সর্বগ্রাসী দূর্নীতির উৎপত্তি, টি আই বি' র ভূমিকা--বর্তমান সরকারের দূর্নীতি বিরূধী মনোভাব--  (৬ষ্ঠ  কিস্তি)

  রুহুল আমিন মজুমদার:--'৭৫ পরবর্তী খুনিচক্র, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি, চাটুকার, মৌসাহেব,পুঁজিবাদের দোষরদের সম্মিলীত শক্তি "বাকশালের" বিপরীতে আমদানী করে "বাজার অর্থনীতির দর্শন")। তাঁরা তাঁদের প্রভুদের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আ-জীবন পোড় খাওয়া রাজনৈতিক জীবনের সঞ্চিত অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ,  পরিপক্ক রাজনীতি, নিচ্ছিদ্র অভিজ্ঞতা, মেধা, প্রাজ্ঞতার উৎগীরনকৃত দর্শন  "বাকশাল"কে পরিত্যাগ করে।

   বিশ্বব্যাপী স্নায়ু যুদ্ধের ভয়াবহ আন্তজাতিক রাজনীতি, বাংলাদেশের  ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, পাশ্ববর্তী বৃহৎ জনসংখ্যা অধ্যুষিত প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের অবস্থান ইত্যাদি বিবেচনা সাপেক্ষ প্রাজ্ঞতা, অভিজ্ঞতা, সর্বোৎকৃষ্ট রাজনৈতিক, সামাজিক মেধার উৎসরনের অপর নাম 'বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ'(বাকশাল)। অশুভ শক্তির জোট "সর্বদলের সারমর্ম একমাত্র জাতীয় দল (বাকশাল)কে পরিহার করে তদস্থলে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত "পশ্চিমা পুজিবাদী গনতন্ত্রের" ধারায় চালু করে তথাকথিত "বহুদলীয় রাজনীতির উদ্ভট দর্শন।" গনতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম সহনশীলতার মাধ্যম " বহু মত ও পথের একাধিক রাজনৈতিক দলের সহবস্থানে"র ধারনার বিপরীতে ''বহুদলীয়" শব্দটি যুক্ত করে মূলত: অশুভ শক্তি  সারাসরি "ডানপন্থি উগ্রবাদের" চরম ধারায় নিজেদের সম্পৃত্ত করে নেয়।

      বাংলাদেশে বসবাসরত সর্বস্তরের বাঙ্গালী অধিবাসির মন মেজাজ, ষড় ঋতুর নানামূখী আবাহাওয়া উপযোগী দর্শন "বাকশালে'র বিপরীতে--পশ্চিমা জগতের ভদ্রতার আবরনে ঢাকা পূঁতিগন্ধময় প্রতিযোগীতামূলক "বাজার অর্থনীতি" (মূলত: পুঁজিবাদী অর্থনীতি") দর্শন আমদানী করে--"খুনীচক্র দেশব্যাপি লুটপাটের রামরাজত্ব কায়েম করে"। সঙ্গত কারনে ব্যাক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার সর্বত্র প্রতিযোগীতা মূলক অর্থনীতির ধারনা সহজ উপায় "গরীব থেকে 'ধনীতে রুপান্তরের" মানষিকতা' বাঙ্গালী চরিত্রে দ্রুত প্রভাব বিস্তার করে। বাঙালীর আজম্ম পরাধীনতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট "মৌসাহেবী"কে মাধ্যম করে সদ্য ক্ষমতাসীন খুনীচক্রের কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে রাতারাতি বঙ্গবন্ধু সরকারের জাতীয়করনকৃত জনগনের সম্পদ--"কল কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান নামমাত্র মূল্যে, ক্ষেত্র বিশেষ বিনামূল্যে ধুর্ত ব্যাক্তিদের পক্ষে নামজারী, ভূয়া রেজি: ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে নেয়।রাষ্ট্র দুর্নীতি বাজ ব্যাক্তিদের এই সমস্ত  অনৈতিক কাজে সর্বাত্বক সহযোগীতা প্রদান করতে থাকে।

     পূঁজিতান্ত্রিক অর্থনীতির সুযোগে পাকিস্তানের ২৩ বছর শাষনামলে কতিপয় ব্যাক্তি ও সংস্থা জাল জালিয়াতি, লূটপাটের মাধ্যমে সমূদয় সম্পদ গুটিকয়েক পরিবার সঞ্চিত করেছিল।  ধনাঢ্য সেই ২২ পরিবারের পরিত্যাক্ত  বাড়ী, গাড়ী, শিল্প, বাগান, সম্পত্তি জালজালিয়াতির মাধ্যমে খুনীচক্র, স্বাধীনতা বিরুধীচক্র দখল করে নেয়। সরকারি বাড়ী, গাড়ী, প্লট, প্লাট, খাস ভূমি, স্থাপনা কিছুই রেহাই পায়নি দখলবাজ পাকি প্রেতাত্বাদের কবল থেকে। এবং কি তাঁদের নিকটতম বন্ধু বিহারীদের ফেলে যাওয়া বাড়ী, ,গাড়ী, ব্যাবসা, বানিজ্য, প্রতিষ্ঠান দখল করে নিতেও দ্বিধা করেনি।শহর বন্দর, গ্রামেগঞ্জে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়িয়ে বাঙ্গালী সংখ্যালুঘু হিন্দুদেরকে ভয়ভীতি, মারপিট, দাঙ্গাহাঙ্গামার মাধ্যমে  তাঁদের যুগযুগান্তরের অর্জিত সহায় সম্পদ,ব্যবসা বানিজ্য,স্থাপনা প্রতিষ্ঠান পেলেরেখে দেশত্যাগে বাধ্য করে।সংখ্যালুঘুদের পরিত্যাক্ত সম্পদ ও সম্পত্তি স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক দূর্বৃত্ত যোগসাজসে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করে।

      ধূর্ত সাম্প্রদায়িক গোষ্টি, মুক্তিযুদ্ধ বিরুধী রাজাকার, আলবদর, শান্তিবাহিনীর সদস্য, বঙ্গবন্ধুর খুনীচক্র, সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন স্বাধীনতা বিরুধীচক্র সম্মিলীত ভাবে লুটপাট, দখলবাজি, কালবাজারী, হঠকারীতা, চৌয্যবৃত্তি, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রাতারাতি ফুঁলেফেঁপে কলাগাছে পরিণত হয়। একসময়ে ঘামের গন্ধে যাদের পাশে বসার উপায় ছিলনা সময়ের ব্যবধানে তাঁদের গাড়ীর পেট্রোলের পোড়া গন্ধে গ্রাম, পাড়া মহল্লায় স্বাভাবিক ধম বন্ধ হয়ে সাধারন মানুষের  মৃত্যুর আশংকা দেখা দেয়।  পশ্চিমাদের বাড়ীর পাহারাদার, তল্পিবাহক, মৌসাহেব গন সময়ের ব্যবধানে পরিণত হয় বহু সহজ সরল বাঙ্গালী পাহারাদারের 'অক্ষর জ্ঞান শুন্য 'মস্তবড় সাহেবে'।

     মূলত: জাতির জনকের হত্যাকারী অশুভচক্র অবৈধ, অনৈতিক, নিকৃষ্টতম উপায়ে ক্ষমতা দখল করনকে জাতীয় পয্যায় বৈধতা দানের মানষিকতায় ইচ্ছাকৃত বাঙ্গালী জাতীকে অনৈতিকতার সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনৈতিকতার বিষবাস্প ছড়িয়ে দিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী দেশ পরিচালনার নিমিত্তে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু সরকার কতৃক প্রনীত, দেশে বিদেশে সর্বজনগ্রাহ্য সংবিধান উপেক্ষা করে খুনীচক্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে।বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রনীত  সংবিধানে রাষ্ট্র, সরকার, সংবিধানের একমাত্র  রক্ষক সুপ্রিমকোর্টকে সমূদয় ক্ষমতার অধিকারী করে ধারা সংযুক্ত করা হয়েছিল।আইন প্রনয়ন, রাষ্ট্র পরিচালনা, দেশ ও জনগনের যে কোন  জটিলতা দেখা দিলে সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত ধরে ধারাও সংযুক্ত করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং তৎপরবর্তী খুনীচক্রের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল পরবর্তীতে রাষ্ট্রের 'পাহারাদার'দের ক্ষমতা দখল, সংবিধান স্থগিত, জনগনের মৌলিক অধিকার সমূহ স্থগিত, জনগনের চলাচলের স্বাধীনতা খর্ব করে "মার্শাল ল" জারি ইত্যাদি নানা উপায়ে দেশ শাষন করার পরও 'রাষ্ট্রের রক্ষক' 'সুপ্রীমকোর্ট' ছিল একেবারেই নীরব নির্বীকার। ক্ষেত্র বিশেষে "সুপ্রিমকোর্টে'র বিচারপতিগন অশুভশক্তির ক্ষমতা দীর্ঘায়িতকরন, পাকাপোক্তকরনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতা দিয়েছে"।প্রধান বিচারপতি এবং আপীল বিভাগের বিচারপতি গনের মধ্যে অনেকে রাষ্ট্রপতি পদ সহ অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করে তাঁদের শাষনকালকে দেশে বিদেশে বৈধতা দিয়েছিলেন।

    বাংলাদেশের জনগন তাঁদের শাষন ক্ষমতা পূণ:দ্ধার এবং গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে দীর্ঘ একুশ বছর সেনাশাষক, স্বৈরাচারী শাষক, খুনীচক্রের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামে লিপ্ত থাকে।  অবশেষে ১৯৯০ ইং সালে রাজপথে রক্তের স্রোত ঢেলে দিয়ে  গনতন্ত্র, জনগনের শাষন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জনগন চুড়ান্ত  বিজয় অর্জন করে। এমত:বস্থায় নিলজ্জ 'উচ্চ আদালত' (সুপ্রীমকোর্ট) একুশবছর অবৈধ সরকার সমূহের পদলেহন করে, জনগনের হাতে ক্ষমতা আসার পর জৈনক "মাজদার হোসেন বনাম রাষ্ট্র" মামলার রায়ের পয্যবেক্ষন সংযুক্তিতে 'সেনা শাষক'দের  ক্ষমতা দখল "অবৈধ এবং তাঁদের সমূদয় সংশোধনী" বাতিল ঘোষনা করে।

    ততদিনে বাঙ্গালী মানসে জাতীয়ভাবে অশুভশক্তি অনৈতিকতার বিষ রন্ধে রন্ধে প্রবেশ করে পূর্ণ কায্যকর অবস্থায় বিরাজমান। সমগ্র  জাতি নীতিনৈতিকতা হারিয়ে "কি বৈধ, কি অবৈধ, পার্থক্য করার বোধশক্তি হারিয়ে পেলেছে। বর্তমান সময়ে অনেকেই মনে করেন সেনাশাষক গন এবং তাঁদের শাষনকাল বৈধ ছিল এবং কি উচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষনা করে রায় দেয়ার পরও। মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার করার বিপক্ষে অনেকের অবস্থান সুস্পষ্ট ছিল এবং কি মানবতা বিরূধী বিচার বানচালে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে প্রতিতযসা বুদ্ধিজীবিদের অনেকেরই সায় দেখা গেছে।

    খালেদা পরিবারের দূর্নীতি তাঁদের নিজস্ব স্বীকারোক্তি বলা যায়।কালটাকা সাদা করে প্রমান করেছেন তাঁরা  স্বঘোষিত দূর্নীতিবাজ, কাল টাকার মালিক-।-তাঁদের দখলীয় রাষ্ট্রীয় সম্পদ আদায় করার উদ্যোগ নিতে গেলে তাঁদের রক্ষা এবং তাঁদের সম্পদ রক্ষা করার আন্দোলন--এই বাংলাদেশেই হয়। অনৈতিক আন্দোলনে তদীয় সমর্থক ব্যাতিরেকে সুসিল সমাজের বিদ্যান ব্যাক্তিদের সমর্থন, সহযোগীতা চোখে পড়ার মতই লক্ষনীয়, অস্বীকারের উপায় নেই।একবারের জন্যেও কাউকে  চিন্তা করতে দেখিনা সেইদিনের ভাঙ্গা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জীর ভিতর থেকে এত সম্পদ, অর্থবিত্ত কি করে বের হল!

      জাতির নীতি নৈতিকতা কত নিম্নগামী হয়েছে মাত্র ত্রিশ/বত্রিশ বছরের ষড়যন্ত্র, অপশাষনের কারনে তাঁর চিত্র সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান।  কালটাকার মালিক সংসদ সদস্য সহ অপরাপর জনপ্রতিনীধি নির্বাচনে সৎ, নির্লোভ, জনবান্ধব, ত্যাগীদের বিপুল ভোটে হারিয়ে দেয়। দূর্নীতিবাজ ব্যাক্তির গাড়ীর পিছনে শতশত মানুষ প্রতিনিয়ত দাবমান। তিনি হচ্ছেন সমাজ হৈতষি, পরপোকারী জনবান্ধব।একবারও কেউ চিন্তা করে দেখেনা--জনবান্ধব লোকটিই ব্যাংকের কোটি কোটি জনগনের টাকা ফেরৎ দেয়নাই।সেই চুরির টাকায় কেনা এই গাড়ীটিও।

আমি কাউকে বলতে শুনিনা--জিয়া/এরশাদ অবৈধ উপায়ে বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল করেছিল।বরং অনেকে বলতে শুনী তাঁরা সফল রাজনীতিবীদ ছিলেন! কেউ কেউ আগবাড়িয়ে বলে থাকেন--মেজর জিয়া ছিল নির্লোভ, সফল রাষ্ট্রনায়ক! !" জেনারেল এরশাদকে অনেকেই বলেন 'পল্লিবন্ধু'! উপরোক্ত কথাগুলী অশিক্ষিতরাই শুধু বলে তা নয়--দেশের শিক্ষিত সমাজের অনেকের মধ্যে বুদ্ধিজীবি, সুসিল, উচ্চপদস্ত সাংবাদিক সাহিত্যিকেরাও বলেন। জাতীগতভাবে নীতিনৈতিকতার মানদন্ড কতবেশী নিম্নগামী হলে বিপরীতধর্মীতা সর্বস্তরে গ্রহনযোগ্যতা পেতে পারে--তাও কি বলার অপেক্ষা রাখে!!
(চলমান পাতা:--৬)
      ruhulaminmujumder27@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন