জাতির গৌরবের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগের বিরুদ্ধে সুক্ষ অপপ্রচার শুরু করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা-এখনি কায্যকর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন
ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সুক্ষ অপপ্রচার অনেকদূর এগিয়ে গেছে-এখনি রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী----
________________________________________________________________
________________________________________________________________
দীর্ঘ একুশ বছর সরকারি পৃষ্টপোষকতায় বাংলাদেশের গৌরব উজ্জল ছাত্র রাজনীতিকে কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশ্যে সামরিক সরকার সমূহ পেশীশক্তির উত্থান ঘটিয়েছিল অত্যান্ত সুক্ষ মেজাজে।রাজনীতির অন্যান্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রে অবক্ষয় ঘটাতে পারলেও ছাত্র রাজনীতিতে সহজে পারছিল না। ঠান্ডা মেজাজের চক্রান্তকারি জিয়া তরুন প্রজর্ম্মের চাওয়া পাওয়ার প্রতি লক্ষ রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র রাজনীতিবীদকে সম্পুর্ণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় গভীর "সমুদ্রে আনন্দ ভ্রমনের আমন্ত্রন" জানিয়ে সরকারি ভাবে চিঠি দেন। উক্ত চিঠিতে আয়োজিত কতিপয় বিষয় উল্লেখ করে ডট দিয়ে বলা হয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। "ব্যবস্থা রাখা হয়েছে" অংশটিকে পদস্থলীত ছাত্র নেতারা গুরুত্ব সহকারে গ্রহন করে নির্দিষ্ট দিনে "রাষ্ট্রীয় তত্বাবধানে সাজানো প্রমোদ তরীতে" উঠে পড়েন।কাল চশমা, সাফারী স্যুট পরিহিত মেজর জিয়াও তাঁদের সঙ্গে আসন গ্রহন করেন। কথিত আছে যে, -"আনন্দ ভ্রমনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া যুবকদের জন্য এমন কোন উপকরনের অভাব ছিলনা-"যাহা ঊক্ত প্রমোদ তরীতে ছিলনা।" 'চক্রান্তের আনন্দ ভ্রমনে'র চব্বিশ ঘন্টা পার হওয়ার আগেই ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ দ্রুত পাল্টাতে থাকে।ছাত্রদের শ্লোগানের ভাষা পরিবর্তিত হয়ে 'স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের' ব্রাস ফায়ারে" রুপান্তরীত হ'তে থাকে। শিক্ষাঙ্গন থেকে একুশটি বছর পাঠ্যসুচি মুখস্তের আওয়াজের স্থলে বোমা, গুলীর মহু মহু আওয়াজই শুনতে হয়েছে সাধারন ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকদের। কৃষক শ্রমিকের গ্রাম্য ছেলে মেয়েরা কালের পরিক্রমায় 'জনপ্রীয় মেধাবী ছাত্র নেতাদে'র সান্নিধ্যের বদলে "বড় ভাই' ' বসে'র অস্ত্রের বহরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ছাত্রজীবনকে করেছে অন্ধকার পরিবারকে করেছে নি:স্ব। সেই ধারাবাহিকতার অংশ বিশেষ এখনও যে নেই বা থাকবেনা একবাক্যে অস্বিকার করার কোন উপায় আছে বলে আমি মনে করি না।
কৃষকের নয়ন মণি, শ্রমিকের রক্তের ভাই, মায়ের আদরের দুলাল, বাবার অহংকারের মধ্যমণি কত হাজারো 'মেধা' রাজনীতির চোরাগলিতে প্রবেশ করে 'হয় লাশ নয় তো হাত পা হারিয়ে পরিবারের বোঝা' হয়ে বাড়ী ফিরেছেন তাঁর কোন পরিসংখ্যান কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব হবেনা। ' বড় ভাই বা বসের' জ্বরে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন' বাংলাদেশ ছাত্রলীগ'ও আক্রান্ত হয়নি তা আমি বলব না।তবে ইহাও একান্ত বাস্তবতা এবং চিরন্তন সত্য যে-'উক্ত দীর্ঘ সময় একান্ত আওয়ামী পরিবারের সন্তানগন লুকিয়ে লুকিয়ে তাঁর পরিবারের আদর্শের সংগঠন ছাত্রলীগের জন্য কাজ করেছেন।' যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংগঠনিক শক্তি প্রবল ছিল সেই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে 'বড়ভাই' 'বস' এর অনুপ্রবেশও ঘটেছিল অস্বিকার করিনা।মুলত: 'অবক্ষয়ের ছাত্র রাজনীতি'র অস্ত্রের মোকাবেলায় শুধুমাত্র 'গলাবাজি'র দিয়ে সংগঠন করার অর্থ হচ্ছে--'বোকামির নামান্তর মাত্র।' সঙ্গত কারনে আমি মনে করি 'পেশীশক্তি'র রাজনীতিতে ছাত্রলীগও সময়ে 'ফ্রাংঙ্কেষ্টাইন' হয়ে উঠেছিল।
জাতির জনকের কন্যা, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ছাত্রলীগ অনেকটাই 'বড় ভাই' বস তুল্য রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে 'কাগজ কলম' হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে।এর জন্য জননেত্রী দৃশ্যমান বেশ কয়েকটি প্রসংশনীয় উদ্যোগ নিয়ে সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন অক্ষুন্ন রেখেছেন। তম্মধ্যে "অবিবাহিত ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব, নিয়মিত ছাত্রদের নেতৃত্ব গ্রহনে উৎসাহ প্রদান, নির্দিষ্ট সংখ্যক উচ্চতর পদ পদবি ছাত্রীদের দ্বারা পুরণ, বয়সের বাধ্যবাধকতা ইত্যাদি কতিপয় সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বিগত কয়েক বছর থেকে কঠোরভাবে অনুসরন করার নীতি গ্রহন করে বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছেন।" অন্যান্ন দলের ছাত্র নেতাদের তুলনায় অভিজ্ঞতা কম থাকার কারনে ছাত্রলীগের রাজনীতি অনেক সময়ে হোঁচট খেতে দেখা যায়।তারপরেও ছাত্র রাজনীতি নিয়মতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে 'সাময়িক লাভে'র উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করে 'ভবিষ্যত নেতৃত্ব' সৃষ্টির সুদুরপ্রসারী চিন্তা চেতনাকেই প্রাধান্য দিয়ে যাচ্ছেন জাতির জনকের কন্যা।
কোন গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ছাত্র রাজনীতি নিয়মতান্ত্রিকতায় নিয়ে আসতে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। তাঁরা চায় কৃষক শ্রমিকের আদরের দুলাল তাঁদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হয়ে শিক্ষালয়ে মারুক বা মরুক অসুবিধা নেই। তাঁদের ছেলে মেয়ে উন্নত বিশ্বের নামকরা শিক্ষাঙ্গনে 'উন্নত শিক্ষা'ই গ্রহন করছে-'তাঁরাতো মরবে না'। চাষাভূষার ছেলেমেয়ে নষ্ট হলে তাঁদের কি আসে যায়। তাঁদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত থাকলেই চলবে। তাঁরা বিশ্বাস করে -'বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আধুনিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠার কোন 'উপকরন' নেই'। বাংলাদেশে 'মৌলবাদি অলস শিক্ষা ব্যবস্থা' চালু থাকুক বা 'ইংরেজদের মুখস্ত বিদ্যার' কেরাণী শিক্ষা চালু থাকুক উভয় শিক্ষা ব্যবস্থায় তাঁদের উদ্দেশ্য সফল হয়। এতে তাঁদের ছেলেমেয়েরা সরকারের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত হ'তে পারবে। কৃষক শ্রমিকের ছেলে মেয়েরা অনুন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে 'নিন্ম শ্রেণীর' চাকুরী প্রাপ্ত হ'য়ে তাঁদের ছেলে মেয়েদের চা, মদ আনা নেয়ার ফরমায়েশ খাটুক--'তাঁদের সেবার কাজে ব্যবহৃত হোক'। 'উন্নত শিক্ষা, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা নীতি' চালু করার আন্দোলন দানাবেধে উঠার আগেই প্রয়োজনে লক্ষ কোটি টাকা খরছ করে হলেও সেই আন্দোলনকে 'ধর্মবিরুধী', 'নৈতিকতা বিরুধী' আখ্যা দিয়ে বানচাল করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়-' এদেশের এলিট শ্রেনির রাজনীতিবিদ থেকে আরাম্ভ করে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের বৃহদাংশ। অথছ তাঁরা অনেকেই ধর্মকর্মের ধারেপাশেও থাকে না এবং কি তাঁদের জীবন যাপন, খাওয়া দাওয়া, চলাফেরা, আচার অনুষ্ঠান সব কিছুই পাশ্চাত্যের অনুকরনে অভ্যস্ত। সাধারন মানুষ তাঁদের কাছেও ঘেঁষতে পারে না-- গায়ের পছা গন্ধ তাঁদের নাসিকাতন্ত্রে প্রবেশ করার সমুহ সম্ভাবনায়।
মুল বিষয়ে ফিরে আসি- বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন দীর্ঘ বছর পর যখন নিশ্চিন্তে ছাত্রদের মাঝে সাংগঠনিক কাজ করার পরিবেশ পেয়েছে তখন কুচক্রি মহল ভিন্ন কায়দায় তাঁদের চরিত্রহননের মহা পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আপনারা সকলেই অবগত আছেন যে, '২০০৮ ইং সালে বিপুল সমর্থন নিয়ে জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার অব্যবহিত পরেই একশ্রেনীর মানুষ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরকে কথায় কথায় ' নাস্তিক' বলে আখ্যায়িত করা শুরু করে।যদিও দীর্ঘ চল্লিশ বছর ঐ সমস্ত আস্তিকদের বিশ্বাসীরা ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের কোথাও একটি 'মাদ্রাসা এমপিও করা বা ইসলামের প্রচার প্রসারে নন্যুন্নতম কাজও করেনি'। দৃশ্যমান যাহাই আছে তাঁর অধিকাংশ জাতির জনকের সাড়ে তিন বছরের ক্ষনস্থায়ী শাষনকালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল-বাদবাকি তাঁর কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার হাতে গড়া। এই ব্যাপারে কেউ যদি চেলেঞ্জ নিতে চান-আমি স্বাগত: জানাই, কমেন্ট বক্স আপনার জন্য উম্মুক্ত।
আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে চক্রান্ত ব্যার্থ হওয়ার পর 'তনু হত্যা' নিয়ে -আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে জড়িত করে তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের চক্রান্তে লিপ্ত হয়। পরিবেশ এতই ঘোলাটে করার চক্রান্ত দৃষ্ট হয় যে -'সেনা বাহিনীর মধ্যেই বিশৃংখলা দেখা দেয়ার সমুহ সম্ভাবনা দেখা দেয়। সবচেয়ে বড় দু:খ্যজনক ঘটনা হচ্ছে-" বিরুধী শিবি'রে যতই না 'ব্যাঙ্গচিত্রের সমালোচনা' দেখা গেছে তারচাইতে অধিক 'মুজিব সেনাদের শিবিরে' পরিলক্ষিত হয়। সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগনের অংশ নয়-ভীন গ্রহের এলিয়েন গোত্রের জনসমষ্টি--তদ্রুপ চিত্রিত করার চক্রান্ত অব্যাহত রাখে।
বাংলাদেশ ছাত্র লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্ত নতুন নয়- ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা বহুবার পরিলক্ষিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ইতিমধ্যে বদরুল নামে এক শিবির কর্মীকে ছাত্রলীগ বানিয়ে ছাত্রলীগের চরিত্রকে কলুষিত করার চক্রান্ত বহুদুর পয্যন্ত এগিয়ে গেছে।জাতীয় নেতারাও ছাত্রলীগের ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের তিব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতির তুফান তুলেছেন।এই কাজেও অধিকাংশ মুজিব সেনা জড়িয়ে পড়েছেন-অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আরো অনেকেই জড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনায় আছেন। সিলেটের ঘটনাটি অবশ্যই নিন্দনীয় এবং ন্যক্কারজনক। বদরুলকে আমি যদি ( ছাত্রলীগ নয়,শিবির ক্যাডার-ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী) ছাত্রলীগের বড় নেতাও ধরে নেই-'তারপরেও তাঁর কৃতকর্মের দায়ভার পুরো ছাত্রলীগের কাঁধে কি তুলে দেয়া যায়?' এমন হত্যা করার উদ্দেশ্যে আক্রমন বাংলাদেশে কি নতুন?বিশ্বের আর কোথাও কি ঘটে না? চাপাতির কোপে কি আর কখনও কেউ ক্ষত বিক্ষত হয়নি? শত শত আগুন বোমায় দগ্ধ মানুষ মৃত্যু যন্ত্রনায় হাস্পাতালের বাতাস কি ভারী হয়নি? বিশ্বের কোথাও কি দর্শন, হত্যা, আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছেনা? যে মেয়েটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে - এমন শত শত জীবনহানী কি আর কখনও কারো দ্বারাই সংঘটিত হয়নি? কোরানে হাফেজ, মাদ্রাসার বড় হুজুর কতৃক হাজারো বলৎকারের সংবাদ কি প্রত্যহ খবরের কাগজে প্রকাশিত হচ্ছে না? শিশু বলৎকারের ঘটনা কয়টি আওয়ামের দ্বারা সংগঠিত হয় আর কয়টি আলেমের দ্বারা সংগঠিত হয়- 'তাঁর পরিসংখ্যান কি কেউ দিতে পারবেন'? দর্শন কি নতুন কোন বিষয়- 'অতীতে কখনই যাহা আর ঘটেনি'? ঘরের কাজের মেয়ে বা গ্রাম্য কৃষকের অশিক্ষিত আদরে কন্যা নিয্যাতিত হলে বা দর্শিতা হলে আলোচনা সমালোচনা নেই- 'কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে দর্শিতা হলে হৈ চৈ কেন? সব বলৎকার, হত্যা, দর্শন 'আলেম নয় তো ছাত্র লীগ'-- এমনটি হয় কেন? আর সবাই কি নৃ-পংশু?
উন্নত বিশ্বে গ্যাং হত্যা হয়,গ্যাং দর্শন হয়- তাদের মিডিয়া কখনই বলেনা অমুক দলের অবক্ষয়ের ফসল উক্ত গ্যাং হত্যা বা গ্যাং দর্শন। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে চলন্ত বাসে, রেলেগাড়ীতে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্যাং দর্শনের একাধিক খবর পত্র-পত্রিকায় প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হতে দেখা যায়।তাঁদের মিডিয়া বা কোন রাজনৈতিক নেতা বা ব্যাক্তি আমি দেখি নাই বা শুনি নাই জড়িত দর্শকদের কে কংগ্রেস বা সিপিএম দলের অবক্ষয়ের ফসল বলতে।তাঁদের মধ্যে কেউ কি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলনা? তাঁরা কেন বলে না অমুক দলের সদস্যের দ্বারা সংগঠিত হয়েছে? না বলার কারন তাঁরা দর্শককে দর্শক হিসেবেই চিহ্নিত করে-- হত্যাকারিকে খুনি হিসেবেই চিহ্নিত করে।"একজন আলেমের অমানষিক, অমানবিক কাপুরুষচিত আচরনের জন্যে গোটা আলেম সমাজকে দায়ি করা যায়না। তেমনি একজন ছাত্রলীগ বা শিবির নেতার অপকর্মের দায় গোটা ছাত্রলীগ বা শিবিরকে দেয়া যায় না।"
উদ্বেগের সংঙ্গে লক্ষ করছি- ইদানিং আলেম সমাজ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সুক্ষ একটি অপপ্রচার চালিয়ে উভয়ের চরিত্র হননের প্রক্রিয়াগত চক্রান্ত নিবিড়ভাবে একটি মহল থেকে করা হচ্ছে। অথছ এই আলেম সমাজ আমাদের সমাজের সবচাইতে বেশী সম্মানের পাত্র। অয়দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের হাত ধরেই এসেছে এই দেশের যতসব গৌরবের অর্জন। তথাকথিত চক্রান্তকারীরা সম্মানীয় আলেম সমাজ এবং জাতির গৌরবের অর্জনের অধিকারী দুই সংস্থাকে ভিন্ন গ্রহের এলিয়েনে রুপান্তরের প্রানান্তকর চেষ্টায় ব্রতি হয়েছেন।চক্রান্তকারীদের সংঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিজ্ঞানী বুদ্ধিজীবি রাজনীতিবীদের একাংশ।
এই কথাটি অনস্বিকায্য যে- বিশ্বব্রম্মান্ডে যেদিন থেকে প্রানের সঞ্চার হয়েছে সে দিন থেকেই হত্যা,দর্শনের সুত্রপাত ঘটেছে।বিশ্বব্রম্মান্ড যেদিন ধ্বংস হবে তাঁর সেকেন্ড আগেও হত্যা, দর্শনের লাখ কোটি ঘটনা বহমান থাকবে। ভারতীয় উপমহাদেশে যখন সংযুক্তভাবে বৃটিশ শাষনের অধিনে ছিল-তখনও মহাদেশ জুড়ে লোক সংখ্যা ছিল মাত্র ত্রিশ কোটি।অথছ সামাজিক ভাবে নিগৃহিত হয়ে এই উপমহাদেশের প্রতিটি ছোট বড় শহর বন্দরে গড়ে উঠেছিল একাধিক পতিতালয়। ঐ সমস্ত পতিতালয়ের অস্তিত্ব পাকিস্তানের 'ইসলামী শাষনের' শেষ দিন পয্যন্ত বহাল ছিল।'৭১ এ দেশ স্বাধীনের পর 'জাতির জনকের স্বল্পকালিন সরকার' "পতিতাবৃত্তি অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ" গন্য করে আইন পাশ করলে "অখ্যাত শহর বন্দরের পতিতালয় স্ব্যংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।" মেজর জিয়ার "বিসমিল্লাহর সরকার'" ক্ষমতায় এসে উক্ত আইন বাতিল করলে উচ্ছেদ প্রক্রিয়ারত: বিখ্যাত পতিতালয় সমুহে বহাল তবিয়তে দ্বিগুন মহিলা সংগ্রহ করে দিব্যি পতিতালয়গুলী সমাজের ঘাড়ে চেপে বসে।১৯৯৬ ইং সালে আওয়ামী লীগ 'জননেত্রী শেখ হাসিনার' নেতৃত্বে সরকারে এলে জনগনের চাপের মুখে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থানরত:: 'ইংলিশ রোড়' এবং নারায়ন গঞ্জের বিখ্যাত 'টানবাজার পতিতাপল্লি'' উচ্ছেদ হয়।
"বাংলাদেশের বহুস্থানে নিগৃহিত মহিলাদের শেষ ঠিকানা "পতিতাপল্লির অস্তিত্ব" আদিকাল থেকে মেয়েদের উপর কাপুরুষদের অত্যাচার নিয্যাতনের প্রমান কাঁধে নিয়ে এখনও বহাল তবিয়তে বিদ্যমান রয়েছে। উপমহাদেশব্যাপি মাত্র ত্রিশ কোটি জনসংখ্যায় যদি লাখ লাখ পতিপল্লি গড়ে উঠতে পারে তবে মাত্র পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের ছোট্র ঘনবসতিপুর্ণ ষোলকোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশে 'সপ্তাহ বা মাসে এক দুটি নিয্যাতন, দর্শনের ঘটনায় সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন 'ছাত্র লীগের' অবক্ষয়ের প্রমান কেন বহন করতে হবে আমি বুঝতে পারি না।
বিগত ২০/ ৩০ বছর আগেও আমাদের দেশের মেয়েরা বিদ্যালয়মূখি তেমন ছিলনা। বর্তমানে বিদ্যালয় বিমূখ মেয়ে খোজে নেয়াই হবে কষ্টদায়ক।যেহেতু কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে ছাড়া অশিক্ষিত কোন মেয়ের অস্তিত্ব নেই সেহেতু কোত্থেকে অশিক্ষিত মেয়ে দর্শিতা হবে? নরপিশাচগুলী কি দর্শন করার জন্য বা হত্যা নিয্যাতন করার জন্য বসে থাকবে? তাঁদের শিরা উপশিরায় যে নষ্ট রক্তের প্রবাহমান সেই রক্ত তাঁরা কিভাবে পরিবর্তন করবে? চোর শুশুরবাড়ী বেড়াতে গেলেও চুরি করে-কারন তাঁর নেশাই চুরি।
সাগররুনী / সেনাবাহিনী তনু/ খাদিজা বদরুল একমাত্র হত্যা দর্শন নিয্যাতনের শিকার ব্যাক্তিবর্গ নয়।গ্রামে গঞ্জে হাজারো সাগররুনি, বদরুল খাদিজা, তনু মনু হত্যা, নিয্যাতন, গুম খুন হয়ে অকালে পৃথিবীর মায়া ত্যগ করে চলে যেতে হচ্ছে।সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে শরিক না হয়ে ব্যাক্তি বিশেষকে সামনে রেখে দুই চার দিন আন্দোলনের ঝড় তোলে স্থায়ী সমাধান আসবে না। মানুষের মানবতাবোধ জাগ্রত না হলে, নারী পুরুষের সার্বিক বৈসম্য দূর না হলে, অশুভ শক্তির উত্থান রোধে কায্যকর ভুমিকা না থাকলে কাপুরুষিত ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে আর একটি পশুমন লুকায়িত রয়েছে- বিবেক যতক্ষন জাগ্রত থাকে ততক্ষন পশুমন দমন থাকে--বিবেক নষ্ট হয়ে গেলে পশুমন জীবন পেয়ে চাঙ্গাভাব ধারন করে।
আসুন আমরা কাউকে দোষারোপ না করে দর্শককে দর্শক বলি, খুনি কে খুনি বলি, চোরকে চোর বলি- কে আওয়ামী লীগ কে বিএনপি কে হুজুর কে মজুর সেই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
"জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু"
________________________________________________________________
________________________________________________________________
দীর্ঘ একুশ বছর সরকারি পৃষ্টপোষকতায় বাংলাদেশের গৌরব উজ্জল ছাত্র রাজনীতিকে কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশ্যে সামরিক সরকার সমূহ পেশীশক্তির উত্থান ঘটিয়েছিল অত্যান্ত সুক্ষ মেজাজে।রাজনীতির অন্যান্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রে অবক্ষয় ঘটাতে পারলেও ছাত্র রাজনীতিতে সহজে পারছিল না। ঠান্ডা মেজাজের চক্রান্তকারি জিয়া তরুন প্রজর্ম্মের চাওয়া পাওয়ার প্রতি লক্ষ রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র রাজনীতিবীদকে সম্পুর্ণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় গভীর "সমুদ্রে আনন্দ ভ্রমনের আমন্ত্রন" জানিয়ে সরকারি ভাবে চিঠি দেন। উক্ত চিঠিতে আয়োজিত কতিপয় বিষয় উল্লেখ করে ডট দিয়ে বলা হয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। "ব্যবস্থা রাখা হয়েছে" অংশটিকে পদস্থলীত ছাত্র নেতারা গুরুত্ব সহকারে গ্রহন করে নির্দিষ্ট দিনে "রাষ্ট্রীয় তত্বাবধানে সাজানো প্রমোদ তরীতে" উঠে পড়েন।কাল চশমা, সাফারী স্যুট পরিহিত মেজর জিয়াও তাঁদের সঙ্গে আসন গ্রহন করেন। কথিত আছে যে, -"আনন্দ ভ্রমনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া যুবকদের জন্য এমন কোন উপকরনের অভাব ছিলনা-"যাহা ঊক্ত প্রমোদ তরীতে ছিলনা।" 'চক্রান্তের আনন্দ ভ্রমনে'র চব্বিশ ঘন্টা পার হওয়ার আগেই ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ দ্রুত পাল্টাতে থাকে।ছাত্রদের শ্লোগানের ভাষা পরিবর্তিত হয়ে 'স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের' ব্রাস ফায়ারে" রুপান্তরীত হ'তে থাকে। শিক্ষাঙ্গন থেকে একুশটি বছর পাঠ্যসুচি মুখস্তের আওয়াজের স্থলে বোমা, গুলীর মহু মহু আওয়াজই শুনতে হয়েছে সাধারন ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকদের। কৃষক শ্রমিকের গ্রাম্য ছেলে মেয়েরা কালের পরিক্রমায় 'জনপ্রীয় মেধাবী ছাত্র নেতাদে'র সান্নিধ্যের বদলে "বড় ভাই' ' বসে'র অস্ত্রের বহরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ছাত্রজীবনকে করেছে অন্ধকার পরিবারকে করেছে নি:স্ব। সেই ধারাবাহিকতার অংশ বিশেষ এখনও যে নেই বা থাকবেনা একবাক্যে অস্বিকার করার কোন উপায় আছে বলে আমি মনে করি না।
কৃষকের নয়ন মণি, শ্রমিকের রক্তের ভাই, মায়ের আদরের দুলাল, বাবার অহংকারের মধ্যমণি কত হাজারো 'মেধা' রাজনীতির চোরাগলিতে প্রবেশ করে 'হয় লাশ নয় তো হাত পা হারিয়ে পরিবারের বোঝা' হয়ে বাড়ী ফিরেছেন তাঁর কোন পরিসংখ্যান কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব হবেনা। ' বড় ভাই বা বসের' জ্বরে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন' বাংলাদেশ ছাত্রলীগ'ও আক্রান্ত হয়নি তা আমি বলব না।তবে ইহাও একান্ত বাস্তবতা এবং চিরন্তন সত্য যে-'উক্ত দীর্ঘ সময় একান্ত আওয়ামী পরিবারের সন্তানগন লুকিয়ে লুকিয়ে তাঁর পরিবারের আদর্শের সংগঠন ছাত্রলীগের জন্য কাজ করেছেন।' যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংগঠনিক শক্তি প্রবল ছিল সেই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে 'বড়ভাই' 'বস' এর অনুপ্রবেশও ঘটেছিল অস্বিকার করিনা।মুলত: 'অবক্ষয়ের ছাত্র রাজনীতি'র অস্ত্রের মোকাবেলায় শুধুমাত্র 'গলাবাজি'র দিয়ে সংগঠন করার অর্থ হচ্ছে--'বোকামির নামান্তর মাত্র।' সঙ্গত কারনে আমি মনে করি 'পেশীশক্তি'র রাজনীতিতে ছাত্রলীগও সময়ে 'ফ্রাংঙ্কেষ্টাইন' হয়ে উঠেছিল।
জাতির জনকের কন্যা, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ছাত্রলীগ অনেকটাই 'বড় ভাই' বস তুল্য রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে 'কাগজ কলম' হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে।এর জন্য জননেত্রী দৃশ্যমান বেশ কয়েকটি প্রসংশনীয় উদ্যোগ নিয়ে সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন অক্ষুন্ন রেখেছেন। তম্মধ্যে "অবিবাহিত ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব, নিয়মিত ছাত্রদের নেতৃত্ব গ্রহনে উৎসাহ প্রদান, নির্দিষ্ট সংখ্যক উচ্চতর পদ পদবি ছাত্রীদের দ্বারা পুরণ, বয়সের বাধ্যবাধকতা ইত্যাদি কতিপয় সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বিগত কয়েক বছর থেকে কঠোরভাবে অনুসরন করার নীতি গ্রহন করে বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছেন।" অন্যান্ন দলের ছাত্র নেতাদের তুলনায় অভিজ্ঞতা কম থাকার কারনে ছাত্রলীগের রাজনীতি অনেক সময়ে হোঁচট খেতে দেখা যায়।তারপরেও ছাত্র রাজনীতি নিয়মতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে 'সাময়িক লাভে'র উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করে 'ভবিষ্যত নেতৃত্ব' সৃষ্টির সুদুরপ্রসারী চিন্তা চেতনাকেই প্রাধান্য দিয়ে যাচ্ছেন জাতির জনকের কন্যা।
কোন গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ছাত্র রাজনীতি নিয়মতান্ত্রিকতায় নিয়ে আসতে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। তাঁরা চায় কৃষক শ্রমিকের আদরের দুলাল তাঁদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হয়ে শিক্ষালয়ে মারুক বা মরুক অসুবিধা নেই। তাঁদের ছেলে মেয়ে উন্নত বিশ্বের নামকরা শিক্ষাঙ্গনে 'উন্নত শিক্ষা'ই গ্রহন করছে-'তাঁরাতো মরবে না'। চাষাভূষার ছেলেমেয়ে নষ্ট হলে তাঁদের কি আসে যায়। তাঁদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত থাকলেই চলবে। তাঁরা বিশ্বাস করে -'বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আধুনিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠার কোন 'উপকরন' নেই'। বাংলাদেশে 'মৌলবাদি অলস শিক্ষা ব্যবস্থা' চালু থাকুক বা 'ইংরেজদের মুখস্ত বিদ্যার' কেরাণী শিক্ষা চালু থাকুক উভয় শিক্ষা ব্যবস্থায় তাঁদের উদ্দেশ্য সফল হয়। এতে তাঁদের ছেলেমেয়েরা সরকারের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত হ'তে পারবে। কৃষক শ্রমিকের ছেলে মেয়েরা অনুন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে 'নিন্ম শ্রেণীর' চাকুরী প্রাপ্ত হ'য়ে তাঁদের ছেলে মেয়েদের চা, মদ আনা নেয়ার ফরমায়েশ খাটুক--'তাঁদের সেবার কাজে ব্যবহৃত হোক'। 'উন্নত শিক্ষা, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা নীতি' চালু করার আন্দোলন দানাবেধে উঠার আগেই প্রয়োজনে লক্ষ কোটি টাকা খরছ করে হলেও সেই আন্দোলনকে 'ধর্মবিরুধী', 'নৈতিকতা বিরুধী' আখ্যা দিয়ে বানচাল করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়-' এদেশের এলিট শ্রেনির রাজনীতিবিদ থেকে আরাম্ভ করে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের বৃহদাংশ। অথছ তাঁরা অনেকেই ধর্মকর্মের ধারেপাশেও থাকে না এবং কি তাঁদের জীবন যাপন, খাওয়া দাওয়া, চলাফেরা, আচার অনুষ্ঠান সব কিছুই পাশ্চাত্যের অনুকরনে অভ্যস্ত। সাধারন মানুষ তাঁদের কাছেও ঘেঁষতে পারে না-- গায়ের পছা গন্ধ তাঁদের নাসিকাতন্ত্রে প্রবেশ করার সমুহ সম্ভাবনায়।
মুল বিষয়ে ফিরে আসি- বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন দীর্ঘ বছর পর যখন নিশ্চিন্তে ছাত্রদের মাঝে সাংগঠনিক কাজ করার পরিবেশ পেয়েছে তখন কুচক্রি মহল ভিন্ন কায়দায় তাঁদের চরিত্রহননের মহা পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আপনারা সকলেই অবগত আছেন যে, '২০০৮ ইং সালে বিপুল সমর্থন নিয়ে জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার অব্যবহিত পরেই একশ্রেনীর মানুষ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরকে কথায় কথায় ' নাস্তিক' বলে আখ্যায়িত করা শুরু করে।যদিও দীর্ঘ চল্লিশ বছর ঐ সমস্ত আস্তিকদের বিশ্বাসীরা ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের কোথাও একটি 'মাদ্রাসা এমপিও করা বা ইসলামের প্রচার প্রসারে নন্যুন্নতম কাজও করেনি'। দৃশ্যমান যাহাই আছে তাঁর অধিকাংশ জাতির জনকের সাড়ে তিন বছরের ক্ষনস্থায়ী শাষনকালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল-বাদবাকি তাঁর কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার হাতে গড়া। এই ব্যাপারে কেউ যদি চেলেঞ্জ নিতে চান-আমি স্বাগত: জানাই, কমেন্ট বক্স আপনার জন্য উম্মুক্ত।
আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে চক্রান্ত ব্যার্থ হওয়ার পর 'তনু হত্যা' নিয়ে -আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে জড়িত করে তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের চক্রান্তে লিপ্ত হয়। পরিবেশ এতই ঘোলাটে করার চক্রান্ত দৃষ্ট হয় যে -'সেনা বাহিনীর মধ্যেই বিশৃংখলা দেখা দেয়ার সমুহ সম্ভাবনা দেখা দেয়। সবচেয়ে বড় দু:খ্যজনক ঘটনা হচ্ছে-" বিরুধী শিবি'রে যতই না 'ব্যাঙ্গচিত্রের সমালোচনা' দেখা গেছে তারচাইতে অধিক 'মুজিব সেনাদের শিবিরে' পরিলক্ষিত হয়। সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগনের অংশ নয়-ভীন গ্রহের এলিয়েন গোত্রের জনসমষ্টি--তদ্রুপ চিত্রিত করার চক্রান্ত অব্যাহত রাখে।
বাংলাদেশ ছাত্র লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্ত নতুন নয়- ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা বহুবার পরিলক্ষিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ইতিমধ্যে বদরুল নামে এক শিবির কর্মীকে ছাত্রলীগ বানিয়ে ছাত্রলীগের চরিত্রকে কলুষিত করার চক্রান্ত বহুদুর পয্যন্ত এগিয়ে গেছে।জাতীয় নেতারাও ছাত্রলীগের ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের তিব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতির তুফান তুলেছেন।এই কাজেও অধিকাংশ মুজিব সেনা জড়িয়ে পড়েছেন-অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আরো অনেকেই জড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনায় আছেন। সিলেটের ঘটনাটি অবশ্যই নিন্দনীয় এবং ন্যক্কারজনক। বদরুলকে আমি যদি ( ছাত্রলীগ নয়,শিবির ক্যাডার-ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী) ছাত্রলীগের বড় নেতাও ধরে নেই-'তারপরেও তাঁর কৃতকর্মের দায়ভার পুরো ছাত্রলীগের কাঁধে কি তুলে দেয়া যায়?' এমন হত্যা করার উদ্দেশ্যে আক্রমন বাংলাদেশে কি নতুন?বিশ্বের আর কোথাও কি ঘটে না? চাপাতির কোপে কি আর কখনও কেউ ক্ষত বিক্ষত হয়নি? শত শত আগুন বোমায় দগ্ধ মানুষ মৃত্যু যন্ত্রনায় হাস্পাতালের বাতাস কি ভারী হয়নি? বিশ্বের কোথাও কি দর্শন, হত্যা, আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছেনা? যে মেয়েটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে - এমন শত শত জীবনহানী কি আর কখনও কারো দ্বারাই সংঘটিত হয়নি? কোরানে হাফেজ, মাদ্রাসার বড় হুজুর কতৃক হাজারো বলৎকারের সংবাদ কি প্রত্যহ খবরের কাগজে প্রকাশিত হচ্ছে না? শিশু বলৎকারের ঘটনা কয়টি আওয়ামের দ্বারা সংগঠিত হয় আর কয়টি আলেমের দ্বারা সংগঠিত হয়- 'তাঁর পরিসংখ্যান কি কেউ দিতে পারবেন'? দর্শন কি নতুন কোন বিষয়- 'অতীতে কখনই যাহা আর ঘটেনি'? ঘরের কাজের মেয়ে বা গ্রাম্য কৃষকের অশিক্ষিত আদরে কন্যা নিয্যাতিত হলে বা দর্শিতা হলে আলোচনা সমালোচনা নেই- 'কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে দর্শিতা হলে হৈ চৈ কেন? সব বলৎকার, হত্যা, দর্শন 'আলেম নয় তো ছাত্র লীগ'-- এমনটি হয় কেন? আর সবাই কি নৃ-পংশু?
উন্নত বিশ্বে গ্যাং হত্যা হয়,গ্যাং দর্শন হয়- তাদের মিডিয়া কখনই বলেনা অমুক দলের অবক্ষয়ের ফসল উক্ত গ্যাং হত্যা বা গ্যাং দর্শন। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে চলন্ত বাসে, রেলেগাড়ীতে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্যাং দর্শনের একাধিক খবর পত্র-পত্রিকায় প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হতে দেখা যায়।তাঁদের মিডিয়া বা কোন রাজনৈতিক নেতা বা ব্যাক্তি আমি দেখি নাই বা শুনি নাই জড়িত দর্শকদের কে কংগ্রেস বা সিপিএম দলের অবক্ষয়ের ফসল বলতে।তাঁদের মধ্যে কেউ কি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলনা? তাঁরা কেন বলে না অমুক দলের সদস্যের দ্বারা সংগঠিত হয়েছে? না বলার কারন তাঁরা দর্শককে দর্শক হিসেবেই চিহ্নিত করে-- হত্যাকারিকে খুনি হিসেবেই চিহ্নিত করে।"একজন আলেমের অমানষিক, অমানবিক কাপুরুষচিত আচরনের জন্যে গোটা আলেম সমাজকে দায়ি করা যায়না। তেমনি একজন ছাত্রলীগ বা শিবির নেতার অপকর্মের দায় গোটা ছাত্রলীগ বা শিবিরকে দেয়া যায় না।"
উদ্বেগের সংঙ্গে লক্ষ করছি- ইদানিং আলেম সমাজ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সুক্ষ একটি অপপ্রচার চালিয়ে উভয়ের চরিত্র হননের প্রক্রিয়াগত চক্রান্ত নিবিড়ভাবে একটি মহল থেকে করা হচ্ছে। অথছ এই আলেম সমাজ আমাদের সমাজের সবচাইতে বেশী সম্মানের পাত্র। অয়দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের হাত ধরেই এসেছে এই দেশের যতসব গৌরবের অর্জন। তথাকথিত চক্রান্তকারীরা সম্মানীয় আলেম সমাজ এবং জাতির গৌরবের অর্জনের অধিকারী দুই সংস্থাকে ভিন্ন গ্রহের এলিয়েনে রুপান্তরের প্রানান্তকর চেষ্টায় ব্রতি হয়েছেন।চক্রান্তকারীদের সংঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিজ্ঞানী বুদ্ধিজীবি রাজনীতিবীদের একাংশ।
এই কথাটি অনস্বিকায্য যে- বিশ্বব্রম্মান্ডে যেদিন থেকে প্রানের সঞ্চার হয়েছে সে দিন থেকেই হত্যা,দর্শনের সুত্রপাত ঘটেছে।বিশ্বব্রম্মান্ড যেদিন ধ্বংস হবে তাঁর সেকেন্ড আগেও হত্যা, দর্শনের লাখ কোটি ঘটনা বহমান থাকবে। ভারতীয় উপমহাদেশে যখন সংযুক্তভাবে বৃটিশ শাষনের অধিনে ছিল-তখনও মহাদেশ জুড়ে লোক সংখ্যা ছিল মাত্র ত্রিশ কোটি।অথছ সামাজিক ভাবে নিগৃহিত হয়ে এই উপমহাদেশের প্রতিটি ছোট বড় শহর বন্দরে গড়ে উঠেছিল একাধিক পতিতালয়। ঐ সমস্ত পতিতালয়ের অস্তিত্ব পাকিস্তানের 'ইসলামী শাষনের' শেষ দিন পয্যন্ত বহাল ছিল।'৭১ এ দেশ স্বাধীনের পর 'জাতির জনকের স্বল্পকালিন সরকার' "পতিতাবৃত্তি অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ" গন্য করে আইন পাশ করলে "অখ্যাত শহর বন্দরের পতিতালয় স্ব্যংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।" মেজর জিয়ার "বিসমিল্লাহর সরকার'" ক্ষমতায় এসে উক্ত আইন বাতিল করলে উচ্ছেদ প্রক্রিয়ারত: বিখ্যাত পতিতালয় সমুহে বহাল তবিয়তে দ্বিগুন মহিলা সংগ্রহ করে দিব্যি পতিতালয়গুলী সমাজের ঘাড়ে চেপে বসে।১৯৯৬ ইং সালে আওয়ামী লীগ 'জননেত্রী শেখ হাসিনার' নেতৃত্বে সরকারে এলে জনগনের চাপের মুখে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থানরত:: 'ইংলিশ রোড়' এবং নারায়ন গঞ্জের বিখ্যাত 'টানবাজার পতিতাপল্লি'' উচ্ছেদ হয়।
"বাংলাদেশের বহুস্থানে নিগৃহিত মহিলাদের শেষ ঠিকানা "পতিতাপল্লির অস্তিত্ব" আদিকাল থেকে মেয়েদের উপর কাপুরুষদের অত্যাচার নিয্যাতনের প্রমান কাঁধে নিয়ে এখনও বহাল তবিয়তে বিদ্যমান রয়েছে। উপমহাদেশব্যাপি মাত্র ত্রিশ কোটি জনসংখ্যায় যদি লাখ লাখ পতিপল্লি গড়ে উঠতে পারে তবে মাত্র পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের ছোট্র ঘনবসতিপুর্ণ ষোলকোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশে 'সপ্তাহ বা মাসে এক দুটি নিয্যাতন, দর্শনের ঘটনায় সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন 'ছাত্র লীগের' অবক্ষয়ের প্রমান কেন বহন করতে হবে আমি বুঝতে পারি না।
বিগত ২০/ ৩০ বছর আগেও আমাদের দেশের মেয়েরা বিদ্যালয়মূখি তেমন ছিলনা। বর্তমানে বিদ্যালয় বিমূখ মেয়ে খোজে নেয়াই হবে কষ্টদায়ক।যেহেতু কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে ছাড়া অশিক্ষিত কোন মেয়ের অস্তিত্ব নেই সেহেতু কোত্থেকে অশিক্ষিত মেয়ে দর্শিতা হবে? নরপিশাচগুলী কি দর্শন করার জন্য বা হত্যা নিয্যাতন করার জন্য বসে থাকবে? তাঁদের শিরা উপশিরায় যে নষ্ট রক্তের প্রবাহমান সেই রক্ত তাঁরা কিভাবে পরিবর্তন করবে? চোর শুশুরবাড়ী বেড়াতে গেলেও চুরি করে-কারন তাঁর নেশাই চুরি।
সাগররুনী / সেনাবাহিনী তনু/ খাদিজা বদরুল একমাত্র হত্যা দর্শন নিয্যাতনের শিকার ব্যাক্তিবর্গ নয়।গ্রামে গঞ্জে হাজারো সাগররুনি, বদরুল খাদিজা, তনু মনু হত্যা, নিয্যাতন, গুম খুন হয়ে অকালে পৃথিবীর মায়া ত্যগ করে চলে যেতে হচ্ছে।সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে শরিক না হয়ে ব্যাক্তি বিশেষকে সামনে রেখে দুই চার দিন আন্দোলনের ঝড় তোলে স্থায়ী সমাধান আসবে না। মানুষের মানবতাবোধ জাগ্রত না হলে, নারী পুরুষের সার্বিক বৈসম্য দূর না হলে, অশুভ শক্তির উত্থান রোধে কায্যকর ভুমিকা না থাকলে কাপুরুষিত ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে আর একটি পশুমন লুকায়িত রয়েছে- বিবেক যতক্ষন জাগ্রত থাকে ততক্ষন পশুমন দমন থাকে--বিবেক নষ্ট হয়ে গেলে পশুমন জীবন পেয়ে চাঙ্গাভাব ধারন করে।
আসুন আমরা কাউকে দোষারোপ না করে দর্শককে দর্শক বলি, খুনি কে খুনি বলি, চোরকে চোর বলি- কে আওয়ামী লীগ কে বিএনপি কে হুজুর কে মজুর সেই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি।
ruhulaminmujumder27@gmail.com
"জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু"
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন