বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল দলের গতিশীলতা রক্ষা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পুরণের টার্নিং পয়েন্ট-----


    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল দলের গতিশীলতা রক্ষা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্নপুরণের টার্নিং পয়েন্ট----
____________________________________________________________
    
    ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারীত হয়ে প্রস্তুতি নিস্পন্নের পয্যায়।এবারের জাতীয় কাউন্সিল অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় ভিন্নরুপ পরিগ্রহ করবে বলে পত্রপত্রিকা সহ মিডিয়াগুলী আবাস দিচ্ছে।প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে দলটি আন্দোলন সংগ্রাম, জেল জুলুম সামাল দিতেই ব্যাস্ত ছিল।এত লম্বা সময় ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করার সুযোগ কোন দিন পায়নি দলটি। ফলে আন্দোলন সংগ্রামে এত বেশী অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে দলটি---'ক্ষমতায় থেকেও অনেক সময় প্রতিবাদী কন্ঠে অনেক বিষয়ে বিদ্রোহ করতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের'। 'অর্থাৎ নীজের বিরুদ্ধে নীজেই বিদ্রোহ করে বসে খেয়ালের বসে'। তনু হত্যা নিয়ে এতবেশী সরব প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল সরকারের ভিতরে বাহিরে শেষাবদি সেনা বাহিনীর মধ্যেই বিশৃংখলা দেখা দেয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল।সাগর-রুনি হত্যাকান্ডেও একই অবস্থা পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়।
      এই প্রথম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মানের পথে অনেক গুলী মৌলিক বাধাবিপত্তি চিরতরে বিলুপ্ত করার বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হতে পেরেছে দলটি।দীর্ঘ বছর ক্ষমতায় থাকার সুবাদে জাতির জনকের আদর্শ অনুসরনে 'কাংক্ষীত উন্নয়ন অগ্রগতি'ও এসেছে।
    আওয়ামীলীগের জাতীয় কাউন্সিল  মানেই--" সংস্কার, গতিশীলতা, নতুনত্ব, আধুনীকতা, প্রগতি,নীতি আদর্শ পরিবর্তন পরিবধন, সংকোচন,বিভাজন"। কোন একটি জাতীয় সম্মেলনে চমক সৃষ্টির ধারাবাহিকতা থেকে দলটি বিচ্যুত হয়নি। গঠনতন্ত্রের সংস্কার করে যুগোপযোগি চলমান বিশ্ব রাজনীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা থেকেও পিছু হটেনি দলটি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহুল প্রচলিত প্রবাদের ন্যায় প্রতিষ্ঠিত সত্যে পরিণত হয়েছে -- "আওয়ামীলীগ আজকে যাহা চিন্তা করে অন্যসব রাজনৈতিক দল তা দশ বছর পরে চিন্তা করে। আওয়ামী লীগ শ্রষ্টার ভুমিকা পালন করে,অন্যরা তা অনুসরন,অনুকরন করে।" বর্তমান আওয়ামী লীগ এবং জাতির জনকের আদর্শের আওয়ামী লীগের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ বিকশিত হয়েছিল ৬ দফা কেন্দ্রিক স্বাধীনতার আক্ষাংকার বহি:প্রকাশ এবং পশ্চিম পাকিস্তানীদের শাষন শোষনের বাস্তব চিত্রের প্রতিবাদের বীজ থেকে।আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ' বাংলাদেশ স্বাধীন করা হবে'। সেই মোতাবেক দল ও রাজনীতি পরিচালিত হয়েছিল।
    পক্ষান্তরে বর্তমান আওয়ামী লীগ পুন:জীবিত হয়েছে 'স্বৈরশাষকদের অগনতান্ত্রীক ফ্যাসিস্ট শাষন, লুটপাটে'র বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের ভিত্তি রচনার সফল নেতৃত্বের গুনে। জনগনের মাঝে এই দলের প্রয়োজনীতা ও শাষন সম্পর্কে ষড়যন্ত্র কারীদের নানামূখি বিভ্রান্তি চড়ানোর  প্রত্যক্ষ জবাবে বিগত আটবছরের শাষনকাল ছিল স্বর্ণযুগ। জাতির জনকের কন্যার অনড় মনোভাবের কারনে দলটি শতবছরের বিপয্যয়কর অবস্থা ও অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে।শুধু ঘুরে দাঁড়িয়েছে বললে কম বলা হবে-বলা যায় শতবছর বাংলাদেশের রাজনীতিতে "প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক" দল হিসেবে 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত শক্তি হিসেবে স্বীকৃত হতে পেরেছে।
     ফলত: এবারের জাতীয় কাউন্সিলে  ব্যাপক পরিবর্তন,রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত নীতি, দলীয় কাঠামো ইত্যাদিতে নতুনত্ব আনায়ন বিগত দিনের তুলনায় অনেকাংশে  স্বয়ংক্রিয়ভাবে 'গুরুত্বপুর্ণ  চাহিদার ভিত্তি' রচিত হয়ে আছে। সামাজিক, রাজনৈতিক, বিশ্বরাজনীতি, প্রতিবেশীদের সংঙ্গে সৎভাব, মুসলিম রাষ্ট্র সমুহের সঙ্গে  যে কোন সময়ের তুলনায় অধিক কায্যকর বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক, আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারন, অভ্যন্তরীন বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমুহের রাজনীতিতে ধ্বস, অর্থনৈতিক ক্রমাগত উন্নতি ইত্যাদি বিষয় সমুহ বিশ্লেষনে দেখা যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশ পরিচালনার গুরু দায়িত্ব বড়কোন দুর্বিপাক না হলে 'অনেক বছর' পালন করার প্রয়োজন হতে পারে।
     
    বঙ্গবন্ধু যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি তখন তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জন করেছিল দলটি। তখনই আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের মর্যাদা ও স্বীকৃতি লাভ করেছিল । সত্তরের নির্বাচনের ঐতিহাসিক বিজয় ছিল আওয়ামী লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এর মধ্য দিয়ে দলটি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার নৈতিক ও আইনগত ভিত্তি অর্জন করেছিল। ইতিহাস এর অংশ নয়, ইতিহাস তৈরিতে একক এবং অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিল আওয়ামী লীগ। 
    এবার তাঁর কন্যা ২০০৮ ইং সালের বিশাল বিজয়ের পর জনগনের জীবনমান উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি, বৈদেশিক বানিজ্যের প্রসার, দেশকে ডিজিটালে রুপান্তরের ক্ষেত্র ব্যাপক কর্মযজ্ঞের কারনে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বিরুধীদল অস্তিত্ব সংকটে আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে।বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে  জাতীরজনকের কন্যার শাষনের পক্ষে অঘোষিত জাতীয় ঐক্য সুচিত হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পরিগ্রহ করেছে। ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুধীতাকারী বিদেশী রাষ্ট্র সমুহ  শেখ হাসিনার শাষনকে বৈধতা দিয়ে দ্বিগুন উৎসাহ উদ্দিপনায় সাহায্য ও সহযোগীতার হাত প্রসারীত করেছে এবং করছে। বিরুধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও বলতে বাধ্য হচ্ছে "শুধুমাত্র নির্বাচন গনতন্ত্রের মাপকাঠি নয়, রাষ্ট্রের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলী সচল রাখাই গনতন্ত্র।" বিএনপির মহাসচিব তাঁদের দলীয় আলোচনা সভায় স্বীকারোক্তি দিয়ে প্রকাশ্য বলতে বাধ্য হচ্ছেন--"বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে বিএনপি বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে আগামী ৫/৭ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে।"
    মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শাষনভার গ্রহন করে, রাষ্ট্রের সমূদয় কাঠামো গঠন করার প্রাক্কালে সময়ের প্রয়োজন ছিল অবশ্যম্ভাবি। সসস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে দেশের অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শিল্পকলকারখানা, রাস্তা ঘাট,পুলকালভার্ট,ব্যাংকবীমা, বাড়ীঘর সবকিছুই ছিল বিধ্বস্ত লন্ডভন্ড। উপরিন্তু যুদ্ধের ফলে সাধারনের নিকটেও মারানাস্ত্রের মজুদ গড়ে উঠেছিল। নয়মাসের যুদ্ধ ফেরৎ মুক্তিযুদ্ধা, প্রায় পাঁছ লক্ষের কাছাকাছি বীরঙ্গনা মা-বোনের পুণ:বাসন, রাজাকারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেড়ে নেয়া ইত্যাদি সহজ ব্যাপার ছিলনা।  এরই মধ্যে যোগ হয়েছিল প্রকট খাদ্য ঘাটতি। সব কিছু মিলিয়ে নতুন দেশের নতুন সরকার তড়িৎ সব সামাল দেয়ার সক্ষমতা অর্জনের আগেই যুক্ত হতে থাকে দেশী ও আন্তজাতিক চক্রান্ত।মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি নানাভাবে নতুন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যেই আওয়ামী লীগের ওপর চরম বিপর্যয় নেমে আসে। অবষেষে ৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে তাঁদের ষড়যন্ত্র সফল করে।
     ৭৫ এর পর আওয়ামী লীগের মধ্যম ও তৃনমুলের নেতারা, এবং কি মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশও দলে দলে দলত্যাগ করে জাতির জনকের হত্যাকারিদের সাথে হাত মিলায়। ফলে আওয়ামী লীগের নি:শেষের ধারনাটি জনমনে পোক্ত আকারই ধারন করেছিল। কালক্রমে সব শঙ্কা, সংশয় দূর হয়েছে। আওয়ামী লীগের পুনরুত্থানের সম্ভাবনা নিয়ে যারা সন্দেহ পোষণ করতেন তাদের সব অনুমান ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ভুল প্রমাণ করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জৈষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহন করা প্রসঙ্গে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না গিয়ে সংক্ষেপে শুধু এটাই বলি, "শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নবজীবন লাভ করেছিল, শক্তি সঞ্চয় করেছিল, ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৬ ইং সালে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল।"
     , ২০০১ ইং সালের পর কয়েকদফা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। বাংলাদেশের কোথাও আওয়ামীলীগকে মাঠেঘাটে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি।এবং কি জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও প্রত্যেক জেলা উপজেলা সফরে বাধা প্রদান করা হয়েছিল। তাঁর নীজ জেলায় জনসভাস্থলে পয্যন্ত ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল-'তাঁকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে।' একমাত্র এবং একমাত্র অসীম সাহষ, দুরদর্শীতা, ক্ষিপ্রতা, ধৈয্য,  রাজনৈতিক বিচক্ষনতা, আল্লাহর উপর ভরসার গুনে--তিনি টিকে আছেন।শুধুমাত্র টিকে থাকা নয়--"খালেদা জিয়ার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টাকে নস্যাৎ করে বিপুল বিজয়ের মাধ্যমে ২০০৮ ইং সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পেরেছেন"। 
     সুতারাং 'শেখ হাসিনার' নেতৃত্বে ২০০৮ইং সালের আওয়ামীলীগের উত্থান বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বুঝাপড়ার উত্থান।বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগকে পতন ঘটানো যতই সহজ হয়েছিল- শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগকে পতন ঘটানো ততই কঠিন হবে--ইহাই স্বাভাবিক।"আবেগের মৃত্যু হতে পারে-আদর্শের মৃত্যু হয়না'। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব 'দল এবং দেশ'কে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল-তাঁর কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্ব--'সে উচ্চতার মাত্রা কোন অংশেই কমেনি। বরং অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামীলীগ কতৃক সরকার পরিচালনা দৃশ্যত উন্নত, আধুনিক ধ্যান ধারনায় পরিপুষ্টতা পেয়েছে।"
    বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময়ের চক্রান্তটি আবারও ২০১৪/১৫ ইং সালে জাতীয় নির্বাচমকে সামনে রেখে কায্যকর করার চেষ্টা করেছিল আগের ষড়যন্ত্রিরাই। দু:খ্যজনক হলেও সত্য--"আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, লুটেরা, হাইব্রিড নেতাদের বেশীরভাগ ভয়ে দেশত্যাগ করতে দেখা গেছে।তাঁদের পাসপোর্ট তল্লাসি দিলে আমার কথার সত্যতা মিলবে।কিন্তু শেখ হাসিনা সামান্য সংখ্যক ত্যাগি নেতাদের নিয়ে তাঁর দায়িত্ব পালনে ছিলেন অনড় ও ইস্পাত কঠিন।শেখ হাসিনাকে নড়াতে সর্ববৃহৎ বিরুধীদল হঠকারী রাজনীতির আশ্রয়ে নিয়ে--" খুন, গুম,  হত্যা, লুট, জঙ্গি উত্থান, নাশকতা, আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে  উলটো তাঁরাই রাজনৈতিক অস্তিত্ব সংকটে পড়ে কোন রকম বিবৃতি সর্বস্ব দলে রুপান্তরীত হয়ে টিকে আছে।" 
     জাতির জনকের কন্যার সে দু:সময়ের অনড় মনোভাবের কারনে আওয়ামীলীগ শত বছরের বিপয্যয়কর সমুহ সম্ভাবনা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে।শুধু ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে বললে ইতিহাস আমাকে ক্ষমা করবে না-"বলা যায় শতবছর বাংলাদেশের রাজনীতিতে "প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক" দল হিসেবে 'বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক শক্তি" বঙ্গবন্ধুর পরিবার বাংলাদেশের জন্য অপরিহায্য পরিবার' হিসেবে জনগনের স্বীকৃতি,সমীহ আদায় করতে সক্ষম হয়েছে"।
    ২০১৫ সালে ষড়যন্ত্রীরা যদি দৈব দুর্বিপাকে সফলকাম হতে পারতো তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবস্থা '৭৫ পরবর্তীর চেয়ে শতগুন বেশী বিপয্যয়কর হ'ত। নিয্যাতন নীপিড়নের স্বীকার হয়ে অর্ধ শতাব্দিতেও মাথা তোলে ঘুরে দাঁড়াবার শক্তি অবশিষ্ট রাখা হ'ত না।। সেই পরিকল্পনার স্রোতে আবগাহন করেছিলেন তথাকথিত ধর্মের ধ্বজাধারী হেফাজত থেকে আরাম্ভ করে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি এবং কি   নাস্তিক কমিউনিষ্টেরাও। 
    উল্লেখিত বিষয়ে লক্ষ রেখে এবার আশা করি দলের গঠনতন্ত্রে আসবে সুদুর প্রসারী চিন্তা চেতনার পরিপুষ্টতা এবং অধিকতর  সংস্কার। দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসি আশা করে জাতীর জনকের কন্যার "গতিশীল নেতৃত্ব বিদ্যমান থাকাবস্থায়  'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলটির গঠনতন্ত্রে স্থায়ী কাঠামো প্রতিষ্ঠাকরন আবশ্যক।"নচেৎ দীর্ঘবছর ক্ষমতা উপভোগহেতু দলের  সাংগঠনিক কাঠামো, কর্মীদের চেতনাবোধ, রাজনীতির স্পৃহা, জেলা নেতাদের জনবিচ্ছিন্নতা, দলে এলাকাভিত্তিক একাধিক মাফিয়া চক্রের উত্থান হেতু 'সাংগঠনিক স্ববিরতা' দেখা দিতে পারে। এবারকার সম্মেলনে উক্ত বিষয়টি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত গুলী নেয়া হবে আশা করি।
      এক্ষেত্রে গঠনতান্ত্রীক ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যাপক সংস্কার একান্ত প্রয়োজন হবে। এখানে একটি বিষয়ের উপর বিশেষ নজর দেয়া একান্তই অবশ্যক--"অভিজ্ঞ নেতাদের সরকারে ব্যাস্ত রাখলেও অধিকতর রাজনীতি সচেতন তরুন সাংগঠনিক সম্পাদকের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে প্রত্যেক নেতাকে তিন বা চার জেলার দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে।কোন অবস্থায় তাঁর নীজ জেলায় তদারকির দায়িত্ব দেয়া যাবে না। তাঁদেরকে দায়িত্বরত: জেলায় দলের গঠনতান্ত্রীক সিদ্ধান্ত তৎক্ষনাৎ নেয়ার ক্ষমতা দেয়া যেতে পারে। তাঁদের জন্যে কেন্দ্রীয় কমিটির নিজস্ব তহবিল থেকে পরিবার পরিজন পরিচালনা করার প্রয়োজনীয় পরিতোষিকের ব্যাবস্থা রাখা বাঞ্চনীয়। ইউনিয়ন পয্যায় বিশেষ করে সম্মেলনে তাঁদের উপস্থীতি নিশ্চিতকরন সহ জেলা উপজেলা সম্মেলন, সভা, সমাবেশের সংখ্যায় বাধ্যতামুলক করা প্রয়োজন। কেন্দ্রের বাৎসরিক বর্ধিত সভায় সাংগঠনিক রিপোর্ট প্রদান  বাধ্যতামুলক করে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নেয়া ব্যাবস্থাদির কারন ও প্রতিকারের রিপোর্ট একই সঙ্গে দিতে বাধ্য রাখার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। দেশব্যাপি সংগঠনকে সচল ও গতিশীল রাখার স্বার্থে সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদক সহ প্রেসিডিয়াম মেম্ভারগন তাঁদের স্ব-স্ব-সাংগঠনিক ক্ষমতায় ছাড় দিয়ে হলেও সাংগঠনিক সম্পাদকদের দলীয় কাজে নিয়োজিত রাখার স্বার্থে তাঁদের ক্ষমতা বৃদ্ধি আবশ্যক হতে পারে।কোন অবস্থায় জেলা-উপজেলায় মাফিয়া ডনের উত্থান যেন না হতে পারে সে দিকে অধিক নজরদারির প্রয়োজন।দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারা জনগনের কষ্ট পাওয়া রোধে সুনির্দিষ্ট  নীতি প্রনয়ন পুর্বক বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতেই হবে।
ruhulaminmujumder27@gmail.com

                     "জয়বাংলা           জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন