নব্য আইএস আই কে মোকাবেলায় নতুন প্রজর্মকে উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রশিক্ষনের বিকল্প নেই--- ----------------------------------------------- ----------------------------------------------- এই কয়দিনের ধারাবাহিক আলোচনায় আমরা একটি সত্যে উপনিত হতে পারি,সত্যটি হচ্ছে '৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে অর্জিত এই দেশটা যে স্বপ্নের বাস্তবায়নের আখাংকায় জাতির জনকের ইস্পাত কঠিন দৃডচেতা নেতৃত্বে স্বাধীন করেছিলেন বাংলাদেশের আপামর জনগন--,সেই স্বাধীনতার স্বাদ প্রাপ্তির আগেই বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা করে ৭১এর আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয় পরাজিত শত্রুরা। মুক্তিযুদ্ধের মুল চেতনার রাজনৈতিক ধারা, অসামপ্রদায়িকতা, গণতন্ত্র ও শোষণহীন, ধর্ম নিরপেক্ষ সমাজ বিনির্মান। দেশটিকে তার জন্মের অঙ্গীকারে দৃঢ়তার সঙ্গে স্থাপন করতে চায় বর্তমান সরকার। বিপরীত একটি পক্ষ স্পষ্টতই পাকিস্তানপন্থি, সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী ধারায় অর্থাৎ পাকিস্তানের ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। অসাম্প্রদায়িক,প্রগতিশীল,বিজ্ঞান সম্মত আধুনিক ধর্ম নিরপেক্ষ ধারার প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান।অন্য দিকে কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভুলুন্ঠিত করে সাম্প্রদায়িক মধ্যযুগীয় রাষ্ট্র ব্যাবস্থা ফিরিয়ে আনার নেতৃত্বের ধারক বাহকের ভুমিকায় উলঙ্গভাবে অবতিন্ন হয়েছিলেন জাতির জনকের খুনি মরহুম জিয়াউর রহমান।তিনি স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুদের রাজনীতিতে পুনপ্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমতা গ্রহন করেই তার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেন।অন্য অর্থে বলা যায়, মরহুম জিয়া দেশে পাকিস্তানপন্থি রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তিনি যে কেবল গোলাম আজমকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন তাই নয়, জামায়াত, মুসলিম লীগসহ অন্য সব পাকিস্তানপন্থি রাজনৈতিক দলকে তিনি পুনর্বাসিত করেন, তাদের ক্ষমতার অংশীদার করেন এবং সেই পরাজিত শত্রুদেরকেই রাজনীতিতে মহীরূহে পরিণত হতে সহায়তা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতির সেই পতাকাটিকে দৃঢ়ভাবে বহন করে চলেছেন অদম্য স্পৃহায়। এমনকি তার পুত্র তারেক জিয়া লন্ডনে বসে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা "আইএসআই-"এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করার মানষে আন্তজাতিক জঙ্গি সংগঠন সমুহের সাথে সম্পর্ক করার চেষ্টা নিয়ন্তর করে যাচ্ছেন কোন কোন ক্ষেত্রে সফলও হচ্ছেন। শুধু তাই নয় বিশ্বখ্যাত সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহীমের সাথেও কয়েক দফায় বৈঠকে মিলিত হয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের জাল বিস্তারে প্ররোচিত করে যাচ্ছেন।এই গুরুত্বপুর্ন সংবাদটি গোয়েন্দাদের অবহিত করেছেন তাঁদের সরকারের সাবেক স্ব -রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবর। বৈঠকের সচিত্র প্রতিবেদনও পত্রিকা সমুহে ছাপানো হয়েছে।তারই ধারাবাহিকতায় বিপুল পরিমান ডলার খরছ করে আন্তজাতিক ভাবে খ্যাতি সম্পন্ন লবিষ্ট ফার্ম নিয়োগ দেয়ার খবর বিশ্বখ্যাত পত্রিকা সমুহে প্রমান সহ ছাপানো হয়েছে।এই ঘরানার রাজনীতির অতীতটাও এই ধারার। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম জিয়াউর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকে হত্যা করাসহ স্বাধীনতার পক্ষের জাসদ ও তার সহযোগী সব রাজনৈতিক শক্তিকে নির্মুল করার মহাপরিকল্পনা ঠান্ডা মাথায় বাস্তবায়ন করে ক্ষমতা নিষ্কন্টক করেছিলেন। বেগম জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে একই ছকে কাজ করতে ২১শে আগষ্ট সহ আওয়ামী লীগ ও তাঁর অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের বহু নেতা কর্মিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় হত্যা করেছিলেন।তাঁদের বিপরীত ধারার প্রধাননেত্রী জাতির জনকের কন্যা বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্যই ২১শে আগষ্ট কলংকময় দিনের সৃষ্টি করা হয়েছিল।বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৮ ইং সালে বিপুল জয় নিয়ে মহাজোট ক্ষমতায় আসে।বিভাজনের রেখামুছে দিতে, জাতিকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে উপায়ন্তর না দেখে একাত্তরের ইস্যুটিকেই রাজনীতির প্রধান ইস্যু হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করেই প্রথমে জাতিকে বিভক্ত করার জন্য স্বৈরাচারদের প্রনিত সংবিধানের ধারা উপধারা সমুহ বাতিল, সকল কালাকানুন এবং অগণতান্ত্রিক বিধানগুলোর পরিবর্তন করে ৭২ এর মুল চেতনায় দেশকে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া সফলতার সংগে সমাপ্ত করেন। শুধু তাই নয় জাতিকে দ্বিখন্ডিত করার মুল কারিগর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সফলতার সাথে দন্ডকায্যকর করে চলেছেন। বস্তুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অনুষ্ঠান দুটি রাজনৈতিক ধারার বিভাজনকে ঘুমন্ত অবস্থা থেকে জাগ্রত করেছে এবং বিভক্তি যে তাঁদের সৃষ্ট তা আরও স্পষ্ট করেছে। বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়াসহ একটি পক্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার দাবি করে সফল হতে না পেরে সহিংসতার আশ্রয় গ্রহন করে জাতিকে অন্ধকারের দিকে টেনে নেয়ার মানষে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন । তিনি হুমকি দিয়ে নিলর্জ্জভাবে বলেছেন যে, মুক্তিযোদ্ধারাও গণহত্যা করেছে,,তিনি ক্ষমতায় এসে তাঁদের বিচার করবেন। তাঁরা সবসময়ে বলতেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাঁর অসারতাই প্রমানীত হল।আওয়ামী লীগ সহ এই ধারার মানুষ সব সময়ে বলে আসছিলেন, বহু মুক্তিযোদ্ধাই পাকিস্তানের দালাল আবার বহু রাজাকার যে মুক্তিযোদ্ধাদের চাইতে কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশী অবদান রেখেছেন তারই সত্যতা প্রমানীত হল। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কারনে খালেদা জিয়ার মত অশিক্ষিত রন্ধনশালার বউ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছিলেন,অঢেল লুটের টাকায় ভাঙ্গা স্যুটকেস ভর্তি করতে পেরেছিলেন,ছেঁড়া গেঞ্জীর স্থলে হাল ফ্যাসনের ডান্ডিডাইং এর মালিক হতে পেরেছিলেন, রাজধানী ঢাকায় একাধিক বিশাল বিশাল সরকারি বাড়ির মালিকানা নিতে পেরেছিলেন।শুধু তাই নয় কোকো নামের ১২ টি জাহাজ এবং ক্যারো নামের মদের কারখানার মালিক ও জিয়া পরিবার হতে পেরেছিলেন।সেই মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের কাঠগড়ায় উঠাবেন বলে তিনি তাঁর পাকি প্রেমের পুরাতন ইতিহাসই বাংলার জনগনকে স্মরন করিয়ে দিলেন। বেগম জিয়া স্পষ্টতই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে তার অবস্থান দৃড করে প্রকাশ করেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও একই কথা বলেছেন। এটি এখন স্পষ্ট যে, বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত দেশটিকে একটি ইসলামী-জঙ্গিবাদী-তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। একাত্তরে এই চিন্তা-চেতনাটি যাদের ছিল তারা পাকিস্তানের দোসর।পাকিস্তান ও তাঁদের ভুমিকা ইদানিং পরিস্কার করেছেন বিশ্ববাসির সামনে তাঁদের সংসদে বাংলাদেশের মানবতা বিরুধি অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন এবং তা পাশের মাধ্যমে।দন্ড পাওয়া ব্যাক্তি বর্গ তাঁদের দেশের মহান বন্ধু বলে তাঁরা অভিহিত করেছেন।তার পর ও কি বলতে হবে বা সাক্ষ দিতে হবে পাকিস্তানের মহান বন্ধুরা যুদ্ধ অপরাধি নয়?? বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত জোটের এই রাজনীতি শেষ পয্যন্ত তালেবান দমনের পর আইএস আই এর ভুমিকায় অবতির্ন্ন হয়েছে। তাঁরা বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করে অন্ধকার যুগের দিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সারা দেশব্যাপি হত্যা গুপ্তহত্যা,,বিদেশি নাগরিক হত্যা ইত্যাদি অশুভ কাজ সমানে চালিয়ে যাচ্ছে।মুলত তারা বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের পর থেকেই হত্যাকান্ড সমুহ সংঘটিত করে আসছে।বর্তমান বিশ্ব আইএস আই আতংকে কম্পমান বিদায় সেই নামটি ব্যাবহার করে দায় তাঁদের ঘাড়ে রেখে বাংলাদেশকে অস্থির করে বিদেশি প্রভুদের বাংলাদেশ আক্রমন করার পথ প্রসস্ত করাই লক্ষ। পাকিস্তানের জামাতে ইসলাম তাঁদের সরকারকে বাংলাদেশ আক্রমন করে তাঁদের বন্ধুদের জীবন রক্ষার দাবী থেকে আরো স্পষ্টতা পেয়েছে। দেশটি এখন মূলত আবার সত্তর-একাত্তরের রাজনীতিতে দাঁড়িয়ে পড়েছে।মহাজোট ও তার সমর্থকরা দেশটিকে একাত্তরের মূল নীতির কাছাকাছি নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে দাঁড় করাতে চায়। আওয়ামী লীগ সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রশ্নে কিছুটা সরে দাঁড়ালেও বা সমাজতন্ত্র শব্দটি স্পষ্টভাবে না বললেও বাংলাদেশকে অন্তত একটি তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করতে দিতে চায় না। তাদের জন্য গোড়ামি, কুসংস্কার, জঙ্গিবাদ ও প্রগতিবিরোধী একটি রাষ্ট্রের কথা ভাবাও কঠিন। খুব সাম্প্রতিককালে জামায়াত-হেফাজতকে মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক মহলে অন্তত এটি প্রমাণ করতে পেরেছে যে, তারাই একটি মধ্যপন্থি উদার অসাম্প্রদায়িক অথচ মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম। ২০ দলীয় জোট ও হেফাজত পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্য নয় সেটিও আওয়ামী লীগ সরকার কূটনৈতিক মহলে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তারা ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধায় উন্নত প্রশিক্ষন নিয়ে এবং নীজেদের আইএস আই দাবী করে বাংলাদেশ- পাকিস্তান অর্থাৎ সাম্প্রদায়িক-অসাম্প্রদায়িক চেতনার লড়াইটাকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতে চায়। আমরা যারা প্রগতির ধারায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে গড়ে তোলার নিয়ন্তর সংগ্রামে ব্যাপৃত রয়েছি তারা কেবলমাত্র বক্তৃতা বিবৃতি সমাবেশ বা মানববন্ধন করে এই চরম অবস্থা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাঁদের সংঙ্গে পাল্লা দিতে একাত্তরের বন্দুকের লড়াইটাকে ডিজিটাল লড়াইতে রূপান্তর করতে হবে। আসুন ফেসবুক, ভাইবার, হুয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে নয় এইসব ডিজিটাল প্লাটফরমকে ব্যবহার করেই একাত্তরের পরাজিত শক্তিকে মোকাবিলা করি। আর সেই কাজটি করার জন্য এই ধারার নতুন প্রজর্মকে উন্নত প্রশিক্ষন দেয়ার কোন বিকল্প নেই।কলমের ধারে বিভ্রান্ত হয়েই তাঁরা মুক্তমনা লেখক, সাহিত্যিক সাংবাদিক হত্যার মিশন হাতে নিয়েছে।একাত্তরেও তাঁরা এই ধারায় বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করে স্বাধিনতার পর রাজনীতি তাঁদের নিয়ন্ত্রনে নিতে সক্ষম হয়েছিল।সেই একই ধারায় পরাজয়কে জয়ের ধারায় ফিরিয়ে নেয়ার শেষ চেষ্টার অংশ হিসেবেই তাঁরা হত্যামিশন পরিচালনা করছে।তাঁদের ভয়ে বিদেশ পালিয়ে গিয়ে বা কলম বন্ধ করে সামাজিক দায় এড়ানো যাবেনা।তারা যা চাইছে তাঁর ফাঁদে পড়ার অর্থই হচ্ছে জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া।ভয় পেলে ভয়ই চেপে বসে,সাহষ করে মুখোস উম্মোচনের মিশনে সবাই এক যোগে ব্রতি হলে জয় অবশ্যই আমাদের হাতচানি দিয়ে ডাকবে।আসুন বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে সম্পৃত্ত করে অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করার শফথ গ্রহন করি। দেশ ও জাতির আশা আখাংকার প্রতি নীজেদেরকে নিবেদিত রেখে- প্রত্যেকের স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করি।বিজয়ের মাসে লাখো শহিদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার বাস্তবায়নে জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। " জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা"

ফেসবুক সহ অন্য সামাজিক  মিডিয়া বন্ধ রেখে নব্য আইএস আই কে প্রতিহত কিরার সিদ্ধান্ত সঠিক নহে,নতুন প্রজর্মকে উন্নত প্রযুক্তির প্রশিক্ষনের মাধ্যমে অশুভ শক্তির মোকাবেলায় প্রস্তুত করাই লক্ষ হওয়া উচিৎ।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন