সাম্প্রতিক পৌরনির্বাচন,বিএনপি-আওয়ামী লীগের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ----- ========================= পুরাতন বছরের ক্রান্তিকাল নতুন বছরের শুরুতে মহা বিজয়ের স্বাধ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৬ ইং সালের প্রথম কায্য দিবস শুরু করবে ইনশাল্লাহ। জাতির জনকের কন্যার অক্লান্ত পরিশ্রম, প্রশ্নাতীত দেশপ্রেম,ইস্পাত কঠিন দৃডতা,দুসাহষী কর্মযজ্ঞ এনে দিয়েছে আস্থাহীন স্থানীয় নেতাদের বিজয়ের গৌরব। আমাদের স্থানীয় নেতাদের অধিকাংশের ধারনায় ছিলনা বর্তমান আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা '৭৫ পরবর্তি যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক ভাল অবস্থানে রয়েছে।আস্থার সংকটের কারনে নির্বাচনে অনেকেই জোর খাটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে দেশরত্ম শেখ হাসিনার শাষনের গায়ে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছিলেন।নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত আইন শৃংখলা বাহিনী কঠোর হস্তে তাঁদের কায্যক্রম নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হয়েছেন।নির্বাচন কমিশন,আইনশৃংখলা বাহিনী সবাই নিরপেক্ষ ভুমিকা রাখার আপ্রান চেষ্টা করে সফল নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ায় দেশবাসির সুনাম কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন।তবে সত্যিকার অর্থে স্থানীয় সম্মানীত নেতৃবৃন্দ নীজেদের কর্মকান্ড এবং সত্যিকার জনসেবার উপর আস্থা রাখতে পারলে নির্বাচন আরো সুন্দর নির্ভেজাল হতে পারতো। দ:এশিয়ার অন্য যে কোন দেশের স্থানীয় নির্বাচন থেকে বাংলাদেশের স্থানীয় নির্বাচন অবাধ,সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয়েছে নির্দ্ধিদায় বলা যায়।মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভাই ও এমনটি মন্তব্য করেছেন।বাংলাদেশের অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় এই নির্বাচনটি নিরপেক্ষ, অবাধ সুষ্ঠ।যারা আমার এই মতের বিরুধীতা করার ইচ্ছা পোষন করবেন, তাঁদেরকে আগেই অনুরুধ জানাব-- আয়নায় নীজের চেহারাটুকু দেখে আসেন,তখনকার সময়ের পত্রিকার পাতাটা আবার উলটে পালটে দেখে তাঁরপর মন্তব্য করবেন। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, সকল সময়ের সকল নির্বাচনে,সকল গনতান্ত্রিক দেশেই প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর সমর্থন তুলনা মুলক অতি কম হলে, শক্তিশালি জনসমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকেরা কেন্দ্রে কিছুটা প্রভাব বিস্তার করবেই।ইহা শুধু বাংলাদেশে নয়,বিশ্বের দেশে দেশে একই চিত্র দেখা যায়। যারা নীতিবাক্য ব্যয় করে সারাক্ষন টি,ভি পর্দায় ভোটের চুলচেরা বিশ্লেষন করছেন, তাঁদের কে সবিনয় অনুরুধ করতে চাই, নীজ দেশের প্রথম দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচনের সমালোচনা করার আগে শত বছরের পুরাতন গনতন্ত্রচর্চাকারি প্রতিবেশি দেশের স্থানীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান তুলে ধরুন আগে, তার পর বাংলাদেশের স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলুন, অভিমত দিন,সমালোচনা করুন আপর্ত্তি থাকবেনা। আমাদের স্মরনে রাখা প্রয়োজন,স্বাধীনতার ৪৪বছর পরেও যে দেশটির রাজনৈতিক দল গুলির নেতৃত্ব নির্বাচনে কর্মিদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হয়না,দলিয় নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটের বাধ্যবাধকতার প্রচলন করা যায়নি,সে দেশের স্থানীয় নির্বাচন এর চেয়ে ভাল আর কি হতে পারে,কিভাবে হতে পারে,আমার সাধারন জ্ঞানে আসেনা। অকারনে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা আমাদের দেশের সুশীলদের অভ্যেসে পরিনত হয়ে গেছে,এই অভ্যেসের গোলামী থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।যে সমস্ত কেন্দ্রে গোলযোগ হয়েছে,সে সমস্ত কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করেছেন নির্বাচন কমিশন,আইন শৃংখলা বাহিনীর হাত থেকে সরকারি দলের প্রার্থী ও অপদস্ত হওয়া থেকে রক্ষা পায়নি,কবে কখন,কোন নির্বাচনে এমনতর ভুমিকা রাখতে পেরেছিল নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মিরা?জেলের অভ্যন্তরে থেকে বিএনপি প্রার্থী জিতেছেন, নিরপেক্ষ সুষ্ঠ,অবাধ নির্বাচনের অন্তরীকতা না থাকলে সরকারের এইরুপ কি আদৌ সম্ভব হত? আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি, স্থানীয় নেতাদের জনগনের মানষিকতা পরিবর্তনের উপর আস্থা বিশ্বাসের ঘাটতি থাকার কারনে কিছু বিশৃংখল অনাকাংখিত দু:খজনক ঘটনা ঘটেছে।এই সমস্ত ঘটনার জন্য কোন অবস্থায় সরকারকে দোষ দেয়া যায়না। আমাদের রাজনৈতিক দল সমুহের নেতা কর্মিদের ও যথেষ্ট দোষ রয়েছে।সর্বাজ্ঞে আমি বলব,আদর্শিক কর্মির অভাবে এই রুপ ঘটনা সমুহের সম্মুখীন আমরা বার বার হচ্ছি। দলের প্রতি আনুগত্যহীনতা,অল্পতে নার্ভাস অনুভব করা,দৃড মনোবলের অভাব নেতাকর্মিদের মাঝে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।প্রত্যেক রাজনৈতিক দলে প্রথমে গনতন্ত্রের চর্চার অভ্যেস করতে হবে,দলে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের প্রথাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।আদর্শিক কর্মিবাহিনী সৃষ্টির প্রতি মনোযোগী হতে হবে।ভালছাত্রদের রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হবে,মেধা সম্পন্ন নেতার উত্থান কন্টকমুক্ত করতে হবে,তবেইতো গনতন্ত্রের স্বাধ উপভোগ করা যাবে। তাঁর আগে অন্য সমস্ত দেশের অনুসরনে আমাদের দেশের নির্বাচন ও প্রশ্নবিদ্ধ হতেই থাকবে। সরকারের একশভাগ আন্তরীকতা থাকলেও শতভাগ নির্ভেজাল নির্বাচন উপহার দেয়া সম্ভব হবেনা,আমি দৃডভাবেই বিশ্বাস করি। প্রত্যেক দল এই সমস্যা সমুহ দূর না করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকারের দোষ দিয়ে লাভ হবেনা।নীজেরা যাহাতে অভ্যস্থ নই,তাহাতে সরকার কিভাবে অভ্যস্ত হবে আমার বোধগম্যতায় আসেনা।সরকার কি আলাদা কোন জগতের প্রানী?? জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখহাসিনা

বহদলীয় গনতান্ত্রিক শাষন ব্যাবস্থায়  দলীয় নেতা কর্মীদের আদর্শিক শিক্ষায় গড়ে তুলতে না পারলে দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনায় গাঁছাড়া ভাব পরিলক্ষিত হবেই।ফলশ্রুতিতে ভোট আরাম্ভ হওয়ার দুই ঘন্টার মধ্যেই নেতা কর্মিগন কেন্দ্র ছেড়ে যার যার কর্মস্থলে বা বাড়ীতে এসে ঘুমিয়ে গেছেন।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন