উন্নয়নের মহাসড়কে আমার প্রিয় মাতৃভূমি--
       (রুহুল  আমিন  মজুমদার)

       বর্তমান সরকার ২০০৯ ইং সালে সরকার গঠনের বহু পূর্বে "আওয়ামী লীগের দলীয় ফোরামে" জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যে বিরাজমান সমস্যা চিহ্নিতকরন এবং সমাধানের উপায়, প্রকল্প গ্রহন, বাস্তবায়ন, উন্নয়ন অগ্রগতি টেকসই করার নিমিত্তে সমস্যা ও সমাধান বিষয় বিশেষজ্ঞ পয্যায় একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। উক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশমালার  আলোকে অর্থনৈতিক উন্নতি অগ্রগতি সাধনকল্পে সর্বত্র "প্রযুক্তির ব্যবহার" পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। ২০০৮ইং সালের শেষদিকে জাতিয় নির্বাচন ঘোষিত হলে উক্ত পরিকল্পনা দলের নির্বাচনী ইশতেহারে " ডিজিটাল বাংলাদেশ" নামে  সংযুক্ত করে  "নির্বাচনী অঙ্গিকার" ঘোষনা করে।"ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার পক্ষে জনমত সংগঠিত করার লক্ষে ব্যাপক প্রচার শুরু হলে 'হতাশাগ্রস্ত' নতুন প্রজম্ম "ডিজিটাল বাংলাদেশ" দর্শনে তাঁদের আগামীদিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ছায়া দেখতে পায়। নির্বাচনে 'নতুন প্রজম্মের' সমর্থন যুক্ত হলে 'বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ' ভুমিধ্বস গনরায় নিয়ে জয়লাভ করে।
     ২০০৯ ইং সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা শেখ হাছিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করে শেখ হাছিনা নির্বাচনী অঙ্গিকার "ডিজিটাল বাংলাদেশ" গড়ার লক্ষ পুরণে 'সরকারের বিভিন্ন দফতরের বিশেষজ্ঞদের যথারীতি কাজে লাগিয়ে স্বল্প, মধ্য, দীর্ঘমেয়াদি "পরিকল্পিত পরিকল্পনা "রুপকল্প ভিশন ২০২১" গ্রহন করেন। উক্ত 'পরিকল্পিত পরিকল্পনা' বাস্তবায়নের মাধ্যমে '২০২১' সালের মধ্যে বাংলাদেশকে "মধ্যম আয়ের" দেশে রুপান্তরের লক্ষ নির্ধারন করেন।
    উল্লেখিত লক্ষপূরণে বাঁধা সমূহ দুরিকরনে সরকার মনযোগী হয়।প্রকৃতিগত বাঁধা অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খড়া, প্লাবন, দুয্যোগ, দুর্বিপাক ইত্যাদি ক্ষতিকর জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহন করে।প্রথমাবস্থায় উদ্যোগ সফল হলে বিশ্বব্যাপি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারনে অর্থনীতিতে 'বিশ্বমন্দা' দেখা দিলেও বাংলাদেশ নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান নিতে সক্ষম হয়।
     পরিকল্পিত পরিকল্পনা  'রুপকল্প ভিশন২০২১' অনুযায়ী শুরু হয় প্রাকৃতিক বিপয্যয়, বিপত্তিহীন দেশব্যাপি 'উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ'। 'বায়ু দুষন' জনিত সমস্যা সমাধানের ফলে  বিশ্বের অন্যান্ন দেশের ন্যায় 'উন্নত কৃষি প্রযুক্তি' বাংলাদেশে না থাকা সত্বেও  কৃষিপণ্য উৎপাদনে গানিতিকহারে উন্নতি ঘটতে থাকে।সাড়ে সাত/দশ /চৌদ্দকোটি মানুষের খাদ্যের যোগান যে দেশটিতে ছিলনা; সেই দেশটি মাত্র পাঁছ বছরের মধ্যে ষোলকোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরন করে 'খাদ্য সহ কৃষিপণ্য' উদ্ভৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে।
২০১৫ সালের আগে থেকে চাল ছাড়া অন্যান্ন কৃষিপণ্য রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা আহরন শুরু হলেও চাল রপ্তানী শুরু করেছে সরকার ২০১৫ সাল থেকেই।বিশ্বময় খাদ্য নিরাপত্তা দিনের পর দিন প্রকট আকার ধারন শুরু হলেও বাংলাদেশ বিশ্বকে তাক লাগিয়ে খাদ্য নিরপত্তায় অন্যতম আসনটি দখল করে নিয়েছে।সবচেয়ে বড় কথাটি হল কেউ যদি আমাকে প্রশ্ন করে বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য কি? আমার উত্তর হবে শেখ হাচিনার সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য দেশের উত্তরাঞ্চলের সাংবাৎসরীক "মঙ্গা" যাদুঘরে পাঠাতে পেরেছেন।উত্তর বঙ্গের প্রতিটি জেলা 'কৃষিপণ্য' উৎপাদনে উদ্ভৃত্তের খাতায় নাম লিখিয়েছে।এখন আর কেউ ভাত না খেয়ে উপোষ করে না।
আগামীতে কৃষিখাতে প্রযুক্তিগত ব্যবহার নিশ্চিত হলে বাংলাদেশ 'সারাবিশ্বের খাদ্যব্যাংক' হিসেবে পরিচিতি পেলেও আশ্চায্য হওয়ার কিছুই থাকবেনা।উল্লেখ্য চাষযোগ্য ভূমির পরিমান তুলনামূলক অনেক কমে গেলেও উৎপাদন বেড়েছে প্রায় পাঁছগুনেরও বেশী।বিশ্বময় 'জলবায়ু পরিবর্তন' সমস্যা সমাধানে হিমসিম খেলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে সুদুরপ্রসারি যাদুকরি সাফল্যের কারনে বিশ্বসংস্থা 'জাতিসংঘ' বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সর্ব উচ্চ সম্মান " ধরিত্রির মানসকণ্যা'র স্বিকৃতি দিয়ে সম্মানিত করেছে।
    ইতিমধ্যে ঘোষিত "রুপকল্প ২০২১" এর গৃহিত প্রকল্পের কাজ সিংহভাগ শেষ হয়েছে।জাতিসংঘ নিম্নমধ্য আয়ের দেশে উন্নিত হওয়ার সনদ ২০১৫ সালেই প্রদান করেছে। মুলত: কৃষিপণ্যের বিভিন্নক্ষেত্রের জিডিপি যুক্ত হওয়ার করানেই প্রবৃদ্ধি লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে বর্তমানে ৭% এর উপরে অবস্থান নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশিরভাগ উন্নয়ন সূচকের ক্ষেত্রে এশিয়ার প্রায় সকল দেশ এমন কি ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে 'শেখ হাছিনার বাংলাদেশ'।
    'রুপকল্প ২০২১' এর কর্মযজ্ঞ চলাকালিন ২০১৪ ইং সালের শুরুতে জাতিয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসে।ইতিমধ্যে অশুভ শক্তি শেখ হাছিনা' সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়ে।প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী গনতান্ত্রিক পন্থায় আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে ক্ষমতায় আসতে পারবেনা বুঝতে পারে। সকল অ-শুভশক্তি সম্মিলিত ভাবে নিয়মাতান্ত্রিক রাজনীতি পরিত্যাগ করে হঠকারিতার আশ্রয় নিয়ে দেশব্যাপি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করার ইস্যু খুঁজতে থাকে।
        দেশি বিদেশী চক্রান্তে  ষড়যন্ত্রকারিরা প্রথমে এর আগে দুইবার প্রমানীত ভীতিকর নির্বাচনী ব্যবস্থা 'তত্বাবধায়ক সরকারে'র অধিনে জাতিয় নির্বাচনের পুরাতন ব্যার্থ 'ইস্যু'তে আন্দোলন শুরু করে। তত্বাবধায়ক ইস্যুটি হালে পানি না পাওয়ায়  'ধর্মকে' অশুভ শক্তির প্ররোচনায়  সরকার পতনের সহায়ক 'হাতিয়ারে' রুপান্তর করে। শেখ হাছিনার সরকার ধর্মবিরুধী আখ্যা দিয়ে দেশব্যাপি নাশকতা, হত্যা, গুম, লুটপাট, আগুন বোমায় জ্যান্তমানুষ অঙ্গার করে সর্বত্র ভীতিকর ভূতুড়ে ও নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। অ-শুভ শক্তির প্ররোচনায় খালেদা জিয়া জাতিয় রাজনীতিকে ব্যাক্তিগত এবং দলীয় আক্রোশে রুপান্তরীত করে।দিনের পর দিন হঠকারি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রয়োজনে  তৃতীয় শক্তিকে খমতায় আনার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতেও তাঁদের বিবেকে বাঁধেনি।
    এহেন অবস্থায় সরকারে পক্ষে দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের 'দেশও জনগনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে  'নির্বাচনকালিন সরকার ব্যবস্থা'র একাধিক বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার  আহব্বান জানালেও তৎক্ষনাৎ খালেদা জিয়া উক্ত প্রস্তাব সমুহ নিয়ে আলোচনা বৈঠকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। শেষাবদি দেশ ও জনগনের বৃহত্তর স্বার্থের আনুগত্যতার বিবেচনায় 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা ' স্বপ্রনোদিত হয়ে তৎকালিন সংসদের বিরুধীদলীয় নেত্রী 'খালেদা জিয়া'কে  আলোচনার আহব্বান জানাতে গেলে তিনি রাজনৈতিক  শিষ্টাচার বর্হিভূত চরম উদ্যতপূর্ণ আচরনের মাধ্যমে তাও প্রত্যাখ্যান করেন।"
     'সংসদে বিরুধী দলের নেতা হওয়া সত্বেও খালেদা জিয়া সকল প্রকার কূটনৈতিক রীতিনীতি লঙন করে ভারতের রাষ্ট্রপতি 'প্রণব মূখার্জির' রাষ্ট্রীয় সফরের 'প্রটোকল' ভঙ্গ করে সৌজন্য সাক্ষাৎকার  প্রত্যাখ্যান করেন।শুধু তাই নয়-"হরতাল' কর্মসূচি দিয়ে বিদেশী হাইপ্রোফাইল মেহমানের নিকট বাংলাদেশের মায্যাদা ভুলুন্ঠিত করতেও  দ্বিধাবোধ করেননি।
    মানবসৃষ্ট মহাদুয্যোগ মোকাবেলা করার প্রয়োজন হতে পারে কোন দেশের সরকার চিন্তাও করতে পারেনা। কিন্ত বাংলাদেশের জনগনের রক্তে কান্সারাকার ধারন করে বারংবার 'মহাপ্রলয় ঘটাতে "অ-শুভশক্তি মানব সৃষ্ট দুয্যোগ' ঘুরেফিরে আসে।  এক্ষেত্রেও শেখ হাছিনার সরকার ধৈয্য, সাহষ, সহনশীলতা, বিচক্ষনতা, সময়োপযোগী বাস্তব রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের মাধ্যমে মানব সৃষ্ট মহাদুয্যোগ মোকাবেলা করে রাষ্ট্রনায়কোচিত সফলতার অন্যন্ন এক উদাহরন সৃষ্টি করে বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্র নায়কদেরকে তাক লাগাতে সক্ষম হন। সফলভাবে ৫ই জানুয়ারী ২০১৪ ইং জাতীয় নির্বাচন সমাপ্ত করে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা ও গয়নতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সচল রাখতে সক্ষম হয় সরকার। বারবার 'পবিত্র ইসলাম ধর্মকে কায়েমি স্বার্থে" ব্যবহার করার কৌশলি প্রক্রিয়ার মুখোশ খুলে দিতেও  সক্ষম হয় সরকার।
    ধর্মব্যবসায়ি,অশুভচক্র,ষড়যন্ত্রকারি, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারি, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষশক্তি, যুদ্ধপরাধী, মানবতার দুশমন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিশদল গঠন করে নির্বাচন বয়কট করে। অশুভ শক্তির জোট নির্বাচনে অংশগ্রহন না করায় দেশে বিদেশে উক্ত নির্বাচনের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হ'তে পারে--"একশ্রেনীর 'রাজনীতি বিশ্লেষক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, শুসিল  মত প্রকাশ করে। " বহমান নদীর স্রোতের সাথে তালমিলিয়ে বর্তমান সরকারের সময় বয়ে চলেছে     বৃহত্তর সাগরপানে- আন্তজাতিক মহল 'শেখ হাছিনার'  উন্নয়ন, অগ্রগতি, দেশ প্রেমের অনন্ত  মহাসাগরে ডুবু ডুবু ।  সরকারের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নতো দুরের কথা প্রসংশার ঝুড়ি নিয়ে 'শেখ হাছিনার' পায়ে সঁপে--"একের পর এক বিবৃতি, প্রসংশা, উপঢৌকন উজাড় করে ঢেলে দিচ্ছে।"
       জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যা   মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাকৃতিক বিপয্যয়ের হাত থেকে বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখার কৃতিত্বের জন্যে জাতিসংঘ কতৃক "ধরিত্রির মানস কন্যা" স্বীকৃতি পেয়েছেন। বাংলাদেশের জনগনও দেশরত্ম উপাদিতে ভুষিত করেছে।মানব সৃষ্ট মহাদুয্যোগ থেকে 'দেশ ও জাতি'কে রক্ষা করে বিশ্বের সেরা দশ রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে অন্যতম 'রাষ্ট্রনায়ক' হিসেবে স্থান করে নিতে' সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাছিনা নীজের ও পরিবারের জীবন হুমকির মুখে রেখে ৫ই জানুয়ারী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষাও গনতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের দৃডতায় বিশ্বদরবারে অন্যন্ন এক মায্যদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। বাংলাদেশকেও  বিশ্বের বুকে মায্যদাশীল দেশ ,বাঙ্গালী জাতি বীরের জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে  সক্ষম হয়েছেন।
    ৫ই জানুয়ারি সাধারন নির্বাচন প্রাক্কালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গত নির্বাচনের মতই "রুপকল্প ২০৪১' ঘোষনা করে নির্বাচনী ইশতেহার প্রনয়ন করে। এবারের লক্ষ নির্ধারীত হয় উচ্চবিত্তে"র বাংলাদেশ বিনির্মান।মধ্যম আয়ের দেশের ধারাবাহিকতায় চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি ২০১৬/১৭ অর্থবছরে আরও নতুন 'মেগা প্রকল্প' হাতে নিয়েছে সরকার। পদ্মাপাড়ে অত্যাধুনিক বিমান বন্দর নির্মাণ, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, দুটি এলএনজি টার্মিনাল, ঢাকা মেট্রো সার্কুলার রোড ও এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেন করা সহ প্রায় এক ডজন নতুন "মেগা প্রকল্প" রয়েছে এই তালিকায়।
      পরিবহন সেক্টরের জন্য গ্রহণ করা হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২০ বছর মেয়াদি একটি পরিবহন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), আউটার রিং রোড, ছয়টি এক্সপ্রেসওয়ে, ২১টি টার্মিনাল ও ঢাকার চারপাশে সার্কুলার ওয়াটারওয়ে করার পরিকল্পনা রয়েছে। দুইটি ‘এলএনজি (লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস) টার্মিনাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা ও জার্মানি চারটি দেশ এলএনজি টার্মিনালে জড়িত থাকার কথা রয়েছে।তম্মধ্যে একটি টার্মিনালের কাজ এগিয়ে  চলছে।’
    প্রতিটি জেলায় আইটি পার্ক করার প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। একদিকে আইটি জাতিকে   শিক্ষিত করে তুলবে অন্যদিকে মানবসম্পদ তৈরি করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। নিজেরা আয় করার সুযোগ তৈরি হবে। ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করবে। আউটসোর্সিংয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশ ও বিদেশের জন্য আইটি খাত উপযুক্ত খাত হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রমানীত হয়েছে।আইসিটির মার্কেট বিশ্বব্যাপিতো রয়েছেই -- দেশেও অনেক বড়। আগামীর প্রশাসনকে পেপারলেস প্রশাসন করার প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে জায়গাজমির কাগজপত্র ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে।
    প্রতি বছর প্রায় ২১ লাখ মানুষ যুক্ত হচ্ছে কর্মহাতিয়ারে। ফি বছর  ১০ থেকে ১৫ মিলিয়ন মানুষকে মূলধারার অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষে  কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করার পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগিয়ে চলছে।চলতি বছর কমপক্ষে ৬-৭ লাখ মানুষ বিদেশ যাবে। ১৫-১৬ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে চলতি বছরে।
       বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর : পদ্মার পাড়ে বঙ্গবন্ধুর নামে দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।  সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হলে নিয়োগ দেওয়া হবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং দ্রুত শেষ করা হবে টেন্ডার প্রক্রিয়া। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলিত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।স্থান নির্ধারণে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এর আওতায় নতুন করে চারটি স্থান চিহ্নিত করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। মাদারীপুরের শিবচরের চরজানাজাত, ঢাকার দোহারের চরবিলাসপুর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কেয়াইন ও লতব্দী এলাকা। তবে পদ্মা সেতু থেকে দূরত্ব কম থাকায় চরজানাজাতকে তালিকার প্রথমে রাখা হয়েছে। চারটি স্থান নির্বাচনের বিষয়ে কার্যপত্রে বলা হয়েছে— প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নিমিত্ত বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তম যোগাযোগ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টি সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনপূর্বক স্থান নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষ্যে মোট নয়টি স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে ঢাকা থেকে দূরত্ব, যোগাযোগব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করে উপরিউক্ত চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়।
             বদলে যাচ্ছে ঢাকা :--রাজধানীর যানজট কমাতে নেওয়া হচ্ছে নতুন উদ্যোগ। ঢাকার চারপাশে তিনটি সার্কুলার রোড করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো সার্কুলার লেন বা সার্কুলার রোড নির্মাণের পরিকল্পনা ইতিমধ্যে সরকার অনুমোদনও দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রো সার্কুলার লেন, মিড সার্কুলার লেন, ইনার সার্কুলার লেন— এই তিনটি সার্কুলার লেন ঢাকায় করা হবে এবং কিছু অংশ আন্ডারগ্রাউন্ড থাকবে। এর জন্য একটি রূপরেখা তৈরি হয়েছে। এমনকি মন্ত্রিপরিষদ সভায় তা অনুমোদনও হয়েছে। এই রোড হলে ঢাকার যানজট অনেকটাই কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
        দ্বিতীয় পদ্মা সেতু :---পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পয়েন্টে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকার নীতিগতভাবে এ প্রস্তাবিত সেতুর প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) অনুমোদন করেছে এবং এটা বিল্ড, ওউন, অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফারের (বিওওটি) ভিত্তিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির আওতায় নির্মাণের চিন্তা রয়েছে।
       রাজধানীর সঙ্গে যশোর, কুষ্টিয়া, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অন্য জেলাগুলোকে সংযুক্ত করার জন্য এই দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেতুটি নির্মিত হলে দক্ষিণ-পশ্চিম ও দেশের অন্যান্য এলাকার ব্যবসা এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে। সৃষ্টি হবে বাড়তি কর্মসংস্থানের সুযোগ, যা দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। ২০১১ সালে অনুমোদিত পিডিপিপি অনুযায়ী এই সেতু নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার (১৩ হাজার ১২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা)। এর আগে ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবর মন্ত্রিসভার অর্থনীতিবিষয়ক কমিটি সরকারি- বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় বিওওটির ভিত্তিতে এই দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন করে।
    চার লেন হচ্ছে রংপুর মহাসড়ক :---চার লেন হচ্ছে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক। আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও দুর্ঘটনা রোধে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। সাসেক সংযোগ প্রকল্প-২-এর মাধ্যমে এলেঙ্গা থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত ও সারা দেশে মাঝারি আকারের ১৭টি সেতু নির্মাণ করা হবে। এতে সম্ভব্য ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা। রংপুর থেকে এ মহাসড়কের একটি অংশ লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা হয়ে পাশের দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ রুটের মাধ্যমে ভারত, নেপালসহ অন্যান্য দেশে সরাসরি ব্যবসার প্রসার ঘটানো সম্ভব হবে। এটি এশিয়ান হাইওয়ে, বিবিআইএন ও 'সাসেকে'র একটি অংশ। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে। উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় যাতায়াতের দূরত্বও কমে আসবে।
        ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে এশিয়ান হাইওয়ে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) ও বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডরে (বিসিআইএম) নতুন করে বাংলাদেশের আটটি মহাসড়ক যুক্ত হতে যাচ্ছে। এ সড়কগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৬০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১৯০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। উত্তরবঙ্গে শিল্পের প্রসারসহ বুড়িমারী-বাংলাবান্ধা হয়ে ভারত ও নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় এ মহাসড়ক ভূমিকা রাখবে।
        সড়ক ও জনপথ অধিদফতর ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। জানুয়ারিতে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব দেওয়া হয় এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পটির বিষয়ে। এ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১০ হাজার ১৩৩ কোটি ৬৪ লাখ ব্যয় করা হবে।  উত্তরবঙ্গ-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১২ হাজার থেকে ২৯ হাজার যান চলাচল করে।
       পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেললাইন :--নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর কল্যাণে সরাসরি রেলপথ যাবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। এরপর ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার। প্রথম ধাপে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্তু ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী জেলার পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পের প্রিলিমিনারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (পিডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছে। পিডিপিপি অনুসারে প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত।
       মেজর জিয়াউর রহমান স্যন্ডো গেঞ্জি আর কোদাল হাতে নিয়ে ছবি তোলে প্রতারনার মাধ্যমে সাগরসম জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও জাতির জনক হত্যা হজম করে নিয়েছে।  তাঁর ধর্ষিতা, অশিক্ষিতা স্ত্রী স্বামীর স্যন্ডো গেঞ্জির  জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আড়াইবার প্রধান মন্ত্রী হয়েছেন বাংলাদেশের।
       বঙ্গবন্ধু  বাংলাদেশের জাতির জনক, বাঙ্গালী জাতসত্বার উম্মেসকারি, রয়েছে বনাঢ্য সংগ্রামী জীবন।  তাঁর জৈষ্ঠকন্যা  'শেখ হাছিনা' ইতিমধ্যে বিশ্বনেতাদের মধ্যে অন্যতম নেতার আসনে নিজেকে সু-প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। ভিক্ষুকের জাতিকে সমৃদ্ধ জাতির মায্যদায় উন্নিত করেছেন, মঙ্গা যাদুঘরে পাঠিয়েছেন, মহাসাগরতুল্য উন্নয়ন অগ্রগতির বাস্তব চিত্র থাকা সত্বেও যারা নষ্টালিজিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেশবিরুধী রাজাকার, সন্ত্রাসি, বোমাবাজদের দলে ভিড়িয়ে ভোটের পাল্লা ভারী করার চেষ্টারত: রয়েছেন--''তাঁদের কি অভিধায় অভিহিত করা যায়!!" এমন শব্দমালা বাংলাভাষায় খুঁজে না পেয়ে বাংলাপিডিয়ার আশ্রয় নেয়া ছাড়া--'কোন উপায় খুঁজে পেলামনা'।
              ruhulaminmujumder27@gmail.com
       
ফেনী মহিপাল ট্রাপিকমোড়ে নির্মানাধীন ওভারব্রিজের নকশা(সুত্র:-জেলা পরিষদ,ইঞ্জনিয়ারিং বিভাগ)

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন