খালেদার জাতীয় ঐক্যের আহব্বান-ভোটহীন হাইপ্রোফাইল রাজনীতিবীদদের কাঁধে ভর করে রাজনীতিতে ফিরে আসার কৌশল।

খালেদার জাতীয় ঐক্যের আহব্বান--রাজনীতি, রাজপথ, নির্বাচনে ফিরে আসার কৌশল।
_____________________________________

জাতীয় ঐক্য বললেই তো আসবে জাতি প্রশ্নটি। পাকিস্তানের উম্মেসলগ্ন থেকে জাতি প্রশ্নে বিতর্ক শুরু হয়। বিতর্কের মুলকারিগর ছিলেন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী (জিন্নাহ)। পুর্ব-পশ্চিমের বিশাল বাংলা ভাষাবাসিদের দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য মহান নেতা এ,কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী সহ প্রতিযসা বাঙ্গালী নেতৃবৃন্দ ভঙ্গবঙ্গ প্রস্তাব উত্থাপন করে অনেকটা পথ অতিক্রম করার পর, কায়দে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নার নেতৃত্বে হিন্দু এবং মসুলমান দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের দুটি রাষ্ট্র কাঠামোর প্রাস্তাব উত্থাপন করেন।
"প্রস্তাবনার নাম দেয়া হয় " দ্বিজাতিতত্ব। "

     বাঙ্গালীরা সেদিনও ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতার জাতীয়তাবাদ মেনে নিতে পারেননি। অবস্থার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে পাকিস্তানের জম্ম লাভ করে। বছর না ঘুরতেই পশ্চিম পাকিস্তানীদের চেহারায় পুর্ব পাকিস্তানকে শোষন করার জন্য কলোনী হিসেবে পেতে ধর্মকেই হাতিয়ার করেছিল তাঁর প্রমান মেলে।১৯৪৭এ দেশভাগের পরের বছরই ১৯৪৮ ইং সালেই সরকারের নীতিনির্ধারক পয্যায় থেকে বলা হতে থাকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা উর্দু হবে। অথছ বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোতে উর্দুতে কথা বলে মাত্র শতকরা সাত ভাগ মানুষ।বাংলায় কথা বলে শতকরা চাপ্পান্ন ভাগ মানুষ।পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যেই সংখ্যা লগিষ্ট মানুষ তখন উর্দুতে কথা বলে।রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার আগেই শুরু হয় বাংলাকে খতনা পড়ানোর কাজ।একমাত্র বঙ্গোবসাগর ছাড়া আর কিছুই বাকি রাখেনি খতনাবিহীন।

      তাঁর পরবর্তি ইতিহাস পাকিস্তানের পুর্বাংশে মাতৃভাষা রক্ষার দাবিতে গড়ে উঠে ভাষা আন্দোলন।ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের বাঙ্গালীরা মহৎ এই সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যুক্ত হয়, তাঁর ইতিহাস আমাদের সকলেরই জানা।

    উক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষাবাসীদের মধ্যে গড়ে উঠে অসাম্প্রদায়িক ভাষাভিত্তিক বাঙালী জাতীয়তাবোধের চেতনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৬দফা ঘোষিত হলে ধীরে ধীরে গড়ে উঠে বাঙ্গালীদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য। সেই জাতীয় ঐক্যের পরিনতি লাভ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের। ঐক্যবদ্ধ জাতি দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী সসস্ত্র যুদ্ধে জয়লাভ করে "দ্বিজাতিতত্ব ভিত্তিক" সাম্প্রদায়িকতার কবর দিয়ে ভাষাভিত্তিক "অ-সাম্প্রদায়িক বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ " প্রতিষ্ঠিত করে।

     স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের অব্যবহিত পরেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান নতুন দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হন।তিনি প্রথমেই দীর্ঘ সংগ্রাম,ত্যাগ, সর্বপরি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সম্মান রেখে নতুন স্বাধীন  বাংলাদেশের শাষনতন্ত্রে গনতন্ত্র,  শোষনহীন সমাজ কায়েমের লক্ষে 'সমাজতন্ত্র' ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদকে' রাষ্ট্রের মুলভিত্তি ধরে অপরিবর্তনীয়, অমোচনীয়কারে প্রস্তাবনার শীর্ষে ঠাঁই দেন।

      বাঙ্গালী জাতী , ত্যাগ, সংগ্রামের, সাগরসম রক্ত, প্রায় পৌঁনে পাছ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনীময়ে অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠায় স্বস্থিবোধ করে এবং সহমর্মীতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরে নীজেদেরকে বীরের জাতী হিসেবে অবিহীত করে।

  এবার বর্তমানের দেশব্যাপি আলোচনার বিষয় বস্তুতে ফিরে আসি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অখন্ড পাকিস্তানের দীর্ঘ তেইশ বছরের সংগ্রাম, ত্যাগ, তিতিক্ষার ফসল অসাম্প্রদায়িক বাঙালী জাতীয়তাবাদ। অন্যদিকে শোষন বঞ্চনা আর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে উৎপত্তি ভুয়া ধর্মীয় চেতনায় বিশ্বাসী সাম্প্রদায়িক দ্বি-জাতিতত্ব ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ।
"জাতীয় ঐক্য কি হতে পারে?"

     মুলকথা হল বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্য সংগঠিত হওয়ার জন্য এই আহব্বান জানায়নি।একাধিক দলের মধ্যে সমাঝোতা হলেই জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে ধারানাটা নিতান্তই ভুল।আবার একদলের ডাকেও জাতীয় ঐক্য হয়না এই ধারনাটিও ভুল।বহুদলের মিলনে জোটবদ্ধতার উদাহরন আছে-জাতীয় ঐক্যের কোন উদাহরন নেই। একদলের ডাকে জাতীয় ঐক্য হতে পারে প্রকৃষ্ট উদাহরন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবের--
      "৬দফা কেন্দ্রিক শিষাঢালাই জাতীয় ঐক্য।"

   এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি নেত্রী কোন জাতীর 'জাতীয় ঐক্য চাইলেন? 'দ্বিজাতিতত্ত্বভিত্তিক সাম্প্রদায়িক জাতীয়তার নাকি অসাম্প্রদায়িক  বাঙালী জাতীয়তার।'
 
     এই কারনেই বলছিলাম জাতীয় ঐক্য হওয়ার জন্য আহব্বান করা হয়নি,এই আহব্বান ষড়যন্ত্রের আহব্বান।এই আহব্বান ষড়যন্ত্রীদের মেধা থেকে বের হওয়া সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রান দেয়ার জাতীয় ঐক্যের আহব্বান।

     বিধ্বস্ত বিএনপি অগনীতবার চেষ্টার পরও যখন রাজপথে আসতে পারেনি-ষড়যন্ত্রীদের মিলনও ঘটেনি। দীর্ঘ চেষ্টার পর গুলশান হামলা তাঁদের ষড়যন্ত্রকে সফল করার সুযোগ দিয়েছে।

      এই ষড়যন্ত্রে জড়িত বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের রচয়িতা দাবিদার ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবন্ধুর স্নেহতুল্য, পুত্রতুল্য কাদের সিদ্দিকি সাহেব, অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার সমাজতন্ত্রের বাংলাদেশী প্রবক্তা মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম গং এবং তদীয় বুদ্ধির জাহাজ সমতুল্য গভীর রাতের টকশো বুদ্ধিজীবিগন।
 
উল্লেখিত ব্যাক্তিগন এবং তাঁদের সংগঠনকে বিশদলীয় জোটের অন্তভুক্ত করার মহাপরিকল্পনার অংশই হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের আহব্বান।এতে যদিও দীর্ঘদিনের পরিক্ষীত সমমনা বন্ধু জামায়াতকে কিছু সময়ের জন্য ভল্টে রাখার প্রয়োজন হয়, তাতেও রাজী উভয় দল এবং তাঁদের নেতাগন।বৃহৎ স্বার্থে ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করার সুত্র ধরেই জামায়াত উক্ত প্রস্তাব বিশদলের নেত্রীর উপর ছেড়ে দিয়েছেন,আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে।

      পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা-ক্যুয়ের ভেতর দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে কবর দেয়া যে বিতর্ক ফিরিয়ে এনেছিল মেজর জিয়া। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা বিতর্ককে কবর দেয়ার জন্য জাতির জনকের কন্যা একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছেন। ঠিক চুড়ান্ত সফলতার আগেই সাম্প্রদায়িকতার প্রভুর পায়ে পানি ঢেলে প্রান ফিরিয়ে দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হলেন কথিত অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলখেল্ল্যা পরিহীত কিছু বেঈমান কুলাংগার।

      এই চক্রান্তের সুত্রপাত হয়েছিল বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল থেকে। শেষ দিন তিনি দেশের বিশিষ্টজনদের প্রয়োজনে সরকারের অংশিদারিত্ব দেবেন ঘোষনা করেছিলেন।বর্তমান প্রধান বিচারপতিকে প্রেসিডেন্ট করার ওয়াদাও করেছিলেন ভারতের প্রধান মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে। মুলত: তাঁদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভুলের কারনে তাঁদের দল বিপযস্তায় পড়ে রাজপথ, নির্বাচন থেকে চিটকে পড়েছে।, তাঁদেরকে আবার রাজপথে আনার ঠিকাদারী গ্রহন করেছেন আমাদের দেশের তথাকথিত ভোটবিহীন হাই- প্রোফাইল রাজনীতিবীদগন। যাদের জনসমর্থন. `০০১ পার্সেন্ট আছে কিনা সন্দেহ। তবে তাঁদের  বিএনপিকে রাজপথে আনার ক্ষমতা অবশ্যই আছে, অস্বিকার করিনা। জাতি হিসেবে এখানেই আমাদের শংকরতার প্রমান মিলে।

এই বেঈমানের দল কতবড় বিপদ বাংলাদেশের মাথার উপর আবার তুলে দিতে উদ্যত হয়েছে জাতির বিশিষ্টজনেরা হয়ত অনেকে লক্ষও করতে পারেননি। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে যতবেশি বাড়ছে পবিত্র ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতা, ততই ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্য শব্দটির ব্যবহার।পাকিস্তানি শাষকেরাও শব্দটির বারংবার ব্যবহার করেছেন।

 ষড়যন্ত্রীদের জাতীয় ঐক্যের প্রধান ভিত্তি হলো স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে নীজ স্বার্থ চরিতার্থ করা। চার দলীয় জোট খমতায় থাকাকালে সাম্প্রদায়িক গোষ্টির ষড়যন্ত্রের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে ভারতের সেভেন সিস্টারের বিচ্ছিন্নবাদী তৎপরতাকে সাম্প্রদায়িক গোষ্টি ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে বাংলাদেশের মাটিতে তাঁদের অবস্থানের সুযোগ দেয়া। তার পরিণতি  চট্রগ্রাম বন্দরে ধৃত দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনা।

সর্বশেষ উৎকন্টার বিষয়টি হচ্ছে- বিএনপি নেত্রী বাংলাদেশের বর্তমানের উগ্র জঙ্গি তৎপরতাকে-ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়ার চেষ্টা। এই চক্রান্তের পরিণতি হতে পারে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিপন্নতা। যারা এই বিপদ বাড়িয়ে চলার অবস্থান ও নীতি নিয়ে পূর্বাপর অগ্রসর হচ্ছে, তাদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য কখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তির হতে পারে না, হবে না।

     বস্তুতপক্ষে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল ৬দফা ভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে,সেই চেতনায় সব মহল ফিরে এলে জাতীয় ঐক্য হতে আপত্তি থাকার কথা নয়। অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলোকে জাতীয় সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য স্বয়ংক্রিয় ভাবে ফিরে আসতে পারে। যদি জাতীয়ভাবে সবাই বাংলাদেশের  জন্মলগ্নের  অসাম্প্রদায়িক আদর্শকে মেনে নিতে পারে। জাতির জম্মের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যদি জাতীয় ঐক্য গড়া হয়, তবে তা হবে জাতির আত্মহননেরই নামান্তর।

     অখন্ড পাকিস্তানের শাষনতন্ত্র রচনাকল্পে বহুবার চেষ্টা করা হয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলীর মধ্যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করার, কিন্তু হয়নি।৬৫সালের ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধকে সামনে রেখে পাকিস্তানের বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সমাঝোতার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।সব দল মিলে বিবৃতিতে স্বাক্ষরও করেছিল। পরবর্তিতে দেখা গেছে সেই জাতীয় ঐক্য মরিচিকায় পরিনত হয়েছে।মাত্র পাঁছ বছরের মাথায় নতুন জাতি সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের মধ্য দিয়ে।

      স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র-উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য জঙ্গিবিরোধী জাতীয় ঐক্য আমাদের জাতির জন্য একান্ত প্রয়োজন ছিল।  জাতি হিসেবে আমাদের  দুর্ভাগ্য বিদ্যমান বাস্তবতায়  কোন অবস্থায় তা সম্ভব নয়।

    জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যেমনি ভাবে ৬ দফাকে তৃনমুল থেকে সংগঠিত করে জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অনিবায্যতায় জাতিকে ঠেলে দিয়েছিলেন  ঠিক তেমনি ভাবে তাঁর জৈষ্ঠ কন্যা বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাও জঙ্গীবাদ রোধে  তৃণমূল অর্থাৎ ইউনিয়ন পয্যায় থেকে জঙ্গীবিরোধী ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বস্তরের জনগনকে নিয়ে কমিটি করার নির্দেশনা দিয়েছেন। জঙ্গীরোধ করে উন্নয়ন অগ্রগতির চাকাকে সচল রাখতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াস গ্রহন করেছেন।
 
       অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী মুলধারার রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যথাপোযুক্ত সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পেরেছেন জাতির জনকের কন্যা। এটাই বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল এবং তাঁর নেতার দায়িত্ব এবং কর্তব্য ছিল। তিনি তাই করেছেন।

     সরকারি দলের অন্যান্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঘোষনার মত প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষনাও যদি শুধু ঘোষনায় সীমাবদ্ধ রাখেন আওয়ামী নেতারা, তাহলে জাতীয় জীবনে আবারও নেমে আসবে ঘোর অন্ধকারের অমানিশা। জেলা উপজেলা পয্যায়ের নেতাদের মনে রাখতে হবে চলমান ষড়যন্ত্র পুর্বের ষড়যন্ত্রের চাইতে চারিত্রিক বৈশিষ্ঠগত দিক থেকে একেবারেই ভিন্ন। পুর্বেকার ষড়যন্ত্র গুলী ছিল বলপ্রয়োগে ক্ষমতা দখল করার নিমিত্তে পরিবেশ সৃষ্টি করার অপকৌশল। এবারকার ষড়যন্ত্রের রুপ হচ্ছে মেধার ভিত্তিতে রাজপথে,  রাজনীতিতে, নির্বাচনে ফিরে আসার কৌশল। জাতীয়তাবাদের দ্বান্ধিকতাকে কাজে লাগিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করা। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অর্থই হচ্ছে জঙ্গী উত্থানকে ত্বরান্বিত করা। জঙ্গী উত্থান নিশ্চিত হওয়ার অর্থই হচ্ছে অকাতরে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিস্বাসী লেখক সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতাদের জীবনহানী, সম্পদ বিনষ্ট।দেশ ও জাতিকে নিয়ে যাওয়া অন্ধকার যুগের পাকিস্তানী ধারায়।

    পরিশেষে বলতে চাই, পাওয়া না পাওয়ার ক্ষোভ দু:খ্যকে ভুলে গিয়ে জাতির এই চরম সংকট কালে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দগতভাবে জনগনের দ্বারে দ্বারে গিয়ে জঙ্গী উত্থানের কুফল সম্পর্কে বলতে হবে। সমাজের সকলকে জঙ্গীরোধে সামিল করার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।এরই মধ্যে যে সমস্ত নেতৃবর্গ দল ও জনগনের উপর প্রভুত্ব কায়েম করেছেন, তাঁরাও প্রভুত্ববাদ ভুলে জনগনের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রভুত্ববাদ, কতৃত্ববাদ গনতন্ত্রে বিজয়ী করতে পারেনা। জনগনই বিজয়ী করার একমাত্র মালিক। সুতারাং জঙ্গীবিরোধী এই গুরুত্বপুর্ণ ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে জনগনের সঙ্গে মেশার বড় সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। দেশ, জাতি, জনগনের ক্ষতির পাল্লাভারী করবেন না।কারন আওয়ামী লীগ মেহনতি মানুষের প্রানের সংগঠন।

    আওয়ামী লীগের তৃনমুলে জঙ্গীরোধের কায্যক্রমের সফলতার উপর নির্ভর করবে উল্লেখীত ষড়যন্ত্রীদের সফলতা বি-ফলতা। উল্লেখীত ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে  জাতির জনকের কন্যার উন্নয়ন অগ্রগতির ধারাকে সচল রাখতে পারলেই জাতির জনকের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার আক্ষাংকা বাস্তবে রুপায়িত হবে।গড়ে উঠবে  সুখী, সমৃদ্ধশালী, উন্নত, বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাজ, জাতি পাবে সমৃদ্ধ, উন্নত দেশ।

            'জয়বাংলা     জয়বঙ্গবন্ধু'

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন