রাজনীতির গতিপ্রকৃতি-- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির ব্যাক্তি ও সংগঠনের অবস্থান--- _____________________________________ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সত্যিই অভাবিত। অবাক করার মতো। কারো ইচ্ছা অনিচ্ছার, চিন্তা-চেতনার উপর তা নির্ভর করে না। ভাবা হয় এক রকম, বাস্তবতা দেখা দেয় অন্যরকম।ধ্যান-ধারনা,চিন্তা-চেতনা, জল্পনা-কল্পনা শেষাবদি হয় পরাজিত। রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার উদগ্র বাসনা প্রত্যেক দল এবং জাতীয় নেতারই থাকে। কিন্তু বিশ্বের কোন নেতা বা রাজনৈতিক দলই পারেনি রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে।এমনটা না পারলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গোষ্ঠী, ব্যক্তি বা মহল বিশেষ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তাঁদের কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখে। তাই আদিকাল থেকে দেশে দেশে ঘটে চলেছে লড়াই- সংগ্রাম, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত, হত্যা-গুপ্তহত্যা, গুম-খুন,দাংগা-হাঙ্গামা, যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি। বাংলাদেশের রাজনীতি বহুধাবিভক্ত হলেও দুটি ধারা অগ্রসরমান এবং দৃশ্যমান।প্রথমটি জাতিয়তাবাদী ধারা। দ্বিতীয়টি উগ্র ধর্মীয় গোষ্টি কতৃক নিয়ন্ত্রিত সাম্প্রদায়িক গোষ্টির পরিপূরক মিশ্র ধারা। প্রথম ধারাটি বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধ, কৃষ্টি, সংস্কৃতি লালনকারি। দ্বিতীয়টি অধিকতর পশ্চাদমুখি, ধর্মীয় বিদ্বেস প্রসূত, সাম্প্রদায়িক, গোষ্টি দান্ধিকতায় পরিপুষ্ট। প্রথমটি উদার রীতি-নীতি, নীতি-আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতায় পরিপুষ্ট। দ্বিতীয়টি নির্দিষ্ট রীতি-নীতি হীন, নীতি-আদর্শ বর্হিভূত, উগ্র ধর্মীয় চেতনা সমৃদ্ধ, ইসলামের মূল চেতনা 'শান্তি ও সার্বজনীনতা' বর্হিভূত কট্ররতার ধারক ও বাহক। প্রথম ধারাটির নেতৃত্বে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদী সত্বার উম্মেষ ও বিকাশ ঘটিয়ে হাজার বছর বিভিন্ন জাতি-গোষ্টির দাসত্বের বন্ধন চিহ্ন করে বাঙ্গালী জাতি শৃংখল মুক্ত হওয়ার লক্ষে ১৯৭১ ইং সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করে এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়। দ্বিতীয় ধারাটির নেতৃত্বে ১৯৪৭ইং সালে বাঙ্গালীর জাতীয়বাদী চেতনা বর্হিভূত, সাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ, গোষ্টি বিদ্বেসী দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে স্বাধীন-সার্বভৌম পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রথম ধারাটি 'ধর্মীয় গোষ্টি চেতনার' বিরুদ্ধে উদার ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি আদর্শ ধারন ও লালন করে দীর্ঘ ২৩ বছর নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরী করে।অবশেষে ১৯৭১ ইং সালে দীর্ঘ নয় মাসব্যাপি সসস্ত্র যুদ্ধ করে দ্বিতীয় ধারাটিকে চরমভাবে পরাজিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে।অপরপক্ষে দ্বিতীয় ধারাটি বিনা রক্তপাতে, স্বল্প সময়ে, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাঙ্গালীদের বঞ্চিত করে পাঠান-পাঞ্জাবীর নেতৃত্বে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে, কুটকৌশলের মাধ্যমে দুই হাজার মাইলের ব্যবধানে দুই ভুখন্ড একত্রিত করে- স্বাধীন সার্বভৌম পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা করে। প্রথম ধারাটির উম্মেষ, বিকাশ সাধনে বহু জননেতার অবদান অবশ্যই ছিল।তম্মধ্যে অপরিসীম দক্ষতা,অসীম সাহষ, রাজনৈতিক বিচক্ষনতা, উপস্থিত বুদ্ধি, বাগ্মিতা, একাগ্রতা, মানুষকে আপন করে নেয়ার দুর্লভ ক্ষমতা সর্বোপরি নেতৃত্বের অপরিসীম গুনাবলীতে একক নেতৃত্বে বিকশীত ও প্রস্ফুটিত হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেতৃত্বে বাঙ্গালী তাঁর নীজস্ব আবাসভুমি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে।অন্যদিকে দ্বিতীয় ধারাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদি শাষকশ্রেনী ভারতীয় উপমহাদেশ দীর্ঘ দুইশত বছর দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ রাখার পর,বিশ্বরাজনীতির গুনগত পরিবর্তনের কারনে এই উপমহাদেশের শাষন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।ফলত: ভারতীয় উপমহাদেশের অভ্যন্তরে জাতিগত স্বাধীনতা পাওয়ার বৃহৎ সুযোগ সৃষ্টি হয়। তৎহেতু বাংলাভাষাবাসিদের মধ্যে তৎসময়ের জাতীয় নেতৃবৃন্দ গনজাগরনও সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিধিবাম-পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত,শিয়া উগ্রধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী, ধর্মজ্ঞানহীন, ধর্মীয় অনুশাষনহীন, সম্পূর্ণ বিজাতীয় সংস্কৃতির ধারক বাহক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বিলেতের ব্যারিষ্টারীতে ইস্তফা দিয়ে এসে মুসলিম লীগের নেতৃত্ব গ্রহন করেন। তিনি এই জনপথকে শাষন শোষন করার মানসে, বাঙ্গালী ভাষাবাসিদের আবারও দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে অভিনব কৌশল গ্রহন করেন।তিনি বাঙ্গালী হিন্দু ও মসুলমানদের বিভাজনের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় গোষ্টিগত তত্ব 'দ্বিজাতি তত্ব' হাজির করেন।অর্থাৎ হিন্দু এবং মসুলমানদের জন্য আলাদা আলাদা রাষ্ট্রের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।বাঙ্গালী নেতাদের প্রবল বাধার মুখেও কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তিনি সফল হন।ফলত: প্রথম জাতীয়তাবাদী ধারাকে কূটকৌশলে পরাজিত করে তিনি দুইহাজার মাইলের ব্যবধানে দুই প্রান্তে দুই ভুখন্ড নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রটির সৃষ্ট্রি করতে সক্ষম হন। যদিও আপাত:দৃষ্টিতে পাকিস্তান স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় কিন্তু জাতিগত দ্বন্ধের অবসান তিনি করতে পারেননি।পাকিস্তানের তেইশ বছর শাষনকালে ধর্মের বিষবাস্প ছড়িয়েও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি।ফলে পাকিস্তানকে শাষন করার জন্য সর্বসম্মত কোন সংবিধানও রচিত হয়নি।অপরপক্ষে ভঙ্গুর ধর্মীয় চেতনার বিরুদ্ধে উদার বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার অঙ্গিকারের ভিত্তিতে অত্রভুখন্ডে গনজাগরনের সৃষ্টি করতে সক্ষম হন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।কালক্রমে বাঙ্গালী জাতিয়তা বোধের চেতনাকে মুক্তিযুদ্ধে রুপান্তরীত করে ১৯৭১ ইং সালের ১৬ই ডিসেম্বর চুড়ান্তভাবে দ্বিতীয়ধারাকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি জাতির জনক হিসেবে আর্বিভুত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের আলোকে ১৯৭২ ইং সালেই মাত্র একবছরের মধ্যে বিদ্যমান জাতীয় সংসদের সর্বসম্মতভাবে অনুমোদনে যুগশ্রেষ্ঠ লিখিত সংবিধান বাঙ্গালী জাতিকে উপহার দিতে সক্ষম হন। সংবিধান রচনার পরের দিন থেকে দ্বিতীয় ধারাটি চরম পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ঘাপটি মেরে সমাজের সবার অগোচরে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। ১৯৭৫ ইং সালে জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে ইতিহাসের জগন্যতম প্রতিশোধ গ্রহন করতে সক্ষম হয়। হত্যাকারিরা প্রথমোক্ত ধারাকে ইতিহাসের অতল গব্বরে নিক্ষিপ্ত করে।প্রগতির চাকাকে পিছনে নেয়া শুরু করে।হত্যা, গুপ্তহত্যা, বিনাবিচারে হত্যার সংস্কৃতি চালু করে। এবং কি পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান 'জেলখানা'-সেখানেও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে 'রক্তের হুলিখেলায়' মধ্যযুগীয় ভাবধারাকেও হার মানাতে সক্ষম হয়। দীর্ঘ একুশ বছর জাতির জনকের জৈষ্ঠকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রামের কঠিন ও সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমনের পর আবারও প্রথমোক্ত ধারাটি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়।তাঁর পরবর্তি ইতিহাস সকলেরই জানা।১৯৭৫-২০০৮ইং সালের ইতিহাস- "ষড়যন্ত্রের ইতিহাস, হত্যার ইতিহাস, জাতির জনকের পরিবারকে নিচ্ছিন্ন করে দেয়ার একাধিক ঘটনাক্রমের ইতিহাস।"জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে দিয়ে যে হত্যার উদ্ভোধন করা হয়েছিল, সেই ধারায় আজও কোন পরিবর্তন হয়নি।সর্বশেষ শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র জাতির জনকের দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রে এসে ঠেকেছে। সকল বাধা বিপত্তি পায়েদলে জাতির জনকের কন্যা ২০০৮ইং সালে কমবেশি শত্রুমিত্র চিহ্নিতকরন সাপেক্ষে, বৃহৎ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষে, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির সুচনার উদ্দেশ্যে, সুদুর প্রসারী চিন্তাচেতনার আলোকে, মহাজোট গঠন করেন।জাতির বৃহৎ স্বার্থের বিবেচনায় তিনি এরশাদের মত স্বৈরাচারকেও মহাজোটের অন্তভুক্ত করেন। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বিচক্ষনতার তৎক্ষনাৎ সুফল জাতি পেয়েছে। ২০০৮ ইং সালের অবাধ, শান্তিপুর্ন সাধারন নির্বাচনে বিশাল জয় নিয়ে মহাজোট জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়।তিনি দ্বিতীয় ধারাকে রাজনৈতিক ভাবে এবং দেশে বিদেশে গ্রহনযোগ্য সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের রায়ে চরমভাবে পরাজিত করতে সক্ষম হন। এমনতর পরাজয়ের গ্লানী তাঁদের উপহার দেন-দীর্ঘ সাত বছরেও আর সোজা হয়ে দ্বিতীয় ধারাটি রাজপথে দাঁড়াতে পারেনি। তাঁর দুরদর্শি নেতৃত্বে, সুদুরপ্রসারি চিন্তাচেতনার আলোকে দেশব্যাপি অঘোষিত জাতিয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে।বিশাল এক উদ্দেশ্য আদর্শ্যকে সামনে নিয়ে মহাজোট গঠন করেছিলেন তিনি।বিগত সাত বছরে তাঁর সরকারের শাষনামলে জনগনের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জনজীবনের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠার চাওয়া পাওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।এই কারনে তাঁর সরকারকে বহুবীদ জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে সবেমাত্র স্থীরতার মধ্যে জাতিকে নিয়ে এসেছেন।তাঁর নীজের জীবন এবং একমাত্র পুত্রের জীবনের হুমকিকেও তোয়াক্কা না করে দৃডপদক্ষেপেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। এই কথাটি অনস্বিকায্য যে, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে নিস্তেজ ও নির্মুল করা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন করা আদৌ সম্ভব নহে। তাঁর সরকার ক্ষমতা গ্রহন করেই সেই পদক্ষেপটি প্রথমেই নিয়েছেন। আপাত: দৃষ্টে মনে হচ্ছে, জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে তিনটি শ্রেনীতে ভাগ করেছেন। প্রথমত: মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক, আদর্শগত, সাংগঠনিক,সসস্ত্র বিরুধীতাকারি চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাক্তি ও সংগঠনকে প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়ত: তাঁদের পৃষ্টপোষনকারী, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা, দেশী বিদেশী ব্যাক্তি ও সংগঠন। যাঁরা মুখোশের আড়ালে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন। এই শ্রেনীর ব্যাক্তি ও গোষ্টি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে এবং বাহিরে বিচরনরত: রয়েছে। তাঁদেরকে তিনি রাজনৈতিক দ্বিতীয় প্রধান শত্রু হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন।বিভিন্ন কলাকৌশলে সময়ক্ষেপন করে,প্রধান শত্রু নিধনের পর, তাঁদের সঙ্গে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদেরকে রাজনৈতিক ভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে পরাজিত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে। তৃতীয়ত: শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে অবস্থান-মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি কোন অবস্থায় নহে।অতীতে ক্ষতির কারন হলেও বর্তমান এবং ভবিষ্যতে ক্ষতির কোন লক্ষন নেই। এইরুপ দল ও সংগঠন, ব্যক্তি ও গোষ্টি সমুহকে মিত্র হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে-প্রথম ও দ্বিতীয় শক্তির সঙ্গে লড়াই করার উদ্দেশ্যে তাঁদেরকে বুকে টেনে নিয়েছেন। প্রথমোক্তকে নিস্তেজ করার স্বার্থে তৃতীয়পক্ষকে ভাগে এনে দ্বিতীয় পক্ষকে রাজনৈতিক ভাবে পরাস্ত করার নীতি কৌশল নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। জাতির জনকের কন্যা মৃত্যু ঝুকি মাথায় নিয়ে এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে জিম্মি করে প্রথম পক্ষের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি তাঁর অসীম সাহষ, দৃড মনোবল, অপুরন্ত সাহষিকতা, বিচক্ষনতা, ধৈয্যের পরাকাষ্টা প্রদর্শন করে তাঁদের পরাস্ত করে নিস্তেজ করতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের মদদ দাতারাও আগের মত মানবতা বিরুধী বিচার নিয়ে তেমন সোচচার নেই। সৌদী আরবের মত তাঁদের বৃহৎ মিত্র শক্তিও শেষ পয্যন্ত পৃষ্ট প্রদর্শন করে যুদ্ধপরাধের বিচারকে নৈতিক সমর্থন দিতে বাধ্য হয়েছেন। ব্যপারটি আদৌ সহজ নয়, ছিলনা কখনও-জাতির জনকের কন্যা বিধায় সম্ভব হয়েছে। জাতির জনকের শেখ হাসিনার সরকার লড়াই রত: অবস্থাও তাঁদের চক্রান্ত, হত্যা, গুপ্ত হত্যা, টার্গেট হত্যা বন্ধ হয়নি।রাজনৈতিক এবং আইনীভাবে পরাস্ত হলেও তাঁদের নাশকতার মাধ্যমে জনজীবনে অস্বস্তি ও ভীতিকর পরিস্থীতি সৃষ্টির চেষ্টা থেমে যায়নি।আমি এইরুপ অতীতের কিছু লোমহর্ষক ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিষয় আপনাদের স্মরনে নিয়ে আসতে চাই। অষ্টেলিয়ার ক্রিকেট টীম যখন সফর বাতিল করে তখন কল্পনাও করা যায় নাই, ঢাকা ও রংপুরে দুই জন বিদেশী গুপ্ত ঘাতকের হাতে খুন হবেন। বিদেশি খুন সামলাতে না সামলাতেই পাবনায় খ্রিস্টান ধর্ম যাজককে খুন করার প্রচেষ্টা। এরই মধ্যে হঠাৎই খুন হয়ে গেলেন পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান হালে পীর খিজির খান। এ সবের মধ্যেই ঈদোৎসব কাটে, যথাযথ মর্য্যদার সাথে- উৎসব আনন্দের মধ্য দিয়ে। কিছুদিন পরই দুর্গা পুজা নিয়ে চলে নানা জল্পনা কল্পনা। এখানে সেখানে কিছু মূর্তি ভাঙ্গা হলেও উৎসব মুলত: আনন্দেই কাটে।এই সময়ে হঠাৎ তাজিয়া মিছিলে বোমা বিস্ফোরিত হয়। পবিত্র মহরমের শোক মিছিলে হামলায় সবাইকে হতচকিত করে দেয়। একটু দম ফেলতে না ফেলতেই ঘটে একই দিনে প্রায় একই সময়ে দুই নৃশংস ও হৃদয় বিদারক হামলার ঘটনা। মৃত্যু হয় তরুণ প্রকাশক দীপনের আর অপর হামলার এক প্রকাশক ও দুই লেখক প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত হন। এই সমস্ত হত্যা, গুপ্ত হত্যা চলাকালিন সময়ে দলের অভ্যন্তর থেকে উদ্ভব হয় ন্যাক্কারজনক দুস্কর্মের হোতাদের।একদিকে শত্রু নির্মুল অন্য দিকে উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখা-বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে সরকার। ছাত্র লীগ ও যুবলীগের নামধারীদের অপকর্ম- দুষ্কর্ম হোতাদের কারনে। এই ক্ষেত্রেও সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি-কৌশল কার্যকর করে এবং মোহাম্মদ পুর সহ প্রভৃতি স্থানে ক্রস ফায়ারের ঘটনার মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হন। স্বস্তি ও তৃপ্তির ভাব দেখা দেয় মহাজোট সরকারে। জনগনও ছিল নিজ নিজ জীবন ও জীবিকা নিয়ে শান্তি ও স্বস্তির মধ্যে।মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি কবে কার্যকর হবে এই প্রতীক্ষায় ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের জনগণ। হঠাৎ করেই দৃশ্যপট গেল পাল্টে।তরুন প্রজম্ম কতৃক দেশে বিদেশে আলোচিত গণজাগরণ মঞ্চের অর্ধবেলা হরতাল আহব্বানকে ঘিরে।তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে বলে , ‘সরকারের ভেতর থেকে পৃষ্টপোষকতা না থাকলে একের পর এক হত্যাকান্ড’ সম্ভব হতো না। দীপন হত্যাকান্ডের আগে-পরে ‘পুলিশ নির্লিপ্ত’ ছিল। দোষীদের গ্রেপ্তার করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বিধায় হরতালের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছে মঞ্চ। এই যেন বুকে থেকে পিঠে চুরিকাঘাত। অন্যদিকে চরমতমভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও সংগঠন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। প্রকাশকরা নেমেছেন দোকান বন্ধ করে রাজপথের আন্দোলনে। বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি , আইন শালিশী কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন যার যার অবস্থান থেকে ব্যক্ত করছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। প্রকাশক হত্যায় নিউইয়র্ক, লন্ডন প্রভৃতি স্থানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মুক্তচিন্তার পক্ষে এবং ‘সরকারের ব্যর্থতায়’ গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছিল।সরকারের ভিতরে বাইরে অস্থিরতা মাঝে মধ্যেই প্রকাশ্য রুপ ধারন করছিল। "এমনতর সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড়ভাই শেখ সেলিমের কন্ঠে ভেসে উঠে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি জাসদের ভুমিকা নিয়ে ক্ষুব্দ কন্ঠস্বর।" হঠাৎ বজ্রপাত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মাথার উপর। শুরু হল শেখ সেলিমের উদ্দেশ্য নিয়ে নানামুখি আলোচনা ও সমালোচনা। শেখ সেলিমের কন্ঠের সাথে তাল মিলাল আরও কতক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা। আওয়ামী লীগের তৃনমুল থেকে দাবী উঠল শেখ সেলিমের বিরুদ্ধে মহাজোট ভাঙ্গার অপচেষ্টায় তাঁকে বহি:স্কারের। সুযোগ বুঝে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে অবস্থানরত: খালেদা হঠাৎ সুধী সমাবেশ ডেকে বলে বসেন, '‘হাসিনা ও মঈন ইউ আহমদের’ ,২০০৯ সালের বিডিআর হত্যার অভিযোগে বিচার করা হবে।" বক্তব্যটি দেশব্যাপি আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিনত হল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘লেডি হিটলার’ এবং হত্যার ঘটনার জন্য দায়ী করে বলেন, ‘জঙ্গিদের কথা বলে শেখ হাসিনা বিদেশিদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।খালেদার বক্তৃতার সুর থেকে এটা সুস্পষ্ট অনুমান করা গিয়েছিল-দেশের মানুষ নয়, বিদেশীদের বোঝানোই হচ্ছে বিএনপি-জামাত জোট নেত্রীর আসল উদ্দেশ্য। খালেদা জীয়ার বক্ত্যব্যের পরেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির মধ্যে সম্বিত ফিরে এল। সহষা আন্দোলন স্তিমিত হল, সমালোচনার বর্শার আঘাত কমতে লাগলো, সরকারেও স্থীরতা এল।শেখ সেলিমের জাসদ বিতর্কও মাটিচাপা পড়ে গেল। বঙ্গরত্ম শেখ হাসিনা যখন প্রথম শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় শত্রুকে পরাস্ত করার জন্য তাঁদের একান্ত মিত্র দেশ সফর করে মারানাস্ত্র মজুদে ব্যাস্ত, তখনি ঘটে গেল কয়েকটি অনিভিপ্রেত ঘটনা। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তর থেকে প্রথমেই তনু হত্যা নিয়ে পানি ঘোলা করে দেয়ার চেষ্টা হল।একের পর এক জঙ্গি হামলায় পুরোহীত সহ বেশ কিছু মানুষ খুন হয়ে গেল।চট্রগ্রামে ঘটে গেল লোম হর্ষক ঘটনা। পুলিশের ডি আই জির স্ত্রীকে টার্গেট কিলিং এ হত্যা করা হল।মাদারিপুরে এক কলেজ শিক্ষককে চাপাতির কোপে আহত করে পালায়নরত: অবস্থায় জনতার হাতে ধৃত হল এক শিবির নেতা। এমনিতর সময় আওয়ামীলীগের গুটিকতক নেতার হাতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের আমলা লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থীতির মুখে ঠেলে দেয়।।সন্ত্রাসী মাস্তান নেতাদের অপকর্মের কারনে ইউপি নির্বাচন দেশ বিদেশে প্রশ্নের সম্মুখ্যিন হল। জাতির জনকের কন্যার ইউপি নির্বাচন দলীয় মনোনয়নে ও প্রতিকে করার সুদুরপ্রসারি চিন্তাচেতনা এবং মহৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে বিলীন করে ব্যাক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দেয় কতিপয় দুবৃত্ত নেতা। তাঁরা সরকারের নির্বাচন সুষ্ঠ ও অবাধ করার সদিচ্ছাকে জলাঞ্জলী দিয়ে বিগত দিনের কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত অর্জন সমুহের উপর কলংকের কালিমালেপন করে দিল। এমন সময়ে সরকার জঙ্গি হামলা নির্মুলে যখন যৌথ বাহিনীর সাঁড়াষি অভিযান চালিয়ে জনজীবনে স্বস্তি আনায়নে ব্যাস্ত, ঠিক তখনি আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় শির্ষস্থানীয় নেতার মুখ থেকে পুনরায় জাসদ বিতর্কের অবতারনা হল। উক্ত বিতর্ক ক্ষনিকের মধ্যে দেশব্যাপি চড়িয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড়ের গতিকে টর্নেডোতে রুপান্তরীত করেছে।মহুর্তে বিএনপি নেত্রীও সৈয়দ আশ্রাফের মন্তব্যে ঘি ঢালার উদ্দেশ্যে বক্তৃতা বিবৃতির ঝড় তোলার চেষ্টা অব্যাহত রাখল। জাতির জনকের কন্যা সবেমাত্র প্রধান শক্তির সাথে লড়াই করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে দ্বিতীয় শক্তির বিরুদ্ধে রণসাজে সাজার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ঠিক তখনি উপরি উক্ত অনভিপ্রেত ঘটনাবলী কিঞ্চিত হলেও সরকারকে দুর্বল করবে সন্দেহ নেই। পয্যবেক্ষনে দেখা যায়, জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বিদেশের কিছু পরিবার ও ব্যাক্তির প্রতি মানষিকভাবে দুর্বল।যে সমস্ত ব্যাক্তিও পরিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে জাতির জনক হয়ে আত্মপ্রকাশ করার পিছনে অসামান্য অবদান রেখেছেন, সেই সমস্ত পরিবার ও ব্যাক্তির ছেলেমেয়েদের প্রতি উদার মনোভাব পোষন করেন।জগন্যতম অপরাধের কারনেও সহষা ক্ষিপ্ত হননা তিনি, ব্যবস্থা গ্রহন করতে কিছুটা সময়ক্ষেপন করেন।যেমন জাতীয় চার নেতার পরিবার,নারায়ন গঞ্জের ওসমানী পরিবার, চট্রগ্রামের হান্নান সাহেবের পরিবার, টাঙ্গাইলের সিদ্দিকী পরিবার সহ আরো কতেক পরিবার। শেখ হাসিনার এই মানষিক দুর্বলতাকে পুঁজি করে ঐ সমস্ত পরিবারের সদস্যগন সময়ে সময়ে এমনসব কান্ডজ্ঞানহীন ঘটনা ঘটান -শেখ হাসিনাকে তো বটে সরকারকেও বিব্রত, ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে দেখা যায়। ইহা কতখানি নীতি আদর্শের অভ্যন্তরে পড়ে জাতির চিন্তা করার প্রয়োজন আছ বৈকি। মুলত: সরকার যখন আইনের আওতার মধ্যে থেকে কঠোরভাবে সংবিধান অনুযায়ী বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন তখনই উল্লিখিত সব তৎপরতা ও বক্তব্যের ভেতর দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হন ষড়যন্ত্রকারীরা।তাঁরা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরিয়ে নিয়ে ডান-প্রতিক্রিয়াশীলমুখী করার প্রচেষ্টা চালান। জাতি হিসাবে আমাদের পরিত্যক্ত, আমাদের নিকট যুদ্ধে পরাজিত সেই পাকিস্তানমুখী করার চক্রান্ত,বাঙ্গালী জাতির জন্য লজ্জা ছাড়া আর কি হতে পারে? যে বীজ রোপন করেছিলেন কায়েদে আযম মহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৭ইং সালের দ্বিজাতি তত্বের মধ্য দিয়ে,সেই বীজকেই তাঁরা পরিচর্য্যা করতে চান।৭১ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাঁদের পরাজিত করে সেই বীজের মুলৎপাটন করেছিল বাঙালী জাতি। পাকিস্তানের উচ্ছিষ্ট ভোগিরা স্বাধীনতার পর বাহাত্তরের সংবিধান চালু হলে আবার সংঘঠিত হয়। তাঁরা বাঙ্গালী জাতির মুলচেতনা জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতার শক্তিকে এবার মুল টার্গেটে পরিনত করে। প্রথমেই তাঁরা মিথ্যা অপবাদ,ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পঁচাত্তরে সামরিক বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সপরিবারে বাঙ্গালী চেতনার ধারক ও বাহক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে।তার পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। তাঁর পরেই পবিত্র সংবিধানকে সামরিক ফরমানে রাতারাতি সংশোধন করে। তাঁরা পাকিস্তানের আদলে হুকুমের গণতন্ত্র চালু করে।মুলত: গণতন্ত্রের মর্মমূল উৎপাটন শুরু করে।দেশকে মিনি পাকিস্তানে রুপান্তর করে-যাহা জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে আমাদের জন্য অত্যান্ত ঘৃনার এবং মায্যদাহানীকর। বিশ্বব্যাপী উগ্রজঙ্গিবাদের উত্থান হলে এটা সর্বোতেভাবে কাজে লাগিয়ে দেশকে আরো দক্ষিণে ঠেলে দিতে প্রচেষ্টা চালায় তাঁরা সর্বতোভাবে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়--আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-০১ আমলে গোপন জঙ্গি গ্রুপগুলি বিএনপি-জামাত আমলে প্রকাশ্য জেএমজেবি, হরকাতুল জিহাদ রুপে আত্মপ্রকাশ। বর্তমান দিনগুলোতে হিজবুত তাহরীর, আল্লাহর দল, আনসার উল্লাহ বাংলা টীম প্রভৃতি হচ্ছে এক ও অভিন্ন ধারাবাহিকতার বহিঃপ্রকাশ। আওয়ামী লীগের সময় অপ্রকাশ্য ও নিষিদ্ধ- বিএনপি-জামাত আমলে প্রকাশ্য অস্ত্র নিয়ে রাজপথে মিছিল। আওয়ামী লীগের সময়ে হত্যা, গুপ্তহত্যা পরিচালনা করে, আওয়ামী লীগের শাষনকে অকেজো করা। বহি:শত্রুর আক্রমনের পথ সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা। হত্যা-গুপ্তহত্যার মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শন পুর্বক প্রথমোক্ত ধারাকে ঘরকুনো করে রাখার অপপ্রয়াস। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের অন্ধকার যুগের সুচনা করা। উপসংহারে বলতে চাই,শেখ সেলিম এবং সৈয়দ আশ্রাফের মত জাতীয় নেতারা মহাজোট গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত নন ইহা বিশ্বাস করা কঠিন ব্যাপার।জনাব ইনু '৭৫ পরবর্তিতে তরুন নেতা ছিলেন। দলের কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশ গ্রহন ছিল অবশ্যই।তবে জাসদের মুল কান্ডারি ছিলেন না, অবশ্যই বলা যায়।মুল চক্রান্তের হোতা মেজর জলিল,আসম রব, শাহাজান সিরাজ (দাদা ভাই),কর্নেল তাহের সহ আরো কতিপয় নেতা জাসদ রাজনীতির মুল চালিকা শক্তি হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন।তাঁদের মধ্যে আসম আব্দুর রব ১৯৯৬ইং--২০০১ ইং সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।তখন এই সমস্ত বিতর্ক উত্থাপন না করে, এখন জাতীয় কর্তব্য সাধনের পথে দেশরত্ম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকদুর অগ্রসর হওয়ার পর, দলের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় নেতার মুখ থেকে মহাজোটের ক্ষতিকারক উক্তি প্রকাশের কি কারন থাকতে পারে এই মহুর্তে বোধগম্য হচ্ছেনা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি মনেপ্রানে আশা করে, জাতীয় নেতৃবৃন্দ তাঁদের কথাবার্তায়,আচার আচরনে আরো অনেক বেশী সচেতন হবে।মুল উদ্দেশ্য সাধনের আগমুহুর্ত পয্যন্ত অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পুর্ণাঙ্গ বিনির্মান পয্যন্ত কথা ও কাজে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। ইহাই জাতির আখাংকা। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু।'

ষড়যন্ত্রকারি অশুভ শক্তি প্রতিনিয়ত আন্দোলন সংগ্রামের নিয়মাতান্ত্রিক পথ পরিহার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য ঘাপটি মেরে বসে থাকে।অবশ্য তাঁদেত্র উৎপত্তিও ষড়যন্ত্রের গর্ভ থেকেই হয়েছিল।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা