সর্বগ্রাসী দূর্নীতির উৎপত্তি, টি আই বি' র ভূমিকা--বর্তমান সরকারের দূর্নীতি বিরূধী মনোভাব-- (৬ষ্ঠ কিস্তি)
রুহুল আমিন মজুমদার:--'৭৫ পরবর্তী খুনিচক্র, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি, চাটুকার, মৌসাহেব,পুঁজিবাদের দোষরদের সম্মিলীত শক্তি "বাকশালের" বিপরীতে আমদানী করে "বাজার অর্থনীতির দর্শন")। তাঁরা তাঁদের প্রভুদের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আ-জীবন পোড় খাওয়া রাজনৈতিক জীবনের সঞ্চিত অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ, পরিপক্ক রাজনীতি, নিচ্ছিদ্র অভিজ্ঞতা, মেধা, প্রাজ্ঞতার উৎগীরনকৃত দর্শন "বাকশাল"কে পরিত্যাগ করে।
বিশ্বব্যাপী স্নায়ু যুদ্ধের ভয়াবহ আন্তজাতিক রাজনীতি, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, পাশ্ববর্তী বৃহৎ জনসংখ্যা অধ্যুষিত প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের অবস্থান ইত্যাদি বিবেচনা সাপেক্ষ প্রাজ্ঞতা, অভিজ্ঞতা, সর্বোৎকৃষ্ট রাজনৈতিক, সামাজিক মেধার উৎসরনের অপর নাম 'বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ'(বাকশাল)। অশুভ শক্তির জোট "সর্বদলের সারমর্ম একমাত্র জাতীয় দল (বাকশাল)কে পরিহার করে তদস্থলে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত "পশ্চিমা পুজিবাদী গনতন্ত্রের" ধারায় চালু করে তথাকথিত "বহুদলীয় রাজনীতির উদ্ভট দর্শন।" গনতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম সহনশীলতার মাধ্যম " বহু মত ও পথের একাধিক রাজনৈতিক দলের সহবস্থানে"র ধারনার বিপরীতে ''বহুদলীয়" শব্দটি যুক্ত করে মূলত: অশুভ শক্তি সারাসরি "ডানপন্থি উগ্রবাদের" চরম ধারায় নিজেদের সম্পৃত্ত করে নেয়।
বাংলাদেশে বসবাসরত সর্বস্তরের বাঙ্গালী অধিবাসির মন মেজাজ, ষড় ঋতুর নানামূখী আবাহাওয়া উপযোগী দর্শন "বাকশালে'র বিপরীতে--পশ্চিমা জগতের ভদ্রতার আবরনে ঢাকা পূঁতিগন্ধময় প্রতিযোগীতামূলক "বাজার অর্থনীতি" (মূলত: পুঁজিবাদী অর্থনীতি") দর্শন আমদানী করে--"খুনীচক্র দেশব্যাপি লুটপাটের রামরাজত্ব কায়েম করে"। সঙ্গত কারনে ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার সর্বত্র প্রতিযোগীতা মূলক অর্থনীতির ধারনা সহজ উপায় "গরীব থেকে 'ধনীতে রুপান্তরের" মানষিকতা' বাঙ্গালী চরিত্রে দ্রুত প্রভাব বিস্তার করে। বাঙালীর আজম্ম পরাধীনতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট "মৌসাহেবী"কে মাধ্যম করে সদ্য ক্ষমতাসীন খুনীচক্রের কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে রাতারাতি বঙ্গবন্ধু সরকারের জাতীয়করনকৃত জনগনের সম্পদ--"কল কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান নামমাত্র মূল্যে, ক্ষেত্র বিশেষ বিনামূল্যে ধুর্ত ব্যাক্তিদের পক্ষে নামজারী, ভূয়া রেজি: ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে নেয়।রাষ্ট্র দুর্নীতি বাজ ব্যাক্তিদের এই সমস্ত অনৈতিক কাজে সর্বাত্বক সহযোগীতা প্রদান করতে থাকে।
পূঁজিতান্ত্রিক অর্থনীতির সুযোগে পাকিস্তানের ২৩ বছর শাষনামলে কতিপয় ব্যাক্তি ও সংস্থা জাল জালিয়াতি, লূটপাটের মাধ্যমে সমূদয় সম্পদ গুটিকয়েক পরিবার সঞ্চিত করেছিল। ধনাঢ্য সেই ২২ পরিবারের পরিত্যাক্ত বাড়ী, গাড়ী, শিল্প, বাগান, সম্পত্তি জালজালিয়াতির মাধ্যমে খুনীচক্র, স্বাধীনতা বিরুধীচক্র দখল করে নেয়। সরকারি বাড়ী, গাড়ী, প্লট, প্লাট, খাস ভূমি, স্থাপনা কিছুই রেহাই পায়নি দখলবাজ পাকি প্রেতাত্বাদের কবল থেকে। এবং কি তাঁদের নিকটতম বন্ধু বিহারীদের ফেলে যাওয়া বাড়ী, ,গাড়ী, ব্যাবসা, বানিজ্য, প্রতিষ্ঠান দখল করে নিতেও দ্বিধা করেনি।শহর বন্দর, গ্রামেগঞ্জে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়িয়ে বাঙ্গালী সংখ্যালুঘু হিন্দুদেরকে ভয়ভীতি, মারপিট, দাঙ্গাহাঙ্গামার মাধ্যমে তাঁদের যুগযুগান্তরের অর্জিত সহায় সম্পদ,ব্যবসা বানিজ্য,স্থাপনা প্রতিষ্ঠান পেলেরেখে দেশত্যাগে বাধ্য করে।সংখ্যালুঘুদের পরিত্যাক্ত সম্পদ ও সম্পত্তি স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক দূর্বৃত্ত যোগসাজসে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করে।
ধূর্ত সাম্প্রদায়িক গোষ্টি, মুক্তিযুদ্ধ বিরুধী রাজাকার, আলবদর, শান্তিবাহিনীর সদস্য, বঙ্গবন্ধুর খুনীচক্র, সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন স্বাধীনতা বিরুধীচক্র সম্মিলীত ভাবে লুটপাট, দখলবাজি, কালবাজারী, হঠকারীতা, চৌয্যবৃত্তি, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রাতারাতি ফুঁলেফেঁপে কলাগাছে পরিণত হয়। একসময়ে ঘামের গন্ধে যাদের পাশে বসার উপায় ছিলনা সময়ের ব্যবধানে তাঁদের গাড়ীর পেট্রোলের পোড়া গন্ধে গ্রাম, পাড়া মহল্লায় স্বাভাবিক ধম বন্ধ হয়ে সাধারন মানুষের মৃত্যুর আশংকা দেখা দেয়। পশ্চিমাদের বাড়ীর পাহারাদার, তল্পিবাহক, মৌসাহেব গন সময়ের ব্যবধানে পরিণত হয় বহু সহজ সরল বাঙ্গালী পাহারাদারের 'অক্ষর জ্ঞান শুন্য 'মস্তবড় সাহেবে'।
মূলত: জাতির জনকের হত্যাকারী অশুভচক্র অবৈধ, অনৈতিক, নিকৃষ্টতম উপায়ে ক্ষমতা দখল করনকে জাতীয় পয্যায় বৈধতা দানের মানষিকতায় ইচ্ছাকৃত বাঙ্গালী জাতীকে অনৈতিকতার সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনৈতিকতার বিষবাস্প ছড়িয়ে দিয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী দেশ পরিচালনার নিমিত্তে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু সরকার কতৃক প্রনীত, দেশে বিদেশে সর্বজনগ্রাহ্য সংবিধান উপেক্ষা করে খুনীচক্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে।বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রনীত সংবিধানে রাষ্ট্র, সরকার, সংবিধানের একমাত্র রক্ষক সুপ্রিমকোর্টকে সমূদয় ক্ষমতার অধিকারী করে ধারা সংযুক্ত করা হয়েছিল।আইন প্রনয়ন, রাষ্ট্র পরিচালনা, দেশ ও জনগনের যে কোন জটিলতা দেখা দিলে সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত ধরে ধারাও সংযুক্ত করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং তৎপরবর্তী খুনীচক্রের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল পরবর্তীতে রাষ্ট্রের 'পাহারাদার'দের ক্ষমতা দখল, সংবিধান স্থগিত, জনগনের মৌলিক অধিকার সমূহ স্থগিত, জনগনের চলাচলের স্বাধীনতা খর্ব করে "মার্শাল ল" জারি ইত্যাদি নানা উপায়ে দেশ শাষন করার পরও 'রাষ্ট্রের রক্ষক' 'সুপ্রীমকোর্ট' ছিল একেবারেই নীরব নির্বীকার। ক্ষেত্র বিশেষে "সুপ্রিমকোর্টে'র বিচারপতিগন অশুভশক্তির ক্ষমতা দীর্ঘায়িতকরন, পাকাপোক্তকরনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতা দিয়েছে"।প্রধান বিচারপতি এবং আপীল বিভাগের বিচারপতি গনের মধ্যে অনেকে রাষ্ট্রপতি পদ সহ অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করে তাঁদের শাষনকালকে দেশে বিদেশে বৈধতা দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের জনগন তাঁদের শাষন ক্ষমতা পূণ:দ্ধার এবং গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে দীর্ঘ একুশ বছর সেনাশাষক, স্বৈরাচারী শাষক, খুনীচক্রের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামে লিপ্ত থাকে। অবশেষে ১৯৯০ ইং সালে রাজপথে রক্তের স্রোত ঢেলে দিয়ে গনতন্ত্র, জনগনের শাষন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জনগন চুড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। এমত:বস্থায় নিলজ্জ 'উচ্চ আদালত' (সুপ্রীমকোর্ট) একুশবছর অবৈধ সরকার সমূহের পদলেহন করে, জনগনের হাতে ক্ষমতা আসার পর জৈনক "মাজদার হোসেন বনাম রাষ্ট্র" মামলার রায়ের পয্যবেক্ষন সংযুক্তিতে 'সেনা শাষক'দের ক্ষমতা দখল "অবৈধ এবং তাঁদের সমূদয় সংশোধনী" বাতিল ঘোষনা করে।
ততদিনে বাঙ্গালী মানসে জাতীয়ভাবে অশুভশক্তি অনৈতিকতার বিষ রন্ধে রন্ধে প্রবেশ করে পূর্ণ কায্যকর অবস্থায় বিরাজমান। সমগ্র জাতি নীতিনৈতিকতা হারিয়ে "কি বৈধ, কি অবৈধ, পার্থক্য করার বোধশক্তি হারিয়ে পেলেছে। বর্তমান সময়ে অনেকেই মনে করেন সেনাশাষক গন এবং তাঁদের শাষনকাল বৈধ ছিল এবং কি উচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষনা করে রায় দেয়ার পরও। মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার করার বিপক্ষে অনেকের অবস্থান সুস্পষ্ট ছিল এবং কি মানবতা বিরূধী বিচার বানচালে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে প্রতিতযসা বুদ্ধিজীবিদের অনেকেরই সায় দেখা গেছে।
খালেদা পরিবারের দূর্নীতি তাঁদের নিজস্ব স্বীকারোক্তি বলা যায়।কালটাকা সাদা করে প্রমান করেছেন তাঁরা স্বঘোষিত দূর্নীতিবাজ, কাল টাকার মালিক-।-তাঁদের দখলীয় রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদায় করার উদ্যোগ নিতে গেলে তাঁদের রক্ষা এবং তাঁদের সম্পদ রক্ষা করার আন্দোলন--এই বাংলাদেশেই হয়। অনৈতিক আন্দোলনে তদীয় সমর্থক ব্যাতিরেকে সুসিল সমাজের বিদ্যান ব্যাক্তিদের সমর্থন, সহযোগীতা চোখে পড়ার মতই লক্ষনীয়, অস্বীকারের উপায় নেই।একবারের জন্যেও কাউকে চিন্তা করতে দেখিনা সেইদিনের ভাঙ্গা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জীর ভিতর থেকে এত সম্পদ, অর্থবিত্ত কি করে বের হল!
জাতির নীতি নৈতিকতা কত নিম্নগামী হয়েছে মাত্র ত্রিশ/বত্রিশ বছরের ষড়যন্ত্র, অপশাষনের কারনে তাঁর চিত্র সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। কালটাকার মালিক সংসদ সদস্য সহ অপরাপর জনপ্রতিনীধি নির্বাচনে সৎ, নির্লোভ, জনবান্ধব, ত্যাগীদের বিপুল ভোটে হারিয়ে দেয়। দূর্নীতিবাজ ব্যাক্তির গাড়ীর পিছনে শতশত মানুষ প্রতিনিয়ত দাবমান। তিনি হচ্ছেন সমাজ হৈতষি, পরপোকারী জনবান্ধব।একবারও কেউ চিন্তা করে দেখেনা--জনবান্ধব লোকটিই ব্যাংকের কোটি কোটি জনগনের টাকা ফেরৎ দেয়নাই।সেই চুরির টাকায় কেনা এই গাড়ীটিও।
আমি কাউকে বলতে শুনিনা--জিয়া/এরশাদ অবৈধ উপায়ে বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল করেছিল।বরং অনেকে বলতে শুনী তাঁরা সফল রাজনীতিবীদ ছিলেন! কেউ কেউ আগবাড়িয়ে বলে থাকেন--মেজর জিয়া ছিল নির্লোভ, সফল রাষ্ট্রনায়ক! !" জেনারেল এরশাদকে অনেকেই বলেন 'পল্লিবন্ধু'! উপরোক্ত কথাগুলী অশিক্ষিতরাই শুধু বলে তা নয়--দেশের শিক্ষিত সমাজের অনেকের মধ্যে বুদ্ধিজীবি, সুসিল, উচ্চপদস্ত সাংবাদিক সাহিত্যিকেরাও বলেন। জাতীগতভাবে নীতিনৈতিকতার মানদন্ড কতবেশী নিম্নগামী হলে বিপরীতধর্মীতা সর্বস্তরে গ্রহনযোগ্যতা পেতে পারে--তাও কি বলার অপেক্ষা রাখে!!
(চলমান পাতা:--৬)
ruhulaminmujumder27@gmail.com
রুহুল আমিন মজুমদার:--'৭৫ পরবর্তী খুনিচক্র, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি, চাটুকার, মৌসাহেব,পুঁজিবাদের দোষরদের সম্মিলীত শক্তি "বাকশালের" বিপরীতে আমদানী করে "বাজার অর্থনীতির দর্শন")। তাঁরা তাঁদের প্রভুদের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আ-জীবন পোড় খাওয়া রাজনৈতিক জীবনের সঞ্চিত অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ, পরিপক্ক রাজনীতি, নিচ্ছিদ্র অভিজ্ঞতা, মেধা, প্রাজ্ঞতার উৎগীরনকৃত দর্শন "বাকশাল"কে পরিত্যাগ করে।
বিশ্বব্যাপী স্নায়ু যুদ্ধের ভয়াবহ আন্তজাতিক রাজনীতি, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, পাশ্ববর্তী বৃহৎ জনসংখ্যা অধ্যুষিত প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের অবস্থান ইত্যাদি বিবেচনা সাপেক্ষ প্রাজ্ঞতা, অভিজ্ঞতা, সর্বোৎকৃষ্ট রাজনৈতিক, সামাজিক মেধার উৎসরনের অপর নাম 'বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ'(বাকশাল)। অশুভ শক্তির জোট "সর্বদলের সারমর্ম একমাত্র জাতীয় দল (বাকশাল)কে পরিহার করে তদস্থলে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত "পশ্চিমা পুজিবাদী গনতন্ত্রের" ধারায় চালু করে তথাকথিত "বহুদলীয় রাজনীতির উদ্ভট দর্শন।" গনতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম সহনশীলতার মাধ্যম " বহু মত ও পথের একাধিক রাজনৈতিক দলের সহবস্থানে"র ধারনার বিপরীতে ''বহুদলীয়" শব্দটি যুক্ত করে মূলত: অশুভ শক্তি সারাসরি "ডানপন্থি উগ্রবাদের" চরম ধারায় নিজেদের সম্পৃত্ত করে নেয়।
বাংলাদেশে বসবাসরত সর্বস্তরের বাঙ্গালী অধিবাসির মন মেজাজ, ষড় ঋতুর নানামূখী আবাহাওয়া উপযোগী দর্শন "বাকশালে'র বিপরীতে--পশ্চিমা জগতের ভদ্রতার আবরনে ঢাকা পূঁতিগন্ধময় প্রতিযোগীতামূলক "বাজার অর্থনীতি" (মূলত: পুঁজিবাদী অর্থনীতি") দর্শন আমদানী করে--"খুনীচক্র দেশব্যাপি লুটপাটের রামরাজত্ব কায়েম করে"। সঙ্গত কারনে ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার সর্বত্র প্রতিযোগীতা মূলক অর্থনীতির ধারনা সহজ উপায় "গরীব থেকে 'ধনীতে রুপান্তরের" মানষিকতা' বাঙ্গালী চরিত্রে দ্রুত প্রভাব বিস্তার করে। বাঙালীর আজম্ম পরাধীনতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট "মৌসাহেবী"কে মাধ্যম করে সদ্য ক্ষমতাসীন খুনীচক্রের কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে রাতারাতি বঙ্গবন্ধু সরকারের জাতীয়করনকৃত জনগনের সম্পদ--"কল কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান নামমাত্র মূল্যে, ক্ষেত্র বিশেষ বিনামূল্যে ধুর্ত ব্যাক্তিদের পক্ষে নামজারী, ভূয়া রেজি: ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে নেয়।রাষ্ট্র দুর্নীতি বাজ ব্যাক্তিদের এই সমস্ত অনৈতিক কাজে সর্বাত্বক সহযোগীতা প্রদান করতে থাকে।
পূঁজিতান্ত্রিক অর্থনীতির সুযোগে পাকিস্তানের ২৩ বছর শাষনামলে কতিপয় ব্যাক্তি ও সংস্থা জাল জালিয়াতি, লূটপাটের মাধ্যমে সমূদয় সম্পদ গুটিকয়েক পরিবার সঞ্চিত করেছিল। ধনাঢ্য সেই ২২ পরিবারের পরিত্যাক্ত বাড়ী, গাড়ী, শিল্প, বাগান, সম্পত্তি জালজালিয়াতির মাধ্যমে খুনীচক্র, স্বাধীনতা বিরুধীচক্র দখল করে নেয়। সরকারি বাড়ী, গাড়ী, প্লট, প্লাট, খাস ভূমি, স্থাপনা কিছুই রেহাই পায়নি দখলবাজ পাকি প্রেতাত্বাদের কবল থেকে। এবং কি তাঁদের নিকটতম বন্ধু বিহারীদের ফেলে যাওয়া বাড়ী, ,গাড়ী, ব্যাবসা, বানিজ্য, প্রতিষ্ঠান দখল করে নিতেও দ্বিধা করেনি।শহর বন্দর, গ্রামেগঞ্জে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়িয়ে বাঙ্গালী সংখ্যালুঘু হিন্দুদেরকে ভয়ভীতি, মারপিট, দাঙ্গাহাঙ্গামার মাধ্যমে তাঁদের যুগযুগান্তরের অর্জিত সহায় সম্পদ,ব্যবসা বানিজ্য,স্থাপনা প্রতিষ্ঠান পেলেরেখে দেশত্যাগে বাধ্য করে।সংখ্যালুঘুদের পরিত্যাক্ত সম্পদ ও সম্পত্তি স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক দূর্বৃত্ত যোগসাজসে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করে।
ধূর্ত সাম্প্রদায়িক গোষ্টি, মুক্তিযুদ্ধ বিরুধী রাজাকার, আলবদর, শান্তিবাহিনীর সদস্য, বঙ্গবন্ধুর খুনীচক্র, সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন স্বাধীনতা বিরুধীচক্র সম্মিলীত ভাবে লুটপাট, দখলবাজি, কালবাজারী, হঠকারীতা, চৌয্যবৃত্তি, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রাতারাতি ফুঁলেফেঁপে কলাগাছে পরিণত হয়। একসময়ে ঘামের গন্ধে যাদের পাশে বসার উপায় ছিলনা সময়ের ব্যবধানে তাঁদের গাড়ীর পেট্রোলের পোড়া গন্ধে গ্রাম, পাড়া মহল্লায় স্বাভাবিক ধম বন্ধ হয়ে সাধারন মানুষের মৃত্যুর আশংকা দেখা দেয়। পশ্চিমাদের বাড়ীর পাহারাদার, তল্পিবাহক, মৌসাহেব গন সময়ের ব্যবধানে পরিণত হয় বহু সহজ সরল বাঙ্গালী পাহারাদারের 'অক্ষর জ্ঞান শুন্য 'মস্তবড় সাহেবে'।
মূলত: জাতির জনকের হত্যাকারী অশুভচক্র অবৈধ, অনৈতিক, নিকৃষ্টতম উপায়ে ক্ষমতা দখল করনকে জাতীয় পয্যায় বৈধতা দানের মানষিকতায় ইচ্ছাকৃত বাঙ্গালী জাতীকে অনৈতিকতার সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনৈতিকতার বিষবাস্প ছড়িয়ে দিয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী দেশ পরিচালনার নিমিত্তে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু সরকার কতৃক প্রনীত, দেশে বিদেশে সর্বজনগ্রাহ্য সংবিধান উপেক্ষা করে খুনীচক্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে।বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রনীত সংবিধানে রাষ্ট্র, সরকার, সংবিধানের একমাত্র রক্ষক সুপ্রিমকোর্টকে সমূদয় ক্ষমতার অধিকারী করে ধারা সংযুক্ত করা হয়েছিল।আইন প্রনয়ন, রাষ্ট্র পরিচালনা, দেশ ও জনগনের যে কোন জটিলতা দেখা দিলে সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত ধরে ধারাও সংযুক্ত করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং তৎপরবর্তী খুনীচক্রের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল পরবর্তীতে রাষ্ট্রের 'পাহারাদার'দের ক্ষমতা দখল, সংবিধান স্থগিত, জনগনের মৌলিক অধিকার সমূহ স্থগিত, জনগনের চলাচলের স্বাধীনতা খর্ব করে "মার্শাল ল" জারি ইত্যাদি নানা উপায়ে দেশ শাষন করার পরও 'রাষ্ট্রের রক্ষক' 'সুপ্রীমকোর্ট' ছিল একেবারেই নীরব নির্বীকার। ক্ষেত্র বিশেষে "সুপ্রিমকোর্টে'র বিচারপতিগন অশুভশক্তির ক্ষমতা দীর্ঘায়িতকরন, পাকাপোক্তকরনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতা দিয়েছে"।প্রধান বিচারপতি এবং আপীল বিভাগের বিচারপতি গনের মধ্যে অনেকে রাষ্ট্রপতি পদ সহ অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করে তাঁদের শাষনকালকে দেশে বিদেশে বৈধতা দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের জনগন তাঁদের শাষন ক্ষমতা পূণ:দ্ধার এবং গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে দীর্ঘ একুশ বছর সেনাশাষক, স্বৈরাচারী শাষক, খুনীচক্রের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামে লিপ্ত থাকে। অবশেষে ১৯৯০ ইং সালে রাজপথে রক্তের স্রোত ঢেলে দিয়ে গনতন্ত্র, জনগনের শাষন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জনগন চুড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। এমত:বস্থায় নিলজ্জ 'উচ্চ আদালত' (সুপ্রীমকোর্ট) একুশবছর অবৈধ সরকার সমূহের পদলেহন করে, জনগনের হাতে ক্ষমতা আসার পর জৈনক "মাজদার হোসেন বনাম রাষ্ট্র" মামলার রায়ের পয্যবেক্ষন সংযুক্তিতে 'সেনা শাষক'দের ক্ষমতা দখল "অবৈধ এবং তাঁদের সমূদয় সংশোধনী" বাতিল ঘোষনা করে।
ততদিনে বাঙ্গালী মানসে জাতীয়ভাবে অশুভশক্তি অনৈতিকতার বিষ রন্ধে রন্ধে প্রবেশ করে পূর্ণ কায্যকর অবস্থায় বিরাজমান। সমগ্র জাতি নীতিনৈতিকতা হারিয়ে "কি বৈধ, কি অবৈধ, পার্থক্য করার বোধশক্তি হারিয়ে পেলেছে। বর্তমান সময়ে অনেকেই মনে করেন সেনাশাষক গন এবং তাঁদের শাষনকাল বৈধ ছিল এবং কি উচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষনা করে রায় দেয়ার পরও। মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার করার বিপক্ষে অনেকের অবস্থান সুস্পষ্ট ছিল এবং কি মানবতা বিরূধী বিচার বানচালে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে প্রতিতযসা বুদ্ধিজীবিদের অনেকেরই সায় দেখা গেছে।
খালেদা পরিবারের দূর্নীতি তাঁদের নিজস্ব স্বীকারোক্তি বলা যায়।কালটাকা সাদা করে প্রমান করেছেন তাঁরা স্বঘোষিত দূর্নীতিবাজ, কাল টাকার মালিক-।-তাঁদের দখলীয় রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদায় করার উদ্যোগ নিতে গেলে তাঁদের রক্ষা এবং তাঁদের সম্পদ রক্ষা করার আন্দোলন--এই বাংলাদেশেই হয়। অনৈতিক আন্দোলনে তদীয় সমর্থক ব্যাতিরেকে সুসিল সমাজের বিদ্যান ব্যাক্তিদের সমর্থন, সহযোগীতা চোখে পড়ার মতই লক্ষনীয়, অস্বীকারের উপায় নেই।একবারের জন্যেও কাউকে চিন্তা করতে দেখিনা সেইদিনের ভাঙ্গা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জীর ভিতর থেকে এত সম্পদ, অর্থবিত্ত কি করে বের হল!
জাতির নীতি নৈতিকতা কত নিম্নগামী হয়েছে মাত্র ত্রিশ/বত্রিশ বছরের ষড়যন্ত্র, অপশাষনের কারনে তাঁর চিত্র সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। কালটাকার মালিক সংসদ সদস্য সহ অপরাপর জনপ্রতিনীধি নির্বাচনে সৎ, নির্লোভ, জনবান্ধব, ত্যাগীদের বিপুল ভোটে হারিয়ে দেয়। দূর্নীতিবাজ ব্যাক্তির গাড়ীর পিছনে শতশত মানুষ প্রতিনিয়ত দাবমান। তিনি হচ্ছেন সমাজ হৈতষি, পরপোকারী জনবান্ধব।একবারও কেউ চিন্তা করে দেখেনা--জনবান্ধব লোকটিই ব্যাংকের কোটি কোটি জনগনের টাকা ফেরৎ দেয়নাই।সেই চুরির টাকায় কেনা এই গাড়ীটিও।
আমি কাউকে বলতে শুনিনা--জিয়া/এরশাদ অবৈধ উপায়ে বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল করেছিল।বরং অনেকে বলতে শুনী তাঁরা সফল রাজনীতিবীদ ছিলেন! কেউ কেউ আগবাড়িয়ে বলে থাকেন--মেজর জিয়া ছিল নির্লোভ, সফল রাষ্ট্রনায়ক! !" জেনারেল এরশাদকে অনেকেই বলেন 'পল্লিবন্ধু'! উপরোক্ত কথাগুলী অশিক্ষিতরাই শুধু বলে তা নয়--দেশের শিক্ষিত সমাজের অনেকের মধ্যে বুদ্ধিজীবি, সুসিল, উচ্চপদস্ত সাংবাদিক সাহিত্যিকেরাও বলেন। জাতীগতভাবে নীতিনৈতিকতার মানদন্ড কতবেশী নিম্নগামী হলে বিপরীতধর্মীতা সর্বস্তরে গ্রহনযোগ্যতা পেতে পারে--তাও কি বলার অপেক্ষা রাখে!!
(চলমান পাতা:--৬)
ruhulaminmujumder27@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন