জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চাই সর্বাত্বক যুদ্ধ ঘোষনা--প্রয়োজনে "অপারেশন ব্লাক লাইট"। (রুহুল আমিন মজুমদার) গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমনে আবারও ১৪টি প্রাতিষ্ঠানিক দল গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার আট পরিচালক দলগুলোর নেতৃত্ব দেবেন। দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান বিভাগের মহাপরিচালকের তত্ত্বাবধানে এসব দল কাজ করলেও সংস্থার মহাপরিচালক মুনির চৌধুরী এসব দলের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। গঠিত তিন সদস্যের ওই সব দলে একজন করে উপরিচালক ও সহকারী পরিচালক রয়েছেন। পত্রপত্রিকার খবরে জানা যায় ব্যাকিং সেক্টরে খেলাপি ঋনের পরিমাণ নব্বই হাজার কোটি টাকা।এর মধ্য অধিকাংশ খেলাপি ঋন ব্যাংকের মালিকদের নিকট।সরকারি ব্যাংক গুলিতে সরকার কতৃক নিয়োগকৃত পরিচালকগন নীজ নামে ঋন না নিলেও প্রভাব খাটিয়ে নীজের নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাক্তি ও সংস্থার নামে ঋন বরাদ্ধ দিতে কতৃপক্ষকে বাধ্য করছেন। বেসরকারি ব্যাংকের মালিকগন সরকারি নিষেদাজ্ঞার কারনে শেয়ারের পঞ্চাশ শতাংশের বেশী ঋন নিতে না পারলেও সম্পকীত অন্যব্যাংকের মালিকদের যোগসাজসে একে অপরের নামে ঋন বরাদ্ধ দিয়ে --"শেয়ারের চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশী টাকা ইতিমধ্যে উত্তোলন করে নিয়ে গেছে"।উল্লেখিত ঋনের টাকা বাংলাদেশে বিনীয়োগ না করে বিদেশে বাড়ী, প্লট, প্লাট কিনে তাঁরা আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কখনও সমস্যা বা রাষ্ট্রীয় অভি্যান দেখা দিলে যেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে সেখানে থাকতে পারে। ব্যাংক পরিচালকদের মধ্যে সিংহভাগ দ্বৈত নাগরীকত্ব আগেভাগে পকেটস্ত করে রেখেছেন।খোঁজ নিলে দেখা যায় দুর্নীতি গ্রস্তব্যাক্তি, রাজনীতিক,আমলাদের সিংহভাগের বিদেশে প্লট, প্লাট একাধিক বাড়ী গাড়ী এবং কি পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে আগেভাগে সেই দেশে স্যাটেল করে রেখেছে।বাংলাদেশের একটি ব্যাংককেও আমনতিদের সমপরিমান টাকা ব্যাংককের স্বচ্ছ বিনিয়োগে নেই।প্রত্যেকটি ব্যাংক "যুবক" সমতুল্য উপরে পিটপাট ভিতরে সদর ঘাট। শুধুমাত্র ব্যাংক বীমা নয়--সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান কোথাও দুর্নীতি নেই এমন স্বপ্নেও ভাবা যায়না।দুর্নীতি সর্বগ্রাসি রুপধারন করেছে। একশ্রনী দুর্নীতির টাকায় ঘি খাচ্ছে আর এক শ্রেনী তাঁর খেসারৎ দিচ্ছে রুদ্রে পুঁড়ে বৃষ্টিতে ভিজে--' মাথার ঘাম পায়ে ফেলে'।তাঁরা ন্যায্য মজুরী থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বছরের পর বছর। বর্তমান সরকারের বিগত আট বছরের শাষনে দেশ অনেক এগিয়েছে, জনগনের জীবন যাত্রায় এসেছে যুগান্তকারি পরিবর্তন, দারিদ্রতা কমেছে গানিতিক হারে, উন্নয়ন অগ্রগতিতে এসেছে জোয়ার-- সবকয়টি বিষয় একান্তই সত্য।কিন্তু ভেতরে ভেতরে আর একটি মহাব্যাধি ব্যাক্তি সমাজ, রাষ্ট্রে ব্যাপৃত হয়ে মহামারি আকার ধারনের পয্যায় পৌছে গেছে--"এই মহাব্যাধির নাম "অর্থনৈতিক বৈষম্য"।" উন্নয়ন অগ্রগতির উষালগ্নে উক্ত ব্যাধি সারানোর যথাযথ টিকার ব্যাবস্থা করা নাগেলে--"ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রকে কুড়ে কুড়ে ধংস করে দিবে মহাব্যাধিটি"। "অর্থনৈতিক বৈষম্য" নামক ব্যাধির উৎপত্তিস্থল ''দুর্নীতি'' নামক লুটপাটের মহাসাগর"।উক্ত মহাসাগরের পানিতে 'দুষনরোধ' করার এখনই সময়।সরকারের নিম্নপয্যায় থেকে উধ্বতন পয্যায় সর্বাত্বক "ব্লাক লাইট অপারেশন" আকারে বা প্রকারে পরিচালনা করা ছাড়া মরণব্যাধি নিয়ন্ত্রনের অন্যকোন উপায় নেই। দুর্নীতি দমন সংস্থা"র নামেও বহু দুর্নীতির কাহিনী পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হতে দেখা গেছে।দুর্নীতি দমন কমিশনের পিয়ন দারোয়ান, পরিচালক, উপ-পরিচালক, সদস্যদের দুর্নীতির মুখরোচক কাহিনী পথে প্রান্তরে চড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদারকির জন্যে অন্যকোন সংস্থা নিয়োগ দিলেও তাঁদের কায্যের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।দুর্নীতি দমনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হতে পারে। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনীধিদের মধ্য থেকে একাধিক শক্তিশালী তদারকি টিম গঠন করা হলে 'আইনের ব্যাত্যায়' হবে মনে করিনা।কারন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারিগন জনগনের সেবক, তাদের ট্যাক্সের টাকায় বেতন হয়। 'ভৃত্বের কাজের তদারকি মনিব করতেই পারে'। সুতারাং দুনীতি দমন কমিশনকে নজরদারীতে রাখার জন্য---সৎ, ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে উল্লেখিত সমপরিমান তদারকি কমিটি করা যায় কিনা সরকারকে ভেবে দেখা দরকার। সরকারি বিশেষ কয়েকটি দপ্তরে দুর্নীতির উৎস খোঁজার নিমিত্তে কমিশন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।শুধুমাত্র সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি সীমাবদ্ধ নয় বেসরকারি সংস্থা,স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান, প্রভাবশালী রাজনীতিক, স্বল্প বেতনের চাকুরীজীবি সর্বত্র রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির দুষিত রক্ত প্রবাহমান। সিটি কর্পোরেশনের ঝাড়ুদার, তিতাসের মিটার রিডার, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গেইট কিপার, ব্যাংকের নাইটগার্ড, থানা জেলা পয্যায়ের রাজনীতিক পয্যন্ত নামে বেনামে একাধিক গাড়ী, বাড়ী, বেসুমার স্থাবর অ-স্থাবর সম্পদের পাহাড় গড়েছে। সরকার উপযুক্ত সার্জিকেলের হাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম যোগান দিয়ে সর্বত্র "ব্লাক লাইট" অপারেশনের মাধ্যমে দুষিতরক্ত বের করে নিয়ে আসতে হবে। ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতির মূল উৎপাটন সহজ কাজ নয়। তবে উপযুক্ত নজরদারি আর দুর্নীতিলব্ধ অর্থ ব্যয়ের সুযোগ না থাকলে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রিত হ'তে বাধ্য।এক্ষেত্রে আমাদের পাশের দেশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের নাগরিকদের অভ্যন্তরীন সম্পদ আহরনের জবাবদিহীতার অভিজ্ঞতা ধার করা যেতে পারে। জ্ঞাত কোনো আয়-রোজগার নেই; অথচ বাড়ি-গাড়ির চমকে চোখ ঝলসে যায় এমন লোক তো আমরা হামেশাই দেখি। এরা বেআইনিভাবে পরধন নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে তা করছে। এটা ক্রমান্বয়ে হ্রাস করতে পারলেও রাষ্ট্র উপকৃত হবে। আইনের বেড়াজালে এনে তাদের অর্জিত সম্পদ ভোগ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে। গুটিকয়েক দিয়ে শুরু করা হলেও অন্যরা সতর্ক বার্তা পাবে। রাষ্ট্রের পক্ষে নামে শুধু নয় সত্যিকারের‘ওয়াচ-ডগ’ হয়ে দুদককে নিয়ন্তর তাঁর কাজ চালিয়ে যেতে হবে, বছরান্তে তাঁর কর্ম পরিধি বিস্তৃত করতে হবে। উল্লেখ্য, এ দেশে এ রকম অনেক দুঃসাধ্য কাজ সম্ভব হয়েছে। নিয়মিত খাদ্য ঘাটতি নিয়তি ছিল এই কিছুদিন আগেও।চাষাবাদ যোগ্য জমির পরিমান কমেছে কিন্তু খাদ্য উৎপাদন বেড়ে হয়েছে পাঁছগুণ। একসময় জনসংখ্যা বৃদ্ধিরোধে সরকারি উদ্যোগকে ধর্মবিরুধী আখ্যা দিয়ে অব্যাহত প্রচারনা চালানো হয়েছে তা সত্বেও জম্ম হার নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। শিক্ষা,চিকিৎসাক্ষেত্রে ঘটেছে বিপ্লব। শিক্ষায় ঘটেছে ব্যাপক প্রসারতা ও বহুমূখিতা।অথচ একসময় এগুলি অর্জন করাকে প্রায় অসাধ্য মনে হয়েছে। ছোটবেলায় শুনেছি- সুঁই সুতা বানাতে পারেনা যেই দেশ-"সেই দেশকে "মুজিব" পাকিস্তান থেকে আলাদা করে ভারতকে দিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে, মুজিব ভারতে দালাল।" সেই মুজিবের জৈষ্ঠকন্যা 'ভারত থেকে সমপরিমান বাংলাদেশ মুক্ত করে" প্রমান করেছে "মুজিব পরিবার দিতে জানেনা-আনতে জানে"। দেশবিক্রি করেনা--অন্যের দেশ ক্রয় করে। মুজিবের নেতৃত্বে মুক্ত দেশেই তাঁর কন্যার নেতৃত্বে প্রত্যহ জাহাজ নির্মান হয়, মিশাইল বানায়, ক্ষেপনাস্ত্র পরিক্ষা করে, মহাশুন্যে " বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট" পাঠানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রাখে, পারমানবিক চুল্লি বসায়, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থ এবং প্রযুক্তিতে বানাতে জানে।" তবে ইহা সত্য---"পুঁজিবাদি সমাজে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয় তবে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব --"যদি নেতৃত্বের দেশপ্রেম জাগ্রত থাকে"। সর্বক্ষেত্রে উপরে উঠার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত সমাজে নিছে নামতে চাইবে কে? যাকে যেখানেই দেয়া হয়না কেন--'সে সেখানেই টাকা আহরনের চিন্তায় সদা ব্যাস্ত।' তা সত্ত্বেও হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না।সবল ও দৃঢ়, ধীর, স্থীর হতে হবে প্রতিটি পদক্ষেপ। বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতকে অবশ্যই বিবেচনায় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দুদক সম্পর্কে জনমনে আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনাকারে সম্ভব স্বল্পসময়ে অবশ্যই কিছু কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে। এবার আর চমক নয়, নজির সৃষ্টির জন্য তৎপরতা চালাতে হবে। দেশ যেমন সর্বক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সফলতা অর্জন করে এগিয়ে যাচ্ছে-- দুদককে ক্রমবর্ধমান এগিয়ে চলা বাংলাদেশের সফলতার স্থীতি রক্ষার্থে সার্বক্ষনিক সঙ্গী হয়ে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকতে হবে। জাতিরজনকের কন্যা উপযুক্ত সময় সঠিক সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন।২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরের স্বপ্ন পুরনে সবচেয়ে বড় বাঁধা এইমুহুর্তে 'দুর্নীতি' নামক মহাব্যাধি। দুর্নীতির 'মহাব্যাধি'র লাগাম টেনে ধারার উপযুক্ত সময় এখনই। বলাবাহুল্য--"দুর্নীতি,স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, দখলবাজি, মাস্তানী, চাঁদাবাজি, ঘুষ, মাদক, চোরাচালানি, অর্থপাচার ইত্যাদি বে-আইনি, রাষ্ট্রদ্রোহী, সমাজদ্রোহী ব্যাধিসমূহ বিগতদিনে অপ-শাষকদের পৃষ্টপোষকতা, আস্কারা, ক্ষেত্র বিশেষ সহযোগীতা পেয়ে বর্তমান সময়ে মহিরুহ আকার ধারন করে মহাব্যাধিতে রুপান্তরীত হয়েছে। এই মহুর্তে গঠিত কমিটি সদস্যদের অন্তরের গহীনে গভীর দেশপ্রেম, দৃডপ্রত্যয়, কঠোর মনোভাব, একাগ্রতা নিয়ে নিয়ন্তর অভিযান পরিচালনা করতে হবে। দুর্নীতি উচ্ছেদের স্বার্থে সরকার প্রয়োজনে জরুরী অবস্থা সমতুল্য "অপারেশন ব্লাক লাইট" নামকরনে রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করার ক্ষমতা দুদককে দিতে হবে।দেশপ্রেমিক প্রত্যেক নাগরিকের এই মহুর্ত থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আগ্রাসি ভুমিকায় অবতিন্ন না হতে পারলে-- "মহাব্যাধি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা সম্ভব হবেনা।'' masterruhulamin@gmail.com "জয়বাংলা---------জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন