আগষ্ট বাঙ্গালীজাতী, বাংলাদেশের বেদনার অশ্রু ঝরানোর মাস। ______________________________________________ আগষ্ট মাসটি বাঙ্গালী, বাংলাদেশ, বাঙ্গালী জাতির জন্য ব্যাথাতুর মাস।প্রকৃত বাঙ্গালী আনমনে এই মাসটিতে বুকের অন্তজ্বালা অনুভব করে-ব্যাথার সাগরে নিমজ্জিত থাকে। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃংখলমুক্ত করে যে মহামানব বাঙ্গালী জাতিকে জাতিসত্বার অস্তিত্বের অধিকারী করেছেন-সেই মহামানবকে 'বাঙ্গালী জাতি সত্বার' পরিচিতি অর্জনের পর, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্ব-পরিবারে হত্যা করা হয়েছে।এই আগষ্ট মাসেই তাঁর জীবিত দুই কন্যার মধ্যে জৈষ্ঠকন্যা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে জনসমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার শেষ পয্যায় বোমা-গুলীর ঝড়োবৃষ্টির তান্ডব চালিয়ে হত্যা করতে গিয়ে আই,ভি রহমান সহ ২৯জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল।২১শে আগষ্ট ঘাতক চক্রের সেই বিভীষিকাময় সান্ধ্য তান্ডবের শিকার হাজার হাজার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী আজও তাঁদের শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে পঙ্গুত্বের জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে।২১শে আগষ্টের হামলাটি তৎসময়ের ক্ষমতাসীন জোট সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় সংঘটিত হয়েছিল-দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে গেছে, তাঁদেরই 'পেইডএজেন্ট" সাজানো একমাত্র হামলাকারী' নোয়াখালীর দিনমজুর জর্জমিয়ার কারামুক্তি এবং তাঁর মায়ের বক্তব্য থেকে। ১৯৭১ ইং সালের ১৬ই ডিসেম্বরের আগে চারহাজার বছরের ইতিহাস পয্যালোচনা করে দেখা গেছে-বাঙ্গালী জাতি কখনই স্বাধীনতা উপভোগ করেনি, বাঙ্গালীরাও যে সমৃদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্য, সংস্কৃতি-কৃষ্টির অধিকারী একটি স্বতন্ত্র জাতি-তাঁর উপলব্দি বা পরিচিতি বা স্বাধীন ভুখন্ড অভাগা জাতীর কোনটাই ছিলনা। পরাধীনতায় থেকেও বাঙ্গালী যে বীরের জাতি তাঁর প্রমান রাখতেও কার্পন্য করেনি।তাই দেখা যায় বিদেশী শাষক শোষকদের অপশাষনের বিরুদ্ধে স্বাধীন ভুখন্ডের আশায়,জাতিসত্বার অন্তনিহীত চাপা আর্তনাদের বহিপ্রকাশ ঘটাতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে অসম বিদ্রোহের দাবানলে জ্বলে উঠেছে অঞ্চলভিত্তিক সাহষী বীরদের নেতৃত্বে। ক্ষুদিরাম, তিতুমীর সহ আরো অনেক সাহষী বীর স্বাধীনচেতা যোদ্ধারা তার প্রমান রেখে গেছেন মহাভারতের সমগ্র ইতিহাস জুড়ে। কালের প্রবাহে অনেক রথী মহারথী স্বপ্ন বুনেছেন অন্তরে, বহি:প্রকাশও ঘটিয়েছেন ক্ষেত্র বিশেষ- বাঙ্গালী জাতিসত্বা, স্বাধীনতা, সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। বাঙ্গালী জাতিসত্বা বিকাশের ক্রমবর্ধমান পরিক্রমায় কারো অবদানই তুচ্ছ নয়। কিন্তু সকলকে ছাড়িয়ে ফরিদপুরের টুঙ্গিপাঁড়ায় পড়ন্ত জমিদার বংশের লিকলিকে এক বালক, নাম তাঁর খোকা, অন্তর দিয়ে অনুভব করেছেন কিশোরত্বে-বাঙ্গালী জাতী পরাধীন, তাঁর জাতী সত্বার কোন স্বীকৃতি নেই, নীজস্ব কোন আবাসস্থল নেই, নীজ ভুখন্ডে অন্যের গোলাম মাত্র। দীর্ঘ তেইশ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম, বিরামহীন সংগ্রাম, অপরিসীম ত্যাগ, অসীম সাহষে ঘুমন্ত ভেঁতু বাঙ্গালীকে জাতীসত্বায় দীক্ষা দিয়ে জাগ্রত করে তোলেন। তিনি নীজে হয়ে উঠেন 'খোকা' থেকে ছাত্রজনতার 'মুজিবভাই' বাঙ্গালীর 'অন্তর আত্বা।' তাঁর পরবর্তী ইতিহাস শুধুই ত্যাগ, বিচক্ষনতা, তীক্ষ্ম বুদ্ধি, সুদুরপ্রসারী চিন্তাচেতনার বহি:প্রকাশ,চতুরতা,তেজস্বী নেতৃত্ব, বাগ্মিতার মায়াজাল বিচিয়ে অন্তরজয়ের জগৎ বিখ্যাত উদাহরন সৃষ্টির ইতিহাস।ছাত্রজনতার বঙ্গবন্ধু ক্রমে বাঙ্গালী মননে প্রাপ্তির অদম্য আক্ষাংকাকে শীর্ষস্তরে নিয়ে "নো রিটার্নের স্থানে" পৌঁছে দেয়ার কাব্যিক ইতিহাস সৃষ্টিকারী মহামানবে রুপান্তরের ইতিহাস। 'বঙ্গবন্ধু মুজিব' নয়মাসের সসস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অশিরীরি উপস্থীতিতে বাঙ্গালীর ত্রানকর্তা, বাঙ্গালী জাতীসত্বার চুড়ান্ত উম্মেশকারী "বাঙ্গালী জাতীর জনক 'বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান'' হয়ে উঠেন। সেই মহান নেতা বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক,সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই ১৯৭৫ ইং সালের ১৫ই আগষ্ট বিভিষীকাময় কালরাতের অন্ধকারে একদল বিপদগামি ভাড়াটিয়া সেনা সদস্য স্বপরিবারে হত্যা করে। যারা বাংলা দেশের অভ্যুদয় মেনে নিতে পারেনি, বাঙালি জাতীসত্বাকে মেনে নিতে পারেনি, বাঙ্গালীর স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি, বাঙ্গালী জাতী বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়াক চায়নি-দেশী বিদেশী শত্রু তাঁরাই বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা করেছে। সাম্রাজ্যবাদী চক্র এবং তাঁদের এদেশীয় দোষরেরা কোনো দিনও চায়নি, বাংলাদেশ স্বাধীন হোক। ১৯৪৭ইং সালে বাঙ্গালীরা বিনারক্তক্ষয়ে স্বাধীনতা পাওয়ার মহেন্দ্রক্ষন হাতের মুঠায় পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি-শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর ন্যায় বিচক্ষন জাতীয় নেতার অভাবে। অবশ্যম্ভাবী সেই স্বাধীনতা চিনিয়ে নিয়ে গেছে পশ্চিম পাকিস্তানী, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি লালনকারী, শিয়াধর্মালম্বি, ভারতের সিন্ধু রাজ্যের অধিবাসী, বিলেতে শিক্ষা গ্রহনরত: চতুর ব্যারিষ্টার কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।প্রকৃত ধর্মজ্ঞান না থাকা সত্বেও ধর্মের ঠিকাদারী গ্রহন করে সাম্প্রদায়িকতার বীজবাস্প সমৃদ্ধ "দ্বি-জাতিতত্ব" মন্ত্রের জালে নিবিষ্ট করে অশিক্ষিত বাঙ্গালীকে ধোঁকা দিয়ে দুই হাজার মাইলের ব্যবধানে পাকিস্তানের সাথে সংযুক্ত করে-শাষন শোষনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হন।পুর্ববাঙলা মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শী নেতৃত্বে ২৩বছরের সংগ্রাম সাধনায় মুক্ত হলেও অদ্যাবদি পশ্চিম বঙ্গ শোষন শাষনের যাতাকল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। সাম্রাজ্যবাদীমহল বঙ্গের এক অংশকে শক্তিধর ভারতের সাথে অন্য অংশকে বিজতীয় পাঞ্জাবী-পাঠানদের সাথে যুক্ত করে দেন। বাঙ্গালী জাতীকে সংখ্যালঘু ও শক্তিহীন করে শোষন শাষনের যাতাকলে পৃষ্ট করা শুরু করে উভয় দেশ। এমনি এক প্রেক্ষাপটে নতুন দিগন্তের সুর্যের আভা নিয়ে উদিত হয় মহাকালের এক মহাকবি।ধীরে ধীরে সুয্যের আলোকচ্ছটা উজ্বল রশ্মি ছড়িয়ে পুর্ববাংলাকে আলোকিত করতে থাকে। তিনিই প্রথম শুনালেন স্বাধীনতার কবিতা, ভীতু বাঙ্গালী জাতীকে অকতোভয় সেনানী করে গড়ে তোলে তাঁর আলোকরশ্মী।তিনি জাতীসত্বার দিশারীতে রুপান্তরীত হয়ে পুর্ববাংলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পয্যন্ত বিরামহীন ছুটে চলেছেন জাতিসত্বা উম্মেশ ঘটানোর কঠিনতম স্বপ্নের বার্তা নিয়ে। দীর্ঘ তেইশ বছর একটানা জেল জুলুম, নিয্যাতন, নিপীড়ন, মৃত্যুকুপ পরোয়া না করে, সাড়ে সাতকোটি বাঙ্গালীকে জাতীয়তাবোধের চেতনায় শানীত করে বাঙ্গালী মননে স্বাধীনতার স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে দিতে সক্ষম হন। অবশেষে মহানেতা জাতিকে শুনালেন তাঁর অমর কবিতা,""এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।"এমন কবিতার অমর সুধা বাঙালী জীবনে আর কোন দিন শুনেনি, দুনিয়ার কোথাও এই সুর সুদুর অতীতে বেজে উঠেনি। মোহমন্ত্রের জালে মুগ্ধ বাঙ্গালী নিমিষে পরিনত হলো অসীম সাহসী দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মুক্তিকামি জাতি হিসেবে।তাইতো বাঙালী সেদিন আধুনিক দুর্দষ্য তিরানব্বই হাজার সেনাসদস্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঁশের লাঠি হাতে। চিনিয়ে এনেছিল জয় মাত্র নয়মাসে।পরাস্ত করেছিল সাম্রাজ্যবাদের দালাল এদেশীয় দোষরদের।কিন্তু বাঙালীতো কোন দিন জম্মেও স্বাধীনতা দেখেনি।করবে কিভাবে উপভোগ? রক্তে রয়ে গেছে বিদেশীদের শাষন শোষনের বীষক্রিয়া? আজ্ঞে-জাঁহাপনা বলার চিরায়ত অভ্যেস কি আর সহজে বদলায়? মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ওই সাম্রাজ্যবাদের চক্রান্তে হত্যা করে মহাকালের মহামানব, সর্ব যুগের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সকল সদস্যদের।মহান আল্লাহর অসীম কৃপায় বিদেশে অবস্থানের কারনে বেঁচে যান তাঁর দুই কন্যা। আজকের আধুনিক, উন্নত, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কারিগর বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। এমন একসময়ে ঘাতকের দল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মিশনে নামে, যখন সদ্য স্বাধিনতা প্রাপ্ত দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির স্বপ্ন বুননে নিমগ্ন জাতির জনক-সমগ্র জাতীকে ঐক্যবদ্ধ করার মহতী চিন্তায় বিভোর। পৃথিবীর বুকে উন্নত, সমৃদ্ধ, বিজ্ঞান মন্স্ক জাতি গঠনের জন্য তাঁর আজীবনের লালীত স্বপ্ন শোষন মুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষে গনতান্ত্রিক সমাজ তন্ত্রের দর্শন জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন।সেই লক্ষে পৌনে দুইশত বছরের ইংরেজ শাষনের রীতি নীতির আমুল পরিবর্তন করে বাঙ্গালী জাতির সামনে তুলে ধরেছিলেন মৌলিক গনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মানের ঐতিহাসিক দর্শন "বাকশাল"। অল্প সময়ের মধ্যে সুফল ও আসা শুরু করেছিল। সমাজের প্রত্যেক স্তরে নির্বাচিত প্রতিনীধির মাধ্যমে প্রশাসনিক কাঠামো জনগনের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার এক অভিনব চিন্তা চেতনার কর্মসুচি। এমন চিন্তা চেতনা শুধুমাত্র যুগশ্র্রেষ্ঠ মহামানবের কর্মে এবং চিন্তায় আসতে পারে। জাতির জনককে হত্যার পর বিশ্বের তাবৎ মনীষিগন স্তম্ভিত হয়ে শুধু একটি বাক্যই উচ্ছারন করেছিলেন-'বাংলাদেশ একজন মহামানব, সমাজ সংস্কারক হারাল।বিশ্বহারাল শোষিত বঞ্চিত মানুষের মহান নেতা।"১৬ই আগষ্ট ১৯৭৫ ইং বি,বি,সি বাংলা থেকে সেদিন সর্বক্ষন শুধু বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, তাঁর যুগশ্রেষ্ঠ নতুন দর্শন 'বাকশাল' নিয়েই আলোচনা করেছে। তাঁরা নীজেরাই স্বীকার করে বলেছিল, ইংরেজ শাষনের পর তাঁদের রেখে আসা আইন কানুন পরিবর্তন, পরিবর্ধন, যোগপযোগী করার দু:সাহষ আর কোন নেতাই দেখাতে পারেনি এবং কি মহাত্মা গান্ধীজিও না। দীর্ঘ শাষনে অভ্যস্ত সেই আইন কানুন পরিবর্তন অবশ্যই কঠিনতম পদক্ষেপ। সেই কঠিন এবং কন্টকাকীর্ন কাজটি করার পদক্ষেপ নিতে পারে একমাত্র যুগশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষগন। জাতীরজনক মনেপ্রানে বাঙ্গালী, বাংলাদেশকে ভালবাসতেন বলেই জীবনবাজী রেখে দেশকে স্বাধীন করার প্রয়াস গ্রহন করেছিলেন। তেমনি 'বাকশাল' গঠন করে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিক আইনকানুন প্রবর্তন করে দেশ ও জাতীকে ''উন্নত সমৃদ্ধ' করার প্রয়াস গ্রহন করেছিলেন- বাংলাদেশের মহাননেতা, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। জাতির জনকের অকাল মৃত্যুর পর দেখতে দেখতে কেটে গেল ৪৩টি বছর। আজও কি পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে বৃটিশদের রেখে যাওয়া আইন কাঠামো? আজও কি বিচারের বানী নির্বিত্তে কাঁদেনা? আজও কেন স্বচ্ছ বিচারের আশায় ট্রাইবুনাল করার উদ্যোগ গ্রহন করার প্রয়োজন হয়? আজও কি সমাজের সর্ব অঙ্গে দুর্নীতির কালোছায়া দূর করা সম্ভব হয়েছে? আজও কি দেশের সম্পদ লুটপাট করে আঙ্গুলফুলে কলাগাছ হচ্ছেনা? আজও কি শ্রমিক তাঁর ন্যায্য মুজুরীর জন্য রাজপথে তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হচ্ছেনা? আজও কি কৃষক সারের দাবী করতে গেলে তার বুকে গুলী চালানো হয়না?আজও কি বন্ধ হয়েছে সরকারী অর্থ আত্বসাৎ করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার দৃষ্টিকুটু প্রবনতা? পরিবর্তন মানুষ মেনে নানেয়ার অভ্যেস চিরায়াত। জননেত্রী দেশরত্ন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের বাস্তবায়নের প্রারম্ভে অনেকেই দাঁত বের করে হাসতে দেখেছি। অপ্রীয় হলেও সত্য- কটুক্তি করতেও অনেকের মুখে আটকায়নি।এখন দেখা যায় তাঁরাই সেই ডিজিটালের সুযোগ সর্বাজ্ঞে ব্যাবহার করার জন্য উদগ্রীব। এতবছর পর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশের মনীষিরা যখন ইতিবাচক কথা বলে-তখন একটি কথাই মনে পড়ে-'গাধা পানি খায় তবে-গোলা করে খায়।' অর্থাৎ গাদাকে স্বচ্ছ পানিতে নামিয়ে দিলে সে পানিকে এমন ভাবে গোলা করে-যাতে তাঁর চেহারা পানিতে ভেসে না উঠে। আমাদের অভাগা বাঙ্গালী জাতীরও হল ঠিক একই অবস্থা। যে মুজিব-ইন্দিরা মৈত্রী চুক্তিকে গোলামীর জীঞ্জির আখ্যা দিয়ে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পথ প্রসস্ত করা হয়েছিল,সেই গোলামী চুক্তি তাঁর কন্যার হাতে বাস্তবায়নের উদ্যোগে জানানো হলো স্বাগতম। বলা হল বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী অর্জন।শেখ হাসিনাকে দেয়া হল 'দেশরত্ন' উপাধি।এই আমরা বাংলা দেশের জনগন এই আমাদের দেশহিতৌষী সুযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং সুশীল সমাজ। মুলত: ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি-হত্যা করা হয়েছিল তাঁর দর্শনকে,বাঙালী জাতীয়তাবোধকে, সর্বোপরি বাংলাদেশকে। বিশ্বের দেশ সমুহ যখন একে অন্যের চিন্তা চেতনা, দর্শন ধার করে রাষ্ট্রীয় নীতিতে সংযোজন করে দেশ পরিচালনায় ব্যাস্ত-তখনি বাঙ্গালী জাতির জনকের মেধা থেকে বের হল এক অনন্য চিন্তা চেতনার রাষ্ট্র পরিচালনার আধুনীক দর্শন।ইত্তেফাক কতৃপক্ষ যার নাম রেখেছিলেন-"বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ সংক্ষেপে (বাকশাল)। বাকশালই হচ্ছে মৌলিক গনতান্ত্রিক ব্যাবস্থা। রাষ্ট্র পরিচালনার আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত, গনতন্ত্রের সর্বত্তম ব্যাবহারের বৈজ্ঞানীক উপায়। বিশ্বের কোন জাতির কোলে বংগবন্ধু সমতুল্য মহামানব, ধর্মসংস্কারক, মানবাতাবাদী,গনতন্ত্রের পুজারি, অসীম সাহসী নেতা জম্মগ্রহন করেনি,ভবিষ্যতে করবে কিনা সন্দেহ আছে। অশুভশক্তি, মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হয়ে তাঁর বদলা নিল চরম মুল্যে।তাঁরা বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধের উম্মেষকারীর পরিবার সহ ধ্বংস করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে। শুধু তাই নয় তাঁর পরিবারের একমাত্র জীবিত দুই কন্যার জীবন কেড়ে নিতেও বার বার ফনা তুলে ফোঁস ফোঁস করছে অবিরত।২১শে আগষ্ট তেমন এক রক্তস্নাত প্রচেষ্টার অংশ। অশুভ শক্তির একমাত্র চেষ্টা বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধের একমাত্র নেতৃত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ আইয়ামীলীগকে ধংস করা। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে হলে তাঁর নেত্রী একমাত্র অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক-বাহক, পৃষ্টপোষক, বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধের জম্মদাতার ললনা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হবে। তাইতো দেখা যায় কমপক্ষে উনিশ বার তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে অশুভ শক্তি ব্যর্থ অভিযান পরিচালনা করতে। বাংলাদেশ, বাঙ্গালী জাতী যতদিন থাকবে বিশ্ব মানচিত্রে ততদিন ঘুরে ঘুরে ফিরে আসবে আগস্ট বাঙ্গালী-বাংলাদেশের বেদনার অশ্রু ঝরাতে। " জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখহাসিনা"

'আগস্ট ' বাঙ্গালী, বাঙ্গাজাতী, বাংলাদেশের এক অভিশপ্ত বেদনা বিধুর অশ্রুসিক্ত মাস।এই মাসেই অশুভ শক্তি কেড়ে নিয়েছে বাঙ্গালী সত্বার জম্মদাতাকে তাঁর পরিবার সহ। এই আগষ্ট মাসেই অশুভশক্তি কেড়ে নিতে চেয়েছিল বাঙ্গালী চেতনার লালনকারী জম্মদাতার জৈষ্ঠললনা শেখ হাসিনাকে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন