বিএনপির জঙ্গীরোধে জাতীয় ঐক্যের আহব্বান ও কর্মসূচি ঘোষনা--দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর সঙ্গে চরম প্রতারনা।

অশুভ শক্তিকে সযত্নে লালন করে, দমনের নাটকীয় জাতীয় ঐক্যের আহব্বান--জনগনের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রতারনা।

_______________
__________________________________


      বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং ১৪দলের সমন্বয়ে জঙ্গীবাদ প্রতিরোধের অঙ্গিকার বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিশাল সমাবেশ হয়ে গেল রাজধানী ঢাকায়। দীর্ঘ দিন পর ১৪দলের উদ্যোগে সমাবেশটি রাজনৈতিক  অঙ্গনে গভীর রেখাপাত করতে পারবে আশা করি।রাজপথে রাজনৈতিক কর্মকান্ড অনুপস্থীত থাকার অর্থই হচ্ছে সরকার বিপথে দাবিত হতে চাইলে সুপথে টেনে আনার অভাব বোধ করা। সরকারর পরিচালনায় দায়িত্বশীলদের নেতিবাচক কর্মকান্ড সম্পর্কে জনগন অন্ধকারে থাকা। সুষ্ঠ, সুন্দর,, গনতান্ত্রিক, জবাবদীহিতার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উপযুক্ত, দায়িত্বশীল, গনতন্ত্রমনা, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের একান্ত কাম্য।
দৃশ্যত বাংলাদেশে যেই সুস্থ্য রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে গনতন্ত্রকে বিকশিত করার  গন আখাংকা ছিল দায়িত্বশীল বিরুধীদলের অভাবে বাস্তবতায় তাঁর ছিটেফোঁটাও নেই। স্বাধীনতার পঁয়তাল্লিশ বছর পরেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি তথা অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার পক্ষে কায্যকর কোন রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি না হওয়াও মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তির উত্থানের অন্যতম একটি কারন। সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের উদ্দেশ্যই হচ্ছে গনতন্ত্র, সুশাষন বিঘ্নিত হওয়া,হত্যা গুম, খুন ইত্যাদি জনজীবন অচল করা কায্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়া। সেই অর্থে যদিও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গীবাদ বিরুদী সমাবেশটি রাজধানীর কেন্দ্রবিন্দুতে অনুষ্ঠিত হয়, তথাপি ১৪দলের এই সমাবেশ সরকারের জঙ্গীবিরুধী কঠোর মনোভাবের বহি:প্রকাশ হিসেবে জনগন ও বিশ্ববাসী স্বাগত: জানাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
   মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভেই এই অঞ্চলে দুটি রাজনৈতিক ধারা স্পষ্ট হয়ে উঠে।একটি ধারা অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের প্রতি অনুগত, দেশপ্রেমে উদ্ভোদ্ধ। অপরটি সাম্প্রদায়িক, ধর্মান্ধ, অগনতান্ত্রিক, বাঙ্গালী জাতীয়তার চেতনা বিরুদী,  অন্যধর্ম বিদ্বেসী, অন্ধকারমূখী সেকেলে মনোভাবাপন্ন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতী-জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দ্বিতীয় ধারাটিকে পরাজিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয় ঘটায়।
   মুক্তিযুদ্ধে যেই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল সেই বাংলাদেশকে সেই পরাজিত শত্রুরা আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রীদের সহযোগীতায় '১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫'এ মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় রক্তগঙ্গায় ভাসিয়ে দখল করে নিতে সক্ষম হয়।
     দীর্ঘ অন্ধকার রজনী পেরিয়ে, অগনীত নেতাকর্মীর জীবনের বিনিময়ে, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের সাফল্য ব্যার্থতায়, জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে ২০০৮ ইং সালের সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের বিশাল সমর্থনে সেই পরাজিত অশুভ শক্তিকে আবারও চরমভাবে পরাজিত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত  হয়।
   দুই দুইবার চরম পরাজয়ের পরেও স্বাধীনতা বিরুদী কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্র থামানো সম্ভব হয়নি।তাঁরা যে কোন মুল্যে আবারও রাষ্ট্রযন্ত্র দখল করার মানসে দেশব্যাপি গুম, খুন,হত্যা, হামলা, নাশকতা ইত্যাদি জনজীবনে অশান্তি, অস্থিরতা সৃষ্ট্রি মুলক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে।
  ১/১১ সাম্রাজ্যবাদী চক্রের ষড়যন্ত্রে সংঘটিত লুটেরা শুশীল শ্রেনীর দেশ শাষনের অদম্য আখাংকাকে বাস্তবতায়  রুপদানের গভীর চক্রান্ত ছিল। এই লক্ষ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল এবং ত্যাগী জনদরদী নেতাদের চরিত্র হনন করে তাঁর ক্ষেত্র প্রস্তুতের কাজ অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। চক্রটি ২০০১ থেকে ২০০৬ ইং সালের বিএনপি জোট কতৃক দেশ শাষনকে তাঁদের নাটকের শেষ দৃশ্য মঞ্চায়নের নিমিত্তে কায্যকর সাজসজ্জার কাজ শেষ করে রেখেছিল। এমন কোন কাজ নেই যা জোট সরকারের নেতাকর্মী এবং মন্ত্রী এমপিদের দ্বারা করানো হয়নি বা করেনি-যাহা করলে জনমনে রাজনৈতিক দল এবং তাঁদের নেতাদের প্রতি ঘৃনার  বহি:প্রকাশ ঘটবেনা। 'স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারও নীজ উদ্যোগে বা  তাঁদের চক্রান্তে গা ভাসিয়ে দেয়। দেশকে ক্ষমতাসীনদের এবং তাঁদের পৃষ্টপোষকদের লুটতরাজের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করে।
    ফলত: পাঁছ বছরের শাষনকালের পাঁছবারেই শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পায়। তথাকথিত শুশীলগন এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যহ টেলিভিশনের টকশো এবং পত্রপত্রিকায় "রাজনৈতিক দল কতৃক দেশ শাষন অকায্যকর, ব্যার্থ্য, অপরিপক্ক, লুটেরা, রাজনীতি শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ' ইত্যাদি নেতিবাচক প্রচারনা চালিয়ে জনমনে দল ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের বিরুদ্ধে ঘৃনার উদ্রেক করতে সক্ষম হয়। জনগনের ঘৃনাকে কাজে লাগিয়ে সুশীল চক্র তাঁদের বিদেশী প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে উদ্যত হয়ে দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে বিদায় করার জন্য "মাইনাস টু ফর্মুলা" বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন করে।
     তাঁর আগে ২০০১ ইং সালে তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহন করেই তাঁদের প্রচ্ছন্ন সহযোগীতায় সারাদেশব্যাপি অশুভ শক্তি জামায়াত শিবির কতৃক আওয়ামীলীগ নিধন ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের বর্বরতম কাল অধ্যায়ের সৃষ্টি করে রেখেছিল।
  ধর্মান্ধ অশুভ শক্তি ভারতে অবস্থানরত: ত্রিশকোটি মসুলমানের উপর নির্য্যাতন করার ক্ষেত্র প্রস্তুত কল্পে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। ভয়াবহ দাঙ্গার মাধ্যমে ভারতের প্রতি বাংলাদেশীদের ঘৃনাকে উস্কে দেয়ার উদ্দেশ্যে আন্তজাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবেই ঘৃনার আগুনে ঘি ঢালার পাকাপাকি ব্যবস্থা গ্রহন করেছিল।
   অশুভ জামায়াত শিবির চক্রটি একবারও চিন্তা করেনি-বাংলাদেশে এককোটি হিন্দুর বিপরীতে ভারতে ত্রিশ কোটি  মসুলমানের জীবন ও সম্পদ ধ্বংস হতে পারে। চক্রটি আজও সেই তৎপরতা থেকে সামান্যতম পিছপা হয়নি।এখনও 'সামাজিক সাইট সহ বিভিন্ন ভুয়া অন-লাইন পোর্টাল' খুলে ভারতে 'হিন্দু কতৃক মসুলমান নির্য্যাতনের' মিথ্যা ও বানোয়াট এডিট করা চিত্র ও কাহিনী অব্যাহত প্রকাশ করে যাচ্ছে।তাঁরা তাঁদের হীন স্বার্থসিদ্ধির জন্য আল্লাহ প্রেরীত পবিত্র কোরানকে পয্যন্ত ব্যবহার বাদ দিচ্ছে না। এহেন একটি ন্যাক্কারজনক কর্ম ''হিন্দু যুবক কতৃক কোরান পিষ্ট করার বানোয়াট চিত্র" প্রত্যহ সামাজিক সাইট সমুহে আপলোড করে যাচ্ছে চক্রটি। পবিত্র গ্রন্থ কোরান নিয়েও তামাশা করতে অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তিটি দ্বিধা করেনা।স্বভাবতই একজন মুসলিম এই চিত্র দেখার পর হিন্দুদের প্রতি তাঁর মনে ঘৃনার সৃষ্টি না হয়ে পারেনা। অথছ ছবিটি এডিট করা এবং বিদ্বেস সৃষ্ট্রির জন্যই প্রকাশ করা হয়েছে -তৎক্ষনাৎ কারো মনেই হওয়ার কথা নয়,ইহা মিথ্যা প্রচারনা।এইকাজে সুচতুর ভাবে অনলাইনে বেশ কিছু সুন্দরী মেয়েকে তাঁরা কাজে লাগাচ্ছে।যারা ম্যাসেজ দিয়ে পেইজবুক ইউজারদের মনোভাব জানার চেষ্টা করে থাকে এবং সেই মোতাবেক অন্যকোন যুৎসই ষড়যন্ত্র পাকানোর ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকে। অনেক সময় আমাদের মধ্যেও অনেক সচেতন ব্যাক্তি তাঁদের খপ্পরে পড়ে বিরুপ মন্তব্য করতে দেখা যায়।
    উল্লেখীত বিদ্বেষ চড়ানোর ধারাবাহিকতায় বিগত বছর গুলীতে সময় সময় হিন্দু মন্দিরের উপর হামলা হলেও   গত এক বছর ধরে চাপাতি ও অস্ত্র দিয়ে পুরোহিত, বিদেশি, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে। এই সমস্ত হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিএনপির কোনো দৃশ্যমান অবস্থান নেয়ার নজির নেই। বক্তৃতা বিবৃতি বা রাজপথে প্রতিবাদ করারও তেমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই। অধিকন্তু ওই সব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আওয়ামী লীগের জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে বার বার। অথচ সমস্ত হামলা ও গুপ্তহত্যা, জঙ্গীহামলার পেছনে জামায়াত-শিবির জড়িত-ইতিমধ্যে প্রমানীত সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জঙ্গি ঘটনার মূল হোতা "আইএস" এমন ধারণা প্রচারের পেছনে আসল শত্রুকে আড়াল করার রাজনীতি ও কৌশল লুকিয়ে থাকার বিষয়টি সম্মুখে আসতে শুরু করেছে।
     বাংলাদেশে মন্দিরগুলোকে সন্ত্রস্ত, ভীত বা আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার বিষয়টি দুই দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে অশুভ  রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের নতুন কৌশল, আমি মনে করি। বাংলাদেশে মন্দিরগুলোতে পুরোহিত বেশি সংখ্যায় হত্যা করে ভারতে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের নির্মমভাবে হত্যা করার একটি ক্ষেত্র তৈরির ব্যবস্থা ছাড়া আর কিছুই নয়। এ ধরনের দাঙ্গা সৃষ্টি করা গেলে কারা বেশি লাভবান অতীতে হয়েছে এবং হচ্ছে কেউ না বোঝলেও প্রগতিশীল ধারার মানুষ ঠিকই বুঝে।সরকারে অধিষ্ঠিত কর্তাব্যাক্তিরা যদি না বুঝে তাহলে বুঝতে হবে এ দেশের কপালে অনেক দুঃখ অপেক্ষা করছে।
   বিএনপি নেত্রী দেশে এত সব জঙ্গি কর্মকাণ্ড  হয়ে গেল সেগুলো সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করে শুধু গুলশান ট্র্যাজেডি নিয়েই সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়ার কি কারন থাকতে পারে? সাধারনের মধ্যে তাঁর জাতীয় ঐক্যের আহব্বানের বিষয়ে তাঁর নীজেরই আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন জঙ্গিবাদের বিষয়টি সম্পূর্ণ আইডিলজিক্যাল। এটি একটি চরমপন্থার মতাদর্শ। সেই মতাদর্শের অনুসারী, পৃষ্ঠপোষক, অর্থদাতা এবং সুবিধা লাভকারী কারা এইদেশে- মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে তা বুঝতে একজন সাধারন সচেতন নাগরিকেরও বাকি থাকার কথা নয়।
     বিএনপি উগ্র ধর্মীয় ওয়াহাবী মতাদর্শে বিশ্বাসীদের সঙ্গে একত্রে বসবাস করেছে, রাজনীতি করেছে, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে তাদেরই পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে। সরকারে তাঁদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করেছে,মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা তাঁদেরকে যত্রতত্র ব্যবহার করার সুযোগ করে দিয়েছে।
      মুক্তিযুদ্ধের আগে পরে এই অঞ্চলের রাজনীতিতে পরস্পর বিরোধী যে দুই ধারার মেরুকরণ ঘটেছিল। বিএনপির অবস্থান সেই পরবর্তী পরাজিত ধারার মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক এবং জঙ্গিবাদী,যুদ্ধ অপরাধীদের পক্ষে প্রথম থেকে।বিএনপি অবশ্য  দল হিসেবে জাতীয় ও আন্তজাতিক চক্রান্তে তাঁদেরই ধারায় ভুমিষ্ট হয়েছিল। অশুভ শক্তির চক্রান্তে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তাঁদের সৃষ্ট দল বিএনপির পৃষ্টপোষকতায় প্রগতিশীল রাজনীতিবীদ, লেখক সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবি, আওয়মী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রাখে। অশুভ শক্তি বিএনপির উপর ভর দিয়ে গুম,হত্যা, জঙ্গী হামলার মাধ্যমে যোজন যোজন মাইলের ব্যবধান সৃষ্টি করেছে--প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির সঙ্গে। বিএনপি নেত্রীর ইচ্ছাও তাই- জাতির জনকের পরিবার এবং প্রগতিশীল রাজনীতিবীদদের নিচ্ছিন্ন করে একক স্বর্গরাজ্যের অধিপতি হওয়া।
তাইতো মানবতা বিরুধীদের বিচারে জাতীয় এবং আন্তজাতিক ঐক্য গড়ে উঠলেও বিএনপি জনগনের সেই ধারায় যোগ না দিয়ে তাঁদের বিচার বাঞ্চালের যতসব কৌশল আছে সবটুকু শক্তি কাজে লাগিয়ে বিচার প্রক্রিয়া নস্যাতের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। জঙ্গীবাদের উত্থান, হামলা, হত্যা, গুপ্তহত্যা নিয়ে সারাদেশ উৎকন্টিত থাকা সত্বেও বিএনপির অবস্থান পরিস্কার করতে দেখা যায়নি।বরঞ্চ বিবৃতি দিয়ে বলা হচ্ছিল জঙ্গীর নাম করে ভাল ছেলেদের সরকার জেলে নিয়ে যাচ্ছে।
দেশী বিদেশী চাপ থাকা সত্বেও বিএনপি অদ্যাবদি  মানবতাবিরুধী, জঙ্গী, খুনী, মুক্তিযুদ্ধের সসস্ত্র বিরুদীতাকারি দল জামায়াত-শিবিরের সঙ্গ ত্যাগ করেনি।যেই দলটি সঙ্গে থাকার কারনে বিএনপি ধীরে ধীরে বিলীনের পথে দাবীত হচ্ছে,আন্তজাতিক সমর্থন হারিয়ে বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে।বাংলাদেশের রাজনীতিতে জনসম্পৃতা হারিয়ে রাজপথ ছেড়ে রাজপ্রাসাদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, বিবৃতি সর্বস্ব দলে রুপান্তরীত হয়েছে-তারপরেও তাঁদের সঙ্গত্যাগ করতে রাজী নয়।
বরঞ্চ তাঁদেরকে সঙ্গে নিয়ে সরকার উৎখাতের নানাহ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।অশুভ শক্তির পক্ষে দেশব্যাপি নাশকতা,অরাজগতা, আগুন সন্ত্রাস করে জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিনত হতেও দলটি দ্বিধা করেনি। অশুভ শক্তিকে বুকের অভ্যন্তরে সযত্নে লালন করে  জাতীয় ঐক্যের আহব্বান জনগনের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রতারনা ছাড়া আর কি হতে পারে?
বিএনপির এই জাতীয় ঐক্যের আহব্বান জনবিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে জনগনের নিকটে যাওয়ার ফন্দি ছাড়া আর কিছুই নয়।একদিকে জঙ্গী হামলারোধে ব্যার্থতার অভিযোগে সরকারের পদত্যাগের দাবী এবং নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহব্বান  অন্যদিকে জঙ্গী উত্থান রোধে জাতীয় ঐক্যের ডাক এই দ্বিমূখীতার প্রতারনা জনগন ঠিকই অনুধাবনের ক্ষমতা রাখে।বাংলাদেশের জনগনকে বিংশ শতাব্দির এনালগ যুগের ভাবাবেগ আপ্লুত জনগন মনে করলে ভুল হবে। একবিংশ শতাব্দির বাংলাদেশের জনগন ডিজিটাল যুগের আধুনিক, বিজ্ঞান মনস্ক, উন্নত জীবন যাপনের অধিকারি, অধিকতর বাস্তবতা সম্পন্ন, শিক্ষিত, রুচিবোধ সম্পন্ন।
বিএনপি নেত্রীর আরও একটি বড় আন্তজাতিক উদ্দেশ্য এতে নিহীত আছে।সারা বিশ্ব বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারত সহ উন্নত দেশ সমুহ,সৌদী আরব সহ আরব বিশ্বের অন্যান্ন দেশ সমুহ জঙ্গীবাদ উত্থানের বিরুদ্ধে একহাট্রা।এই সময় জঙ্গীবাদ তোষনের তকমা থেকে বহি:বিশ্বের চোখ ভিন্ন দিকে ফেরানোর বড় একটি কারনও এতে বিদ্যমান রয়েছে। তাঁদের কোটি ডলারের নিয়োগপ্রাপ্ত আন্তজাতিক লবিষ্ট ফার্ম বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের এই বার্তা দিতে পারবে যে- বাংলাদেশের বিরুদী দল বিশেষ করে বিএনপি এবং তাঁর নেত্রী জঙ্গী উত্থান রোধে জাতীয় ঐক্যের আহব্বান জানিয়েছিল কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সাড়া দেয়নি। সরকার সাড়া দেয়নি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কারনে-তারা প্রচার করবে সরকার জঙ্গীবাদ উত্থানে আন্তরীক নয়, জাতীয় ঐক্যে ফাটল রেখে জঙ্গী দমন আদৌ সম্ভব নয়।
   বিএনপি যদি অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস না করে, সে ধরনের রাজনীতির গুরুত্ব উপলব্ধি না করে তাহলে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ১৪ দল বা অন্য কোনো অসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর ঐক্য গড়ার কোনো নিকটবর্তী বা দূরবর্তী আশা বাংলাদেশ রাষ্ট্র ব্যবস্থা কখনই করতে পারে না। বিএনপির কোনো লোক দেখানো, ঐক্যের ডাক শেষ বিচারে সফল হওয়ার সম্ভাবনা শুন্যের কোটায় যাহা কার্যকর হওয়ার ক্ষীন আশাও নেই।
     বিএনপি এবং তাঁর জোট ব্যাতিরেকে এমনিতেই উন্নয়ন, অগ্রগতি, এবং জঙ্গী উত্থান রোধে সরকারের আন্তরীক প্রচেষ্টার কারনে অঘোষিত জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে।এই জাতীয় ঐক্য জনগন থেকে জনগনের মাঝে ব্যাপৃতি ঘটেছে দেশব্যাপি। ফলে রাজপথ প্রতিবাদ শুন্যতায় ভোগছে দীর্ঘ দুই বছরের অধিক সময়। আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রতিরোধের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েও দেশে বিদেশে সংসদ এবং সরকারের গ্রহন যোগ্যতা অবিতর্কীত। তাঁর প্রমান জাতিসংঘ কতৃক একমাত্র বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে বিভিন্ন উপঢৌকনে ভুষিত করা।বিশ্বের সাত উন্নত সভ্য ধনী দেশের নিকটও গ্রহন যোগ্যতা পেয়েছে শতভাগ- তাঁর প্রমান সাতজাতীর অর্থনৈতিক ফোরামের গোপন বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পয্যবেক্ষনের সুযোগ দেয়া, যাহা অতীতে বাংলাদেশের ভাগ্যেই শুধু নয়, অন্যকোন দেশের সরকার প্রধানের ভাগ্যেও জোটেনি। শুধু তাই নয়, দক্ষিন এশিয়ার গনতান্ত্রীক দেশ সমুহের সংসদীয় ফোরামের নেতৃত্বও বাংলাদেশ অর্জন করেছে এবং আন্তদেশীয় সংসদীয় স্পিকার ফোরামের সভাপতির দায়িত্বও বর্তমানে বাংলাদেশের হাতে।আরব বিশ্বও বর্তমান নাস্তিক সরকারকে ইসলামের একমাত্র আন্তরীক সেবক আখ্যায়িত করে মুসলিম বিশ্বের জোটে অন্তভুক্ত করেছে। অতীতের আস্তিক সরকার সমুহের সময়ে বাংলাদেশের উপর জারীকরা বিভিন্ন নিষেদাজ্ঞা প্রত্যাহার শুরু করেছে.। শুধু তাই নয়- একমাত্র বাংলাদেশের নাগরীকগন আরবীয় মহিলাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নাগরিকত্ব লাভ করার সুযোগ সৃষ্টি হতে চলেছে, সম্পদ আহরনের বাধা দূর হতে চলেছে।এই সুযোগ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেরও নেই।
   তাছাড়াও জনগনের মাঝে অঘোষিত জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির কারনে রাজপথে বা গ্রামে গঞ্জে মিছিল মিটিং এর তোড়জোড় নেই।জনগন সরকার বিরুদী কারো কথায় কর্ণপাত করতে রাজী নয়।
 তাইতো দেখা যায়- গুটি কয়েক সন্ত্রাসী বোমাবাজ হরতাল অবরোধকারিদের রাজপথে নামার উপর অঘোষিত কারফিউ জারী করে রেখেছে বাংলাদেশের জনগন। ফলে রাজপথে গাড়ী পোড়ানো দুই চারজন সন্ত্রাসী বিক্ষোবকারি এখন আর দেখা যায়না,জলন্ত আগুনে জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার শক্তি আর কোন অশুভ শক্তির হবে বলে মনে হয়না।
  সুতারাং উপসংহারে বলতে চাই, উদ্দেশ্যপ্রনোদিত জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন বাংলাদেশের জনগন আছে বলে মনে করেনা।জনগনকে প্রতারীত করার এবং বিশ্ববাসীর চোখে ধুলা দেয়ার জাতীয় ঐক্যের আহব্বান কোন কাজেই আসবেনা।জনগনের নিকট পরিত্যাক্ত নেত্রীর দল ও জোট সরকারের নিকট গ্রহন যোগ্য হতে পারেনা।

       'জয়বাংলা    জয়বঙ্গবন্ধু'

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা