'বাংলাদেশপ্রেস পরিবার' উচ্চ আদালতের পয্যবেক্ষনের আলোকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত "ঐশী"কে সকল অ-নৈতিকতা দূরিকরনে কতৃপক্ষের অনূমতি সাপেক্ষে 'উৎসে রুপান্তরে' সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
(রুহুল আমিন মজুমদার)
সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অবক্ষয়ের চলমান ঘটনায় উঁচু তলার ছেলে মেয়েদের প্রমানীত সম্পৃত্ততা বাংলাদেশের আপামর সচেতন জমগনকে ভাবিয়ে তুলেছে।(১) ঐশী কতৃক বাবা মা'কে হত্যায় যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তি। (২) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভারসিটিতে পড়ুয়া উচ্চবিত্তের ছেলেমেয়েরা উগ্র ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাস স্থাপন।(৩)আপন জুয়েলার্সের কাল টাকা অনৈতিক ব্যবহার এবং তৎকায্যের নিলজ্জ দম্ভোক্তি।
১) পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, মাতা স্বপ্না রহমানের একমাত্র কন্যা ঐশী রহমান।কথিত যে, ঐশীকে তাঁর বাবা পুলিশ অফিসার প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা, তাঁর ব্যাক্তিগত খরছের জন্যে দিতেন। পুলিশ বাবার অতিরিক্ত টাকার গুনে 'ঐশী' দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠে।অসংখ্য, অজস্র বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে উঠে।বন্ধুবান্ধবের সংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে তাঁর টাকার চাহিদাও বহুগুন বেড়ে যায়।ততদিনে ঐশী সকল ধরনের মাদকাসক্তে আসক্ত হয়ে পড়ে এবং সঙ্গীয় বন্ধুদেরও মাদকাসক্তের আসক্তিতে রুপান্তর করে।শেষবিকেলে একমাত্র মেয়ের চাহিদানুযায়ী টাকা সরবরাহ করার অপারগতায় আদরের মেয়ের হাতে দুইজনই মৃত্যু নিশ্চিত করেন। আজীবনের জন্যে একরাতে একইসময়ে বাবা মা দুইজনই মেয়ের সারাজীবনের টাকার চাহিদা পূরণ করে দিয়ে যান।
এখানে দু'টি দিক লক্ষনীয়--প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা খরছের জন্যে 'পুলিশ কর্মকর্তা বাবা আদরের কন্যা' ঐশীকে দিতেন। অর্থাৎ প্রতিমাসে ১৫ লক্ষ টাকা শুধু, একমাত্র কন্যার জন্যে বরাদ্ধ ছিল! পরিবারের অন্যান্ন খরছ বাদ দিলেও তিনি নিশ্চয়ই এত টাকা বেতন পেতেন না। একদিকে অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তাদের অবৈধ টাকা আহরনের কুৎসীত রুপ উলঙ্গভাবে প্রকাশিত হয়েছে অন্যদিকে অবৈধ উপায় অর্জিত অতিরিক্ত টাকায় ছেলেমেয়ে নিশ্চিত বিপথে যায়, তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান রেখে গেলেন। 'ঐশী'র বাবার অবৈধ আয়ের পাপের টাকায় ঐশী একা পদস্থলিত হয়নি, সঙ্গে আরো কয়েক যুবকের পদস্থলনের কারন সৃষ্টি করেছে। ''সৎ সঙ্গে স্বর্গে বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশে"র উৎকৃষ্ট উদাহরণটি সত্যে পরিণতি পেয়েছে।
(২) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র উচ্চ বিত্তের সন্তানেরাই বেশীরভাগ লেখাপড়ার সুযোগ নিতে পারে। অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায়, টাকা দিয়ে সনদ ক্রয়ের একমাত্র "সরকার কতৃক স্বীকৃত শিক্ষালয়" হচ্ছে "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়" নামক উচ্চশিক্ষার এই মাধ্যমটি। কোটিপতি বাবা মায়ের কর্মব্যাস্ততার অজুহাতে ছেলে মেয়েদেরকে তাঁদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দানের ব্যার্থতা ঘুচাতে, তাঁদের চরিত্রগত ব্যাবসায়িক দৃষ্টিকোন থেকে, টাকার অংকে উচ্চশিক্ষার সনদ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরন কল্পে, উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করার মানষীকতায়, ব্যাঙের ছাতার ন্যায় গড়ে উঠা "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়'' গুলীর উৎপত্তি। তাঁদের টাকার অহংকারের 'বিশ্ববিদ্যালয়' প্রকারান্তরে ছেলে মেয়েদেরকে সর্বনাশের চুড়ান্ত পয্যায় নিয়ে যেতে অনেকাংশে সাহায্য করেছে। একদিকে শৈশবের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা "মা বাবার শিক্ষা" থেকে বঞ্চিত একাকিত্ব জীবন--অন্যদিকে স্নেহ, মায়া, মমতা, শাষন, আবদার বঞ্চিত হয়ে মানষীক পীড়নে বিকার গ্রস্ততা জীবন সম্পর্কে উদাসীন যুবকের মৃত্যুকামনার বহি:প্রকাশ আত্মহননের সহজ উপায় জঙ্গীদলে ভর্তি। সমাজহীন শহরে সঙ্গী সাথীহীন জীবন যাপনে উচ্চবিত্তের সোনার ছেলেমেয়েরা একসময়ে নিবৃত্তচারী ঘরকূনো জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠে। তাঁদের এই নিবৃত্তচারী সহজ সরল অথছ আড়ম্বর জীবন যাপনের সুযোগকে পুঁজি করে একশ্রেনীর স্বার্থ্যান্বেষী উগ্র ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী কুচক্রি মহল খুব সহজেই উদ্ভোদ্ধ করার প্রয়াস গ্রহন করে এবং সর্বোতভাবে সফলকাম হয়। উগ্র ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী মহলটি একদিকে তাঁদের প্রয়োজনীয় অজস্র টাকার চাহিদা পূরণ করে অন্যদিকে স্বেচ্ছায় জীবনদানের বিনিময়ে বেহেস্তের টিকেট বিক্রিটাও ভাল করে জমিয়ে নেয়।
(৩) কাল টাকা আহরন মানুষকে অন্ধকার পথে নিয়ে যায়--প্রকৃষ্ট প্রমান "আপন জুয়েলার্সে"র বখাটে ছেলের বখাটেপনা। পদস্থলিত পুত্রের পক্ষে অজস্র কালটাকার মালিক পিতার দম্ভোক্তি প্রচলিত সমাজ ব্যাবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের উৎকৃষ্ট উদাহরন হিসেবে সর্বমহলের বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত--আমি মনে করি। চারিত্রিক পদস্থলন, মাদকাসক্ত, বেলাল্লাপনা, উৎশৃংখল জীবনযাপন ইত্যাদি ঘটনাচক্রে যে কোন যুবক যুবতীকে আকৃষ্ট করতে পারে এবং সাময়িক বিপথেও নিয়ে যেতে পারে, অস্বীকার করি না। কিন্তু অনৈতিক বিপথ গ্রস্ততায় নিমজ্জিত প্রত্যেকের পিতামাতা সমাজ কাঠামোর লজ্জায় ঘৃনায় স্বেচ্ছায় লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকাই শ্রেয় ছিল, এতদিনকার বাংলাদেশের বিদ্যমান সামাজিক রীতিনীতি, ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় রীতিনীতির আওতাভূক্ত। বাংলাদেশের প্রচলিত সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন পূর্বক "সামাজের ধিকৃত, নিকৃষ্ট লজ্জাজনক পাপাচারকে উচ্চবিত্তের স্বাভাবিক শৌখিন যৌনাচার গন্য করে নিকৃষ্ট পুত্রের পক্ষে "কোটি কোটি কাল টাকার মালিক পাপিষ্ট পিতার দম্ভোক্তি" যে কোন পয্যায়ের বিচারে বাংলাদেশের আগামীদিনের গড়ে উঠা ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত সমাজ কাঠামোর প্রতি প্রচ্ছন্ন হুমকি--আমি মনে করি। ধর্মীয় রীতিনীতি, মানবিক নীতি নৈতিকতা, সামাজিক নিয়ম রীতি, রাষ্ট্রীয় আইন কাঠামো সর্ব বিষয়কে গুটিকয়েক উচ্চবিত্তের টাকার অহমিকার 'তুচ্ছচিন্তা' সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করনের দূরভিসন্ধি বিদ্যমান ১৬কোটি নিম্ন, নিম্নমধ্য, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তের মানব সমাজকে নিয়ে যেতে পারে অন্ধকারের অতল গব্বরে।
ইতিমধ্যে উচ্চবিত্তের শৌখিনতার মাদক "ইয়াবা" ''ফেন্সিডিল' 'নিম্নবিত্তের ১৬কোটি মানব সমাজে সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং সমাজে অস্থির পরিবেশ বিরাজমান। ফেন্সিডিল, ইয়াবা--স্কুল কলেজের ছাত্র, সর্বশ্রেনীর যুবক, সর্বস্তরের বৃদ্ধবণিতার মাঝে সমভাবে আদৃত হয়ে শহর, বন্দর গ্রামে সমভাবে ব্যাবহার হচ্ছে। দেশব্যাপি মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা বিবেচনায় একপ্রকার মহামারি আকার ধারন করেছে। ফলত: পারিবারিক সুখশান্তি, ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া, শ্রমিক কর্মচারীর কর্মতৎপরতা, গনমানুষের আন্দোলন--সংগ্রাম, রাজনীতিকের রাজনীতি, দেশ ও সমাজের উন্নয়ন--অগ্রগতিতে নেমে এসেছে স্থবিরতা, ঝিমিয়ে পড়েছে গোটা জাতি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে--অচিরেই গোটা জাতি ঘুমিয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে। উক্ত পারিপাশ্বিক ঝিমিয়ে পড়া অবস্থা থেকে জাগ্রত করার উপায় খুঁজে না পেলে, অচিরেই চিরতরে গোটা জাতি নিশ্চিত তলিয়ে যেতে বাধ্য হবে, অচিরেই ভেঙ্গে পড়বে ঐতিহ্যগত পারিবারিক, সামাজিক বন্ধন, ভেঙ্গে পড়বে রাষ্ট্রীয় কাঠামো। এতে কোন পক্ষের সন্দেহের অবকাশ আছে বলে আমি মনে করিনা।এক সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে বছরে মাদকের পিছনে সমূদয় খরছ এক পদ্মাসেতু নির্মানেরও অধিক।ইহাই প্রমান করার জন্যে যথেষ্ট বর্তমান সময়ে মাদকের ভয়াবহতা কত সার্বজনীন রুপ ধারন করেছে।
উচ্চবিত্তের চৌয্যবৃত্তির উল্লেখযোগ্য, সাড়াজাগানো এবং ব্যাতিক্রমি তিনটি ঘটনাক্রম একই দৃষ্টিকোন থেকে দেখার যথেষ্ট উপকরন বিদ্যমান রয়েছে। তিনটি ঘটনাই উচ্চবিত্তের সহজ উপায় অথবা চৌয্যবৃত্তির মাধ্যমে অবৈধ অর্থের অহরণ এবং উক্ত অর্থ অবাধ, যথেচ্ছ ব্যবহারের সুযোগ, প্রকাশ্য হস্তগত রাখার দৃষ্টান্ত গোটা জাতিকে স্তম্ভিত, বিস্মিত করেছে। অবৈধ অর্থ অর্জনের চতুর্মূখী পথ খোলা রেখে এবং উক্ত অর্জিত অবৈধ অর্থ যথেচ্ছ ব্যবহারের উপকরনের যোগান রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে লালন করে এবং যথাযথ বৈধকরনের পথ উম্মুক্ত রেখে সামাজিক বৈশম্য দুরীকরন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অস্থীরতা দূরীকরন, সর্বোপরি সামাজিক নীতি নৈতিকতার উন্নয়ন আদৌ সম্ভব নয়। শুধুমাত্র কঠোর আইন প্রনয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে উচ্চবিত্তের অহমিকায় সৃষ্ট দুস্তর পথ রুদ্ধ বা নিয়ন্ত্রন কোনমতেই সম্ভব নয়।
এর জন্য প্রয়োজন সম্পদ আহরনের বৈধ উৎসের যথাযথ জবাবদিহীতা নিশ্চিতকরন, অবৈধ উৎসের ছিদ্র অন্বেষন করে উৎস মূখে পাথর ঢালাই বাঁধ নির্মান প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং তদীয় দপ্তর, পরিদপ্তরে প্রয়োজনীয় জনবল নিশ্চিতকরন। সম্পদের সূষম বন্টনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রনয়ন, বৈধ সম্পদ অর্জনে রাষ্ট্রীয় পয্যায় উৎসাহ প্রদান। অবৈধ সম্পদের যথাযথ সামাজিক, রাষ্ট্রীয় পয্যায় ''তিরস্কার" প্রক্রিয়া চলমান রেখে শব্দটিকে 'প্রথায়' রুপান্তর। উক্ত "তিরস্কার প্রথা"র প্রক্রিয়ায় জাতিকে উদ্ভোদ্ধকরন, নিয়ন্তর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক গোষ্টি সর্বপয্যায়ে নীতি ও নৈতিকতার কঠোর অনুশীলন অব্যাহত রাখার ব্যাবস্থা গ্রহনের কোন বিকল্প নেই।
ঘুষ, সুদ, দুর্নীতি, মাদক, পতিতা বৃত্তি, জুয়া, মিথ্যা ইত্যাদি সামাজিক ও ধর্মীয় অনৈতিক বিষয় সমূহ সমাজে নিরুৎসাহীত করনের লক্ষে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে উক্ত বিষয় সমূহের কূফল সম্পর্কে নিয়মিত প্রচার প্রচারনা অব্যাহত রেখে এবং বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মোটিবেশন কায্যক্রম অব্যাহত চালু রাখাই হ'তে পারে নিয়ন্ত্রন ও উন্নতির চাবিকাঠি।
উল্লেখিত বিষয় সমূহে লক্ষ অর্জনে "ঐশী"র ডেথ রেফারেন্স শুনানীতে মহামান্য আদালতের দেয়া পয্যবেক্ষন হতে পারে অন্যতম এক 'মহৎ উৎস'।"ঐশী"র মৃত্যুদন্ড রহিত করে যাবজ্জীবন কারাভোগের পয্যবেক্ষনে মহামান্য আদালত বলেন---"আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা সহ বিভিন্ন দেশে মৃতুদন্ডকে নিরুৎসাহীত করা হয়েছে।আমাদের দেশে মৃত্যুদন্ড কমানোর কোন ''গাইড লাইন" নেই। এবং কি বিলুপ্ত করার পরিবেশও আসেনি। শিক্ষার হার বেড়েছে, জনসংখ্যাও বেড়েছে। অপরাধ প্রবনতাও বেড়েছে।এমত:বস্থায় "মৃত্যুদন্ড রহিতকরন" সম্ভব নয়।"
"মৃত্যুদন্ড একমাত্র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নয়"। এটি কায্যকর করলেই যে সমাজ থেকে অপরাধ দূর হবে তা নয়। কম সাজাও অনেক সময় সমাজ থেকে অপরাধ প্রবনতা কমাতে সুস্পষ্টভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বা সাহায্য করতে পারে।মৃত্যুদন্ড রহিত করতে সমাজের প্রতিটি স্তরে সূশাষন ও মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবনতারোধে সচেতেনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শুধু রাষ্ট্রের মধ্যে নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরে সূশাষন নিশ্চিত করতে হবে।"
আদালতের উল্লেখিত পয্যবেক্ষনের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এবং সদাশয় সরকারের বিধিবিধান প্রতিপালনের অঙ্গিকারপত্র স্বাক্ষর পূর্বক "ঐশী"কে উপরিক্তো বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির মূল ভিত্তিতে রুপান্তরের মহৎ লক্ষ পূরণকল্পে "বাংলাদেশপ্রেস পরিবার" সুযোগ পেলে সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং কায্যকরনে অঙ্গিকারাবদ্ধ হতে আগ্রহী। এই মর্মে উচ্চ আদালতের যেকোন সুনির্দিষ্ট শর্তযুক্ত অঙ্গিকার পালনের নিশ্চয়তা প্রদান পূর্বক মহামান্য আদালতের দেয়া আইনগত সমূদয় রীতিনীতির অভ্যন্তরে "বাংলাদেশপ্রেস পরিবার" যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত "ঐশী"কে সামাজিক অ-নৈতিকতা, মাদকাসক্তি, অবৈধ উপার্জনের কূফল নিরসনের "উৎস" বিবেচনায় "রাষ্ট্রীয় গাইডলাইন" সৃষ্টিতে সহযোগীতা দিতেও সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। "বাংলাদেশ প্রেস পরিবার" গনমানুষের কল্যানের লক্ষে সীমিত সামর্থের মধ্যে একাধিক সামাজিক সংগঠন--"নৃগোষ্টির নাগরিক, সামাজিক,শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থানের অধিকার রক্ষা, দেশের অভ্যন্তরে বিরাজমান সংখ্যা লুঘু সম্প্রদায়ের নাগরিক অধিকার,ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা ও সর্বস্তরে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিতকরন, মাদকমূক্ত সুস্থ সমাজ বিনির্মান, চিন্নমূল পথশিশুদেরর কল্যানে নানাবিদ কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে।" মহামান্য আদালত ও বাংলাদেশ সরকারের কৃপাদৃষ্টি "বাংলাদেশপ্রেস পরিবারে"র উক্ত কর্মসূচি প্রতিপালনে "ঐশী" হ'তে পারে সমগ্র পরিবারের কর্মস্পৃহার উৎস ; বাংলাদেশের মাদকাসক্ত যুবকযুবতীগন ফিরে পেতে পারে "ঐশী"র নির্মম কষাঘাতের অমোঘ বাণীতে---''জীবন, পরিবার, সমাজ রক্ষার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।
আশা করি দেশ ও জনগনের বৃহৎ স্বার্থে "বাংলাদেশ প্রেস পরিবার"কে উক্ত সুযোগ দানে রাষ্ট্র, সরকার, উচ্চ আদালত বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। উল্লেখ্য "বাংলাদেশ প্রেস পরিবার" দেশ ও জনগনের কল্যানে সর্বদা নিয়োজিত একটি স্বেচ্ছাসেবি প্রতিষ্ঠান, উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিধি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টিতে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক পয্যায়ে খোলা আবেদন জানাই।
পক্ষে----
রুহুল আমিন মজুমদার
বাংলাদেশ প্রেস পরিবার"
(রুহুল আমিন মজুমদার)
সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অবক্ষয়ের চলমান ঘটনায় উঁচু তলার ছেলে মেয়েদের প্রমানীত সম্পৃত্ততা বাংলাদেশের আপামর সচেতন জমগনকে ভাবিয়ে তুলেছে।(১) ঐশী কতৃক বাবা মা'কে হত্যায় যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তি। (২) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভারসিটিতে পড়ুয়া উচ্চবিত্তের ছেলেমেয়েরা উগ্র ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাস স্থাপন।(৩)আপন জুয়েলার্সের কাল টাকা অনৈতিক ব্যবহার এবং তৎকায্যের নিলজ্জ দম্ভোক্তি।
১) পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, মাতা স্বপ্না রহমানের একমাত্র কন্যা ঐশী রহমান।কথিত যে, ঐশীকে তাঁর বাবা পুলিশ অফিসার প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা, তাঁর ব্যাক্তিগত খরছের জন্যে দিতেন। পুলিশ বাবার অতিরিক্ত টাকার গুনে 'ঐশী' দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠে।অসংখ্য, অজস্র বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে উঠে।বন্ধুবান্ধবের সংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে তাঁর টাকার চাহিদাও বহুগুন বেড়ে যায়।ততদিনে ঐশী সকল ধরনের মাদকাসক্তে আসক্ত হয়ে পড়ে এবং সঙ্গীয় বন্ধুদেরও মাদকাসক্তের আসক্তিতে রুপান্তর করে।শেষবিকেলে একমাত্র মেয়ের চাহিদানুযায়ী টাকা সরবরাহ করার অপারগতায় আদরের মেয়ের হাতে দুইজনই মৃত্যু নিশ্চিত করেন। আজীবনের জন্যে একরাতে একইসময়ে বাবা মা দুইজনই মেয়ের সারাজীবনের টাকার চাহিদা পূরণ করে দিয়ে যান।
এখানে দু'টি দিক লক্ষনীয়--প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা খরছের জন্যে 'পুলিশ কর্মকর্তা বাবা আদরের কন্যা' ঐশীকে দিতেন। অর্থাৎ প্রতিমাসে ১৫ লক্ষ টাকা শুধু, একমাত্র কন্যার জন্যে বরাদ্ধ ছিল! পরিবারের অন্যান্ন খরছ বাদ দিলেও তিনি নিশ্চয়ই এত টাকা বেতন পেতেন না। একদিকে অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তাদের অবৈধ টাকা আহরনের কুৎসীত রুপ উলঙ্গভাবে প্রকাশিত হয়েছে অন্যদিকে অবৈধ উপায় অর্জিত অতিরিক্ত টাকায় ছেলেমেয়ে নিশ্চিত বিপথে যায়, তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান রেখে গেলেন। 'ঐশী'র বাবার অবৈধ আয়ের পাপের টাকায় ঐশী একা পদস্থলিত হয়নি, সঙ্গে আরো কয়েক যুবকের পদস্থলনের কারন সৃষ্টি করেছে। ''সৎ সঙ্গে স্বর্গে বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশে"র উৎকৃষ্ট উদাহরণটি সত্যে পরিণতি পেয়েছে।
(২) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র উচ্চ বিত্তের সন্তানেরাই বেশীরভাগ লেখাপড়ার সুযোগ নিতে পারে। অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায়, টাকা দিয়ে সনদ ক্রয়ের একমাত্র "সরকার কতৃক স্বীকৃত শিক্ষালয়" হচ্ছে "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়" নামক উচ্চশিক্ষার এই মাধ্যমটি। কোটিপতি বাবা মায়ের কর্মব্যাস্ততার অজুহাতে ছেলে মেয়েদেরকে তাঁদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দানের ব্যার্থতা ঘুচাতে, তাঁদের চরিত্রগত ব্যাবসায়িক দৃষ্টিকোন থেকে, টাকার অংকে উচ্চশিক্ষার সনদ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরন কল্পে, উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রন করার মানষীকতায়, ব্যাঙের ছাতার ন্যায় গড়ে উঠা "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়'' গুলীর উৎপত্তি। তাঁদের টাকার অহংকারের 'বিশ্ববিদ্যালয়' প্রকারান্তরে ছেলে মেয়েদেরকে সর্বনাশের চুড়ান্ত পয্যায় নিয়ে যেতে অনেকাংশে সাহায্য করেছে। একদিকে শৈশবের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা "মা বাবার শিক্ষা" থেকে বঞ্চিত একাকিত্ব জীবন--অন্যদিকে স্নেহ, মায়া, মমতা, শাষন, আবদার বঞ্চিত হয়ে মানষীক পীড়নে বিকার গ্রস্ততা জীবন সম্পর্কে উদাসীন যুবকের মৃত্যুকামনার বহি:প্রকাশ আত্মহননের সহজ উপায় জঙ্গীদলে ভর্তি। সমাজহীন শহরে সঙ্গী সাথীহীন জীবন যাপনে উচ্চবিত্তের সোনার ছেলেমেয়েরা একসময়ে নিবৃত্তচারী ঘরকূনো জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠে। তাঁদের এই নিবৃত্তচারী সহজ সরল অথছ আড়ম্বর জীবন যাপনের সুযোগকে পুঁজি করে একশ্রেনীর স্বার্থ্যান্বেষী উগ্র ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী কুচক্রি মহল খুব সহজেই উদ্ভোদ্ধ করার প্রয়াস গ্রহন করে এবং সর্বোতভাবে সফলকাম হয়। উগ্র ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী মহলটি একদিকে তাঁদের প্রয়োজনীয় অজস্র টাকার চাহিদা পূরণ করে অন্যদিকে স্বেচ্ছায় জীবনদানের বিনিময়ে বেহেস্তের টিকেট বিক্রিটাও ভাল করে জমিয়ে নেয়।
(৩) কাল টাকা আহরন মানুষকে অন্ধকার পথে নিয়ে যায়--প্রকৃষ্ট প্রমান "আপন জুয়েলার্সে"র বখাটে ছেলের বখাটেপনা। পদস্থলিত পুত্রের পক্ষে অজস্র কালটাকার মালিক পিতার দম্ভোক্তি প্রচলিত সমাজ ব্যাবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের উৎকৃষ্ট উদাহরন হিসেবে সর্বমহলের বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত--আমি মনে করি। চারিত্রিক পদস্থলন, মাদকাসক্ত, বেলাল্লাপনা, উৎশৃংখল জীবনযাপন ইত্যাদি ঘটনাচক্রে যে কোন যুবক যুবতীকে আকৃষ্ট করতে পারে এবং সাময়িক বিপথেও নিয়ে যেতে পারে, অস্বীকার করি না। কিন্তু অনৈতিক বিপথ গ্রস্ততায় নিমজ্জিত প্রত্যেকের পিতামাতা সমাজ কাঠামোর লজ্জায় ঘৃনায় স্বেচ্ছায় লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকাই শ্রেয় ছিল, এতদিনকার বাংলাদেশের বিদ্যমান সামাজিক রীতিনীতি, ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় রীতিনীতির আওতাভূক্ত। বাংলাদেশের প্রচলিত সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন পূর্বক "সামাজের ধিকৃত, নিকৃষ্ট লজ্জাজনক পাপাচারকে উচ্চবিত্তের স্বাভাবিক শৌখিন যৌনাচার গন্য করে নিকৃষ্ট পুত্রের পক্ষে "কোটি কোটি কাল টাকার মালিক পাপিষ্ট পিতার দম্ভোক্তি" যে কোন পয্যায়ের বিচারে বাংলাদেশের আগামীদিনের গড়ে উঠা ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত সমাজ কাঠামোর প্রতি প্রচ্ছন্ন হুমকি--আমি মনে করি। ধর্মীয় রীতিনীতি, মানবিক নীতি নৈতিকতা, সামাজিক নিয়ম রীতি, রাষ্ট্রীয় আইন কাঠামো সর্ব বিষয়কে গুটিকয়েক উচ্চবিত্তের টাকার অহমিকার 'তুচ্ছচিন্তা' সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করনের দূরভিসন্ধি বিদ্যমান ১৬কোটি নিম্ন, নিম্নমধ্য, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তের মানব সমাজকে নিয়ে যেতে পারে অন্ধকারের অতল গব্বরে।
ইতিমধ্যে উচ্চবিত্তের শৌখিনতার মাদক "ইয়াবা" ''ফেন্সিডিল' 'নিম্নবিত্তের ১৬কোটি মানব সমাজে সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং সমাজে অস্থির পরিবেশ বিরাজমান। ফেন্সিডিল, ইয়াবা--স্কুল কলেজের ছাত্র, সর্বশ্রেনীর যুবক, সর্বস্তরের বৃদ্ধবণিতার মাঝে সমভাবে আদৃত হয়ে শহর, বন্দর গ্রামে সমভাবে ব্যাবহার হচ্ছে। দেশব্যাপি মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা বিবেচনায় একপ্রকার মহামারি আকার ধারন করেছে। ফলত: পারিবারিক সুখশান্তি, ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া, শ্রমিক কর্মচারীর কর্মতৎপরতা, গনমানুষের আন্দোলন--সংগ্রাম, রাজনীতিকের রাজনীতি, দেশ ও সমাজের উন্নয়ন--অগ্রগতিতে নেমে এসেছে স্থবিরতা, ঝিমিয়ে পড়েছে গোটা জাতি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে--অচিরেই গোটা জাতি ঘুমিয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে। উক্ত পারিপাশ্বিক ঝিমিয়ে পড়া অবস্থা থেকে জাগ্রত করার উপায় খুঁজে না পেলে, অচিরেই চিরতরে গোটা জাতি নিশ্চিত তলিয়ে যেতে বাধ্য হবে, অচিরেই ভেঙ্গে পড়বে ঐতিহ্যগত পারিবারিক, সামাজিক বন্ধন, ভেঙ্গে পড়বে রাষ্ট্রীয় কাঠামো। এতে কোন পক্ষের সন্দেহের অবকাশ আছে বলে আমি মনে করিনা।এক সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে বছরে মাদকের পিছনে সমূদয় খরছ এক পদ্মাসেতু নির্মানেরও অধিক।ইহাই প্রমান করার জন্যে যথেষ্ট বর্তমান সময়ে মাদকের ভয়াবহতা কত সার্বজনীন রুপ ধারন করেছে।
উচ্চবিত্তের চৌয্যবৃত্তির উল্লেখযোগ্য, সাড়াজাগানো এবং ব্যাতিক্রমি তিনটি ঘটনাক্রম একই দৃষ্টিকোন থেকে দেখার যথেষ্ট উপকরন বিদ্যমান রয়েছে। তিনটি ঘটনাই উচ্চবিত্তের সহজ উপায় অথবা চৌয্যবৃত্তির মাধ্যমে অবৈধ অর্থের অহরণ এবং উক্ত অর্থ অবাধ, যথেচ্ছ ব্যবহারের সুযোগ, প্রকাশ্য হস্তগত রাখার দৃষ্টান্ত গোটা জাতিকে স্তম্ভিত, বিস্মিত করেছে। অবৈধ অর্থ অর্জনের চতুর্মূখী পথ খোলা রেখে এবং উক্ত অর্জিত অবৈধ অর্থ যথেচ্ছ ব্যবহারের উপকরনের যোগান রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে লালন করে এবং যথাযথ বৈধকরনের পথ উম্মুক্ত রেখে সামাজিক বৈশম্য দুরীকরন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অস্থীরতা দূরীকরন, সর্বোপরি সামাজিক নীতি নৈতিকতার উন্নয়ন আদৌ সম্ভব নয়। শুধুমাত্র কঠোর আইন প্রনয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে উচ্চবিত্তের অহমিকায় সৃষ্ট দুস্তর পথ রুদ্ধ বা নিয়ন্ত্রন কোনমতেই সম্ভব নয়।
এর জন্য প্রয়োজন সম্পদ আহরনের বৈধ উৎসের যথাযথ জবাবদিহীতা নিশ্চিতকরন, অবৈধ উৎসের ছিদ্র অন্বেষন করে উৎস মূখে পাথর ঢালাই বাঁধ নির্মান প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং তদীয় দপ্তর, পরিদপ্তরে প্রয়োজনীয় জনবল নিশ্চিতকরন। সম্পদের সূষম বন্টনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রনয়ন, বৈধ সম্পদ অর্জনে রাষ্ট্রীয় পয্যায় উৎসাহ প্রদান। অবৈধ সম্পদের যথাযথ সামাজিক, রাষ্ট্রীয় পয্যায় ''তিরস্কার" প্রক্রিয়া চলমান রেখে শব্দটিকে 'প্রথায়' রুপান্তর। উক্ত "তিরস্কার প্রথা"র প্রক্রিয়ায় জাতিকে উদ্ভোদ্ধকরন, নিয়ন্তর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক গোষ্টি সর্বপয্যায়ে নীতি ও নৈতিকতার কঠোর অনুশীলন অব্যাহত রাখার ব্যাবস্থা গ্রহনের কোন বিকল্প নেই।
ঘুষ, সুদ, দুর্নীতি, মাদক, পতিতা বৃত্তি, জুয়া, মিথ্যা ইত্যাদি সামাজিক ও ধর্মীয় অনৈতিক বিষয় সমূহ সমাজে নিরুৎসাহীত করনের লক্ষে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে উক্ত বিষয় সমূহের কূফল সম্পর্কে নিয়মিত প্রচার প্রচারনা অব্যাহত রেখে এবং বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মোটিবেশন কায্যক্রম অব্যাহত চালু রাখাই হ'তে পারে নিয়ন্ত্রন ও উন্নতির চাবিকাঠি।
উল্লেখিত বিষয় সমূহে লক্ষ অর্জনে "ঐশী"র ডেথ রেফারেন্স শুনানীতে মহামান্য আদালতের দেয়া পয্যবেক্ষন হতে পারে অন্যতম এক 'মহৎ উৎস'।"ঐশী"র মৃত্যুদন্ড রহিত করে যাবজ্জীবন কারাভোগের পয্যবেক্ষনে মহামান্য আদালত বলেন---"আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা সহ বিভিন্ন দেশে মৃতুদন্ডকে নিরুৎসাহীত করা হয়েছে।আমাদের দেশে মৃত্যুদন্ড কমানোর কোন ''গাইড লাইন" নেই। এবং কি বিলুপ্ত করার পরিবেশও আসেনি। শিক্ষার হার বেড়েছে, জনসংখ্যাও বেড়েছে। অপরাধ প্রবনতাও বেড়েছে।এমত:বস্থায় "মৃত্যুদন্ড রহিতকরন" সম্ভব নয়।"
"মৃত্যুদন্ড একমাত্র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নয়"। এটি কায্যকর করলেই যে সমাজ থেকে অপরাধ দূর হবে তা নয়। কম সাজাও অনেক সময় সমাজ থেকে অপরাধ প্রবনতা কমাতে সুস্পষ্টভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বা সাহায্য করতে পারে।মৃত্যুদন্ড রহিত করতে সমাজের প্রতিটি স্তরে সূশাষন ও মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবনতারোধে সচেতেনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শুধু রাষ্ট্রের মধ্যে নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরে সূশাষন নিশ্চিত করতে হবে।"
আদালতের উল্লেখিত পয্যবেক্ষনের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এবং সদাশয় সরকারের বিধিবিধান প্রতিপালনের অঙ্গিকারপত্র স্বাক্ষর পূর্বক "ঐশী"কে উপরিক্তো বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির মূল ভিত্তিতে রুপান্তরের মহৎ লক্ষ পূরণকল্পে "বাংলাদেশপ্রেস পরিবার" সুযোগ পেলে সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং কায্যকরনে অঙ্গিকারাবদ্ধ হতে আগ্রহী। এই মর্মে উচ্চ আদালতের যেকোন সুনির্দিষ্ট শর্তযুক্ত অঙ্গিকার পালনের নিশ্চয়তা প্রদান পূর্বক মহামান্য আদালতের দেয়া আইনগত সমূদয় রীতিনীতির অভ্যন্তরে "বাংলাদেশপ্রেস পরিবার" যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত "ঐশী"কে সামাজিক অ-নৈতিকতা, মাদকাসক্তি, অবৈধ উপার্জনের কূফল নিরসনের "উৎস" বিবেচনায় "রাষ্ট্রীয় গাইডলাইন" সৃষ্টিতে সহযোগীতা দিতেও সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। "বাংলাদেশ প্রেস পরিবার" গনমানুষের কল্যানের লক্ষে সীমিত সামর্থের মধ্যে একাধিক সামাজিক সংগঠন--"নৃগোষ্টির নাগরিক, সামাজিক,শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থানের অধিকার রক্ষা, দেশের অভ্যন্তরে বিরাজমান সংখ্যা লুঘু সম্প্রদায়ের নাগরিক অধিকার,ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা ও সর্বস্তরে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিতকরন, মাদকমূক্ত সুস্থ সমাজ বিনির্মান, চিন্নমূল পথশিশুদেরর কল্যানে নানাবিদ কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে।" মহামান্য আদালত ও বাংলাদেশ সরকারের কৃপাদৃষ্টি "বাংলাদেশপ্রেস পরিবারে"র উক্ত কর্মসূচি প্রতিপালনে "ঐশী" হ'তে পারে সমগ্র পরিবারের কর্মস্পৃহার উৎস ; বাংলাদেশের মাদকাসক্ত যুবকযুবতীগন ফিরে পেতে পারে "ঐশী"র নির্মম কষাঘাতের অমোঘ বাণীতে---''জীবন, পরিবার, সমাজ রক্ষার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।
আশা করি দেশ ও জনগনের বৃহৎ স্বার্থে "বাংলাদেশ প্রেস পরিবার"কে উক্ত সুযোগ দানে রাষ্ট্র, সরকার, উচ্চ আদালত বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। উল্লেখ্য "বাংলাদেশ প্রেস পরিবার" দেশ ও জনগনের কল্যানে সর্বদা নিয়োজিত একটি স্বেচ্ছাসেবি প্রতিষ্ঠান, উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিধি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টিতে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক পয্যায়ে খোলা আবেদন জানাই।
পক্ষে----
রুহুল আমিন মজুমদার
বাংলাদেশ প্রেস পরিবার"
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন