শেখ হাসিনা সরকারের দেসজ উন্নয়নের অভুতপুর্ব উন্নতি ও অগ্রগতি------------ ============================== জিইডি সদস্য জনাব সামছুল আলম সাহেবের তথ্য থেকে--- ---------------- সাত বছরে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি ৬.৩১ শতাংশ ----------------------------------- ১ কোটি ৩ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ----------------------------------- সাত বছরে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি ৬.৩১ শতাংশ। ------------------------------------- বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ৭ বছরে দেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। এ সময়ে বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১ কোটিরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনিক ও আইনি সংস্কারের ফলে রাজস্ব আহরণ তিন গুণ হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) গত সাত বছরের অর্থনৈতিকবিষয়ক এক মূল্যায়নে চিত্রটি উঠে এসেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তথ্য প্রেরন করেছেন। গত সাত বছরের সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্র ------------------------------------------- ৭ বছরে দেশজ আয় ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ------------------------------- বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণকালে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫.১ শতাংশ, যা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬.৫১-এ উন্নীত হয়। গত সাত অর্থবছরের গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬.৩১ শতাংশ। ইতিপূর্বে মাথাপিছু জিডিপি দ্বিগুণ হতে * ২০ বছর * অপেক্ষা করতে হলেও বর্তমানে মাত্র ৭ বছরে তা দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে মাথাপিছু আয় হয়েছে ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলারে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে উন্নয়ন বাজেট ছিল মাত্র ২৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে ৯৭ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। সরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মতো ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণের বিষয়গুলো। বেসরকারি বিনিয়োগও প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৯৯ হাজার ২৭১ কোটি টাকা, '২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৯১১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এতে বলা হয়, আলোচ্য সময়ে মোট রাজস্ব ও কর রাজস্ব তিন গুণের বেশি হয়েছে। মোট রাজস্ব আয় ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে ৪২ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। এতে বলা হয়, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও আলোচ্য সময়ের মধ্যে ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৮ কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতি ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির ফলে আড়াই লাখ দেশীয় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হয়। দেশে ও বিদেশে মিলে প্রায় ১ কোটি ৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এত কর্মসংস্থান আর অতীতে কখনও হয়নি। দারিদ্র্য নিরসন এ সরকারের এক অন্যতম সাফল্য। ২০০৫ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ যা ২০১৫ সালে নেমে আসে ২৪.৮ শতাংশে (প্রাক্কলিত)। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এ সরকারের আর এক অন্যতম সাফল্য। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে দেশে চালের উৎপাদন হয় ২৬.৫ মিলিয়ন টন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চাল উৎপন্ন হয়েছে ৩৪.৪ লাখ টন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। বর্তমান সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করেছে। অবকাঠামো উন্নয়ন বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের অনুকূলে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ৭৫০ মিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় তিস্তা সেতু, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে ফ্লাইওভার নির্মাণসহ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নি:সন্দেহে বলা যায়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কায্যক্রম ব্যাপৃত ও চতুর্মুখী।রাষ্ট্রের প্রত্যেক সেক্টরে সমভাবে উন্নয়ন অগ্রগতির এক মহা কর্মযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।দেশরত্ম শেখ হাসিনার লক্ষ আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সাথে সামিল করা।এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও জাতি সংঘ কতৃক বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পয্যবেক্ষনে রাখার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করেছে।আগামী ২০২১ সালের আগেই কাংক্ষীত লক্ষ অর্জন করা যাবে বলে আন্তজাতিক মহল মনে করেন। দেশ ও জাতি এগিয়ে যাচ্ছে গানিতিক হারে, অভ্যন্তরীন রাজনীতি এগুচ্ছে জ্যামিতিক হারে। দেশরত্ম শেখ হাসিনা তাঁর প্রচেষ্টার শতভাগ উজাড় করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জাতির জনকের আরধ্য স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অভিপ্রায়ে।যেখানে থাকবেনা ক্ষুদা,দারিদ্র,অশিক্ষা,হানাহানি,বিদ্বেষ।এমন সমাজ ব্যবস্থা গড়ার লক্ষে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন,যে সমাজে একজন মা,বোন শিশু বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেনা।এমন সমাজ কায়েমের লক্ষ নিয়ে দেশরত্ম অকালান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন,যে সমাজে কোন নাগরীক শিক্ষাহীন থাকবেনা।যে সমাজ নির্মানের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার নিমিত্তে তাঁরই জৈষ্ঠ কন্যা বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী পায়ে পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।গতি কোন অবস্থায় ধীর নহে,লক্ষ ও স্থীর। আধুনিক,বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তি নির্ভর,শিল্প সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ।জাতির জনকের স্বপ্নের বাংলাদেশ। জয়বাংলা বলে আগে বাড়ো--- জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম। শেখ হাসিনা

সাত পার্সেন্ট প্রবৃদ্ধি অর্জনকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বিস্ময়ের চোখেই অবলোকন করছে।জাতির জনকের কন্যার ডায়ামেটিক নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপি প্রসংশিত হচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন