সাতখুনের মামলার রায়----" সরকারের আইনের শাষন প্রতিষ্ঠিত করার অঙ্গিকার পূরণে যুগান্তকারি দৃষ্টান্ত"।
(রুহুল আমিন মজুমদার)
-
নি:সন্দেহে বাংলাদেশের এযাবৎ সংঘটিত লোমহর্ষক, চাঞ্চল্যকর, দেশে বিদেশে আলোচিত হত্যাকান্ড গুলীর মধ্যে নারায়ন গঞ্জের ৭খুনের ঘটনাটি অন্যতম না হলেও একটি।সরকারের প্রশাসন যন্ত্র, আইন শৃংখলা বাহিনী এবং পাবলিক সহযোগে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় হত্যাকান্ড গুলির মধ্যে ১৫ই আগষ্ট, ২১ শে আগষ্ট, জেল হত্যা, কিবরিয়া হত্যা, আহসান উল্যা মাষ্টার হত্যা, চট্রগ্রামে শেখ হাসিনাকে হত্যা প্রচেষ্টায় সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের হত্যা, উদিচি হত্যাকান্ড, রমনা বটমুলে হত্যাকান্ড গুলি অন্যতম হলেও তখনকার সরকার প্রত্যেকটি হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দিয়ে ইতিহাসে কালোধ্যায় সৃষ্টি করেছিল।
দেশের বিভিন্ন সেনাসদর সমূহে নাটকীয় অভ্যুত্থানের অজুহাতে অগনিত মেধাবি তরুন সেনা কর্মকর্তা হত্যা সংগঠিত হলেও কোন হত্যাকান্ডের অদ্যাবদি তদন্ত পয্যন্ত হয়নি।আনসার সদর দপ্তরে তাঁদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষে সংগঠিত হলে তাঁদেরকে 'আনসার বিদ্রোহে''র নামে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর যুগৎপত গুলি ও বোমা হামলার মাধ্যমে নির্বিচারে হত্যার ন্যাক্কারজনক ইতিহাসও এদেশে সংগঠিত হ'তে দেখা গেছে। যদিও অনেকগুলি প্রশ্নের মধ্যে একটি প্রশ্নও করা হয়--"আনসার বাহিনীর ন্যায় গুলি,বন্দুকহীন একটি বাহিনী সত্যিকার অর্থে বিদ্রোহ যদিও বা করে থাকে- সেই বিদ্রোহ কতদিন পয্যন্ত তাঁরা চালিয়ে যেতে সক্ষম ছিল।"
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৭৫ ইং সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ একুশ বছর অপ-প্রচারের শিকার হয়ে দেশ ও জনগনের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।বিরুধী দলে থেকেও সেনা শাষিত সরকারের সামরিক আইন প্রত্যাহার থেকে শুরু করে--স্বৈরাচার সরকার, আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা, জনগনের মৌলিক অধিকার, ব্যাক্তি ও বাক স্বাধীনতা,সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা, সভা সমাবেশের স্বাধীনতা, তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, ভোট ও ভাতের অধিকার, সর্বশেষ চারদলীয় জোট ও তত্ববধায়ক সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার সংগ্রাম অব্যাহত রাখে এবং ২০০৯ ইং সালের সাধারন নির্বাচন দিতে বাধ্য করে। বাংলাদেশকে সত্যিকারের গনতন্ত্র, উন্নয়ন, মৌলিক অধিকার,কল্যান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা, গনতন্ত্রের ধারায় ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বহু নেতাকর্মীকে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হয়েছে,অনেক নেতাকর্মী সরকারের পৃষ্টপোষকতায় হত্যা, গুমের শিকার হয়েছে।
অবশেষে ২০০৯ইং সালের সাধারন নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্টতা নিয়ে সরকার গঠন করে।সরকার গঠনের তিনমাসের মাথায় এযাবৎকালের সর্ব বৃহৎ লোমহর্ষক ঘটনা সংগঠিত হয় ঢাকা তৎকালীন বি, ডি আর সদর দপ্তরে। "ফখরুল-মঈন আহম্মদে"র সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের শাষনামলে বি, ডি আর জোয়ানদের মধ্যে তিলে তিলে রোপিত বীজ অবশেষে ঘৃনা আর ক্ষোবে রুপান্তরীত হয়। দেশী বিদেশী শক্তির মদদ পেয়ে উক্ত ঘৃনা ও ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটায় তাঁরা সেনাবাহিনীর ৬০/৭০ জন মেধাবি কর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে।নতুন সরকারের জন্যে উক্ত বিদ্রোহ দমন এবং বিদ্রোহে অংশ নেয়া সদস্যদের বিচারের মুখামুখী করা, ষড়যন্ত্রকারি, ইন্দনদাতা খুঁজে বের করে তাঁদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা, নি:সন্দেহে কঠিন একটি কাজ ছিল। শেখ হাছিনার সরকার সকল প্রকার রক্তপাত এড়িয়ে উক্ত ঘটনা অত্যান্ত স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রন করেন এবং কি ঘটে যাওয়া মানবতা বিরুধী কর্মকান্ড ও সেনা কর্মকর্তা হত্যার বিচার একাধিক দেশী বিদেশী তদন্ত দলের দেয়া প্রতিবেদনের আলোকে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াও সমাপ্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করেন।
বাংলাদেশের জনগনের আকাংক্ষীত আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার লক্ষে '৭১ইং সালের মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া একাধিক আন্তজাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার ককায্য শুরু করে বর্তমান সময় পয্যন্ত চলমান রেখেছেন। ইতিমধ্যে শীর্ষ অপরাধী কয়েকজনের সাজা বাস্তবায়িত হয়েছে। '৭৫ ইং সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার ৯৬ইং সালে আওয়ামীলীগ সরকার শেখ হাছিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করার পর শুরু করে নিম্ন আদালতের রায় পয্যন্ত চালিয়ে নিতে পেরেছিল।২০০১ ইং সালে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা না হওয়ায় উক্ত রায় কায্যকর করা সম্ভব হয়নি।চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে বিচারক স্বল্পতার অজুহাতে উক্ত বিচার কায্যক্রম দীর্ঘ পাঁছ বছর অঘোষিতভাবে স্থগিত করে রাখে।২০০৬ ইং সালে সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের রায় সাপেক্ষে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারিদের সাজা কায্যকর করে।'
১৯৯৬ইং সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শেখ হাছিনা সরকার গঠন করে শুধুমাত্র জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারের হত্যাকান্ড নয় জেলখানার অভ্যন্তরে চার জাতীয়নেতা হত্যা সহ পরবর্তী প্রায় সকল চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের বিচার কায্যক্রম শুরু করে।অধিকাংশ মামলা নিস্পত্তি হলেও কিছু মামলা এখনও চুড়ান্ত নিস্পত্তির অপেক্ষায় উচ্চ আদালতে রয়েছে। আশা করা যায় প্রত্যকটি মামলার বিচার সম্পন্ন হবে এবং হত্যাকারি শাস্তির আওতায় আসবে।দীর্ঘ বিরতির কারনে অনেক মামলার সাক্ষী হয় মৃত্যু বরন করেছে নয়তোবা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় বেশীরভাগ মামলার আলামত পয্যন্ত ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে অথবা সুরক্ষিত আদালত কক্ষ হ'তে মামলার ডকেট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বাদী-সাক্ষী, আলামত ইত্যাদি সংগ্রহ করে মামলাগুলী প্রমান করা সত্যি এক কঠিন ব্যাপার।তারপরও আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার পুরনে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে প্রত্যকটি মামলা নিস্পত্তির উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
২০১৪ইং সালের সাধারন নির্বাচনের পর সরকারি বাহিনী ও ষড়যন্ত্রকারিদের যোগসাজসে সবচেয়ে বড় ও চাঞ্চল্যকর হত্যা কান্ডটি ঘটে নারায়ন গঞ্জ। সরকারের সবচেয়ে উন্নত, চৌকস বাহিনী কতিপয় দুস্কৃতিকারীর প্ররোচনায় সাতজন বিশিষ্ট নাগরিককে ঐদিন একই সাথে অপহরন করে হত্যা করে এবং কি লাশ ঘুম করে।সাড়া জাগানো হত্যাকান্ড দেশে বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি সাংঘাতিক ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। উক্ত ঘটনা তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় ষড়যন্ত্রকারিরা প্রকাশ্য অ-প্রকাশ্য বলতে থাকে-- "হত্যাকান্ডের বিচার সরকার ধামাচাপা দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।" সরকার উক্ত হত্যার বিচার করবেনা বা করতে পারবে না।আদালত পাঁড়ার ভিতরে বাহিরে আসামী পক্ষের উদ্যত আচার আচরন বিরুধী পক্ষের অভিযোগের সত্যতা অনেকাংশে প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভুমিকা পালন করে। সাধারন মানুষও অনেকাংশে বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিল হত্যাকারিদের নিশ্চয়ই সরকারের সাথে যোগসাজস রয়েছে।আসামীগন এতবড় ঘটনা করার পরও ছিল স্বাভাবিক কোন কোন ক্ষেত্রে প্রভাব প্রতিপত্তিও দেখা গেছে চোখে পড়ার মতই।
নারায়ণগঞ্জের র্যব-১১-এর তৎকালীন সদস্যরা অপহৃত সাতজনকে প্রথমে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করেন। তারপর মুখে পলিথিন পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। সর্বশেষ নদীতে ফেলার সময় লাশগুলোর পেট চিরে দেন তাঁরা। জড়িত র্যব সদস্যদের জবানবন্দিতেই উঠে এসেছে ঘটনার নৃশংসতার বিবরণ।
অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অদ্য ৭খুনের মামলায় র্যব কর্মকর্তা সহ ২৬ জন প্রভাবশালী হত্যাকারির মৃত্যুদন্ডের রায়ের মাধ্যমে বিচার কায্য সম্পন্ন হয়েছে।সন্দেহ প্রবন সকল পক্ষের মুখে চুনকালি মেখে চাঞ্চল্যকর হত্যার বিচারের মাধ্যমে প্রমান হল বর্তমান সরকার আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার থেকে চুল পরিমানও বিচ্যুত হয়নি। বাংলাদেশকে সভ্য দুনিয়ায় একটি সভ্যদেশ ও জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা সর্বাজ্ঞে প্রয়োজন।বর্তমান শেখ হাছিনার সরকার প্রভাবশালী রাষ্ট্রের সরকার প্রধান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সরকার সমুহের "ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কায্যকর একটি অমানবিক শাস্তির বিধান" অজুহাতে "ফাঁসি রহিতকরনের জন্য প্রচন্ড চাপ,দেশের অভ্যন্তরে সম্মিলীত অশুভশক্তির সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে আদালতের দেয়া প্রত্যেকটি সাজা কায্যকর করেছে।বাংলাদেশকে এযাবৎ কাল চলে আসা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্ত করার লক্ষে নীজের এবং পরিবারের জীবনহানীকেও তোয়াক্কা করেননি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী।তিনি এবং তাঁর সরকার দৃডতার সাথে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন---"তার উৎকৃষ্ট একটি প্রমান নারায়ন গঞ্জে সংঘটিত ৭জন বিশিষ্ট নাগরিক হত্যায় জড়িত সরকারের আইন শৃংখলা বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে এবং কি বিদ্যমান আদালতের মাধ্যমে বিচারকায্য সম্পন্ন করে সাজা নিশ্চিত করেছেন।"
অতীতের কোন সরকার দেশে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য কোন উদাহরন সৃষ্টি করতে পারেননি যাহা বর্তমান সরকারের আজকের দিনেও একটি বড় উদাহরন স্থাপিত হল ।
masterruhulamin@gmail.com
"জয়বাংলা----------জয়বঙ্গবন্ধু"
(রুহুল আমিন মজুমদার)
-
নি:সন্দেহে বাংলাদেশের এযাবৎ সংঘটিত লোমহর্ষক, চাঞ্চল্যকর, দেশে বিদেশে আলোচিত হত্যাকান্ড গুলীর মধ্যে নারায়ন গঞ্জের ৭খুনের ঘটনাটি অন্যতম না হলেও একটি।সরকারের প্রশাসন যন্ত্র, আইন শৃংখলা বাহিনী এবং পাবলিক সহযোগে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় হত্যাকান্ড গুলির মধ্যে ১৫ই আগষ্ট, ২১ শে আগষ্ট, জেল হত্যা, কিবরিয়া হত্যা, আহসান উল্যা মাষ্টার হত্যা, চট্রগ্রামে শেখ হাসিনাকে হত্যা প্রচেষ্টায় সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের হত্যা, উদিচি হত্যাকান্ড, রমনা বটমুলে হত্যাকান্ড গুলি অন্যতম হলেও তখনকার সরকার প্রত্যেকটি হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দিয়ে ইতিহাসে কালোধ্যায় সৃষ্টি করেছিল।
দেশের বিভিন্ন সেনাসদর সমূহে নাটকীয় অভ্যুত্থানের অজুহাতে অগনিত মেধাবি তরুন সেনা কর্মকর্তা হত্যা সংগঠিত হলেও কোন হত্যাকান্ডের অদ্যাবদি তদন্ত পয্যন্ত হয়নি।আনসার সদর দপ্তরে তাঁদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষে সংগঠিত হলে তাঁদেরকে 'আনসার বিদ্রোহে''র নামে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর যুগৎপত গুলি ও বোমা হামলার মাধ্যমে নির্বিচারে হত্যার ন্যাক্কারজনক ইতিহাসও এদেশে সংগঠিত হ'তে দেখা গেছে। যদিও অনেকগুলি প্রশ্নের মধ্যে একটি প্রশ্নও করা হয়--"আনসার বাহিনীর ন্যায় গুলি,বন্দুকহীন একটি বাহিনী সত্যিকার অর্থে বিদ্রোহ যদিও বা করে থাকে- সেই বিদ্রোহ কতদিন পয্যন্ত তাঁরা চালিয়ে যেতে সক্ষম ছিল।"
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৭৫ ইং সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ একুশ বছর অপ-প্রচারের শিকার হয়ে দেশ ও জনগনের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।বিরুধী দলে থেকেও সেনা শাষিত সরকারের সামরিক আইন প্রত্যাহার থেকে শুরু করে--স্বৈরাচার সরকার, আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা, জনগনের মৌলিক অধিকার, ব্যাক্তি ও বাক স্বাধীনতা,সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা, সভা সমাবেশের স্বাধীনতা, তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, ভোট ও ভাতের অধিকার, সর্বশেষ চারদলীয় জোট ও তত্ববধায়ক সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার সংগ্রাম অব্যাহত রাখে এবং ২০০৯ ইং সালের সাধারন নির্বাচন দিতে বাধ্য করে। বাংলাদেশকে সত্যিকারের গনতন্ত্র, উন্নয়ন, মৌলিক অধিকার,কল্যান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা, গনতন্ত্রের ধারায় ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বহু নেতাকর্মীকে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হয়েছে,অনেক নেতাকর্মী সরকারের পৃষ্টপোষকতায় হত্যা, গুমের শিকার হয়েছে।
অবশেষে ২০০৯ইং সালের সাধারন নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্টতা নিয়ে সরকার গঠন করে।সরকার গঠনের তিনমাসের মাথায় এযাবৎকালের সর্ব বৃহৎ লোমহর্ষক ঘটনা সংগঠিত হয় ঢাকা তৎকালীন বি, ডি আর সদর দপ্তরে। "ফখরুল-মঈন আহম্মদে"র সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের শাষনামলে বি, ডি আর জোয়ানদের মধ্যে তিলে তিলে রোপিত বীজ অবশেষে ঘৃনা আর ক্ষোবে রুপান্তরীত হয়। দেশী বিদেশী শক্তির মদদ পেয়ে উক্ত ঘৃনা ও ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটায় তাঁরা সেনাবাহিনীর ৬০/৭০ জন মেধাবি কর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে।নতুন সরকারের জন্যে উক্ত বিদ্রোহ দমন এবং বিদ্রোহে অংশ নেয়া সদস্যদের বিচারের মুখামুখী করা, ষড়যন্ত্রকারি, ইন্দনদাতা খুঁজে বের করে তাঁদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা, নি:সন্দেহে কঠিন একটি কাজ ছিল। শেখ হাছিনার সরকার সকল প্রকার রক্তপাত এড়িয়ে উক্ত ঘটনা অত্যান্ত স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রন করেন এবং কি ঘটে যাওয়া মানবতা বিরুধী কর্মকান্ড ও সেনা কর্মকর্তা হত্যার বিচার একাধিক দেশী বিদেশী তদন্ত দলের দেয়া প্রতিবেদনের আলোকে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াও সমাপ্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করেন।
বাংলাদেশের জনগনের আকাংক্ষীত আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার লক্ষে '৭১ইং সালের মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া একাধিক আন্তজাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার ককায্য শুরু করে বর্তমান সময় পয্যন্ত চলমান রেখেছেন। ইতিমধ্যে শীর্ষ অপরাধী কয়েকজনের সাজা বাস্তবায়িত হয়েছে। '৭৫ ইং সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার ৯৬ইং সালে আওয়ামীলীগ সরকার শেখ হাছিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করার পর শুরু করে নিম্ন আদালতের রায় পয্যন্ত চালিয়ে নিতে পেরেছিল।২০০১ ইং সালে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা না হওয়ায় উক্ত রায় কায্যকর করা সম্ভব হয়নি।চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে বিচারক স্বল্পতার অজুহাতে উক্ত বিচার কায্যক্রম দীর্ঘ পাঁছ বছর অঘোষিতভাবে স্থগিত করে রাখে।২০০৬ ইং সালে সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের রায় সাপেক্ষে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারিদের সাজা কায্যকর করে।'
১৯৯৬ইং সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শেখ হাছিনা সরকার গঠন করে শুধুমাত্র জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারের হত্যাকান্ড নয় জেলখানার অভ্যন্তরে চার জাতীয়নেতা হত্যা সহ পরবর্তী প্রায় সকল চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের বিচার কায্যক্রম শুরু করে।অধিকাংশ মামলা নিস্পত্তি হলেও কিছু মামলা এখনও চুড়ান্ত নিস্পত্তির অপেক্ষায় উচ্চ আদালতে রয়েছে। আশা করা যায় প্রত্যকটি মামলার বিচার সম্পন্ন হবে এবং হত্যাকারি শাস্তির আওতায় আসবে।দীর্ঘ বিরতির কারনে অনেক মামলার সাক্ষী হয় মৃত্যু বরন করেছে নয়তোবা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় বেশীরভাগ মামলার আলামত পয্যন্ত ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে অথবা সুরক্ষিত আদালত কক্ষ হ'তে মামলার ডকেট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বাদী-সাক্ষী, আলামত ইত্যাদি সংগ্রহ করে মামলাগুলী প্রমান করা সত্যি এক কঠিন ব্যাপার।তারপরও আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার পুরনে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে প্রত্যকটি মামলা নিস্পত্তির উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
২০১৪ইং সালের সাধারন নির্বাচনের পর সরকারি বাহিনী ও ষড়যন্ত্রকারিদের যোগসাজসে সবচেয়ে বড় ও চাঞ্চল্যকর হত্যা কান্ডটি ঘটে নারায়ন গঞ্জ। সরকারের সবচেয়ে উন্নত, চৌকস বাহিনী কতিপয় দুস্কৃতিকারীর প্ররোচনায় সাতজন বিশিষ্ট নাগরিককে ঐদিন একই সাথে অপহরন করে হত্যা করে এবং কি লাশ ঘুম করে।সাড়া জাগানো হত্যাকান্ড দেশে বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি সাংঘাতিক ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। উক্ত ঘটনা তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় ষড়যন্ত্রকারিরা প্রকাশ্য অ-প্রকাশ্য বলতে থাকে-- "হত্যাকান্ডের বিচার সরকার ধামাচাপা দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।" সরকার উক্ত হত্যার বিচার করবেনা বা করতে পারবে না।আদালত পাঁড়ার ভিতরে বাহিরে আসামী পক্ষের উদ্যত আচার আচরন বিরুধী পক্ষের অভিযোগের সত্যতা অনেকাংশে প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভুমিকা পালন করে। সাধারন মানুষও অনেকাংশে বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিল হত্যাকারিদের নিশ্চয়ই সরকারের সাথে যোগসাজস রয়েছে।আসামীগন এতবড় ঘটনা করার পরও ছিল স্বাভাবিক কোন কোন ক্ষেত্রে প্রভাব প্রতিপত্তিও দেখা গেছে চোখে পড়ার মতই।
নারায়ণগঞ্জের র্যব-১১-এর তৎকালীন সদস্যরা অপহৃত সাতজনকে প্রথমে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করেন। তারপর মুখে পলিথিন পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। সর্বশেষ নদীতে ফেলার সময় লাশগুলোর পেট চিরে দেন তাঁরা। জড়িত র্যব সদস্যদের জবানবন্দিতেই উঠে এসেছে ঘটনার নৃশংসতার বিবরণ।
অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অদ্য ৭খুনের মামলায় র্যব কর্মকর্তা সহ ২৬ জন প্রভাবশালী হত্যাকারির মৃত্যুদন্ডের রায়ের মাধ্যমে বিচার কায্য সম্পন্ন হয়েছে।সন্দেহ প্রবন সকল পক্ষের মুখে চুনকালি মেখে চাঞ্চল্যকর হত্যার বিচারের মাধ্যমে প্রমান হল বর্তমান সরকার আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার থেকে চুল পরিমানও বিচ্যুত হয়নি। বাংলাদেশকে সভ্য দুনিয়ায় একটি সভ্যদেশ ও জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা সর্বাজ্ঞে প্রয়োজন।বর্তমান শেখ হাছিনার সরকার প্রভাবশালী রাষ্ট্রের সরকার প্রধান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সরকার সমুহের "ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কায্যকর একটি অমানবিক শাস্তির বিধান" অজুহাতে "ফাঁসি রহিতকরনের জন্য প্রচন্ড চাপ,দেশের অভ্যন্তরে সম্মিলীত অশুভশক্তির সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে আদালতের দেয়া প্রত্যেকটি সাজা কায্যকর করেছে।বাংলাদেশকে এযাবৎ কাল চলে আসা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্ত করার লক্ষে নীজের এবং পরিবারের জীবনহানীকেও তোয়াক্কা করেননি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী।তিনি এবং তাঁর সরকার দৃডতার সাথে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন---"তার উৎকৃষ্ট একটি প্রমান নারায়ন গঞ্জে সংঘটিত ৭জন বিশিষ্ট নাগরিক হত্যায় জড়িত সরকারের আইন শৃংখলা বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে এবং কি বিদ্যমান আদালতের মাধ্যমে বিচারকায্য সম্পন্ন করে সাজা নিশ্চিত করেছেন।"
অতীতের কোন সরকার দেশে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য কোন উদাহরন সৃষ্টি করতে পারেননি যাহা বর্তমান সরকারের আজকের দিনেও একটি বড় উদাহরন স্থাপিত হল ।
masterruhulamin@gmail.com
"জয়বাংলা----------জয়বঙ্গবন্ধু"
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন