"চল যাই যুদ্ধে--মাদকের বিরুদ্ধে" বিষয়ভিত্তিক শ্লোগানের মধ্যে সর্বমহলে জনপ্রিয় এবং সময়োপযোগী শ্লোগান।
   
   
     মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত কয়েকদিন যাবৎ দেশব্যাপী পরিচালিত হচ্ছে আইনশৃংখলা বাহিনী কতৃক 'মাদক বিরোধী' সর্বাত্মক সাড়াষী অভিযান। অভিযানে অদ্য ২৪/০৫/২০১৮ইং পয্যন্ত দেশব্যাপী ৪২ জন মাদক বিক্রেতা'র আইনশৃংখলা বাহিনী'র সঙ্গে 'বন্দুক যুদ্ধে' প্রানহানী ঘটেছে।পত্র পত্রিকা সহ বিভিন্ন মিডিয়া এ সংক্রান্ত খবরা খবর গুরুত্ব সহকারে পরিবেশন করছে। বিশেষ করে বর্তমান তথ্য ও প্রযুক্তির যুগে সবচেয়ে শক্তিশালী সামাজিক মাধ্যম ফেইছবুক সহ অন্যান্ন মাধ্যম সমূহে ''মাদকের ভয়াবহতা, ব্যাবহারের নেতিবাচক দিক ব্যাপকভাবে প্রচার পাচ্ছে। সমসাময়িককালে সরকারের আর কোন জনসম্পৃত্ত পদক্ষেপ, এতবেশী জনপ্রিয়তা বা আলোচিত হতে দেখা যায়নি।

     সন্ত্রাসী, মাস্তান, চাঁদাবাজ, অস্ত্রধারীদের দৌরাত্ব মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে সমাজিক অস্থিরতা দেখা দেয়ার উপক্রম হলে, আইনশৃংখলা বাহিনী সময় সময় কথিত বন্দুক যুদ্ধের নাটক অনুষ্ঠানের রীতি অলিখিতভাবে বেশ কিছুকাল আগে থেকে ভিত্তি পেয়েছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় এইরুপ বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড সর্বপ্রথম ১৯৯১ ইং সালে বাংলাদেশের জনগন অবলোকন করেছিল। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের পর অনুষ্ঠিত 'জাতীয় সংসদ' নির্বাচনে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সংসদের সংখ্যাগরিষ্ট আসনে জয়ী হয়।বিএনপির নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠনের পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় বিচার বর্হিভূত অমানবিক হত্যাযজ্ঞ সর্বপ্রথম প্রচলন করে। এর পুর্বেও অবশ্য হত্যা, গুম, খুন ছিল, তবে তা রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা পেয়েছিল কি না--'তা জানা যায়না'।

    বেগম জিয়া বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী'র শপথ গ্রহন করার পর 'জাতীয় ও আন্তজাতিক' রীতিনীতির কোনপ্রকার তোয়াক্কা না করে দেশের সার্বিক শান্তিপূর্ণ অবস্থায় বিচার বর্হিভূত হত্যা অলিখিত অনুমোদন পায়। রীতি অনুযায়ী কোনপ্রকার আগাম ঘোষনা বা রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থা ঘোষনা ব্যাতিরেকে তিনি দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন করেন। চলমান সংসদ বা রাষ্ট্রপতির পুর্বানুমতি ব্যাতিরেকে, যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান নাথাকা সত্বেও সম্পুর্ণ বে-আইনীভাবে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী'র ক্ষমতাবলে, একক সিদ্ধান্তে দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন করার হুকুম জারী করেন। সরকারের প্রধান নির্বাহীর হুকুমে সেনাবাহিনী বে-আইনী অস্ত্র উদ্ধারের নামে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর সর্বপ্রথম তথাকথিত 'হার্ট এটাকে' মৃত্যুর  অভিনব এক 'আওয়ামী নিধন' অভিযান পরিচালনা করেন। শেষতক সংসদের বৃহৎ বিরুধী দল আওয়ামীলীগ এবং  দেশী-বিদেশী মানবতাবাদী সংগঠন সমূহের সম্মিলীত প্রতিবাদের মূখে অভিযান বন্ধ এবং সেনাবাহিনী ব্যারাকে ফেরৎ নিয়েছেন সত্য। ততদিনে ৩০হাজারের অধিক আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী'র জীবন কেড়ে নিয়েছিলেন।তম্মধ্যে অনেকের লাশ আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংখ্যাগরিষ্টতার জোরে সংসদে ইমডেমনিটি আইন পাশ করে উক্ত হত্যাযজ্ঞের দায় থেকে সেনাবাহিনীকে মুক্তি দিয়েছিল তখনকার ক্ষমতাসীন সরকার।  বিভিষীকাময় সেই দিনগুলী'র স্মৃতি আজও হত্যাযজ্ঞের শিকার প্রতিটি পরিবার'কে তাড়িয়ে বেড়ায়।

    সেই যে শুরু আজব্দি সময় সময় বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড থেমে থেমে স্বল্প পরিসরে,কখনও বা বৃহৎকারে চলছে।পরিচালিত হত্যাকান্ডগুলী কখনও কখনও অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে, কখনও কখনও  চাঁদাবাজ, মাস্তান, চিনতাইকারী'র বিরুদ্ধে অঘোষিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। জাতীয় ও আন্তজাতিকভাবে বিভিন্ন সংগঠন বিচার বর্হিভূত এইরুপ হত্যাকান্ডের নিয়মিত কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, হচ্ছে। বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন সমূহ বিভিন্ন সময়ে বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড সমূহের কঠোর সমালোচনা করে বিবৃতি দিচ্ছে।একই সংগঠন ক্ষমতায় গেলে আবার ভুলেও যাচ্ছে। চিরাচরিত নিয়মে আবার অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দল অতীত ভুলে প্রতিবাদ করছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে--'স্বল্প পরিসরে হোক বা বৃহৎকারে ঘোষনা করে'ই অভিযান পরিচালিত হোক--প্রায় অভিযান বাংলাদেশের জনগন কতৃক নন্দিত, নিন্দিত হয়েছে, আগামীতেও হয়তো বা হবে।

  কিন্তু সরকারের এবারকার মাদকের বিরুদ্ধে ঘোষিত সাড়াষি অভিযানের বিষয়টির প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। আইনশৃংখলা বাহিনী'র সাড়াষি অভিযানের ক্ষেত্রেও বিষয়টি কিছুটা নতুনত্বের দাবীদার। সার্বিক গুরুত্ব বিবেচনায় সরকারের একটি অধিদপ্তর প্রায় ১২০০ জনবল নিয়ে দেশব্যাপী সার্বক্ষনিক মাদক বিরোধী অভিযানে লিপ্ত রয়েছে। তদুপোরী সকল আইন-শৃংখলা বাহিনী'র নিয়মিত তদারকিতে বিষয়টি'র গুরুত্ব সকল বাহিনীর নিকট সরকারী নির্দেশে অত্যাধিক গুরুত্ববহ। পুলিশ বাহিনী, কোষ্ট গার্ড, বিজিপি, র্যাবের অভিযানে নিয়মিত মাদক দ্রব্য উদ্ধার হচ্ছে, আটক ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে যথারীতি মামলা হচ্ছে। এক হিসেবে দেখা গেছে--শুধুমাত্র র্যাবের করা মাদক সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা গত ১০ বছরে ৭০ হাজারের অধিক। এতদসত্বেও বর্তমান সময়ে এসে 'মরণ নেশা মাদক' বিশেষ করে ইয়াবা'র আগ্রাসন বাংলাদেশের সমাজে মহামারী আকার ধারন করেছে। সরকারের সাড়াষি অভিযানের নির্বাচিত 'মাদক নির্মুলের বিষয়টি পরিবারকেন্দ্রিক হলেও জনসম্পৃত্ততা এবং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্টতার সুদুরপ্রসারী গুরুত্ব রয়েছে।  যদিও  রাষ্ট্রীয় ক্ষতির ক্ষেত্রে সূদুরপ্রসারী হলেও সর্বজনবিদীত নয় এবং কি বিষয়টি রাষ্ট্রীয় ক্ষতি সর্বজন অ-বোধগম্য, জটিল। কিন্তু পারিবারিক অশান্তি এবং সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারে'ই হালনাগাদ এবং সর্বজনবিদীত।

       গত ৩রা মে ২০১৮ ইং র্য্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতায় মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর নির্দেশ প্রদান করেন। মাদকের ভয়াবহতার উল্লেখ করে তিনি বলেন-- "মাদক সেবীরা তাঁদের পরিবারের বিপয্যয় ডেকে আনছে। ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া ছেড়ে মাদকাসক্ত হয়ে প্রজম্ম ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে সারা জাতী ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলে নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনি মাদকের বিরুদ্ধেও সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্যে তিনি সকলের প্রতি আব্বান জানান।

    মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর সকলপ্রকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১৪ই মে আইনশৃংখলা বাহিনী মাঠে নেমে পড়ে। গত ১৮/৫/২০১৮ ইং তারিখ রোববার  র্যাবের উদ্যোগে "চল যাই যুদ্ধে--মাদকের বিরুদ্ধে" শিরোনাম সংবলীত 'লিপলেট' বিলির মাধ্যমে মাদকে'র বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং তাঁদের সাড়াষি অভিযান শুরু করে।এর পুর্বে শুধুমাত্র সরকারের বিশেষায়ীত বাহিনী র্যাব ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে প্রায় তিন হাজার মাদক বিক্রেতাকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে জেলে প্রেরণ করেছেন বলে র্যাব প্রধান জানিয়েছেন। গত ১৮/০৫/২০১৮ ইং থেকে অদ্য ২৩/০৫/২০১৮ ইং শেষ খবর পাওয়া পয্যন্ত সর্বমোট ৪২জন মাদক বিক্রেতা আইনশৃংখলা বাহিনী'র সাড়াষি অভিযানকালে এনকাউন্টারে নিহত এবং ৬জন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। র্যাব প্রধান বেনজির আহাম্মদ একটি বাস্তব সত্য উপলব্দি করতে পেরেছেন, একারনে তিনি বর্তমান সময়ে সর্বসাধারনের শ্রদ্ধার শিখরে অবস্থান করছেন--'আমি মনে করি।' তিনি বলেন--"মাদক সকল প্রকার অপরাধের মা"। তিনি দেশবাসীকে মাদক নির্মূলে চলমান অভিযান'কে সর্বাত্মক সহযোগীতা প্রদান করার আহব্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি জনগনের সার্বিক সহযোগীতায় সমাজ থেকে মাদক নির্মূলের প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।

      মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব জামাল উদ্দিন আহাম্মদ জানান দেশের ৭০লক্ষ লোক বর্তমানে মাদকাসক্ত। ভুক্তভোগী সহ বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার মতে--'এই সংখ্যা এইমহুর্তে কোটি ছাড়িয়ে গেছে। সম্প্রতি  মিয়ানমার--বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পয্যায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ৪৯টি ইয়াবা কারখানা চিহ্নিত করে একটি তালিকা মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। অতিসত্বর কারখানাগুলী বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যেও মিয়ানমার সরকারের প্রতি বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয় পয্যায় আহব্বান জানিয়েছে।

   একটি বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে-'আইনশৃংখলা বাহিনী সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাছাই বাছাই পুর্বক ৫০০ মাদক ব্যাবসায়ী'র তালিকা হালনাগাদ করেছে। উক্ত তালিকা সামনে রেখে আইনশৃংখলা বাহিনী তাঁদের সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনা করছে। তালিকায় বর্তমান এবং সাবেক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান সহ আওয়ামীলীগ, বিএনপি'র একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাও রয়েছে।

    মোটকথা হচ্ছে--'সরকার এমন এক সময় মাদকের বিরুদ্ধে সাড়াষি অভিযানের নির্দেশ দিয়েছে, যখন সারা জাতী মাদকের ভয়াবহতায় আচ্ছন্ন, সর্বস্তরের জনগন উদ্ভিগ্ন হয়ে পড়েছে'। মাদকের সহজলভ্যতা বিশেষ করে ইয়াবা'র সহজলভ্যতা ও আগ্রাসনে ছাত্র/ছাত্রী, যুবক/যুবতী তাঁদের সৃজনশীল শক্তি হারিয়ে ইতিমধ্যে ঝিঁমিয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিটি পরিবারের একাধিক ছেলেমেয়ে কমবেশী 'ইয়াবা' নামক মাদকাসক্তে আসক্ত হয়ে পারিবারীক  সুখ-শান্তি বিনষ্টের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতে কখনও আর কোন মাদকদ্রব্য গ্রামগঞ্জ, পাড়া মহল্লায় ব্যাপক আকারে ছড়াতে দেখা যায়নি। কোন মাদকই সর্বস্তরে এতবেশী জনগুষ্যিকে আকৃষ্ট করতে পারেনি, জনপ্রিয়তাও অর্জন করতে পারেনি। মদ, গাঁজা, কোকেন, হিরোইন হাল আমলের ফেন্সিডিল সীমিত ব্যবহারকারী, বিপনণকারীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু 'ইয়াবা নামক মরণ নেশা'টি বিগত ৫/৬ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বত্র সর্বজন ব্যাবহায্য অকল্পনীয় আবেদনময়ী মরণ নেশায় রুপ নিয়েছে।

     এক ইয়াবাসক্তের ভাষ্যমতে--'ইয়াবাসক্ত বলতে আসলে কিছুনা, এতে যা আছে মুলত: সম্পূর্ণ মায়াসক্ত'। কেউ হয়তো শৌখিনতাবসত: এক দিয়ে শুরু করে, প্রতিনিয়ত: চাহিদা বেড়ে পরবর্তিতে মায়াসক্ত অতৃপ্তকারে পৌঁছায়। অতৃপ্তকারে পৌঁছাতে কিন্তু খুব বেশীদিন সময়ের প্রয়োজন হয়না, প্রথম প্রথম নগদ  টকার জোগান থাকলে'ই হল। আর এই নেশার মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে, কেউ সম্পূর্ণ মায়া ত্যাগ করতে পেরেছে, এমন লোক খুঁজে পাওয়া যায়না। অন্যদিকে দেখা যায়--'যে আজ 'ইয়াবা' ক্রেতা, আগামীকাল সে-ব্যাক্তি'ই বিক্রেতা।বিস্ময়কর ব্যাপারটি হচ্ছে উঠতি বয়সের ছেলেরা যতনা ইয়াবার প্রতি আসক্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা তাঁর দ্বিগুন বেশী আসক্ত হয়ে পড়েছে।

   একারনে'ই বলা যায়--"ইয়াবায় নেশা বা অভ্যেস বলতে কিছুই নেই, কিন্তু মায়া'র জাল বিস্তৃত আছে"। এই মায়াজাল প্রতিনিয়ত  ব্যাক্তি'কে টানতে  থাকে। ফলে এক সময় এসে পরিবার পরিজন, নিকটতম বন্ধু বান্ধব বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যাক্তি একাকিত্বে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পরিবার, পরিজন তখন তাঁর নিকট হয়ে উঠে বিরক্তিকর এক একটা আপদ। সহসাই সংসারে নেমে আসে বিপয্যয়। 'মায়ার' টাকা জোগান দিতে দিতে এক সময়ে এসে ব্যাক্তির পরিবার সকল সম্পদ হারিয়ে পথের ভিখারীতে পরিণত হয়।তখন আর কোন সমাজবিরুধী কাজই তাঁর ভিতরে অপরাধবোধ জাগ্রত করেনা।  মান সম্মান, জেল জরিমানা--তাঁর নিকট কোনপ্রকার অপমানবোধ জাগায় না। বোধশক্তি হারিয়ে সে হয়ে উঠে সমাজে, পরিবারে অপাংক্তেয়, অর্ধপাগল। উল্লেখিত ভাষ্যটি অনুধাবন করা গেলে বুঝতে কষ্ট হয়না--"মরণ নেশাটি ব্যাক্তি'র  জ্যান্ত মৃত্যুর কারন শুধু নয়, সংশ্লিষ্ট পরিবারেরও অধ:পতনের মুল কারন ডেকে আনে।

  আপনার সঙ্গি ইয়াবাসক্ত কিনা জানার কিছু সহজ উপায় আছে।প্রথমত তাঁর খাওয়া দাওয়ার রুচিবোধ কমে যাবে।ঘুম একেবারেই কমে যাবে,কাজ কর্মের প্রতি আগ্রহ কমে যাবে।মেজাজ সব সময় খিট খিটে থাকবে, প্রয়োজনীয় আলোচনায় অন্যমনস্ক থাকবে।স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়বে, অযথা কথা বলবে। মোটামোটি এই বিষয়গুলীই যথেষ্ট আপনার সঙ্গি ইয়াবাসক্ত কিনা আপনাকে বুঝতে। অন্যদিকে--উল্লেখিত বিষয়াবলীর বিপরীত আচরণ দেখা গেলে বুঝতে হবে আপনার সঙ্গি ফেন্সিডিলে আসক্ত হয়ে পড়েছে।অর্থাৎ পূর্বের স্বাভাবীক আচরণে পার্থক্য দেখা গেলেই আপনাকে তাঁর প্রতি লক্ষ রাখতে হবে--সে কার সঙ্গে মিশে,কোথায় যায়।

    'ইয়াবা' নামক মরণ নেশা মাদকটি'র উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ সংলগ্ন মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা। মিয়ানমারের গভী'র জঙ্গলে গড়ে উঠা প্রায় ৫০ এর অধিক অবৈধ ইয়াবা কারখানা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করা হয়েছে। উক্ত কারখানা সমূহে উৎপাদিত 'ইয়াবার চালান' টেকনাফের নাফ নদী পার হয়ে অনায়াসে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে আইনশৃংখলা বাহিনী সুত্রে জানা গেছে। মাদকটি বহন, বাজারজাতকরণ, ভোক্তা পায্যায় পৌঁছানো সহজ বিধায় স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের সর্বত্র এই 'মরণ নেশা' ছড়িয়ে পড়েছে।

   লক্ষনীয় বিষয়টি হচ্ছে--'আইনশৃংখলা বাহিনী'র যে কোন সমাজ বিরুধী ইস্যুতে চালানো অভিযান সাধারনে কমবেশী আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে, নিন্দিত--নন্দিত হয়েছে। ইতিপূর্বে সরকারের জঙ্গিবিরুধী অভিযান আপামর জনগনের বিপুল সমর্থন পেলেও তথাকথিত সুশীল সমাজে কমবেশী বিতর্কের সৃষ্ট্রি হতে দেখা গেছে।কিন্তু বর্তমান সময়ে সরকারের নির্দেশে আইনশৃংখলা বাহিনীর চলমান সর্বাত্মক 'মাদক বিরুধী সাড়াষি' অভি্যান, গুটি কয়েক 'সুশীল তথাকথিত ব্যাক্তি বিশেষের' সমালোচনা ব্যাতিরেকে আপামর জনগনের অকুন্ঠ সমর্থন, সর্বাত্মক সহযোগীতা পাচ্ছে। বন্দুক যুদ্ধে এক একজন মাদক সম্রাটের প্রানহানী ঘটছে--সামাজিক মাধ্যমে নারী পূরুষ সকলে'ই উল্লাস প্রকাশ করছে। সংশ্লিষ্ট আইনশৃংলা বাহিনী'কে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। ভাবখানা যেন এমন--'হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে হলেও জনগন মাদকের ভয়াবহতা থেকে আপাত:দৃষ্টে মুক্তি চায়।এমনটি আর কখনও সরকারের কোন সমাজবিরুধী কর্মকান্ড নিস্তেজ করার অভিযানে চোখে পড়েনি।

   ইহা সত্য যে--'আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃক বিচার বর্হিভূত হত্যা সভ্য সমাজে গ্রহনযোগ্য নয়, মানবতা বিরোধী অপরাধও বটে'। কিন্তু মাদকের ভয়াবহতার বিচারে বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবার কমবেশী উদ্ভিগ্ন বিধায় উক্ত বে-আইনী বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ডকেও স্বাগত: জানাতে বাংলাদেশের জনগন কুণ্ঠাবোধ করছেনা। ইতিপূর্বে দেশবিরোধী সরকারের আর কোন বিষয়ে পরিচালিত অভিযান জনগন কতৃক এত বেশী অভিনন্দিত হতে দেখা যায়নি। এই থেকেই প্রমানীত হয়--মাদক বিরুধী চলমান সাড়াষি অভিযান সরকারের সময়োপযোগী একটি জনপ্রিয় অভিযান। 'মাদক' নির্মূলে সরকারের জনসচেতনতা সংক্রান্ত নির্বাচিত শ্লোগান--"চল যাই যুদ্ধে--মাদকের বিরুদ্ধে" এযাবৎকাল সরকারের নির্ধারীত বিষয়ভিত্তিক শ্লোগানের মধ্যে "অন্যতম, জনপ্রিয় এবং শ্রেষ্ঠ শ্লোগান" হিসেবে সর্বস্তরের জনগনের মধ্যে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে এবং হচ্ছে।
 
 
 
   

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা