বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে জঙ্গী উত্থানের অন্যতম কারন নিয়ন্ত্রনহীন অন-লাইন।
বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপি চলমান অস্থিরতা,উৎকণ্ঠা, জঙ্গীপনার মুলভিত্তি অন-লাইন--
_______________________________________________
সদুর অতীত থেকে দেখা যায়,নতুন কোন দর্শন হোক বা আবিস্কারই হোক,তরুন প্রজম্ম সে দিকে ঝুকে পড়ার প্রবনতা।সে দর্শন বা আবিস্কার কতটুকু মানব কল্যানে অবদান রাখতে পারবে তাঁর বাছ বিচার নেহায়তই কম সংখ্যক তরুনের বিচার করার ক্ষমতা থাকে। যেমন মার্কসইজম-শুধুমাত্র রুশ তরুনদের আকৃষ্ট করেছিল তাই নয়, বিশ্বের প্রায় সকল তরুনদের আকর্ষন করেছিল এই আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দর্শন। কালের প্রবাহে রুশ দেশেই কালজয়ী এই দর্শন বাতিল করে গনতন্ত্রের পথে তাঁদের উন্নয়ন অগ্রগতি নিশ্চিত করছে। চিনের মাও সেতুং এবং তাঁর কালজয়ী দর্শন চীনের প্রাচির ডিঙ্গিয়ে বিশ্বজুড়ে তরুন সমাজের মধ্যে বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। সেই দর্শন অনেকটাই পরিবর্তন পরিবর্ধন করে বর্তমান বিশ্বায়নের যুগেও মাও সসেতুং এএর দর্শন চীনের ররাষ্ট্রীয় বব্যবস্থায় টিকে আছে।
এই যুগে এসে আবিস্কারের স্থান দখল করে নিয়েছে প্রযুক্তি।এমনি প্রযুক্তির এক নব সংযোজন ইন্টারনেট। তাঁরই অঙ্গিভুত অনলাইন মিডিয়া- ইলেকট্রোনিক মিডিয়া, অপলাইনের খবরের কাগজ ইত্যাদিকে পেছনে পেলে দ্রুত দখল করে নিয়েছে তথ্য আদান প্রদানের গুরুত্বপুর্ণ মাধ্যমটিকে।
অনলাইন মিডিয়া জগতের মধ্যে পেইজবুক নতুন হয়েও গুগুলের মত প্রতিষ্ঠিত মিডিয়াকে অনেক পেছনে পেলে জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থানটি দখল করে নিয়েছে।মুলত: এনড্রয়েড ফোন এবং বিভিন্ন কোম্পানীর সীমকার্ডের সহজলভ্যতার কারনে পেইজবুক সহ অন্যান্য অন-লাইন মিডিয়াগুলী দ্রুত এগোতে সক্ষম হয়েছে। সারা বিশ্বকে প্রযুক্তির এই নব ধারনা পরিবর্তন করে দিয়েছে।তাঁর ঢেউ টর্নেডোর চেয়ে দ্রুত বাংলাদেশের মানুষকে আকৃষ্ট করেছে।
বাংলাদেশেও অনলাইনের তথা পেইজবুক, টুইটার, গুগুল ব্যবহাকারি খুব দ্রুত বেড়ে অপলাইন পত্রিকা, ইলেকট্রোনিক মিডিয়া গুলীকে যাদুঘরে পাঠানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এই প্রযুক্তি যথাযথ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে বর্তমান সময়ে বিপদের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রযুক্তির কারনে দুনিয়া বদলে গেছে সত্য। বাংলাদেশের মত উন্নয়নকামি দেশের সবকিছু নিজেদের মতো করে চিন্তা করা উচিৎ। একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি, আবিষ্কার মেধা, প্রগতির যুগ এটা নয়। মানুষের যা কিছু অর্জন যা কিছু সভ্যতা তার পায়ে ভর দিয়ে সে এখন আকাশ ছুঁতে চাইছে। বর্তমান সময় চটজলদি পাওয়ার সময়। প্রযুক্তি দখল করে নিয়েছে আবিষ্কারের জায়গা। প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবনের অনেককিছু সহজ সরল করে দিয়েছে সত্য-অপরদিকে রয়েছে সমুহ বিপদের সম্ভাবনা।
বিশ্বব্যাপি প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারনে সরকার, রাষ্ট্র, চলমান ব্যবস্থাকে পরোয়া না করে গড়ে উঠছে বিকল্প জনমত।বিশ্বের চলমান ব্যাবস্থায় ধস নামিয়ে প্রযুক্তি কত দেশ ও সমাজের চেহারায় আমূল পরিবর্তন এনে দিচ্ছে ভবিষ্যত প্রজম্ম এই সমস্ত পরিবর্তন সম্পর্কে জানতেও পারবেনা। এই সমস্ত কিছুতে সবকিছুই দরকারি বা প্রয়োজনীয় ছিল তা কিন্তু নয়। হুজুগের পরিবর্তনে ভেসে যাওয়া অনেক কিছুই ভবিষ্যতে হারানোর বেদনার কারণ হবে-এতে কোন সন্দেহ নেই। উল্লেখ্য বাংলাদেশও তার বাইরে যেতে পারবেনা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এই কিছুদিন আগেও ব্যাক্তিগত ভাবে আমি শক্তিশালী একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করতাম। বিবেচনা করার অন্যতম কারন ছিল প্রচলিত গনমাধ্যমগুলি সর্ববিষয়ে অনেকটা কেন্দ্রিকতার আবরনে আচ্ছাদিত--প্রকারান্তরে সামাজিক মাধ্যম অনেক বেশী বহি:রাবরনে বিশ্বাসী। সর্ব সাধারনের অবাধ বিচরন এবং অংশগ্রহনের কারনে মাধ্যমটি সার্বজনীন মাধ্যমের রুপ পরিগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে।এই সার্বজনীনতা যতই দিন গড়াচ্ছে ততই আমার ধারনায় চিড়ের পরিমান বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এখন আমি আর মিডিয়া মনে করতে পারিনা। মিডিয়া মনে হতেই অজানা এক আশংকায় বুকে কাঁপন ধরে। অসম্পাদিত মিডিয়া বিপদের কারন বয়ে আনতে পারে আমার ধারনায় ছিলনা। সামাজিক মাধ্যম এডিট করার কোন ব্যবস্থা না থাকায় যত্রতত্র ভাবে এই গুরুত্বপুর্ণ মাধ্যমকে একশ্রেনীর দুষ্ট প্রকৃতির অশুভ শক্তি ব্যবহার করে রাষ্ট্র, সরকার, দেশ ও জাতির উৎকন্ঠার কারন সৃষ্টি করেছে।
মতপ্রকাশের নীতিমালা, নিয়ন্ত্রন, সংশোধন, সংযোজন থাকবেনা অথছ--রাষ্ট্র, আইন, কাঠামো সবকিছু বলবৎ থাকবে, এটা হতে পারে না।রাষ্ট্রে বসবাসের জন্য নাগরিক থাকবে অথছ তাঁদের নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা থাকবেনা, খেয়ালখুশী মর্জিমাপিক মতবাদ প্রচার করার সুযোগ থাকবে-- তা কি হয়?’ আমি স্বীকার করি সোশ্যাল মিডিয়া নামে পরিচিত মাধ্যমগুলো জনমত তৈরি শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। রাজপথের জনসভা, মিছিল, মিটিংয়ে জনমত তৈরীর স্থান দখল করে নিয়েছে সামাজিক মাধ্যম। কিন্তু এগুলো যে আসলে ব্রেকহীন গাড়ির মতো তা চিন্তা করেছে কেউ কোন দিন? কখন কোথায় ধাক্কা মারে তার কোন ইয়ত্তা আছে??
কবিতা পদ্য-গদ্য লেখা সব ঠিক আছে কিন্তু সমস্যা হচ্ছে রাজনীতি এবং সামাজিক বিষয় সমুহ নিয়ে। সর্ববস্থায় এগুলোর নেগেটিভ প্রচারনায় সমুহ বিপদের কারন হতে পারে। যেকোন দেশের রাজনৈতিক দলের নিজস্ব দর্শন থাকে, নীতি থাকে, প্রতিশ্রুতি থাকে।এই সমস্ত নীতি আদর্শ জনগনের নিকট তুলে ধরে জনমত সংঘটিত করে-জনগনের রায় নিয়ে সরকার গঠন করে। সঙ্গত কারনে সেই নির্বাচিত রাজনৈতিক দলের নীতি আদর্শ সরকারের দৈনন্দিন কাজে প্রভাব পড়বে।সরকার গঠন করা রাজনৈতিক দলকে তাঁর দর্শন বাস্তবায়নের সুযোগ না দিয়ে পরাজিত রাজনৈতিক দলের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য অনৈতিক চাপ দেয়া কি অন্যায় নয়?, অগনতান্ত্রিক নয়?
রাষ্ট্র কতৃক নিষিদ্ধ কোন দলের আদর্শ বা দর্শন অপ-লাইনের গনমাধ্যমে প্রকাশের কোন সুযোগ নেই, গনমাধ্যম জবাব দিহীতার আওতায় থাকার কারনে। সামাজিক মাধ্যমে সেই রীতিনীতি কিছুই না থাকার কারনে অবাধে তাঁদের আদর্শ প্রচার করে যাচ্ছে, শুধু তাই নয়- কল্পনার রঙ মিশিয়ে, ছবি এডিট করে, এমনসব মিথ্যা আর আজগুবী তথ্যের প্রকাশ ঘটাবে, সাধারনত যে কোন মহুর্তেই তাঁর বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া অসম্ভব নয়।
বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে যেমনটি যা ইচ্ছা তা প্রকাশ করা সম্ভব হয় অন্যকোন দেশে সেইভাবে সম্ভব হয়না। গনতন্ত্রেরও সীমাবদ্ধতা আছে, স্বাধীনতারতো বটেই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ এই নয়-যা ইচ্ছে তাই লিখে ফেলা যায় বা বলে দেয়া যায়। রাষ্ট্র কাঠামোর অভ্যন্তরে থেকে মতপ্রকাশ করাকে প্রকৃত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলে। গনতন্ত্র, স্বাধীনতা, তথ্য আদান প্রদানের স্বাধীনতা যাই বলিনা কেন-কেন্দ্রিকতা অনিবায্য।সেই কেন্দ্রিকতাই হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পয্যায় রাষ্ট্র কাঠামো। রাজনৈতিক দলের নেতা নির্বাচন বা সিদ্ধান্ত গ্রহনে যেমন গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতাকে অনুসরন করা হয়-রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও--রাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুসরন অপরিহায্য। গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা যেমন দল, সংগঠন ক্লাব বা পরিবার, সমাজকে বাঁচিয়ে রাখে তেমনি রাষ্ট্রীয় কাঠামো- সরকার, দেশ, জাতিকে বাঁচিয়ে রাখে। নচেৎ কিছুই স্থায়িত্ত্ব পেতনা, পাওয়ার কোন কারনই ছিলনা।
বাংলাদেশে যে কোনো বিষয়ে উস্কানি আর যা খুশি বলা বা লেখাটা অভ্যাসের পর্যায় পৌঁছে গেছে। রীতিমতো ভয়ঙ্কর এক পরিবেশ বিরাজমান চতুর্দিকে। কেউ খুন হলে বা কেউ গুম হলে বা কোনো অঘটন ঘটলে সামাজিক মিডিয়া নামে পরিচিত পেইজবুক টুইটার, গুগুল সবকিছুতে প্রবল উত্তেজনার ঢেউ বয়ে যায়। সত্য মিথ্যা বা ঘটনার ভেতরে যাওয়ার পরিবর্তে গুজবের ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যায় প্রত্যেক নাগরিককে। যেহেতু প্রত্যেক নাগরিকের হাতে এন্ড্রয়েড ফোন সেহেতু প্রত্যেকের কোন না কোন সামাজিক মাধ্যমে নিজস্ব আই,ডি আছে,তাঁর নিজস্ব বিচরন ক্ষেত্র আছে।প্রত্যেক নাগরিক নিজস্ব মতামত ব্যাক্ততো করেই আবার অন্যের মতামতে নীজস্ব মত সংযোজন করার বা ব্যাক্ত করার পথও অবারিত। যে কোন নাগরিক তৎক্ষনাৎ যে কোন বিষয়ে জানার, উপলব্দি করার, প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করার, অন্যের মতামত জানার বুঝার সুযোগ আছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভট গুজব ছড়িয়ে যে কোন মহুর্তেই অঘটন ঘটানো কোন ব্যপারই নয়।
যেমন সাঈদীকে চাঁন্দে দেখা যায়- এমনটি কোন সচেতন নাগরিক চিন্তা করে নাই, নবী করিম (স:) কে জলে স্থলে অন্তরিক্ষে এযাবৎ দেখা গেলনা অথছ সাঈদীর মত একজন খুনীকে কোন মাজেজায় চান্দে দেখা যায়। মাছের গায়ে নিজামি,গরুর পেটে মোজাহীদ ইত্যাদি কত যে মিথ্যে অপপ্রচার তাঁর কোন ইয়ত্তা আছে? সাঈদীর চাঁদ কতজনের জীবন কেড়ে নিল,কত সম্পদ ধ্বংস হল, তাঁর কি কোন হিসেব এই পয্যন্ত কেউ পেয়েছে?
ঘুম, হত্যা, হামলা ইত্যাদির কথা আর কি বলব, রীতিমত সামাজিক বিপ্লব ঘটে যায়। সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের কোন প্রয়োজন পড়ে না!! প্রত্যান্ত নিবিড় পল্লির কোন সংবাদ বাদ যায় না--যা সামাজিক মাধ্যমে আসেনা।খবরটি প্রকাশে রাষ্ট্রের বা ভুক্তভুগি পরিবারের বড় কোন ক্ষতির সম্ভাবনা আছে কিনা তাও চিন্তার প্রয়োজন পড়েনা। এইধরনের উলঙ্গ স্বাধীনতা পৃথিবীর কোন সভ্য গনতান্ত্রিক দেশে আছে কিনা আমার জানা নেই।
গত বছর বাংলাদেশ এবং ফ্রান্সে জঙ্গী হামলা হয়েছিল। এবারও দুর্ভাগ্যগুনে হোক আর সুভাগ্যগুনে হোক প্রায় একই সময়ে দুই দেশেই হামলা হয়েছে। তাঁরাও সামাজিক মাধ্যমের উপর নিষেদাজ্ঞা জারি করেছিল--আমাদের দেশেও নিষেদাজ্ঞা জারি করেছিল।রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য বিশ্বের সকল দেশেই এই ধরনের নিষেদাজ্ঞা জারির নিয়মরীতি বলবৎ আছে। ফ্রান্সের জনগনের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি বরঞ্চ সরকারকে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে সহযোগিতা দূরে থাকুক বিদেশী এপস ব্যবহার করে পেইজবুকে সরকারের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই সমালোচনাতো করেছেই ব্যঙ্গ চিত্র একে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল-- যেন দেশের বড় কোন ক্ষতি সরকার করে ফেলেছে।অথছ আমাদের দেশে কিছু দিন পর খুলে দিলেও তাঁদের দেশে এখনও জনগন সামাজিক মাধ্যমটি বন্ধ রেখেছে। কই কেউতো বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানালো না!!
বিশ্বায়নের নামে খুলে যাওয়া সামাজিক মিডিয়া পরিণত হয়েছে গুজব চড়ানো এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের বিচরনের প্রাণকেন্দ্রে। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা উঠলে একশ্রেণির সামাজিক সুশীল ও বুদ্ধিবৃত্তির চেলারা গলা ফাটিয়ে বলেন কন্ঠরোধ করছে সরকার। তাঁদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই--"তোমার কন্ঠ কি আমার ঘুম ভাঙ্গাতে পারে? তোমার যেমন কন্ঠবাজি করার স্বাধীনতা আছে আমারও ঘুমের স্বাধীনতা আছে। তোমার স্বাধীনতা কি আমার স্বাধীনতা বিপন্ন করতে পারে? আমার ঘুম ভাঙ্গাবার অধিকার কে দিয়েছে তোমাকে?
তারচেয়ে ভয়াবহ খবর হচ্ছে অনলাইনের বিভিন্ন পাবলিক গ্রুপের মাধ্যমে জঙ্গী সংগ্রহ করার খবর।পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়-জঙ্গীনেতারা বিভিন্ন নামে (সন্দেহের বাহিরে) যেমন প্রেমসংক্রান্ত, রক্তদান সংক্রান্ত, অথবা সুন্দরী মেয়ের ছবি আপলোডের মাধ্যমে যৌন সুড়সুড়ি জাগানিয়া গ্রুপের মাধ্যমে প্রথমিক কাজ শুরু করে।অন-লাইনে তদারকির তেমন কড়াকড়ি না থাকার সুযোগে এই সামাজিক সাইট সমুহকে তাঁরা কাজে লাগাচ্ছে অশুভ শক্তির নিয়োগের প্রাথমিক স্তরের ভুমিকায়।
সামাজিক সাইটগুলী বিকাশের প্রাথমিক পয্যায় তাঁরা তাঁদের অবস্থান সুদৃড করে নেয়। কিশোর বয়সীরা ‘ডেসপারেটলি’ সরকারের বা রাষ্ট্রের সমালোচনা করছে কিনা, তারা অন্যধর্মের প্রতি কী ধরনের মন্তব্য করছে, এসব দেখতে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে, সমসাময়িক ইস্যুতে নানা পোস্ট দিয়ে ওঁত পেতে বসে থাকে ধর্মাশ্রয়ী উগ্র ও নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো। তাছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রীয় পাবলিক গ্রুপের সদস্য হয়েও চুপ করে বসে থাকে।কে কি পোষ্ট দিল,পোষ্টের উপর কে কি মন্তব্য করছে তা লক্ষ করে অগোচরে,নিজেরা মন্তব্য থেকে বিরত থাকে।পরবর্তিতে ঐ পোষ্ট দাতার প্রোফাইল দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সে আস্তিক নাকি নাস্তিক। ধর্ম বিষয়ে দুর্বলতার সুযোগে তাঁদের সাথে শুরু করে ম্যাসেজ বিনিময়। শুরু হয় ব্যক্তিগত আলাপ। ফাঁদে ফেলতে শুরুতে স্টাডি সার্কেল এবং তারপর রয়েছে দ্বীনের দাওয়াত। একটা সমমনা গোষ্ঠী তৈরি হওয়ার পর সেখান থেকে বেছে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিকে মূল গ্রুপ থেকে সরিয়ে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। একসঙ্গে ওঠবস করলেও অপারেশনের জন্য যাদের বেছে নেওয়া হল, তাদের কোনও কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তখন আর ওই পুরো সার্কেলের কেউ কিছু জানতে পারেন না। পুরো প্রক্রিয়াটার জন্য একজনের পেছনে জঙ্গীনেতাদের সময় দিতে হয় কম করে দেড় দুইবছর।
উপসংহারে বলতে চাই--গনতন্ত্রকে সুসংহত এবং কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে সর্বস্তরে উপভোগ্য করার লক্ষে নতুন প্রজম্মের বিচরন ক্ষেত্র "সামাজিক মাধ্যম সমুহ" ব্যবহারের নীতিমালা ঢেলে সাজানো সময়ের দাবি।
পেইজবুকে আই,ডি খুলার জন্য নাম, ঠিকানা সঠিকভাবে উল্লেখ করার কৌশল আবিস্কার করতে হবে সরকারকে। অন-লাইনের ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজিয়ে উঠা সংবাদ পোর্টাল গুলিকে অনলাইন পত্রিকার আওতা ভুক্ত করে অপ-লাইনের সংবাদ পত্রের ন্যায় রেজি: আওতায় নেয়া জরুরী প্রয়োজোন। বিভিন্ন নামে গড়ে উঠা পাবলিক গ্রুপ সমুহকে সংবাদ পোর্টালের আওতায় নিয়ে রেজি: বাধ্যতামুলক করা প্রয়োজন।( কারন পাবলিক গ্রুপ জনপ্রিয় পত্রিকার পাঠক, লেখক, সংবাদ পরিবেশন ইত্যাদি দিকগুলি বিবেচনায় নিলে পত্রিকার চেয়ে কোন অংশে কম নয়।) পেইজবুক পেইজ/ ওয়েব খুলার ক্ষেত্রে মুল আই,ডি সংযোগ অথবা আইডির নিয়ম কানুন প্রয়োগ অপরিহায্য।
গুজবের উৎসস্থল চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া গ্রহন করে আইনের আওতায় নিতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামো বহির্ভূত মতামত প্রকাশের ফৌজদারি শাস্তির বিধান করতে হবে। প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রেখে প্রচলিত সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রন আইন সংশোধন বর্তমান সময়ের দাবী।
গুরুত্বপুর্ণ সামাজিক মাধ্যমটি সর্বস্তরে ভীতিহীন উপভোগ্, স্বাধীনভাবে সর্বস্তরের নাগরিকদের বিচরন করার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে অশুভ শক্তির বিতাড়ন অপরিহায্য। গুরুত্ব পুর্ন মিডিয়া হিসেবে উহার ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় আইনী বেস্টনী থাকা একান্ত প্রয়োজন। এই প্রজম্মের বিচরনক্ষেত্র কন্টকমুক্ত রাখতে পারলেই আগামী প্রজম্মের সুনাগরিক সৃষ্টির আশা করা যেতে পারে।
'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'
_______________________________________________
সদুর অতীত থেকে দেখা যায়,নতুন কোন দর্শন হোক বা আবিস্কারই হোক,তরুন প্রজম্ম সে দিকে ঝুকে পড়ার প্রবনতা।সে দর্শন বা আবিস্কার কতটুকু মানব কল্যানে অবদান রাখতে পারবে তাঁর বাছ বিচার নেহায়তই কম সংখ্যক তরুনের বিচার করার ক্ষমতা থাকে। যেমন মার্কসইজম-শুধুমাত্র রুশ তরুনদের আকৃষ্ট করেছিল তাই নয়, বিশ্বের প্রায় সকল তরুনদের আকর্ষন করেছিল এই আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দর্শন। কালের প্রবাহে রুশ দেশেই কালজয়ী এই দর্শন বাতিল করে গনতন্ত্রের পথে তাঁদের উন্নয়ন অগ্রগতি নিশ্চিত করছে। চিনের মাও সেতুং এবং তাঁর কালজয়ী দর্শন চীনের প্রাচির ডিঙ্গিয়ে বিশ্বজুড়ে তরুন সমাজের মধ্যে বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। সেই দর্শন অনেকটাই পরিবর্তন পরিবর্ধন করে বর্তমান বিশ্বায়নের যুগেও মাও সসেতুং এএর দর্শন চীনের ররাষ্ট্রীয় বব্যবস্থায় টিকে আছে।
এই যুগে এসে আবিস্কারের স্থান দখল করে নিয়েছে প্রযুক্তি।এমনি প্রযুক্তির এক নব সংযোজন ইন্টারনেট। তাঁরই অঙ্গিভুত অনলাইন মিডিয়া- ইলেকট্রোনিক মিডিয়া, অপলাইনের খবরের কাগজ ইত্যাদিকে পেছনে পেলে দ্রুত দখল করে নিয়েছে তথ্য আদান প্রদানের গুরুত্বপুর্ণ মাধ্যমটিকে।
অনলাইন মিডিয়া জগতের মধ্যে পেইজবুক নতুন হয়েও গুগুলের মত প্রতিষ্ঠিত মিডিয়াকে অনেক পেছনে পেলে জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থানটি দখল করে নিয়েছে।মুলত: এনড্রয়েড ফোন এবং বিভিন্ন কোম্পানীর সীমকার্ডের সহজলভ্যতার কারনে পেইজবুক সহ অন্যান্য অন-লাইন মিডিয়াগুলী দ্রুত এগোতে সক্ষম হয়েছে। সারা বিশ্বকে প্রযুক্তির এই নব ধারনা পরিবর্তন করে দিয়েছে।তাঁর ঢেউ টর্নেডোর চেয়ে দ্রুত বাংলাদেশের মানুষকে আকৃষ্ট করেছে।
বাংলাদেশেও অনলাইনের তথা পেইজবুক, টুইটার, গুগুল ব্যবহাকারি খুব দ্রুত বেড়ে অপলাইন পত্রিকা, ইলেকট্রোনিক মিডিয়া গুলীকে যাদুঘরে পাঠানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এই প্রযুক্তি যথাযথ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে বর্তমান সময়ে বিপদের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রযুক্তির কারনে দুনিয়া বদলে গেছে সত্য। বাংলাদেশের মত উন্নয়নকামি দেশের সবকিছু নিজেদের মতো করে চিন্তা করা উচিৎ। একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি, আবিষ্কার মেধা, প্রগতির যুগ এটা নয়। মানুষের যা কিছু অর্জন যা কিছু সভ্যতা তার পায়ে ভর দিয়ে সে এখন আকাশ ছুঁতে চাইছে। বর্তমান সময় চটজলদি পাওয়ার সময়। প্রযুক্তি দখল করে নিয়েছে আবিষ্কারের জায়গা। প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবনের অনেককিছু সহজ সরল করে দিয়েছে সত্য-অপরদিকে রয়েছে সমুহ বিপদের সম্ভাবনা।
বিশ্বব্যাপি প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারনে সরকার, রাষ্ট্র, চলমান ব্যবস্থাকে পরোয়া না করে গড়ে উঠছে বিকল্প জনমত।বিশ্বের চলমান ব্যাবস্থায় ধস নামিয়ে প্রযুক্তি কত দেশ ও সমাজের চেহারায় আমূল পরিবর্তন এনে দিচ্ছে ভবিষ্যত প্রজম্ম এই সমস্ত পরিবর্তন সম্পর্কে জানতেও পারবেনা। এই সমস্ত কিছুতে সবকিছুই দরকারি বা প্রয়োজনীয় ছিল তা কিন্তু নয়। হুজুগের পরিবর্তনে ভেসে যাওয়া অনেক কিছুই ভবিষ্যতে হারানোর বেদনার কারণ হবে-এতে কোন সন্দেহ নেই। উল্লেখ্য বাংলাদেশও তার বাইরে যেতে পারবেনা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এই কিছুদিন আগেও ব্যাক্তিগত ভাবে আমি শক্তিশালী একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করতাম। বিবেচনা করার অন্যতম কারন ছিল প্রচলিত গনমাধ্যমগুলি সর্ববিষয়ে অনেকটা কেন্দ্রিকতার আবরনে আচ্ছাদিত--প্রকারান্তরে সামাজিক মাধ্যম অনেক বেশী বহি:রাবরনে বিশ্বাসী। সর্ব সাধারনের অবাধ বিচরন এবং অংশগ্রহনের কারনে মাধ্যমটি সার্বজনীন মাধ্যমের রুপ পরিগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে।এই সার্বজনীনতা যতই দিন গড়াচ্ছে ততই আমার ধারনায় চিড়ের পরিমান বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এখন আমি আর মিডিয়া মনে করতে পারিনা। মিডিয়া মনে হতেই অজানা এক আশংকায় বুকে কাঁপন ধরে। অসম্পাদিত মিডিয়া বিপদের কারন বয়ে আনতে পারে আমার ধারনায় ছিলনা। সামাজিক মাধ্যম এডিট করার কোন ব্যবস্থা না থাকায় যত্রতত্র ভাবে এই গুরুত্বপুর্ণ মাধ্যমকে একশ্রেনীর দুষ্ট প্রকৃতির অশুভ শক্তি ব্যবহার করে রাষ্ট্র, সরকার, দেশ ও জাতির উৎকন্ঠার কারন সৃষ্টি করেছে।
মতপ্রকাশের নীতিমালা, নিয়ন্ত্রন, সংশোধন, সংযোজন থাকবেনা অথছ--রাষ্ট্র, আইন, কাঠামো সবকিছু বলবৎ থাকবে, এটা হতে পারে না।রাষ্ট্রে বসবাসের জন্য নাগরিক থাকবে অথছ তাঁদের নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা থাকবেনা, খেয়ালখুশী মর্জিমাপিক মতবাদ প্রচার করার সুযোগ থাকবে-- তা কি হয়?’ আমি স্বীকার করি সোশ্যাল মিডিয়া নামে পরিচিত মাধ্যমগুলো জনমত তৈরি শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। রাজপথের জনসভা, মিছিল, মিটিংয়ে জনমত তৈরীর স্থান দখল করে নিয়েছে সামাজিক মাধ্যম। কিন্তু এগুলো যে আসলে ব্রেকহীন গাড়ির মতো তা চিন্তা করেছে কেউ কোন দিন? কখন কোথায় ধাক্কা মারে তার কোন ইয়ত্তা আছে??
কবিতা পদ্য-গদ্য লেখা সব ঠিক আছে কিন্তু সমস্যা হচ্ছে রাজনীতি এবং সামাজিক বিষয় সমুহ নিয়ে। সর্ববস্থায় এগুলোর নেগেটিভ প্রচারনায় সমুহ বিপদের কারন হতে পারে। যেকোন দেশের রাজনৈতিক দলের নিজস্ব দর্শন থাকে, নীতি থাকে, প্রতিশ্রুতি থাকে।এই সমস্ত নীতি আদর্শ জনগনের নিকট তুলে ধরে জনমত সংঘটিত করে-জনগনের রায় নিয়ে সরকার গঠন করে। সঙ্গত কারনে সেই নির্বাচিত রাজনৈতিক দলের নীতি আদর্শ সরকারের দৈনন্দিন কাজে প্রভাব পড়বে।সরকার গঠন করা রাজনৈতিক দলকে তাঁর দর্শন বাস্তবায়নের সুযোগ না দিয়ে পরাজিত রাজনৈতিক দলের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য অনৈতিক চাপ দেয়া কি অন্যায় নয়?, অগনতান্ত্রিক নয়?
রাষ্ট্র কতৃক নিষিদ্ধ কোন দলের আদর্শ বা দর্শন অপ-লাইনের গনমাধ্যমে প্রকাশের কোন সুযোগ নেই, গনমাধ্যম জবাব দিহীতার আওতায় থাকার কারনে। সামাজিক মাধ্যমে সেই রীতিনীতি কিছুই না থাকার কারনে অবাধে তাঁদের আদর্শ প্রচার করে যাচ্ছে, শুধু তাই নয়- কল্পনার রঙ মিশিয়ে, ছবি এডিট করে, এমনসব মিথ্যা আর আজগুবী তথ্যের প্রকাশ ঘটাবে, সাধারনত যে কোন মহুর্তেই তাঁর বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া অসম্ভব নয়।
বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে যেমনটি যা ইচ্ছা তা প্রকাশ করা সম্ভব হয় অন্যকোন দেশে সেইভাবে সম্ভব হয়না। গনতন্ত্রেরও সীমাবদ্ধতা আছে, স্বাধীনতারতো বটেই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ এই নয়-যা ইচ্ছে তাই লিখে ফেলা যায় বা বলে দেয়া যায়। রাষ্ট্র কাঠামোর অভ্যন্তরে থেকে মতপ্রকাশ করাকে প্রকৃত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলে। গনতন্ত্র, স্বাধীনতা, তথ্য আদান প্রদানের স্বাধীনতা যাই বলিনা কেন-কেন্দ্রিকতা অনিবায্য।সেই কেন্দ্রিকতাই হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পয্যায় রাষ্ট্র কাঠামো। রাজনৈতিক দলের নেতা নির্বাচন বা সিদ্ধান্ত গ্রহনে যেমন গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতাকে অনুসরন করা হয়-রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও--রাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুসরন অপরিহায্য। গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা যেমন দল, সংগঠন ক্লাব বা পরিবার, সমাজকে বাঁচিয়ে রাখে তেমনি রাষ্ট্রীয় কাঠামো- সরকার, দেশ, জাতিকে বাঁচিয়ে রাখে। নচেৎ কিছুই স্থায়িত্ত্ব পেতনা, পাওয়ার কোন কারনই ছিলনা।
বাংলাদেশে যে কোনো বিষয়ে উস্কানি আর যা খুশি বলা বা লেখাটা অভ্যাসের পর্যায় পৌঁছে গেছে। রীতিমতো ভয়ঙ্কর এক পরিবেশ বিরাজমান চতুর্দিকে। কেউ খুন হলে বা কেউ গুম হলে বা কোনো অঘটন ঘটলে সামাজিক মিডিয়া নামে পরিচিত পেইজবুক টুইটার, গুগুল সবকিছুতে প্রবল উত্তেজনার ঢেউ বয়ে যায়। সত্য মিথ্যা বা ঘটনার ভেতরে যাওয়ার পরিবর্তে গুজবের ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যায় প্রত্যেক নাগরিককে। যেহেতু প্রত্যেক নাগরিকের হাতে এন্ড্রয়েড ফোন সেহেতু প্রত্যেকের কোন না কোন সামাজিক মাধ্যমে নিজস্ব আই,ডি আছে,তাঁর নিজস্ব বিচরন ক্ষেত্র আছে।প্রত্যেক নাগরিক নিজস্ব মতামত ব্যাক্ততো করেই আবার অন্যের মতামতে নীজস্ব মত সংযোজন করার বা ব্যাক্ত করার পথও অবারিত। যে কোন নাগরিক তৎক্ষনাৎ যে কোন বিষয়ে জানার, উপলব্দি করার, প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করার, অন্যের মতামত জানার বুঝার সুযোগ আছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভট গুজব ছড়িয়ে যে কোন মহুর্তেই অঘটন ঘটানো কোন ব্যপারই নয়।
যেমন সাঈদীকে চাঁন্দে দেখা যায়- এমনটি কোন সচেতন নাগরিক চিন্তা করে নাই, নবী করিম (স:) কে জলে স্থলে অন্তরিক্ষে এযাবৎ দেখা গেলনা অথছ সাঈদীর মত একজন খুনীকে কোন মাজেজায় চান্দে দেখা যায়। মাছের গায়ে নিজামি,গরুর পেটে মোজাহীদ ইত্যাদি কত যে মিথ্যে অপপ্রচার তাঁর কোন ইয়ত্তা আছে? সাঈদীর চাঁদ কতজনের জীবন কেড়ে নিল,কত সম্পদ ধ্বংস হল, তাঁর কি কোন হিসেব এই পয্যন্ত কেউ পেয়েছে?
ঘুম, হত্যা, হামলা ইত্যাদির কথা আর কি বলব, রীতিমত সামাজিক বিপ্লব ঘটে যায়। সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের কোন প্রয়োজন পড়ে না!! প্রত্যান্ত নিবিড় পল্লির কোন সংবাদ বাদ যায় না--যা সামাজিক মাধ্যমে আসেনা।খবরটি প্রকাশে রাষ্ট্রের বা ভুক্তভুগি পরিবারের বড় কোন ক্ষতির সম্ভাবনা আছে কিনা তাও চিন্তার প্রয়োজন পড়েনা। এইধরনের উলঙ্গ স্বাধীনতা পৃথিবীর কোন সভ্য গনতান্ত্রিক দেশে আছে কিনা আমার জানা নেই।
গত বছর বাংলাদেশ এবং ফ্রান্সে জঙ্গী হামলা হয়েছিল। এবারও দুর্ভাগ্যগুনে হোক আর সুভাগ্যগুনে হোক প্রায় একই সময়ে দুই দেশেই হামলা হয়েছে। তাঁরাও সামাজিক মাধ্যমের উপর নিষেদাজ্ঞা জারি করেছিল--আমাদের দেশেও নিষেদাজ্ঞা জারি করেছিল।রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য বিশ্বের সকল দেশেই এই ধরনের নিষেদাজ্ঞা জারির নিয়মরীতি বলবৎ আছে। ফ্রান্সের জনগনের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি বরঞ্চ সরকারকে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে সহযোগিতা দূরে থাকুক বিদেশী এপস ব্যবহার করে পেইজবুকে সরকারের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই সমালোচনাতো করেছেই ব্যঙ্গ চিত্র একে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল-- যেন দেশের বড় কোন ক্ষতি সরকার করে ফেলেছে।অথছ আমাদের দেশে কিছু দিন পর খুলে দিলেও তাঁদের দেশে এখনও জনগন সামাজিক মাধ্যমটি বন্ধ রেখেছে। কই কেউতো বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানালো না!!
বিশ্বায়নের নামে খুলে যাওয়া সামাজিক মিডিয়া পরিণত হয়েছে গুজব চড়ানো এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের বিচরনের প্রাণকেন্দ্রে। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা উঠলে একশ্রেণির সামাজিক সুশীল ও বুদ্ধিবৃত্তির চেলারা গলা ফাটিয়ে বলেন কন্ঠরোধ করছে সরকার। তাঁদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই--"তোমার কন্ঠ কি আমার ঘুম ভাঙ্গাতে পারে? তোমার যেমন কন্ঠবাজি করার স্বাধীনতা আছে আমারও ঘুমের স্বাধীনতা আছে। তোমার স্বাধীনতা কি আমার স্বাধীনতা বিপন্ন করতে পারে? আমার ঘুম ভাঙ্গাবার অধিকার কে দিয়েছে তোমাকে?
তারচেয়ে ভয়াবহ খবর হচ্ছে অনলাইনের বিভিন্ন পাবলিক গ্রুপের মাধ্যমে জঙ্গী সংগ্রহ করার খবর।পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়-জঙ্গীনেতারা বিভিন্ন নামে (সন্দেহের বাহিরে) যেমন প্রেমসংক্রান্ত, রক্তদান সংক্রান্ত, অথবা সুন্দরী মেয়ের ছবি আপলোডের মাধ্যমে যৌন সুড়সুড়ি জাগানিয়া গ্রুপের মাধ্যমে প্রথমিক কাজ শুরু করে।অন-লাইনে তদারকির তেমন কড়াকড়ি না থাকার সুযোগে এই সামাজিক সাইট সমুহকে তাঁরা কাজে লাগাচ্ছে অশুভ শক্তির নিয়োগের প্রাথমিক স্তরের ভুমিকায়।
সামাজিক সাইটগুলী বিকাশের প্রাথমিক পয্যায় তাঁরা তাঁদের অবস্থান সুদৃড করে নেয়। কিশোর বয়সীরা ‘ডেসপারেটলি’ সরকারের বা রাষ্ট্রের সমালোচনা করছে কিনা, তারা অন্যধর্মের প্রতি কী ধরনের মন্তব্য করছে, এসব দেখতে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে, সমসাময়িক ইস্যুতে নানা পোস্ট দিয়ে ওঁত পেতে বসে থাকে ধর্মাশ্রয়ী উগ্র ও নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো। তাছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রীয় পাবলিক গ্রুপের সদস্য হয়েও চুপ করে বসে থাকে।কে কি পোষ্ট দিল,পোষ্টের উপর কে কি মন্তব্য করছে তা লক্ষ করে অগোচরে,নিজেরা মন্তব্য থেকে বিরত থাকে।পরবর্তিতে ঐ পোষ্ট দাতার প্রোফাইল দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সে আস্তিক নাকি নাস্তিক। ধর্ম বিষয়ে দুর্বলতার সুযোগে তাঁদের সাথে শুরু করে ম্যাসেজ বিনিময়। শুরু হয় ব্যক্তিগত আলাপ। ফাঁদে ফেলতে শুরুতে স্টাডি সার্কেল এবং তারপর রয়েছে দ্বীনের দাওয়াত। একটা সমমনা গোষ্ঠী তৈরি হওয়ার পর সেখান থেকে বেছে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিকে মূল গ্রুপ থেকে সরিয়ে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। একসঙ্গে ওঠবস করলেও অপারেশনের জন্য যাদের বেছে নেওয়া হল, তাদের কোনও কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তখন আর ওই পুরো সার্কেলের কেউ কিছু জানতে পারেন না। পুরো প্রক্রিয়াটার জন্য একজনের পেছনে জঙ্গীনেতাদের সময় দিতে হয় কম করে দেড় দুইবছর।
উপসংহারে বলতে চাই--গনতন্ত্রকে সুসংহত এবং কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে সর্বস্তরে উপভোগ্য করার লক্ষে নতুন প্রজম্মের বিচরন ক্ষেত্র "সামাজিক মাধ্যম সমুহ" ব্যবহারের নীতিমালা ঢেলে সাজানো সময়ের দাবি।
পেইজবুকে আই,ডি খুলার জন্য নাম, ঠিকানা সঠিকভাবে উল্লেখ করার কৌশল আবিস্কার করতে হবে সরকারকে। অন-লাইনের ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজিয়ে উঠা সংবাদ পোর্টাল গুলিকে অনলাইন পত্রিকার আওতা ভুক্ত করে অপ-লাইনের সংবাদ পত্রের ন্যায় রেজি: আওতায় নেয়া জরুরী প্রয়োজোন। বিভিন্ন নামে গড়ে উঠা পাবলিক গ্রুপ সমুহকে সংবাদ পোর্টালের আওতায় নিয়ে রেজি: বাধ্যতামুলক করা প্রয়োজন।( কারন পাবলিক গ্রুপ জনপ্রিয় পত্রিকার পাঠক, লেখক, সংবাদ পরিবেশন ইত্যাদি দিকগুলি বিবেচনায় নিলে পত্রিকার চেয়ে কোন অংশে কম নয়।) পেইজবুক পেইজ/ ওয়েব খুলার ক্ষেত্রে মুল আই,ডি সংযোগ অথবা আইডির নিয়ম কানুন প্রয়োগ অপরিহায্য।
গুজবের উৎসস্থল চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া গ্রহন করে আইনের আওতায় নিতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামো বহির্ভূত মতামত প্রকাশের ফৌজদারি শাস্তির বিধান করতে হবে। প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রেখে প্রচলিত সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রন আইন সংশোধন বর্তমান সময়ের দাবী।
গুরুত্বপুর্ণ সামাজিক মাধ্যমটি সর্বস্তরে ভীতিহীন উপভোগ্, স্বাধীনভাবে সর্বস্তরের নাগরিকদের বিচরন করার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে অশুভ শক্তির বিতাড়ন অপরিহায্য। গুরুত্ব পুর্ন মিডিয়া হিসেবে উহার ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় আইনী বেস্টনী থাকা একান্ত প্রয়োজন। এই প্রজম্মের বিচরনক্ষেত্র কন্টকমুক্ত রাখতে পারলেই আগামী প্রজম্মের সুনাগরিক সৃষ্টির আশা করা যেতে পারে।
'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন