সর্বগ্রাসী দূর্নীতির উৎপত্তি; টি আই বি'র ভূমিকা--বর্তমান সরকারের দূর্নীতি বিরূধী মনোভাব। (সপ্তম কিস্তি)
রুহুল আমিন মজুমদার:--কালক্রমে দূর্নীতির বিষবৃক্ষ ডালপালা ছড়িয়ে সারা দেশকে আচ্ছন্ন করে পেলেছে। দূর্নীতির শিকড় ছড়িয়ে পড়েছে বাঙ্গালী জাতীর রক্ত প্রবাহের সঙ্গে।অনৈতিকতা, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি সর্বক্ষেত্রে নীতিহীনতা জাতীয় পয্যায় পাথরসম শক্ত হয়ে জাতীকে আষ্টে পৃষ্টে বেঁধে নিয়েছে।সর্বক্ষেত্রে বাঙ্গালী জাতির বোধদয় লোপ পেয়েছে, চেতনা লোপ পেয়েছে, নীতিনৈতিকতা লোপ পেয়েছে। বর্তমান সময়ে এসে কোন কাজটি দূর্নীতিযুক্ত, অবৈধ--কোনটি নয় অনুধাবন করার শক্তি জতি হারিয়ে পেলেছে।চোট কয়েকটি উদাহরণ দিলে পাঠকদের বুঝতে আরো সহজ হবে। অনে করি। যেমন:--
মান্ধাতার আমলের 'মহাজনী সূদের ব্যবসা' হাল আমলে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে অফিস দখল করে 'মাল্টিপারপাস' ব্যাবসা নামধারন করেছে। ডিজিটাল সাইনবোর্ডে নামের আগে 'আল' শব্দযুক্ত অথবা ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক খোদাই করে ধর্মীয় নিম্নতম প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে চড়া সুদের রমরমা ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে।উক্ত ব্যাবসার একচেটিয়া মালিক 'জামায়াতের ইসলামী বাংলাদেশ' দলের অনুসারী নেতাকর্মীদের।আমরা সবাই বলি 'জামায়াত' একটি ইসলামী আদর্শ অনুসরনকারী 'রাজনৈতিক দল'।
দারিদ্রতা বিমোচনে কতিপয় এনজিও বাংলাদেশব্যাপী ব্যাপৃত রয়েছে। কাগজে কলমে দরিদ্র মহিলাদের ঋন দিয়ে স্বাবলম্বিতা অর্জনে সহযোগীতা করাই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। যেমন--'গ্রামীন ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, আশা ব্যাংক' সহ আরো কতিপয় এনজিও।স্বল্পসূদে দরিদ্র মহিলাদের ঋন দিয়ে তাঁরা সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধের সময় সীমা নির্ধারন করে দেয়। নির্দিষ্ট দিনে কিস্তির টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে 'ঋনগ্রহিতার গরু, ছাগল হাড়িপাতিল' নিয়ে টানাটানি শুরু করে। স্বল্প সুদের ঋনের আড়ালে সুদের হার ৬০/৭০ টাকা পয্যন্ত হয়ে থাকে এই সমস্ত এনজিও গুলীর।এই এনজিও মালিকদের আমরা সবাই বলি বুদ্ধিজীবি--এদের মধ্যে অনেকেই দেখা যায় আন্তজাতিক পয্যায় সবচেয়ে দামি নোবেল প্রাইজেও ভূষিত হয়।লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে--'তিনি কাজ করেন কথিত দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋন নিয়ে, নোবেল পুরস্কার পান 'তথাকথিত শান্তিতে'। আমরা সবাই তাঁদের বলি আন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব!!
এই একটিমাত্র ঘটনাও যদি চিন্তা করা যায়--তাহলেও অনূধাবন করা যায়, মূলত: বাংলাদেশে বহুজাতিক সংস্থাগুলী কি চায়।বহুজাতিক সংস্থার নিয়ন্ত্রক সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার প্রয়োজন পড়েছিল।
ঘুষকে নতুন নামে ডাকি পরিশ্রমের উপরি পাওনা(খোদ বর্তমান সরকারের মন্ত্রীর মূখেও শুনেছি)। চাঁদাবাজি, মাস্তানী, প্রভাব বিস্তারকে বলি রাজনীতি। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানী, চিনতাই মামলায় জেলে গেলে বলি 'জেলফেরৎ দলের ত্যাগী নেতা'! ঐসমস্ত পাড়া মহল্লার ত্যাগী নেতার 'জেলমূক্তিতে সম্বধনার আয়োজন চলে আবারও চাঁদার টাকায়। আমরা তাঁদের বলি দলের প্রভাবশালী নেতা!!
দখলবাজি, টেন্ডারবাজীকে বলি নেতা বহু গুনে গুনাম্বিত---"টাকা পয়সা, ধন সম্পদ অর্জনে সফল নেতা। কালবাজারীকে বলি এপার ওপার প্লাইং ব্যবসা। বড় পুঁজিদার ব্যাবসায়ী হলে বলি--"আমদানী-রপ্তানী জগতের 'ম্যাগনেট'!! সফল ব্যাবসায়ী!! ঐ সমস্ত দূর্নীতিবাজের অনৈতিক অহরনের টাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে অনন্তকাল কবরে নেকী যুক্ত করার চেষ্টাকারীকে বলি দানবীর!! আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে গগন বিদির্ণ করে মাঠজুড়ে হুজুরের সাথে তালমিলিয়ে "মারহাবা"য় শরিক হতেও দ্বিধা করিনা!!
ভাবতে অবাক লাগে--"বাঙ্গালীর বিবেচনা বোধ, চেতনাবোধ, সততার অহংবোধ "পুঁজিবাদী অর্থনীতির কল্যানে তথা খোলা বাজার অর্থনীতির কল্যানে কোথায় নেমে গেছে"--রুচিবোধ, ধর্মীয় চেতনাবোধ কত নিম্ন পয্যায়ের অস্ত্রে ভোঁতা করে দিয়েছে!!
কেউ যদি বলে 'বর্তমান সরকারের সফলতা রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে উধ্বমূখী, তথ্যমন্ত্রনালয় তথ্য প্রকাশ করেছে--আপনি কি একমত? আপনি কি মনে করেন সরকারের কোন খাতেই ব্যার্থতা নেই? আমি সোজা তাঁকে উত্তর দিতে কুন্ঠিত হবনা-"অবশ্যই ব্যার্থতা আছে--"সেই ব্যার্থতা সরকারের সফলতার যতগুলী খাতের সূচক উধ্বমূখী চিহ্নিত করে তথ্য প্রকাশ করেছে;ঠিক ততগুলী উধ্বমূখী খাতের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, শিরা উপশিরায় ''দূর্নীতি নামক অনৈতিক ব্যাধির জার্ম'' প্রবাহিত হচ্ছে। সরকার বাৎসরিক খাত ওয়ারী উধ্বমূখী সূচকের রেখচিত্র প্রদর্শন করেছে--"দূর্নীতির "এক্স-রে" রিপোর্ট প্রকাশ করেনি"!!
সরকারের উন্নয়ন বাজেটের অতিসহজ একটি উদাহরণ দিয়ে উল্লেখিত বক্তব্যের সত্যতা তুলে ধরছি-- "দূর্নীতি"র ধরন কত ব্যাপক, নিলজ্জ, সর্বব্যাপি যে কেউ হতভম্ব না হয়ে উপায় থাকেনা। উন্নয়ন প্রকল্পের বছর বছর ব্যায়বৃদ্ধির দিকে তাকিয়ে দেখুন--কি পরিমান অর্থ সরকারের উন্নয়ন বরাদ্ধে দুর্নীতি হয়। এমন সব প্রকল্পের নাম বলা যায়--'শুরুতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হয়েছিল শেষ পয্যন্ত কাজের পরিধি না বাড়িয়ে ব্যয় বরাদ্ধ তিন চার গুন বাড়ানোর পরও উক্ত প্রকল্পের কাজ হয়তোবা এখনো সমাপ্ত করা যায়নি।"
বিশেষ ভাবে উল্লেখ্ করতে চাই--প্রকল্প গ্রহন করার সময় আনুষাঙ্গীক খরছ সহ ১০% হারে ঠিকাদারের লভ্যাংশ যুক্ত করে ব্যয়বরাদ্ধ নির্ধারন করা হয়েছিল।বছরান্তে তিন চার বার ব্যয় সংশোধনের কি কারন থাকতে পারে-? বলতে পারেন মূল্য স্ফীতির কারনে ব্যয় বরাদ্ধ বাড়াতে হয়েছে-- অবান্তর নয়, এক্ষেত্রে অর্থনীতিতে কত পার্সেন্ট মূল্যস্ফীতি ঘটলে প্রকল্পব্যায় দ্বিগুন হতে পারে? আপনি কি কখনও শুনেছেন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোন অর্থবছর মূল্যস্ফীতি দ্বিগুন আকার ধারন করেছিল?
এই প্রসঙ্গে ১১ই ডিসেম্বর ২০১৬ ইং সালে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার উপ সম্পাদকীয় কলামে জনাব আবু নোমান বিস্তারীত এক নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন।নিবন্ধে দূর্নীতির ভয়াবহতা এবং ক্ষমতাসীন সরকারের উদাসীনতার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। উক্ত নিবন্ধের দুটি চরন পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবহু কপি পেষ্ট তুলে দিলাম।
তৎসময়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান 'নজিবুর রহমান' একটি পরিসংখ্যানে বলেছেন, রফতানিকারকদের দেয়া বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ যে পরিমাণ বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হয় তা ঠেকানো গেলে বছরে ২টি পদ্মা সেতুর সমপরিমাণ অর্থায়ন করা সম্ভব। ড. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, রাষ্ট্রের সব খাত মিলিয়ে দুর্নীতির পরিমাণ কমপক্ষে জিডিপির ৫ শতাংশ। যাতে ক্ষতির পরিমাণ ৬৫ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার কম নয়।
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, নীতিনির্ধারকদের দুর্নীতি সম্পর্কে উদাসীনতার কয়েকটি উদাহরন পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন-- ‘নিজেদের লোকদের সমর্থনের কারণে সোনালী ও বেসিক ব্যাংক অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি পারেননি’। শেয়ার কেলেঙ্কারির কারণে ৩৪ লাখ বিনিয়োগকারী পথে বসলেও অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন-- ‘আমি শেয়ারবাজার বুঝি না’। হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে হইচই করার কিছু নেই বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী। এমনকি তিন বা চার হাজার কোটি টাকা Its Nothing বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ব্যাপারে এফবিসিসিআই সভাপতি সরকারের আস্থাভাজন আবদুল মাতলুব আহমেদ বলেছিলেন, ‘এটা কোন বিষয় না--‘অত বড় চোর নয়, ছেঁচড়া চোর’।
এবার বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ এই সম্পর্কীত বিষয় কি বলেছিল-- সেদিকে নজর দিয়ে দেখি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন--''সবাই পায় সোনার খনি, তেলের খনি--আমি পেয়েছি চোরের খনি"। যারেই যেখানে দায়িত্ব দেই--"সে কেবল চুরি করে’।
(চলমান পাতা:--৭)
ruhulaminmujumder27@gmail.com
রুহুল আমিন মজুমদার:--কালক্রমে দূর্নীতির বিষবৃক্ষ ডালপালা ছড়িয়ে সারা দেশকে আচ্ছন্ন করে পেলেছে। দূর্নীতির শিকড় ছড়িয়ে পড়েছে বাঙ্গালী জাতীর রক্ত প্রবাহের সঙ্গে।অনৈতিকতা, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি সর্বক্ষেত্রে নীতিহীনতা জাতীয় পয্যায় পাথরসম শক্ত হয়ে জাতীকে আষ্টে পৃষ্টে বেঁধে নিয়েছে।সর্বক্ষেত্রে বাঙ্গালী জাতির বোধদয় লোপ পেয়েছে, চেতনা লোপ পেয়েছে, নীতিনৈতিকতা লোপ পেয়েছে। বর্তমান সময়ে এসে কোন কাজটি দূর্নীতিযুক্ত, অবৈধ--কোনটি নয় অনুধাবন করার শক্তি জতি হারিয়ে পেলেছে।চোট কয়েকটি উদাহরণ দিলে পাঠকদের বুঝতে আরো সহজ হবে। অনে করি। যেমন:--
মান্ধাতার আমলের 'মহাজনী সূদের ব্যবসা' হাল আমলে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে অফিস দখল করে 'মাল্টিপারপাস' ব্যাবসা নামধারন করেছে। ডিজিটাল সাইনবোর্ডে নামের আগে 'আল' শব্দযুক্ত অথবা ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক খোদাই করে ধর্মীয় নিম্নতম প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে চড়া সুদের রমরমা ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে।উক্ত ব্যাবসার একচেটিয়া মালিক 'জামায়াতের ইসলামী বাংলাদেশ' দলের অনুসারী নেতাকর্মীদের।আমরা সবাই বলি 'জামায়াত' একটি ইসলামী আদর্শ অনুসরনকারী 'রাজনৈতিক দল'।
দারিদ্রতা বিমোচনে কতিপয় এনজিও বাংলাদেশব্যাপী ব্যাপৃত রয়েছে। কাগজে কলমে দরিদ্র মহিলাদের ঋন দিয়ে স্বাবলম্বিতা অর্জনে সহযোগীতা করাই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। যেমন--'গ্রামীন ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, আশা ব্যাংক' সহ আরো কতিপয় এনজিও।স্বল্পসূদে দরিদ্র মহিলাদের ঋন দিয়ে তাঁরা সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধের সময় সীমা নির্ধারন করে দেয়। নির্দিষ্ট দিনে কিস্তির টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে 'ঋনগ্রহিতার গরু, ছাগল হাড়িপাতিল' নিয়ে টানাটানি শুরু করে। স্বল্প সুদের ঋনের আড়ালে সুদের হার ৬০/৭০ টাকা পয্যন্ত হয়ে থাকে এই সমস্ত এনজিও গুলীর।এই এনজিও মালিকদের আমরা সবাই বলি বুদ্ধিজীবি--এদের মধ্যে অনেকেই দেখা যায় আন্তজাতিক পয্যায় সবচেয়ে দামি নোবেল প্রাইজেও ভূষিত হয়।লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে--'তিনি কাজ করেন কথিত দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋন নিয়ে, নোবেল পুরস্কার পান 'তথাকথিত শান্তিতে'। আমরা সবাই তাঁদের বলি আন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব!!
এই একটিমাত্র ঘটনাও যদি চিন্তা করা যায়--তাহলেও অনূধাবন করা যায়, মূলত: বাংলাদেশে বহুজাতিক সংস্থাগুলী কি চায়।বহুজাতিক সংস্থার নিয়ন্ত্রক সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার প্রয়োজন পড়েছিল।
ঘুষকে নতুন নামে ডাকি পরিশ্রমের উপরি পাওনা(খোদ বর্তমান সরকারের মন্ত্রীর মূখেও শুনেছি)। চাঁদাবাজি, মাস্তানী, প্রভাব বিস্তারকে বলি রাজনীতি। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানী, চিনতাই মামলায় জেলে গেলে বলি 'জেলফেরৎ দলের ত্যাগী নেতা'! ঐসমস্ত পাড়া মহল্লার ত্যাগী নেতার 'জেলমূক্তিতে সম্বধনার আয়োজন চলে আবারও চাঁদার টাকায়। আমরা তাঁদের বলি দলের প্রভাবশালী নেতা!!
দখলবাজি, টেন্ডারবাজীকে বলি নেতা বহু গুনে গুনাম্বিত---"টাকা পয়সা, ধন সম্পদ অর্জনে সফল নেতা। কালবাজারীকে বলি এপার ওপার প্লাইং ব্যবসা। বড় পুঁজিদার ব্যাবসায়ী হলে বলি--"আমদানী-রপ্তানী জগতের 'ম্যাগনেট'!! সফল ব্যাবসায়ী!! ঐ সমস্ত দূর্নীতিবাজের অনৈতিক অহরনের টাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে অনন্তকাল কবরে নেকী যুক্ত করার চেষ্টাকারীকে বলি দানবীর!! আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে গগন বিদির্ণ করে মাঠজুড়ে হুজুরের সাথে তালমিলিয়ে "মারহাবা"য় শরিক হতেও দ্বিধা করিনা!!
ভাবতে অবাক লাগে--"বাঙ্গালীর বিবেচনা বোধ, চেতনাবোধ, সততার অহংবোধ "পুঁজিবাদী অর্থনীতির কল্যানে তথা খোলা বাজার অর্থনীতির কল্যানে কোথায় নেমে গেছে"--রুচিবোধ, ধর্মীয় চেতনাবোধ কত নিম্ন পয্যায়ের অস্ত্রে ভোঁতা করে দিয়েছে!!
কেউ যদি বলে 'বর্তমান সরকারের সফলতা রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে উধ্বমূখী, তথ্যমন্ত্রনালয় তথ্য প্রকাশ করেছে--আপনি কি একমত? আপনি কি মনে করেন সরকারের কোন খাতেই ব্যার্থতা নেই? আমি সোজা তাঁকে উত্তর দিতে কুন্ঠিত হবনা-"অবশ্যই ব্যার্থতা আছে--"সেই ব্যার্থতা সরকারের সফলতার যতগুলী খাতের সূচক উধ্বমূখী চিহ্নিত করে তথ্য প্রকাশ করেছে;ঠিক ততগুলী উধ্বমূখী খাতের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, শিরা উপশিরায় ''দূর্নীতি নামক অনৈতিক ব্যাধির জার্ম'' প্রবাহিত হচ্ছে। সরকার বাৎসরিক খাত ওয়ারী উধ্বমূখী সূচকের রেখচিত্র প্রদর্শন করেছে--"দূর্নীতির "এক্স-রে" রিপোর্ট প্রকাশ করেনি"!!
সরকারের উন্নয়ন বাজেটের অতিসহজ একটি উদাহরণ দিয়ে উল্লেখিত বক্তব্যের সত্যতা তুলে ধরছি-- "দূর্নীতি"র ধরন কত ব্যাপক, নিলজ্জ, সর্বব্যাপি যে কেউ হতভম্ব না হয়ে উপায় থাকেনা। উন্নয়ন প্রকল্পের বছর বছর ব্যায়বৃদ্ধির দিকে তাকিয়ে দেখুন--কি পরিমান অর্থ সরকারের উন্নয়ন বরাদ্ধে দুর্নীতি হয়। এমন সব প্রকল্পের নাম বলা যায়--'শুরুতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হয়েছিল শেষ পয্যন্ত কাজের পরিধি না বাড়িয়ে ব্যয় বরাদ্ধ তিন চার গুন বাড়ানোর পরও উক্ত প্রকল্পের কাজ হয়তোবা এখনো সমাপ্ত করা যায়নি।"
বিশেষ ভাবে উল্লেখ্ করতে চাই--প্রকল্প গ্রহন করার সময় আনুষাঙ্গীক খরছ সহ ১০% হারে ঠিকাদারের লভ্যাংশ যুক্ত করে ব্যয়বরাদ্ধ নির্ধারন করা হয়েছিল।বছরান্তে তিন চার বার ব্যয় সংশোধনের কি কারন থাকতে পারে-? বলতে পারেন মূল্য স্ফীতির কারনে ব্যয় বরাদ্ধ বাড়াতে হয়েছে-- অবান্তর নয়, এক্ষেত্রে অর্থনীতিতে কত পার্সেন্ট মূল্যস্ফীতি ঘটলে প্রকল্পব্যায় দ্বিগুন হতে পারে? আপনি কি কখনও শুনেছেন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোন অর্থবছর মূল্যস্ফীতি দ্বিগুন আকার ধারন করেছিল?
এই প্রসঙ্গে ১১ই ডিসেম্বর ২০১৬ ইং সালে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার উপ সম্পাদকীয় কলামে জনাব আবু নোমান বিস্তারীত এক নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন।নিবন্ধে দূর্নীতির ভয়াবহতা এবং ক্ষমতাসীন সরকারের উদাসীনতার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। উক্ত নিবন্ধের দুটি চরন পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবহু কপি পেষ্ট তুলে দিলাম।
তৎসময়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান 'নজিবুর রহমান' একটি পরিসংখ্যানে বলেছেন, রফতানিকারকদের দেয়া বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ যে পরিমাণ বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হয় তা ঠেকানো গেলে বছরে ২টি পদ্মা সেতুর সমপরিমাণ অর্থায়ন করা সম্ভব। ড. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, রাষ্ট্রের সব খাত মিলিয়ে দুর্নীতির পরিমাণ কমপক্ষে জিডিপির ৫ শতাংশ। যাতে ক্ষতির পরিমাণ ৬৫ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার কম নয়।
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, নীতিনির্ধারকদের দুর্নীতি সম্পর্কে উদাসীনতার কয়েকটি উদাহরন পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন-- ‘নিজেদের লোকদের সমর্থনের কারণে সোনালী ও বেসিক ব্যাংক অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি পারেননি’। শেয়ার কেলেঙ্কারির কারণে ৩৪ লাখ বিনিয়োগকারী পথে বসলেও অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন-- ‘আমি শেয়ারবাজার বুঝি না’। হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে হইচই করার কিছু নেই বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী। এমনকি তিন বা চার হাজার কোটি টাকা Its Nothing বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ব্যাপারে এফবিসিসিআই সভাপতি সরকারের আস্থাভাজন আবদুল মাতলুব আহমেদ বলেছিলেন, ‘এটা কোন বিষয় না--‘অত বড় চোর নয়, ছেঁচড়া চোর’।
এবার বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ এই সম্পর্কীত বিষয় কি বলেছিল-- সেদিকে নজর দিয়ে দেখি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন--''সবাই পায় সোনার খনি, তেলের খনি--আমি পেয়েছি চোরের খনি"। যারেই যেখানে দায়িত্ব দেই--"সে কেবল চুরি করে’।
(চলমান পাতা:--৭)
ruhulaminmujumder27@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন