এম, কে আনোয়ার, মাহবুবর রহমান গং এর  প্রলাপ "স্বজ্ঞানে দেশও জাতীর অনিষ্টকারী নেতার  মৃত্যুপথে অবচেতন মনের অনুশোচনা।
(রুহুল আমিন মজুমদার)

      জনাব এম,কে আনোয়ার, মাহবুব রহমান, তরিকুল ইসলাম গং নি:সন্দেহে উচ্চশিক্ষিত, মেধাবী, আপাত:দৃষ্টে ব্যাক্তি জীবনে সবাই সফল মানুষ ও সার্থক জীবনের অধিকারী। বিএনপি'র নেতৃত্বে চার দলীয় জোট সরকারের ঘরে বাইরে লুটপাটের তান্ডব লীলার হরিহর শাষনামলে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রানালয়ের দায়িত্বে থাকাবস্থায় তাঁদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক তেমন কোন মন্তব্য কেউ করেনি বা করতে পারেনি। কিন্তু বিএনপি'র উচ্চ শিক্ষিত মহলটি স্বইচ্ছায়, স্বজ্ঞানে  দেশ ও জনগনের চিরস্থায়ী ক্ষতি করেছিলেন বা ক্ষতির উপসর্গ ছিলেন প্রতিনিয়ত তাঁদের মধ্যে কেউ না কেউ তাঁরই বহি:প্রকাশ ঘটিয়ে চলেছেন। উল্লেখিত ব্যাক্তিবর্গ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের অনুসরনীয়,অনুকরনীয় ছিল সন্দেহ নেই। সময়ের ব্যবধানে বয়সের ভারে ন্যুজ্ব, মৃত্যু পথযাত্রী দেশ ও জনগনের অনিষ্টকারি ব্যাক্তিবর্গ অবচেতন মনে তাঁদের অনুসারীদের বার্তা পৌছে দেয়ার চেষ্টা করছেন যে-- "তাঁরা স্বার্থে অন্ধ হয়ে ভুল রাজনীতি করেছেন।প্রজম্ম যেন তাঁদের দেখানো ভুলপথ পরিত্যাগ করে জনগনের কল্যানে বাস্তবতায় ফিরে আসে। এই যেন অকুন্ঠ  পাঁপের সাগরে নিমজ্জিত পাপিষ্টদের প্রায়চিত্ত করার প্রতিনিয়ত: মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে,এককালের দাপুটে দল পাপিষ্ট বিএনপি দলের অভ্যন্তরে।"

       তাঁদের মধ্যে কেউ সরকারের প্রাক্তন আমলা,কেউবা উচ্চ আদালতের আইনজীবি ছিলেন, এখনও কেউ কেউ আইনপেশায় জড়িত থেকে সুনামের সঙ্গে ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।তাঁরা সকলেই সামরিক সরকারের মন্ত্রীত্ব গ্রহন করে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির চালিকা শক্তির ভূমিকা পালন করেছেন এবং এখনও অনেকেই করে চলেছেন। অনেকে  আগে পরে দীর্ঘদিন বিএনপি'র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। সম্প্রতি বিএনপি'র রাজনীতি সম্পর্কে তাঁরা সকলেই কিছুনা কিছু খোলামেলা অথছ জাতির জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য অবলীলায় বলতে শুনা যাচ্ছে। আজকের পত্রিকায় দেখলাম জনাব এম,কে আনোয়ার সাহেবের একটি মন্তব্য প্রকাশ পেয়েছে।তিনি বলেছেন--"বিএনপিতে চলছে রাজতন্ত্র, রাণী আর যুবরাজের শাষন, আমরা হলাম ক্রিতদাস"( সুত্র: পূর্ব-পশ্চিম বিডি,২০/৭/২০১৭ ইং)। তার আগে জনাব তরিকুল ইসলাম বলেছেন--বিএনপি চলে কর্মচারীর হুকুমে।ব্যারিষ্টার নাজমূল হুদা, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহম্মদ সাহেবেরা কত কথাই বলেন লিখতে গেলে পাতা ভরে যাবে। জনাব মাহবুবর রহমান সম্প্রতি মনের ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

     তাঁদের দেয়া বিভিন্ন সময়ের  বক্তব্যগুলী নি:সন্দেহে প্রতিপক্ষ দল ও জোটের নেতাকর্মীগন লুপে নিয়েছেন এবং   মূখরোচক কথায় পরিণত করে গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিএনপি'র লক্ষলক্ষ নেতাকর্মীদের আঘাতে আঘাতে প্রতিনিয়ত তাঁদের  মনোবল ভেঙ্গেচূরে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছেন।

       তাঁরা সবাই দীর্ঘদিন মন্ত্রীত্ব করেছেন,বিএনপি দলের সর্ব উচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম "স্থায়ী কমিটি'র সদস্য ছিলেন এবং এখনও অনেকেই আছেন। সবাই জানেন--মেজর জিয়া, এরশাদ শিক্ষাগত যোগ্যতায় তাঁদের সমকক্ষ নয়।দুই জনই রাষ্ট্রের পাহারাদার  ছিলেন। রাষ্ট্র বিশ্বাস করে তাঁদের হাতে দেশরক্ষা করার হাতিয়ার তোলে দিয়েছিলেন। তাঁরা দু'জনই জনগনের বিশ্বাস ভঙ্গ করে দেশরক্ষার হাতিয়ার ক্ষমতা দখল করার জন্য ব্যবহার করে দেশের মালিকের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছিলেন। তাঁরা ভাল করেই জানেন সেনাশাষকগন প্রভুত্ববাদী শোষক সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য এবং তাঁদের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশের জনগনের সঙ্গে চরম বিশ্বাস ঘাতকতা করেছিল। জনগনের কষ্টার্জিত অর্থে কেনা অস্ত্র তাঁরা জনগনের নির্বাচিত প্রতিনীধির উপর ব্যবহার করে তাঁদের প্রভুদের স্বার্থ রক্ষা এবং তাদের ক্ষমতা স্থায়ী করার চেষ্টা করেছিল। উচ্চশিক্ষিত মেধাবি ব্যাক্তিবর্গ আরো ভাল করেই জানেন বিএনপি দলের নেত্রী 'খালেদা জিয়া' এবং দ্বিতীয় শক্তিধর নেতা  জিয়া  পুত্র তারেক  উত্তরাধিকার সুত্রে পিতা এবং পিতার অনুসারী অন্য সামরিক স্বৈরাচারের আদর্শ ধারন করার একচ্ছত্র অধিকার লাভকারী ব্যাক্তির সমষ্টি ব্যাতিরেকে অন্য কিছু নয়।

               প্রভূত্ববাদে বিশ্বাসী সাম্রাজ্যবাদের দোসরগন বিশ্বের দেশে দেশে জনগনের সম্পত্তিকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে--বাংলাদেশেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি।ভাঙ্গা স্যুটকেস, ছেঁড়াগেঞ্জীর মালিক মেজর জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করার সাথে সেনা কর্মকর্তার জন্যে জনগন কতৃক বরাদ্ধকৃত সেনানিবাসের বিশাল সম্পত্তি পরিবেষ্টিত বাড়ী রাষ্ট্র প্রধানের বসবাসের জন্যে জনগনের উপহার গনভবনের বাড়ী, রাষ্ট্রপ্রধানের দপ্তর ভঙ্গভবনের বাড়ী দখল করে নিয়েছিলেন। জিয়ার মন্ত্রী সভায় থাকাকালে তাঁরা সবাই বঙ্গবন্ধু সরকার কতৃক রাষ্টের অনুকুলে জাতীয়করনকৃত একাধিক বাড়ী তাঁদের নিজেদের নামে বরাদ্ধ নিয়েছিলেন। এর বাইরেও সরকারি, বেসরকারি একাধিক বাড়ী, সম্পত্তি কলকারখানা নামমাত্র মূল্যে অথবা জোরবপুর্বক দখল করে নিয়েছিলেন।তদ্রুপ দখলকৃত একাধিক বাড়ী এবং সম্পত্তি উচ্চ আদালতের  নির্দেশে বর্তমান  সরকার তাঁদের নিকট থেকে ফেরৎ  নিয়েছেন, আরো কতিপয় ব্যাক্তি ও সংগঠনের বাড়ী ফেরৎ নেয়ার চুড়ান্ত আদেশের অপেক্ষায় আদালতে অপেক্ষমান রয়েছে। জিয়ার আদর্শের অনুসারী হিসেবে বেগম জিয়া ও  'তারেক জিয়া'র বাল্যকাল, যুবকাল স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন। রাজনীতির হাঁড়ির খবর জানা স্বার্থন্ধ অভিজ্ঞ ব্যাক্তিবর্গ  তারেক, কোকোর হাতে  কলা দিয়ে  মন্ত্রনালয় ও দলের লোভনীয় দায়িত্ব যতবার বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছিল এবং দল পূর্ণগঠিত হয়েছে ততবার মন্ত্রীত্ব ও দলীয়পদ হাতিয়ে নিতে কখনো কার্পন্য  করেননি।

      তাঁরা মন্ত্রীত্ব গ্রহন করার আগে প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের তৎকালীন  পাকিস্তান সরকারের সিএসপি  মেধাবী  কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম  কর্মকর্তা হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশেরও বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্রত্যেকেই সরকারি চাকুরী অবসরের কয়দিন পরেই  রাজনীতিতে নাম লেখান এবং বিভিন্ন 'স্বৈরশাষক সরকারের মন্ত্রীত্ব' গ্রহন করে প্রভূত্ববাদী 'স্বৈরতন্ত্র' কায়েমের পক্ষে তাঁদের শিক্ষা, সততা, মেধা, বিচক্ষনতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা উজাড় করে ঢেলে দিয়েছেন। 'সরকার, দল এবং অশুভশক্তির জোটে তাঁদের সম্মান, মায্যদা, নেতৃত্বের দাপট কখনই প্রশ্নের সম্মুখ্যীন হতে দেখা যায়নি বা হয়নি।

       দীর্ঘ ৪৩বছর তিনযুগের অধিককাল দীর্ঘতর না হলেও দীর্ঘকাল। তাঁদের কখনই মনে হয়নি অত্র জনপদের 'বাঙ্গালী জাতি' বিদেশীদের শাষন, শোষন তথা গোলামীর জিঞ্জির থেকে মুক্তির লক্ষে হাজার বছর আন্দোলন, সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন এবং  বুকের তাজা রক্ত অকাতরে ঢেলে দিয়েছিলেন। তাঁদের কখনই মনে হয়নি এইরুপ পাকিস্তানী প্রভুত্ববাদী শাষন, শোষনের বিরুদ্ধে সর্বশেষ পরিণতি দীর্ঘ ২৩ বছর 'বঙ্গবন্ধু মুজিব' তাঁর জীবনের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে, অসীম ত্যাগের বীনিময়ে বাঙ্গালী জাতীকে "প্রভুত্বমুক্ত জাতী, দেশকে শোষন মুক্ত দেশ, শাষনকে নীজেদের শাষন" করার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

       তথাকথিত দেশবরেন্য ব্যাক্তিবর্গের একবারের জন্যেও মনে হয়নি-- বাঙ্গালী জাতী বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্বে "মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে নয়মাস মরণপণ রক্তক্ষয়ী সসস্ত্র যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করেছিল। বাঙ্গালী জাতী স্বাধীন, শৃংখলমুক্ত, শোষন, শাষনমুক্ত, দাসত্বমুক্ত জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে নিজেদের পরিচিতি তুলে ধরতে পেরেছিল--একমাত্র বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শী নেতৃত্ব, অসীম সাহষের উপর ভর করে। তাঁরা ভুলেই গিয়েছিলেন--"বাঙ্গালী জাতীর হাজার বছরের সংগ্রাম সাধনার  বেদনা দায়ক দাসত্বমুক্তি, শৃংখলমুক্তির শেষপরিণতির একমাত্র  কারিগর, স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অন্যতম পুরূধা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের কালান্তরজয়ী নামটি।"

     তথাকথিত মেধার পাহাড়সম নেতৃবৃন্দ    দীর্ঘ তিন যুগের অধিক  ভূলেই ছিলেন--বাঙ্গালী জাতীর দাসত্বমুক্তির একমাত্র পূরূধা সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারকে ১৫ই আগষ্ট কালরাতে হত্যা করে প্রভুত্ববাদের এদেশীয় দোষর অশুভশক্তি বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করেছিল। এম,কে আনোয়ার, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিষ্টার হুদা, মাহবুবুর রহমান, মেজর  আক্তারুজ্জমান, ব্যারিষ্টার মওদূদের ন্যায় অসংখ্য অগনীত উচ্চ শিক্ষিত, জাতির বিবেকদের কখনই মনে হয়নি---তাঁরা সকলেই প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার সর্বোচ্ছ সনদ অর্জনকারী ব্যাক্তিত্ব এবং পাকিস্তান ও স্বাধীন সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র দুই দেশের মধ্যে  সর্বোচ্ছ সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা, আইনের সর্বোচ্ছ শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন। অনেকেই সরকারের উচ্চ পদপদবি দীর্ঘবছর বহন করার পর অবসর গ্রহন করেছিলেন বা স্বেচ্ছায় চাকুরী পরিত্যাগ অথবা অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার কারনে প্রজাতন্ত্রের চাকুরী হারিয়েছিলেন।

          এই উচ্চশিক্ষিত জাতির  সেবক, জাতির বিবেক হিসেবে  পরিচিত সম্মানীত ব্যাক্তিবর্গ গন কখনই মনে করেননি--তাঁদের প্রধান নেতা 'মেজর জিয়া' বঙ্গবন্ধু হত্যার ঠান্ডা মাথার খুনী হিসেবে নেপথ্য কারিগর ছিলেন এবং তিনিই একমাত্র প্রভূত্ববাদী পরাজিত শক্তির এদেশীয় প্রধানতম দোসর ব্যাক্তি হিসেবে সাম্রাজ্যবাদী শোষকশ্রেনীর পছন্দনীয় ব্যাক্তিদের তালিকার শীর্ষব্যাক্তি ছিলেন। তাঁদের কস্মিনকালেও মনে হয়নি তাঁর মৃত্যুর পর একই ধারাবাহিকতায় তাঁর পত্নি 'খালেদা জিয়া এবং দ্বিতীয় ক্ষমতাধর নেতা তারেক জিয়া'' প্রভূত্ববাদের স্বার্থরক্ষার এদেশীয় প্রেতাত্বার উত্তরাধিকার সূত্রে অশুভশক্তির নেতৃত্বের মসনদ লাভ করেছেন। এবং কি অদ্যাবদি বিদেশী প্রভূদের স্বার্থরক্ষার ভূমিকায় সর্বতোভাবে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন।তাঁর প্রকৃষ্ট প্রমান বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে সাত বছর সাজাপ্রাপ্ত এবং ২০০ কোটি টাকা ফেরৎ দানের আদেশ উপেক্ষা করে তিনি আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশ ২০০ বছর শোষন শাষনকারী বৃটিশদের একটি শহরে সেই দেশের সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী হওয়া সত্বেও আশ্রয় পেয়েছেন।তাঁকে বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠানোর আহব্বান বারবার বৃটিশ সরকার প্রত্যাক্ষান করে চলেছেন।

       তথাকথিত চাতুয্যপূর্ণ বক্তব্যের অসিম ক্ষমতা সম্পর্ন্ন ব্যাক্তিবর্গের কখনও মনে পড়েনি অত্রাঞ্চলের জ্বরাজীর্ণ, শীর্ণকায় জনতা দাসত্ব মুক্তির লক্ষে ১৯৭১ ইং সালে বিনা অস্ত্রে  'মহান মুক্তিযুদ্ধ' সংগঠিত করে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে  অত্রাঞ্চলকে 'প্রভুত্বমুক্ত শাষন, সার্বিভৌম স্বাধীন দেশ', শৃংখলমুক্ত  জাতি" হিসেবে বিশ্বদরবারে  প্রতিষ্ঠিত করেছিল। ওরা ভূলেই ছিলেন দাসত্বমুক্ত জাতী উম্মেষের লক্ষে "বঙ্গবন্ধু যখন বর্তমান বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠে ঘাটে, বনে জঙ্গলে, গ্রামে গঞ্জে, হাটে বাজারে, নগরে বন্দরে রোধবৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বাঙ্গালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার মহতি চেষ্টায়, বরেণ্য ব্যাক্তিরা  তখন, পাকি সরকারের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বঙ্গবন্ধুর চলার পথেপথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছেন।

         বর্তমান সময়ের উচ্চশিক্ষিত বাকপটু ব্যাক্তিবর্গের অধিকাংশই  '৭৫ পরবর্তী 'মেজর জিয়ার তথাকথিত "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে"র আদর্শে অনুপ্রানীত হয়েছিলেন। অনূসন্ধানে দেখা যায় 'পাকিস্তান সরকারের উচ্চপদে আসীন সিএসপি কর্মকর্তা অথবা সেনা কর্মকর্তা অথবা তথাকথিত নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী কম্যুনিষ্ট আদর্শের অনুসারী, অনুগামী, সমর্থকেরাই আবহমান কালের বাঙ্গালী জাতিসত্বা 'বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদে'র বিপরীতে জিয়া  উদ্ভাবীত 'বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে' বিশ্বাস স্থাপন করে জাতীকে দ্বিখন্ডিত করার চক্রান্তে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন।

     মেধাবী রাজনীতিকগনের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের  নয়মাস 'পাকিস্তানী জালেম সরকারে চাকুরীরত: ছিলেন।  তৎসত্বেও বৃহৎ হৃদয়ের অধিকারি ''বঙ্গবন্ধু" তাঁদেরকে সদ্য স্বাধীন দেশের সরকারে যোগদানের অনুমতি দিয়ে অকৃত্তিম বদন্যতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। অকৃতজ্ঞ উচ্চশিক্ষিত তথাকথিত মেধাবী, বরেণ্য ব্যাক্তিবর্গ বঙ্গবন্ধুর সেই বদন্যতাকেও  কখনও স্মরণ করেনি,স্বীকারও কোনদিন করেনি। বরঞ্চ এই সেইদিনও বলতে শুনেছি--"কোন এক সেনা কর্মকর্তার একঘোষনায় এই সোনার বাংলা স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ নাম ধারন করেছিল।

   আমি স্বীকার করি অশীতিপর বৃদ্ধ রাজনীতিক গন সকলেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে চাটুকারিতার পাশাপাশি দেশ ও জনগনের কল্যানে নিবেদিত ছিলেন। কিন্ত প্রজাতন্ত্রের অবসর প্রাপ্তির পর ভাবলেশহীন, উৎফুল্লচিত্তে, অবলীলায়, অনায়াসে  যুক্ত হয়েছিলেন তাঁদের মুখে বর্তমানে কথিত--"রাজা, বাদশাহ, মহারাজ, যুবরাজ তথা প্রভুত্ববাদী শক্তির এদেশীয় দোষর 'সেনা শাষক চক্রের স্বৈরচারী শাষকের দলে ও সরকারে। তাঁরা উচ্চ শিক্ষিত হলেও তাঁদের চেয়ে অর্ধেক শিক্ষিত সেনাশাষকের তল্পিবাহক হিসেবে নিজেদেরকে জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। উচ্চশিক্ষিত ব্যাক্তিবর্গ জেনে শুনে, স্বজ্ঞানে ''অশুভশক্তির সাক্ষাৎ প্রেতাত্বা চার দলীয় জোটের নেত্রী জিয়া পত্নি খালেদা এবং তাঁর পুত্র 'তারেক জিয়া'র নেতৃত্ব মান্য করে দলে ছিলেন, আছেন, থাকবেন। অথর্ব উচ্চ শিক্ষিত হলেই কেবলমাত্র শিক্ষার মধ্যমস্তর- "মাধ্যমিকের গন্ডি" পার না হ'ওয়া ব্যাক্তির নেতৃত্বের প্রতি আস্থা স্থাপন করে উদ্দেশ্য সাধন বৃহৎ স্বার্থ মনে করতে পারে। উচ্চশিক্ষিত তাবৎ ব্যাক্তিবর্গ শুধু রাজনীতির কারনে আস্থা রেখেছেন এইরুপ ভাবার কোন কারন নেই- অর্ধশিক্ষিত মা' ছেলেই প্রভুত্ববাদে বিশ্বাসী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অন্যতম পছন্দের বাংলাদেশী নেতা এই সরল অংকটি  উচ্চশিক্ষিত ব্যাক্তিরা, সবজান্তা নেতারা বুঝতে পারেনি বললে আমিই বোকার স্বর্গে বাসকরি, এমনও ভাবতে পারেন অনেকেই।

     অশিক্ষিত মূর্খ্য খালেদা এবং অথর্ব তারেক জিয়া' উভয়ের নেতৃত্ব প্রভুতুল্য স্বীকার করে সর্বোচ্ছ ভক্তি শ্রদ্ধা রেখে তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত ব্যাক্তিবর্গ দাপটের সঙ্গে দীর্ঘ তিনযুগের অধিক রাজনীতি এবং সরকারের নীতিনির্ধারকের ভুমিকায় অবতীর্ন থেকে বাংলাদেশের তথাকথিত সেবার পরাকাষ্টা দেখিয়েছিলেন। বিএনপি'র পতনকালে তাঁদের স্মরণে এসেছে রাণী ও যুবরাজের নেতৃত্ব চলছে বিএনপি', কেউ বলেন চাকর বাকরের দল, কেউবা বলেন নোয়াখালী সমিতি, কেউবা বলেন অশিক্ষিত মা 'ছেলের দল।

      বাকপটুতায় পারদর্শী উচ্চশিক্ষিত নেতৃবৃন্দ জনগনকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়ে সেনাশাষকদের অবৈধ শাষনকে বৈধ শাষনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ধর্মকর্মের সঙ্গে সম্পৃত্ত না থেকে বাকপটুতায় ধর্মকে যথেচ্ছ ব্যাবহার করে ধর্মের আবেদন ক্ষুন্ন করার অপরাধে মহান আল্লাহর নিকট তাঁরা প্রত্যেকেই জবাবদীহি করার সময় সমাসন্ন। হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ বাঙ্গালী জাতীকে উদ্দেশ্যমূলক দ্বিখন্ডিত করার চক্রান্তে জড়িত থেকে  আমৃত্যু জাতীর অভিশাপে ভাগিদার হয়ে রইলেন।

       মৃত্যুকালে পাঁপমোছন করার অবিরাম বিবেকের তাড়নায়, অবচেতন মনে প্রলাপ বকে যাচ্ছেন তাঁরা। অথবা প্রজম্মকে তাঁদের দেখানো পথে না হাঁটার গ্রিন সিগনাল দিয়ে যাচ্ছেন, অশীতিপর বৃদ্ধ রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ।

    আমি সর্বান্তকরনে বিশ্বাস করি--"নিজ রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে, এবং দলের আদর্শের বিরুদ্ধে সারা জীবনের নিজ আস্থা, বিশ্বাস ধুলায় লুটিয়ে এইরুপ অ-রাজনৈতিক, অশালীন বক্তব্য দিতে পারে কেবল মাত্র স্বার্থান্বেষী ব্যাক্তি, দুচরিত্রের অধিকারী, নীতি নৈতিকতাহীন ব্যাক্তিরাই।  দেশও জাতী চিরকাল ভোগার কর্মকান্ডে সম্পৃত্ত ছিলেন স্বজ্ঞানে, স্বইচ্ছায়, জাতীর  অ-কল্যানকর কর্মসাধনকারীর ভূমিকায় অবতীর্ন্ন ছিলেন বিধায় মৃত্যুকালে বিবেকের তাড়নায় প্রতিনিয়ত পিষ্ট হয়ে চলেছেন। আমি মনে করি-- তাঁদের  অসংলগ্ন, অরাজনৈতিক, আপন বিশ্বাস পদদলীত করার প্রলাপ---"কেবল মাত্র না পাওয়ার বেদনার উৎগীরন নয়। তাঁদের নিয়ন্তর প্রলাপ সত্যিকার অর্থে মাতৃভূমির  অ-মোচনীয় অনিষ্টকারী মৃত্যু পথযাত্রী নেতার সর্বক্ষন বিবেক তাড়িৎ অনুশোচনায় দগ্ধ হওয়ার বহি:প্রকাশ।" জাতীর কষ্টার্জীত অর্থে লালিত বিশিষ্ট   ব্যাক্তিগন শেষ সময়ে এসে স্বজ্ঞানে অহরহ দেশ ও  জাতীর ক্ষতিজনীত পাঁপ মোছন করার  বিবেকের চূড়ান্ত তাড়না থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রানান্তকর চেষ্টার কারনে - মন প্রান, বুদ্ধি বিবেচনা, লজ্জা শরম একাকার হয়ে তাঁদের মনকে অ-চেতন, উদাসী করে দিয়েছে। তাইতো তাঁরা সকলে আপন বিশ্বাসে ধ্বস নামার অভিব্যক্তি মনের অজান্তে প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে চলেছেন।
ruhulaminmujumder27@gmail.com

               "জয়বাংলা    জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা