বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে জঙ্গী উত্থানের অন্যতম কারন নিয়ন্ত্রনহীন অন-লাইন।

বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপি চলমান অস্থিরতা,উৎকণ্ঠা, জঙ্গীপনার মুলভিত্তি অন-লাইন--
_______________________________________________

 
     সদুর অতীত থেকে দেখা যায়,নতুন কোন দর্শন হোক বা আবিস্কারই হোক,তরুন প্রজম্ম সে দিকে ঝুকে পড়ার প্রবনতা।সে দর্শন বা আবিস্কার কতটুকু মানব কল্যানে অবদান রাখতে পারবে তাঁর বাছ বিচার নেহায়তই কম সংখ্যক তরুনের বিচার করার ক্ষমতা থাকে। যেমন মার্কসইজম-শুধুমাত্র রুশ তরুনদের আকৃষ্ট করেছিল তাই নয়, বিশ্বের প্রায় সকল তরুনদের আকর্ষন করেছিল এই আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দর্শন। কালের প্রবাহে রুশ দেশেই কালজয়ী এই দর্শন বাতিল করে গনতন্ত্রের পথে তাঁদের উন্নয়ন অগ্রগতি নিশ্চিত করছে। চিনের মাও সেতুং এবং তাঁর কালজয়ী দর্শন চীনের প্রাচির ডিঙ্গিয়ে বিশ্বজুড়ে তরুন সমাজের মধ্যে বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। সেই দর্শন অনেকটাই পরিবর্তন পরিবর্ধন করে বর্তমান বিশ্বায়নের যুগেও মাও সসেতুং এএর দর্শন চীনের ররাষ্ট্রীয় বব্যবস্থায় টিকে আছে।

   এই যুগে এসে আবিস্কারের স্থান দখল করে নিয়েছে প্রযুক্তি।এমনি প্রযুক্তির এক নব সংযোজন ইন্টারনেট। তাঁরই অঙ্গিভুত অনলাইন মিডিয়া- ইলেকট্রোনিক মিডিয়া, অপলাইনের খবরের কাগজ ইত্যাদিকে পেছনে পেলে দ্রুত দখল করে নিয়েছে তথ্য আদান প্রদানের গুরুত্বপুর্ণ মাধ্যমটিকে।

     অনলাইন মিডিয়া জগতের মধ্যে পেইজবুক নতুন হয়েও গুগুলের মত প্রতিষ্ঠিত মিডিয়াকে অনেক পেছনে পেলে জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থানটি দখল করে নিয়েছে।মুলত: এনড্রয়েড ফোন এবং বিভিন্ন কোম্পানীর সীমকার্ডের সহজলভ্যতার কারনে পেইজবুক সহ অন্যান্য অন-লাইন মিডিয়াগুলী দ্রুত এগোতে সক্ষম হয়েছে। সারা বিশ্বকে প্রযুক্তির এই নব ধারনা পরিবর্তন করে দিয়েছে।তাঁর ঢেউ টর্নেডোর চেয়ে দ্রুত বাংলাদেশের মানুষকে আকৃষ্ট করেছে।

   বাংলাদেশেও অনলাইনের তথা পেইজবুক, টুইটার, গুগুল ব্যবহাকারি খুব দ্রুত বেড়ে অপলাইন পত্রিকা, ইলেকট্রোনিক মিডিয়া গুলীকে যাদুঘরে পাঠানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এই প্রযুক্তি যথাযথ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে বর্তমান সময়ে বিপদের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
         
    প্রযুক্তির কারনে দুনিয়া বদলে গেছে সত্য। বাংলাদেশের মত উন্নয়নকামি দেশের সবকিছু নিজেদের মতো করে চিন্তা করা উচিৎ। একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি, আবিষ্কার মেধা, প্রগতির যুগ এটা নয়। মানুষের যা কিছু অর্জন যা কিছু সভ্যতা তার পায়ে ভর দিয়ে সে এখন আকাশ ছুঁতে চাইছে। বর্তমান সময় চটজলদি পাওয়ার সময়। প্রযুক্তি দখল করে নিয়েছে আবিষ্কারের জায়গা। প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবনের অনেককিছু সহজ সরল করে দিয়েছে সত্য-অপরদিকে রয়েছে সমুহ বিপদের সম্ভাবনা।

    বিশ্বব্যাপি প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারনে সরকার, রাষ্ট্র, চলমান ব্যবস্থাকে পরোয়া না করে গড়ে উঠছে বিকল্প জনমত।বিশ্বের চলমান ব্যাবস্থায় ধস নামিয়ে প্রযুক্তি কত দেশ ও সমাজের চেহারায় আমূল পরিবর্তন এনে দিচ্ছে  ভবিষ্যত প্রজম্ম এই সমস্ত পরিবর্তন সম্পর্কে জানতেও পারবেনা। এই সমস্ত কিছুতে সবকিছুই দরকারি বা প্রয়োজনীয় ছিল তা কিন্তু নয়।  হুজুগের পরিবর্তনে ভেসে যাওয়া অনেক কিছুই ভবিষ্যতে হারানোর বেদনার কারণ হবে-এতে কোন সন্দেহ নেই। উল্লেখ্য বাংলাদেশও তার বাইরে যেতে পারবেনা।
   
  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এই কিছুদিন আগেও ব্যাক্তিগত ভাবে আমি শক্তিশালী একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করতাম। বিবেচনা করার অন্যতম কারন ছিল প্রচলিত গনমাধ্যমগুলি সর্ববিষয়ে অনেকটা কেন্দ্রিকতার আবরনে আচ্ছাদিত--প্রকারান্তরে সামাজিক মাধ্যম অনেক বেশী বহি:রাবরনে বিশ্বাসী। সর্ব সাধারনের অবাধ বিচরন এবং অংশগ্রহনের কারনে মাধ্যমটি সার্বজনীন মাধ্যমের রুপ পরিগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে।এই সার্বজনীনতা  যতই দিন গড়াচ্ছে ততই আমার ধারনায় চিড়ের পরিমান বাড়িয়ে দিচ্ছে।

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এখন আমি আর মিডিয়া মনে করতে পারিনা। মিডিয়া মনে হতেই অজানা এক আশংকায় বুকে কাঁপন ধরে।  অসম্পাদিত  মিডিয়া বিপদের কারন বয়ে আনতে পারে আমার ধারনায় ছিলনা। সামাজিক মাধ্যম এডিট করার কোন ব্যবস্থা না থাকায় যত্রতত্র ভাবে এই গুরুত্বপুর্ণ মাধ্যমকে একশ্রেনীর দুষ্ট প্রকৃতির অশুভ শক্তি ব্যবহার করে রাষ্ট্র, সরকার, দেশ ও জাতির উৎকন্ঠার কারন সৃষ্টি করেছে।
   
    মতপ্রকাশের নীতিমালা, নিয়ন্ত্রন, সংশোধন, সংযোজন থাকবেনা অথছ--রাষ্ট্র, আইন, কাঠামো সবকিছু বলবৎ থাকবে, এটা হতে পারে না।রাষ্ট্রে বসবাসের জন্য নাগরিক থাকবে অথছ তাঁদের নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা থাকবেনা, খেয়ালখুশী মর্জিমাপিক মতবাদ প্রচার করার সুযোগ থাকবে-- তা কি হয়?’ আমি স্বীকার করি সোশ্যাল মিডিয়া নামে পরিচিত মাধ্যমগুলো জনমত তৈরি শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। রাজপথের জনসভা, মিছিল, মিটিংয়ে জনমত তৈরীর  স্থান দখল করে নিয়েছে সামাজিক মাধ্যম। কিন্তু এগুলো যে আসলে ব্রেকহীন গাড়ির মতো তা চিন্তা করেছে কেউ কোন দিন? কখন কোথায় ধাক্কা মারে তার কোন ইয়ত্তা আছে??
   
      কবিতা পদ্য-গদ্য লেখা সব ঠিক আছে কিন্তু সমস্যা হচ্ছে রাজনীতি এবং সামাজিক বিষয় সমুহ নিয়ে। সর্ববস্থায়  এগুলোর নেগেটিভ প্রচারনায় সমুহ বিপদের কারন হতে পারে। যেকোন দেশের রাজনৈতিক দলের নিজস্ব দর্শন থাকে, নীতি থাকে, প্রতিশ্রুতি থাকে।এই সমস্ত নীতি আদর্শ জনগনের নিকট তুলে ধরে জনমত সংঘটিত করে-জনগনের রায় নিয়ে সরকার গঠন করে। সঙ্গত কারনে সেই নির্বাচিত রাজনৈতিক দলের নীতি আদর্শ সরকারের দৈনন্দিন কাজে প্রভাব পড়বে।সরকার গঠন করা রাজনৈতিক দলকে তাঁর দর্শন বাস্তবায়নের সুযোগ না দিয়ে পরাজিত রাজনৈতিক দলের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য অনৈতিক চাপ দেয়া কি অন্যায় নয়?, অগনতান্ত্রিক নয়?
    রাষ্ট্র কতৃক নিষিদ্ধ কোন দলের আদর্শ বা দর্শন অপ-লাইনের গনমাধ্যমে প্রকাশের কোন সুযোগ নেই, গনমাধ্যম জবাব দিহীতার আওতায় থাকার কারনে। সামাজিক মাধ্যমে সেই রীতিনীতি কিছুই না থাকার কারনে অবাধে তাঁদের আদর্শ প্রচার করে যাচ্ছে, শুধু তাই নয়- কল্পনার রঙ মিশিয়ে, ছবি এডিট করে, এমনসব মিথ্যা আর আজগুবী তথ্যের প্রকাশ ঘটাবে, সাধারনত যে কোন মহুর্তেই তাঁর বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া অসম্ভব নয়।
   
    বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে যেমনটি যা ইচ্ছা তা প্রকাশ করা সম্ভব হয় অন্যকোন দেশে সেইভাবে সম্ভব হয়না। গনতন্ত্রেরও সীমাবদ্ধতা আছে, স্বাধীনতারতো বটেই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ এই নয়-যা ইচ্ছে তাই লিখে ফেলা যায় বা বলে দেয়া যায়। রাষ্ট্র কাঠামোর অভ্যন্তরে থেকে মতপ্রকাশ করাকে প্রকৃত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলে। গনতন্ত্র, স্বাধীনতা, তথ্য আদান প্রদানের স্বাধীনতা যাই বলিনা কেন-কেন্দ্রিকতা অনিবায্য।সেই কেন্দ্রিকতাই হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পয্যায় রাষ্ট্র কাঠামো। রাজনৈতিক দলের নেতা নির্বাচন বা সিদ্ধান্ত গ্রহনে যেমন গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতাকে অনুসরন করা হয়-রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও--রাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুসরন অপরিহায্য। গনতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা যেমন দল,  সংগঠন ক্লাব বা পরিবার, সমাজকে বাঁচিয়ে রাখে তেমনি রাষ্ট্রীয় কাঠামো- সরকার, দেশ, জাতিকে বাঁচিয়ে রাখে। নচেৎ কিছুই স্থায়িত্ত্ব পেতনা, পাওয়ার কোন কারনই ছিলনা।
   
      বাংলাদেশে যে কোনো বিষয়ে উস্কানি আর যা খুশি বলা বা লেখাটা অভ্যাসের পর্যায় পৌঁছে গেছে। রীতিমতো ভয়ঙ্কর এক পরিবেশ বিরাজমান চতুর্দিকে। কেউ খুন হলে বা কেউ গুম হলে বা কোনো অঘটন ঘটলে সামাজিক মিডিয়া নামে পরিচিত পেইজবুক টুইটার, গুগুল  সবকিছুতে প্রবল উত্তেজনার ঢেউ বয়ে যায়। সত্য মিথ্যা বা ঘটনার ভেতরে যাওয়ার পরিবর্তে গুজবের ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যায় প্রত্যেক নাগরিককে। যেহেতু প্রত্যেক নাগরিকের হাতে এন্ড্রয়েড ফোন সেহেতু প্রত্যেকের কোন না কোন সামাজিক মাধ্যমে নিজস্ব আই,ডি আছে,তাঁর নিজস্ব বিচরন ক্ষেত্র আছে।প্রত্যেক নাগরিক নিজস্ব মতামত ব্যাক্ততো করেই আবার অন্যের মতামতে নীজস্ব মত সংযোজন করার বা  ব্যাক্ত করার পথও অবারিত। যে কোন নাগরিক তৎক্ষনাৎ যে কোন বিষয়ে জানার, উপলব্দি করার, প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করার, অন্যের মতামত জানার বুঝার সুযোগ আছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভট গুজব ছড়িয়ে যে কোন মহুর্তেই অঘটন ঘটানো কোন ব্যপারই নয়।
     যেমন সাঈদীকে চাঁন্দে দেখা যায়- এমনটি কোন সচেতন নাগরিক চিন্তা করে নাই, নবী করিম (স:) কে জলে স্থলে অন্তরিক্ষে এযাবৎ দেখা গেলনা অথছ সাঈদীর মত একজন খুনীকে কোন মাজেজায় চান্দে দেখা যায়। মাছের গায়ে নিজামি,গরুর পেটে মোজাহীদ ইত্যাদি কত যে মিথ্যে অপপ্রচার তাঁর কোন ইয়ত্তা আছে? সাঈদীর চাঁদ কতজনের জীবন কেড়ে নিল,কত সম্পদ ধ্বংস হল, তাঁর কি কোন হিসেব এই পয্যন্ত কেউ পেয়েছে?
   ঘুম, হত্যা, হামলা ইত্যাদির কথা আর কি বলব, রীতিমত সামাজিক বিপ্লব ঘটে যায়। সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের কোন প্রয়োজন পড়ে না!! প্রত্যান্ত নিবিড় পল্লির কোন সংবাদ বাদ যায় না--যা সামাজিক মাধ্যমে আসেনা।খবরটি প্রকাশে রাষ্ট্রের বা ভুক্তভুগি পরিবারের বড় কোন ক্ষতির সম্ভাবনা আছে কিনা তাও চিন্তার প্রয়োজন পড়েনা। এইধরনের উলঙ্গ স্বাধীনতা পৃথিবীর কোন সভ্য গনতান্ত্রিক দেশে আছে কিনা আমার জানা নেই।
  গত বছর বাংলাদেশ এবং ফ্রান্সে জঙ্গী হামলা হয়েছিল। এবারও দুর্ভাগ্যগুনে হোক আর সুভাগ্যগুনে হোক প্রায় একই সময়ে দুই দেশেই হামলা  হয়েছে। তাঁরাও সামাজিক মাধ্যমের উপর নিষেদাজ্ঞা জারি করেছিল--আমাদের দেশেও নিষেদাজ্ঞা জারি করেছিল।রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য বিশ্বের সকল দেশেই এই ধরনের নিষেদাজ্ঞা জারির নিয়মরীতি বলবৎ আছে। ফ্রান্সের জনগনের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি বরঞ্চ সরকারকে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে সহযোগিতা দূরে থাকুক বিদেশী এপস ব্যবহার করে পেইজবুকে সরকারের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই সমালোচনাতো করেছেই ব্যঙ্গ চিত্র একে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল-- যেন দেশের বড় কোন ক্ষতি সরকার করে ফেলেছে।অথছ আমাদের দেশে কিছু দিন পর খুলে দিলেও তাঁদের দেশে এখনও জনগন সামাজিক মাধ্যমটি বন্ধ রেখেছে। কই কেউতো বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানালো না!!

      বিশ্বায়নের নামে খুলে যাওয়া সামাজিক মিডিয়া পরিণত হয়েছে গুজব চড়ানো এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের বিচরনের প্রাণকেন্দ্রে। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা উঠলে একশ্রেণির সামাজিক সুশীল ও বুদ্ধিবৃত্তির চেলারা গলা ফাটিয়ে বলেন কন্ঠরোধ করছে সরকার।  তাঁদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই--"তোমার কন্ঠ কি আমার ঘুম ভাঙ্গাতে পারে? তোমার যেমন কন্ঠবাজি করার স্বাধীনতা আছে আমারও ঘুমের স্বাধীনতা আছে। তোমার স্বাধীনতা কি আমার স্বাধীনতা বিপন্ন করতে পারে? আমার ঘুম ভাঙ্গাবার অধিকার কে দিয়েছে তোমাকে?
তারচেয়ে ভয়াবহ খবর হচ্ছে অনলাইনের বিভিন্ন পাবলিক গ্রুপের মাধ্যমে জঙ্গী সংগ্রহ করার খবর।পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়-জঙ্গীনেতারা বিভিন্ন নামে (সন্দেহের বাহিরে) যেমন প্রেমসংক্রান্ত, রক্তদান সংক্রান্ত, অথবা সুন্দরী মেয়ের ছবি আপলোডের মাধ্যমে যৌন সুড়সুড়ি জাগানিয়া গ্রুপের মাধ্যমে প্রথমিক কাজ শুরু করে।অন-লাইনে তদারকির তেমন কড়াকড়ি না থাকার সুযোগে এই সামাজিক সাইট সমুহকে তাঁরা কাজে লাগাচ্ছে অশুভ শক্তির নিয়োগের প্রাথমিক স্তরের ভুমিকায়।
 সামাজিক সাইটগুলী বিকাশের প্রাথমিক পয্যায় তাঁরা তাঁদের অবস্থান সুদৃড করে নেয়। কিশোর বয়সীরা  ‘ডেসপারেটলি’ সরকারের বা রাষ্ট্রের সমালোচনা করছে কিনা, তারা অন্যধর্মের প্রতি কী ধরনের মন্তব্য করছে, এসব দেখতে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে, সমসাময়িক ইস্যুতে নানা পোস্ট দিয়ে ওঁত পেতে বসে থাকে ধর্মাশ্রয়ী উগ্র ও নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো। তাছাড়াও  বিভিন্ন জনপ্রীয় পাবলিক গ্রুপের সদস্য হয়েও চুপ করে বসে থাকে।কে কি পোষ্ট দিল,পোষ্টের উপর কে কি মন্তব্য করছে তা লক্ষ করে অগোচরে,নিজেরা মন্তব্য থেকে বিরত থাকে।পরবর্তিতে ঐ পোষ্ট দাতার প্রোফাইল দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সে আস্তিক নাকি নাস্তিক। ধর্ম বিষয়ে দুর্বলতার সুযোগে তাঁদের সাথে শুরু করে ম্যাসেজ বিনিময়। শুরু হয় ব্যক্তিগত আলাপ। ফাঁদে ফেলতে শুরুতে স্টাডি সার্কেল এবং তারপর রয়েছে দ্বীনের দাওয়াত। একটা সমমনা গোষ্ঠী তৈরি হওয়ার পর সেখান থেকে বেছে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিকে মূল গ্রুপ থেকে সরিয়ে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। একসঙ্গে ওঠবস করলেও অপারেশনের জন্য যাদের বেছে নেওয়া হল, তাদের কোনও কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তখন আর ওই পুরো সার্কেলের কেউ কিছু জানতে পারেন না। পুরো প্রক্রিয়াটার জন্য একজনের পেছনে  জঙ্গীনেতাদের সময় দিতে হয় কম করে দেড় দুইবছর।
     উপসংহারে বলতে চাই--গনতন্ত্রকে সুসংহত এবং কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে সর্বস্তরে উপভোগ্য করার লক্ষে নতুন প্রজম্মের বিচরন ক্ষেত্র "সামাজিক মাধ্যম সমুহ" ব্যবহারের নীতিমালা ঢেলে সাজানো সময়ের দাবি।
  পেইজবুকে আই,ডি খুলার জন্য নাম, ঠিকানা সঠিকভাবে উল্লেখ করার কৌশল আবিস্কার করতে হবে সরকারকে। অন-লাইনের ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজিয়ে উঠা সংবাদ পোর্টাল গুলিকে অনলাইন পত্রিকার আওতা ভুক্ত করে অপ-লাইনের সংবাদ পত্রের ন্যায় রেজি: আওতায় নেয়া জরুরী প্রয়োজোন। বিভিন্ন নামে গড়ে উঠা পাবলিক গ্রুপ সমুহকে সংবাদ পোর্টালের আওতায় নিয়ে রেজি: বাধ্যতামুলক করা প্রয়োজন।( কারন পাবলিক গ্রুপ জনপ্রিয় পত্রিকার পাঠক, লেখক, সংবাদ পরিবেশন ইত্যাদি দিকগুলি বিবেচনায় নিলে পত্রিকার চেয়ে কোন অংশে কম নয়।) পেইজবুক পেইজ/ ওয়েব খুলার ক্ষেত্রে মুল আই,ডি সংযোগ অথবা আইডির  নিয়ম কানুন প্রয়োগ অপরিহায্য।
     গুজবের উৎসস্থল চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া গ্রহন করে আইনের আওতায় নিতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামো বহির্ভূত মতামত প্রকাশের ফৌজদারি শাস্তির বিধান করতে হবে। প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রেখে  প্রচলিত সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রন আইন সংশোধন বর্তমান  সময়ের দাবী।
   গুরুত্বপুর্ণ সামাজিক মাধ্যমটি সর্বস্তরে ভীতিহীন উপভোগ্, স্বাধীনভাবে সর্বস্তরের নাগরিকদের বিচরন  করার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে অশুভ শক্তির বিতাড়ন অপরিহায্য। গুরুত্ব পুর্ন মিডিয়া হিসেবে উহার  ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় আইনী বেস্টনী থাকা একান্ত প্রয়োজন। এই প্রজম্মের বিচরনক্ষেত্র কন্টকমুক্ত রাখতে পারলেই আগামী প্রজম্মের সুনাগরিক সৃষ্টির  আশা করা যেতে পারে।
     
                'জয়বাংলা    জয়বঙ্গবন্ধু'

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন