রাজনীতির গতিপ্রকৃতি-- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির ব্যাক্তি ও সংগঠনের অবস্থান--- _____________________________________ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সত্যিই অভাবিত। অবাক করার মতো। কারো ইচ্ছা অনিচ্ছার, চিন্তা-চেতনার উপর তা নির্ভর করে না। ভাবা হয় এক রকম, বাস্তবতা দেখা দেয় অন্যরকম।ধ্যান-ধারনা,চিন্তা-চেতনা, জল্পনা-কল্পনা শেষাবদি হয় পরাজিত। রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার উদগ্র বাসনা প্রত্যেক দল এবং জাতীয় নেতারই থাকে। কিন্তু বিশ্বের কোন নেতা বা রাজনৈতিক দলই পারেনি রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে।এমনটা না পারলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গোষ্ঠী, ব্যক্তি বা মহল বিশেষ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তাঁদের কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখে। তাই আদিকাল থেকে দেশে দেশে ঘটে চলেছে লড়াই- সংগ্রাম, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত, হত্যা-গুপ্তহত্যা, গুম-খুন,দাংগা-হাঙ্গামা, যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি। বাংলাদেশের রাজনীতি বহুধাবিভক্ত হলেও দুটি ধারা অগ্রসরমান এবং দৃশ্যমান।প্রথমটি জাতিয়তাবাদী ধারা। দ্বিতীয়টি উগ্র ধর্মীয় গোষ্টি কতৃক নিয়ন্ত্রিত সাম্প্রদায়িক গোষ্টির পরিপূরক মিশ্র ধারা। প্রথম ধারাটি বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধ, কৃষ্টি, সংস্কৃতি লালনকারি। দ্বিতীয়টি অধিকতর পশ্চাদমুখি, ধর্মীয় বিদ্বেস প্রসূত, সাম্প্রদায়িক, গোষ্টি দান্ধিকতায় পরিপুষ্ট। প্রথমটি উদার রীতি-নীতি, নীতি-আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতায় পরিপুষ্ট। দ্বিতীয়টি নির্দিষ্ট রীতি-নীতি হীন, নীতি-আদর্শ বর্হিভূত, উগ্র ধর্মীয় চেতনা সমৃদ্ধ, ইসলামের মূল চেতনা 'শান্তি ও সার্বজনীনতা' বর্হিভূত কট্ররতার ধারক ও বাহক। প্রথম ধারাটির নেতৃত্বে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী সত্বার উম্মেষ ও বিকাশ ঘটিয়ে হাজার বছর বিভিন্ন জাতি-গোষ্টির দাসত্বের বন্ধন চিহ্ন করে বাঙ্গালী জাতি শৃংখল মুক্ত হওয়ার লক্ষে ১৯৭১ ইং সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করে এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়। দ্বিতীয় ধারাটির নেতৃত্বে ১৯৪৭ইং সালে বাঙ্গালীর জাতীয়বাদী চেতনা বর্হিভূত, সাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ, গোষ্টি বিদ্বেসী দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে স্বাধীন-সার্বভৌম পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রথম ধারাটি 'ধর্মীয় গোষ্টি চেতনার' বিরুদ্ধে উদার ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি আদর্শ ধারন ও লালন করে দীর্ঘ ২৩ বছর নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরী করে।অবশেষে ১৯৭১ ইং সালে দীর্ঘ নয় মাসব্যাপি সসস্ত্র যুদ্ধ করে দ্বিতীয় ধারাটিকে চরমভাবে পরাজিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে।অপরপক্ষে দ্বিতীয় ধারাটি বিনা রক্তপাতে, স্বল্প সময়ে, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাঙ্গালীদের বঞ্চিত করে পাঠান-পাঞ্জাবীর নেতৃত্বে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে, কুটকৌশলের মাধ্যমে দুই হাজার মাইলের ব্যবধানে দুই ভুখন্ড একত্রিত করে- স্বাধীন সার্বভৌম পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা করে। প্রথম ধারাটির উম্মেষ, বিকাশ সাধনে বহু জননেতার অবদান অবশ্যই ছিল।তম্মধ্যে অপরিসীম দক্ষতা,অসীম সাহষ, রাজনৈতিক বিচক্ষনতা, উপস্থিত বুদ্ধি, বাগ্মিতা, একাগ্রতা, মানুষকে আপন করে নেয়ার দুর্লভ ক্ষমতা সর্বোপরি নেতৃত্বের অপরিসীম গুনাবলীতে একক নেতৃত্বে বিকশীত ও প্রস্ফুটিত হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেতৃত্বে বাঙ্গালী তাঁর নীজস্ব আবাসভুমি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে।অন্যদিকে দ্বিতীয় ধারাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদি শাষকশ্রেনী ভারতীয় উপমহাদেশ দীর্ঘ দুইশত বছর দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ রাখার পর,বিশ্বরাজনীতির গুনগত পরিবর্তনের কারনে এই উপমহাদেশের শাষন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।ফলত: ভারতীয় উপমহাদেশের অভ্যন্তরে জাতিগত স্বাধীনতা পাওয়ার বৃহৎ সুযোগ সৃষ্টি হয়। তৎহেতু বাংলাভাষাবাসিদের মধ্যে তৎসময়ের জাতীয় নেতৃবৃন্দ গনজাগরনও সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিধিবাম-পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত,শিয়া উগ্রধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী, ধর্মজ্ঞানহীন, ধর্মীয় অনুশাষনহীন, সম্পূর্ণ বিজাতীয় সংস্কৃতির ধারক বাহক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বিলেতের ব্যারিষ্টারীতে ইস্তফা দিয়ে এসে মুসলিম লীগের নেতৃত্ব গ্রহন করেন। তিনি এই জনপথকে শাষন শোষন করার মানসে, বাঙ্গালী ভাষাবাসিদের আবারও দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে অভিনব কৌশল গ্রহন করেন।তিনি বাঙ্গালী হিন্দু ও মসুলমানদের বিভাজনের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় গোষ্টিগত তত্ব 'দ্বিজাতি তত্ব' হাজির করেন।অর্থাৎ হিন্দু এবং মসুলমানদের জন্য আলাদা আলাদা রাষ্ট্রের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।বাঙ্গালী নেতাদের প্রবল বাধার মুখেও কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তিনি সফল হন।ফলত: প্রথম জাতীয়তাবাদী ধারাকে কূটকৌশলে পরাজিত করে তিনি দুইহাজার মাইলের ব্যবধানে দুই প্রান্তে দুই ভুখন্ড নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রটির সৃষ্ট্রি করতে সক্ষম হন। যদিও আপাত:দৃষ্টিতে পাকিস্তান স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু জাতিগত দ্বন্ধের অবসান তিনি করতে পারেননি।পাকিস্তানের তেইশ বছর শাষনকালে ধর্মের বিষবাস্প ছড়িয়েও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি।ফলে পাকিস্তানকে শাষন করার জন্য সর্বসম্মত কোন সংবিধানও রচিত হয়নি।অপরপক্ষে ভঙ্গুর ধর্মীয় চেতনার বিরুদ্ধে উদার বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার অঙ্গিকারের ভিত্তিতে অত্রভুখন্ডে গনজাগরনের সৃষ্টি করতে সক্ষম হন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।কালক্রমে বাঙ্গালী জাতিয়তা বোধের চেতনাকে মুক্তিযুদ্ধে রুপান্তরীত করে ১৯৭১ ইং সালের ১৬ই ডিসেম্বর চুড়ান্তভাবে দ্বিতীয়ধারাকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি জাতির জনক হিসেবে আর্বিভুত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের আলোকে ১৯৭২ ইং সালেই মাত্র একবছরের মধ্যে বিদ্যমান জাতীয় সংসদের সর্বসম্মতভাবে অনুমোদনে যুগশ্রেষ্ঠ লিখিত সংবিধান বাঙ্গালী জাতিকে উপহার দিতে সক্ষম হন। সংবিধান রচনার পরের দিন থেকে দ্বিতীয় ধারাটি চরম পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ঘাপটি মেরে সমাজের সবার অগোচরে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। ১৯৭৫ ইং সালে জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে ইতিহাসের জগন্যতম প্রতিশোধ গ্রহন করতে সক্ষম হয়। হত্যাকারিরা প্রথমোক্ত ধারাকে ইতিহাসের অতল গব্বরে নিক্ষিপ্ত করে।প্রগতির চাকাকে পিছনে নেয়া শুরু করে।হত্যা, গুপ্তহত্যা, বিনাবিচারে হত্যার সংস্কৃতি চালু করে। এবং কি পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান 'জেলখানা'-সেখানেও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে 'রক্তের হুলিখেলায়' মধ্যযুগীয় ভাবধারাকেও হার মানাতে সক্ষম হয়। দীর্ঘ একুশ বছর জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রামের কঠিন ও সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমনের পর আবারও প্রথমোক্ত ধারাটি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়।তাঁর পরবর্তি ইতিহাস সকলেরই জানা।১৯৭৫-২০০৮ইং সালের ইতিহাস- "ষড়যন্ত্রের ইতিহাস, হত্যার ইতিহাস, জাতির জনকের পরিবারকে নিচ্ছিন্ন করে দেয়ার একাধিক ঘটনাক্রমের ইতিহাস।"জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে দিয়ে যে হত্যার উদ্ভোধন করা হয়েছিল, সেই ধারায় আজও কোন পরিবর্তন হয়নি।সর্বশেষ শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র জাতির জনকের দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রে এসে ঠেকেছে। সকল বাধা বিপত্তি পায়েদলে জাতির জনকের কন্যা ২০০৮ইং সালে কমবেশি শত্রুমিত্র চিহ্নিতকরন সাপেক্ষে, বৃহৎ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষে, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির সুচনার উদ্দেশ্যে, সুদুর প্রসারী চিন্তাচেতনার আলোকে, মহাজোট গঠন করেন।জাতির বৃহৎ স্বার্থের বিবেচনায় তিনি এরশাদের মত স্বৈরাচারকেও মহাজোটের অন্তভুক্ত করেন। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বিচক্ষনতার তৎক্ষনাৎ সুফল জাতি পেয়েছে। ২০০৮ ইং সালের অবাধ, শান্তিপুর্ন সাধারন নির্বাচনে বিশাল জয় নিয়ে মহাজোট জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়।তিনি দ্বিতীয় ধারাকে রাজনৈতিক ভাবে এবং দেশে বিদেশে গ্রহনযোগ্য সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের রায়ে চরমভাবে পরাজিত করতে সক্ষম হন। এমনতর পরাজয়ের গ্লানী তাঁদের উপহার দেন-দীর্ঘ সাত বছরেও আর সোজা হয়ে দ্বিতীয় ধারাটি রাজপথে দাঁড়াতে পারেনি। তাঁর দুরদর্শি নেতৃত্বে, সুদুরপ্রসারি চিন্তাচেতনার আলোকে দেশব্যাপি অঘোষিত জাতিয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে।বিশাল এক উদ্দেশ্য আদর্শ্যকে সামনে নিয়ে মহাজোট গঠন করেছিলেন তিনি।বিগত সাত বছরে তাঁর সরকারের শাষনামলে জনগনের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জনজীবনের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠার চাওয়া পাওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।এই কারনে তাঁর সরকারকে বহুবীদ জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে সবেমাত্র স্থীরতার মধ্যে জাতিকে নিয়ে এসেছেন।তাঁর নীজের জীবন এবং একমাত্র পুত্রের জীবনের হুমকিকেও তোয়াক্কা না করে দৃডপদক্ষেপেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। এই কথাটি অনস্বিকায্য যে, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে নিস্তেজ ও নির্মুল করা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন করা আদৌ সম্ভব নহে। তাঁর সরকার ক্ষমতা গ্রহন করেই সেই পদক্ষেপটি প্রথমেই নিয়েছেন। আপাত: দৃষ্টে মনে হচ্ছে, জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে তিনটি শ্রেনীতে ভাগ করেছেন। প্রথমত: মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক, আদর্শগত, সাংগঠনিক,সসস্ত্র বিরুধীতাকারি চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাক্তি ও সংগঠনকে প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়ত: তাঁদের পৃষ্টপোষনকারী, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা, দেশী বিদেশী ব্যাক্তি ও সংগঠন। যাঁরা মুখোশের আড়ালে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন। এই শ্রেনীর ব্যাক্তি ও গোষ্টি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে এবং বাহিরে বিচরনরত: রয়েছে। তাঁদেরকে তিনি রাজনৈতিক দ্বিতীয় প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন।বিভিন্ন কলাকৌশলে সময়ক্ষেপন করে,প্রধান শত্রু নিধনের পর, তাঁদের সঙ্গে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদেরকে রাজনৈতিক ভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে পরাজিত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে। তৃতীয়ত: শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে অবস্থান-মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি কোন অবস্থায় নহে।অতীতে ক্ষতির কারন হলেও বর্তমান এবং ভবিষ্যতে ক্ষতির কোন লক্ষন নেই। এইরুপ দল ও সংগঠন, ব্যক্তি ও গোষ্টি সমুহকে মিত্র হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে-প্রথম ও দ্বিতীয় শক্তির সঙ্গে লড়াই করার উদ্দেশ্যে তাঁদেরকে বুকে টেনে নিয়েছেন। প্রথমোক্তকে নিস্তেজ করার স্বার্থে তৃতীয়পক্ষকে ভাগে এনে দ্বিতীয় পক্ষকে রাজনৈতিক ভাবে পরাস্ত করার নীতি কৌশল নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। জাতির জনকের কন্যা মৃত্যু ঝুকি মাথায় নিয়ে এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে জিম্মি করে প্রথম পক্ষের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি তাঁর অসীম সাহষ, দৃড মনোবল, অপুরন্ত সাহষিকতা, বিচক্ষনতা, ধৈয্যের পরাকাষ্টা প্রদর্শন করে তাঁদের পরাস্ত করে নিস্তেজ করতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের মদদ দাতারাও আগের মত মানবতা বিরুধী বিচার নিয়ে তেমন সোচচার নেই। সৌদী আরবের মত তাঁদের বৃহৎ মিত্র শক্তিও শেষ পয্যন্ত পৃষ্ট প্রদর্শন করে যুদ্ধপরাধের বিচারকে নৈতিক সমর্থন দিতে বাধ্য হয়েছেন। ব্যপারটি আদৌ সহজ নয়, ছিলনা কখনও-জাতির জনকের কন্যা বিধায় সম্ভব হয়েছে। জাতির জনকের শেখ হাসিনার সরকার লড়াই রত: অবস্থাও তাঁদের চক্রান্ত, হত্যা, গুপ্ত হত্যা, টার্গেট হত্যা বন্ধ হয়নি।রাজনৈতিক এবং আইনীভাবে পরাস্ত হলেও তাঁদের নাশকতার মাধ্যমে জনজীবনে অস্বস্তি ও ভীতিকর পরিস্থীতি সৃষ্টির চেষ্টা থেমে যায়নি।আমি এইরুপ অতীতের কিছু লোমহর্ষক ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিষয় আপনাদের স্মরনে নিয়ে আসতে চাই। অষ্টেলিয়ার ক্রিকেট টীম যখন সফর বাতিল করে তখন কল্পনাও করা যায় নাই, ঢাকা ও রংপুরে দুই জন বিদেশী গুপ্ত ঘাতকের হাতে খুন হবেন। বিদেশি খুন সামলাতে না সামলাতেই পাবনায় খ্রিস্টান ধর্ম যাজককে খুন করার প্রচেষ্টা। এরই মধ্যে হঠাৎই খুন হয়ে গেলেন পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান হালে পীর খিজির খান। এ সবের মধ্যেই ঈদোৎসব কাটে, যথাযথ মর্য্যদার সাথে- উৎসব আনন্দের মধ্য দিয়ে। কিছুদিন পরই দুর্গা পুজা নিয়ে চলে নানা জল্পনা কল্পনা। এখানে সেখানে কিছু মূর্তি ভাঙ্গা হলেও উৎসব মুলত: আনন্দেই কাটে।এই সময়ে হঠাৎ তাজিয়া মিছিলে বোমা বিস্ফোরিত হয়। পবিত্র মহরমের শোক মিছিলে হামলায় সবাইকে হতচকিত করে দেয়। একটু দম ফেলতে না ফেলতেই ঘটে একই দিনে প্রায় একই সময়ে দুই নৃশংস ও হৃদয় বিদারক হামলার ঘটনা। মৃত্যু হয় তরুণ প্রকাশক দীপনের আর অপর হামলার এক প্রকাশক ও দুই লেখক প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত হন। এই সমস্ত হত্যা, গুপ্ত হত্যা চলাকালিন সময়ে দলের অভ্যন্তর থেকে উদ্ভব হয় ন্যাক্কারজনক দুস্কর্মের হোতাদের।একদিকে শত্রু নির্মুল অন্য দিকে উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখা-বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে সরকার। ছাত্র লীগ ও যুবলীগের নামধারীদের অপকর্ম- দুষ্কর্ম হোতাদের কারনে। এই ক্ষেত্রেও সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি-কৌশল কার্যকর করে এবং মোহাম্মদ পুর সহ প্রভৃতি স্থানে ক্রস ফায়ারের ঘটনার মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হন। স্বস্তি ও তৃপ্তির ভাব দেখা দেয় মহাজোট সরকারে। জনগনও ছিল নিজ নিজ জীবন ও জীবিকা নিয়ে শান্তি ও স্বস্তির মধ্যে।মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি কবে কার্যকর হবে এই প্রতীক্ষায় ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের জনগণ। হঠাৎ করেই দৃশ্যপট গেল পাল্টে।তরুন প্রজম্ম কতৃক দেশে বিদেশে আলোচিত গণজাগরণ মঞ্চের অর্ধবেলা হরতাল আহব্বানকে ঘিরে।তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে বলে , ‘সরকারের ভেতর থেকে পৃষ্টপোষকতা না থাকলে একের পর এক হত্যাকান্ড’ সম্ভব হতো না। দীপন হত্যাকান্ডের আগে-পরে ‘পুলিশ নির্লিপ্ত’ ছিল। দোষীদের গ্রেপ্তার করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বিধায় হরতালের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছে মঞ্চ। এই যেন বুকে থেকে পিঠে চুরিকাঘাত। অন্যদিকে চরমতমভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। প্রকাশকরা নেমেছেন দোকান বন্ধ করে রাজপথের আন্দোলনে। বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি , আইন শালিশী কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন যার যার অবস্থান থেকে ব্যক্ত করছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। প্রকাশক হত্যায় নিউইয়র্ক, লন্ডন প্রভৃতি স্থানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মুক্তচিন্তার পক্ষে এবং ‘সরকারের ব্যর্থতায়’ গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছিল।সরকারের ভিতরে বাইরে অস্থিরতা মাঝে মধ্যেই প্রকাশ্য রুপ ধারন করছিল। "এমনতর সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড়ভাই শেখ সেলিমের কন্ঠে ভেসে উঠে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি জাসদের ভুমিকা নিয়ে ক্ষুব্দ কন্ঠস্বর।" হঠাৎ বজ্রপাত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মাথার উপর। শুরু হল শেখ সেলিমের উদ্দেশ্য নিয়ে নানামুখি আলোচনা ও সমালোচনা। শেখ সেলিমের কন্ঠের সাথে তাল মিলাল আরও কতক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা। আওয়ামী লীগের তৃনমুল থেকে দাবী উঠল শেখ সেলিমের বিরুদ্ধে মহাজোট ভাঙ্গার অপচেষ্টায় তাঁকে বহি:স্কারের। সুযোগ বুঝে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে অবস্থানরত: খালেদা হঠাৎ সুধী সমাবেশ ডেকে বলে বসেন, '‘হাসিনা ও মঈন ইউ আহমদের’ ,২০০৯ সালের বিডিআর হত্যার অভিযোগে বিচার করা হবে।" বক্তব্যটি দেশব্যাপি আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিনত হল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘লেডি হিটলার’ এবং হত্যার ঘটনার জন্য দায়ী করে বলেন, ‘জঙ্গিদের কথা বলে শেখ হাসিনা বিদেশিদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।খালেদার বক্তৃতার সুর থেকে এটা সুস্পষ্ট অনুমান করা গিয়েছিল-দেশের মানুষ নয়, বিদেশীদের বোঝানোই হচ্ছে বিএনপি-জামাত জোট নেত্রীর আসল উদ্দেশ্য। খালেদা জীয়ার বক্ত্যব্যের পরেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মধ্যে সম্বিত ফিরে এল। সহষা আন্দোলন স্তিমিত হল, সমালোচনার বর্শার আঘাত কমতে লাগলো, সরকারেও স্থীরতা এল।শেখ সেলিমের জাসদ বিতর্কও মাটিচাপা পড়ে গেল। বঙ্গরত্ম শেখ হাসিনা যখন প্রথম শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় শত্রুকে পরাস্ত করার জন্য তাঁদের একান্ত মিত্র দেশ সফর করে মারানাস্ত্র মজুদে ব্যাস্ত, তখনি ঘটে গেল কয়েকটি অনিভিপ্রেত ঘটনা। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তর থেকে প্রথমেই তনু হত্যা নিয়ে পানি ঘোলা করে দেয়ার চেষ্টা হল।একের পর এক জঙ্গি হামলায় পুরোহীত সহ বেশ কিছু মানুষ খুন হয়ে গেল।চট্রগ্রামে ঘটে গেল লোম হর্ষক ঘটনা। পুলিশের ডি আই জির স্ত্রীকে টার্গেট কিলিং এ হত্যা করা হল।মাদারিপুরে এক কলেজ শিক্ষককে চাপাতির কোপে আহত করে পালায়নরত: অবস্থায় জনতার হাতে ধৃত হল এক শিবির নেতা। এমনিতর সময় আওয়ামীলীগের গুটিকতক নেতার হাতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের আমলা লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থীতির মুখে ঠেলে দেয়।।সন্ত্রাসী মাস্তান নেতাদের অপকর্মের কারনে ইউপি নির্বাচন দেশ বিদেশে প্রশ্নের সম্মুখ্যিন হল। জাতির জনকের কন্যার ইউপি নির্বাচন দলীয় মনোনয়নে ও প্রতিকে করার সুদুরপ্রসারি চিন্তাচেতনা এবং মহৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে বিলীন করে ব্যাক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দেয় কতিপয় দুবৃত্ত নেতা। তাঁরা সরকারের নির্বাচন সুষ্ঠ ও অবাধ করার সদিচ্ছাকে জলাঞ্জলী দিয়ে বিগত দিনের কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত অর্জন সমুহের উপর কলংকের কালিমালেপন করে দিল। এমন সময়ে সরকার জঙ্গি হামলা নির্মুলে যখন যৌথ বাহিনীর সাঁড়াষি অভিযান চালিয়ে জনজীবনে স্বস্তি আনায়নে ব্যাস্ত, ঠিক তখনি আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় শির্ষস্থানীয় নেতার মুখ থেকে পুনরায় জাসদ বিতর্কের অবতারনা হল। উক্ত বিতর্ক ক্ষনিকের মধ্যে দেশব্যাপি চড়িয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড়ের গতিকে টর্নেডোতে রুপান্তরীত করেছে।মহুর্তে বিএনপি নেত্রীও সৈয়দ আশ্রাফের মন্তব্যে ঘি ঢালার উদ্দেশ্যে বক্তৃতা বিবৃতির ঝড় তোলার চেষ্টা অব্যাহত রাখল। জাতির জনকের কন্যা সবেমাত্র প্রধান শক্তির সাথে লড়াই করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে দ্বিতীয় শক্তির বিরুদ্ধে রণসাজে সাজার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ঠিক তখনি উপরি উক্ত অনভিপ্রেত ঘটনাবলী কিঞ্চিত হলেও সরকারকে দুর্বল করবে সন্দেহ নেই। পয্যবেক্ষনে দেখা যায়, জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বিদেশের কিছু পরিবার ও ব্যাক্তির প্রতি মানষিকভাবে দুর্বল।যে সমস্ত ব্যাক্তিও পরিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে জাতির জনক হয়ে আত্মপ্রকাশ করার পিছনে অসামান্য অবদান রেখেছেন, সেই সমস্ত পরিবার ও ব্যাক্তির ছেলেমেয়েদের প্রতি উদার মনোভাব পোষন করেন।জগন্যতম অপরাধের কারনেও সহষা ক্ষিপ্ত হননা তিনি, ব্যবস্থা গ্রহন করতে কিছুটা সময়ক্ষেপন করেন।যেমন জাতীয় চার নেতার পরিবার,নারায়ন গঞ্জের ওসমানী পরিবার, চট্রগ্রামের হান্নান সাহেবের পরিবার, টাঙ্গাইলের সিদ্দিকী পরিবার সহ আরো কতেক পরিবার। শেখ হাসিনার এই মানষিক দুর্বলতাকে পুঁজি করে ঐ সমস্ত পরিবারের সদস্যগন সময়ে সময়ে এমনসব কান্ডজ্ঞানহীন ঘটনা ঘটান -শেখ হাসিনাকে তো বটে সরকারকেও বিব্রত, ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে দেখা যায়। ইহা কতখানি নীতি আদর্শের অভ্যন্তরে পড়ে জাতির চিন্তা করার প্রয়োজন আছ বৈকি। মুলত: সরকার যখন আইনের আওতার মধ্যে থেকে কঠোরভাবে সংবিধান অনুযায়ী বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন তখনই উল্লিখিত সব তৎপরতা ও বক্তব্যের ভেতর দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হন ষড়যন্ত্রকারীরা।তাঁরা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরিয়ে নিয়ে ডান-প্রতিক্রিয়াশীলমুখী করার প্রচেষ্টা চালান। জাতি হিসাবে আমাদের পরিত্যক্ত, আমাদের নিকট যুদ্ধে পরাজিত সেই পাকিস্তানমুখী করার চক্রান্ত,বাঙ্গালী জাতির জন্য লজ্জা ছাড়া আর কি হতে পারে? যে বীজ রোপন করেছিলেন কায়েদে আযম মহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৭ইং সালের দ্বিজাতি তত্বের মধ্য দিয়ে,সেই বীজকেই তাঁরা পরিচর্য্যা করতে চান।৭১ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাঁদের পরাজিত করে সেই বীজের মুলৎপাটন করেছিল বাঙালী জাতি। পাকিস্তানের উচ্ছিষ্ট ভোগিরা স্বাধীনতার পর বাহাত্তরের সংবিধান চালু হলে আবার সংঘঠিত হয়। তাঁরা বাঙ্গালী জাতির মুলচেতনা জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতার শক্তিকে এবার মুল টার্গেটে পরিনত করে। প্রথমেই তাঁরা মিথ্যা অপবাদ,ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পঁচাত্তরে সামরিক বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সপরিবারে বাঙ্গালী চেতনার ধারক ও বাহক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে।তার পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। তাঁর পরেই পবিত্র সংবিধানকে সামরিক ফরমানে রাতারাতি সংশোধন করে। তাঁরা পাকিস্তানের আদলে হুকুমের গণতন্ত্র চালু করে।মুলত: গণতন্ত্রের মর্মমূল উৎপাটন শুরু করে।দেশকে মিনি পাকিস্তানে রুপান্তর করে-যাহা জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে আমাদের জন্য অত্যান্ত ঘৃনার এবং মায্যদাহানীকর। বিশ্বব্যাপী উগ্রজঙ্গিবাদের উত্থান হলে এটা সর্বোতেভাবে কাজে লাগিয়ে দেশকে আরো দক্ষিণে ঠেলে দিতে প্রচেষ্টা চালায় তাঁরা সর্বতোভাবে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়--আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-০১ আমলে গোপন জঙ্গি গ্রুপগুলি বিএনপি-জামাত আমলে প্রকাশ্য জেএমজেবি, হরকাতুল জিহাদ রুপে আত্মপ্রকাশ। বর্তমান দিনগুলোতে হিজবুত তাহরীর, আল্লাহর দল, আনসার উল্লাহ বাংলা টীম প্রভৃতি হচ্ছে এক ও অভিন্ন ধারাবাহিকতার বহিঃপ্রকাশ। আওয়ামী লীগের সময় অপ্রকাশ্য ও নিষিদ্ধ- বিএনপি-জামাত আমলে প্রকাশ্য অস্ত্র নিয়ে রাজপথে মিছিল। আওয়ামী লীগের সময়ে হত্যা, গুপ্তহত্যা পরিচালনা করে, আওয়ামী লীগের শাষনকে অকেজো করা। বহি:শত্রুর আক্রমনের পথ সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা। হত্যা-গুপ্তহত্যার মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শন পুর্বক প্রথমোক্ত ধারাকে ঘরকুনো করে রাখার অপপ্রয়াস। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের অন্ধকার যুগের সুচনা করা। উপসংহারে বলতে চাই,শেখ সেলিম এবং সৈয়দ আশ্রাফের মত জাতীয় নেতারা মহাজোট গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত নন ইহা বিশ্বাস করা কঠিন ব্যাপার।জনাব ইনু '৭৫ পরবর্তিতে তরুন নেতা ছিলেন। দলের কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশ গ্রহন ছিল অবশ্যই।তবে জাসদের মুল কান্ডারি ছিলেন না, অবশ্যই বলা যায়।মুল চক্রান্তের হোতা মেজর জলিল,আসম রব, শাহাজান সিরাজ (দাদা ভাই),কর্নেল তাহের সহ আরো কতিপয় নেতা জাসদ রাজনীতির মুল চালিকা শক্তি হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন।তাঁদের মধ্যে আসম আব্দুর রব ১৯৯৬ইং--২০০১ ইং সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।তখন এই সমস্ত বিতর্ক উত্থাপন না করে, এখন জাতীয় কর্তব্য সাধনের পথে দেশরত্ম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকদুর অগ্রসর হওয়ার পর, দলের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় নেতার মুখ থেকে মহাজোটের ক্ষতিকারক উক্তি প্রকাশের কি কারন থাকতে পারে এই মহুর্তে বোধগম্য হচ্ছেনা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি মনেপ্রানে আশা করে, জাতীয় নেতৃবৃন্দ তাঁদের কথাবার্তায়,আচার আচরনে আরো অনেক বেশী সচেতন হবে।মুল উদ্দেশ্য সাধনের আগমুহুর্ত পয্যন্ত অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পুর্ণাঙ্গ বিনির্মান পয্যন্ত কথা ও কাজে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। ইহাই জাতির আখাংকা। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু।'

ষড়যন্ত্রকারি অশুভ শক্তি প্রতিনিয়ত আন্দোলন সংগ্রামের নিয়মাতান্ত্রিক পথ পরিহার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য ঘাপটি মেরে বসে থাকে।অবশ্য তাঁদেত্র উৎপত্তিও ষড়যন্ত্রের গর্ভ থেকেই হয়েছিল।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন