একসেকেন্ড লড়তে পারছে না। ফলে তারা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে চরম অস্থিরতার মধ্যে পড়েছে। সবাই চরম আস্থাহীনতায় ভুগছে। কারও নিরাপত্তা নেই। ইউপি নির্বাচনে সামান্য প্রতিরোধের দুর্ঘও গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। এই অবস্থায় নির্বাচনী মাঠ ত্যাগ করাই শ্রেয় ছিল দলটির, সিদ্ধান্ত নিয়েও কেন জানি আবার মাঠে ফিরে এসেছে। এসে কি আর হবে -খেলোয়াড় তো নেই মাঠে!! সরকারের কঠোরতা ও নির্বাচন কমিশনের পাইকারিহারে আওয়ামীলীগ নিধন কায্যক্রম পরিচালিত নাহলে একটা ইউপিতেও নির্বাচন করার সুযোগ পেতনা দলটি। সামান্য চোখ রাঙানীতেই কপোকাত তৃনমুলের বিএনপি, বলপ্রয়োগতো আরো পরের কথা। সর্বজায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জনগন এবং আওয়ামী লীগের হাসি মস্করার পাত্রে পরিনত হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বালির বস্তার স্থলে তৃনমুলের বিএনপি নেতাকর্মীরা আওয়ামী কর্মীদের ঘুসি/লাথি অভ্যস্তের বস্তুতে পরিনত হলে আশ্চায্য হওয়ার কিছুই থাকবেনা। অতীতের বিভিন্ন নেতিবাচক রাজনীতি, লুটপাট, ক্ষমতার অপব্যবহার বাদ দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি হাইকমান্ডের একের পর এক ষড়যন্ত্র অংকুরেই প্রকাশিত হয়ে পড়ায় দলটি অদুর ভবিষ্যতে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর ক্ষীন আশাও করা যাচ্ছেনা। প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে অপহরন ও হত্যার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রে আমেরিকার আদালতে কয়েকজনের শাস্তিভোগ, সাংবাদিক রেহমান শফিকের অকপটে অপহরন ও হত্যা ষড়যন্ত্রের স্বীকারক্তি, তৎসময়ে জয়ের বিরুদ্ধে আড়াই হাজার কোটি ডলার আমেরিকার ব্যংকে জমার অভিযোগ উত্থাপন করে-পরবর্তিতে জয়ের চেলেঞ্জ গ্রহনে পিছুটান, ইসরাইলের দুর্দশ্য গুপ্তঘাতক-আন্তজাতিক কিলার মোসাদের সাথে সরকার উৎখাত এবং জাতির জনকের পরিবারকে নিশ্চিন্ন করার পরিকল্পনা ফাঁস, হেফাজতিদের মন্ত্রীত্বের লোভ দেখিয়ে শাফলা চত্ব্ররে অবস্থান,জামায়াত শিবির কতৃক পবিত্র কোরানে আগুন, তৎসময়ে সেনা অভ্যুত্থানের একাধিক চেষ্টায় ব্যার্থ্যতা, সাংবিধানীক বাধ্যবাধকতার সাধারন নির্বাচন ভন্ডুল করার প্রানান্তকর চেষ্টা-অসংখ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন, আগুন বোমায় বহু মানুষের জীবনহানী, সম্পদহানী, চলমান আন্দোলনের কর্মসুচি অদ্যাবদি প্রত্যাহার না করা, হঠাৎ করে তীব্র ভারত বিরুধী অবস্থান থেকে সরে - ভারত তোষন নীতি গ্রহন ইত্যাদি নেতিবাচক কর্মকান্ড দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নার্ভাসের শেষ সীমায় নিয়ে গেছে। শতচেষ্টায়ও বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলনমুখী করা যাবে বলে মনে হয়না।সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হচ্ছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঠপয্যায় আসতে, দলকে সংগঠিত করতে, আন্দোলনমুখী করতে অপরগতা বা অনভিজ্ঞতাই নি:শেষ করছে জনসমর্থিত একাধিকবার ক্ষমতা উপভোগকারি দলটিকে। বর্তমানের এই নাজুক অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই দলটির বেশিরভাগ নেতাকর্মী খোদ জিয়া পরিবারের অধিকাংশ সদস্য জেলের অভ্যন্তরেই থাকতে হবে। বলা চলে তারেক জিয়াকে বিচারের মুখামুখি করার জন্য দেশেফেরৎ আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা অচিরেই সরকারি ভাবে শুরু হতে পারে। কারন তারেককে বিচারের আওতায় আনতে না পারলে জয়ের জীবনহানী সহ বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতির প্রভুত ক্ষতির সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন। উপসংহারে বলা যায়, 'এমনতর পরিস্থীতিতে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থান সময়ের দাবি হলেও তেমনটি অতি সহজে, অল্প সময়ে হবে বলে মনে হয়না।জনগনের ভোটের অধিকার, গনতন্ত্র এরই মধ্যে যদি পিচ্ছিলতায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় তাঁর জন্য সর্বাংশেই দায়ী হবে অপরিপক্ষ বিএনপির বর্তমান রাজনীতি এবং তাঁর লুটেরা নেতৃত্ব।আশা করি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যার কঠোর গনতান্ত্রিক মনোভাবের কারনে দলের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা দুষ্টচক্র তেমন ফলপ্রসূ হবেনা, জািত এই বিশ্বাস এবং আস্থা রাখতেই পারে। ' জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

গত সাত বছরে সব হত্যা এবং হত্যা প্রচেষ্টার তদন্ত করে জিয়া পরিবারের বিচার সময়ে দাবি।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন