বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় কাউন্সিল--জনগনের আশা আক্ষাংকার প্রতিফলন ঘটবে কি?? _______________________________________ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ গনতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অনুশীলন করে আসছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগই একমাত্র দল, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্য পয্যন্ত যা কিছু দেশ ও জাতির জন্য অর্জিত হয়েছে-- সব অর্জনই এই দলটির হাত ধরে এসেছে। যেমন--(১) ছাত্র রাজনীতি :--বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের সুচনা করেন।(২) ভাষা আন্দোলন--দলটি বাঙলা ভাষা রক্ষার আন্দোলনে সবচেয়ে বড় এবং অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে। (৩) নির্বাচন ও জোটগত রাজনীতি:-- দলটি প্রতিষ্ঠা কালিন সময় থেকে জনগনের উপর নির্ভর শীল। ১৯৫৪ সালের পাকিস্তানের প্রথম সাধারন নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে জোটগত রাজনীতির সুচনা করে। ঐ সময়ে ইস্যুভিত্তিক জোট গঠন ও নির্বাচনে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই পালন করে। পরবর্তীতে বিদ্যমান সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যেই প্রবনতাটি লক্ষনীয় ভাবে অনুসৃত হচ্ছে। (৪) জনগনের উপর নির্ভরতা :-- যে কয়টি সাধারন নির্বচন অনুষ্ঠিত হয়েছে (খালেদার -১৫ই ফেব্রুয়ারীর ভোটার বিহীন নির্বাচন ছাড়া) সব কয়টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগনের উপর নির্ভরশীলতা এবং জনগনের জন্য ররাজনীতি এই ধারনাটি প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।আওয়ামী ললীগকেও তৃনমুল থেকে তুলে আআনতে সক্ষম হয়েছেন। (৫) নির্দিষ্ট ইস্যুভিত্তিক রাজনীতি :--বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই একমাত্র দল-জন চাহিদার গুরুত্ব অনুযায়ী দাবি সমুহকে দফাক্রমে সাজিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করার উদাহরন রাখতে পেরেছেন। পরবর্তিতে সকল রাজনৈতিক দল রাজনীতির এই ধারাটি অনুসরন করতে দেখা গেছে।উদাহরন হিসেবে বলা যায় যুক্তপ্রন্টের ২১ দফা, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ভিত্তিক আন্দোলন সংগ্রাম। (৬) জনপ্রতিরোধের দৃষ্টান্ত :-- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল অর্থাৎ গনসংগঠন। বিপ্লবী চেতনা সম্পন্ন বা তৎদ্রুপ কোন আদর্শ বা উদ্দেশ্য দলটি ধারন করে না। তথাপি নেতৃত্বের বলিষ্টতায় একটি জনসম্পৃত্ত রাজনৈতিক গনসংগঠন বা দল সময়ের প্রেক্ষিতে 'স্বসস্ত্র বিপ্লবী' ভুমিকায় অবর্তীন্ন হতে পারে- তাঁর কৃতিত্বও শতভাগ দলটির ঝুড়িতেই রয়েছে। (৭) গনঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব :--৬দফাকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আসামী করে পাকিস্তান সরকার জেলে নিলে ৬৯এর গন-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়।জনতা শেখ মজিবুর রহমানকে নির্গাত মৃত্যুদন্ড হতে রক্ষা করে তাঁদের মাঝে নিয়ে আসে।জনগনের ইচ্ছার বহি:প্রকাশের নিকট আইনও নত হতে বাধ্য হয়- ইহা তার প্রকৃষ্ট উদাহরন। (৮) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতার কৃতিত্ব :--৬৯ এর গনভ্যুত্থানের ফসল ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক বিজয়।এই প্রথম কোন রাজনৈতিক দল সাধারন নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ট আসন পাওয়ার উদাহরন সৃষ্টি হল।যারফলে তৎকালিন পুর্বপাকিস্তানের একমাত্র বৈধ নেতৃত্বের অধিকারি রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ এবং তাঁর একক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হলেন। (৯) মুক্তিযুদ্ধ :--বিশ্বের খুব কম দেশের রাজনৈতিক দলই আছে তাঁর দেশের জনগনের মুক্তির জন্য স্বসস্ত্র যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে পেরেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঝুড়িতে ১৯৭১ এ বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার আখাংকা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে অনুষ্ঠিত" মহান মুক্তিযুদ্ধের" একক নেতৃত্বের কৃতিত্ব শতভাগ রয়েছে। (১০) স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব :-- অবশ্যম্ভাবি বলা যায়,একটা জাতির পরম চাওয়া পাওয়া তাঁর নিজস্ব জাতিয় স্বাধীনতা এবং ভুখন্ডগত অধিকার। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব দুটি চরম এবং পরম পাওয়াই ঘটেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং তাঁর নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের একক নেতৃত্বে। (১১) তত্বাবধায়ক সরকারের ধারনা:-যদিও বিধানটি অগনতান্ত্রিক এবং চরম লজ্জাকর বিষয় একটা জাতির জন্য। তথাপিও জনগনের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পদ্ধতিটির উদ্ভাবন করে। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারকে দাবিটি মানতে বাধ্য করে।'৯১ নব্বই এ বিএনপির শাষনামলে উক্ত দাবিটি সংবিধানে সংযোজনেও বাধ্য করার একক কৃতিত্ব আওয়ামী লীগেরই। (১২) তত্ববধায়ক প্রথা বাতিল:-- যদিও সময়ের দাবিতে রাজনীতিবিদ এবং প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের জন্য উক্তরুপ লজ্জাস্কর একটি বিধান প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল,কালের প্রবাহে স্বৈরাচার সামরিক সরকার খমতা দখলের বাস্তবতা তিরূহীত হলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বিধানটি বাতিল করে। সুতারাং প্রতিষ্ঠিত করন এবং বাতিলকরন উভয়ের কৃতিত্বই আওয়ামীলীগের ঝুড়িতেই জমা আছে। (১৩) উন্নয়ন অগ্রগতি নির্দিষ্ট করন ও বাস্তবায়ন :--জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাবলম্ভি করার মানসে তাঁর লালিত স্বপ্নের বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন তাঁর ঘোষিত দ্বিতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে।তাঁর সেই স্বপ্ন অংকুরে বিনষ্ট করে দিয়েছিল দেশীয় এবং আন্তজাতিক ষড়যন্ত্রকারিরা। ১৯৭৫ ইং সালের ১৫ই আগষ্ট স্বপরিবারে তাঁকে হত্যা করে জাতির আশা আখাংকার সমাধি ঘটায় হত্যাকারিরা।দীর্ঘ চড়াই উৎরাই পেরিয়ে তাঁর জৈষ্ঠকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'রুপকল্প ২০২১' ঘোষনা করে বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছেন 'উন্নয়ন ও অগ্রগতির' শীর্ষ শীখরে।এইরুপ উন্নয়ন ও অগ্রগতির নির্দিষ্টকরনের ধারনা প্রতিষ্ঠিত করন ব্যবস্থা, একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার পক্ষেই প্রচলন সম্ভব হয়েছে। ধারনাটি বর্তমানে উন্নয়নকামি তৃতীয় বিশ্বের রোলমডেলে রুপান্তরীত হয়েছে।এই প্রথম বাংলাদেশের কোন সরকার প্রধানের নীতি আদর্শ বিশ্ববাসির প্রশংসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হল। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের বিরুধী দল সমুহ ইতিমধ্যেই তাঁদের ঘোষিত উন্নয়ন কর্মসূচিতে 'রুপকল্প ৩০'নামে ধারনাটি স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে।অর্থাৎ 'দেশরত্ম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন' ''জাতীয় ঐক্যমতের দর্শনে'' রুপ পরিগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে"। (১৪) বদ্ধমুল ধারনার যবনিকাপাত:-- বাংলাদেশে একবার যে দল নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় যায় দ্বিতীয়বার তাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ- দেশের রাজনীতির ইতিহাসে ধারনাটির মুলে কুঠারাগাত করতে সক্ষম হয়েছে। দ্বিতীয়বারও নিরঙ্কুষ সংখ্যাগরিষ্টতায় নির্বাচিত হয়ে নতুন রেকর্ডটি ঝুড়িতে নিতে সক্ষম হয়েছে। পরপর দুইবার নির্বাচিত হয়ে ধারাবাহিকভাবে দেশ শাসন করছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা।তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নকামী দেশের জন্য ইহা এক বিরল দৃষ্টান্ত।যেখানে প্রতিনিয়ত হাজারো সমস্যায় জির্ণশীর্ণ করে দিতে পারে সরকারের জনপ্রিয়তা। (১৫) বিতর্কিত নির্বাচন :-- যদিও দ্বিতীয় দফার নির্বাচনটি নিয়ে দেশে বিদেশে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। ইহা সত্যযে, এই নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। (১৬) অবিতর্কিত দেশশাষন:-- ইহা সত্য যে, এইরুপ নির্বাচন প্রচলিত গণতান্ত্রিক রীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় । কিন্তু বিতর্কিত ও অশুদ্ধ নির্বাচনের কোনো বিকল্পও তখন ছিল না। নির্বাচন না হলে অনির্বাচিত কারো না কারো ক্ষমতা গ্রহণের পথ প্রশস্ত হত। গণতান্ত্রিক শাসনের ধারাবাহিকতা অবশ্যই ক্ষুন্ন হত। দেশরত্ম শেখ হাসিনা সেটা হতে দেননি। নির্বাচন একেবারে না হওয়ার চাইতে মন্দের ভাল নির্বাচনকে বেছে নিয়েছেন তিনি। এইক্ষেত্রে তিনি যে দুরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন এবং ধৈয্যের যে পরাকাষ্টা দেখিয়েছেন আগামীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে বিধৃত হবে। দীর্ঘ পয্যবেক্ষনে দেখা যায়, ট্রুটিপুর্ণ নির্বাচন দেশের মানুষের কােছ তেমন অ-গ্রহণযোগ্য হয়নি, তার প্রমাণ শেখ হাসিনার সরকার গত দুই বছরের অধিক সময় আন্দোলন সংগ্রামহীন নির্ভেজাল ভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকা। (১৭) ষড়যন্ত্রের জাল চিহ্ন :-- তথাকথিত রাজনীতিক বিশ্লেষকগন ভেবেছিলেন ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার সরকার বড়জোর মাস কয়েক ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। নতুন ভাবে সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতে নির্বাচনের জন্য মানুষ রাজপথে নেমে আসবে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধপক্ষ বিরাহীন অপপ্রচার করে আসছে, দেশে গণতন্ত্র নেই এবং এক ধরনের কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুলত: সত্যটি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারকে মোকাবেলা করার অক্ষমতা থেকেই এই ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তাঁরা। উক্তরুপ অপপ্রচার বিশ্ববাসি এবং দেশবাসির বুঝতে কষ্ট হয়নি।এই প্রথম কোন রাজনৈতিক দলের আহব্বানে রাজপথে জনগন নামেনি, আন্তজাতিক মহল সহযোগীতা বন্ধ করেনি। তৃতীয় বিষ্বের সমস্যা সংকুল একটি দেশের জন্য ইহা এক বড়প্রাপ্তি। তাছাড়াও এই প্রথম বাংলাদেশের কোন সরকারের পক্ষে বিশ্বমোড়লের শতাধিক অনুরুধ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। (১৮) বিনাযুদ্ধে স্থল ও জলভাগ জয়। :--বিশ্ব ইতিহাসে নজীরবিহীন উদাহরন সৃষ্টি করতে পেরেছেন জাতির জনকের কন্যা, একটি বারুদের কণাও খরছ ব্যাতিরেকে শক্তিধর ভারত এবং ফ্যাসিবাদি মায়ানমার হ'তে বিশাল সমুদ্র এলাকা জয় করে বাংলাদেশের অন্তভুক্ত করে। বিশাল ভারতের সঙ্গে ইন্দিরা -মুজিব মৈত্রী চুক্তির আওতায় চিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে দশ হাজারেরও বেশী একর ভুমিতে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন।সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার এই গতিশীল নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। বিনাযুদ্ধে ইঞ্চিপরিমান ভুমি অধিকারে নেয়ার উদাহরন বিগত হাজার বছরের বিশ্ব ইতিহাসেও নেই। একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেই অসম্ভব কে সম্ভব করতে পেরেছেন। (১৭) কাঁটা তুলে মসৃন পথের সৃষ্টি :--বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথ চলা কখনই মসৃন ছিলনা। প্রতিনিয়ত দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছে দলটি.।সরকারে থেকেও হয়েছে, বিরুধীদলে থেকেও হয়েছে।দলের অভ্যন্তর থেকেও হয়েছে, বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমুহের পক্ষ থেকেও হয়েছে। জাতির জনকের কন্যার অসিম সাহষ, ত্যাগের মনোভাব, চরম ধৈয্যের ফসল আজকের মসৃন পথের সন্ধান পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই মসৃন পথ সৃষ্টিতে একমাত্র পুত্রের মৃত্যু হুমকিকেও তোয়াক্কা করছেন না তিনি। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগে বাংলাদেশের জম্ম, তাঁর জৈষ্ঠ কন্যার ত্যাগের ফসল আজকের উন্নতি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি। তাঁর একমাত্র লক্ষ বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তর করে তাঁর পিতার আত্মাকে শান্তি দেয়া। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ৬৭ বছরের ইতিহাসে বর্তমান সময়টাই সবচেয়ে বেশি অনুকূল এবং মসৃন। টানা ৭ বছরের অধিক সময় ক্ষমতায় আছে, ক্ষমতার বর্তমান মেয়াদ পূর্ণ করতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে বলে দেশবিদেশের অভিজ্ঞ মহল মনে করেন না। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনে এই ধারণা চালু আছে যে, শুধু এই মেয়াদ নয়, পরের মেয়াদেও দেশ শাসন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ ২০২৪ইং সালের আগে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর উৎযাপনের সময় শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতিকে নেতৃত্ব দিবেন। বিষয়টি পরশ্রিকাতরতার বশে কারো শুনতে খারাপ লাগলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য অতি আশা বা দুরাশা বলে মনেই হয়না। পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের স্বপ্ন পূরণের আশা দুরশা হবে না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আগামী জাতীয় কাউন্সিলে কিছু মৌলিক কাজ সম্পন্ন করতে হবে জাতির জনকের কন্যাকে। আওয়ামী লীগ যেহেতু সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক দল। সেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে দল সম্পর্কে বর্তমান সময়ের ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় নিতে হবে। দলের মধ্যে বেড়ে উঠা যে সমস্ত আগাছা তৈরি হয়েছে,সে সমস্ত আগাছা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করাতে হবে। আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে দলের আগাছা, হাইব্রিড নেতা, দুবৃত্ত নেতা, সন্ত্রাসী মাস্তান লালনকারি নেতা, দখলবাজ অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী মন্ত্রী নেতাদের নিয়ন্ত্রন করার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। নচেৎ ৬৭ বছরের উল্লেখীত গৌরবের ইতিহাস মানুষ স্মরন করবে বলে মনে হয় না। উপহংহারে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব, বিশেষ করে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনাকে বুঝতে হবে , দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দেশে বিদেশে যতই সুনাম হোক না কেন, অভ্যন্তরে ব্যাপক রোগের আলামত দিনে দিনে স্পষ্ট হচ্ছে। বাইরে থেকে মোটাতাজা দেখা গেলেও ভেতরে ভেতরে তার অনেকটাই ফাঁপা। ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের সর্ব অঙ্গে মেদ চর্বি জমেছে। চর্বি মেদ কোন অবস্থায় সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। অভ্যন্তরীন দুর্বলতা গুলো প্রকট হয়ে বাইরে প্রকাশ না পেলেও দুর্বলতা যে আছে-তা মেনে নিতে হবে এবং সেগুলো দূর করার জন্য আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। বার বার ঘোষনা দিয়ে, দেশব্যাপি দুবৃত্ত নেতাদের তালিকা করে, জনগনের মনের ক্ষোভ দূর করা সম্ভব হবেনা। জনগন চায় ঐ সমস্ত দুবৃত্ত নেতাদের যথোপযুক্ত শাস্তি। জনগন আশা করে আগামী জাতীয় কাউন্সিলে একটা সমম্বিত রুপরেখা প্রনিত হোক, এবং সেই রুপ রেখা যথাযথ বাস্তবায়ন হোক।মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদান কারি দলটি এবং তাঁর বর্তমান নেতৃত্ব অসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন এই জাতির জন্য, সুতারাং তাঁদের শাষনই হবে আন্তরিক এবং দুর্নীতিহীন। 'জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু'

  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে জনগনের আশা আক্ষাংকার প্রতিফলন হবে আশা করা যায়।যেহেতু বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে যতটুকু বাংলাদেশ অর্জন করেছে তাঁর সবটুকু অর্জনের কৃতিত্বই দলটির।সেই ঐতিহ্য ধরে রাখার স্বার্থেই দলকে আগাছামুক্ত রাখা সময়ের দাবি।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন