খালেদা জিয়ার ধংসস্তুপে দাঁড়িয়ে "শেখ হাছিনার" সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মান---
          (রুহুল  আমিন  মজুমদার)
বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোট বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেহাল দশা ও অপাক্তেয় হওয়ার পিছনে বহু কারনের মধ্যে দু'টি কারন অন্যতম----
(১)২০০৯ ইং সালের অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচনের অব্যবহিত পর হ'তে অদ্যাবদি খালেদা জিয়া এবং তাঁর পরিবারের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ রক্ষার অপচেষ্টায় দল ও জোটকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যবহার।
(২) মুক্তিযুদ্ধে স্বীকৃত বিরুধীতাকারী এবং মানবতা বিরুধী অপরাধে জড়িতদের  রক্ষায় বিএনপি দল ও  জোটকে অ-ঘোষিত ভাবে ব্যবহার।জনগনের উপর আস্থা না রেখে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে মনযোগি হওয়া। প্রকাশ্যে, অপ্রকাশ্যে, ঘোষিত-অ-ঘোষিত অপ-রাজনীতির কারনে--'দল ও জোটে একদিকে অধিকতর সৎ ও ত্যাগি রাজনীতি মনস্ক নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যাক্তিও দল রাজনীতি বিমূখ হয়েছে অন্যদিকে সরকার বিরুধী মনোভাবাপন্ন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যাক্তি ও দল সরকার বিরুধী আন্দোলনে সমর্থন দেয়নি বা শীর্ষ নেতার অদুরদর্শিতায় আদায় করতে ব্যার্থ হওয়া।
অবশেষে খালেদা জিয়া নিজমূখে স্বীকার করতে বাধ্য হলেন---"বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে-"নেতাকর্মীরা কেউ মাঠে নামেনি।" গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠার্ষিকী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিউটে আয়োজিত আলোচনা সভার একপয্যায়ে নেতাকর্মীদের--'খালেদা তোমার ভয় নাই- রাজপথ ছাড়ি নাই, খালেদা তোমার ভয় নাই--আমরা আছি লাখ ভাই" শ্লোগান দিতে থাকলে তাঁদের থামিয়ে--'মুল সত্যটি স্বীকার করে নিলেন'।
তিনি এই প্রসংঙ্গে আরো একটি কঠিন সত্য স্বীকার করে বলেন--"এখন আন্দোলনের কোন প্রয়োজন নেই, এখন কাজ হচ্ছে ভাল ছেলেদের ছাত্র দলে নিয়ে আসা। বস্তির ছেলেপেলে দিয়ে ছাত্রদলের সংখ্যা বাড়িয়ে কোন লাভ হবেনা। আমি নির্বাচন কমিশন সংস্কারে কি প্রস্তাব দিয়েছি--"তোমরা কেউ পড় নাই, মেজর শহীদ জিয়ার জীবনী কেউ পড় নাই।" ছাত্র দলে কোন ছাত্রই নেই--
      একই মঞ্চে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যের বিষয়ে আমি শুধুমাত্র একটি কথাই বলতে চাই--"দেরীতে হলেও বেগম খালেদা জিয়া মধ্যরাতের টকবাজদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়ে 'সূর্য্যালোকের ন্যায় সত্য কথাটি দল ও জোটের পতনোম্মুখ সময় প্রকাশ করেছেন"। তিনি অকপটে বলেন-'বিগত তিনমাসব্যাপি জোটের ঘোষিত 'হরতাল', 'অবরোধ' আন্দোলন কর্মসূচি প্রতিপালনে মাঠে কোন নেতাকর্মীই ছিল না'। ছাত্রদলে সৎ, ত্যাগি, মেধাসম্পন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া কোন নেতাকর্মীই নেই।যারা আছেন তাঁরা সবাই দুই চারটা ছেলেমেয়ের পিতা। তাঁরা হয় একান্ত সংসার মূখী নয়ত ব্যবসায়ী। প্রথমত: তাঁরা বস্তির ছেলেপেলে ছাত্র দলের নেতা কর্মী পরিচয়ে পরবর্তীতে "পাঁড়া মহল্লার মাস্তান, সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ।"বর্তমানের ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাঁর ঘোষিত নির্বাচন সংস্কার প্রস্তাব এবং মেজর শহীদ জিয়ার জীবনী কেউ পড়ে নাই।
     এখন জাতির নিকট বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে--প্রথমত: --তাঁর স্বীকারোক্তি মোতাবেক "তিনমাস" চারদেয়ালের অভ্যন্তরে সুরক্ষিত প্রাসাদে বসে প্রতিনিয়ত,  দৈনন্দিন ডিজিটাল মিডিয়ায় বিবৃতির মাধ্যমে হরতাল, অবরোধ পালন করার জন্য কারপ্রতি তিনি বা তাঁর মূখপাত্র হুকুম জারি করেছেন?"  যেহেতু দলের নেতাকর্মীরা রাজপথে ছিলনা-- "কাদের কে  নাশকতা, অরজকতা, আগুন সন্ত্রাস, আগুন বোমা, লুটপাট করার জন্য লেলিয়ে দেয়া হয়েছিল?" প্রত্যহ বিকেলে ডিজিটাল মিডিয়ায়  বার্তা/বিবৃতির মাধ্যমে কাদেরকে ধন্যবাদ জানাতেন!! কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্যে প্রতিনিয়ত জনগনকেও অভিনন্দিত করেছেন! নতুন নতুন কর্মসূচির ঘোষনা দিয়ে সরকার পতনের প্রতিজ্ঞা সহ আশ্বাস প্রদান  করেছেন তিনি অথবা তাঁর পক্ষে দলের মূখপাত্র !!        বিশেষভাবে পাঠকদের স্বরণ করিয়ে দিতে চাই--"জোটনেত্রী খালেদা জিয়া অদ্যাবদি তাঁর ঘোষিত চলমান হরতাল, অবরোধ প্রত্যাহার করেননি।"
          জাতির নিকট দ্বিতীয় সর্বোচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন--"ছাত্র রাজনীতিকে অছাত্র, মাস্তান, সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংসের অপরাধে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াকে মরণোত্তর বিচারের আওতায় সরকার আনবে কি-না?  মেজর শহীদ জিয়া গঠিত ছাত্রদলের ধারাবাহিকতা রক্ষার অপরাধে  সংগঠন হিসেবে বিএনপি, অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল,সাংগঠনিক  নেত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে আইনের আওতায় আনা হবে কি- না? যেহেতু খালেদা জিয়া নীজের মুখে স্বীকার করেছেন-- 'ছাত্রদলে ছাত্র নেই।'
      সংগঠনটি ভুমিষ্টের পর থেকে তাঁদের হাতে লক্ষ লক্ষ ছাত্রের প্রানহানীর ঘটনা ঘটেছে।চর দখলের ন্যায় বছরের পর বছর কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের হল দখল করে রেখেছে।  অ-ছাত্র কতৃক হল দখলে রেখে নিয়মিত ছাত্রদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটিয়েছে। ছাত্রদলের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টেন্ডারবাজি করেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন মার্কেট সমূহে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি করেছে।প্রতিবছর ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দের  একাধিক বিদেশ সফর, রাষ্ট্রীয় সফর, শিক্ষা সফর, প্রধানমন্ত্রী/ রাষ্ট্রপতির সফর সঙ্গী, কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যান তহবিলের কোটি কোটি টাকা ছাত্রদলের নাম ভাঙ্গিয়ে বস্তির মাস্তানদের পেটে হজম হয়েছে।সম্পুর্ণ দায় খালেদা জিয়া যেহেতু নীজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সেহেতু তাঁকে আইনের আওতায় আনা হবে কবে ?"
      মধ্যরাতের সুশীলদের নিকট জাতির জিজ্ঞাসা--"দিনের পর দিন মিথ্যা তথ্য দিয়ে, কথার চাতুয্যে জাতিকে বিভ্রান্ত করার দায় কি আপনারা নিবেন?' আন্দোলন সংগ্রামের জন্য গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সু-শিক্ষিত নেতাকর্মীর প্রয়োজন।দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের দেশপ্রেমিক নেতাকর্মী ছাড়া কোন রাজনৈতিক দল বেঁচে থাকতে পারেনা। বিএনপি দলের অভ্যন্তরে গনতন্ত্রের অনুপস্থীতি স্বীকৃত--' খালেদা জিয়া ঘোষিত কর্মসূচি পালনের নিমিত্তে রাজপথে কোন নেতাকর্মী ছিলনা।তিনি তাঁর নেতৃত্বের ব্যার্থ্যতা স্বীকার করে পরোক্ষভাবে জাতিকে গনতন্ত্র সুরক্ষার প্রশ্নে ঘোর শংকায় ঠেলে দিয়েছেন।'
        আমরা জানি--বর্তমান আধুনিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে উঠেছে অধিকতর জন কল্যানকর, প্রত্যক্ষভাবে জনগন কতৃক নিয়ন্ত্রিত, জনগন কতৃক শাষিত, স্বচ্ছ, নির্ভেজাল, আবশ্যকীয় জবাবদিহীমূলক, আধুনিক, যুগ উপযোগী 'গনতান্ত্রিক দর্শনের ভিত্তিতে। উল্লেখিত 'গনতান্ত্রিক দর্শনে'র ধারাবাহিকতা রক্ষা,বিকশীত ও প্রাতিষ্ঠানীক ভিত্তি দেয়ার লক্ষ অর্জনের নিমিত্তে কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান প্রত্যেক রাষ্ট্রে, সমাজে,  সরকারে থাকা একান্ত কাম্য বা পুর্বশর্ত।
              তম্মধ্যে শক্তিশালী মাধ্যম গুলীর অন্যতম একটি মাধ্যম নিয়মিত মেয়াদান্তে নির্বাচন কমিশন কতৃক সরকারের সর্বস্তরে সকলের অংশগ্রহনে নির্বাচন অনুষ্ঠান।ঘোষিত নির্বাচনে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী নির্বাচন কমিশনে তালিকাভুক্ত বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহন নিশ্চিত থাকা বাঞ্চনীয়। উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে প্রয়োজন একাধিক সমশক্তি সম্পন্ন গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও জোট।ঐ সমস্ত রাজনৈতিক দলের জন্যে প্রয়োজন সু-শিক্ষিত কর্মীবাহিনী, বুদ্ধিদিপ্ত নেতা, দলীয় মুলনীতি নির্ভর আদর্শ, দলীয় উদ্দেশ্য সাধনের বিস্তারীত বিবরণ সংকলিত গঠনতন্ত্র, নির্দিষ্ট কর্মসূচি সংবলিত লিখিত নির্বাচনী অঙ্গিকার বা মেনিফেষ্টো।
দু:খ্যজনক হলেও সত্য--"বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে আধুনিক, দেশপ্রেমিক, দেশ ও জনগনের কল্যানকামী গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রকট সংকট দেখা দিয়েছে।' এই সত্যটি প্রকট ভাবে পরিদৃষ্ট হয়েছে বিগতদিনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের তিনটি স্তরে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সহ তাঁর আগে অনুষ্ঠানেয় জাতীয় সংসদের নির্বাচনে। স্থানীয় সরকারের তিনস্তরেই   বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ব্যাতিত অন্যকোন দলের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহন পরিলক্ষিত হয়নি। অনুষ্ঠানেয় জাতীয় নির্বাচনেও একই  পরিস্থীতি বিরাজমান থাকায় গনতন্ত্র কক্ষচ্যুতির সম্ভাবনায় অভিজ্ঞমহল, বুদ্ধিজীবি, জাতীর বিবেক বলে পরিচিত সব মহল আশংকীত হয়ে পড়েছিলেন।বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্র সমূহের সরকার ও জনগন হতাশ হয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন।
স্থানীয় সরকারের তিনটি স্তরেই সরকার বিরুধীদের হতাশাজনক অংশগ্রহনের ফলে দলহীন নির্বাচিত নির্দলীয় প্রার্থীদের অর্ধেকেরও কম ইউপিতে ও সরকার বিরুধী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা জিতে আসতে পারেনি।স্থানীয় সরকারের অন্য দু'টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উপজেলা পরিষদে নামকা ওয়াস্তে অংশ নেয়ার কারনে ফলাফল আরো বেশী হতাশাজনক। প্রায় ৬৫ বছরের ইতিহাসে স্থানীয় সরকারের সর্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদের পরোক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও দেশে বিদ্যমান কোন রাজনৈতিক দল অংশ গ্রহন করেনি।অত্যাচায্য বিষয়টি হচ্ছে--"কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন প্রত্যাখ্যানও করেনি।" এতে-ই প্রতিয়মান হয়--"বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলীর মধ্যে অদ্যাবদি কোনপ্রকারের পরিপক্ষতা বা ম্যাচুরিটি আসেনি।"
জাতীয় নির্বাচনে শক্তিহীন জাতীয় পার্টি সহ আরো কয়েকটি দল অংশ নিলেও বৃহৎ বিরুধী দল ও জোট অজ্ঞাত কারনে অংশ না নেয়ায় নির্বাচন অনেক ক্ষেত্রে প্রহসনে পরিণত হয়।সরকারের বিকল্প ছায়া সরকারব্যবস্থা গড়ে তোলা সরকার বিরুধী রাজনৈতিক দলের গনতান্ত্রিক কৌশলি উপায়। সরকারের গনবিরুধী কায্যক্রমের গঠনমূলক সমালোচনা,আন্দোলন, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ারই অংশ। সরকার এবং সরকারি দলের-"দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দখল, অসম চুক্তি এককথায় দেশও জনগনের স্বার্থ্য বিরুধী কর্মকান্ড জনগনের নিকট তুলে ধরে তাঁদের পক্ষে জনমত সংগঠিত করাই রাজনৈতিক দলের প্রধান কাজ।
দু:খ্যজনক হলেও সত্য--'বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলীর অভ্যন্তরে গনতন্ত্রের উপস্থীতি না থাকায় দলীয় প্রধানের ব্যাক্তি স্বার্থেই দলকে পরিচালিত করতে দেখা যায়'। খমতায় থেকে অবাধ স্বেচ্ছাচারিতা,  দুনীতি মামলা, দখল, প্রভাব প্রতিপত্তির মাধ্যমে অবৈধ কাল টাকা আহরন ইত্যাদি অপকর্মের বিরুদ্ধে নেয়া রাষ্ট্রীয় আইনানুগ ব্যবস্থার মোকাবেলায় প্রচলীত আইনের মাধ্যমে   না করে দলকে ব্যবহার করার সুযোগের সন্ধানে থাকে।এতে জনকল্যানের পরিবর্তে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে দেশ ও জনগনের দু:খ্য দুর্দশা বাড়াতে তাঁদের বিবেকে সাড়া দেয়না।তাঁর সাথে আমাদের দেশের অধিকাংশ নেতা পদপদবি মন্ত্রীত্ব, এমপির নমিনেশনের লোভে উক্ত নেতার পায়ের নীছে পুঁজা দিতে ব্যাস্ত থাকে।
মুলত:  বিদ্যমান সরকার বিরুধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নির্বাচনের প্রতি অনাগ্রহের অনেকগুলী কারনের মধ্যে অন্যতম কয়েকটি কারন--"নেতৃত্বের অদক্ষতা, রাজনৈতিক জ্ঞানসমৃদ্ধ কর্মীর অভাব, ত্যাগের চেয়ে ভোগবিলাসি নেতাকর্মীর আধিক্য, আদর্শ, উদ্দেশ্য, দর্শনহীন রাজনৈতিক দল জনগনের মানষিক পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়না।রাজনৈতিক দল গুলীর মধ্যে অধিকাংশের মতাদর্শে ভিন্নতা না থাকায়  জনমনে উক্ত দলগুলীর কোন একটির একক প্রভাব ও দৃষ্ট হয়না।যেহেতু নির্বাচক মন্ডলীর দলের প্রতি  আগ্রহ সৃষ্টি হয়না সেহেতু নির্বাচনকারি নেতাও জনপ্রিয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হ'তে পারেনা।
 জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা রাজনীতির গুড় তাৎপয্যের গভীরে প্রবেশ না করে হতাশায় ভোগতে থাকে।  নির্বাচনে অর্থব্যায়কে অ-পাত্রে বিনিয়োগ, অযথা অপ-ব্যায়, নির্বাচনকালীন সময় ব্যায়কে পন্ডশ্রম মনে করতে থাকে। নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দুরত্ব বজায় রাখার নিমিত্তে বিভিন্ন  কৌশল খুঁজতে থাকে। বিকল্প যেকোন ভাবে সহজ পথে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে রাজনীতি বহির্ভুত পথ অবলম্বন করে। রাজনৈতিক দল ও জোট সমুহের নির্বাচন ভীতি বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়।দায়িত্বশীল গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এবং সর্বগ্রাহ্য,  নিবেদিত, নির্লোভ, দেশপ্রেমিক, জ্ঞানী, জনপ্রীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের অভাবে চলমান গনতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্র বিকশীত না হয়ে সংকোচিত হওয়ার আশংকা দেখা দেয়।
এমতবস্থায় বর্তমান সরকারের অভিষ্ট লক্ষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নঘেরা শোষনমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ,  গনতান্ত্রিক সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন কন্টাকাকির্ণ হয়ে পড়ে। সম্মীলিত অ-শুভশক্তি রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিনিয়ত বাধার সৃষ্টি করে উন্নয়ন, অগ্রগতি থামিয়ে দেয়ার লক্ষে বিভিন্নমুখী ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহন করে। জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশররত্ম'শেখ হাছিনার' অভিষ্ট লক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক গনতান্ত্রিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক, বিজ্ঞান ভিত্তিক, তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর, কৃষি-শিল্পোন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনাকে বহুলাংশে হুমকির সম্মুখ্যিন করে তোলে।
এমত:বস্থায় জাতির জনকের কন্যা 'শেখ হাছিনা' দলের অভ্যন্তরে দুষ্টচক্রকে পর্দার আড়ালে ঢেকে, জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে, দেশও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে,নীজের এবং পরিবারের জীবন বিপন্ন হওয়ার শতভাগ আশংকাকে তোয়াক্কা না করে-- অসীম সাহষ, ধৈয্যের পরাকাষ্টা প্রদর্শন করে অশুভশক্তির বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধে জয়ী হতে সক্ষম হন।এরফলে মানব সৃষ্ট রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক মহা দুর্দিনে তিনি গনতন্ত্রের বৈঠাকে শক্তহাতে ধরে রাখতে সক্ষম হন।
            বেগম খালেদা জিয়া কতৃক স্বীকায্য 'তিনমাস' সম্মিলীত অশুভশক্তি কতৃক পরিচালিত অপ-তৎপরতায় নেতাকর্মীশুন্য রাজপথে-বিরামহীন নাশকতা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, পবিত্র কোরানের হাজার হাজার কপিতে আগুন, ব্যাংক বীমা লুট, স্বর্ণদোকান লুট, আগুন বোমায় জ্যান্ত মানুষকে নিমিষে কাঠকয়লায় রুপান্তর, চলন্ত বাস, ট্রেনে আগুন বোমায় বেসুমার জীবনহানী ও সম্পদহানী, বোমা আগুন তান্ডব চালিয়ে জনজীবন অচল করে দেয়। তাঁদের সফলতা এক্ষেত্রে মধ্যযুগীয় বর্বতাকেও হার মানিয়েছিল।সদাশয় সরকার, বুদ্ধিজীবিগন, সাংবাদিক রাজনৈতিক মহলে উক্ত সময়কে এযাবৎকাল ৪২দিন গননা করে এসেছেন।"খালেদা জিয়া স্বরণ করিয়ে দিলেন ৪২ দিন নয় একনাগাড়ে তিনমাস"। বিস্মৃত বাঙ্গালী জাতি তাঁর উপর বর্ষিত মহাদুয্যোগের দিনগুলীও সঠিকভাবে মনে রাখতে পারেনি।
    উক্ত সময়ে   দৃড মনোবল, আসীম সাহষ নিয়ে জাতির জনকের কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  বঙ্গনেত্রী শেখ হাছিনা যদি মহাপ্রলয় মোকাবেলায় কোনকারনে ব্যার্থ্য হতেন--"তাহলে আজকের এই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, পদ্মা সেতু, পারমাণবিক চুল্লি, সাবমেরিন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ, দ্বিগুন বাংলাদেশ, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ, মায্যদাশীল আধুনিক বাংলাদেশ, গনতন্ত্রের রোল মডেল বাংলাদেশ যে অভিধায় অভিহীত করিনা কেন,  যে নামেই ডাকি না কেন-- বাংলাদেশ কোথায় পেত?
      বাংলাদেশ ব্যাতীত বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের,  যে কোন নেতার ক্ষেত্রে বৈরী এই পরিবেশে এত বিশাল, অগুনতি ও পাহাড়সম কীর্তির অধিকারী হতেন---"সেই দেশ এবং জাতী আ-মৃত্যু তাঁকে মাথায় তোলে রাখতেন।" বাঙ্গালী এতই অ-কৃতজ্ঞ জাতি--"এখনও আমরা তাঁর ছিদ্রান্বসনে ব্যাস্ত থাকি।আমাদের গুটিকতক আবাল নেতা তো সর্বক্ষন চিন্তায় মগ্ন,  কখন সময় ফুরিয়ে যায়-- 'যা কিছু করার, এখনই করা প্রয়োজন'।
         তাঁদের উদ্দেশ্যে আমি একটি কথাই বলতে চাই-- "মহান আল্লাহ যতদিন বঙ্গরত্মের হায়াৎ বরাদ্ধ রেখেছেন, ততদিন ভয়ের কোন কারন নেই।" বাংলাদেশের জনগন গতজীবনে রত্ম হারিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে--''মায়ের চেয়ে আপন- পৃথিবীতে আর কেউ নেই'। 'মায়ের আদর, ভালবাসা 'মাসী' কখনই দিতে পারেনি, পারেনা।' সুতারাং তাড়াহুড়ার কিছুই নেই-- 'ধৈয্য, সহনশীলতা, একাগ্রতা রেখে জনগনের আপন হতে চেষ্টা করুন, তাঁদেরকে দেন। সময় অনেক লম্বা, পথ অনেক দুর---"পরিবারকে দিয়ে আত্মীয় স্বজন, পাঁড়া প্রতিবেশীকে দিলেও শেষ হবেনা।"
        উপসংহারে শুধু এই টুকুই বলতে চাই-- আগামী প্রজম্ম কৃতজ্ঞচিত্তে শেখ হাছিনার গনতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের দৃডতা স্বীকার করবে। তাঁদের ইতিহাস চর্চায় শুধুই দেখবে একটি মাত্র নাম স্বর্ণাক্ষরে মুদ্রিত-- বাংলাদেশের জাতির পিতার কন্যা ''শেখ হাছিনা" তিনি শতবছরের ইতিহাসের পাতায় একমাত্র গনতন্ত্রের ধারক, বাহক, পুজারী।একবিংশ শতাব্দির শ্রেষ্ঠ গনতন্ত্রের পূজারী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের জৈষ্ঠ কন্যা, গনতন্ত্রের মানসকন্যা, বঙ্গকন্যা 'শেখ হাসিনা'। যার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান নীজের জীবন বিপন্ন করে বাঙ্গালী জাতিকে দিয়েছিলেন ৫৫০০০ বর্গমাইলের স্বাধীন সার্বভৌম  বাংলাদেশ, বাঙ্গালী জাতি কৃতজ্ঞতায় বলতেন "জাতির পিতা"। তাঁর জৈষ্ঠকন্যা  শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন--"সুখী,  সমৃদ্ধশালী, তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর,আধুনিক, বিজ্ঞান ভিত্তিক,একলক্ষ বর্গমাইলের অধিক 'ডিজিটাল গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ।' কৃতজ্ঞ বাঙ্গালীজাতি তাঁকে সম্মান করে ডাকেন "দেশরত্ম"।
                   ruhulaminmujumder27@gmail.com
                           

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা