বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন--- জনগনের আশা আখাংকা পূরণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দলিলে রুপান্তরীত হোক---

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় কাউন্সিল--জনগনের আশা আক্ষাংকা পুরনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দলিলে রুপান্তরীত হোক----
______________________________________________________________

        বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ গনতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অনুশীলন করে আসছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগই একমাত্র দল, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্য পয্যন্ত যা কিছু দেশ ও জাতির জন্য অর্জিত হয়েছে-- সব অর্জনই এই দলটির হাত ধরে এসেছে। নিম্নে কয়েকটি উদাহরন তুলে ধরার চেষ্টা করছি-
   যেমন--(১) ছাত্র রাজনীতি :--বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের সুচনা করেন।(২) ভাষা আন্দোলন--দলটি বাঙলা ভাষা রক্ষার আন্দোলনে সবচেয়ে বড় এবং অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে।
(৩) নির্বাচন ও জোটগত রাজনীতি:-- দলটি প্রতিষ্ঠা কালিন সময় থেকে জনগনের উপর নির্ভর শীল। ১৯৫৪ সালের পাকিস্তানের প্রথম সাধারন নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে জোটগত রাজনীতির সুচনা করে। ঐ সময়ে ইস্যুভিত্তিক জোট গঠন ও নির্বাচনে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই পালন করে। পরবর্তীতে বিদ্যমান সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যেই প্রবনতাটি লক্ষনীয় ভাবে অনুসৃত হচ্ছে।
  (৪)  জনগনের উপর নির্ভরতা :-- যে কয়টি সাধারন নির্বচন অনুষ্ঠিত হয়েছে (খালেদার -১৫ই ফেব্রুয়ারীর ভোটার বিহীন নির্বাচন ছাড়া) সব কয়টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগনের উপর নির্ভরশীলতা এবং জনগনের জন্য রাজনীতি এই ধারনাটি প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।আওয়ামী লীগকেও তৃনমুল থেকে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
(৫) নির্দিষ্ট ইস্যুভিত্তিক রাজনীতি :--বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই একমাত্র দল-জন চাহিদার  গুরুত্ব অনুযায়ী দাবি সমুহকে  দফাক্রমে সাজিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করার উদাহরন রাখতে পেরেছেন। পরবর্তিতে সকল রাজনৈতিক দল রাজনীতির এই ধারাটি অনুসরন করতে দেখা গেছে।উদাহরন হিসেবে বলা যায় যুক্তপ্রন্টের ২১ দফা, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ভিত্তিক আন্দোলন সংগ্রাম।
(৬) জনপ্রতিরোধের দৃষ্টান্ত  :--   বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল অর্থাৎ গনসংগঠন। বিপ্লবী চেতনা সম্পন্ন বা তৎদ্রুপ কোন আদর্শ বা উদ্দেশ্য দলটি ধারন করে না। তথাপি নেতৃত্বের বলিষ্টতায় একটি জনসম্পৃত্ত রাজনৈতিক গনসংগঠন বা দল সময়ের প্রেক্ষিতে 'স্বসস্ত্র বিপ্লবী' ভুমিকায় অবর্তীন্ন হতে পারে- তাঁর কৃতিত্বও শতভাগ দলটির ঝুড়িতেই রয়েছে।
(৭) গনঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব :--৬দফাকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত  আসামী করে পাকিস্তান সরকার জেলে নিলে ৬৯এর গন-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়।জনতা শেখ মজিবুর রহমানকে নির্গাত মৃত্যুদন্ড হতে রক্ষা করে তাঁদের মাঝে নিয়ে আসে।জনগনের ইচ্ছার বহি:প্রকাশের নিকট আইনও নত হতে বাধ্য হয়- ইহা তার প্রকৃষ্ট উদাহরন।
(৮) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতার কৃতিত্ব :--৬৯ এর গনভ্যুত্থানের ফসল ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক বিজয়।এই প্রথম কোন রাজনৈতিক দল সাধারন নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ট আসন পাওয়ার উদাহরন সৃষ্টি হল।যারফলে তৎকালিন পুর্বপাকিস্তানের একমাত্র বৈধ নেতৃত্বের অধিকারি রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ এবং তাঁর একক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হলেন।
(৯)  মুক্তিযুদ্ধ :--বিশ্বের খুব কম দেশের রাজনৈতিক দলই আছে তাঁর দেশের জনগনের মুক্তির জন্য সসস্ত্র যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে পেরেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঝুড়িতে ১৯৭১ এ বাঙ্গালী জাতির  স্বাধীনতার আখাংকা বাস্তবায়নের  লড়াইয়ে অনুষ্ঠিত" মহান মুক্তিযুদ্ধের" একক নেতৃত্বের কৃতিত্ব শতভাগ রয়েছে।
(১০) স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব :-- অবশ্যম্ভাবি বলা যায়,একটা জাতির পরম চাওয়া পাওয়া তাঁর নিজস্ব জাতিয় স্বাধীনতা এবং ভুখন্ডগত অধিকার। স্বাধীনতা ও  সার্বভৌমত্ব দুটি চরম এবং পরম পাওয়াই ঘটেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং তাঁর নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের একক নেতৃত্বে।
(১১) তত্বাবধায়ক সরকারের ধারনা:-যদিও বিধানটি অগনতান্ত্রিক এবং চরম লজ্জাকর বিষয় একটা জাতির জন্য। তথাপিও জনগনের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পদ্ধতিটির উদ্ভাবন করে। দীর্ঘ  আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারকে দাবিটি মানতে বাধ্য করে।'৯১  এ বিএনপির শাষনামলে উক্ত দাবিটি সংবিধানে সংযোজনেও বাধ্য করার একক কৃতিত্ব আওয়ামী লীগেরই।
(১২) তত্ববধায়ক প্রথা বাতিল:-- যদিও সময়ের দাবিতে রাজনীতিবিদ এবং প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের জন্য উক্তরুপ লজ্জাস্কর একটি বিধান প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল,কালের প্রবাহে স্বৈরাচার সামরিক সরকার খমতা দখলের বাস্তবতা তিরূহীত হলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বিধানটি বাতিল করে। সুতারাং প্রতিষ্ঠিত করন এবং বাতিলকরন উভয়ের কৃতিত্বই আওয়ামীলীগের ঝুড়িতেই জমা আছে।
 (১৩) উন্নয়ন অগ্রগতি নির্দিষ্ট করন ও বাস্তবায়ন :--জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাবলম্ভি করার মানসে তাঁর লালিত স্বপ্নের বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন তাঁর ঘোষিত দ্বিতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে।তাঁর সেই স্বপ্ন অংকুরে বিনষ্ট করে দিয়েছিল দেশীয় এবং আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রকারিরা। ১৯৭৫ ইং সালের ১৫ই আগষ্ট স্বপরিবারে তাঁকে হত্যা করে জাতির আশা আখাংকার সমাধি ঘটায় হত্যাকারিরা।দীর্ঘ চড়াই উৎরাই পেরিয়ে  তাঁর জৈষ্ঠকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'রুপকল্প ২০২১' ঘোষনা করে বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছেন 'উন্নয়ন ও অগ্রগতির' শীর্ষ শীখরে।এইরুপ উন্নয়ন ও অগ্রগতির নির্দিষ্টকরনের ধারনা প্রতিষ্ঠিত করন ব্যবস্থা, একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার পক্ষেই প্রচলন সম্ভব হয়েছে। ধারনাটি বর্তমানে উন্নয়নকামি তৃতীয় বিশ্বের রোলমডেলে রুপান্তরীত হয়েছে।এই প্রথম বাংলাদেশের কোন সরকার প্রধানের নীতি আদর্শ বিশ্ববাসির প্রশংসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হল।
             উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের বিরুধী দল সমুহ ইতিমধ্যেই তাঁদের ঘোষিত উন্নয়ন কর্মসূচিতে 'রুপকল্প ৩০'নামে ধারনাটি স্থান করে নিয়েছে।অর্থাৎ 'দেশরত্ম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন' বিরুধী দলের দলীয় কাউন্সিলে গ্রহন করায় উক্ত ভিষন  ''জাতীয় ঐক্যমতের 'দর্শনে'' রুপ পরিগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে"।
   (১৪)  বদ্ধমুল ধারনার যবনিকাপাত:--  বাংলাদেশে একবার যে দল নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় যায় দ্বিতীয়বার তাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ- দেশের রাজনীতির ইতিহাসে ধারনাটির মুলে কুঠারাগাত করতে সক্ষম হয়েছে। দ্বিতীয়বারও নিরঙ্কুষ সংখ্যাগরিষ্টতায় নির্বাচিত হয়ে নতুন রেকর্ডটি ঝুড়িতে নিতে সক্ষম হয়েছে। পরপর দুইবার নির্বাচিত হয়ে ধারাবাহিকভাবে দেশ শাসন করছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা।তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নকামী দেশের জন্য ইহা এক বিরল দৃষ্টান্ত।যেখানে প্রতিনিয়ত হাজারো সমস্যায় জির্ণশীর্ণ করে দিতে পারে সরকারের জনপ্রিয়তা।
 (১৫) বিতর্কিত নির্বাচন :-- যদিও দ্বিতীয় দফার নির্বাচনটি নিয়ে দেশে বিদেশে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। ইহা সত্যযে, এই নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে।
(১৬) অবিতর্কিত দেশশাষন:-- ইহা সত্য যে, এইরুপ নির্বাচন প্রচলিত গণতান্ত্রিক রীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় । কিন্তু  বিতর্কিত ও অশুদ্ধ নির্বাচনের কোনো বিকল্পও তখন ছিল না।  নির্বাচন না হলে অনির্বাচিত কারো না কারো ক্ষমতা গ্রহণের পথ প্রশস্ত হত। গণতান্ত্রিক শাসনের ধারাবাহিকতা অবশ্যই ক্ষুন্ন হত। দেশরত্ম শেখ হাসিনা সেটা হতে দেননি। নির্বাচন একেবারে না হওয়ার চাইতে মন্দের ভাল নির্বাচনকে বেছে নিয়েছেন তিনি। এইক্ষেত্রে তিনি যে দুরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন এবং ধৈয্যের যে পরাকাষ্টা দেখিয়েছেন আগামীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে বিধৃত হবে। দীর্ঘ পয্যবেক্ষনে দেখা যায়, ট্রুটিপুর্ণ নির্বাচন দেশের মানুষের কােছ তেমন অ-গ্রহণযোগ্য হয়নি, তার প্রমাণ শেখ হাসিনার সরকার গত দুই বছরের অধিক সময় আন্দোলন সংগ্রামহীন নির্ভেজাল ভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকা।
      (১৭) ষড়যন্ত্রের জাল চিহ্ন :--  তথাকথিত রাজনীতিক বিশ্লেষকগন ভেবেছিলেন ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার সরকার বড়জোর মাস কয়েক ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। নতুন ভাবে সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতে  নির্বাচনের জন্য মানুষ  রাজপথে নেমে আসবে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধপক্ষ বিরাহীন অপপ্রচার করে আসছে, দেশে  গণতন্ত্র নেই এবং এক ধরনের কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।  মুলত: সত্যটি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারকে মোকাবেলা করার অক্ষমতা থেকেই এই ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তাঁরা। উক্তরুপ অপপ্রচার বিশ্ববাসি এবং দেশবাসির বুঝতে কষ্ট হয়নি।এই প্রথম কোন রাজনৈতিক দলের আহব্বানে রাজপথে জনগন নামেনি, আন্তজাতিক মহল সহযোগীতা বন্ধ করেনি। তৃতীয় বিশ্বের সমস্যা সংকুল একটি দেশের জন্য ইহা এক বড়প্রাপ্তি। তাছাড়াও এই প্রথম বাংলাদেশের কোন সরকারের পক্ষে বিশ্বমোড়লের শতাধিক অনুরুধ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
  (১৮) বিনাযুদ্ধে স্থল ও জলভাগ জয়। :--বিশ্ব ইতিহাসে নজীরবিহীন উদাহরন সৃষ্টি করতে পেরেছেন জাতির জনকের কন্যা, একটি বারুদের কণাও খরছ ব্যাতিরেকে শক্তিধর ভারত এবং ফ্যাসিবাদি মায়ানমার হ'তে বিশাল সমুদ্র এলাকা জয় করে বাংলাদেশের অন্তভুক্ত করেছেন। বিশাল ভারতের সঙ্গে ইন্দিরা -মুজিব মৈত্রী চুক্তির আওতায় চিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে দশ হাজারেরও বেশী একর ভুমিতে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন।সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার এই গতিশীল নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। বিনাযুদ্ধে ইঞ্চিপরিমান ভুমি অধিকারে নেয়ার উদাহরন বিগত হাজার বছরের বিশ্ব ইতিহাসেও নেই। একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেই অসম্ভব কে সম্ভব করতে পেরেছেন।
  (১৭) মসৃন পথের সৃষ্টি :--বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথ চলা কখনই মসৃন ছিলনা। প্রতিনিয়ত দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছে দলটি.।সরকারে থেকেও হয়েছে, বিরুধীদলে থেকেও হয়েছে।দলের অভ্যন্তর থেকেও হয়েছে, বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমুহের পক্ষ থেকেও হয়েছে। জাতির জনকের কন্যার অসিম সাহষ, ত্যাগের মনোভাব, চরম ধৈয্যের ফসল আজকের মসৃন পথের  সন্ধান পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই মসৃন পথ সৃষ্টিতে একমাত্র পুত্রের মৃত্যু হুমকিকেও তোয়াক্কা করছেন না তিনি। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগে বাংলাদেশের জম্ম, তাঁর জৈষ্ঠ কন্যার ত্যাগের ফসল আজকের উন্নতি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি। তাঁর একমাত্র লক্ষ বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তর করে তাঁর পিতার আত্মাকে শান্তি দেয়া। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ৬৭ বছরের ইতিহাসে বর্তমান সময়টাই সবচেয়ে বেশি অনুকূল এবং মসৃন। টানা আট বছরের অধিক সময় ক্ষমতায় আছে, ক্ষমতার বর্তমান মেয়াদ পূর্ণ করতে  খুব বেশি বেগ পেতে হবে বলে দেশবিদেশের অভিজ্ঞ মহল  মনে করেন না।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনে এই ধারণা চালু আছে যে, শুধু এই মেয়াদ নয়, পরের মেয়াদেও দেশ শাসন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ ২০২৪ইং সালের আগে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর উৎযাপনের সময় শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতিকে নেতৃত্ব দিবেন। বিষয়টি পরশ্রিকাতরতার বশে কারো শুনতে খারাপ লাগলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য  দুরাশা বলে মনে হয়না।  পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে,  আওয়ামী লীগের স্বপ্ন পূরণের আশায় 'দুরশা সৃষ্টি হওয়ার সম্বাবনা শুন্যের ঘরে ।
   এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আগামী জাতীয় কাউন্সিলে কিছু মৌলিক কাজ সম্পন্ন করতে হবে জাতির জনকের কন্যাকে। আওয়ামী লীগ যেহেতু সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক দল। সেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে দল সম্পর্কে বর্তমান সময়ের ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় নিতে হবে। দলের মধ্যে বেড়ে উঠা যে সমস্ত আগাছা তৈরি হয়েছে,সে সমস্ত আগাছা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করাতে হবে। আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে দলের আগাছা, হাইব্রিড নেতা, দুবৃত্ত নেতা, সন্ত্রাসী মাস্তান লালনকারি নেতা, দখলবাজ অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী মন্ত্রী নেতাদের নিয়ন্ত্রন করার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। নচেৎ ৬৭ বছরের উল্লেখীত গৌরবের ইতিহাস মানুষ অবিতর্কিত ভাবে স্মরন করবে বলে মনে হয় না।
  এবারের সম্মেলনে অবশ্যই তরুন নেতাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসবেন। প্রত্যেক জেলায় বহু ত্যাগি নেতা তাঁদের সততা, নেতৃত্ব,বিচক্ষনতা দিয়ে গনমানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।তাঁদের খুঁজে খুঁজে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে স্থান করে দিতে হবে।
    বিশ্বরাজনীতি এবং দেশীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট মুল্যায়নে স্পষ্ট অনুধাবন করা যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দীর্ঘ বছর বাংলাদেশের জনগনের সেবা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।সুতারাং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনাও নেয়ার ঘোষনা মাননীয় নেত্রী ইতিমধ্যে নেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।আকারে ইঙ্গিতে বলার চেষ্টাও করেছেন অধিকতর তরুনদের স্থান করে দেয়ার জন্য প্রবীন নেতাদেরকে।পদক্ষেপ যথাযথ এবং যুগোপযুগী নিসন্দেহে।প্রবীনদেরকে অধিকহারে সরকারে  অন্তভুক্ত করে নবীনদের দলীয় কাজে অন্তভুক্ত করা সময়ের দাবী। আশা করি নেত্রী তৃনমুলের মনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবেন।
     সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেবদেরকে গঠনতান্ত্রিক ক্ষমতা প্রয়োগে কায্যকর নির্দেশনা এবারের সম্মেলনে আসা উচিৎ।বাৎসরিক বর্ধিত সভায় সাংগঠনিক রিপোর্ট প্রদান বাধ্যতামুলক করে দেয়ার নির্দেশনাও এবারের সম্মেলন থেকে আসবে আশা করি।দীর্ঘবছরের ক্ষমতা উপভোগে দলীয় স্থবিরতা কাটিয়ে গতিশীল সংগঠন গড়ে উঠার সমুদয় উপায় চলমান রাখার নীতি কৌশলের প্রতি অধিক দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজনীয়তা কেন্দিয় নেতৃবৃন্দ আশা করি ভুলে যাবেননা।
ঘুষ, দুর্নীতি, দখলবাজী, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর অবশ্যই করার পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।দুর্নীতিকে কিছুতেই প্রশ্রয় দেয়ার বর্তমান সময়ে আর কোন প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করিনা।আমলাদের দৌরাত্ব প্রশমনে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহনের এখনই সময়।বাংলাদেশের জনগনের ইচ্ছা,আশা, আক্ষাংকার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাঁদের নির্বাচিত প্রতিনীধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়ার সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা উচিৎ এবারের সম্মেলনে।
৬৯' এর সম্মেলন বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীনতা দিয়েছিল, '৭৪ এর সম্মেলন জাতিকে "জাতীয় সরকার" উপহার দিয়েছিল, ৮৮'জাতীয় সম্মেলন জাতীকে ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদ্ভোদ্ধ করেছিল, ২০১৬ ইং এর বনাঢ্য সম্মেলন জাতিকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেয়ার যুগান্তকারি পদক্ষেপ সমূহের বিবরণ থাকবে ইহাই বাস্তবতা।উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের পথে সবচাইতে বড় বাধা সর্বক্ষেত্রে 'দুর্নীতি' ইহাও বাস্তব।দুর্নীতির বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্সে'র নীতি গ্রহন করে উপায় সমুহকে সুনির্দিস্ট করা সময়ের দাবী।আশা করি এবারের সম্মেলন দুর্নীতি দমন বিষয় বেশী মনযোগী হবে।
  উপহংহারে বলতে চাই,  আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব, বিশেষ করে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনাকে বুঝতে হবে , দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দেশে বিদেশে যতই সুনাম হোক না কেন, অভ্যন্তরে ব্যাপক রোগের আলামত দিনে দিনে স্পষ্ট হচ্ছে। বাইরে থেকে মোটাতাজা দেখা গেলেও ভেতরে ভেতরে তার অনেকটাই ফাঁপা। ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের সর্ব অঙ্গে মেদ চর্বি  জমেছে। চর্বি মেদ কোন অবস্থায় সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। অভ্যন্তরীন দুর্বলতা গুলো প্রকট হয়ে বাইরে প্রকাশ না পেলেও দুর্বলতা যে আছে-তা মেনে নিতে হবে এবং সেগুলো দূর করার জন্য আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। বার বার ঘোষনা দিয়ে, দেশব্যাপি দুবৃত্ত নেতাদের তালিকা করে, জনগনের মনের ক্ষোভ দূর করা সম্ভব হবেনা।
       জনগন চায় ঐ সমস্ত হাইব্রিড দুবৃত্ত নেতাদের মুখে যথোপযুক্ত লাগাম দেয়ার সময় বয়ে যাচ্ছে।তাঁদের নিয়ন্ত্রন করার উপায় সমুহকে নার্সিং না করে বার বার নিয়ন্ত্রনের ঘোষনা জনগন আর শুনতে চায়না।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্যাগী অসংখ্য নেতাকর্মী এবং জনগন আশা করে এই সম্মেলন থেকে অনুপ্রবেশকারি হাইব্রিড তথাকথিত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এবং বাস্তব প্রয়োগ।দলের তৃনমুল আশা করে এবারের জাতীয় কাউন্সিলে সদস্য সংগ্রহের সমম্বিত রুপরেখা প্রনিত হবে এবং সেই রুপ রেখা যথাযথ বাস্তবায়ন পুর্বক দুর্বত্ত,সন্ত্রাসী, দখলবাজ, সুযোগ সন্ধানীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
  জাতীর জনকের প্রতিষ্ঠিত এবং   মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারি দলের অসংখ্য নেতাকর্মীর জীবনহানী,সম্পদহানি, রক্তদান বেসুমার ত্যাগের বিনীময়ে দলকে বর্তমান অবস্থানে নিয়ে এসেছে।কতিপয় অনুপ্রবেশকারি দুবৃত্তের কারনে দলের ভাবমুর্তিতে কালোছায়ার স্পর্ষ লাগুক তা কাম্য হতে পারেনা। কালবিলম্ভ না করে অনুপ্রবেশকারি ব্যাক্তিদের চিহ্নিত করে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহনের সুনির্দিষ্ট পদক্ষের নীতি কৌশল এই সম্মেলন থেকে ঘোষনা হবে আশা করি।পরিশেষে জাতীয় সম্মেলনের সর্বাঙ্গিন সফলতা কামনা করে আজকের লেখা শেষ করছি।
         ruhulaminmujumder27@gmail.com

                       'জয়বাংলা         জয়বঙ্গবন্ধু'

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা