নিয়ন্তর গনতন্ত্রের চর্চা'ই দেশবিরোধী অশুভশক্তির পতন নিশ্চিত করবে৷৷



   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বার্ণিয়াকটের আওয়ামীলীগ সরকারের দীর্ঘ শাসন অবসান এবং বৃহত্তর ঐক্যজোট যুক্তফ্রন্ট গঠন, নিরপেক্ষ নির্বাচন ও দায়িত্বশীল সরকার গঠনের দায় রয়েছে৷তাই বোধহয়--তাঁদের দীর্ঘযুগের একান্ত মিত্রদল বিএনপি'কে জোটগত নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার সুযোগ নিতে ৫ পুর্বশর্ত দিয়েছেন৷ দৃশ্যতঃ মনে হচ্ছে--জেঃ এরশাদের ভারত সফর এবং সফর শেষে বৃহত্তর জোটের নেতৃত্ব গ্রহন প্রশ্নে নিঃস্পৃহতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি দলকে মার্কিন সরকারের নিকট অ-প্রয়োজনীয়, মুল্যহীন, অকায্যকর করে তুলেছে'? বিশেষ করে দীর্ঘযুগের সম্পদ জিয়া পরিবার এই মূহুর্তে বিএনপির জন্য বোঝা হিসেবেই দেখছে তাঁরা? ইতিপুর্বে আন্তজাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিন পুর্ব এশিয়ার ভু-রাজনীতিতে পাকিস্তানকে পরিত্যাগ করে ভারতকে বন্ধু করে নিয়েছে৷ আবার ভারতের স্থীতিশীল রাজনীতি বিশেষ করে সেভেন সিষ্টার খ্যাত সাত রাজ্যের অখন্ডতা অনেকাংশেই বাংলাদেশের মর্জির উপর নির্ভরশীল৷ এই সমস্ত বিবিধ সমীকরণে ইচ্ছা করলেই ভারত যেমন বাংলাদেশ বিরোধী ভূমিকা গ্রহন করতে পারেনা, বাংলাদেশেরও সর্বক্ষেত্রে সম্ভব হয়ে উঠেনা৷
   ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বাংলাদেশের বিএনপি আদর্শিক ক্ষেত্রে একই সুতায় গাঁথা হলেও বিএনপিকে এই মহুর্তে কেন টেনে তোলার ঝুঁকি গ্রহন করছেনা--সেই ইতিহাস অনেক বড়৷ সেদিকে আমি যেতে চাইনা৷    বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরিক্ষিত প্রতিবেশী মিত্র দেশ ভারতের মনোভাব লক্ষ করে বিএনপি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে এক্ষনে দ্রুতই পরিবর্তন এসেছে বলা চলে৷নিম্নে বাংলাদেশস্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বার্ণিয়াকটের পক্ষ থেকে বিএনপিকে দেয়া ৫ জোটগত নির্বাচনী শর্ত প্রদান--তাই প্রমান করে৷
শর্তগুলী হচ্ছে--
 প্রথমতঃ ড. কামাল হোসেন সাহেবকে জোটনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী মেনে বৃহত্তর জোট গঠন করতে হবে৷
 দ্বিতীয়তঃ--বিএনপিকে অবশ্যই জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সংগ ত্যাগ করতে হবে৷
তৃতীতঃ-খালেদা জিয়ার মুক্তি'র বিষয়টি আদালতের উপর ছেড়ে দিতে হবে৷  চতুর্থতঃ-জোট শরিক দল সমূহকে ১৫০ আসন ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে হবে৷
  পঞ্চমতঃ--তারেক জিয়াকে বিএনপি দলে এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে পূর্ণবাসনের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে৷
    উল্লেখিত ৫ শর্তে  বিএনপি'র প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ তাঁর মিত্র দেশ সমূহ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে অবস্থান নিবেন৷ বার্ণিয়াকটের পক্ষ থেকে বিষয়টি সাফ সাফ বিএনপিকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে৷
  এই প্রসঙ্গে বার্ণিয়াকট আরও বলেন--যুক্তরাষ্ট্র  বিশ্বাস করে 'বৃহত্তর জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নিলে শক্তির ভারসাম্য ফিরে আসবে৷ ফলে একতরফা নির্বাচন বা নির্বাচনে কারচুপির সম্ভাবনা কমে আসবে৷ বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনও শক্তির ভারসাম্যের আভাস পেলে তাঁদের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারবে৷
  বার্ণিয়াকট কতৃক বিএনপিকে প্রদত্ত উল্লেখিত ৫ শর্তের প্রতি নিবিড়ভাবে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়--বিএনপি এবং জিয়া পরিবারের জন্যে প্রতিটি শর্তই অত্যান্ত অপমানজনক, দুঃখ্যজনক৷ দীর্ঘযুগের বন্ধুর বিপদে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সাহায্য না করে আরো ডুবিয়ে দেয়ার চেষ্টাই হচ্ছে ৫শর্ত৷ শুধুমাত্র জনসমর্থন পুষ্ট,সাংগঠনিক শক্তি সম্পন্ন বিএনপি দলই নয়--জনসমর্থনহীন, সাংগঠনিক শক্তিহীন বিবেকবান, স্বাধীনতাপ্রিয় যে কোন রাজনৈতিক দলই উক্তরুপ ৫ শর্ত সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবে৷
  অবশ্য বিএনপির ক্ষেত্রে খুব বেশী ব্যাতিক্রম হয়নি--সরাসরি প্রত্যাখ্যান না করলেও পরিত্যাগ করছেন৷ ইতিমধ্যেই তার আভাস স্পষ্ট' হতে শুরু করেছে৷ বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক জিয়া সরাসরি বার্ণিয়াকটের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান না করে--"পরিবারের দুই বউ আগামী নির্বাচনে ২০দলীয় জোটের নেতৃত্ব দিবেন দৃড়তার সঙ্গেই ঘোষনা দিয়েছেন"৷
   আপাতঃদৃষ্টে মনে হচ্ছে--বাঙ্গালী জাতীর চিরায়ত আবেগ কাজে লাগিয়ে জিয়া পরিবার রক্ষা করাকেই প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচনী কৌশল প্রনয়ন করবে বিএনপি৷ এক্ষেত্রে--আপনার একটি ভোট 'খালেদা জিয়ার জেলমুক্তি' ঘটাতে পারে৷এমনতর আরো কতিপয় আবেগঘন নির্বাচনী শ্লোগান সামনে রেখে প্রয়াত মেজর জিয়ার দুই পুত্রবধু বাংলাদেশ চষে বেড়াবেন ধারনা করা যায়৷ অবশ্য দলটি ধ্বংসের অনেক কারনের মধ্যে অন্যতম একটি কারন--জনস্বার্থ প্রাধান্য না দিয়ে পারিবারীক স্বার্থ প্রাধান্য দিতে গিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে অনেকগুলী ক্ষতের সৃষ্টি করেছে৷ ফলে ১০বছর সময় পার করেও রাজনৈতিক নাজুক অবস্থা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি৷ 
  বিএনপি দলটি মেজর জিয়ার মৃত্যুর পর, তাঁর পত্নি বেগম খালেদা জিয়াকে নেতা নির্বাচনের পর থেকে তিনি পারিবারিক সম্পদ মনে করে দলটি পরিচালনা করে আসছেন৷  যখন যেখানে যেভাবে প্রয়োজন, সেখানে সেইভাবে দলকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করতে দ্বিধা করছেননা৷ একই ধারাবাহিকতা উত্তরসুরি তারেক জিয়া লন্ডন পলাতক থাকাবস্থায়ও কঠোরভাবে রক্ষা করে চলেছেন৷ সুতারাং পারিবারিক দলের নির্বাচনী প্রচারণায় পরিবারের সদস্যরা আন্তরিকভাবে অংশ গ্রহন করবে এবং বিজয় অর্জনের প্রচেষ্টা চালাবে--ইহাই সঙ্গত এবং স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
  তবে কথা থেকে যায়--আগামী নির্বাচনে পরিকল্পিত আবেগ কাজে লাগিয়ে কাংক্ষিত ফল অর্জনে দল ব্যর্থ হলে? রাজনীতির ভাষায় ধরে নেয়া যৌক্তিকতা পাবে জিয়া পরিবারের প্রতি বাংলাদেশের জনগনের মনে কোন আবেগ, অনুভূতি কাজ করেনা৷  বাংলাদেশের জনগন জিয়া পরিবারকে অপরাধি পরিবার মনে করে এবং সেই মতে বিশ্বাসও করে৷ জনগনের প্রত্যাখ্যানের সম্মান দিতে গিয়ে গঠিত সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন পরবর্তি সময় যদি আরো বড় বিপয্যয় নেমে আসে দোষ দিবেন কাকে? যেমনঃ- বাড়ীরক্ষার আন্দোলন, পারিবারীক লুটপাটের মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার প্রচেষ্টায় সংঘঠিত একাধিকবারের আন্দোলনে বিপয্যয় ইত্যাদি উদাহরণ তো হাতের কাছেই আছে৷
   বার্ণিয়াকটের দেয়া ৫শর্তই প্রমান করে তাঁরাও দলকে পারিবারিক স্বার্থরক্ষা ও সম্পত্তি পরিগনিত করার বিষয়টি ভালভাবে মেনে নিতে পারেনি৷ফলতঃ সরকারের কর্মকান্ডে চাপ দেয়ার একাধিক সুযোগ সৃষ্টি হওয়া সত্বেও গত দশবছর বিএনপি থেকে তাঁর মিত্র দেশ সমূহ নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে চলেছে৷
   এক্ষেত্রে বিএনপি নির্বাচনে জিতবে কি জিতবেনা, বিএনপি বা দেশের জনগনের লাভ ক্ষতি কি হবে না হবে বিবেচনা করার দরকার হয়না৷ বার্ণিয়াকটের ৫ শর্ত বিএনপি সহ অপরাপর দলের জন্যে বড় রকমের শিক্ষা ধরে নেয়া অন্যায় হবেনা৷ ৫শর্ত সর্বক্ষেত্রে বিএনপি সহ অন্যান্ন অনেক দলকে বিদেশ নির্ভরতা ও ভরের রাজনীতি মুক্ত হয়ে, নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির উপর আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করবে৷
   বাংলাদেশ সহ বিশ্ববাসী'র জন্যে আরো একটি জ্বলন্ত উদাহরণ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আমেরিকার স্বার্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষিন হয়ে আসলে, তাঁরা যে কোন দেশ, দল, সরকারকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে কখনই সময়ক্ষেপন করেনা৷ সেই দৃষ্টান্তই বার্ণিয়াকট বাংলাদেশে'র রাজনীতিতে বিএনপি'র ক্ষেত্রে স্থাপন করেছে৷ তাঁদের কায়েমী স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনে একাধিক নতুন শক্তি সৃষ্টি করে নেয়াও যে চিরায়ত রীতি, নীতি, অভ্যেস, এরশাদের পর ড. কামালের নাম প্রস্তাব,তাও প্রমানের জন্যে যথেষ্ট৷
 দক্ষিন পুর্ব এশিয়ার  দেশ পাকিস্তান, পাকিস্তানের নওয়াজ শরিফের সরকার এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপি তাঁদের অতি সাম্প্রতিক বড় তিনটি  প্রমান দক্ষিন এশিয়ার প্রায় তিনশতকোটি মানুষের মনে জ্বল জ্বল করে জ্বলবে অনন্তকাল৷

   এদিকে ড. কামাল হোসেন সাহেব বার্ণিয়াকটের প্রত্যক্ষ সমর্থন পেয়ে তাঁর নেতৃত্বে গঠিত্ বৃহত্তর জোটে বিএনপি'কে আসতে চাইলে অনুরুপ ৩ নির্বাচনী পুর্বশর্ত জুড়ে দিয়েছেন৷
 প্রথমশর্তঃ--জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কোনপ্রকার প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সম্পর্ক থাকতে পারবেনা৷ দ্বিতীয়তঃ-জোটগতভাবে খালেদা'র মুক্তি প্রসঙ্গ বিএনপি আনতে পারবেনা--বিএনপি দলীয়ভাবে খালেদা জিয়ার জেলমুক্তি কর্মসূচি পালন করতে পারবে৷ তৃতীয়তঃ--জোটগতভাবে তারেক জিয়াকে দলে, দেশে, জোটে এবং রাজনীতিতে পূর্ণবাসনের চেষ্টা করতে পারবেনা৷  শেষ দুই শর্তে জোটনেতা ড. কামাল হোসেন সাহেবকে কোনবস্থায় জড়াতে পারবেনা৷
   বৃহত্তর জোট নির্বাচনে জয়লাভ করার পর সরকার গঠন ও পরিচালনায়  ড. কামাল হোসেন সাহেবের পক্ষে আরো ৭ শর্ত রয়েছে৷  বিএনপিও অবশ্য নির্বাচন এবং সরকার গঠন প্রশ্নে তাঁদের দাবীনামা ড. কামাল হোসেনের হাতে দিয়েছেন বলে জানা যায়৷  বিএনপির শর্তনামা বা দাবী নামায় কি আছে তা অবশ্য সঠিকভাবে তথ্য পাওয়া যায়নি৷ তবে উভয় পক্ষের শর্ত সমূহ আলোচনা সাপেক্ষে যোগ বিয়োগের মাধ্যমে একমত হওয়া সম্ভব হবে--এমন আভাস'ই মিলেছে৷
 প্রকাশিত ড. কামাল হোসেনের সরকার গঠন ও পরিচালনা বিষয়ক ৭ শর্ত নিঃসন্দেহে জনকল্যানমূখী এবং গনত্তান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা সুদৃড করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে৷ নির্বাচনমূখি রাজনৈতিক দল সমূহ হরহামেশাই জনকল্যানমূখী শর্ত, দফা, কর্মসূচি, নির্বাচনী ইশতেহার দিয়ে থাকে৷
   সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিতে বলিয়ান  ড. কামালের নাম প্রস্তাবনায় আসতে না আসতেই তিনিও হঠাৎ করেই সুপার পাওয়ারের অধিকারী হয়ে গেলেন৷ সভাপতি-মহাসচিব নির্ভর দলের নেতা ড. কামাল সরকার গঠনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছেন৷ তিনি হিতাহীত জ্ঞান হারিয়ে বিপুল জনসমর্থিত দল বিএনপিকে জোট এবং সরকারে আসার পুর্বশর্ত দেয়ার দৃষ্টতা দেখাতে তাঁর বিবেকে সামান্যতম বাঁধেনি৷
 ড. কামাল হোসেন সাহেবের বিএনপিকে শর্ত দেয়ার ধরন দেখে আমার গ্রামের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আস্ফালনের কথাই মনে পড়ে গেল৷ গ্রাম্য ফকিন্নির ছেলের রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের পর গ্রামের প্রতিষ্ঠিত, প্রতিতযষা পরিবারকে শাসানোর চিরায়ত রীতি--জাতীয় রাজনীতিতে কামাল সাহেব দেশের আপামর জনগনকে স্মরণ করিয়ে দিলেন৷
    ড. কামাল হোসেন সাহেবের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে ৭শর্ত নড়চড় হতে পারে, কিন্তু জোটগত নির্বাচনের ক্ষেত্রে উল্লেখিত ৩ শর্তের ব্যাপারে কোন ছাড় হবেনা৷ উল্লেখিত তথ্যটি গনফোরাম মহাসচিব সুব্রত চৌধুরী সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন, সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে৷   বৃহত্তর নির্বাচনী জোট গঠন প্রসঙ্গে আরও ৩টি প্রাসঙ্গিক বিষয় পাঠকদের জানা প্রয়োজন মনে করি৷
(১) ড. কামাল হোসেন সাহেবের সাথে দীর্ঘদিন জোটগত নির্বাচন ও সরকার গঠন প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনারতঃ বিএনপি দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম সাহেবের নেতৃত্বে গঠিত লিয়াজোঁ কমিটি কাজ করে যাচ্ছিল৷  ২০দলীয় জোটের বাহিরে অন্যান্ন দল ও জোটের সাথে বিএনপি, দেশ ও জনগনের বৃহত্তর স্বার্থে  বিষয়টি দলীয় ফোরাম ও জোটে অনুমোদিত ছিল অনুমান করা যায়৷ ২০ দলীয় জোট অক্ষুন্ন রেখে অন্যসকল দল ও জোটের সমন্বয়ে বৃহত্তর জোট গঠনের লক্ষে লিয়াজোঁ কমিটি  জেনারেল এরশাদের জাতীয় পার্টি, ড. কামাল হোসেনের নাগরিক ফোরাম এবং বি চৌধুরীর নাগরিক ঐক্য, মান্না সাহেবের সুশীল সমাজের নাগরিক সমাজ এর সাথে যুগোৎপত আলোচনায় চালিয়ে অনেকাংশেই সফলতার মূখ দেখেছিলেন৷
  (২) এরশাদকে জোটের নেতা নির্বাচন করে সকল দল ও জোট একমঞ্চে নির্বাচন ও সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত বলতে গেলে প্রায় পাকাপাকি করা ছিল৷ শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা ছিল-- কখন ঘোষনা করার মহেন্দ্রক্ষনটি আসবে৷ নির্বাচন পরবর্তি সরকার গঠন প্রশ্নে এরশাদ সিঙ্গাপুরে তারেক জিয়ার সাথে চুড়ান্ত বৈঠকটি বাকী ছিল৷ চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এরশাদের সিঙ্গাপুর সফরের ঘোষনাও ছিল৷ খালেদা জিয়ার আইনজীবি কার্লাইলকে দিল্লি বিমান বন্দরতর থেকে ভারত সরকার ফেরৎ পাঠানোর পর সিঙ্গাপুর সফরের আগে এরশাদ ভারত সফরের সিদ্ধান্ত নিয়ে তড়িগড়ি ভারত গমন করেন৷ ভারত সফরে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ও বিরুধীদলের নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় আলোচনায় মিলিত হয়েছেন--এমন খবর ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা সহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে৷ দেশে ফিরে অদৃশ্য কারনে তিনি বৃহত্তর নির্বাচনী জোট গঠন, নির্বাচনের জোটের নেতৃত্ব প্রদান এবং নির্বাচন পরবর্তি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহন ও সরকার পরিচালনার মোক্ষম সুযোগ পাওয়া সত্বেও চুপসে গেছেন৷ তিনি ভারত থেকে ফিরে এসে আর সাংবাদিক সম্মেলনেও হাজির হননি-তাঁর দলের সফর সঙ্গিরা সাংবাদিকদের ব্রিফ করতে দেখা গেছে৷
   জেঃ এরশাদের এই চুপসে যাওয়াই মূলতঃ বিএনপি, জোট, নাগরিক ফোরাম, নাগরিক ঐক্য সহ বৃহত্তর নির্বাচনী জোট গঠন প্রক্রিয়ায় জড়িত সর্বমহলে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি করেছে৷
  (৩) জটিলতা উত্তরণে তড়িগড়ি বার্ণিয়াকটের নেতৃত্বে সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ সুজন সম্পাদক বদিউল আলম সাহেবের মোহাম্মদপুর বাসভবনে এক গোপন সভায় মিলিত হন৷ সেই সভায়ই ড. কামাল হোসেন সাহেবকে জোটনেতা নির্বাচিত করে আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহন প্রশ্নে বিএনপিকে ৫ শর্ত প্রদান করেন৷ সুযোগ সন্ধানী ড. কামাল হোসেন বিএনপি'র এই দুর্বল মূহুর্তকে কাজে লাগিয়ে তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনী জোট গঠনে বিএনপিকে ৩ শর্ত ও সরকার গঠনে ৭ শর্তারোপ করে বসেন৷
   এমতঃবস্থায় লন্ডন পলাতক তারেক জিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ২০দলীয় জোটের আগামী নির্বাচনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্যে তাঁর পত্নি ডা. জোবায়েদা ও প্রয়াত কোকো পত্নি শারমীনের নাম ঘোষনা করেন৷ উদ্ভোত পরিস্থীতি আলোচনার জন্যে  দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বেগম জিয়ার সাথে আলোচনার জন্যে কারা কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কারা ফটকে উপস্থিত হলে--ক্ষিপ্ত খালেদা জিয়া ফখরুল সাহেবের সাথে দেখা করেননি৷ এদিকে বি চৌধুরী ড. কামালের নেতৃত্বে জোটগত নির্বাচনে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়৷
   উপসংহারে বলা বলা যায়--বহুল আলোচিত অশুভের বৃহত্তর নির্বাচনী জোট 'যুক্তফ্রন্ট' গঠন সার্বিক পয্যালোচনায় দেখা যায়--এই মহুর্তে আলোর মূখ দেখার সম্ভাবনা নেই৷ বাংলাদেশের অশুভচক্রের কাংক্ষিত সদ্য অনুষ্ঠিত 'মালয়শিয়া নির্বাচনের ধারনায়' সরকার বিরোধী বৃহত্তর জোট যুক্তফ্রন্টের কল্পিত সাম্ভাব্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও জোটনেতা প্রেতাত্বা জেঃ এরশাদ একাই--বিএনপি সহ সকল অশুভ মহলের আশা, আকাংক্ষা, স্বপ্ন, স্বাদ গলাটিপে হত্যা'র একমাত্র দায়ী৷ নির্বাচন অতি সন্নিকটে-সুতারাং অশুভের দলবদ্ধ হওয়ার আগেই পুর্বাকাশে নতুন সুয্যদ্বয় ঘটবে৷ নতুন সুয্যের আলোকরশ্মিতে প্রেতাত্বাদের গাঁয়ে যে জ্বালাপোঁড়া শুরু হবে--সেই ব্যাথা সহ্য করার শক্তি, ধৈয্য, সাহষ কিছুই নেই তাঁদের৷ নিশ্চিত করেই বলতে পারি-- আগামীর বাংলাদেশ হবে প্রেতাত্বামুক্ত, দেশদ্রোহীমুক্ত বঙ্গবন্ধুর কাংক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের সোনার বাংলাদেশ৷    

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা