আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্মিলীত অশুভশক্তি'র মহাজোটের আত্মপ্রকাশ উড়িয়ে দেয়া যায়না।

 
   পর্দার অন্তরালে হুশু হুশু, গুশু গুশু টের পাওয়া যাচ্ছে।আমরা জানি- অশুভশক্তি'র প্রেতাত্বাদের ফ্রন্ট লাইনে দুটি রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশের সমাজে '৭৫ পরবর্তি সময়ে উদ্ভব ঘটেছে। এই শক্তি'র উদ্ভব হতে পেরেছে '৭২ এ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির একটি অংশকে বিভ্রান্ত করে, 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগে'র অভ্যন্তর থেকে। '৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর তাঁরা চরম মূল্য দিয়ে অশুভশক্তির ষড়যন্ত্র অনুধাবন করতে পেরেছে।ততদিনে উত্থিত অশুভশক্তি জাসদকে কোনঠাসা করে দীর্ঘ একুশ বছর দাপটের সঙ্গে বাংলাদেশের সমাজে বিচরন করে, তাঁদের শক্তি সামর্থ বাড়িয়ে নিতে পেরেছে। যাদের হাত ধরে অশুভশক্তির উত্থান ঘটেছিল সেই 'জাসদ'কে বিভিন্ন প্রলোভনের যাতাকলে পিষ্ট করে একক শক্তিকে বহুধা বিভক্ত করে দিতে সক্ষম হয়। অশুভশক্তি তাঁদের কায্যসিদ্ধি করেছে শুধু  তাই নয়-- বাংলাদেশের সমাজে শক্তিধর দু'টি রাজনৈতিক শক্তি' প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছে।

    মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির একটানা নয়বছর দেশ শাসনের ফলে অশুভশক্তি'র সকল ফ্রন্ট রাজনীতির ঘুরপাকে ইতস্তত: বিচ্ছিন্ন,আগোছালো, অসংসংগঠিত, শক্তিহীন অবস্থায় কোনরকম সমাজে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।তাঁরা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে--'ডান, চরম ডানপন্থি দলগুলী একহাট্রা হওয়ার মরণপণ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আপাত:দৃষ্টে ধূর্ত এরশাদ এবং তারেকপন্থি বিএনপি'র মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য সিঙ্গাপুর বৈঠকে এরশাদকে রাষ্ট্রপতি সহ সমসংখ্যক মন্ত্রীত্ব দিয়ে একটা সমাঝোতা হয়েছিল।তখননও খালেদা জিয়া জেলখানায় যায়নি। এরশাদ বিশ্বাস করতে পারেননি খালেদা জিয়া'র জেল হলেও তাঁর দল তাঁকে মুক্ত করার মত, যুৎসই আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবেনা। ফলে বিএনপি' চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রনালয় সহ সমসংখ্যক মন্ত্রীত্বের শর্তে, একশ আসনে নির্বাচনী সমঝোতায়  উভয়পক্ষ প্রাথমিক ভাবে রাজী হয়েছিল।

   সিঙ্গাপুর বৈঠক শেষ করে উভয়দলের প্রতিনীধিগন দেশে পদার্পন করার আগে'ই 'খালেদা জিয়া' ৫ বছরের শাস্তি মাথায় নিয়ে জেলে প্রবেশ করেন। ধুর্ত এরশাদ সুযোগ বুঝে সিঙ্গাপুর সমঝোতা থেকে কিছুটা সরে এসে জিয়া পরিবারের মামলা প্রত্যাহার সহ অধিক সংখ্যক মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব দিয়ে জাতীয় পার্টি'র নেতৃত্বে সরকার গঠনের প্রকাশ্য প্রস্তাব দিয়ে বসেন। সঙ্গতকারনে বিএনপি তাঁর উক্তপ্রস্তাবে প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত: থাকে।উপায়ান্তর না দেখে এরশাদ পূণ:রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে হঠাৎ একদিন তাঁর কায্যালয়ে দেখা করেন। তিনি বাড়তি কয়েক মন্ত্রীত্ব ও কয়েকটি আসন ছাড়ের শর্তারোপ করে মহাজোট বহাল রেখে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। আওয়ামীলীগ সভানেত্রী "শেখ হাসিনা" এরশাদের হঠাৎ উপস্থীতি এবং আগাম দরকষাকষিতে তৎক্ষনাৎ কোন প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত না করে সময়ক্ষেপনের কৌশল গ্রহন করেন। তবে  মনে মনে কিছুটা যে ক্ষুব্দ হননি--তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

  আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ১৪দলীয় জোট বহাল রেখে আপাতত: এরশাদকে মাইনাস রেখে বিশদলীয় জোটের নির্বাচনে অংশগ্রহন করার হিসেব মাথায় রেখে মাঠ সাজানোর প্রতি মনযোগ প্রদান করেন।পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি আগে ভাগে স্বচ্ছ, ত্যাগী, নির্ভেজাল, গ্রহনযোগ্য ব্যাক্তিদের দলীয় মনোনয়ন প্রদানের উদ্দেশ্যে তাঁর নিজস্ব কৌশলে নির্বাচনী মাঠ সাজাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন।তিনি সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত রিপোর্ট এবং একাধিক কেন্দ্রীয় কমিটির তদন্ত দলের তথ্যানূযায়ী শতাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত এমপি, মন্ত্রীদের শনাক্ত করে তাঁদের তালিকা প্রনয়ন করেন। উক্ত নেতাদের আসনে নতুন মুখের মনোনয়ন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিদ্যমান সাংসদ ও মন্ত্রীদের উক্ত তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণ করে তাঁদের সম্পদের উৎস সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়ার জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশনা প্রদান করেন। উদ্দেশ্য একেবারেই পরিস্কার-- আগে ভাগে বিদ্রোহী প্রার্থীর তালিকা ছোট করার যুৎসই পদক্ষেপ।ইতিমধ্যে অনেকগুলী আসনে নতুন এবং গ্রহনযোগ্য ব্যাক্তিদের কর্মকান্ড পরিচালনার নির্দেশনাও তিনি দিয়েছেন। দলের শৃংখলা রক্ষার ক্ষেত্রে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করার নির্দেশনা দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা উপজেলা সফর সুচি প্রনয়ন করার তাগিদ দিয়েছেন। 

  ইত্যবসরে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের কোটা সংরক্ষনের কারনে তথাকথিত মেধাবী ছাত্রছাত্রীগন সরকারী নিয়োগে প্রবঞ্চিত হচ্ছেন মর্মে উক্ত কোটা প্রথা বাতিলের দাবীতে  ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলে।দৃশ্যত: উক্ত ছাত্র  আন্দোলন ক্রমশ: স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ন্ত্রনে চলে যায় এবং ব্যাপকতা পেতে শুরু করে। আন্দোলনের মঞ্চ হতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিধ্বংসী স্লোগান সহ মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কটুক্তিমূলক শ্লোগান বর্ষিত হতে থাকে।ইত্যবসরে তারেক জিয়া কতৃক উক্ত আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা মূলক এক অডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ দেশী বিদেশী পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের নিয়ন্ত্রন দেশবিরোধী অশভশক্তির হাতের লাটাইয়ে পরিণত হওয়ার আগেই ছাত্রদের সম্পুর্ণ দাবী মেনে নিয়ে সকল প্রকার কোটা প্রথা বাতিল করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হন।

    ছাত্রছাত্রীগন শিক্ষালয়ে প্রবেশ করার পর  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী' 'শেখ হাসিনা' জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগদান করার উদ্দেশ্যে বৃটেন সফরে যান। সেখানে প্রবাসি বাংলাদেশীদের এক সমাবেশে তারেক জিয়াকে দেশে ফেরৎ এনে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অঙ্গিকার ব্যাক্ত করেন। তাঁর এই অঙ্গিকার 'ধুর্ত এরশাদ'কে নতুন করে বাংলাদেশের সরকার গঠন করার স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দেয়।

   ইহা একান্ত সত্য যে--বিএনপি দলের নীতিনির্ধারক পয্যায় এমন কোন একক ইমেজ সম্পন্ন নেতা নেই, "জিয়া পরিবারের অনুপস্থীতিতে দল ও দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা একাধিক বিস্ফোরক মামলায় জড়িত নেতাকর্মী, ইতস্তত: বিক্ষিপ্ত--বিপুল সংখ্যক  সমর্থকদের একতাবদ্ধ করে জাতীয় নির্বাচনে কাংক্ষিত ফলাফল এনে দেয়ার মত সর্বজনগ্রাহ্য নেতা বিএনপি দলে অনুপস্থিত। এই সংকটময় মহুর্তে দলের হাল ধরার যোগ্যতাসম্পন্ন জিয়া পরিবারের একজনই আছেন প্রয়াত কোকোর স্ত্রী শারমিন। তিনি অবশ্য বিদূষী তবে সর্বজনগ্রাহ্য নহেন।তবে উচ্চশিক্ষিত এবং মার্জিত স্বভাবের, মামলা মোকদ্দমাহীন।

    তারেকের স্ত্রী জোবায়দাও অবশ্য উচ্চশিক্ষিত এবং মার্জিত স্বভাবের বিদূষী মহিলা।-কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে মামলা এবং নাগরিকত্ব নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তারেক জিয়া তাঁর সম্পূর্ণ পরিবারের বাংলাদেশী পাসপোর্ট বৃটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে জমা দিয়ে--'সেই দেশের নাগরিকত্ব গ্রহন করার জন্যে আবেদন করেছেন'। সুতারাং বিদেশী রাষ্ট্রের কোন নাগরিক বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য বা সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করার বিধান নেই।এক্ষেত্রেও  প্রয়াত কোকোর স্ত্রী শারমীন আক্তার অনেকটা এগিয়ে আছে।খালেদা জিয়া পারিবারীকভাবে নিজেও তাঁর কাছে অনেকটা দুর্বল বলে জানা গেছে। তাঁকে সরাসরি নেতৃত্বে আনতে না পারার ব্যাথাও তিনি লুকাননি। তিনি অকপটে  প্রকাশ্যই বলে দিয়েছেন দলের নেতাদের--ঢাকায় আন্দোলন গড়ে না উঠার কারন। আন্দোলন ব্যার্থতার দায় তিনি একতরফা তারেক এবং তাঁর পরিবারের উপরই বর্তিয়েছেন। তারেককে ইঙ্গিত করে তিনি বিরক্তির সূরে বলেন--তারেককে তো আপনারা চিনেন--"ও চায় ক্ষমতা, তাঁর বউও  চায় ক্ষমতা"।

    এদিকে  কোকোর স্ত্রীকে দলের নেতৃত্বে তারেক জিয়া কোনবস্থায় মেনে নেয়ার মানষিকতা রাখেন না'। এর বড় কারন হতে পারে--বিদেশে পাচারকৃত সম্পদের ভাগবাটোয়ারা"। উক্ত সম্পত্তির বিরোধ'কে কেন্দ্র করে কোকো'র মৃত্যুর ব্যাপারে তারেক জিয়ার উপর সন্দেহের তীর আগে থেকেই সবমহলের বিদ্যমান ছিল। উক্ত সন্দেহকে আরো শক্তভিতের উপর দাঁড় করেছে--"কোকোর মৃত্যুর দুইবছর দশমাস পর "কোকো'র স্ত্রী'র প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে হত্যা মামলা দায়ের এবং উক্ত মামলায় কোকোর স্ত্রী নিজে' সাক্ষী হয়ে'। কোকো'র  মালয়শিয়ান ব্যাবসায়ীক পার্টনার ও পারিবারীক বন্ধু মালয়শিয়ান মেজি:ষ্ট্রেট আদালতে তারেক জিয়াকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন"। কোকোর মৃত্যুর পর তারেক তাঁর ছোট ভাই কোকো'র লাশ "ভিসা জটিলতা'র কারন দেখিয়ে দেখতে  আসেননি। ব্যাপারটি জনমনে সন্দেহের উদ্রেক করেছে, তারেক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করেছে। যদিও এর আগে তারেক একাধিকবার মালয়শিয়া, দুবাই, সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশ "বৃটেনের রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত সাময়িক ভ্রমন ভিসায়" সফর করেছিলেন।

  এমনতর অবস্থায় বিএনপি দলের নেতৃত্ব নিয়ে ঘরে বাইরে মহাসংকটে আছে--'এতে কোন সন্দেহ নেই'। এমনিতে দলের তরুনতুর্কি অংশ 'তারেক জিয়া'র নেতৃত্বের প্রতি অনুগত।বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দেখা গেছে--"দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের মধ্যে বড় অংশটি খালেদা জিয়ার প্রতি অনুগত"।কিন্তু খালেদা জিয়ার মুক্তির কোন লক্ষন দেখা যাচ্ছে না। আবার বিদেশে অবস্থান করে অনেকগুলী মামলার দন্ড নিয়ে তারেক জিয়াকেও সিনিয়র নেতারা মেনে নিতে পারছেন না।

    সিনিয়র নেতারা প্রায় সকলেই একমত যে--'বিদেশী বন্ধুরাষ্ট্রের কূটনৈতিকগন তারেক জিয়া'র বিএনপি দলের নেতৃত্ব মেনে নিতে পারছেনা'। খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর বিষয়টি সবমহলে আরো পরিস্কার হয়ে ধরা দেয়। খালেদা জিয়ার জেলমুক্তি সংক্রান্ত বিষয় বিদেশী কূটনৈতিকদের অবহীতকরনের উদ্দেশ্যে ডাকা সভায় বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন প্রভাবশালী দেশের কূটনৈতিকগন। উক্ত সভায় একাধিক মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ''তারেক জিয়া'কে কেন দলের নেতা নির্বাচন করা হল--কূটনৈতিকদের এই সম্পর্কিত প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব, উপস্থিত বিএনপি নেতৃবৃন্দ দিতে পারেনি বলে পত্র পত্রিকার সংবাদে জানা গেছে।

  তাছাড়া তারেক জিয়া'র অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি, একাধিকবার বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যা প্রচেষ্টা, জঙ্গিবাদে মদদ দান, আগুন সন্ত্রাসে উস্কানী, বিদেশে অর্থপাচার সংক্রান্ত নেতিবাচক বিষয়গুলী অবাধ তথ্য প্রবাহের কারনে ব্যাপক ভাবে প্রচার পেয়েছে। তাঁর প্রতিটি নেতিবাচক কর্মকান্ড বুমেরাং হয়ে জিয়া পরিবার এবং বিএনপিকে অস্তিত্ব সংকটে নিপতীত করেছে।তারেকের এহেন কর্মকান্ড বাংলাদেশে সুদুর অতীত থেকে বিদ্যমান শক্তিশালী ডানপন্থি সাম্প্রদায়ীক রাজনীতি'র ধারাকে সংকটের মূখে ঠেলে দিয়েছে।এই একটি প্রশ্নে তদীয় পক্ষের প্রায় সকল শ্রেনী পেশার মানুষ একমত'। ইতিমধ্যে তারেকের উপর চরম বিরক্তি প্রকাশ করে বৃহৎ শক্তি 'হেফাজতে ইসলাম' এবং চরমোনাই পীর সাহেবের খেলাফতে মজলিশ সহ সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীশক্তির বৃহৎ অংশ ২০ দলীয় জোট ত্যাগ করে আলাদা অবস্থান গ্রহন করেছেন।

    এই মহুর্তে-কোকোর স্ত্রী'ই যে সম্ভাব্য বিকল্প--'এতে কোন পক্ষেরই সন্দেহ নেই'। এক্ষেত্রেও বড় বাঁধা তারেকে'র স্ত্রী জোবায়দা, খালেদার বক্তব্যেই স্পষ্ট। বিএনপি দলের অভিজ্ঞ নেতৃবৃন্দ মনে করেন কোকো'র স্ত্রী 'শারমিন'কে দলের নেতৃত্ব দিয়ে নির্বাচনের পুর্ব মূহুর্তে--অংশগ্রহন মূলক নির্বাচনের স্বার্থে খালেদা জিয়ার মুক্তি সংক্রান্ত বিষয় সরকারের সঙ্গে সমঝোতা সম্ভব হবে।বিএনপি নেতৃত্বের ধারনা--'বিদেশী কূটনৈতিক ও বুদ্ধিজীবি সমাজের চাপের মূখে এবং অবাধ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে সরকার শেষমহুর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রশ্নে নমনীয় অবস্থান নিতে বাধ্য হবে।

  তদ্রুপ যদি হয় তারেক জিয়া বিষয়টি যে মানবেনা--'এক কথায় সে তাঁর মনের ভাব ইতিমধ্যে লন্ডন বিএনপি'র এক সভায় পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন'।তিনি স্পষ্টই বলেছেন--"বিএনপি তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি। এই সম্পত্তির বড় অংশের ভাগিদার একমাত্র পুত্র সন্তান হিসেবে সে নিজে'ই।

    বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ডানপন্থি, চরম ডানপন্থি, চীনপন্থি বাম, চরম বামপন্থি, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি'র ধারাবাহিকতা রক্ষা করার ক্ষেত্রে আন্তজাতিক মহলের, কতিপয় শক্তিশালী দেশের প্রচেষ্টা স্বাধীনতার পর থেকে লক্ষ করা গেছে।তাঁদের দাপট এই সেদিনও বাঙ্গালী, বাংলাদেশ হাড়ে হাড়ে অনুভব করেছিল। যখন মানবতা বিরুধী অপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল কতিপয় দেশদ্রোহীর শাস্তি দিয়েছিল। আন্তজাতিক অপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে তখন তাঁদের স্বিয় মূখোস উম্মোচন করেছিল। তাছাড়া সুদখোর ইউনূসকে যখন তাঁর স্বিয়পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল তখন আন্তজাতিক শক্তিধর মহলটি বাংলাদেশ সরকারের উপর উলঙ্গ হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিল। জাতির জনকের কন্যার দৃড অবস্থানের কারনে উভয়ক্ষেত্রে চরম ভাবে পরাজিত হয়ে মহলটি সাময়িক লেজ গুটিয়ে নিয়েছে বটে, তবে চক্রান্ত যে থেমে নেই--তাঁর প্রকাশও ইতিমধ্যে লক্ষ করা গেছে।

   বাংলাদেশবিরুধী কতিপয় বিদেশী পেইড এজেন্ট প্রেতাত্বাদের পক্ষে রাজনৈতিক চদ্মাবরণের বাইরেও তৎপর রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই দেশের অভ্যন্তরের বুদ্ধিজীবি, সুশীল, বিভিন্ন শ্রেনী পেশায় নিয়োজিত নাগরিকবৃন্দ। তাঁরা নিজেদেরকে শুশীল সমাজের নাগরিক ভাবতে বেশী ভালবাসেন। তাঁরা সংখ্যায় অতিশয় নগন্য হলেও, তাঁদের নিয়ন্ত্রিত অধিকসংখ্যক মিডিয়ার কারনে প্রতিনিয়ত তাঁদের সরব উপস্থীতি টের পাওয়া যায়। তাঁরা সমাজের কতিপয় বাচাল তথাকথিত শিক্ষিত মানুষ। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি থামিয়ে দিতে এতবেশী মরিয়া যে-- "নিজেদের পরিবার, পরিজন, আত্মীয়স্বজন রেখে দীর্ঘদিন গুম হয়ে থাকতেও তাঁরা কুন্ঠিত হয়না।

    উল্লেখিত বাংলাদেশ বিরুধী বিদেশীশক্তি এবং দেশীয় প্রেতাত্বার দোসরগন বর্তমান সময়ে এসে প্রায় দিশেহারা। তাঁরা সমম্বিত শক্তি নিয়ে প্রধানশক্তি বিএনপি'র পতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে, এখন আবার নতুন খেলায় মেতে উঠেছেন। প্রধানশক্তি বিএনপি'র নেতৃত্ব শুন্যতার বিকল্প দ্বিতীয়শক্তি জাতীয় পার্টি এবং তাঁর নেতা ধুর্ত 'এরশাদ'কে সামনে আনার প্রকল্প হাতে নিয়ে ভিতরে ভিতরে অনেকদুর এগিয়ে গেছেন। ঠিক জিয়ার মৃত্যুর পর যেমনটি এরশাদকে মঞ্চে এনেছিলেন, ঠিক তেমনভাবে না হলেও একই ফর্মুলায় এবারও এরশাদকে সামনে আনতে সর্বমহল সচেষ্ট হয়ে উঠেছেন।

  এবার এরশাদের নেতৃত্বে জোট গঠন করার জন্যে এরশাদকে দৌঁড়ঝাপ দেয়ার প্রয়োজন হচ্ছেনা। মুক্তিযুদ্ধ বিরুধী অশুভচক্রের সকল শ্রেনী পেশার নেতৃবৃন্দ, তদীয় বুদ্ধিজীবি, সুশীল সমাজ, চরম ডান, চরম বাম এবং তাঁদের আন্তজাতিক মরুব্বি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ সর্বমহলে বিকল্প রাজনৈতিক দল ও যুৎসই নেতার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বিএনপি'র নীতিনির্ধারকগন দলটি'র প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বদ্ধমূল ধারনায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে--"জিয়া পরিবারহীন" বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একেবারে'ই অচল সিকি"। বিএনপি নেতৃত্বের এই অস্বাভাবিক দুর্বলতাকে আন্তজাতিক মহল যথাযথ মুল্যায়ন পূর্বক এরশাদের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ বিরোধী বৃহৎ জোট গড়ে তোলার প্রতি মনযোগ প্রদান করে।

  অশুভ দেশ বিরুধী শক্তি এরশাদকে সামনে আনার পেছনে দুটি উদ্দেশ্য কাজ করছে।তাঁরা মনে করে- সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী দল সমূহ বিএনপি'র চাইতে এরশাদের জাতীয় পার্টিকে'ই তাঁদের আদর্শের নিকটতম মনে করে বেশী।যে সমস্ত মৌলবাদী দল ও গোষ্টি ইতিমধ্যে বিএনপি'র নেতৃত্বে বিশ দলীয় জোট ছেড়ে গেছে, এরশাদের নেতৃত্বে বৃহত্তর জোট গঠন করার উদ্যোগে তাঁরাও সম্পৃত্ত হবে বলে আশা করে।

    এই সুবর্ণ সুযোগ এরশাদ হাতছাড়া করবেনই বা কেন?  তারেক জিয়ার অন্তজ্বালায় 'মা' খালেদাও এক্ষেত্রে দল ও সরকারের নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়ে এরশাদকে নেতা মেনে ভোটযুদ্ধে অংশগ্রহনের পক্ষে মত দিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সুত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে জিয়া পরিবার, তদীয় বুদ্ধিজীবিমহল, শুশীল শ্রেনীর প্রধান ব্যাক্তিদের চিন্তাচেতনায় একটি বিষয়ই কাজ করছে--"আর তা হচ্ছে জিয়া পরিবারের মামলা সমূহ প্রত্যাহার, শাস্তি মওকূপ, জিয়া পরিবারের সকল সদস্যের স্বাভাবিক রাজনীতির গ্যারান্টি"।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা