রুপপুর পারমাণবিক মেঘা প্রকল্প--আমলাদের হরিলুটের উর্বর ক্ষেত্র। ০______________________________________________ বর্তমান সরকারের সমুদ্র বিজয়, সীমান্তচুক্তি বাস্তবায়ন, পদ্মা সেতু নির্মান, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মানের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আরো একটি যুগান্তকারি সাফল্যের পালক যোগ হতে চলেছিল-আর তা হচ্ছে বর্তমান জাতির জনকের কন্যার সরকারের "পারমানবিক প্রকল্প বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহন ও অর্থ যোগান দেয়ার বাস্তব মুখী পদক্ষেপ গ্রহন"। পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী দেশ ও জনগনের ভবিষ্যত বিদ্যুৎ চাহিদা পূরনের নিমিত্তে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আবারও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সুচুতুর আমলারা। তাঁরা অন্যসব প্রকল্পের লুটপাটের ধারাবাহিকতায় রুপপুর পারমানবিক মেঘা প্রকল্পকেও ''আরাম আয়েসের স্বর্গ রাজ্য'' বানানোর উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে অপ-তৎপরতা শুরু করেছে। প্রাথমিক পয্যায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও মন্ত্রী বাহাদুর যদি "যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহন না করেন- ব্যাংক লুট, শেয়ারবাজার ষড়যন্ত্র, পদ্মাসেতু ষড়যন্ত্রের ন্যায় অচিরেই আরো একটি নেতিবাচক উদাহরনের সম্মুখীন হতে হবে বাংলাদেশ সরকার ও জনগনকে।" আমি নিন্মে ক্ষুদ্র পরিসরে উইকিপিডিয়া এবং পত্রপত্রিকার বিশ্লেষনধর্মী তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষনের যৎকিঞ্চিত চেষ্টা করেছি মাত্র।আশা করি সকলের বোধদয়ের জন্য নিম্নের আলচনাটি যথেষ্ট না হলেও কিঞ্চিত ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের পাবনায় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পাধীন একটি সরকারী উদ্যোগ। বিদ্যুতের চাহিদা সরবরাহ নিশ্চিত পরিকল্পনায় ১৯৬১ সালে পাবনায় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সহায়ক প্রকল্পের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, কর্মকর্তাদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণসহ অত্যাধুনিক বাসস্থান গড়ে তোলা হয়েছিল।[১] ১৯৭১ সালের পরেই অর্থের অভাবে পরিত্যক্ত হয় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প।[২] ইতিহাস সম্পাদনা:- ঈশ্বরদী থানার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পরিকল্পনা শুরু হয় ১৯৬১ সালে। [২] সেজন্য ২৬০ একর জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। ২০০৮ সালে তৎকালিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রকল্পটি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়া সরকারের সহায়তায় রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি ইউনিট স্থাপন করা হবে। প্রতিটি ইউনিট এক হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন।[১] চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া পারমাণবিক চুল্লির আজীবন জ্বালানি সরবরাহ করবে ও বর্জ্য বা স্পেন্ট ফুয়েল সেদেশে নিয়ে যাবে। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে দক্ষ জনবল তৈরিতেও রাশিয়া প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও দেশটি সহায়তা দেবে। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ৫ বছর মেয়াদী ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন কো-অপারেশন ইন দ্য ফিল্ড অব দ্য ইউজ অব নিউক্লিয়ার পাওয়ার ফর পিসফুল পারপাজেস শীর্ষক চুক্তি অনুসারে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।[৩] বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পাদনা:- রূপপুরের ২টি কেন্দ্র থেকে মোট ২,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে৷[১] নির্মান ব্যয় সম্পাদনা কেন্দ্র ২টি নির্মাণে ৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷[১] তথ্য সুত্র:উইকিপিডিয়া: ^ উল্লেখিত তথ্যসুত্র সকলের অবগতির জন্য উল্লেখ করা হল।এখানে আমার কোন আপত্তি বা অভিযোগের বিষয়াদি নেই।বিষয়টি হচ্ছে এই মেঘা প্রকল্পকে পুঁজি করে একশ্রেনীর আমলা লুটপাটের যে চকে সরকারকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন সে সম্পর্কে উদ্ভেগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলের গোচরে নিয়ে আসা। পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী-- রূপপুর প্রকল্পকে পুঁজি করে বিশাল সংখ্যক পদস্থ আমলা ইতিমধ্যে রাশিয়া ভ্রমণ সমাপ্ত করেছেন। এ প্রসঙ্গে আলোচনার আগে রূপপুর আণবিক প্রকল্প নিয়ে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কিছু কথা বলা দরকার। রূপপুর পাবনা জেলার ঈশ্ব^রদী উপজেলায় অবস্থিত। তবে এর প্রকৃত অবস্থান পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে রেলওয়ে নগর পাকশী থেকে কাছে। ষাটের দশকের প্রথম দিকে এই প্রকল্পের নাম শোনা যায়। সে সময় তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন ড. আই এইচ ওসমানী। তিনি বৈজ্ঞানিক। তবে কর্মজীবন শুরু করেন ভারতের এলিট সিভিল সার্ভিস আইসিএস হিসেবে। পাকিস্তানে পরবর্তীতে তারা 'আইসিএস' 'সিএসপি' নামে পরিচিত হয়।বাংলাদেশ স্বাধীনের পর সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আবশ্যকীয় হিসেবে প্রযোজ্য "বিসিএস" ক্যাডার সার্ভিস" হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ড. ওসমানী আণবিক শক্তি কমিশনের দায়িত্ব নেয়ার পর পাকিস্তানের আমলাদের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তার কর্মসূচিতে তারা পদে পদে বাধা দেন। এক পর্যায়ে তিনি বিরক্ত হয়ে প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে, ইঁৎবধঁপৎধঃরপ ঋড়ংংরষ-দের জন্য কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। এই রূপপুর প্রকল্পের তিনি উদ্যোক্তা ছিলেন। আমলাদের ষড়যন্ত্রের কারনে কিছু দিনের ভেতর তাকে সরে যেতে হয়। ইতোমধ্যে রূপপুর প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক কাজ অর্থাৎ জমি হুকুমদখল করা হয়। বিরাট পরিমাপের জমি। জমির ক্ষতিপূরণ দেয়াকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ দুর্নীতি ঘটে,যা তৎসময়ের পত্রপত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছিল। এতে তৎকালীন পাবনার ডাকসাইটে আমলা কর্তব্যরত আমলা "জেলা প্রশাসক " আসামি হয়ে জেলে যেতে হয়েছিল। আইয়ুব আমলে জেলা প্রশাসকরা অত্যন্ত শক্তিশালী এবং আইয়ুবের নিকট তারা নীল আঁখির বালক ছিল। অথচ এই জেলা প্রশাসকের দুর্নীতি এত জঘন্য এবং বিশাল যে-- সেই পাবনা জেলায় দায়রা জজের কোর্টে আসামি হিসেবে তার বিচার এবং কয়েক বছরের জেল হয়। রূপপুর প্রকল্পের এই লিগ্যাসি জেনেও বর্তমানের স্বাধীন দেশের আমলারা সেই পথেই আবার পা বাড়াচ্ছেন।(তথ্য সুত্র:-ভোরের কাগজ ১৯/৯/ ২০১৬) ১৯৬০ ইং সাল হ'তে ১৯৯৬ ইং সাল মাঝখানে অনেক সরকার দেশ পরিচালনায় অংশ নিয়েছে। উক্ত জনস্বার্থ্য সম্পর্কীত প্রকল্পটি সম্পর্কে কোন তথাকথিত দেশপ্রেমিক সরকার সমুহ আদৌ কোন পদক্ষেপ নেয়নি এবং কি পরিত্যাক্তও ঘোষনা করেনি। তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথম বার (১৯৯৬-০১) যখন দায়িত্ব গ্রহন করেন, তখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।দেশপ্রেমিক সরকার ছাড়া দেশ উন্নয়ন হয়না- তাঁরই জলন্ত দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পেলাম জাতির জনকের কন্যা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করেন ১৯৯৬ ইং সালে। জোট সরকার ২০০১ ইং সালে ক্ষমতায় এসে পুনরায় "রুপপুর প্রকল্প" হিমাগারে পাঠিয়ে দেয়।২০০৬ ইং সালের পর সেনাশাষিত তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে প্রকল্পটি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করে এবং রাশিয়ার সাথে কয়েক দফা যোগাযোগ স্থাপন করে।অ-নির্বাচিত সরকার বিধায় রাশিয়া তেমনভাবে এগিয়ে আসেনি। ২০০৮ ইং সালে জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেই অন্য সকল দেশ উন্নয়ন মুলক যুগপযোগী পদক্ষেপের পাশাপাশি "রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি" ভবিষ্যত বিদ্যুৎ চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখে দীর্ঘমেয়াদী "বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্র" হিসেবে একনেক সভায় সরকার নীতিগতভাবে গ্রহন করে। প্রকল্পটি চালু ও অর্থের সংস্থানে সরকারের বহুমুখী কর্মতৎপরাতার ফলে "মুক্তিযুদ্ধের বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া " সকল প্রকার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায়। (গত কয়েক দিন আগে খবর বেরিয়েছে যে, গত ৫ মাস এক ডজন সচিবসহ অন্তত পক্ষে একশ’ জন সরকারি কর্মকর্তা রাশিয়া ভ্রমণ করেছেন। হাজার হাজার ডলার ব্যয় করা হয়েছে রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প তহবিল থেকে। এমনকি অনেকে এই তহবিলের অর্থ দিয়ে অন্য মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাদেরও রাশিয়া পরিদর্শন করিয়েছেন।২০১৬ ইং এর ৩ মার্চ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ জন সরকারি প্রতিনিধি ইউরেশিয়ান দেশ সমুহ ভ্রমণ করেছেন। গত জুলাই মাসে দুইজন মন্ত্রী, সচিব ও সিনিয়র সচিবসহ বেশ কয়েকজন মস্কো গিয়েছেন। বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিবিষয়ক সচিব সিরাজুল হক খান তাঁর আমলা সুলভ গৎবাঁধা জবাবে বলেছেন যে-"যারা গিয়েছেন তারা সবাই রূপপুর আণবিক শক্তি প্রকল্পের কাজে জড়িত"। এখানে আমি বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে চাইযে- এই পর্যন্ত যারা ভ্রমণে গিয়েছিলেন তাদের ভেতর " মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও তার একান্ত সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, রেল সচিব, জাহাজ চলাচল সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক সচিব, শিক্ষা সচিব, আইএমইডি সচিব এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব। আমাদের কি বিশ^াস করতে হবে, এদের সবাইকে যেতে হয়েছে প্রকল্পের স্বার্থে।"তথ্যসুত্র:- ইত্তেফপাক, প্রথম আলো,ভোরের কাগজ)। জুন মাসের ২৮ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সচিব সিরাজুল হক খান প্যারিস গিয়েছিলেন দ্বিতীয় নিউক্লিয়ার প্রদশর্নীতে এবং তার আগে ২৩ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত জেনেভাতে ইউরোপীয় নিউক্লিয়ার গবেষণা সংস্থার সম্মেলনে। এই পুরো ব্যয় বহন করা হয়েছে রূপপুর প্রকল্প তহবিল থেকে। সচিব তো কয়েক দিন পর সিনিয়র সচিব হয়ে অন্য মন্ত্রণালয়ে যাবেন। তিনি কী অবদান রাখবেন এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে। তারপরও যদি প্রোটকল দাবি করে থাকে এ ধরনের সম্মেলনে একজন সচিবের যাওয়ার প্রয়োজন, তাহলে তার ব্যয়ভার বহন করবে মন্ত্রণালয়। রূপপুর প্রকল্প তহবিল কেন এই দায়িত্ব নেবে। বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৩ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন রাশিয়ার সঙ্গে রূপপুর আণবিক শক্তি প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য ৫০.৮৭ বিলিয়ন টাকার একটি চুক্তি সই করে। গত জুলাই মাসের ২২-২৮ তারিখে বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রতিনিধি দল মস্কো যান চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য। যার পরিমাণ মার্কিন ডলায় ১১.৩৬ বিলিয়ন। কয়েক ঘণ্টার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার অজুহাতে বিরাট দলটি ছয় দিন কাটিয়ে এলেন মস্কোতে। সম্মানিত পাঠক, লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, এটি প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রকল্প। আর এ দেশে কোনো প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে এবং নির্দিষ্ট ব্যয়ে শেষ হওয়ার উদাহরন চোখে পড়েনা। অতএব সময় ও ব্যয় দুটোই বাড়বে। অবশ্য আপাতত বলা হয়েছে যে, ২০২৩-২৪ সালের ভেতর প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এটা মেগা প্রকল্প। উদারভাবে শুরু হয়েছে আমলাদের ভ্রমণ। এরপর হয়তো এভাবে শুরু হবে প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের বিভিন্ন তৎপরতা যার উদ্দেশ্য হবে কিছু পয়সা হাতিয়ে নেয়া-- প্রকল্পের কাজ দীর্ঘায়িত করে ফি বছর বাজেট বরাদ্ধ বৃদ্ধি করে নতুন উদ্যমে লুটপাটের ক্ষেত্র বহাল রাখা। উপসংহারে শুধু একটি কথাই বলতে চাই-সমুদয় ঋনের সুদাসল বাংলাদেশের জনগনই পরিশোধ করতে হবে।আমলাদের ভ্রমন বিলাসের জন্য জনগন ঋনেরভাবে ন্যুজ হ'তে প্রস্তুত নয়।উন্নয়ন মুলক কাজ সঠিক তদারকির অভাবে একশ্রেনীর মধ্যস্বত্বভোগি এবং আমলাদের যোগসাজসে লুটপাটের খেসারত জনগন আর কতকাল বহন করবে। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালও কেবল কম নয়- অন্যকারও উপর দুষ চাপিয়ে বৈতরনী পার হওয়ার সময়ও শেষ হয়েছে অনেক আগেই।সুতারাং অযৌক্তিক ব্যায়ভার নিয়ন্ত্রন করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।এই দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার কোন পথ খোলা আছে বলে জনগন মনে করেনা।উপযুক্ত স্থানে উপযুক্ত লোক বসাতে নিশ্চয়ই ৭/৮ বছর সময় নেয়ার প্রয়োজন পড়েনা।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন