'২১শে আগষ্টের হামলার পরিকল্পনা সাত গম্ভুজ মসজিদে--পরিকল্পনায় ""তারেক জিয়া সরাসরি জড়িত""---!!

‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা হয় সাত গম্বুজ মসজিদে’--"তারেক পরিকল্পনায় সরাসরি জড়িত"----!!!!!

______________________________________________________
______________________________________________________

   খালেদা জিয়া কি কারনে ১/১১ এর সেনা শাষিত তত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে ন্যাক্কারজনক শর্তে দুই ছেলেকে দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিতে রাজি হলেন--দিন যতই গড়াচ্ছে গোপন রহস্য সমুহ ততই পরিস্কার হচ্ছে।তারেক বিদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে ফিরে আসার চিন্তা কেন করে নাই--তার হদিসও প্রকাশ শুরু হয়েছে।খালেদা জিয়া সংক্ষিপ্ত  পথে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য কেন এত ব্যাকুল পাগলপ্রায় ছিলেন--তাও দিনের আলোর ন্যায় পরিস্কার হওয়া শুরু হয়েছে।
     "ব্যাক্তিগত ভাবে আমি খুবই আশ্চায্য ছিলাম এই ভেবে-'হেফাজতের শাফলাচত্বরে অবস্থানের প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়া দলীয় নেতাকর্মীদের তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ'এবং ঢাকায় বসবাসরত: 'জনতাকে রাজপথে নেমে আসার আহব্বান' শর্তেও উভয়ের কেউই তাঁর ডাকে সাড়া দেয়নি কেন? তাঁর বাসার সামনে বালির ট্রাক ও পুলিশী ব্যারিকেটের কারনে তিনি বাসার ফটকে গাড়ীতে দুপুর দ'টা থেকে সন্ধা সাতটা পয্যন্ত অপেক্ষার পরও দশ/বিশ হাজার নেতাকর্মীর মিছিল ব্যারিকেট সরিয়ে নেত্রীর পথ পরিস্কার করার জন্য কেন আসেনি ?"
       অনেকেই বলতে চেষ্টা করবেন পুলিশী বাধার কারনে বা পুলিশি অভিযানের ভয়ে হেফাজতের সাথে একাত্ম হতে যায়নি। ঢাকার অবস্থা ভাল ছিলনা বলে কেউ নেত্রীকে উদ্ধার করার জন্য আগ্রহি হয়নি।আমি তাঁদের শুধু বলব ভারতীয় উপমহাদেশ পরবর্তি পাকিস্তান সর্বশেষ বাংলাদেশের কোন আন্দোলনে পুলিশী ব্যারিকেট ছিলনা? কোন আন্দোলন বিনা রক্তপাতে সফল হয়েছে? জনগনের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহন ছাড়া কোন আন্দোলন গতিপথ পেয়েছে? বিগত আন্দোলনে মিছিল মিটিং, হরতাল অবরোধে সরাসরি সম্পৃত্ত কোন কর্মী নিহত হয়েছিল কি?
তবে হ্যা অনেকেই হত্যার শিকার হয়েছেন আমি স্বিকার করি- তবে সেই হত্যা নাশকতা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আগুনবোমা নিক্ষেপ করার সময় পুলিশের গুলিতে।  নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে নয়।নাশকতা কি আন্দোলনের অংশ? যদি তাই মনে করেন তবে অনেকেই মারা গেছে সত্য।
রাজনীতির দু'টি বাঁকের একটিতেও যদি নেতাকর্মীদের সাড়া পাওয়া যেত তবে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হ'ত কিনা জানিনা-তবে 'বিএনপি এবং তাঁদের জোটের রাজনীতির এই দুরবস্থা হ'তনা'--আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।
উপরের কথাগুলি বললাম এই কারনে-নিম্নের ঘটনাটি পড়ে আমি নিজেও সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের ন্যায় নষ্টালিজিয়ায় আবর্তে ঘুরপাক খাওয়া শুরু করেছি। আমার কেন জানি বার বার মনে হচ্ছে "চার দলীয় জোট, হেফাজত এবং এরশাদের" রাজনীতির এই করুন দশার জন্য "মহান আল্লাহর সরাসরি হস্তক্ষেপ আছে।"

হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানের নেতৃত্বে একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা হয় ঢাকার সাত গম্বুজ মসজিদে বসে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জঙ্গি নেতারা হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের সঙ্গেও বৈঠক করে।আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে ওই ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত জানিয়েছেন মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ।

একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার সর্বশেষ সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ আদালতে সাক্ষ্য দেয়া শুরু করেছিলেন গত সপ্তাহের শুরুতে।

ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সোমবারও সাক্ষ্য দেন তিনি। সাক্ষীর জবানবন্দিতে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনায় জড়িতদের বিষয়ে তথ্য দেন আব্দুল কাহার আকন্দ। গ্রেনেড হামলার উদ্দেশ্য নিয়েও কথা বলেন সিআইডির এ কর্মকর্তা।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার তদন্ত ভিন্ন পথে নিতে সিআইডির দুই তদন্ত কর্মকর্তা ও একজন তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশে জজ মিয়া কাহিনী সাজিয়েছিল, দোষ স্বীকার করা সত্ত্বেও মুফতি হান্নানকে আসামি করা হয়নি। আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে এসব জানান মামলার সর্বশেষ সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ।

একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার সর্বশেষ সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ। ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলার তদন্ত সঠিক গতিপথ পেলেও গ্রেনেডের উৎস ও হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের বিষয়ে কিছু না থাকায় তাকে সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগাারের পাশে স্থাপিত ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ এজলাসে শনিবার সাক্ষ্য দেয়া শুরু করেন তিনি। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ওই মামলার তদন্তের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, তার সাক্ষীতে মূলত যে বিষয় উঠে এসেছে তিনজন তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, মুন্সি আতিকুর রহমান এবং বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন। তারা এই মামলা দু’টি তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে জজ মিয়া নাটক কিভাবে সৃষ্টি করেছেন সেটাও তিনি উল্লেখ করেছেন।

আব্দুল কাহার আকন্দ বলেন, মূল অপরাধীদের আড়াল করতে যা যা করনীয় সবই করেছেন সেই সময়ের তদন্ত কর্মকর্তারা।এ প্রসঙ্গে অবশ্য আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, সংঘটিত এই জঘন্য অপরাধে যারা সম্পৃক্ত এবং যারা নির্দেশ দাতা, সহায়তা প্রদানকারী, পরিকল্পকারী তাদের আড়ালকারী কি করেছেন, কিভাবে করেছেন সেটাও তিনি উল্লেখ করেছেন। তাদের তদন্তকালে মুফতি অাব্দুল হান্নান গ্রেফতার ছিলো অন্য মামলায় সেটা জানার পরও তাকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি এবং গ্রেফতারও দেখানো হয়নি।ইহাও কি সম্ভব?
খালেদা জিয়া এবং চার দলীয় জোটকে স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সহ নির্বাচন সংযুক্ত অন্য সকল মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছিলেন।খালেদা প্রধান মন্ত্রীর সাথে রুঢ আচরনের মাধ্যমে উক্ত প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করেন। তিনি নাশকতা অরাজগতা সৃষ্টি করে সংক্ষিপ্ত পথে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিলেন। তার অনেক কারনের মধ্যে অন্যতম একটি কারন '২১শে আগষ্টের বর্বর হত্যাকান্ড'। ২১ শে আগষ্টের বোমা হামলায় তারেক সরাসরি জডিত ছিলেন মা খালেদা ভালভাবেই জানতেন।সাধারন নির্বাচনে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় গেলেও "২১ আগষ্ট সহ আরো কতিপয় মামলা স্বাভাবিক আইনের গতিতেই চলবে।" শেখ হাসিনা ২০০৮ইং সরকার গঠন করেই চাঞ্চল্যকর কয়েকটি মামলার স্বাভাবিক গতিপথে আনায়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে ততদিনে কায্যকর করে রেখেছিলেন।ইচ্ছা করেও মামলা গুলী স্বাভাবিক ভাবে 'নির্বাচিত সরকার' গতিপথ পরিবর্তন করতে পারতেন না। যেমন পারেনি চার দলীয় জোট পাঁছ বছর ক্ষমতায় থেকেও "বঙ্গবন্ধু হত্যার" বিচার বাতিল বা রহিত করতে।
অস্বাভাবিক সরকার গঠন খালেদার একান্ত মনোকামনাই ছিল।সেই সরকার যে কোন শক্তির হলেও আপত্তি ছিলনা তাঁর।প্রয়োজনে সেই সরকারের সঙ্গে যে কোন শর্তে  আপোষ করারও পক্ষপাতি ছিলেন তিনি। শুধু মাত্র তাঁর পরিবারের "লুটপাট এবং ২১শে আগষ্টের হত্যা পরিকল্পনা" থেকে রক্ষা পাওয়ার মনোবাসনা পুরণ খলেই তিনি রাজি হয়ে যেতেন।
"আল্লাহ সর্বশক্তিমান, তিনি সব জানেন, দেখেন-অত্যাচার্য্য হলেও সবাই দেখেছেন "জামায়াত,হেফাজত, এরশাদ,চারদল,বিএনপি সহ সকল 'শক্তি ধর্মীয় উম্মাদনা ' সৃষ্ট্রি করেও শেখ 'হাসিনার সরকারকে সামান্যতম টলাতে পারেন নাই'-কোথায় পেলেন শেখ হাসিনা এই মনোবল? একাদা ভিখারীর দেশ, পাঁছ বারের দুর্নীতিতে শীর্ষ দেশ মাত্র পাঁছ বছরের মধ্যে 'নিম্নমধ্য আয়ের' দেশে রুপান্তরীত হল-কোথায় পেলেন শেখ হাসিনা এই যাদুর কাঠি?গ্রাম্য একটা 'কালভার্টের' টাকা যে দেশটি ঋন করে আনতে হ'য়েছে- সেই দেশটি সাত বছরের মাথায় পদ্মাসেতু বানায়-কোথায় পেলেন শেখ হাসিনা এর যোগান? সবই মহান সৃষ্টি কর্তার ইচ্ছা-আল্লাহ শেখ হাসিনাকে বাংলার জনগনের মন জয় করে ক্ষমতায় থাকার জন্যই  তিনি অসম্ভবকে সম্ভব করে নিচ্ছেন-এতে কোন সন্দেহ নেই।"

     " জয়বাংলা         জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন