জাতির গৌরবের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগের বিরুদ্ধে সুক্ষ অপপ্রচার শুরু করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা-এখনি কায্যকর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সুক্ষ অপপ্রচার অনেকদূর এগিয়ে গেছে-এখনি রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী----

________________________________________________________________
________________________________________________________________

        দীর্ঘ একুশ বছর সরকারি পৃষ্টপোষকতায় বাংলাদেশের গৌরব উজ্জল ছাত্র রাজনীতিকে কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশ্যে সামরিক সরকার সমূহ পেশীশক্তির উত্থান ঘটিয়েছিল অত্যান্ত সুক্ষ মেজাজে।রাজনীতির অন্যান্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রে অবক্ষয় ঘটাতে  পারলেও ছাত্র রাজনীতিতে সহজে পারছিল না। ঠান্ডা মেজাজের চক্রান্তকারি জিয়া তরুন প্রজর্ম্মের চাওয়া পাওয়ার প্রতি লক্ষ রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র রাজনীতিবীদকে সম্পুর্ণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় গভীর "সমুদ্রে আনন্দ ভ্রমনের আমন্ত্রন" জানিয়ে সরকারি ভাবে চিঠি দেন। উক্ত চিঠিতে আয়োজিত কতিপয় বিষয় উল্লেখ করে ডট দিয়ে বলা হয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। "ব্যবস্থা রাখা হয়েছে" অংশটিকে পদস্থলীত ছাত্র নেতারা গুরুত্ব সহকারে গ্রহন করে নির্দিষ্ট দিনে "রাষ্ট্রীয় তত্বাবধানে সাজানো প্রমোদ তরীতে" উঠে পড়েন।কাল চশমা, সাফারী স্যুট পরিহিত মেজর জিয়াও তাঁদের সঙ্গে আসন গ্রহন করেন। কথিত আছে যে, -"আনন্দ ভ্রমনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া যুবকদের জন্য এমন কোন উপকরনের অভাব ছিলনা-"যাহা ঊক্ত প্রমোদ তরীতে ছিলনা।"  'চক্রান্তের আনন্দ ভ্রমনে'র চব্বিশ ঘন্টা পার হওয়ার আগেই ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ দ্রুত পাল্টাতে থাকে।ছাত্রদের শ্লোগানের ভাষা পরিবর্তিত হয়ে 'স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের' ব্রাস ফায়ারে" রুপান্তরীত হ'তে থাকে। শিক্ষাঙ্গন থেকে একুশটি বছর পাঠ্যসুচি মুখস্তের আওয়াজের স্থলে বোমা, গুলীর মহু মহু আওয়াজই শুনতে হয়েছে সাধারন ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকদের। কৃষক শ্রমিকের গ্রাম্য ছেলে মেয়েরা কালের পরিক্রমায় 'জনপ্রীয় মেধাবী ছাত্র নেতাদে'র সান্নিধ্যের বদলে "বড় ভাই' ' বসে'র অস্ত্রের বহরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ছাত্রজীবনকে করেছে অন্ধকার পরিবারকে করেছে নি:স্ব। সেই ধারাবাহিকতার অংশ বিশেষ এখনও যে নেই বা থাকবেনা একবাক্যে অস্বিকার করার কোন উপায় আছে বলে আমি মনে করি না।  
          কৃষকের নয়ন মণি, শ্রমিকের রক্তের ভাই, মায়ের আদরের দুলাল, বাবার অহংকারের মধ্যমণি কত হাজারো 'মেধা' রাজনীতির চোরাগলিতে প্রবেশ করে 'হয় লাশ নয় তো হাত পা হারিয়ে পরিবারের বোঝা' হয়ে বাড়ী ফিরেছেন তাঁর কোন পরিসংখ্যান কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব হবেনা। ' বড় ভাই বা বসের' জ্বরে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন' বাংলাদেশ ছাত্রলীগ'ও আক্রান্ত হয়নি তা আমি বলব না।তবে ইহাও একান্ত বাস্তবতা এবং চিরন্তন সত্য যে-'উক্ত দীর্ঘ সময় একান্ত আওয়ামী পরিবারের সন্তানগন লুকিয়ে লুকিয়ে তাঁর পরিবারের আদর্শের সংগঠন ছাত্রলীগের জন্য কাজ করেছেন।' যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংগঠনিক শক্তি প্রবল ছিল সেই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে 'বড়ভাই' 'বস' এর অনুপ্রবেশও ঘটেছিল অস্বিকার করিনা।মুলত:  'অবক্ষয়ের ছাত্র রাজনীতি'র অস্ত্রের মোকাবেলায় শুধুমাত্র 'গলাবাজি'র  দিয়ে সংগঠন করার অর্থ হচ্ছে--'বোকামির নামান্তর মাত্র।' সঙ্গত কারনে আমি মনে করি 'পেশীশক্তি'র রাজনীতিতে ছাত্রলীগও সময়ে 'ফ্রাংঙ্কেষ্টাইন' হয়ে উঠেছিল।
      জাতির জনকের কন্যা, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ছাত্রলীগ অনেকটাই 'বড় ভাই' বস তুল্য রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে 'কাগজ কলম' হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে।এর জন্য জননেত্রী দৃশ্যমান বেশ কয়েকটি প্রসংশনীয় উদ্যোগ নিয়ে সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন অক্ষুন্ন রেখেছেন। তম্মধ্যে "অবিবাহিত ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব, নিয়মিত ছাত্রদের নেতৃত্ব গ্রহনে উৎসাহ প্রদান,  নির্দিষ্ট সংখ্যক উচ্চতর পদ পদবি ছাত্রীদের দ্বারা পুরণ, বয়সের বাধ্যবাধকতা ইত্যাদি কতিপয় সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বিগত কয়েক বছর থেকে কঠোরভাবে অনুসরন করার নীতি গ্রহন করে বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছেন।" অন্যান্ন দলের ছাত্র নেতাদের তুলনায় অভিজ্ঞতা কম থাকার কারনে ছাত্রলীগের রাজনীতি অনেক সময়ে  হোঁচট খেতে দেখা যায়।তারপরেও ছাত্র রাজনীতি নিয়মতান্ত্রিক ধারায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে 'সাময়িক লাভে'র উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করে 'ভবিষ্যত নেতৃত্ব' সৃষ্টির সুদুরপ্রসারী চিন্তা চেতনাকেই প্রাধান্য দিয়ে যাচ্ছেন জাতির জনকের কন্যা।
     কোন গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ছাত্র রাজনীতি নিয়মতান্ত্রিকতায় নিয়ে আসতে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। তাঁরা চায় কৃষক শ্রমিকের আদরের দুলাল তাঁদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হয়ে শিক্ষালয়ে মারুক বা মরুক অসুবিধা নেই। তাঁদের ছেলে মেয়ে উন্নত বিশ্বের নামকরা শিক্ষাঙ্গনে 'উন্নত শিক্ষা'ই গ্রহন করছে-'তাঁরাতো মরবে না'। চাষাভূষার ছেলেমেয়ে নষ্ট হলে তাঁদের কি আসে যায়। তাঁদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত থাকলেই চলবে। তাঁরা বিশ্বাস করে -'বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আধুনিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠার কোন 'উপকরন' নেই'। বাংলাদেশে 'মৌলবাদি অলস শিক্ষা ব্যবস্থা' চালু থাকুক বা 'ইংরেজদের মুখস্ত বিদ্যার' কেরাণী শিক্ষা চালু থাকুক উভয় শিক্ষা ব্যবস্থায় তাঁদের উদ্দেশ্য সফল হয়। এতে তাঁদের ছেলেমেয়েরা সরকারের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত হ'তে পারবে। কৃষক শ্রমিকের ছেলে মেয়েরা অনুন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে 'নিন্ম শ্রেণীর' চাকুরী প্রাপ্ত হ'য়ে তাঁদের ছেলে মেয়েদের চা, মদ আনা নেয়ার ফরমায়েশ খাটুক--'তাঁদের সেবার কাজে ব্যবহৃত হোক'। 'উন্নত শিক্ষা, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা নীতি' চালু করার আন্দোলন দানাবেধে উঠার আগেই প্রয়োজনে লক্ষ কোটি টাকা খরছ করে হলেও সেই আন্দোলনকে 'ধর্মবিরুধী', 'নৈতিকতা বিরুধী' আখ্যা দিয়ে বানচাল করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়-' এদেশের এলিট শ্রেনির রাজনীতিবিদ থেকে আরাম্ভ করে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের বৃহদাংশ। অথছ তাঁরা অনেকেই ধর্মকর্মের ধারেপাশেও থাকে না এবং কি তাঁদের জীবন যাপন, খাওয়া দাওয়া, চলাফেরা, আচার অনুষ্ঠান সব কিছুই পাশ্চাত্যের অনুকরনে অভ্যস্ত। সাধারন মানুষ তাঁদের কাছেও ঘেঁষতে পারে না-- গায়ের পছা গন্ধ তাঁদের নাসিকাতন্ত্রে প্রবেশ করার সমুহ সম্ভাবনায়।
    মুল বিষয়ে ফিরে আসি- বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন দীর্ঘ বছর পর যখন নিশ্চিন্তে ছাত্রদের মাঝে সাংগঠনিক কাজ করার পরিবেশ পেয়েছে তখন কুচক্রি মহল ভিন্ন কায়দায় তাঁদের চরিত্রহননের মহা পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আপনারা সকলেই অবগত আছেন যে, '২০০৮ ইং সালে বিপুল সমর্থন নিয়ে জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার অব্যবহিত পরেই একশ্রেনীর মানুষ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরকে কথায় কথায় ' নাস্তিক' বলে আখ্যায়িত করা শুরু করে।যদিও দীর্ঘ চল্লিশ বছর ঐ সমস্ত আস্তিকদের বিশ্বাসীরা ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের কোথাও একটি 'মাদ্রাসা এমপিও করা বা ইসলামের প্রচার প্রসারে নন্যুন্নতম কাজও করেনি'। দৃশ্যমান যাহাই আছে তাঁর অধিকাংশ জাতির জনকের সাড়ে তিন বছরের ক্ষনস্থায়ী শাষনকালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল-বাদবাকি তাঁর কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার হাতে গড়া। এই ব্যাপারে কেউ যদি চেলেঞ্জ নিতে চান-আমি স্বাগত: জানাই, কমেন্ট বক্স আপনার জন্য উম্মুক্ত।
      আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে চক্রান্ত ব্যার্থ হওয়ার পর 'তনু হত্যা'  নিয়ে -আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে জড়িত করে তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের চক্রান্তে লিপ্ত হয়। পরিবেশ এতই ঘোলাটে করার চক্রান্ত দৃষ্ট হয় যে -'সেনা বাহিনীর মধ্যেই বিশৃংখলা দেখা দেয়ার সমুহ সম্ভাবনা দেখা দেয়। সবচেয়ে বড় দু:খ্যজনক ঘটনা হচ্ছে-" বিরুধী শিবি'রে যতই না 'ব্যাঙ্গচিত্রের সমালোচনা' দেখা গেছে  তারচাইতে অধিক 'মুজিব সেনাদের শিবিরে' পরিলক্ষিত হয়। সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগনের অংশ নয়-ভীন গ্রহের এলিয়েন গোত্রের জনসমষ্টি--তদ্রুপ চিত্রিত করার চক্রান্ত অব্যাহত রাখে।
    বাংলাদেশ ছাত্র লীগের বিরুদ্ধে চক্রান্ত নতুন নয়- ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা বহুবার পরিলক্ষিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ইতিমধ্যে বদরুল নামে এক শিবির কর্মীকে ছাত্রলীগ বানিয়ে ছাত্রলীগের চরিত্রকে কলুষিত করার চক্রান্ত বহুদুর পয্যন্ত এগিয়ে গেছে।জাতীয় নেতারাও ছাত্রলীগের ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের তিব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতির তুফান তুলেছেন।এই কাজেও অধিকাংশ মুজিব সেনা জড়িয়ে পড়েছেন-অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আরো অনেকেই জড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনায় আছেন। সিলেটের ঘটনাটি অবশ্যই নিন্দনীয় এবং ন্যক্কারজনক। বদরুলকে আমি  যদি ( ছাত্রলীগ নয়,শিবির ক্যাডার-ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী) ছাত্রলীগের বড় নেতাও ধরে নেই-'তারপরেও তাঁর কৃতকর্মের দায়ভার পুরো ছাত্রলীগের কাঁধে কি তুলে দেয়া যায়?' এমন হত্যা করার উদ্দেশ্যে আক্রমন বাংলাদেশে কি নতুন?বিশ্বের আর কোথাও কি ঘটে না? চাপাতির কোপে কি আর কখনও কেউ ক্ষত বিক্ষত হয়নি? শত শত আগুন বোমায় দগ্ধ মানুষ মৃত্যু যন্ত্রনায় হাস্পাতালের বাতাস কি ভারী হয়নি? বিশ্বের কোথাও কি দর্শন, হত্যা, আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছেনা? যে মেয়েটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে - এমন শত শত জীবনহানী কি আর কখনও কারো দ্বারাই সংঘটিত হয়নি? কোরানে হাফেজ, মাদ্রাসার বড় হুজুর কতৃক হাজারো বলৎকারের সংবাদ কি প্রত্যহ খবরের কাগজে প্রকাশিত হচ্ছে না? শিশু বলৎকারের ঘটনা কয়টি আওয়ামের দ্বারা সংগঠিত হয় আর কয়টি আলেমের দ্বারা সংগঠিত হয়- 'তাঁর পরিসংখ্যান কি কেউ দিতে পারবেন'? দর্শন কি নতুন কোন বিষয়- 'অতীতে কখনই যাহা আর  ঘটেনি'? ঘরের কাজের মেয়ে বা গ্রাম্য কৃষকের অশিক্ষিত আদরে কন্যা নিয্যাতিত হলে বা দর্শিতা হলে আলোচনা সমালোচনা নেই- 'কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের  মেয়ে দর্শিতা হলে হৈ চৈ কেন? সব বলৎকার, হত্যা, দর্শন 'আলেম নয় তো ছাত্র লীগ'-- এমনটি হয় কেন? আর সবাই কি নৃ-পংশু?
     উন্নত বিশ্বে গ্যাং হত্যা হয়,গ্যাং  দর্শন হয়- তাদের মিডিয়া কখনই  বলেনা অমুক দলের অবক্ষয়ের ফসল উক্ত গ্যাং হত্যা বা গ্যাং দর্শন। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে চলন্ত বাসে, রেলেগাড়ীতে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্যাং দর্শনের একাধিক খবর পত্র-পত্রিকায় প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হতে দেখা যায়।তাঁদের মিডিয়া বা কোন রাজনৈতিক নেতা বা ব্যাক্তি আমি দেখি নাই বা শুনি নাই জড়িত দর্শকদের কে কংগ্রেস বা সিপিএম দলের অবক্ষয়ের ফসল বলতে।তাঁদের মধ্যে কেউ কি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলনা? তাঁরা কেন বলে না অমুক দলের সদস্যের দ্বারা সংগঠিত হয়েছে?  না বলার কারন তাঁরা দর্শককে দর্শক হিসেবেই চিহ্নিত করে-- হত্যাকারিকে খুনি হিসেবেই চিহ্নিত করে।"একজন আলেমের অমানষিক, অমানবিক কাপুরুষচিত আচরনের জন্যে গোটা আলেম সমাজকে দায়ি করা যায়না। তেমনি একজন ছাত্রলীগ বা শিবির নেতার অপকর্মের দায়  গোটা ছাত্রলীগ বা শিবিরকে দেয়া যায় না।"
      উদ্বেগের সংঙ্গে লক্ষ করছি- ইদানিং আলেম সমাজ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সুক্ষ একটি অপপ্রচার চালিয়ে উভয়ের চরিত্র হননের প্রক্রিয়াগত চক্রান্ত নিবিড়ভাবে একটি মহল থেকে করা হচ্ছে। অথছ এই আলেম সমাজ আমাদের সমাজের সবচাইতে বেশী সম্মানের পাত্র। অয়দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের হাত ধরেই  এসেছে এই দেশের যতসব গৌরবের অর্জন। তথাকথিত চক্রান্তকারীরা সম্মানীয় আলেম সমাজ এবং জাতির গৌরবের অর্জনের অধিকারী দুই সংস্থাকে ভিন্ন গ্রহের এলিয়েনে রুপান্তরের প্রানান্তকর চেষ্টায় ব্রতি হয়েছেন।চক্রান্তকারীদের সংঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিজ্ঞানী বুদ্ধিজীবি রাজনীতিবীদের একাংশ।
    এই কথাটি অনস্বিকায্য যে- বিশ্বব্রম্মান্ডে যেদিন থেকে প্রানের সঞ্চার হয়েছে সে দিন থেকেই হত্যা,দর্শনের সুত্রপাত ঘটেছে।বিশ্বব্রম্মান্ড যেদিন ধ্বংস হবে তাঁর সেকেন্ড আগেও হত্যা, দর্শনের  লাখ কোটি ঘটনা  বহমান থাকবে। ভারতীয় উপমহাদেশে যখন সংযুক্তভাবে বৃটিশ শাষনের অধিনে ছিল-তখনও মহাদেশ জুড়ে লোক সংখ্যা ছিল মাত্র ত্রিশ কোটি।অথছ সামাজিক ভাবে নিগৃহিত হয়ে এই উপমহাদেশের প্রতিটি ছোট বড় শহর বন্দরে গড়ে উঠেছিল একাধিক পতিতালয়। ঐ সমস্ত পতিতালয়ের অস্তিত্ব পাকিস্তানের 'ইসলামী শাষনের' শেষ দিন পয্যন্ত বহাল ছিল।'৭১  এ দেশ স্বাধীনের পর 'জাতির জনকের স্বল্পকালিন সরকার' "পতিতাবৃত্তি অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ" গন্য করে আইন পাশ করলে "অখ্যাত শহর বন্দরের পতিতালয় স্ব্যংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।" মেজর জিয়ার "বিসমিল্লাহর সরকার'" ক্ষমতায় এসে উক্ত আইন বাতিল করলে উচ্ছেদ প্রক্রিয়ারত: বিখ্যাত পতিতালয় সমুহে বহাল তবিয়তে দ্বিগুন মহিলা সংগ্রহ করে দিব্যি পতিতালয়গুলী সমাজের ঘাড়ে চেপে বসে।১৯৯৬ ইং সালে আওয়ামী লীগ 'জননেত্রী শেখ হাসিনার' নেতৃত্বে সরকারে এলে জনগনের চাপের মুখে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থানরত:: 'ইংলিশ রোড়' এবং নারায়ন গঞ্জের বিখ্যাত 'টানবাজার পতিতাপল্লি'' উচ্ছেদ হয়।
       "বাংলাদেশের বহুস্থানে নিগৃহিত মহিলাদের শেষ ঠিকানা "পতিতাপল্লির অস্তিত্ব" আদিকাল থেকে মেয়েদের উপর কাপুরুষদের অত্যাচার নিয্যাতনের প্রমান কাঁধে নিয়ে  এখনও বহাল তবিয়তে বিদ্যমান রয়েছে। উপমহাদেশব্যাপি মাত্র ত্রিশ কোটি জনসংখ্যায় যদি লাখ লাখ পতিপল্লি গড়ে উঠতে পারে তবে মাত্র পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের ছোট্র ঘনবসতিপুর্ণ ষোলকোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশে  'সপ্তাহ বা মাসে এক দুটি নিয্যাতন, দর্শনের ঘটনায় সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন 'ছাত্র লীগের' অবক্ষয়ের প্রমান কেন বহন করতে হবে আমি বুঝতে পারি না।
বিগত ২০/ ৩০ বছর আগেও আমাদের দেশের মেয়েরা বিদ্যালয়মূখি তেমন ছিলনা। বর্তমানে বিদ্যালয় বিমূখ মেয়ে খোজে নেয়াই হবে কষ্টদায়ক।যেহেতু কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে ছাড়া অশিক্ষিত কোন মেয়ের অস্তিত্ব নেই সেহেতু কোত্থেকে অশিক্ষিত মেয়ে দর্শিতা হবে? নরপিশাচগুলী কি দর্শন করার জন্য বা হত্যা নিয্যাতন করার জন্য বসে থাকবে? তাঁদের শিরা উপশিরায় যে নষ্ট রক্তের প্রবাহমান সেই রক্ত তাঁরা কিভাবে পরিবর্তন করবে? চোর শুশুরবাড়ী বেড়াতে গেলেও চুরি করে-কারন তাঁর নেশাই চুরি।
সাগররুনী / সেনাবাহিনী তনু/ খাদিজা বদরুল একমাত্র হত্যা দর্শন নিয্যাতনের শিকার ব্যাক্তিবর্গ নয়।গ্রামে গঞ্জে হাজারো সাগররুনি,  বদরুল খাদিজা, তনু মনু হত্যা, নিয্যাতন, গুম খুন হয়ে অকালে পৃথিবীর মায়া ত্যগ করে চলে যেতে হচ্ছে।সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে শরিক না হয়ে ব্যাক্তি বিশেষকে সামনে রেখে দুই চার দিন আন্দোলনের ঝড় তোলে স্থায়ী সমাধান আসবে না। মানুষের মানবতাবোধ জাগ্রত না হলে, নারী পুরুষের সার্বিক বৈসম্য দূর না হলে, অশুভ শক্তির উত্থান রোধে কায্যকর ভুমিকা না থাকলে কাপুরুষিত ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে আর একটি পশুমন লুকায়িত রয়েছে- বিবেক যতক্ষন জাগ্রত থাকে ততক্ষন পশুমন দমন থাকে--বিবেক নষ্ট হয়ে  গেলে পশুমন জীবন পেয়ে চাঙ্গাভাব ধারন করে।
 আসুন আমরা কাউকে দোষারোপ না করে দর্শককে দর্শক বলি, খুনি কে খুনি বলি, চোরকে চোর বলি- কে আওয়ামী লীগ কে বিএনপি কে হুজুর কে মজুর সেই চিন্তা মাথা থেকে  ঝেড়ে ফেলি।
     

        ruhulaminmujumder27@gmail.com

     "জয়বাংলা      জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন