সাফাদীর নতুন প্রেম রক্ষায় মরিয়া প্রচেষ্টা অব্যাহত-- ________________________________________ হাজারো মিথ্যা দিয়ে একটি সত্যকে ঢাকা যায়না,প্রবাদটি ইসলামের শত্রু ইহুদীদের ক্ষেত্রে প্রজোয্য হয়না।মিথ্যা,ষড়যন্ত্র, অবিশ্বাস দিয়ে ইসলামের প্রাথমিক যুগে নবী (স)এর বিরুদ্ধে যে শত্রুতা আরাম্ভ করেছিল তাঁর ধারাবাহিকতা তাঁরা হারাননি--হারিয়েছে সত্য, ন্যায়, সমতা ও সার্বজনীন ধর্ম ইসলামের অনুসারী মসুলমানদের বিশ্বাসের।মুসলিম বিশ্বের একটি দেশও বাকী নেই যে দেশটিতে হানাহানি,মারামারি নেই।ইহুদীরাই সমস্ত হানাহানীর মুলকারিগর তবে ইসলামের অনুসারী সেই দেশের নাগরীকদের মাধ্যমেই তাঁরা অপ-কর্মকান্ড গুলী বাস্তবায়ন করে।তদ্রুপ বাংলাদেশেও তাঁদের এজেন্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকেই মিত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে।যে ব্যাক্তির মাধ্যমে মহৎ ইসলাম বিরুধী কর্মটি সম্পাদন করার জন্য বিএনপি ইজরাইলের মত শক্তিশালী মুসলিম বিদ্বেসী রাষ্ট্রের সাথে সংযোগ রক্ষা করতে পেরেছে, সেই অচেনা অজানা,অরাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ব্যাক্তিটিকে প্রাথমিক পয্যায় উপহার হিসেবে দলের অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ণ পদ 'যুগ্ম মহাসচিবের' দায়িত্ব প্রদান করেছে খালেদা জিয়া। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে,'তাঁর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হলে ঢাকার পথকলিদের কুখ্যাত সন্ত্রাসী জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাবরের চাইতে আরো গুরুত্বপুর্ণ অবস্থানেই রাখা হত।' মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় অন্য শত ষড়যন্ত্রের ন্যায় বাংলাদেশের সরল্প্রান মসুলমানদেরকে- ইহুদীদের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রাথমিক পয্যায়ে গোয়েন্দাদের নজরে এনে দিয়েছেন। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ,বাংলাদেশের ইসলামধর্মের অনুসারীদের কড়া সমালোচনার মুখে অতীতের ন্যায় সেই ইহুদী একের পর এক মিথ্যে সাজানো নাটকের পর্ব মঞ্চস্ত করে যাচ্ছেন তাঁদের বন্ধু রাজনৈতিক দল 'বিএনপিকে'রক্ষা করার মানসে। সুপ্রীয় পাঠক,সাফাদী অদ্যকার সাক্ষাতকারে একটি গুরুত্ব পুর্ন তথ্য তুলে ধরেছেন,"জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের একান্ত অনুরুধে তাঁদের দুই জনের অনুষ্ঠিত বৈঠকটি একান্ত গোপনীয় কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছিল,এবং সেখানে কোন ছবি ধারন করার কোন সুযোগ ছিলনা।" সুপ্রীয় বন্ধুগন, সাফাদীর বক্তব্য যদি এই হয়,তাহলে প্রচারীত ইউটিউব কি মিথ্যা?নাকি সাফাদীর আজকের বক্তব্য মিথ্যা? বিচারের ভার আপনাদের হাতে দিলাম-- _____________________________ (কপি পেষ্ট--আমাদের সময়.কম)০১/০৬/২১৬ তারিখে প্রকাশিত পত্রিকা থেকে নিম্নের অংশটি __________ __________ শামস সয়ূজ : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে করা বৈঠকটি তার অনুরোধেই অত্যন্ত গোপনে করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদি। আর সেকারণে বৈঠকের কোনো ছবিও তোলা হয়নি বলে দাবি তার। এ বৈঠক হয়েছে তাদের দুজনের এক বন্ধুর মাধ্যমে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব নেই বলেও দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে মি. রহমান নামে এক বাংলাদেশির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বলে আগে জানিয়েছিলেন সাফাদি। তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই ব্যক্তি নন বলে নিশ্চিত করেছেন সাফাদি। তিনি জানান, তারেক রহমানের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি। সাফাদির সঙ্গে ই-মেইলে নেয়া সাক্ষাৎকারে দৈনিক আমাদের অর্থনীতির পক্ষ থেকে তাকে তিনটি প্রশ্ন করা হয়। সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন মমিনুল ইসলাম। পুরো সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো। প্রশ্ন : খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জাহিদ এফ সর্দার সাদী ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার পোস্ট করেছেন, যেখানে আপনি ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পুত্র এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে বৈঠক করার দাবি করেছেন। জয় এ দাবিকে জঘন্য অভিহিত করে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। জয় ২৯ মে ফেসবুক পোস্টে বৈঠকের সঠিক ঠিকানা দেয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ করেছেন। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? মেন্দি এন সাফাদি : এটা স্পষ্ট যে, সজীব ওয়াজেদ জয় আমাদের ওয়াশিংটনের বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছেন। তার অনুরোধেই বৈঠকটি অত্যন্ত গোপনে করা হয়েছে। [ কিন্তু সাফাদি কথিত গোপনীয়তা রক্ষা তো করলেন না Ñসম্পাদক ] সে কারণেই বৈঠকের কোনো ছবি তোলা হয়নি। আমাদের দুজনের পারষ্পরিক এক বন্ধুর অফিসে এ বৈঠক হয়েছে। তার (বন্ধু) অনুরোধের কারণে নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। কারণ সে আমাকে বলেছে, তার নাম প্রকাশ করা হলে মার্কিন প্রশাসনে তার অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রশ্ন : চলতি মাসের শুরুর দিকে দৈনিক আমাদের অর্থনীতির এক সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছিলেন, মি. রহমান নামে বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন কি না তা স্মরণ করতে পারছেন না। মেইলে তারেক রহমানের ছবি সংযুক্ত করা হলো। ইনি কি সেই রহমান? মেন্দি এন সাফাদি : আমি রহমানের পূর্ণ নাম জানি না। তিনি আমাকে তার পুরো নাম বলেননি। কেবলমাত্র বাংলাদেশ থেকে মি. রহমান হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়। তবে কোনো ধরনের কথোপকথন বা বৈঠক, এর পেছনে করমর্দন ও আশীর্বাদ কামনা ছাড়া অন্য কিছু ছিল না। যে ছবিটি সংযুক্ত করা হয়েছে তার সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করিনি। প্রশ্ন : আপনার সাম্প্রতিক মন্তব্য ও সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার ও গণতন্ত্রায়নের স্বার্থের চেয়ে রাজনৈতিক অবস্থার প্রতি আপনার আগ্রহ বেশি। সেই সঙ্গে এটাকে বিএনপির দাবির প্রতি সমর্থন হিসেবে দেখা হয়। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? মেন্দি এন সাফাদি : বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে আমার কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। ‘পিএনবি’র (বিএনপি) একজন নেতার সঙ্গেও আমার সরাসরি যোগাযোগ হয়নি। আমি পূর্বেই বলেছি, আমি যখন আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছি, তখন তাকে ‘পিএনবি’র একজন সিনিয়র ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় করনো হয়নি। তবে সংখ্যালঘু অধিকারের সমর্থক হিসেবে পরিচয় করানো হয়। আমাদের কথোপকথন মোটের ওপরে ৫-৬ মিনিটের মতো সংক্ষিপ্ত ছিল। এতে দলীয় বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা কেবলমাত্র সব সংখ্যালঘুর সহাবস্থানে রাখা নিয়ে আলোচনা করি। ফেসবুকে নেওয়া ইংরেজী সাক্ষাৎকারটি আমাদেরসময়.কমের পাঠকদের জন্য নিচে দেওয়া হলো- Q 1 : In a recent interview posted on the you tube channel of F R Sadi, you claimed you have had a meeting with Mr. Sajeeb Wazed Joy in Washington DC. However, Mr. Wazed has vehemently denied such an outrageous claim. In a Facebook post on 29 May, 2016, Sajeeb Wazed Joy challenged you to provide evidence regarding the exact location of your “meeting” with him. What would be your response to Mr. Sajeeb Wazed Joy’s recent Facebook post? Q. 2 In an interview taken by Daily Amader Orthoneeti earlier this month you said, you could not remember any BNP leader named Mr. Rahman with whom you talked. Please have a look at the attached picture of Mr. Tareq Rahman along with this message, and tell us, if this was the person you talked to? Q 3 It has been argued that from your recent comments and interviews it seems you are more inclined to supporting BNP’s claims and interests regarding Bangladesh’s political situation than ensuring the rights and interests of the minorities and democratization of Bangladesh society. What would be your response regarding this allegation? Hope to get from you very soon. Thanks in advance. 1, it was clear that Mr. Sajeeb Wazed Joy deny our meeting in Washington, the meeting was highly secret at his request, so no pictures from the meeting, the meeting was held in the office of a mutual friend that I did not want to reveal his name because he asked because revealing his name could harm his standing in the American administration. 2 The answer to question who it Rahman, I said that I do not know what the full name of Rahman because did not tell me his full name, just was introduced as Mr. Rahman from Bangladesh, shaken hands and blessings It was not beyond that any kind of conversation or meeting, and about the picture attached it’s not the guy I met . 3- I have no preference about the political parties in Bangladesh, and had no direct contact with any one of the leaders of the at PNB, and as I said before when I met Mr. Aslam Chaudhry and not treated presented to me as a senior figure at PNB party, but as a supporter of the rights of minorities, and our conversations were short a total of 5-6 minutes and not treated the subject of parties, we treated only for the purposes of keeping all minorities and to coexist.

সাফাদী প্রথম সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন," জয়ের নিউইয়র্কের অফিসে জয়ের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল,অফিস কোথায় জয়ের প্রশ্নের জবাব না দিতে পেরে অদ্য নতুন করে বলছেন," তাঁর এক বন্ধুর অফিসে সাক্ষাৎ হয়েছিল।"তিনি আরো বলেন জয়ের অনুরুধে সেখানে কোন ছবি বা ভিডিও আপলোড করা হয়নি-তবে ইউটিউবে প্রচারীত ভিডিও কি মিথ্যা?

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন