উত্তরায় বিপুল অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা,ডিএমপির সংবাদ সম্মেলন--জনমনে মেজর জিয়ার ক্ষমতা গ্রহনকে মনে করিয়ে দিল। _______________________________________ ঢাকার উত্তরা থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্র গোলাবারুদের বিশাল চালানটি বিএনপি-জামায়াত-শিবির-জঙ্গীদের বলে অনেকটাই নিশ্চিত তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। দেশে ভয়াবহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই অস্ত্রের চালানটি আনা হয়েছিল। এরসঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত। চক্র দুটি ২০১৩ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মরিয়া হয়ে আছে। দেশী ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে অস্ত্রের চালানটির যোগান এসেছে ভারতের নিষিদ্ধ সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসমের (উলফা) কাছ থেকে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে উলফা যাতে আবার বাংলাদেশে তাদের ঘাঁটি ঘাড়তে পারে, তার অংশ হিসেবেই অস্ত্রের চালানটি সরকার বিরোধীদের কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা হয়েছিল। বড় ধরনের অস্ত্রের চালান ধরা পড়ায়, বড় ধরনের নাশকতার হাত থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে। ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেছেন, এতবড় অস্ত্রের চালান আনার সঙ্গে কোন সাধারণ বা কোন অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের জড়িত থাকার সম্ভবনা নেই বললেই চলে। স্বাভাবিকভাবেই এতবড় অস্ত্র গোলাবারুদের চালানের সঙ্গে দেশী-বিদেশী চক্র জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যারা দেশে নাশকতামূলক কর্মকা- চালিয়ে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে, তারাই এমন অস্ত্রের চালান আনতে পারে। প্রসঙ্গত, বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীরা দেশব্যাপী তান্ডব চালিয়ে দেশে পরিকল্পিত ভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশে একের পর এক শিক্ষক, ব্লগার, প্রকাশক, লেখক, পুরোহিত, ধর্মযাজক ও পুলিশসহ নারী শিশুদের হত্যা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর বর্বর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্টার সঙ্গে যারা জড়িত তারাই দেশে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে চালানটি এনেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। অস্ত্রগুলো একেবারেই নতুন। পুরোপুরি প্যাকিং করা। এসব অস্ত্র গোলাবারুদ কোন সময়ই ব্যবহৃত হয়নি। পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে উদ্ধারকৃত পিস্তল গুলোর সঙ্গে তার মিল রয়েছে। তবে একটি অদ্ভুত বিষয়, অস্ত্রের গায়ে সিরিয়াল নম্বর থেকে শুরু করে অনেক কিছুই স্থায়ীভাবে খোদাই করে লেখা রয়েছে। শুধু অস্ত্রগুলো কোন দেশের তৈরি তা লেখা নেই। এ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, অস্ত্রের চালানটির সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্র ও চক্রান্ত জড়িত।কোন সময় অস্ত্র গোলাবারুদ ধরা পড়লে যাতে তৈরিকারক দেশ সম্পর্কে কোনদিনই কোন দালিলিক প্রমাণাদি না থাকে এজন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরিকারক দেশ অস্ত্রের গায়ে তাদের দেশের নাম লেখেনা। এটি তৈরিকারক দেশের কৌশল। এযাবত ঘটিত নৃশংস হত্যাকান্ডের অধিকাংশ ঘটনারই রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। চালানো ধারাবাহিক অভিযানে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু অস্ত্র গোবারুদ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র গোলাবারুদের সঙ্গে উত্তরা থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তল ও পিস্তলের বুলেটের মিল পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, কলাবাগানে জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তনয় হত্যার পর পালানোর সময় পুলিশ এক জঙ্গীকে ঝাপটে ধরে। ওই জঙ্গী তার ব্যাগ ফেলেই চলে যায়। ফেলে যাওয়া ব্যাগে সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ বোরের বিদেশী পিস্তল উদ্ধার হয়।সেই পিস্তল ও বুলেটের সঙ্গে উত্তরা থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তল ও বুলেটের মিল রয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর পরই উলফার তৎপরতা বন্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাঁড়াশি অভিযান চলে। বাংলাদেশের মাটি কোন বিদেশী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বা জঙ্গী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় সরকার। সেই ঘোষণার ধারাবাহিকতায় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উলফার ঘাঁটির সন্ধানে সাঁড়াশি অভিযান চালানো অব্যাহত রেখেছে। অভিযানে গুঁড়িয়ে যায় অনেক উলফার ঘাঁটি। একের পর এক আটক হতে থাকে উলফা নেতারা। আবার অনেক উলফা নেতা অভিযানের মুখে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। অভিযানের পাশাপাশি সর্বশেষ গত বছর বাংলাদেশ থেকে উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া ওরফে গোলাপ বড়ুয়াকে তার দুই সহযোগী লক্ষ্মী প্রদীপ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন সময় উলফা চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া, সামরিক শাখার উপ-প্রধান রাজু বড়ুয়া, পররাষ্ট্র সচিব শশধর চৌধুরী, অর্থ সচিব চিত্রবন হাজারিকা, সংস্কৃতি সচিব প্রণতি ডেকা ও শীর্ষ নেতা পরেশ বড়ুয়ার পরিবারের সদস্যসহ অন্তত ২৮ জনকে ভারত সীমান্ত দিয়ে পুশব্যাক করা হয়। উলফা নেতাদের ভারতে পূশব্যাকসহ বাংলাদেশে উলফার ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে আওয়ামীলীগ সরকারের কড়া অভিযানে বাংলাদেশে উলফার নিরাপদ আস্তানা ও নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ে। এতে উলফা আওয়ামী লীগ সরকারের উপর চরম ক্ষিপ্ত। উলফা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। ভারতীয় এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টাকারী বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের সঙ্গে হাত মেলায়। বাংলাদেশে ব্যাপক জঙ্গী তৎপরতা ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের অস্ত্র গোলাবারুদ দিয়ে সহায়তা করতে তৎপর হয়ে পড়ে। যাতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে উলফা আবার বাংলাদেশে তাদের নিরাপদ ঘাঁটি গাড়তে পারে। এমন আশায় উলফা আন্তর্জাতিক মদদে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের ব্যাপক উত্থান ঘটানোর চেষ্টা করতে থাকে। তারই অংশ হিসেবে উলফা তাদের সংগ্রহে থাকা জব্দকৃত অস্ত্রের বড় চালানটি তাঁদের চিহ্নিত লোকদের দেয়ার জন্য সেখানে রেখে যায়। এসব অস্ত্রের পুরোটাই জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের হাতে হস্তান্তর করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে সার্বিক পর্যালোচনায় এবং প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে। যেসব অস্ত্রগোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে, এর চেয়েও ভারি অস্ত্র গোলাবারুদ ইতোপূর্বে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়ার নজির রেকর্ড আছে। উদ্ধারকৃত পিস্তলগুলো পেশাদার সন্ত্রাসী ও জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। তবে পেশাদার সন্ত্রাসীদের কাছে এতবড় অস্ত্রের চালান আসার ন্যূনতম কোন সম্ভাবনা নেই। এছাড়া উদ্ধারকৃত বেয়োনেটগুলো নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবি সদস্যদের মধ্যে কমান্ডো নাইফ (গেরিলা চাকু) হিসেবে ব্যবহারের নজির আছে। "অভিযানে খালের পানিতে ডুবে থাকা সাতটি ট্রাভেল ব্যাগ উদ্ধার হয়। সেই ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের ৯৫টি ও ২টি দেশীয় পিস্তল, সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোবের ১৯২টি ম্যাগজিন, ১০টি ম্যাগজিন গ্লোক পিস্তল, ২৯৫টি এসএমজির (সাব মেশিন গান) ২৬৩টি ম্যাগজিন, ১০টি বেয়োনেট, ১০৪টি ছোট সিলিন্ডার আকারের বুলেট তৈরির বাক্স, নাইন এমএম (নয় মিলিমিটার) পিস্তলের ৮৪০টি তাজা বুলেট, চীনের তৈরি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের ২১৭টি তাজা বুলেট ও অস্ত্র পরিষ্কার করার ক্লিনিং রড ১৮৮টি উদ্ধার হয়।" সম্মানীত পাঠকদের একটু পেছনে যাওয়ার অনুরুধ করছি। ৭৫' এ বঙ্গবন্ধুকে নৃসংশভাবে হত্যা করার পর এদেশ মুলত: স্বাধীনতা বিরুধী দল ও জোট কতৃক শাষিত হতে থাকে।তাঁদের সকলের আমলেই ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত বিচ্ছিন্নতাবাদি সংঘঠন গুলী বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা এবং টেকনাফ, সিলেট এলাকায় তাঁদের ঘাঁটির সৃষ্টি করে।বার্মার বিচ্ছিন্নতাবাদি নেতার ঘাঁটিও গত কিছুদিন আগে কক্সবাজার এলাকা থেকে আবিস্কৃত হতে দেখা গেছে।প্রতিবেশি দেশ সমুহের বিচ্ছিন্নতাবাদিদের আশ্রয় দেয়ার কারনে সেই দেশগুলিও এযাবৎকাল বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদি গোষ্টি গুলিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে প্রতিশোধ নেয়ার একরকম কৌশল দেখা গেছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এই দেশটির জম্মদাতা। জম্মদাত্রী মা'য়ের আন্তরীকতায় আর পালিত মা'সীর আন্তরীকতায় ব্যবধান বুঝিয়ে বলার দরকার হয়না। সুতারাং এই দেশটিকে নিয়ে আন্তজাতিক মহলকে খেলার সুযোগ আওয়ামী লীগ দিতে পারেনা। সঙ্গত কারনে সীমান্তের পার্বত্য এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিশাল বিশাল কয়েকটি ঘাঁটি বাংলাদেশ সরকার ঘুটিয়ে দেয় এবং বিপুল অস্ত্রও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। বাংলাদেশের সরকার প্রধান প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়েই বিদেশী সন্ত্রাসী গুষ্টি গুলীকে বাংলাদেশের ভুখন্ড থেকে উচ্ছেদ করে।ফলও লাভ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে তালমিলিয়ে ভারতীয় সরকারও তাঁদের সীমান্ত এলাকায় উপয্যপুরী অভিযান পরিচালনা করা শুরু করে।ফলত: পার্বত্য এলাকার অস্ত্রধারী সন্তু লারমা সহ অপরাপর সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলী ভারতে বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান করতে না পেরে- আওয়ামী লীগের গতবারের শাষনে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়।এবারও সুন্দরবন কেন্দ্রিক বেশ কিছু জলদুস্যু গ্রুপ ভারত মহাসাগরে এবং সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে অবস্থান করতে না পেরে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছে। তাছাড়াও বড় একটি রাজনৈতিক বিজয় সম্পর্কে আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।বিজেপি ভারতের মৌলবাদি সংগঠন।শিবসেনা সহ আরো কয়েকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন উগ্র হিন্দু জাতীয়তা বাদি সংগঠন।ভারতের কংগ্রেস অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল।দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে বিজেপি বাংলাদেশের দৃশ্যমান রাজনৈতিক দল সমুহের মধ্যে আওয়ামী লীগের কখনই বন্ধু ছিলনা।তাঁদের দলীয় কাউন্সিল এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন সমুহেও ডেলিকেট পাঠিয়ে তেমন বন্ধুত্বের নিদর্শন রাখার তোড়জোড় কখনই দেখা যায়নি। কমিউনিষ্ট আন্দোলনে বা সমাজতন্ত্রীদের আন্দোলনে আন্তজাতিকতা স্পষ্ট অনুভব করা যায়। তেমনি মৌলবাদিদের আন্দোলন সংগ্রামেও ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আন্তজাতিকতার রেশ স্পষ্ট দৃশ্যমান।পাকিস্তানের জামায়াত,ভারতের শিবসেনা,বার্মার বোরোদের মধ্যে যোগসাজস মাঝে মধ্যেই টের পাওয়া যায়। পাঠক লক্ষ করেছেন কিনা জানিনা, বিজেপি সর্বশেষ সংখ্যাগরিষ্টতা পেয়ে সরকার গঠন স্পস্ট হতে না হতে বাংলাদেশে বিএনপি জামায়াত সহ আরো কতিপয় দলের কেন্দ্রীয় অফিস সহ সারা দেশব্যাপি মিষ্টি বিতরন এবং মিষ্টিমূখের বন্যা বয়ে যায়।তাঁরা এতবেশি উৎফুল্ল হয়েছিল যে, "মনে হচ্ছিল বিজেপি দিল্লির মসনদ দখল করার আগেই- বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা বিএনপি জামায়াতই পেয়ে গেছে।" তাঁদের আনন্দের এই মহোৎসব অমূলক নয়। ভারতের কংগ্রেসের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাল সম্পর্কের অতীত ইতিহাস রয়েছে।কংগ্রেস ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর সঙ্গত কারনে তাঁদের বন্ধুদলের যেহেতু ক্ষমতা গ্রহন নিশ্চিত দেখা যাচ্ছিল তখন তাঁদের আনন্দ হওয়ারই কথা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কখনই কংগ্রেসের খমতায় থাকা না থাকার মধ্যে এইরুপ উল্লাস বা বেদনার লক্ষন দেখা যায়নি।ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটেই ভারতীয় জনগনের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিসমুহের নিবিড় বন্ধন রয়েছে।আওয়ামীলীগের উল্লাস বা বেদনা প্রকাশ করা না করায়, 'এই বন্ধন কখনই চিহ্ন হওয়ার নয়।'ভারতের বিজেপি এবং বাংলাদেশের বিএনপি জামায়াত বিষয়টি সম্পর্কে 'জানেনা বা ধারনায় নেই 'এইরুপ চিন্তা যারাই করেন তাঁরা বোকার স্বর্গেই বাস করেন।' বর্তমানের ভারতীয় খমতাসীন দল বাংলাদেশের আওয়ামীলীগ সরকারকে নি:শর্ত সমর্থন দেয়ার একমাত্র কারন শান্তিতে ভারতের শাষনকায্য পরিচালনা করা। নির্ভেজাল শাষনকায্য পরিচালনায় বিজেপিকে আগামী সংসদ নির্বাচনেও খমতায় আনতে সাহায্য করতে পারে।আর তাই বিজেপি সরকার তাঁদের দলের অভ্যন্তরে মতবেদ থাকা সত্বেও বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।সমর্থনের বিনিময়ে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদি শক্তিসমুহকে নিস্তেজ করে ভারতকে খন্ড বিখন্ডের হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের বর্তমান সরকারের ঠিক এই দুর্বলতাকেই বেশ সুন্দর কৌশলি ভাবে কাজে লাগিয়ে সীমান্ত সমস্যা সহ আরো কতিপয় যুগযুগান্তরের বিরাজমান সমস্যা সমাধান করে নিয়েছেন।এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেয়ানেয়ার কুটনীতি অনুসরন করে শতভাগ স্বার্থ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। বিনাযুদ্ধে সীমান্ত সমস্যার সমাধান কোন দেশ করতে পেরেছে, এইরুপ উদাহরন না থাকা সত্বেও বাংলাদেশ -ভারত হাজার বছরের ঐতিহ্য ভেঙ্গে তাও সম্ভব করতে পেরেছে। ভারত এবং বার্মার নিকট থেকে বিশাল সমুদ্র এলাকা দখলে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। এইক্ষেত্রে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদিদের চেয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থীতিশীলতা ও জঙ্গী গোষ্টি, পাহাড়ি সসস্ত্র গোষ্টি,বঙ্গোবসাগরে জলদুস্যু, সুন্দরবন কেন্দিক সসস্ত্র বাহিনী সমুহের অপ-তৎপরতা বন্ধ করাই আওয়ামী লীগ সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য। তথাকথিত বঙ্গদেশ প্রতিষ্ঠা বা আরাকান সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারকেও এক্ষেত্রে উড়িয়ে দেয়া যায়না।ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উচ্ছেদ করে সরকার বাংলাদেশের সমূহ দুটি বড় বিপদ সংকেত থেকেও দেশকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা তাঁর সুদুরপ্রসারী চিন্তাচেতনার ফলপ্রসূ বাস্তব পদক্ষেপ সমুহের উৎকৃষ্ট বাস্তবায়নে শতভাগ সফলতা অর্জন করতে পেরেছেন। সঙ্গত কারনেই বাংলাদেশের উগ্রজঙ্গীগোষ্টি, ভারতীয় জঙ্গীগোষ্টি, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত শিবির, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি,বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতা বাদী শক্তি সমূহের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই অলিখিত ঐক্য হতে বাধ্য।তাঁদের পরস্পরকে সাহায্য সহযোগিতা করার ইতিপুর্বে একাধিক উদাহরন চোখের সামনেই বিদ্যমান রয়েছে।এক্ষেত্রে বিএনপি জামায়াতের ২০০১ইং সালে সরকার পরিচালনার সময়ে দশট্রাক অস্ত্র চট্রগ্রাম বন্দরে আটকের সংবাদ বিস্মৃত হওয়ার কথা নয়।তাঁদের সম্মিলিত সম্যক উপলব্দি স্পষ্ট, "আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তাঁদের কারো স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ার সুযোগ নেই।বাংলাদেশের ভুখন্ড ব্যবহার ব্যতিরেকে ভারত ও বার্মায় কোনপ্রকার সসস্ত্র আন্দোলনের চিন্তা করা বাতুলতা মাত্র।" সুপ্রীয় পাঠকগন, আপনারা একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই একটা বিষয় পরিস্কারভাবে অনূধাবন করতে পারেন।বিএনপির নেতারা যখনই সরকার উৎখাতের প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করে তার কয়েকদিন পরেই- হয় বড় রকমের নাশকতার ঘটনা ঘটে, নয়তো বড় জঙ্গী গোষ্টির অস্তিত্ব ধরা পড়ে।সর্ব শেষ হান্নান শাহর সাতদিনের মধ্যে সরকার উৎখাতের ঘোষনার দুইদিন পরেই এই বিশাল অস্ত্রের চালান দৃশ্যমান হল। তাঁদের অদ্য পয্যন্ত কোন হুমকিই অমূলক নয়-প্রত্যেকবারের হুমকিতে কিছুনা কিছু বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। এই সমস্ত অশুভ শক্তির চক্রান্তের সম্মুখভাগে থেকে বিএনপি রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।জন সম্পৃত্ত আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে দলটি অশুভ শক্তির কাঁধে ভর দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে চায়। অবশ্য দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও ঠিক এমন কৌশলি ভুমিকা গ্রহন করেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় দৃশ্যমান হয়েছিলেন।তাঁর ব্যতিক্রমতো হতেই পারেনা। ' জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

বিএনপি জামায়াত আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতিতে খেই হারিয়ে জনবিচ্ছিন্ন দলে রুপান্তরীত হয়েছে।তাঁদের অশুভ শক্তির উপর নির্ভর করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।এমতবস্থায় তাঁদের মদদে অশুভ শক্তি দানবাকার ধারন করে জনমানসে ভয়ংকর ভীতি সঞ্চার করেছে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন