জাতীয় কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রের ব্যাপক সংস্কার---'সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে গনতন্ত্র চর্চার অঙ্গিকার সংযোজন।
     (রুহুল আমিন মজুমদার)

  আমাদের একটি কথা স্মরনে থাকা প্রয়োজন প্রচলিত রীতিনীতির বিপরীতে আধুনিক,যুগোপযোগী রাষ্ট্রীয় কোন ব্যবস্থাপনা সংযোজন করতে গেলে চতুর্দিকে হৈচৈ পড়ে যায়।সব গেল সব গেল বলে একশ্রেনীর মানুষ দৌঁড়ঝাপ শুরু করে দেন। কি গেল পরিবর্তে কি এল সেইদিকে চোখ রাখার প্রয়োজনবোধ করেনা। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গিকার গনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।পশ্চিমা গনতন্ত্রে অভ্যস্ত বাঙ্গালীরা নীজস্ব গনতন্ত্র কেমন হওয়া উচিৎ,কেমন শাষনব্যবস্থা গঠন--নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য;সেই গভেষনা না করে বঙ্গবন্ধুর বাকশালকে একদলীয় শাষন ব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করতে পছন্দ করেন। "বাকশালে" আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলের অস্তিত্ব কি ছিলনা?
     বর্তমানের রাষ্ট্রের বিশেষ প্রয়োজনে সবদল মিলে যে সরকার গঠিত হয় বা হবে সেই সরকার যদি "জাতীয় সরকারের" নাম নিয়ে গ্রহন যোগ্যতা পেতে পারে "বাকশাল" কেন বিভেষীকা? বাকশাল গঠন হয়েছিল নতুন রাষ্ট্র, নতুন প্রশাসন চালাবার জন্য, আর এখন জাতীয় সরকার গঠন করা হবে দেশের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করার জন্য--- ব্যবধান এখানেই।স্বাধীন দেশের প্রশাসন- পরাধীন দেশের প্রশাসন দিয়ে চালাতে যারা আগ্রহী ছিলেন;তাঁরাই ছিলেন বাকশালের বিরুধীতাকারী। মিথ্যাচারের মাধ্যমে বাকশাল শাষনকে ভীতিকর শাষনব্যবস্থা হিসেবে জনগনের মনে গেঁথে দিয়ে জাতীরজনকের পরিবারকে হত্যা করার ক্ষেত্র সাজানোই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য।
    গনতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না প্রতিনিয়ত শুনতে পাওয়া যায় অথছ তাঁদের দলেই গনতন্ত্রের চর্চা নেই।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলের অভ্যন্তরে গনতন্ত্রের চর্চা সীমিত পরিসরে করে এলেও এবার তাঁর ব্যাত্যায় ঘটিয়ে পুর্নাঙ্গ গনতন্ত্রের চর্চায় দলকে ফিরিয়ে এনেছে।শুধু তাই নয় স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর হলেও সরকারের সর্বস্তরে গনতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখার অঙ্গিকার গঠনতন্ত্রে সংযোজন করেছে। এই ধারাটি অন্য কোন দলের গঠনতন্ত্রে সংযোজনের জন্যে প্রথমেই দলের গনতন্ত্র চর্চার বিষয়টি সংশোধন করে গঠনতন্ত্রে সংযোজনের পর তা চর্চা করে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে নেতাকর্মীদের।তারপর দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকারে ফিরে আসতে কয়েকযোগ সময় পার হয়ে যাবে।তাঁদের শুসীল এবং  তাঁরা নীজেরা গনতন্ত্রের জন্য প্রতিনিয়ত কান্নাকাটি করে।আমি শতবার বলার চেষ্টা করেছি --আজ আবার বলছি  "বিএনপির বর্তমান সাংগঠনিক নড়বড়ে কাঠামোতে,প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাঁর পরিষদকে সহ একটিমাত্র কেন্দ্রেও পাহারায় বসে থাকে;তবুও নির্বাচন সুষ্ঠ করতে পারবেনা। কারন গনতন্ত্রে সমশক্তির লড়াই প্রয়োজন হয় এবং সবল দুর্বলের উপর আঘাত করার রীতিনীতি সিদ্ধ।"
 
       এবারের কাউন্সিল গুরুত্বপুর্ন অনেক পরিবর্তনের মধ্যে গনতন্ত্রকে"দল, দেশ, সমাজে সুদৃড করার লক্ষে এবং তাঁর চর্চা অব্যাহত রাখার জন্য তিনটি গুরুত্বপুর্ণ সংযোজন ঘটিয়েছেন জাতির জনকের কন্যা। তম্মধ্যে নিম্নে একটি বিষয় উল্লেখে রেখে বাকি দু'টি বিষয় তৎসম্পর্কে লিখার প্রয়োজনে উল্লেখ করার আশা রাখি----

১."গঠনতন্ত্রের ২নং ধারার অঙ্গীকার অনুচ্ছেদে ৬নং উপ-ধারায় ‘রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিটি স্তরের সকল প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও রীতি-নীতির চর্চা ও অনুশীলন করা’ সংযোজন করা হয়েছে।"

         গনতন্ত্রের রাজারাণীদের দেশে এবারের নির্বাচনে শুধুমাত্র শেষ মহুর্তের অপপ্রচারের কারনে হিলারীর জনপ্রীয়তা থাকা সত্তেও ট্রাম্প পাস করেছে। ট্রাম্প পাস করার জন্য যে অনৈতিক অপ-প্রচারের দৃষ্টান্ত রেখেছে গনতন্ত্র তাঁর খেসারত দিতে হবে কয়েক যুগ।তাঁদের গনতান্ত্রিক চর্চা শতবছরের, তাঁর পরেও অনৈতিক প্রচারনা থামেনি,ভোট কেনার অভিযোগও শুনা গেছে।আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশ সমুহে রাতারাতি গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে বা করে ফেলেছি যারা বলে তারা আদৌ গনতন্ত্রের সংজ্ঞা জানেন কিনা আমার সন্দেহ হয়। গনতন্ত্র অব্যাহত চর্চার বিষয়,প্রতিষ্ঠার বিষয় নয়।সর্বস্তরে গনতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করা হলে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পায়। প্রাতিষ্ঠানিক রুপ ফেলে যারাই ক্ষমতায় আসবে শাষন ব্যবস্থা পরিবর্তন করার সুযোগ পায়না।যেমন- বিজেপি ক্ষমতায় আসার জন্য বাবরী মসজীদ ভেঙ্গে হিন্দুধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করেছিল। বাবরী মসজিদ ইস্যু বিজিপিকে আঞ্চলিক দল থেকে উন্নিত করে সর্ব ভারতীয় দলে রুপান্তরীত করে। দুইবার ক্ষমতায় এসেও কি বাবরী মসজিদ ভাঙতে পেরেছে?
       ভারতে জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধিকে দলীয় ভাবে বিজেপি স্বীকার করে না। কিন্ত্যু সরকারের জাতীয় অনুষ্ঠানে স্মরণ না করে কি উপায় আছে? ভারতের সংবিধান 'ধর্ম নিরপেক্ষ সংবিধান';পরিবর্তন করে 'হিন্দু জাতীয়তাবাদি' সংবিধানে রুপান্তর করার উদ্যোগ নিতে পারছেনা কেন বিজিপি সরকার? বিরুধী দলে থেকে বহুবার হুমকি শুনেছি- হিন্দুদের দেশে হিন্দুরাই থাকবে। কায্যকর হয়েছে কখনও? না পারার একটি মাত্র কারন গনতন্ত্র সর্বত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ ধারন করার কারন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দলের অঙ্গিকার নামায় অন্যতম ধারায় যাহা গত সম্মেলনে সংযোজন করেছে।

    উল্লেখিত ধারাটি ভিন্নকোন রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে সংযোজন হ'তে কমকরে হলেও ১০/২০ বছর সময়ের প্রয়োজন হতে পারে।বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমুহের মধ্যে তাঁদের দলের গনতন্ত্রের ভিত্তি কি, কেমন তাঁর বৈশিষ্ট, চর্চা কেন করতে হয় এতদবিষয়ে সম্যক ধারনা আছে বলেও মনে হয়না। বিরুদীদলের রাজনৈগিক জ্ঞানহীনতায় এবং তাঁদের সাংগঠিনক ভিত্তির দুর্বলতার কারনে আওয়ামী লীগ বড় রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হাজারো চেষ্টা অব্যাহত রেখেও তাঁর দলীয় কঠামো, রাজনৈতিক শিষ্টাচার,গনতন্ত্রের চর্চা সঠিকভাবে অনুসরন করাতে পারছেনা আঞ্চলীক নেতাদের। দলের জেলা, ,উপজেলা, আঞ্চলিক নেতাকর্মীদেরকে যতই হুমকি ধমকি প্রদান করা হোকনা কেন বহিস্কার, জেল, ক্রসফায়ার করুকনা কেন, একজনের পরিবর্তে সমমানের বা তারচেয়ে আরো জগন্য নেতাকর্মীর উত্থান ঘটে যাচ্ছে এলাকা ভিত্তিক।যে সমস্ত এলাকায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিচরন রয়েছে এবং একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার নির্বাচনী এলাকা সেই সমস্ত এলাকায় দলে কোন সন্ত্রাসী, মাস্তান,গডফাদার উৎপত্তি হতে দেখা যায়না। কেন্দ্রীয় নেতা বিচরন হীন এলাকা সমুহে তাঁর আধিক্য সরকারের ভাবমুর্তি আগেও ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে, এবারও তার ব্যত্যায় হবে না।
 
    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে আদর্শ বিরুধী নেতাকর্মীর অবস্থান পাকাপোক্তভাবে অতীতেও ছিল বর্তমানেও আছে--""তাঁর উৎকৃষ্ট উদাহরন অতীতের বঙ্গবন্ধুর "মোস্তাক গং-। "বর্তমান সময়ে  "নাসিরনগর রংপুরের সাঁওতাল পল্লি উচ্ছেদ" বিশ্লেষন করে দেখলেই বিতর্ক করার প্রয়োজন হয়না। যুগে যুগে আদর্শ বিরুধী নেতা কর্মী আওয়ামী লীগের অগ্রযাত্রায় বড় বাঁধার সৃষ্টি করে রেখেছিল এবং এখনও তাঁরই আলামত পরিদৃষ্ট হচ্ছে।

      আমি আরও সহজভাবে আমার এলাকার আওয়ামী রাজনীতির অবক্ষয়ের কিঞ্চিত উদাহরন দিয়ে পাঠকবন্ধুদের সহজভাবে বুঝিয়ে লেখা শেষ করতে চাই--।

      "আমিনূল করীম মজুমদার (খোকা) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রান উন্নত নৈতিকতার অধিকারি,জনদরদী নেতা ছিলেন।তিনি ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে ফেনীর আপামর জনগনের প্রানের নেতা মরহুম খাজা আহাম্মদ সাহেবকে পরাজিত করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।ফেনী জেলাব্যাপি মাটিও মানুষের নেতা হয়েও(ফেনীর উত্তরের) আঞ্চলিক নেতা মরহুম খোকা ভাইয়ের নিকট হেরে তৎক্ষনাৎ মঞ্চে দাঁড়িয়ে নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। নির্বাচিত হলে কি হবে?নেতাকর্মীদের তোper মুখে পড়ার আশংকায় খোকা ভাই জেলা কায্যালয় (তিন বছর মেয়াদকাল) বসে কোন সভা করার সাহষ করেননি।"
    খোকা ভাইয়ের নৈতিক মনোবল এতই প্রবল ছিল যে---জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী মন্ত্রী কর্ণেল জাফর ইমাম (বীর বিক্রম) এর প্রভাবকে তোয়াক্কা না করে তাঁর প্রর্থীকে পরাজিত করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। খোকা ভাইয়ের নির্বাচনে কোন টাকা পয়সা খরছ করার সামর্থ ছিলনা, করতেন ও না।তাঁর জন্যই কর্মীরা সামর্থ্যানুযায়ী খরছ করতেন। বাংলাদেশের ছয় ঋতুর পোষাক তাঁর একটাই--"লুঙ্গি পাঞ্জাবি মুজিব কোট"। "বিদেশ হতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবন, শশুরবাড়ী হ'তে নীজ বাড়ী, প্রান্তর হ'তে পরশুরামের দলীয় কায্যালয়" ঐ একটি পোশাকই তাঁর গাঁয়ে পরিহীত দেখা যেত সর্বসময়ে।প্রচন্ড শীতে যেমন মুজিব কোর্টের উপর চাদর জড়াতেন না তেমনি প্রচন্ড গরমে পাঞ্জাবী গাঁয়ে দিয়ে মুজিব কোর্ট রেখে দিতেন না।
    তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় একদিন ''উপজেলা কর্মকর্তাদের অফিসকক্ষে" তালা লাগিয়ে দেন।কারন কর্মকর্তাগন সময়মত অফিসে হাজিরা দেননা। বাংলাদেশের ক্ষমতায় জাতীয় পার্টি তাঁর মন্ত্রী 'জাফর ইমাম' খোকা ভাই আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জনগনের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। উল্লেখ্য যে নতুন গঠিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গনের তখন এত বেশী ক্ষমতাও ছিলনা, তাঁর সরকারও ক্ষমতায় ছিলনা। তাছাড়াও তাঁর মাথার উপর বসে ছিল সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী 'জাফর ইমাম'--প্রতিনয়ত "যুদ্ধ তো হচ্ছেই মন্ত্রী বনাম খোকা মিয়া- অর্থাৎ আওয়ামী লীগ বনাম জাতীয় পার্টি।" এমন পরিস্থীতিতে তিনি তালা ঝুলিয়ে দিলেন কর্মকর্তাদের অফিসে!!! ভাবুনতো বন্ধুরা--তিনি কেমন নৈতিক বলে বলিয়ান ছিলেন? কেমন সৎ জীবন যাপন করলে এমন সাহষী কাজ করতে পারেন- একজন বিরুধী দলের নির্বাচিত চেয়ারম্যান? তাঁর পরনের লুঙ্গি অত্র এলাকায় বর্তমান সময়েও "খোকা লুঙ্গি" হিসেবেই পরিচিত।
    জাতীয় পার্টির শাষনামল--এবারও একই মন্ত্রীর দাপট।মন্ত্রীর প্রকাশ্য ঘোষনা-"একভোট পেলেও তাঁর মনোনীত প্রার্থীকে তিনি বিজয়ী ঘোষনা করবেন। " এমতবস্থায়  ভয়ে আওয়ামী লীগের কোন নেতা ইউপি নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছেন না।স্থানীয় নির্বাচনে যুৎসই প্রাত্থী দিতে না পারলে জাতীয় রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা---"বিপদে পড়েছেন খোকা ভাই"।যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী তাঁদের গ্রহন যোগ্যতা প্রশ্নের সম্মুখ্যীন।তিনি অল্পবয়স্ক এক ছাত্রকে বেছে নিলেন ইউপি নির্বাচনে জাফর ইমাম সাহেবকে চেলেঞ্জ করার জন্য।ছাত্রটি ছাত্র লীগের পরশুরাম কলেজ শাখা অথবা ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি বা সাধারন সম্পাদক হতে পারেন--'এতদিনে স্মরন করতে পারছিনা'। নাম তাঁর "কামাল আহাম্মদ মজুমদার"। বহুভোটে জিতে গেল কামাল-জিতে গেল আওয়ামী লীগ, জীতে গেলেন আমিনুল করিম মজুমদার (খোকা) ভাই। তাঁরপরেও রাজনীতির আদর্শের বাহিরে কোনদিন চিন্তা করেন নাই। বাহিরে কাউকে ছাড় দেননি, আপোষ করেননি, নৈতিকতা হারাননি। তিনিই হচ্ছেন আজকের দিনের পরশুরাম উপজেলা পরিষদের সম্মানীত---"চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জনাব কামাল আহম্মদ মজুমদার। যোগ্য নেতার যোগ্য উত্তরসুরী।"
      আজকে কি দেখি কি শুনি-- নির্বাচনে বিএনপির মার্কা আছে কিন্তু প্রার্থী, প্রচারনা কিছুই ছিলনা--"তারপরেও নির্বাচনে তিন চার হাজার ভোট পায়না আওয়ামী লীগ প্রার্থী।আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে পাস করে বিএনপির মেম্ভার!!!!আওয়ামী লীগ মনোনীত মেম্বার প্রার্থী কেন্দ্রেই যেতে পারেনা--স্বতন্ত্র প্রার্থীর কথা আলাদা। চেয়ারম্যান মনোনয়ন হাতিয়ে নেয় অশিক্ষিত অথর্ব হাইব্রিড। আওয়ামী পরিবার ধ্বংসকারি পরিবারের সদস্য নির্বাচিত হয় আওয়ামী লীগ নেতা। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব হাইব্রিডের হাতে দিয়ে ত্যাগী নেতাদেরকে প্রত্যহ অপমান অপদস্ত করার অবাধ লাইসেন্স দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ ধ্বংসের চক্রান্তে এমন গভীর ষড়যন্ত্র আমি আর কখনও দেখিনি; আপনারা কেউ কি দেখেছেন? এই সম্পর্কীত বিষয় বিস্তারীত লিখার আশায় তথ্যের সন্ধানে রইলাম।
        বর্তমানের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ কোন কোন ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরাও নিজের পরিবার এবং প্রশাসনকে উপঢৌকন দিয়ে খুশী রাখার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত রয়েছে।নির্বাচিত হয়ে ছেলেকে খুশী করে পাঁছ কোটি টাকা দামের গাড়ী উপহার দিতে শুনা যায়, সাংসদ হয়ে কোরবাণীর জন্য গরু ক্রয় করে দেয় রাষ্ট্রের সেবক তথা জনপ্রতিনীধির আজ্ঞাবহ পুলিশকে!! কেন দেয়, কেন দিতে হয়--'তাও কি মানুষ বুঝেনা, জানেনা'।তাঁদের মনোনীত প্রার্থী হাইব্রিড হবেনা খোকাদের মনোনীত প্রার্থী হাইব্রিড হবে? সংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচিত হলেও পুর্বের একজন আঞ্চলিক নেতা বা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নৈতিক চরিত্রের সংঙ্গে তুলনীয় হওয়ার যোগ্যতা আছে কি? কিভাবে, কি করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন তাঁর কন্যা!!!

    আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি জনাব ওমর ফারুক সাহেবের ফেনী যুবলীগের কাউন্সিলে দেয়া রেকর্ডকৃত ভাষন শুনছিলাম গতকয়দিন আগে। উপস্থীত নেতাকর্মীদের অনেক রাত্রী পয্যন্ত বসে থাকা নিয়ে তিনি যে প্রশংসা করেছেন এবং সৌন্দয্য নিয়ে অহংকার করেছেন ফেনী বাসি হিসেবে আমি ও খুশী হওয়ার কথা ছিল-কিন্তু তা হতে পারিনি।বাহিরের চাকচিক্য জয়নাল হাজারীর সময়ও কম ছিলনা।জাতির পিতার কন্যাও কোন এক মহা সমাবেশে বলতে শুনেছিলাম--"শৃংখলা শিখতে হলে ফেনীতে যাও,জয়নাল হাজারীর নিকট থেকে শিখে আস।"বরাবরই বাংলাদেশের যেকোন এলাকার সংগঠনের চেয়ে ফেনী  অধিক শক্তিশালী ছিল, আছে, থাকবে। ২০০১ ইং সালে তত্ববধায়ক সরকারের রোষানল থেকে সুশৃংখল বাহিনী জয়নাল হাজারীকে রক্ষা করতে পারেনি। জনগনের নেতারা বিভিন্ন এলাকায় ছিলেন, আছেন, থাকবেন।থাকার কারন তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের, ছাত্রলীগের, যুবলীগের নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত ছিলেন, নেতা জনগনের পাশে ছিলেন। বর্তমানেও অধিকরাত্রী নেতাকর্মীগন  ধৈয্যধারন না করে উপায় নেই বিধায় মনযোগী শ্রোতা হয়ে বসেছিলেন-জনগন এক সেকেন্ড বসবেনা, শুনবেনা কি বলেন আওয়ামী লীগ নেতা।কারন বর্তমানের আওয়ামী লীগ নেতারা সরকারের পুলিশ বাহিনী কতৃক পরিবেষ্টিত-জনগন কতৃক পরিবেষ্টিত নেই। সম্মানীত যুবলীগ প্রেসিডেন্ট বুঝবেন কি করে-জাতির জনকের কন্যা ও তার আগে যেখানে বুঝেননি।
     ফেনীর আপামর জনগনের রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের মায্যাদা আওয়ামী লীগের খাজা সাহেবের মৃত্যুর পর উধাও হয়ে গেছে--"ফিরে আর আসেনি, আসবেনা।" বরঞ্চ অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমান অবস্থা দিনে দিনে আরো খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাই উজ্জ্বল হচ্ছে। প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে--??
    কিছুকাল আগেও স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী থাকা সত্তেও বিএনপি বা অন্য দলের একক প্রার্থীকে হারাতে পেরেছে। বর্তমানে অন্য কোন দলের প্রার্থী মাঠে ছিলনা, কেন্দ্রে ছিলনা, এজেন্ট ছিলনা - একক প্রার্থী আওয়ামী লীগের; ভোট পেয়েছে তিন থেকে চার হাজার। নিয়ন্ত্রনের মধ্যেও আওয়ামী লীগের কর্মীরাই অন্য দলের প্রার্থীকে সম্মান জনক ভোট দিয়ে দিয়েছে, প্রায় এক দেড় হাজার করে---'যেখানে সুযোগ পেয়েছে সেখানে'। মেম্ভার পদ আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকা সত্তেও বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বিএনপির নিকট। নৈতিক চরিত্রের কত অধ:পতন ঘটলে দলবিরুধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে পারে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এবং তাঁদের নমিনেশন দাতারা?

    জাতির জনকের কন্যা প্রতিটি ক্ষেত্র উম্মোচন করে দিয়ে যাচ্ছেন তাঁর মেধার সর্ব উচ্চ ব্যবহার করে।আগামী দিনের রাজনীতিবীদেরা অনুসরন করে চালিয়ে নেয়ার উপযোগীতাও  দিয়ে যাচ্ছেন।প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অনুসরন যোগ্য গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতাও উম্মমোচন করে দিয়ে যাচ্ছেন।ত্রিস্তর বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার কাঠামো তিনিই উম্মোচচন করেছেন।আগামীর বাংলাদেশ তাঁর নতুন প্রজম্ম প্রবাহমান ধারা অব্যাহত রাখার উপর নির্ভর করবে সর্বস্তরে গনতন্ত্র 'প্রাতিষ্ঠানিকতা' পেতে--" সময় কত স্বল্প বা দীর্ঘ হবে।"
    ruhulaminmujumder27@gmail.com
 
 
 
 
 
 
 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন