জামায়াতের নাম থেকে রাজনীতি সর্বত্রই শঠতা--নিষিদ্ধে বাঁধা কোথায়? ________________________________________________________________________ অনেকদিন থেকে কিছু লিখতে পারিনি নানাহ কারনে।অদ্য লিখতে বসে উপজিব্য বিষয় খুঁজতে গিয়ে মনের ভিতরে ভীতি এবং উৎকন্ঠার একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় বারবার উঁকি দিয়ে জানান দিচ্ছে-"আমিই লেখার আবশ্যকীয় উপাদান"।আমাকে নিয়ে লেখ এবং ফ্যাসিষ্ট রাজনীতি থেকে সরলপ্রান ইসলাম ধর্মের অনুসারি এবং বাংলদেশকে রক্ষায় যৎকিঞ্চিত অবদান রাখার চেষ্টায় ব্রতি হও। যথোপযুক্ত নির্দেশনায় লেখায় ব্রতি হয়ে জামায়াতের উত্থান পর্বের শঠতা, রাজনৈতিক কর্মকান্ডে শঠতা, বাংলাদেশকে অদ্য পয্যন্ত স্বীকার না করেও রাজনীতি বহাল রাখা, ছাত্র সংগঠনের উৎপত্তি ও বিকাশ ইত্যাদি অনেকগুলী বিষয় মনের আঙ্গীনায় একত্রে জড়ো হয়ে "ট্রাফিক জ্যাম"করে দিয়েছে ভাবনা গুলীকে। সবগুলী বিষয় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের জনমনে প্রতিনিয়ত দোলা দিয়ে যাচ্ছে-সময়মত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল সরকারে থেকেও কেন কোন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছেনা"? প্রশ্নটি ইতিমধ্যে সর্বস্তরে ঘুরপাক হয়ে উত্তরের সন্ধানে একাধিক গভেষনাগারে নিরিক্ষার বিষয়বস্তুতে পরিনত হয়েছে। 'জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ' পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে 'বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম' (নির্বাচন কমিশনের কারনে) এবং তাঁদের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে সরকার ধীরে চলনীতি গ্রহন করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের জনগনের উৎকন্টা বাড়িয়ে দিচ্ছেন।উচ্চ আদলতের সুনির্দিষ্ট রায় এবং জনগনের ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকা সত্বেও বিষয়টি সরকার তেমন জোরালোভাবে নিচ্ছেনা। ২০১৩ সালের ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ঐতিহাসিক রায় দেন আদালত। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে সর্বস্তরের মানুষের দাবি ছিল, অবিলম্বে নিষিদ্ধ হোক জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি। কিন্তু এখনো দলটির রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়নি। আমরা যারা ৭১ পরবর্তি স্কুল, কলেজ, ইউনিভারসিটিতে পড়ুয়া ছিলাম-তাঁরা দেখেছি শিবির নামক ফ্যসিষ্ট ছাত্র সংগঠনটির উত্থান এবং তাঁদের প্রলোভিত কর্ম তৎপরতা। স্বচক্ষে দেখা সেই সমস্ত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নাগরীক বেশী বেশী উৎকন্ঠিত সরকারের প্রলম্ভিত জামায়াত শিবির নিষিদ্ধের কর্মতৎপরতায়। আমরা ভীত হয়ে পড়ি যখন মনে পড়ে শিবিরের কর্মী সংগ্রহের অভিনব প্রতারনা মুলক কর্মতৎপরতার মাধ্যমে কোমলমতি শিশু কিশোরদের মেধা ও মননে এবং তাঁদের ধ্যান ধারনায় ধর্মীয় অনুভুতিকে কাজে লাগিয়ে কৌশলে মগজ ধোলাইয়ের প্রক্রিয়া।যে প্রক্রিয়ায় শিশুদের অভিভাবকেরাও বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা বা সুযোগ থাকেনা।কারন প্রশিক্ষিত শিবির ক্যাডারদের আচরনে অস্বাভাবিক নম্রতা শিশু কিশোরদের অভিভাবককেও তাৎক্ষনিক বিমুকদ্ধ করতে বেগ পেতে হয়না।চঞ্চল প্রকৃতির আদুরে ছেলেটি যখন মসজিদ মুখো হতে দেখা যায় তখন কোন অভিভাবকের ভাল না লেগে খারাপ লাগবে।ছেলটিকে যে ধর্মের নামে দিনে দিনে অ-ধর্মের দিকে টেনে নিচ্ছে ভদ্রবেশী মুখোশের অন্তরালে সঙ্গীয় ইবলিশ- সে বিবেচনা কয়জন অভিভাবকের মাথায় আসবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি হায়নাদের দোসর আলবদর-আলশামস ও রাজাকার বাহিনী তথা জমায়েতে ইসলামীর সকল অপকর্মের সহযোগী ছাত্র সংগঠনের নাম ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘ। পরে ১৯৭৫ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের হত্যার পর জেনারেল জিয়ার ক্ষমতা গ্রহন করে জামায়েতের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় দুষিত ছাত্র সংগঠন 'ছাত্র সংঘের' নাম পরিবর্তন করে 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির' নামে ১৯৭৭ সালে এই সংগঠনটি পুরুজ্জিবিত করে। ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ইসলামী ছাত্র সংঘ নামে সংগঠনটি বাঙ্গালী নিরীহ মা-বোনদের ধর্ষণ, সংখ্যালঘু তথা মুক্তি যুদ্ধে অংশগ্রহনকারীদের মা-বাবা, ভাইবোন সহ যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযুদ্ধাদের হত্যা, লুটপাট, ঘরবাড়ি জ্বালানো এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারীদের ঠিকানা ও নানা তথ্য দেয়া ও নানা স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে অসামান্য অবদান রেখেছিল। ৭১’এ বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে তৎকালীন এই ছাত্র সংঘঠনটির সক্রিয় অংশগ্রহন ছিলো অসামান্য অবদান।১৯৭১ সালের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে ১৯৭৭’এ নতুন নামে অর্থাৎ “ নতুন বোতলে পুরোন মদ” এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে মাঠে নামে নতুন উদ্দমে “ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির"।মানব সভ্যতাকে ভুলুন্ঠিত করার ক্ষেত্রে ফ্যাসিষ্ট রাজনৈতিক 'জামায়াতে ইসলামী দলের সহযোগী ছাত্র সংগঠনটির তুলনাই হতে পারেনা। যেমন গুরুদের কর্ম তেমনি তাঁদের শিষ্যদের বাধ্যবাধকতার অনুসরন। শিবিরের প্রাথমিক লক্ষ্য হল মাদ্রাসা এবং স্কুলের কোমলমতি শিশুদের মাঝে ইসলামের ভয়-ভিতি এবং স্বল্প মুল্যের উপঢৌকন যেমন-পোস্টার, স্টিকার,ক্যালেন্ডার,গল্পের বই, চকোলেট,চুইমগাম ইত্যাদি উপহার সামগ্রি হাতে দিয়ে আকৃষ্ট করা।তারপর ধীরে ধীরে শিবিরের মূলমন্ত্রের দিকে ধাবিত করে একজন দক্ষ শিবির কর্মীতে রুপান্তরিত করা। একজন পূর্নাঙ্গ শিবির কর্মী হতে হলে একজন ছাত্রকে পার করতে হয় কমপক্ষে চারটি ধাপ- সমর্থক, কর্মী, সাথী ও সদস্য। এর মাঝে প্রথম ধাপ অর্থাৎ সমর্থক হওয়া থেকে কর্মী করাকালীন সময়টিতে অভিজ্ঞ শিবির কর্মীরা ঐ ছাত্রটিকে রাখেন কড়া নজরদারিতে। এই ধাপটি সফল ভাবে পার করতে পারলে রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে স্বাবলম্বিতা ও নানা সাফল্যের স্বপ্নীল প্রলোভনে মোহিত করে ঐ ছাত্রটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে সদস্য করা পর্যন্ত আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়না। পরকালের ভয়ভীতি ভিতরে প্রবেশ করাতে পারলে দক্ষকর্মী গঠনে আর খুব একটা বেগ পেতে হয়না। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হওয়ার মাত্র পাঁচদিন আগে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল প্রবাসী মুজিবনগর সরকার। একই সঙ্গে চারটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হয়েছিল। অন্য তিনটি হলো, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম। ‘কোলাবরেটর একটিভিটিজ’ বা দালালি তৎপরতার দায়ে এসব সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাষনামলেও জামায়াত সহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ১৯৭৫-পরবর্তী সামরিক সরকারের আমলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তা উন্মুক্ত করে দেন এবং স্বাধীন দেশে রাজনীতি করার অধিকার পায় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত সহ অন্য নিষিদ্ধ দল গুলি। জাতি হিসেবে আমাদের চরম দুর্ভাগ্য, তথাকথিত স্বাধীনতার পক্ষের এবং গনতন্ত্রের ধারক বাহক বলে দাবিদার একাধিক রাজনৈতিক শক্তির সহযোগী হয়ে একসময় জামায়াত স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার ও হয়েছিল।সরকারের নীতি নির্ধারকতো বটেই তাঁদের দলের একাধিক নেতা মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছিল। তবে একাত্তরের এই ঘাতক-দালালদের প্রতি জনমনে ঘৃণা যে এতটুকু ম্লান হয়নি সেটা দেখতেও আমাদের বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। জনতার রায়েই তাদের পতন হয়। স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইতোমধ্যে দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ কয়েক জনের মৃত্য্যুদণ্ড এবং অনেকের যাবজীবন কারাদন্ড কার্যকর হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনালের একাধিক জামায়াত নেতার রায় প্রসংগে সংগঠন হিসেবে জামায়াতকে অপরাধী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে সাম্প্রতিক সময় জামায়াত-শিবির চরম সন্ত্রাস-নাশকতা চালিয়ে তাঁদের ফ্যাসিষ্ট মনোবৃত্তির পরিচয় অক্ষুন্ন রাখতে সামান্যতম দ্বিধা করেনি। ঠিক যেন তাঁরা ৭১ কেই আবার মনে করিয়ে দিল। উচ্চ আদালত বলেছেন, জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন। অভিজ্ঞজনদের অভিমত ট্রাইব্যুনাল এবং উচ্চ আদালতের রায়ের উপর ভিত্তি করেই সরকার নির্বাহী আদেশে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে পারে, কিন্তু করা হচ্ছে না। অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার করতে খসড়া আইন তৈরি করা হলেও দুই বছরেও সেই আইনের খসড়া ওঠেনি মন্ত্রিসভায়। সবকিছু মিলিয়ে জামায়াত নিষিদ্ধ করা ও জামায়াতের বিচার প্রক্রিয়া অনেকটাই এখন হিমাগারে-যা জনমনে নিদারুন হতাশাও ভীতির সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়ত। এই কথাটি স্পষ্টই বলা যায় -বাংলাদেশের রাজনীতি, সামাজিকতায়, জীবনাচারে ভদ্রতার আড়ালে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড লালনকারী একমাত্র রাজনৈতিক দল জামায়াত।দলটির নেতাকর্মীগন ধর্মের মুখোশের আড়ালে অধর্মের যতসব নেতিবাচক দিক প্রতিপালন করা সম্ভব সব টুকুই বিরাজমান রেখে জনগনের চোখে ধুলো দেয়ার নীতি অনেকটা বছরই বলবৎ রাখতে পেরেছিলেন।লক্ষ করলে স্পষ্টই প্রতিয়মান হয় -তাঁদের দাঁড়ি গোঁফ থেকে শুরু করে পোশাক আশাকের বেলায়ও প্রকৃত ইসলামী কোন নীতি আদর্শের আওতায় পড়েনা।তাঁদের আচার আচরনে মাত্রাতিরিক্ত ভক্তি শ্রদ্ধা কেবলই শঠতার পরাকাষ্টা বৈ অন্য কিছু নয়। এক্ষেত্রে ইবলিশ শয়তানও তাদের নিকট হার মেনে মনুষ্যালয় ছেড়ে সপ্তম আকাশে আশ্রয় গ্রহন করতে বাধ্য হয়েছে। '৭১ এর পুর্ববত্তি রাজনৈতিক অবস্থান এবং মুক্তিযুদ্ধে বর্বরতার ইতিহাস বাদ দিলেও '৭৫ পরবর্তী শিক্ষলয়ে মেধাবী ছাত্রদের হাত ও পায়ের রগ কাটা থেকে শুরু করে ২০১৪ ইং সাল পয্যন্ত সন্ত্রাস, নাশকতা, আগুন বোমা, ব্যাংক বীমায় আগুন ও লুটপাট, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করার চক্রান্ত, সরকারি গাছ কর্তন, জ্যান্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা সহ এমন কোন মানবতা বিরুধী কাজ নেই যা তাঁদের দ্বারা সংগঠিত হয়নি।সর্বশেষ বিভিন্ন নামে জঙ্গী তৎপরতায়ও শিবিরের সাবেক নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের জনমনে ভীতির সঞ্চার করছে। পরিশেষে বলা যায়,অতিভক্তি কখনই ভাল ফল ভয়ে আনেনি-চারিত্রিক শঠতা যাদের মধ্যে বিদ্যমান তাকলকরাই কেবল অতিভক্তি প্রদর্শন করে থাকে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হতে পারেনা বা হয়না। জামায়াতের জম্ম, উত্থান,বিকাশ, বর্তমান অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে গভেষনায় প্রবৃদ্ধ হলেই -যে কোন সচেতন রাজনৈতিক কর্মীর অনুধাবন করা আদৌ কঠিন কোন বিষয় হবে বলে আমি মনে করিনা।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন