বিরুপ পরিস্থীতিতেও গনতন্ত্রের অভিযাত্রা এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিরল দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন জাতির জনকের কন্যা----________________________________________________ বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের পর থেকে সামরিক বেসামরিক, স্বৈরশাষন, অপশাষন,গনতান্ত্রিক শাষন অগনতান্ত্রিক শাষন সহ বহুবিদ শাষন, জনগনের সৌভাগ্য বলি আর দুর্ভাগ্য বলি, দেখার সুযোগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ এর আগেও তিনবার দেশ শাষন করার সুযোগ পেয়েছিল। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক-এবারকার বিরুধী দলের ভুমিকাহীন শাষনে গনতন্ত্রের অভিযাত্রাকে জাতির জনকের কন্যা-যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা, সংশ্লিষ্টদের অংশিদারিত্ব নিশ্চিত, জন আকাংক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছেন- এমনতর অন্যদল বা জোটের শাষনে বিরুধীদলের অস্তিত্ব জোরালো থাকা সত্বেও দেখা যায়নি। 'অর্থাৎ রাষ্ট্রের কাঠামোগুলিকে সর্বক্ষেত্রে গনতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় রেখে জবাবদিহীতা নিশ্চিতে বর্তমান সরকারের যে আন্তরিকতার বহি:প্রকাশ ঘটছে তেমনটি অতীতে দেখা যায়নি।' উদাহরন হিসেবে চলমান ইউপি নির্বাচনের কথাই বলতে পারি-বিএনপি জামায়াতকে সরকার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করেও সার্বিক প্রতিযোগিতায় নামাতে পারেনি।বিরুধিদলের ভোট যুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রে নামমাত্র অংশ গ্রহন, কোন কোন ইউপিতে হালছেড়ে বসে পড়া, অনেক ইউপিতে অংশ গ্রহন করার দলীয় নেতাকর্মী না পাওয়া সত্বেও সত্তর শতাংশ ইউপিতে ভোট সুষ্ঠ অবাধ,নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপি জামায়াতের এত বেশী দুর্ভাগ্য বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর চাইতেও অনেক কম ইউপিতে তাঁরা বিজয়ী হতে পেরেছে। বিরুধীদের প্রতিরোধ, প্রতিযোগিতা, প্রচার-প্রচারনা ব্যতিরেকে সংখ্যাগরিষ্ট ইউপিতে সুষ্ঠ নির্বাচন নিশ্চিত করা সরকারের আন্তরিকতা,গনতন্ত্রের প্রতি একাগ্রতার বহি:প্রকাশ ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব ছিলনা। এবারের নির্বাচন ব্যাক্তির নয়, প্রতিকেরও ছিল। নৌকা এবং ধানের শীষের তৃনমুলে মায্যদার লড়াই বটে। এই মায্যদার লড়াইতে বিএনপি এবং তাঁর জোট গোহারা হেরেছে।অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছিল দুই দলের বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেয়ার আইনগত সরকারি বাধা থাকলে জনগন জানতেই পারতেন না দেশে সবচেয়ে জনপ্রীয় এবং জনসম্পৃত্ত একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের কোন কোন অঞ্চলে লুটেরা আওয়ামী নেতাদের ভোটকারচুপি, বাধাপ্রদান, জোরজবরদস্তি না থাকলে বিএনপি জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে তল্পিতল্পা সহ চিরতরে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া সম্ভব ছিল। অঞ্চলবেদে কারচুপির কারনে কর্মীদের মনে আশা জাগানো ইস্যু পেয়ে বিএনপি জামায়াত আরও কিছু দিন মরে মরেও বেঁচে থাকার সিঁড়ি পেয়ে গেল। গত সাত বছরের শাষনে সংসদ এবং জনমতকে প্রাধান্য দিয়ে দেশ শাষনের বিরল উদাহরন সৃষ্টি করে যাচ্ছেন জাতির জনকের কন্যা। শক্তিহীন বিরুধীদলের অস্তিত্ব সত্বেও বিগত সরকার সমুহের ন্যায় সংসদকে পাস কাটিয়ে প্রেসিডেন্ট অর্ডিনেন্স এর মাধ্যমে গনবিরুধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কোন নজির অদ্যাবদি স্থাপিত হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর,সৃজিত চুক্তি, সমঝোতা স্মারক,গৃহিত পদক্ষেপ যথারীতি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগনকে জানাচ্ছেন, সংসদ সচল থাকা অবস্থায় সংসদকে অবহিত করছেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে তাঁকেও ফলাফল রীতিমত অবহিত করছেন। স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা ও গনতন্ত্রকে লালন ও বিকশিত করার ক্ষেত্রে জাতির জনকের কন্যার বিরল দৃষ্টান্ত প্রতিনিয়ত স্থাপন করে চলেছেন।পুর্বের সরকার সমুহ সংসদের কায্যক্রম চলাবস্থায়ও প্রেসিডেন্ট অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে বহু রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে।এমনও দেখা গেছে সরকার প্রধান বিদেশ সফর করে এসে গৃহিত কায্যক্রম এবং সুচিত চুক্তিপত্র সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগনকে অবহিত দুরের কথা- সংসদ এবং মন্ত্রীপরিষদ এবং কি প্রেসিডেন্টকেও অবহিত করার কোন নজির ছিলনা। সরকার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডেও অনেকটা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। শেয়ার মার্কেটে লুটপাট, ব্যাংকের অর্থ লোপাট, পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতির অভিযোগ, রেলওয়ের দুর্নীতি ইত্যাদি ঘটনা সমুহ পত্র পপত্রিকায় প্রকাশের সাথে সাথে বিরুধীদলের আন্দোলন বা দাবি উত্থাপনের আগেই মুর্খ্যব্যাক্তিকে সরিয়ে তদন্ত অনুষ্ঠান, জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, দোষ প্রমানে যথারীতি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে সরকার আর্থিকক্ষেত্রেও শৃংখলা, স্বচ্ছতা ও জবাব দিহীতার রীতি প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছেন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সক্ষমও হচ্ছেন। অন্যকোন দল বা জোটের শাষনে আর্থীক কেলেংকারী, অব্যবস্থাপনার জন্য শক্তিশালী বিরুধীদলের আন্দোলন ও দাবির প্রতি বা জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কোন মন্ত্রী বা আমলার বিরুদ্ধে নিদেনপক্ষে বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনেরও কোন উদাহরন নেই। অনেক ক্ষেত্রে চাপের মুখে তদন্ত হলেও সেই তদন্ত কোনদিন আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমান সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেট দেয়ার ক্ষেত্রেও জনমত, স্বচ্ছতা, জবাবদীহীতা ও গনতন্ত্রের প্রতি অনন্য এক উদাহরন তুলে ধরেছেন।বিগত সাতবছরে সাতবার ( মাননীয় অর্থমন্ত্রীর দশম বাজেট) ঘোষনার আগে-পরে দ্রব্যমুল্যের দাম উঠানামা করেনি।অতীতের ন্যায় বাজেট মানিনা,গনবিরুধী বাজেট প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে জনগন, পেশাজীবি বা কোন রাজনৈতিক দলের মিছিল মিটিং দেখা যায়নি, প্রতিবাদ প্রত্যাখ্যানের অপমানজনক কোন বিবৃতি বক্তব্য চোখে পড়েনি।অর্থ্যাৎ জনগনের চাহিদামাপিক, শ্রেনীপেশার মানুষের আগাম মতামতের প্রাধান্য, জন আখাংকার মুল্যায়ন ,অধিকতর সহজ, স্বচ্ছতার রীতি অনুসরন, সাধারনের বোধগম্যতার নিরিখে বাজেট ঘোষনার ফলেই কোন অপ্রীতিকর পরিস্থীতির সৃষ্টি এযাবৎ হয়নি, দ্রব্যমুল্যের দাম উঠানামা করেনি, জনভোগান্তির কোন কারন সৃষ্টি হয়নি।গনতন্ত্র, স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা, অংশীদারিত্বের নীতি অনুসরন করার কারনেই এমন সুখকর সেবা উপহার দিতে সক্ষম হচ্ছেন। অতীতে যেসব দল সরকারে থেকে বছরের পর বছর বাজেট দিয়েছে, তারা জন আকাংখাকে বিবেচনা বা উপলব্ধিতে নেননি। জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের বিষয় জনগণকে বুঝতে হবে এবং বুঝেই জনগণ জনগণের জন্য বাজেট বাস্তবায়নে কাজ করবে- এই উপলব্ধিটুকু ইতোপূর্বে কোনো ক্ষমতাসীন সরকারপ্রধান কিংবা ৭ বার বাজেট দিয়েছেন বলে যে অর্থমন্ত্রী গর্বে গদগদ হতেন, তারা জন আকাঙ্ক্ষা উপলব্দি করেননি এবং কি করার চেষ্টাও করেননি।ফলে বাজেটের পর দ্রব্যমুল্য লাগামহীনভাবে বেড়ে যেত।প্রতিবাদে বাজেট ঘোষনার পরের দিন হরতাল অবরোধসহ বিভিন্ন আন্দোলনে সম্পৃত্ত হয়েছে রাজনৈতিক দল,শ্রেনী পেশার সংগঠন এবং জনগন। আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক ও ভাবাদর্শগত অবস্থানের কারণে বিরুপ পরিস্থীতির সৃষ্টি হয়নি।দলটির নীতি আদর্শের প্রতি আনুগত্যের কারনে, জাতির জনকের কন্যার গনতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা, জনগনের প্রতি আন্তরিকতা, দেশপ্রেম থাকার কারনে । দলটির জন্ম, অর্জন ও বিকাশ হচ্ছে এই উপলব্ধির জন্মদাত্রী। 'সরকার বাই দ্য পিপল অব দ্য পিপল ফর দ্য পিপল- গণতন্ত্রের এই অমর বাণী আওয়ামী লীগ লালন-ধারণ-বহন করে' বলেই এই ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তনের চিন্তা লালন করতে পেরেছে। আগামী বাজেট এভাবে পরিবর্তিত হোক জনগণ তা কামনা করে। গণতন্ত্রের এই মর্মবাণী বাজেট ঘোষণার ভেতর দিয়ে তুলে ধরার জন্য নিঃসন্দেহে জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাবে। উপসংহারে বলতে চাই- গণতন্ত্রের রয়েছে দুটো দিক। একটি রাজনৈতিক আর অপরটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক। প্রথমটি ভোট, সংসদ, সরকার ও বিচার বিভাগের কাজের ভেতর দিয়ে প্রতিভাত হয়। আর দ্বিতীয়টি জনগণের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা বাসস্থানের মৌলিক চাহিদা পুরণ এবং কাজের নিশ্চয়তা ও পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক বেষ্টনীর পরিধি প্রভৃতির ভেতর দিয়ে কার্যকর হয়। এ দুটি পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটির জন্য অপরটি যেমন বাধাগ্রস্ত হয়, তেমনি একটি অপরটির বাধা দূর করে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে। তবে দুটি সমান তালে অগ্রসর হওয়া যে কোনো দেশ ও জাতির জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, প্রথমটি অর্থাৎ গণতন্ত্রের রাজনৈতিক দিকটি রয়েছে এক জটিলতা ও বিপদের মধ্যে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মৎস্য শিকার করার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের বয়কট ও অগ্নি সন্ত্রাস,রাজপথে সৃষ্ট রাজনৈতিক দলের অভাব, রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গনতন্ত্রের চর্চার অভাব এমন হয়েছে।আমাদের রাজনৈতিক দলসমুহের প্রাজ্ঞ রাজনীতি বীদগন নীজ দলের কর্মী সমর্থক ও জনগনকে শুধুমাত্র রাষ্ট্রের একটি অঙ্গ-নির্বাচনকেই গনতন্ত্রের মুল হিসেবে শিক্ষা দিয়ে থাকে এবং বলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। গনতন্ত্রের বিবিধ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রয়েছে সেই সমস্তকে গুরুত্ব দেয়না। রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে গনতন্ত্র, জবাবদিহীতা,স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত না হলে, নির্বাচনী কাঠামোতে গনতন্ত্র,স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা না থাকলে, নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠ হবে আমার বোধগম্যতায় আসেনা।নির্বাচন নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা যায়, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্যসব গনতান্ত্রিকতার ছোঁয়া না থাকলে রাজনীতিতে শক্তিশালী জনসম্পৃত্ত,আদর্শিক দলের উপস্থীতি না থাকলে নির্বাচন ফেরস্তায়ও সুষ্ঠ করতে পারবেনা। পরিশেষে বলতে চাই জাতির জনকের কন্যার অসীম ধৈয্য, সহনশীলতা, পরমত সহিঞ্চুতার কারনে এখনও মন্দের মধ্যে এটাই ভালো বলতে হবে--দেশ ও জাতি এখন পয্যন্ত সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার মধ্যেই রয়েছে। ফলে রাজনৈতিক গণতন্ত্রের যতটুকু অভাব, সেই অভাবকে সামাজিক-অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের বিকাশের মাধ্যমে পুরন করার সর্বাত্মক চেষ্টা সরকার করে যাচ্ছে।গনতন্ত্র, আইনের শাষনের নিয়ন্তর সংগ্রামের পথে বিরুপ পরিস্থীতি মোকাবেলা করে কাংখীত সাফল্য ধরে রাখায় তাঁর সুফল আসতে শুরু করেছে। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

গনতন্ত্রকে বিকশিত করার জন্য গতান্তন্ত্রমনা নেতার যেমন প্রয়োজন তেমিনি প্রয়োজন গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন