সরকারের সায় পেলে জামায়াত ত্যাগ বিএনপির-অরণ্যে রোদনে পরিনত হবে শেষ ইচ্ছাও।
সরকারের সায় পেলে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনে জামায়াতকে ত্যাগ বিএনপির!! -"অরণ্যেরোদন"।
_____________________________________________
এই মহুর্তে দেশের চাঞ্চল্যকর খবর কি? নি:সন্দেহে "জাতীয় ঐক্যমতের পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকারের সায় ফেলে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগে প্রস্তুত।" বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের সতীর্থ, বিশদলীয় জোটের অন্যতম শরিক, দলটির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়ার ক্ষমতা গ্রহনের নেপথ্যের কারিগর, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে বিনাশের উদ্দেশ্যে বিদেশী লবিষ্ট নিয়োগ এবং আন্তজাতিক চক্রান্তের একক খরছ বহনকারি,তৃনমুলে আন্দোলন সংগ্রাম সংগঠিত করার নির্ভরশীল শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে আরব রাষ্ট্র সহ মৌলবাদি দেশীয় অন্যান্ন শক্তি সমুহকে নিয়ন্ত্রনকারি, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিশ্বস্থ প্রতিষ্ঠান, আওয়ামীলীগ সরকার উৎখাতে জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের কারিগর, মাঠ পয্যায় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদীতায় একক বিনিয়োগকারি একান্ত পরিক্ষিত, অনুগত বন্ধু, মিত্রশক্তি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করার ঘোষনা।
জামায়াতের এত গুনাবলীকে ত্যাগ করে এই মহুর্তে সরকারের সাথে সমাঝোতায় আসার কি প্রয়োজন বিএনপির ? বিএনপি-জামায়াত নেতাদের বাঁচাতে, মানবতাবিরুধী বিচার বাঞ্চাল করার উদ্দেশ্যে দলটি উপোয্যপুরি আন্দোলন সংগ্রামে নাশকতা, বোমাবাজি, আগুন সন্ত্রাস, আগুনবোমা, লাগাতার অবরোধ সহ সেনাবাহিনীকে উস্কানী, শাফলা চত্বরের হেফাজতীদের অবস্থানকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়ে ঢাকাবাসিকে রাস্তায় নামার আহব্বান-দলীয় নেতাকর্মীদের তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটুক্তি, জাতির জনকের পরিবারকে নিয়ে নির্মম পরিহাস, মানবতা বিরুধী ট্রাইবুনালের সম্মানীত বিচারকদের বিচার করার ঘোষনা, প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র পুত্র জয়কে হত্যা পরিকল্পনায় জড়িতদের রাজনৈতিক পদায়ন ও পৃষ্টপোষকতা সহ এমন কোন অরাজনৈতিক অশোভন, রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত কাজ নেই- দলগত ভাবে ও তাঁর নেত্রী খালেদা জিয়া এবং তাঁর পুত্র তারেক জিয়া কতৃক করা হয়নি।
উল্লেখীত সকল কাজকে তাঁদের পোষ্য পেইড বুদ্ধিজীবিগন প্রতিনিয়ত অনির্বাচিত সরকার, দেশের সুশাষনের অভাব, মন্ত্রী পরিষদের যৌথ সিদ্ধান্তের বদলে একব্যক্তির সিদ্ধান্তে সরকার পরিচালনা, মৌলিক অধিকারহীনতার কারনে জঙ্গীর উত্থান, পুলিশি শাষন, বাক ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার অভাব,গনতন্ত্রহীনতা ইত্যাদি অজুহাতে যুক্তির আড়ালে সঠিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড হিসেবে প্রচার প্রপাকান্ড আজও অব্যাহত রেখেছন।
উল্লেখীত অরাজনৈতিক কর্মকান্ড সমুহকে জাতির জনকের কন্যা তাঁর বংশগত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, উপস্থীত বুদ্ধি, বিচক্ষনতা, অপরিসীম ধৈয্য, জনগনের অসীম ভালবাসার গুনে মোকাবেলা করে দেশকে স্থীতিশীল রাজনৈতিক অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরু হ'তে অদ্যাবদি কোন রাজনৈতিক কর্মসূচির মোকাবেলা করতে হয়নি সরকারের প্রশাসন অথবা জনগনকে। রাজপথ, কোর্টকাচারী, বিশ্ববিদ্যালয় সমুহ,, বিমান বন্দর, সমুদ্র বন্দর, সহ সরকারের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গে স্বাভাবিক, সুষ্ঠ ভাবে সকল কর্মকান্ড অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সরকার এবং তাঁর নির্বাহী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অক্লান্ত পরিশ্রম, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, সুদুরপ্রসারী চিন্তা চেতনার আলোকে দেশকে বিগত সরকার সমুহের শাষনকালের উপোয্যপুরি দুনীতির শীর্ষস্থান দখলকারির বদনাম গুছিয়ে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরীত করতে সক্ষম হয়েছন। সরকারের ধারাবাহিকতার কারনে আগামী ২০২১সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরীত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন আন্তজাতিক সাহায্য সংস্থা সহ বিশ্বব্যাংক ও বিদেশী বন্ধুরাষ্ট্র সমুহ। ইতিমধ্যে প্রবৃদ্ধি ৭'৫এর ঘরে পৌছে গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমানও সর্বকালের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে ত্রিশ বিলিয়নে পৌছেছে।বাংলাদেশ বিশ্ব আঙ্গিনায় উন্নয়ন, অগ্রগতির রোল মডেলে পরিনত হয়েছে।দেশী এবং বিদেশী অর্থনীতি বিশারদগনের অভিমত ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হবে স্বপ্নের বাংলাদেশ
উন্নয়ন অগ্রগতি বিষয়ে দেশী এবং বিদেশী বিশেষজ্ঞদের অভিমতের সত্যতা মেলে বর্তমান সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ সাহষী মানবিক সিন্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রতি লক্ষ করলে। স্বাধীনতার পর থেকে আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিনত হয়ে 'সোনালী আঁশ' খ্যাত 'পাট খাত এবং পাট সক্রান্ত শিল্প খাতটি' লোকসানী খাতে পরিনত হয়ে দেশের অর্থনীতির উপর বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তম্মধ্যে 'জোট সরকার কতৃক লুটপাটের উদ্দেশ্যে 'এশিয়ার বিখ্যাত পাটকল 'আদমজী জুট মিল'নাম মাত্র টাকায় বিক্রি করে এখাতটিকে আরো বড় বিপয্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়।এ খাতটির বেশ কয়েক বছরের শ্রমিক কর্মচারিদের বেতন ভাতা বকেয়া পড়ে যায়। এমনি সময়ে ঈদের আগমনে পাটকল শ্রমিক-কর্মীচারী, কর্মকর্তাগন থালা বাসন নিয়ে রাজপথে ভুখা মিছিল বের করে। তাঁদের ন্যায্য দাবী সরকারের নজরে আনার উদ্দেশ্যে তাঁরা মিছিলটি বের করে এতে কোন সন্দেহ নেই। অন-লাইন সহ পত্র-পত্রিকায় উক্ত মিছিলটি ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়।
মানবতার নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা শেখহাসিনার দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথে দুই ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে এই লোকসানী খাতের উন্নয়ন এবং শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য "একহাজার কোটি" টাকা বরাদ্ধ দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে ঈদের আগে উক্ত টাকা ছাড় দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এটা শ্রমিকদের প্রতি সরকারের দায়িত্ব অনেকে মনে করতে পারেন। তাই বিদেশীদের প্রসংঙ্গে আর একটি বিষয় উত্থাপন বাঞ্চনীয় মনে করি-'নেপালে ঘুর্নীঝড়ের কারনে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপয্যয় ঘটেছিল গত কয়েকমাস আগে, নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে। মানবতার নেত্রী বঙ্গনেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কোন দেশ সাড়া দেয়ার আগেই বাংলাদেশের ত্রান সামগ্রী পাঠিয়ে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্শন করতে সক্ষম হ'ন।দেশের উন্নয়নে পদ্মা সেতু,গভীর সমুদ্র বন্দর সহ অন্যান্ন বড় বড় উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড বাদই দিলাম।এই সমস্ত উন্নয়ন বাংলাদেশের স্বার্থে হচ্ছে।কিন্তু মানবতার স্বার্থে লোকসানী খাতে তৎক্ষনাৎ সিদ্ধান্তে একহাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ এবং নেপালকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আত্মমানবতার ডাকে তৎক্ষনাৎ সাহায্য দেয়া বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রমান নয় কি?
সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে তাঁরই প্রমান মানবতার সেবায়ও এতবড় অংকের সাহায্য বাংলাদেশ করতে পারে-"যে দেশটি তাঁর প্রথম বাজেট শুরু করেছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা দিয়ে, তাও বিদেশী সাহায্য নির্ভর বাজেট। সেই দেশটি ৪৫বছর বয়সে এসে একটি লোকসানী খাতে মানবিক সাহায্য দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছে একহাজার কোটি টাকা !! "
উপরের প্রসঙ্গটি যথাযথ অনুসরন করার অনুরুধ জানিয়ে পরবর্তি ঘটনা প্রবাহের প্রতি মনোযোগ দেয়ার অনুরোধ রইল প্রিয় পাঠক ভাইদের প্রতি--
এমনতর চলমান উন্নয়ন অগ্রগতির প্রারম্ভিকতায় দেখা দিয়েছে জঙ্গীউত্থান সংক্রান্ত বিষপোঁড়া। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র, দেশের অভ্যন্তরে বিএনপি জামায়াত সহ তদীয় বুদ্ধিজীবি গন সমুদয় হামলাকে আন্তজাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন 'আইএসআই' এর হামলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ব্যাপক প্রচার প্রপাকান্ড চালাতে থাকে। আমেরিকা দৃডতার সংঙ্গে বলতে থাকে উক্ত হামলা সমুহ 'আইএসআই' কতৃক সংগঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশে 'আইএসআই' এর ঘাঁটি বহু আগে থেকেই ছিল এবং আছে। একজন ব্লগার বা সমকামী খুনের পর পরই তাঁদের ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করা নিয়ম মাপিক রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছিল। তাঁদের সুরে সুর মিলিয়ে বিএনপি জামায়াতও একই কথা বার বার পুর্ণাবৃত্তি করে তাঁদের বিবৃতির সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়। তাঁরা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য প্রদানের প্রস্তাব দিতে থাকে।
বাংলাদেশ সরকার তাঁদের বিবৃতি এবং সাহায্য প্রস্তাবের প্রতি কোনরুপ দৃষ্টিপাত না করে 'বলতে থাকে বাংলাদেশে আই,এস,আই এর কোন অস্তিত্ব নেই।" উল্লেখীত বিচ্ছিন্ন ঘটনা সমুহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত' '৭১ এর মানবতা বিরুধী অপরাধের' বিচার বাঞ্চাল করার উদ্দেশ্যে 'জামায়াতশিবিরের সন্ত্রাসী' কতৃক সংঘঠিত হচ্ছে এবং এই অপকর্মের রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা দানকারি বিএনপি এবং তাঁর নেত্রী খালেদা জিয়া।"
পাঠকবর্গ 'আইএসআই' দমনের উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অদ্য পয্যন্ত যেই সমস্ত দেশে হস্তক্ষেপ করেছে, সেই সমস্ত দেশে 'আইএসআই' দমন হয়েছে? সে সমস্ত দেশে সরকারগুলী কি স্থীতিশীল ভাবে সরকারের কর্ম পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছে? ঐ সমস্ত দেশ ছেড়ে তাঁরা কি আজও ফিরে এসেছে? ইহা কি বিএনপি জামায়াত এবং তাঁদের পোষ্য পেইড বুদ্ধিজীবিদের মার্কিনীদের বাংলাদেশে নিরাপত্তার অজুহাতে এনে হলেও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র নয় কি?
"অনন্তকাল বাংলাদেশের 'আইএসআই' দমনও হবে না, তাঁদের বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়াও হবেনা।"
অদ্য পয্যন্ত ধৃত জঙ্গীদের মধ্যে বিদেশী কোন জঙ্গীনাগরীক ধরা পড়ার কোন প্রমান মেলেনি। যারাই ধরা পড়েছে বা পুলিশী অভিযানে মৃত্যু হয়েছে তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং জামায়াত শিবিরের সাবেক অথবা বর্তমান নেতাকর্মী। জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা 'আই এসআই' অথবা 'হিজবুত তাহরীর' অথবা 'জামায়াতুল মোজাহেদীন' হয়ে ব্লগার, শিক্ষক, সাহিত্যিক, সমাজকর্মী, পুরোহীত, বিদেশী নাগরীক হত্যা অব্যাহত রেখেছে। জনগনকে ভীতশ্রদ্ধ করে তাঁদের লক্ষ অর্জনে সফলকাম হওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁরা নিজেরাই 'বিদেশী সাইট সমুহ' ব্যবহার করে 'আন্তজাতিক ধর্মীয় চরমপত্থি সংগঠন 'আইএস আই' এর নামে বিবৃতি দিচ্ছে।
এই ঘটনা সমুহ চলাবস্থায় সবাই লক্ষ করেছেন বিএনপি বিবৃতি দিয়ে বক্তব্য দিয়ে বলার চেষ্টা করেছে সরকার 'বিরোদী মত দমন করার জন্য 'রাজনৈতিক কর্মীদের জঙ্গী' বানিয়ে জেলখানা পুর্ন করছে। দেশে 'আই,এস,আই' এর ঘাঁটি থাকা সত্বেও সরকার সে দিকে মনোযোগ নাদিয়ে, আন্দোলনরত: নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে। আদৌ জঙ্গী দমনের ইচ্ছা সরকারের নেই, বিরোধী মত দমনই মুর্খ্য উদ্দেশ্য। তাঁদের পোষ্য বুদ্ধিজীবিগন যুক্তি সহকারে গভীর রাতে ইলেকট্রোনিক্স মিডিয়ায়' 'টকশো''তে অন-লাইন, অপলাইনের পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধ, নিবন্ধ চাপিয়ে আন্তজাতিক জঙ্গীর উত্থান এবং তাঁদের উপস্থীতি বিষয় গনতন্ত্রহীনতার অভিযোগ উত্থাপন পুর্বক ব্যাপক অপপ্রচার অব্যাহত রাখে।
এরই মধ্যে ঘটে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসে চরমতম মর্মান্তিক ঘটনা। রোজার মধ্যে ইফতারের প্রারম্ভে ' বিদেশী 'কুটনৈতিক এলাকাখ্যাত উচ্চ সিকিউরিটি অঞ্চলভুক্ত গুলশান অভিজাত এলাকার একটি রেষ্ট্রুরেন্টে জঙ্গী হামলা ও জিম্মিনাটক। বাংলাদেশী তিনজন সহ ২০জন নিরীহ বিদেশীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দেশে বিদেশে আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পবিত্র দিনে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামায়াত 'শোলাকিয়ায়' দ্বিতীয় হামলা হয়। একজন দায়িত্ব্রত:পুলিশ কর্মকর্তা জীবন দিয়ে হামলাকারিদের প্রতিহত করে মুসল্লিদের জীবন বাঁচান।হাতেনাতে ধৃত হয় একজন জঙ্গী।
উল্লেখীত হামলাদ্বয়ের পর সরকার এবং জনগনের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যতা দেখা দেয়।পুলিশ, প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। পুলিশের যৌথ অভিযানে গুলশানেই নিহত হয় সাতজঙ্গী, একজনকে জীবিতবস্থায় আটক করে। জঙ্গীরা বেশীরভাগ নর্থ সাউথ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লুটেরা নব্যধনী উচ্চবিত্তের সন্তান। বিশ্ববিদ্যালয়টি জামায়াত নিয়ন্ত্রীত ব্যায়বহুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশে বিদ্যমান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম একটি।
সরকার এহেন অনৈসলামিক কর্মকান্ডে জীবন ওসম্পদ রক্ষার রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে কঠোর সিন্ধান্ত গ্রহন করে জঙ্গীদমন, উত্থান রোধে ব্যাপক নির্দেশনা জারি করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয় উৎস সন্ধানে একাধিক গোয়েন্দা তৎপরতা ও তদন্ত। বেরিয়ে আসতে থাকে ঘটনার নেপথ্যের বিভৎ উদ্দেশ্য। জড়িত হতে থাকে দেশের নামকরা রাগব বোয়ালেরা। অনুসন্ধান শুরু হয় পৃষ্টপোষকতাকারি, বেনিফিসিয়ারী, আশ্রয়দাতা এবং প্রশ্রয়দাতাদের। পাঁচ শতাধিক এনজিও, পঞ্চাশের অধিক ধনাঢ্যব্যাক্তি এবং দেশী বিদেশী অর্থদাতাদের নাম পুলিশের নোটবুকে জমা হয়। জড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপচার্য্য সহ আরো কতিপয় শিক্ষক।
অপর দিকে আওয়ামী লীগ সহ ১৪দল কর্মসুচি নিয়ে জঙ্গী প্রতিরোধে মাঠে নামে। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন মাঠে নামার প্রস্তুতি গ্রহন করে আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি আলোচনারত:। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সহ অন্যান্ন ছাত্র সংগঠন গুলীও জঙ্গীরোধে মাঠে নামার প্রস্তুতি গ্রহন করে। বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনও জঙ্গী বিরোধী কর্ম সুচি নিয়ে মাঠে অবস্থানের ঘোষনা দেয়। লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ সরকারের উদ্যোগে সাড়া দিয়ে কর্মসুচি নিয়ে রাজপথে থাকার ঘোষনা দেয়।জনগন স্বত:স্ফুর্ত ভাবে সরকারের আহব্বানে সাড়া দিয়ে জঙ্গী অভিযানে সহযোগীতা করা শুরু করে। ফলশ্রুতিতে বগুড়ার প্রত্যন্ত চর এলাকায়ও জঙ্গীর অবস্থান নিমিষেই আইনশৃংখলা বাহিনীর গোচরে আসতে শুরু করে। একের পর এক বিরামহীন পুলিশী অভিযানে বেরিয়ে আসতে থাকে অন্যান্ন লুকিয়ে থাকা জঙ্গীদের আস্তানা। ধরা পড়তে থাকে জঙ্গীসহ তাঁদের আশ্রয়দাতা, প্রশ্রয়দাতা, পোষাকাদি, অস্ত্রসস্ত্র, গোলাবারুদ এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার চক।
পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষনা করা হয় লোভনীয় পুরস্কার। জঙ্গীদের পিতা মাতা, আত্মীয় স্বজনেরা স্ব-উদ্যোগে খবর দিতে থাকে তাঁদের পুত্রদের জঙ্গী সম্পৃত্ততার। দেশব্যাপি শুরু হয় হারিয়ে যাওয়া যুবক যুবতিদের খোঁজ খবর। অবিভাবকেরা স্ব-উদ্যোগে নীজ নীজ থানায় পুত্র কন্যার সন্ধান চেয়ে জিডি করার হিড়িক পড়ে।
২০১৪-১৫ সালের সহিংস আন্দোলন সংগ্রামের পর থেকে বিদেশী রাষ্ট্র সমুহ বিশেষ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, বৃটেন, আমেরিকা, ভারত জামায়াতের সঙ্গত্যাগের বারংবার অনুরোধ জানাতে থাকে বিএনপি নেত্রীকে। বিদেশী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতকে নিমন্ত্রন অঘোষিত ভাবে বন্ধ করে দেয়। গত মঙ্গলবার১৮/৭ ইং বাংলাদেশ বিষয়ক শুনানীতে অংশ গ্রহন করার জন্য বৃটিশ কমন্স সভায় যোগ দিলে 'জামায়াত প্রতিনীধি দল'কে সভা থেকে বের করে দেয় দায়িত্বরত: নিরাপত্তাকর্মীরা।
অন্যদিকে মানবতা বিরোধী অপরাধে জামায়াতের শীর্ষনেতাদের অনেকের মৃত্যুদন্ড কায্যকর আরো কতিপয় নেতার বিচার কায্য শেষ হয়ে রায়ের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। উচ্চ আদালত ১৯৭১ ইং সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বসস্ত্র বিরোধীতা ও মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার কারনে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কারনে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জামায়াতের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করেছেন।
এমনতর পরিস্থীতিতে বিএনপির পোষ্য বুদ্ধিজীবি, দলীয় নেতাকর্মী, বিশদলের শরিক বেশীরভাগ দল, বিএনপি অনুসারি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ছাত্রদল সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের চাপ বাড়তে থাকে খালেদা জিয়ার উপর-'জঙ্গী সংগঠন জামায়াতে ইসলামকে ত্যাগ' করে স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরে আসার জন্য।
তার আগে ২০১৪ ইং সালের সাধারন নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করে প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়ে নাশকতা, আগুন সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়েছিল দলটি। সঙ্গত কারনে বিএনপি এবং তাঁর নেত্রীর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জনমনে বিরুপ ধারনার সুত্রপাত ঘটে। পরবর্তি স্থানীয় নির্বাচনে তাঁর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ঘটে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা রাজপথ, আন্দোলন, সংগ্রাম ,রাজনীতি, নির্বাচন ছেড়ে নীজ নীজ কর্মকান্ডে ঝুঁকে পড়ে। নির্বাচনে দলগত সংগঠিত শক্তি নিয়ে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহনে অনাগ্রহের কারনে দেশের কোথাও কোন নির্বাচনে সামান্য প্রতিরোধ, প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। ফলত: আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমসংখ্যক আসনেও জিততে পারেনি বিএনপি। নির্বাচন একতরফা, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন সংঘাতের নির্বাচনে রুপ পরিগ্রহ করে। নির্বাচন কমিশন ও সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েও বিএনপি প্রার্থীদের ভোট কেন্দ্রে ধরে রাখতে পারেনি। মারমুখি নির্বাচন কমিশন অগত্যা আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীর জীবন চিনিয়ে নেয়। তদোপরিও বিএনপিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সচল করা যায়নি। কোথাও বিএনপির সাথে সংঘর্ষে পুলিশের গুলীতে মৃত্যুবরন করেছে তাঁর উদাহরন নেই।
কায্যত: দলটি রাজপথ, নির্বাচন, রাজনীতি থেকে বহুদুরে চিটকে পড়েছে। তাঁরপরও নির্বাচনে চরম পরাজয়ে তাঁদের নেতৃত্বের ব্যার্থ্যতার গ্লানিকে তাঁদের নেত্রীর বিজয়ের হাসিতে রুপান্তরের উদ্দেশ্যে, নেতাকর্মীদের আত্মতৃপ্ত করার লক্ষে, মিথ্যার বেসাতির আশ্রয় নিয়ে সরকার, নির্বাচন কমিশনের উপর সব দায় চাপিয়ে দিতে কার্পন্য করেনি। একই কারনে বিগত দুই বছরের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠান ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডও করতে পারেনি দলটি।
বনের বাঘে খায়না, মনের বাঘে খায়। দলটির হয়েছেও তাই। বিগত দিনের গনবিরোধি, সন্ত্রাস নির্ভর, অরাজনৈতিক কর্মকান্ডে দলটির ভিতরে বাইরে চরম ভীতিকর পরিস্থীতি কাজ করছে। নেত্রীর মুখেই রাজপথে একাধিকবার "স্বাভাবিক রাজনীতি" করার ঘোষনা শুনতে পেয়েছে জনগন। একাধিকবার সুনির্দিষ্ট ইস্যুতে আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েও জনরোষের ভীতিকর স্মৃতির প্রেক্ষাপটে রাজপথে নামতে সাহষ করেনি। ফলে দিনে দিনে দলটি রাজপথের আন্দোলন বিচ্যুত হয়ে বিবৃতি সর্বস্ব দলে রুপান্তরীত হয়ে ক্ষয়ের পথেই গন্তব্য নির্ধারন করেছে।
এই পরিস্থীতি কাটিয়ে উঠার নিমিত্তে সর্বদোষে আক্রান্ত জামায়াতকে পরিত্যাগ করার ঘোষনা দেয়া ছাড়া আর কি উপায় থাকতে পারে দলটির? তাও আবার সরকারের সাড়া যদি পায়!! অর্থাৎ সরকার যদি অনুগ্রহ করে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়, তবেই জামায়াতকে ছেড়ে দিতে কার্পন্য করবেনা। এমনটিই ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারক পয্যায় থেকে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগেই বলে দিয়েছেন, জাতীয় ঐক্য যাদের সাথে হওয়ার প্রয়োজন তাঁদের সাথে হয়ে গেছে। সত্যি তাই, জনগনের সাথে ঐক্য হয়েছে বলেই বগুড়ার নিবৃত চরাঞ্চলে জঙ্গী আস্তানার খোঁজ পেয়েছে যৌথবাহিনী। জনগনের সাথে ঐক্য হয়েছে বলেই অভিভাবকের পক্ষ থেকে তাঁদের ছেলে মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার খোঁজ পাচ্ছে থানা পুলিশ। জনগনের সংগে ঐক্য হয়ে গেছে বলেই একের পর এক জঙ্গী আস্তনার খবর আসতে শুরু করেছে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে,ধৃত হচ্ছে জঙ্গীদের গডফাদার-মাদার। জনগনের সঙ্গে ঐক্য হয়েছে বলেই সাড়ে তিন বারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা উপভোগকারি রাজনৈতিক দল, গত দুই বছরের অধিক সময় রাজপথে নামার সুযোগ বা সাহষ কোনটাই পায়নি। জনগনের সাথে আওয়ামী লীগের নিবিড় সম্পর্কের কারনে বিএনপি জামায়াতের জেলা-উপজেলা কায্যকরি কমিটির নিয়মিত সভা অনুষ্ঠান পয্যন্ত করতে পারেনি।জনগনের সাথে ঐক্য হয়ে গেছে বলেই স্থানীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থীদের অধিক আসনে বিএনপি জামায়াত প্রার্থীই খুঁজে পায়নি। জনগনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা হয়েছে বলেই সকল স্থানীয় নির্বাচনে চরম ভরাডুবি ঘটেছে বিএনপি জামায়াত সহ বিশ দলের।
অনেকেই বলতে পারেন বল প্রয়োগের ফসল, আমি বলব অন্রকটা তাই। জোর জবদস্তি বা বল প্রয়োগেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী জনসমর্থনের প্রয়োজন হয়। নয়তো হীতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী থাকে। প্রচলিত গনতন্ত্র এক অর্থে সংখ্যা গরিষ্টের বল প্রয়োগই বটে। বিশেষ করে '৭৫ পরবর্তিতে আমরা যাদের গনতন্ত্র অনুসরন করে আসছি,তাঁদের বেলায়ও সর্বাঙ্গীন মিথ্যা নয়।যদি তাই না হয়- তাঁদের দেশের একই দলের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীকে সভা করতে বাঁধা দিচ্ছে কেন?যদি তাই না হয়- তাঁদের দেশের যুবতি মেয়েরা নগ্ন হয়ে রাজপথে তাঁর প্রার্থীতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে কেন? একটি অঙ্গরাজ্যেও পুলিশী প্রহরায় ছাড়া এবং বিক্ষোব্ধ জনতার ইটপাটকেলের আঘাত ছাড়া সমাবেশ করতে পারেনি কেন মি: ট্রাম্প?
"এতেই অনুধাবন করা যায়, ২১ বছর যে গনতন্ত্রের বাহুবলে আওয়ামীলীগকে রাজপথে আসতে দেয়া হয়নি,সেই একই গনতন্ত্রের সুত্রে বিএনপি জামায়াতকেও রাজপথে নামার সুযোগ দেয়া কোন অবস্থায় সরকারের উচিৎ হবে না।"
সুতারাং বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহব্বান অরোণ্যে রোদনে পরিনণত হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'
_____________________________________________
এই মহুর্তে দেশের চাঞ্চল্যকর খবর কি? নি:সন্দেহে "জাতীয় ঐক্যমতের পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকারের সায় ফেলে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগে প্রস্তুত।" বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের সতীর্থ, বিশদলীয় জোটের অন্যতম শরিক, দলটির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়ার ক্ষমতা গ্রহনের নেপথ্যের কারিগর, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে বিনাশের উদ্দেশ্যে বিদেশী লবিষ্ট নিয়োগ এবং আন্তজাতিক চক্রান্তের একক খরছ বহনকারি,তৃনমুলে আন্দোলন সংগ্রাম সংগঠিত করার নির্ভরশীল শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে আরব রাষ্ট্র সহ মৌলবাদি দেশীয় অন্যান্ন শক্তি সমুহকে নিয়ন্ত্রনকারি, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিশ্বস্থ প্রতিষ্ঠান, আওয়ামীলীগ সরকার উৎখাতে জাতীয় ও আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের কারিগর, মাঠ পয্যায় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদীতায় একক বিনিয়োগকারি একান্ত পরিক্ষিত, অনুগত বন্ধু, মিত্রশক্তি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করার ঘোষনা।
জামায়াতের এত গুনাবলীকে ত্যাগ করে এই মহুর্তে সরকারের সাথে সমাঝোতায় আসার কি প্রয়োজন বিএনপির ? বিএনপি-জামায়াত নেতাদের বাঁচাতে, মানবতাবিরুধী বিচার বাঞ্চাল করার উদ্দেশ্যে দলটি উপোয্যপুরি আন্দোলন সংগ্রামে নাশকতা, বোমাবাজি, আগুন সন্ত্রাস, আগুনবোমা, লাগাতার অবরোধ সহ সেনাবাহিনীকে উস্কানী, শাফলা চত্বরের হেফাজতীদের অবস্থানকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়ে ঢাকাবাসিকে রাস্তায় নামার আহব্বান-দলীয় নেতাকর্মীদের তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটুক্তি, জাতির জনকের পরিবারকে নিয়ে নির্মম পরিহাস, মানবতা বিরুধী ট্রাইবুনালের সম্মানীত বিচারকদের বিচার করার ঘোষনা, প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র পুত্র জয়কে হত্যা পরিকল্পনায় জড়িতদের রাজনৈতিক পদায়ন ও পৃষ্টপোষকতা সহ এমন কোন অরাজনৈতিক অশোভন, রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত কাজ নেই- দলগত ভাবে ও তাঁর নেত্রী খালেদা জিয়া এবং তাঁর পুত্র তারেক জিয়া কতৃক করা হয়নি।
উল্লেখীত সকল কাজকে তাঁদের পোষ্য পেইড বুদ্ধিজীবিগন প্রতিনিয়ত অনির্বাচিত সরকার, দেশের সুশাষনের অভাব, মন্ত্রী পরিষদের যৌথ সিদ্ধান্তের বদলে একব্যক্তির সিদ্ধান্তে সরকার পরিচালনা, মৌলিক অধিকারহীনতার কারনে জঙ্গীর উত্থান, পুলিশি শাষন, বাক ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার অভাব,গনতন্ত্রহীনতা ইত্যাদি অজুহাতে যুক্তির আড়ালে সঠিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড হিসেবে প্রচার প্রপাকান্ড আজও অব্যাহত রেখেছন।
উল্লেখীত অরাজনৈতিক কর্মকান্ড সমুহকে জাতির জনকের কন্যা তাঁর বংশগত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, উপস্থীত বুদ্ধি, বিচক্ষনতা, অপরিসীম ধৈয্য, জনগনের অসীম ভালবাসার গুনে মোকাবেলা করে দেশকে স্থীতিশীল রাজনৈতিক অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরু হ'তে অদ্যাবদি কোন রাজনৈতিক কর্মসূচির মোকাবেলা করতে হয়নি সরকারের প্রশাসন অথবা জনগনকে। রাজপথ, কোর্টকাচারী, বিশ্ববিদ্যালয় সমুহ,, বিমান বন্দর, সমুদ্র বন্দর, সহ সরকারের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গে স্বাভাবিক, সুষ্ঠ ভাবে সকল কর্মকান্ড অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সরকার এবং তাঁর নির্বাহী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অক্লান্ত পরিশ্রম, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, সুদুরপ্রসারী চিন্তা চেতনার আলোকে দেশকে বিগত সরকার সমুহের শাষনকালের উপোয্যপুরি দুনীতির শীর্ষস্থান দখলকারির বদনাম গুছিয়ে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরীত করতে সক্ষম হয়েছন। সরকারের ধারাবাহিকতার কারনে আগামী ২০২১সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরীত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন আন্তজাতিক সাহায্য সংস্থা সহ বিশ্বব্যাংক ও বিদেশী বন্ধুরাষ্ট্র সমুহ। ইতিমধ্যে প্রবৃদ্ধি ৭'৫এর ঘরে পৌছে গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমানও সর্বকালের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে ত্রিশ বিলিয়নে পৌছেছে।বাংলাদেশ বিশ্ব আঙ্গিনায় উন্নয়ন, অগ্রগতির রোল মডেলে পরিনত হয়েছে।দেশী এবং বিদেশী অর্থনীতি বিশারদগনের অভিমত ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হবে স্বপ্নের বাংলাদেশ
উন্নয়ন অগ্রগতি বিষয়ে দেশী এবং বিদেশী বিশেষজ্ঞদের অভিমতের সত্যতা মেলে বর্তমান সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপুর্ণ সাহষী মানবিক সিন্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রতি লক্ষ করলে। স্বাধীনতার পর থেকে আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিনত হয়ে 'সোনালী আঁশ' খ্যাত 'পাট খাত এবং পাট সক্রান্ত শিল্প খাতটি' লোকসানী খাতে পরিনত হয়ে দেশের অর্থনীতির উপর বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তম্মধ্যে 'জোট সরকার কতৃক লুটপাটের উদ্দেশ্যে 'এশিয়ার বিখ্যাত পাটকল 'আদমজী জুট মিল'নাম মাত্র টাকায় বিক্রি করে এখাতটিকে আরো বড় বিপয্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়।এ খাতটির বেশ কয়েক বছরের শ্রমিক কর্মচারিদের বেতন ভাতা বকেয়া পড়ে যায়। এমনি সময়ে ঈদের আগমনে পাটকল শ্রমিক-কর্মীচারী, কর্মকর্তাগন থালা বাসন নিয়ে রাজপথে ভুখা মিছিল বের করে। তাঁদের ন্যায্য দাবী সরকারের নজরে আনার উদ্দেশ্যে তাঁরা মিছিলটি বের করে এতে কোন সন্দেহ নেই। অন-লাইন সহ পত্র-পত্রিকায় উক্ত মিছিলটি ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়।
মানবতার নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা শেখহাসিনার দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথে দুই ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে এই লোকসানী খাতের উন্নয়ন এবং শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য "একহাজার কোটি" টাকা বরাদ্ধ দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে ঈদের আগে উক্ত টাকা ছাড় দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এটা শ্রমিকদের প্রতি সরকারের দায়িত্ব অনেকে মনে করতে পারেন। তাই বিদেশীদের প্রসংঙ্গে আর একটি বিষয় উত্থাপন বাঞ্চনীয় মনে করি-'নেপালে ঘুর্নীঝড়ের কারনে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপয্যয় ঘটেছিল গত কয়েকমাস আগে, নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে। মানবতার নেত্রী বঙ্গনেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কোন দেশ সাড়া দেয়ার আগেই বাংলাদেশের ত্রান সামগ্রী পাঠিয়ে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্শন করতে সক্ষম হ'ন।দেশের উন্নয়নে পদ্মা সেতু,গভীর সমুদ্র বন্দর সহ অন্যান্ন বড় বড় উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড বাদই দিলাম।এই সমস্ত উন্নয়ন বাংলাদেশের স্বার্থে হচ্ছে।কিন্তু মানবতার স্বার্থে লোকসানী খাতে তৎক্ষনাৎ সিদ্ধান্তে একহাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ এবং নেপালকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আত্মমানবতার ডাকে তৎক্ষনাৎ সাহায্য দেয়া বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রমান নয় কি?
সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে তাঁরই প্রমান মানবতার সেবায়ও এতবড় অংকের সাহায্য বাংলাদেশ করতে পারে-"যে দেশটি তাঁর প্রথম বাজেট শুরু করেছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা দিয়ে, তাও বিদেশী সাহায্য নির্ভর বাজেট। সেই দেশটি ৪৫বছর বয়সে এসে একটি লোকসানী খাতে মানবিক সাহায্য দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছে একহাজার কোটি টাকা !! "
উপরের প্রসঙ্গটি যথাযথ অনুসরন করার অনুরুধ জানিয়ে পরবর্তি ঘটনা প্রবাহের প্রতি মনোযোগ দেয়ার অনুরোধ রইল প্রিয় পাঠক ভাইদের প্রতি--
এমনতর চলমান উন্নয়ন অগ্রগতির প্রারম্ভিকতায় দেখা দিয়েছে জঙ্গীউত্থান সংক্রান্ত বিষপোঁড়া। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র, দেশের অভ্যন্তরে বিএনপি জামায়াত সহ তদীয় বুদ্ধিজীবি গন সমুদয় হামলাকে আন্তজাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন 'আইএসআই' এর হামলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ব্যাপক প্রচার প্রপাকান্ড চালাতে থাকে। আমেরিকা দৃডতার সংঙ্গে বলতে থাকে উক্ত হামলা সমুহ 'আইএসআই' কতৃক সংগঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশে 'আইএসআই' এর ঘাঁটি বহু আগে থেকেই ছিল এবং আছে। একজন ব্লগার বা সমকামী খুনের পর পরই তাঁদের ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করা নিয়ম মাপিক রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছিল। তাঁদের সুরে সুর মিলিয়ে বিএনপি জামায়াতও একই কথা বার বার পুর্ণাবৃত্তি করে তাঁদের বিবৃতির সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়। তাঁরা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য প্রদানের প্রস্তাব দিতে থাকে।
বাংলাদেশ সরকার তাঁদের বিবৃতি এবং সাহায্য প্রস্তাবের প্রতি কোনরুপ দৃষ্টিপাত না করে 'বলতে থাকে বাংলাদেশে আই,এস,আই এর কোন অস্তিত্ব নেই।" উল্লেখীত বিচ্ছিন্ন ঘটনা সমুহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত' '৭১ এর মানবতা বিরুধী অপরাধের' বিচার বাঞ্চাল করার উদ্দেশ্যে 'জামায়াতশিবিরের সন্ত্রাসী' কতৃক সংঘঠিত হচ্ছে এবং এই অপকর্মের রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা দানকারি বিএনপি এবং তাঁর নেত্রী খালেদা জিয়া।"
পাঠকবর্গ 'আইএসআই' দমনের উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অদ্য পয্যন্ত যেই সমস্ত দেশে হস্তক্ষেপ করেছে, সেই সমস্ত দেশে 'আইএসআই' দমন হয়েছে? সে সমস্ত দেশে সরকারগুলী কি স্থীতিশীল ভাবে সরকারের কর্ম পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছে? ঐ সমস্ত দেশ ছেড়ে তাঁরা কি আজও ফিরে এসেছে? ইহা কি বিএনপি জামায়াত এবং তাঁদের পোষ্য পেইড বুদ্ধিজীবিদের মার্কিনীদের বাংলাদেশে নিরাপত্তার অজুহাতে এনে হলেও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র নয় কি?
"অনন্তকাল বাংলাদেশের 'আইএসআই' দমনও হবে না, তাঁদের বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়াও হবেনা।"
অদ্য পয্যন্ত ধৃত জঙ্গীদের মধ্যে বিদেশী কোন জঙ্গীনাগরীক ধরা পড়ার কোন প্রমান মেলেনি। যারাই ধরা পড়েছে বা পুলিশী অভিযানে মৃত্যু হয়েছে তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এবং জামায়াত শিবিরের সাবেক অথবা বর্তমান নেতাকর্মী। জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা 'আই এসআই' অথবা 'হিজবুত তাহরীর' অথবা 'জামায়াতুল মোজাহেদীন' হয়ে ব্লগার, শিক্ষক, সাহিত্যিক, সমাজকর্মী, পুরোহীত, বিদেশী নাগরীক হত্যা অব্যাহত রেখেছে। জনগনকে ভীতশ্রদ্ধ করে তাঁদের লক্ষ অর্জনে সফলকাম হওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁরা নিজেরাই 'বিদেশী সাইট সমুহ' ব্যবহার করে 'আন্তজাতিক ধর্মীয় চরমপত্থি সংগঠন 'আইএস আই' এর নামে বিবৃতি দিচ্ছে।
এই ঘটনা সমুহ চলাবস্থায় সবাই লক্ষ করেছেন বিএনপি বিবৃতি দিয়ে বক্তব্য দিয়ে বলার চেষ্টা করেছে সরকার 'বিরোদী মত দমন করার জন্য 'রাজনৈতিক কর্মীদের জঙ্গী' বানিয়ে জেলখানা পুর্ন করছে। দেশে 'আই,এস,আই' এর ঘাঁটি থাকা সত্বেও সরকার সে দিকে মনোযোগ নাদিয়ে, আন্দোলনরত: নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে। আদৌ জঙ্গী দমনের ইচ্ছা সরকারের নেই, বিরোধী মত দমনই মুর্খ্য উদ্দেশ্য। তাঁদের পোষ্য বুদ্ধিজীবিগন যুক্তি সহকারে গভীর রাতে ইলেকট্রোনিক্স মিডিয়ায়' 'টকশো''তে অন-লাইন, অপলাইনের পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধ, নিবন্ধ চাপিয়ে আন্তজাতিক জঙ্গীর উত্থান এবং তাঁদের উপস্থীতি বিষয় গনতন্ত্রহীনতার অভিযোগ উত্থাপন পুর্বক ব্যাপক অপপ্রচার অব্যাহত রাখে।
এরই মধ্যে ঘটে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসে চরমতম মর্মান্তিক ঘটনা। রোজার মধ্যে ইফতারের প্রারম্ভে ' বিদেশী 'কুটনৈতিক এলাকাখ্যাত উচ্চ সিকিউরিটি অঞ্চলভুক্ত গুলশান অভিজাত এলাকার একটি রেষ্ট্রুরেন্টে জঙ্গী হামলা ও জিম্মিনাটক। বাংলাদেশী তিনজন সহ ২০জন নিরীহ বিদেশীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দেশে বিদেশে আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পবিত্র দিনে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামায়াত 'শোলাকিয়ায়' দ্বিতীয় হামলা হয়। একজন দায়িত্ব্রত:পুলিশ কর্মকর্তা জীবন দিয়ে হামলাকারিদের প্রতিহত করে মুসল্লিদের জীবন বাঁচান।হাতেনাতে ধৃত হয় একজন জঙ্গী।
উল্লেখীত হামলাদ্বয়ের পর সরকার এবং জনগনের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যতা দেখা দেয়।পুলিশ, প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। পুলিশের যৌথ অভিযানে গুলশানেই নিহত হয় সাতজঙ্গী, একজনকে জীবিতবস্থায় আটক করে। জঙ্গীরা বেশীরভাগ নর্থ সাউথ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লুটেরা নব্যধনী উচ্চবিত্তের সন্তান। বিশ্ববিদ্যালয়টি জামায়াত নিয়ন্ত্রীত ব্যায়বহুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশে বিদ্যমান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম একটি।
সরকার এহেন অনৈসলামিক কর্মকান্ডে জীবন ওসম্পদ রক্ষার রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে কঠোর সিন্ধান্ত গ্রহন করে জঙ্গীদমন, উত্থান রোধে ব্যাপক নির্দেশনা জারি করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয় উৎস সন্ধানে একাধিক গোয়েন্দা তৎপরতা ও তদন্ত। বেরিয়ে আসতে থাকে ঘটনার নেপথ্যের বিভৎ উদ্দেশ্য। জড়িত হতে থাকে দেশের নামকরা রাগব বোয়ালেরা। অনুসন্ধান শুরু হয় পৃষ্টপোষকতাকারি, বেনিফিসিয়ারী, আশ্রয়দাতা এবং প্রশ্রয়দাতাদের। পাঁচ শতাধিক এনজিও, পঞ্চাশের অধিক ধনাঢ্যব্যাক্তি এবং দেশী বিদেশী অর্থদাতাদের নাম পুলিশের নোটবুকে জমা হয়। জড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপচার্য্য সহ আরো কতিপয় শিক্ষক।
অপর দিকে আওয়ামী লীগ সহ ১৪দল কর্মসুচি নিয়ে জঙ্গী প্রতিরোধে মাঠে নামে। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন মাঠে নামার প্রস্তুতি গ্রহন করে আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি আলোচনারত:। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সহ অন্যান্ন ছাত্র সংগঠন গুলীও জঙ্গীরোধে মাঠে নামার প্রস্তুতি গ্রহন করে। বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনও জঙ্গী বিরোধী কর্ম সুচি নিয়ে মাঠে অবস্থানের ঘোষনা দেয়। লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ সরকারের উদ্যোগে সাড়া দিয়ে কর্মসুচি নিয়ে রাজপথে থাকার ঘোষনা দেয়।জনগন স্বত:স্ফুর্ত ভাবে সরকারের আহব্বানে সাড়া দিয়ে জঙ্গী অভিযানে সহযোগীতা করা শুরু করে। ফলশ্রুতিতে বগুড়ার প্রত্যন্ত চর এলাকায়ও জঙ্গীর অবস্থান নিমিষেই আইনশৃংখলা বাহিনীর গোচরে আসতে শুরু করে। একের পর এক বিরামহীন পুলিশী অভিযানে বেরিয়ে আসতে থাকে অন্যান্ন লুকিয়ে থাকা জঙ্গীদের আস্তানা। ধরা পড়তে থাকে জঙ্গীসহ তাঁদের আশ্রয়দাতা, প্রশ্রয়দাতা, পোষাকাদি, অস্ত্রসস্ত্র, গোলাবারুদ এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার চক।
পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষনা করা হয় লোভনীয় পুরস্কার। জঙ্গীদের পিতা মাতা, আত্মীয় স্বজনেরা স্ব-উদ্যোগে খবর দিতে থাকে তাঁদের পুত্রদের জঙ্গী সম্পৃত্ততার। দেশব্যাপি শুরু হয় হারিয়ে যাওয়া যুবক যুবতিদের খোঁজ খবর। অবিভাবকেরা স্ব-উদ্যোগে নীজ নীজ থানায় পুত্র কন্যার সন্ধান চেয়ে জিডি করার হিড়িক পড়ে।
২০১৪-১৫ সালের সহিংস আন্দোলন সংগ্রামের পর থেকে বিদেশী রাষ্ট্র সমুহ বিশেষ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, বৃটেন, আমেরিকা, ভারত জামায়াতের সঙ্গত্যাগের বারংবার অনুরোধ জানাতে থাকে বিএনপি নেত্রীকে। বিদেশী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতকে নিমন্ত্রন অঘোষিত ভাবে বন্ধ করে দেয়। গত মঙ্গলবার১৮/৭ ইং বাংলাদেশ বিষয়ক শুনানীতে অংশ গ্রহন করার জন্য বৃটিশ কমন্স সভায় যোগ দিলে 'জামায়াত প্রতিনীধি দল'কে সভা থেকে বের করে দেয় দায়িত্বরত: নিরাপত্তাকর্মীরা।
অন্যদিকে মানবতা বিরোধী অপরাধে জামায়াতের শীর্ষনেতাদের অনেকের মৃত্যুদন্ড কায্যকর আরো কতিপয় নেতার বিচার কায্য শেষ হয়ে রায়ের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। উচ্চ আদালত ১৯৭১ ইং সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বসস্ত্র বিরোধীতা ও মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার কারনে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কারনে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জামায়াতের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করেছেন।
এমনতর পরিস্থীতিতে বিএনপির পোষ্য বুদ্ধিজীবি, দলীয় নেতাকর্মী, বিশদলের শরিক বেশীরভাগ দল, বিএনপি অনুসারি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ছাত্রদল সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের চাপ বাড়তে থাকে খালেদা জিয়ার উপর-'জঙ্গী সংগঠন জামায়াতে ইসলামকে ত্যাগ' করে স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরে আসার জন্য।
তার আগে ২০১৪ ইং সালের সাধারন নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করে প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়ে নাশকতা, আগুন সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়েছিল দলটি। সঙ্গত কারনে বিএনপি এবং তাঁর নেত্রীর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জনমনে বিরুপ ধারনার সুত্রপাত ঘটে। পরবর্তি স্থানীয় নির্বাচনে তাঁর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ঘটে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা রাজপথ, আন্দোলন, সংগ্রাম ,রাজনীতি, নির্বাচন ছেড়ে নীজ নীজ কর্মকান্ডে ঝুঁকে পড়ে। নির্বাচনে দলগত সংগঠিত শক্তি নিয়ে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহনে অনাগ্রহের কারনে দেশের কোথাও কোন নির্বাচনে সামান্য প্রতিরোধ, প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। ফলত: আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমসংখ্যক আসনেও জিততে পারেনি বিএনপি। নির্বাচন একতরফা, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন সংঘাতের নির্বাচনে রুপ পরিগ্রহ করে। নির্বাচন কমিশন ও সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েও বিএনপি প্রার্থীদের ভোট কেন্দ্রে ধরে রাখতে পারেনি। মারমুখি নির্বাচন কমিশন অগত্যা আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীর জীবন চিনিয়ে নেয়। তদোপরিও বিএনপিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সচল করা যায়নি। কোথাও বিএনপির সাথে সংঘর্ষে পুলিশের গুলীতে মৃত্যুবরন করেছে তাঁর উদাহরন নেই।
কায্যত: দলটি রাজপথ, নির্বাচন, রাজনীতি থেকে বহুদুরে চিটকে পড়েছে। তাঁরপরও নির্বাচনে চরম পরাজয়ে তাঁদের নেতৃত্বের ব্যার্থ্যতার গ্লানিকে তাঁদের নেত্রীর বিজয়ের হাসিতে রুপান্তরের উদ্দেশ্যে, নেতাকর্মীদের আত্মতৃপ্ত করার লক্ষে, মিথ্যার বেসাতির আশ্রয় নিয়ে সরকার, নির্বাচন কমিশনের উপর সব দায় চাপিয়ে দিতে কার্পন্য করেনি। একই কারনে বিগত দুই বছরের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠান ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডও করতে পারেনি দলটি।
বনের বাঘে খায়না, মনের বাঘে খায়। দলটির হয়েছেও তাই। বিগত দিনের গনবিরোধি, সন্ত্রাস নির্ভর, অরাজনৈতিক কর্মকান্ডে দলটির ভিতরে বাইরে চরম ভীতিকর পরিস্থীতি কাজ করছে। নেত্রীর মুখেই রাজপথে একাধিকবার "স্বাভাবিক রাজনীতি" করার ঘোষনা শুনতে পেয়েছে জনগন। একাধিকবার সুনির্দিষ্ট ইস্যুতে আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েও জনরোষের ভীতিকর স্মৃতির প্রেক্ষাপটে রাজপথে নামতে সাহষ করেনি। ফলে দিনে দিনে দলটি রাজপথের আন্দোলন বিচ্যুত হয়ে বিবৃতি সর্বস্ব দলে রুপান্তরীত হয়ে ক্ষয়ের পথেই গন্তব্য নির্ধারন করেছে।
এই পরিস্থীতি কাটিয়ে উঠার নিমিত্তে সর্বদোষে আক্রান্ত জামায়াতকে পরিত্যাগ করার ঘোষনা দেয়া ছাড়া আর কি উপায় থাকতে পারে দলটির? তাও আবার সরকারের সাড়া যদি পায়!! অর্থাৎ সরকার যদি অনুগ্রহ করে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়, তবেই জামায়াতকে ছেড়ে দিতে কার্পন্য করবেনা। এমনটিই ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারক পয্যায় থেকে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগেই বলে দিয়েছেন, জাতীয় ঐক্য যাদের সাথে হওয়ার প্রয়োজন তাঁদের সাথে হয়ে গেছে। সত্যি তাই, জনগনের সাথে ঐক্য হয়েছে বলেই বগুড়ার নিবৃত চরাঞ্চলে জঙ্গী আস্তানার খোঁজ পেয়েছে যৌথবাহিনী। জনগনের সাথে ঐক্য হয়েছে বলেই অভিভাবকের পক্ষ থেকে তাঁদের ছেলে মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার খোঁজ পাচ্ছে থানা পুলিশ। জনগনের সংগে ঐক্য হয়ে গেছে বলেই একের পর এক জঙ্গী আস্তনার খবর আসতে শুরু করেছে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে,ধৃত হচ্ছে জঙ্গীদের গডফাদার-মাদার। জনগনের সঙ্গে ঐক্য হয়েছে বলেই সাড়ে তিন বারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা উপভোগকারি রাজনৈতিক দল, গত দুই বছরের অধিক সময় রাজপথে নামার সুযোগ বা সাহষ কোনটাই পায়নি। জনগনের সাথে আওয়ামী লীগের নিবিড় সম্পর্কের কারনে বিএনপি জামায়াতের জেলা-উপজেলা কায্যকরি কমিটির নিয়মিত সভা অনুষ্ঠান পয্যন্ত করতে পারেনি।জনগনের সাথে ঐক্য হয়ে গেছে বলেই স্থানীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থীদের অধিক আসনে বিএনপি জামায়াত প্রার্থীই খুঁজে পায়নি। জনগনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা হয়েছে বলেই সকল স্থানীয় নির্বাচনে চরম ভরাডুবি ঘটেছে বিএনপি জামায়াত সহ বিশ দলের।
অনেকেই বলতে পারেন বল প্রয়োগের ফসল, আমি বলব অন্রকটা তাই। জোর জবদস্তি বা বল প্রয়োগেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী জনসমর্থনের প্রয়োজন হয়। নয়তো হীতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী থাকে। প্রচলিত গনতন্ত্র এক অর্থে সংখ্যা গরিষ্টের বল প্রয়োগই বটে। বিশেষ করে '৭৫ পরবর্তিতে আমরা যাদের গনতন্ত্র অনুসরন করে আসছি,তাঁদের বেলায়ও সর্বাঙ্গীন মিথ্যা নয়।যদি তাই না হয়- তাঁদের দেশের একই দলের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীকে সভা করতে বাঁধা দিচ্ছে কেন?যদি তাই না হয়- তাঁদের দেশের যুবতি মেয়েরা নগ্ন হয়ে রাজপথে তাঁর প্রার্থীতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে কেন? একটি অঙ্গরাজ্যেও পুলিশী প্রহরায় ছাড়া এবং বিক্ষোব্ধ জনতার ইটপাটকেলের আঘাত ছাড়া সমাবেশ করতে পারেনি কেন মি: ট্রাম্প?
"এতেই অনুধাবন করা যায়, ২১ বছর যে গনতন্ত্রের বাহুবলে আওয়ামীলীগকে রাজপথে আসতে দেয়া হয়নি,সেই একই গনতন্ত্রের সুত্রে বিএনপি জামায়াতকেও রাজপথে নামার সুযোগ দেয়া কোন অবস্থায় সরকারের উচিৎ হবে না।"
সুতারাং বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহব্বান অরোণ্যে রোদনে পরিনণত হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন