সর্বগ্রাসী দূর্নীতি'র উৎপত্তি, টি আই বি'র ভূমিকা--বর্তমান সরকারের দূর্নীতি বিরূধী মনোভাব। (নবম কিস্তি)
রুহুল আমিন মজুমদার:--উল্লেখিত আলোচনায় দেখা যায় সর্বতোভাবে দুর্নীতির উৎপত্তি, বিকাশের মূলে প্রতিযোগীতামূলক "বাজার অর্থনীতি"র ধারাই দায়ী।এই বাজার অর্থনীতির প্রবর্তক সাম্রাজ্যবাদী শাষক শোষক শ্রেনীর উদ্ভাবিত 'পূঁজিবাদী অর্থনীতি'র আধুনিক সংস্করন মাত্র। প্রতিযোগীতা মূলক অর্থনীতির অনিবায্য ধারায় বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় অসম অর্থনৈতিক প্রতিযোগীতার জম্ম দিয়েছে। অধিক পূঁজি আহরনের অদম্য আক্ষাংকা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। জনগনের সেই আক্ষাংকা ইচ্ছাশক্তি সমাজকে নিয়ে গেছে অবধারিত "নৈতিকতাহীন লুটপাট, ঘুষ, সুদ, দুনীতির আবর্তে।
আইনের শাষন প্রতিষ্ঠায় সামগ্রিক দুর্বলতা বজায় রেখে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের কায্যকর বিভাগ সমূহকে সামগ্রিক ক্ষমতাহীন, রুগ্ন রেখে পাশ্চাত্যের একচেটিয়া পূঁজিভিত্তিক প্রতিযোগীতামূলক সমাজ বিনির্মানের অন্ধ অনুসরন জাতিকে অনৈতিকতার হিমসাগরে নিক্ষিপ্ত করেছে--ইহা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
উন্নত দেশ সমূহের দিকে তাকালে দেখা যায় তাঁদের দেশের রাজনীতির চালিকাশক্তি তাঁরা অনেক আগে থেকেই অর্থনীতিকে বিবেচনা করে আসছে। তাঁরা একদিকে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অর্থিক খাতে সর্বচ্ছো শৃংখলা বজায় রেখেছে অন্যদিকে জাতীয় ইস্যু সমূহ মিমাংসার মাধ্যমে সর্বস্তরে সূ-শাষন প্রতিষ্ঠিত করেছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বিভাগ সমূহ রাষ্ট্রীয় রীতিনীতি, আইনকাঠামো সুনির্দিষ্টভাবে অনুসরনের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে তাঁদের কায্যাদি নির্বাহ করার অধিকার প্রাপ্ত রয়েছে।সর্বতো ভাবে রাষ্ট্রের কাঠামো সমূহ সুদৃড করার পর বাজার অর্থনীতিকে ''রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক নীতি''তে গ্রহন করে সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশে রাষ্ট্রের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সমূহ দুর্বল রেখে, আইনের শাষনকে তোয়াক্কা না করে, জাতীয় ইস্যু সমূহ নিয়ে প্রতিনিয়ত বিতর্ক উত্থাপন করে--আর যাই হোক "সুশাষন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়"। সু-শাষন প্রতিষ্ঠার অন্যতম শর্ত সর্বাজ্ঞে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা। আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা ব্যাতিরেকে সমাজে নীতি নৈতিকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।যতক্ষন না সমাজে নীতি নৈতিকতা ফেরৎ আসছে ততক্ষন দূর্নীতির ন্যায় ব্যাধি নির্মূল করা আদৌ সম্ভব হবেনা।
সবচেয়ে বড় দূর্ভাগ্যের বিষয়টি হচ্ছে--"মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতি তাঁদের অজম্মকালের বিতর্কীত 'জাতীয় ইস্যু' সমূহ" রক্ত স্রোতের বিনিময়ে মিমাংসা করতে পেরেছিল।স্বাধীনতার অব্যবহিত পর(মাত্র সাড়ে তিনবছরের মাথায়)কুচক্রি মহল মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মিমাংসীত বিষয় সমূহকে আবারো বিতর্কের মঞ্চে নিয়ে আসে এবং এখনও সে প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
জাতির গৌরবের বিষয় সমূহকে বিতর্কীত করে জাতিকে দ্বিখন্ডিত অবস্থায় রেখে স্থীতিশীল রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়।রাজনৈতিক স্থীতিশীল শুন্যবস্থায় সুশাষন প্রতিষ্ঠা যেমন হয়না তেমনি সুশাষন ব্যাতিত আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা কল্পনা করা বাতুলতা মাত্র। আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা ব্যাতিরেকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, ঘুষ, সুদ সহ অন্যান্ন অনৈতিকতা নির্মূল আদৌ সম্ভব নয়।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ 'দিন বদলের সনদ' নামে নির্বাচনী অঙ্গীকার প্রকাশ করে। এখানে পাঁচটি অগ্রাধিকারের দ্বিতীয়টি ছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। বলা হয়েছিল-- "দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে''। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। ক্ষমতাধরদের বার্ষিক সম্পদ বিবরণ দিতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরের ঘুষ-দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনুপার্জিত আয়, ঋণখেলাপি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালোটাকা ও পেশীশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে কম্পিউটারাইজড করে দুর্নীতির পথ বন্ধ করা হবে" (সূত্র: আওয়ামী লীগের দিন বদলের সনদ ২০০৮)।
প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য ও তাদের পরিবারের সম্পদের হিসাব ও আয়ের উৎস প্রতিবছর জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল।দ্বিতীয়ত: দূর্নীতি দমন কমিশনকে একটি স্বাধীন কমিশন হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নির্বাচনী ইশতেহারের উল্লেখিত দু'টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি বিগত আট বছরে অবাস্তবায়িতই রয়ে গেছে।
তবে আশার কথা তথ্য অধিকার আইন পাস, অনলাইন টেন্ডার, সরকারি কার্যক্রমে কম্পিউটারাইজড ও ই-গভর্নেন্স চালু, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। দূদক কে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলেও তাঁদের কাজের স্বাধীনতায় যে হস্তক্ষেপ হচ্ছেনা বিগত তিন/ চার বছরের দুদকের তৎপরতায় গতির প্রতি দৃষ্টি ফেরালে বুঝা যায়।অচল দুদকে'র সচলতায় গতিবেগ এসেছে নি:সন্দেহে বলা যায়।
নিঃসন্দেহে আমরা দারিদ্র্যতা জয় করতে পেরেছি, আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, সামাজিক এবং মানবিক উন্নয়নেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে আছি সুশাসনে। গত ৮/৯ বছরে আমাদের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হতে পারত। রাজনীতি থেকে সংঘাত ইতিমধ্যে খানিকটা দুর হয়েছে।ইহা যে ক্ষনস্থায়ী তাও স্বিকায্য।ইতিমধ্যে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনকের মত জাতির স্পষ্যকাতর মিমাংসীত বিষয় সমূহ নিয়ে বিএনপি নেত্রী নতুন করে আবারো বিতর্ক মাঠে ছেড়ে দিয়েছেন। উক্ত বিতর্কের কারনে জাতি যে পূণ: সংঘাতের মূখামূখি হবে -তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাংলাদেশের রাজনীতিকে প্রতিনিয়তই পেছনের দিকে টেনে নিচ্ছে। আর তা হচ্ছে আস্থার সঙ্কট। উক্ত আস্থার সংকট ততদিনে দূর হবেনা যতদিন না স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নির্বাসিত না হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে পরাজিত শক্তির রাজনৈতিক অধিকার রয়েছে।বাংলাদেশই একমাত্র দেশ স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তি সমাসন্নকালেও বিপক্ষ শক্তি বাংলাদেশের সমাজে দাপিয়ে বেড়ানোর সূযোগ রয়ে গেছে। উক্ত শক্তিকে নিস্তেজ করা গেলে অনেক আগেই বাংলাদেশের উন্নতি অগ্রগতিতে সারাবিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারতো।
ভাবতেও লজ্জা হয় স্বাধীনদেশের আবাহাওয়ায় বাস করে স্বাধীনতার দাত্রী দলের বিরুদ্ধে তাঁরা আস্ফালন করার সাহষ দেখায়। একশ্রেনীর নাগরিক সমাজের উদ্বত্বপূর্ণ আচরন এমন পয্যায় যেন শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়লে 'এক মিনিটেই' সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। একশ্রেনীর মিডিয়ার প্রাধান্যের কারনে উল্লেখিত ব্যাক্তিগন নিজেদেরকে সবজান্তা মনিষী মনে করে। এই সামান্য বিষয়টি তাঁদের মাথায় আসেনা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বাবার জম্ম না হলে আওয়ামীলীগের জম্ম হতনা--আওয়ামী লীগের জম্ম না হলে তোমার মত বুদ্ধিজীবি হয়তো বা স্কুলে যাওয়ার বা লেখাপড়া শেখার সুযোগ হতনা। শত শত মিডিয়া, উন্নত প্রযুক্তি ইত্যাদিতো পরের বিষয়।
(চলমান পাতা --৯)
ruhulaminmujumder27@gmail.com
রুহুল আমিন মজুমদার:--উল্লেখিত আলোচনায় দেখা যায় সর্বতোভাবে দুর্নীতির উৎপত্তি, বিকাশের মূলে প্রতিযোগীতামূলক "বাজার অর্থনীতি"র ধারাই দায়ী।এই বাজার অর্থনীতির প্রবর্তক সাম্রাজ্যবাদী শাষক শোষক শ্রেনীর উদ্ভাবিত 'পূঁজিবাদী অর্থনীতি'র আধুনিক সংস্করন মাত্র। প্রতিযোগীতা মূলক অর্থনীতির অনিবায্য ধারায় বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় অসম অর্থনৈতিক প্রতিযোগীতার জম্ম দিয়েছে। অধিক পূঁজি আহরনের অদম্য আক্ষাংকা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। জনগনের সেই আক্ষাংকা ইচ্ছাশক্তি সমাজকে নিয়ে গেছে অবধারিত "নৈতিকতাহীন লুটপাট, ঘুষ, সুদ, দুনীতির আবর্তে।
আইনের শাষন প্রতিষ্ঠায় সামগ্রিক দুর্বলতা বজায় রেখে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের কায্যকর বিভাগ সমূহকে সামগ্রিক ক্ষমতাহীন, রুগ্ন রেখে পাশ্চাত্যের একচেটিয়া পূঁজিভিত্তিক প্রতিযোগীতামূলক সমাজ বিনির্মানের অন্ধ অনুসরন জাতিকে অনৈতিকতার হিমসাগরে নিক্ষিপ্ত করেছে--ইহা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
উন্নত দেশ সমূহের দিকে তাকালে দেখা যায় তাঁদের দেশের রাজনীতির চালিকাশক্তি তাঁরা অনেক আগে থেকেই অর্থনীতিকে বিবেচনা করে আসছে। তাঁরা একদিকে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অর্থিক খাতে সর্বচ্ছো শৃংখলা বজায় রেখেছে অন্যদিকে জাতীয় ইস্যু সমূহ মিমাংসার মাধ্যমে সর্বস্তরে সূ-শাষন প্রতিষ্ঠিত করেছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বিভাগ সমূহ রাষ্ট্রীয় রীতিনীতি, আইনকাঠামো সুনির্দিষ্টভাবে অনুসরনের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে তাঁদের কায্যাদি নির্বাহ করার অধিকার প্রাপ্ত রয়েছে।সর্বতো ভাবে রাষ্ট্রের কাঠামো সমূহ সুদৃড করার পর বাজার অর্থনীতিকে ''রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক নীতি''তে গ্রহন করে সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশে রাষ্ট্রের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সমূহ দুর্বল রেখে, আইনের শাষনকে তোয়াক্কা না করে, জাতীয় ইস্যু সমূহ নিয়ে প্রতিনিয়ত বিতর্ক উত্থাপন করে--আর যাই হোক "সুশাষন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়"। সু-শাষন প্রতিষ্ঠার অন্যতম শর্ত সর্বাজ্ঞে আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা। আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা ব্যাতিরেকে সমাজে নীতি নৈতিকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।যতক্ষন না সমাজে নীতি নৈতিকতা ফেরৎ আসছে ততক্ষন দূর্নীতির ন্যায় ব্যাধি নির্মূল করা আদৌ সম্ভব হবেনা।
সবচেয়ে বড় দূর্ভাগ্যের বিষয়টি হচ্ছে--"মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতি তাঁদের অজম্মকালের বিতর্কীত 'জাতীয় ইস্যু' সমূহ" রক্ত স্রোতের বিনিময়ে মিমাংসা করতে পেরেছিল।স্বাধীনতার অব্যবহিত পর(মাত্র সাড়ে তিনবছরের মাথায়)কুচক্রি মহল মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মিমাংসীত বিষয় সমূহকে আবারো বিতর্কের মঞ্চে নিয়ে আসে এবং এখনও সে প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
জাতির গৌরবের বিষয় সমূহকে বিতর্কীত করে জাতিকে দ্বিখন্ডিত অবস্থায় রেখে স্থীতিশীল রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়।রাজনৈতিক স্থীতিশীল শুন্যবস্থায় সুশাষন প্রতিষ্ঠা যেমন হয়না তেমনি সুশাষন ব্যাতিত আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা কল্পনা করা বাতুলতা মাত্র। আইনের শাষন প্রতিষ্ঠা ব্যাতিরেকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, ঘুষ, সুদ সহ অন্যান্ন অনৈতিকতা নির্মূল আদৌ সম্ভব নয়।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ 'দিন বদলের সনদ' নামে নির্বাচনী অঙ্গীকার প্রকাশ করে। এখানে পাঁচটি অগ্রাধিকারের দ্বিতীয়টি ছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। বলা হয়েছিল-- "দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে''। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। ক্ষমতাধরদের বার্ষিক সম্পদ বিবরণ দিতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরের ঘুষ-দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনুপার্জিত আয়, ঋণখেলাপি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালোটাকা ও পেশীশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে কম্পিউটারাইজড করে দুর্নীতির পথ বন্ধ করা হবে" (সূত্র: আওয়ামী লীগের দিন বদলের সনদ ২০০৮)।
প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য ও তাদের পরিবারের সম্পদের হিসাব ও আয়ের উৎস প্রতিবছর জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল।দ্বিতীয়ত: দূর্নীতি দমন কমিশনকে একটি স্বাধীন কমিশন হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নির্বাচনী ইশতেহারের উল্লেখিত দু'টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি বিগত আট বছরে অবাস্তবায়িতই রয়ে গেছে।
তবে আশার কথা তথ্য অধিকার আইন পাস, অনলাইন টেন্ডার, সরকারি কার্যক্রমে কম্পিউটারাইজড ও ই-গভর্নেন্স চালু, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। দূদক কে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলেও তাঁদের কাজের স্বাধীনতায় যে হস্তক্ষেপ হচ্ছেনা বিগত তিন/ চার বছরের দুদকের তৎপরতায় গতির প্রতি দৃষ্টি ফেরালে বুঝা যায়।অচল দুদকে'র সচলতায় গতিবেগ এসেছে নি:সন্দেহে বলা যায়।
নিঃসন্দেহে আমরা দারিদ্র্যতা জয় করতে পেরেছি, আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, সামাজিক এবং মানবিক উন্নয়নেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে আছি সুশাসনে। গত ৮/৯ বছরে আমাদের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হতে পারত। রাজনীতি থেকে সংঘাত ইতিমধ্যে খানিকটা দুর হয়েছে।ইহা যে ক্ষনস্থায়ী তাও স্বিকায্য।ইতিমধ্যে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনকের মত জাতির স্পষ্যকাতর মিমাংসীত বিষয় সমূহ নিয়ে বিএনপি নেত্রী নতুন করে আবারো বিতর্ক মাঠে ছেড়ে দিয়েছেন। উক্ত বিতর্কের কারনে জাতি যে পূণ: সংঘাতের মূখামূখি হবে -তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাংলাদেশের রাজনীতিকে প্রতিনিয়তই পেছনের দিকে টেনে নিচ্ছে। আর তা হচ্ছে আস্থার সঙ্কট। উক্ত আস্থার সংকট ততদিনে দূর হবেনা যতদিন না স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নির্বাসিত না হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে পরাজিত শক্তির রাজনৈতিক অধিকার রয়েছে।বাংলাদেশই একমাত্র দেশ স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তি সমাসন্নকালেও বিপক্ষ শক্তি বাংলাদেশের সমাজে দাপিয়ে বেড়ানোর সূযোগ রয়ে গেছে। উক্ত শক্তিকে নিস্তেজ করা গেলে অনেক আগেই বাংলাদেশের উন্নতি অগ্রগতিতে সারাবিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারতো।
ভাবতেও লজ্জা হয় স্বাধীনদেশের আবাহাওয়ায় বাস করে স্বাধীনতার দাত্রী দলের বিরুদ্ধে তাঁরা আস্ফালন করার সাহষ দেখায়। একশ্রেনীর নাগরিক সমাজের উদ্বত্বপূর্ণ আচরন এমন পয্যায় যেন শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়লে 'এক মিনিটেই' সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। একশ্রেনীর মিডিয়ার প্রাধান্যের কারনে উল্লেখিত ব্যাক্তিগন নিজেদেরকে সবজান্তা মনিষী মনে করে। এই সামান্য বিষয়টি তাঁদের মাথায় আসেনা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বাবার জম্ম না হলে আওয়ামীলীগের জম্ম হতনা--আওয়ামী লীগের জম্ম না হলে তোমার মত বুদ্ধিজীবি হয়তো বা স্কুলে যাওয়ার বা লেখাপড়া শেখার সুযোগ হতনা। শত শত মিডিয়া, উন্নত প্রযুক্তি ইত্যাদিতো পরের বিষয়।
(চলমান পাতা --৯)
ruhulaminmujumder27@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন