শোকের মাস আগষ্টে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী দর্শন "বাকশালের" মহত্বই কেবল মনে পড়ে-- _________________________ শোকের মাস আগষ্ট।বাঙ্গালি তাঁর বাঙ্গালীত্বের ইতিহাসের চরম সত্যকে বুকে ধারন করে অনন্তকাল বয়ে বেড়াবে।মহাভারতে বাঙালীর উপস্থিতি ছিল আবহমানকাল থেকেই, কিন্তু স্বাতন্ত্রতা ছিল না, স্বাধীনতা ছিল না, ছিল না কোন সার্বভৌম রাষ্ট্র।তিলে তিলে নিজের এবং পরিবারের জীবন বিপন্ন করে, যে বাঙ্গালী সব কিছুই এনে দিলেন,তাঁকেই হত্যা করা হল-তাঁরই সৃষ্ট বাংলাদেশে। আগষ্ট মাস এলে জাতি শোক পালনের পাশাপাশি তাঁর জীবনের উল্লেখ্যোগ্য ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনায় মেতে উঠেন।স্বরণ করেন প্রত্যেক বাঙ্গালী নাগরিক, তবে বিশ্লেষনে পার্থক্য আছে বিস্তর। অনেকেই বলতে শুনা যায় বা লেখনীতেও প্রকাশ করেন- '৭৫ইং সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য বা গনতন্ত্র হত্যা করার জন্য @১৫ই আগষ্টের নির্মম হত্যাযজ্ঞটি সংঘঠিত হয়েছিল। আমি মনে করি তাঁরা হয় না জেনে বলছেন, নয় তারা ভাল করে জানেন বিধায় বংঙ্গবন্ধুর মহত্বকে খাটো করে উপস্থাপন করার হীনমন মানষীকতায় ভোগার কারনেই কথাটা বলেন।বাকশাল প্রতিষ্ঠার ঘোষনা দেয়ার এক বছর আগে বংঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার চেষ্টা হয়েছিল-তখন কেন হত্যা করার চেষ্টা হল? দু::খ্যজনক হলেও সত্য যে, তারাই বলার চেষ্টা করেন বাকশাল একদলীয় শাষন,একনেতার শাষন।তারাই বলেন গনতন্ত্র হত্যা করা হয়েছিল বাকশালের মাধ্যমে।এই প্রসংঙ্গে তাঁরা সংবিধানের অন্যতম ভিত্তি গনতন্ত্রের কথাটা উল্লেখ করতে চান। জ্ঞানপাপীরা গনতন্ত্রের উল্লেখ সংবিধানে ঠিকই দেখেন,গনতন্ত্রের সাথে সমাজতন্ত্র এর সংজ্ঞায় কি সুনির্দিষ্টতা আছে বেমালুম দেখেন না। চিরন্তন সত্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধু একদিনের জন্যও সংবিধানের বাহিরে গিয়ে দেশ শাষন করেননি।কোন অবস্থায় বাকশাল একদলীয় শাষন ছিল না।একনেতার শাষনও ছিল না। মূলত: বাকশাল ছিল সব রাজনৈতিক দল,পেশাজীবি, রাজনীতিবীদ, শুসীল সমাজের সমন্বয়ে গঠীত জাতীয় উন্নয়ন, ন্যায়ভিত্তিক আইনের শাষন প্রতিষ্ঠার চলমান সংবিধান সম্মত 'জাতীয় দল।' বাকশালের উদ্দেশ্য ছিল অবশ্যই সংবিধান স্বীকৃত, মুক্তিযুদ্ধের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিক। যে উদ্দেশ্যে বা যে স্বপ্ন নিয়ে তৎকালীন পুর্ব পাকিস্তানের আপামর জনগন ১৯৭১সালে মুক্তি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল-শোষন মুক্ত, ধর্মনিরপেক্ষ,গনতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষকে সামনে রেখে--তাঁরই বাস্তব রুপায়ন হচ্ছে "বাকশাল"। আঁতুড় ঘরে হত্যা করা দর্শনের বিরুদ্ধে একতরফা ২১ বছর অপ্প্রচার চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর মহৎ দর্শনকে জনমনে ভীতিকর শাষন ব্যাবস্থা রুপে চিত্রিত করার তাঁদের চেষ্টা শতভাগ সফল হয়েছে আওয়ামী নেতাদের এইভসম্পর্কীত বিষয়ে বাস্তব কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করার কারনে। আমি নিবিড়ভাবে পয্যবেক্ষন করে দেখেছি- আওয়ামী লীগের বহু বড় নেতার আলোচনায় অংশ নিয়েছি,আওয়ামীঘেষা বহু বুদ্ধিজীবির প্রবন্ধ নিবন্ধ পড়ে দেখেছি-কারো আলোচনা বা লেখনীতে বাকশালের বিস্তারীত বিবরণ তেমন ভাবে বিধৃত হয়নি। বিরুধীরা ইনীয়ে বিনীয়ে আওয়ামীলীগ বাংলাদেশের শাষন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে- যে দোষ বড় করে দেখাতে চায় "বাকশাল" এই বুঝি হয়ে গেল।তুলনা মুলক আওয়ামী নেতারা 'বাকশালের' মহত্ত প্রচার ও প্রসারে বা লেখালেখিতে বিরুধীদের তুলনায় একেবারে নগন্যই বলা চলে। আওয়ামী নেতারা উপলব্দি করার আদৌ কোন চেষ্টা কস্মিনকালেও করেনি যে- ' বাকশাল' দর্শনেই জাতীর জনকের সকল মহত্ত নিহীত।তৎসময়ের দুই পরাশক্তির শীতল যুদ্ধের কারনে বিশ্ব দুই শিবিরে বিভক্ত ছিল-এই সত্যটি অস্বীকার করার কি কোন উপায় আছে? মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিরুধীতাকারী শক্তি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহযোগীতাকারী শক্তি সমাজতান্ত্রীক বিশ্ব- ইহা কি মিথ্যা? সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ দুইয়ের মাঝামাঝি অবস্থানে থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহন করার বিকল্প রাজনৈতিক কোন অবস্থান কি ছিল বা এখনও আছে? পরাশক্তিদ্বয়কে অবজ্ঞা করে সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শাষনকায্য পরিচালনা, উন্নয়ন, অগ্রগতি, সামাজিক স্থীরতা নিশ্চিত করার বিকল্প রাজনৈতীক অবস্থান আর কি হতে পারে? রাষ্ট্রীয় নীতি স্থীরকৃত ছাড়া শাষন ব্যবস্থা কি করে গড়ে তোলা সম্ভব হত? বৃটিশ-পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামো একান্তই যদি পরিবর্তনের প্রয়োজন না থাকে তাহলে দেশ স্বাধীন করার কি এমন কারন ছিল? ৪৫ বছর শাষক শ্রেনীর আইনী কাঠামো যথারীতি অনূসরন করে বাংলাদেশ কি কাংখিত উন্নয়ন অগ্রগতি লাভ করেছে? সমাজ কি শোষন বঞ্চনার হাত থেকে রেহাই পেয়েছে? সম্পদের সুষম বন্টনের নীতি কি অনুসৃত হয়েছে? ধনী কি আরো ধনী হয়নি? বাইশ পরিবারের স্থান কি বাইশ হাজার পরিবার দখল করেনি? ধনীক শ্রেনী সৃষ্টির জন্যই কি মুক্তিযুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল? মুক্তিযুদ্ধের কোন অঙ্গীকারই কি ছিলনা? যদি কোন উদ্দেশ্য নাইবা থাকে তবে কেন, কি উদ্দেশ্যে আপামর নিরস্ত্র বাঙ্গালীজাতী সসস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল? মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি সমূহের একতরফা অপ-প্রচারের কারনে জনমনে 'বাকশাল' সম্পর্কে প্রচুর বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সম্মূখ্যে বাকশালের ইতিবাচক দিকগুলী এবং তখনকার সময়ের বিশ্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আর্থসামাজিক পরিস্থীতি তুলে ধরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির প্রয়োজন ছিল। সেই দায়িত্ব যদি তাঁরা বা অন্য কোন মহল বিবেকের তাড়নায়ও কাঁধে তুলে নেয়- তাহলে বঙ্গবন্ধুর পরিপক্ক রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্ব পূর্ণ অংশ সম্পর্কে নতুন প্রজর্ম্মের বহু ভুল ধারনার অবসান হতে পারে,এই আমার বিশ্বাস। 'জাতীয়দল' গঠনের ধারনা নতুন কোন আবিস্কার নয়, আধূনীক বিশ্বের দেশে দেশে রাজনৈতিক,সামাজিক, অর্থনৈতিক সংকটে এই প্রকৃতির সরকার গঠনের উদ্যোগ সময়ে সময়ে দেখা যায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তাঁর একাধিক বক্তৃতা-বিবৃতিতে 'বাকশাল' যে একটি সাময়িক রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যবস্থা তা উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে যে গনতন্ত্রের চর্চা বা অনুশীলন করা হচ্ছে এই গনতন্ত্র পশ্চিমা ইহুদীদের গনতন্ত্র। আমাদের পবিত্র ধর্ম 'ইসলামে' বর্তমানের অনূসৃত গনতন্ত্রের কোন স্থান নেই। খোলাফায়ে রাশেদীনের শাষনামলে চার খলীফা যে গনতন্ত্রের অনুশীলন করে ইসলামের সৌন্দয্য, মাধূর্য্য, সাম্যতা, সহনশীলতা, ন্যায়পরায়নতা বিশ্বের বিদ্যমান সকল জাতীর নিকট উপস্থাপন করে ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছিলেন-''বাকশাল' দর্শনের গনতন্ত্র" অনেকাংশে সেই একই রুপরেখায় সৃজন করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বাদ প্রত্যেক নাগরীকের ঘরে পৌছে দেয়ার লক্ষে বঙ্গবন্ধু 'বাকশাল' গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সহজ ভাবে বলা যায়- বিদ্যমান সমবায় সমিতি গুলি যে রুপরেখায় পরিচালিত হয়ে সমিতি ভুক্ত সদস্যদের জীবনমান উন্নয়ন করে চলেছে- একইভাবে 'বাকশাল' কে "বৃহত্তর জাতীয় সমিতি" আকারে চিন্তা করলেও- আদৌ ভুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। সমবায় সমিতিশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক ইউনিয়ন, ব্যাংক, বীমা, স্বায়ত্ব শাষিত প্রতিষ্ঠান সমুহের নির্বাচনে যদি গনতন্ত্র অনুসৃত হয় তবে 'বাকশালে'কেন নয়?এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান গুলীর পরিচালনায় যদি গনতন্ত্রের ব্যাঘাত ঘটে থাকে তাহলে ধরে নিতে পারি 'বাকশাল' দর্শনের গনতন্ত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি হত। বিরুদীদের ভয়ের কারন 'বাকশাল' নয়, বাকশাল দর্শনের 'মহত্বে'। 'বাকশাল' মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়ে মর্মানুযায়ী দেশ পরিচালিত হলে স্বাধীনতা বিরুদী রাজাকার, আলবদর, সাম্প্রদায়ীক শক্তি সমূহের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না।কোনপ্রকার সাম্প্রদায়ীকতার স্থান ইসলামে নেই-এই সত্যটি যারা বিশ্বাস করেনা তাঁরাই অসাম্প্রদায়ীক চেতনায় বিশ্বাসীদের নাস্তিক, ধর্মদ্রোহী ইত্যাদি বলে নীজেদের পাঁপকে আড়াল করার চেষ্টা করেন। মানবতার ধর্ম ইসলাম- যে গনতন্ত্রের সমর্থন করে না সেই গনতন্ত্রের চর্চায় নিজেদের নিমগ্ন রেখে প্রকারান্তরে ইসলাম ধর্মের সৌন্দয্যকেই অস্বীকার করেন। সমগ্র মানব জাতীর কল্যানে প্রেরীত হওয়ার কারনে ইসলাম ধর্ম সার্বজনীন ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সার্বজনীন ইসলাম ধর্মকে সাম্প্রদায়ীক গোষ্ঠি তাঁদের নীজেদের স্বার্থ্য সিদ্ধির উদ্দেশ্যে একক জাতী 'মসুলমানের' ধর্মে রুপান্তর করে প্রকারান্তরে মহান আল্লাহর হুকুমের সরাসরি বিরুদীতা করে চলেছে। বঙ্গবন্ধু প্রথম জীবনে রাজনীতিতে ভুল করেনি। নিখিল ভারত মুসলিম লীগের ছাত্র রাজনীতি করার প্রাক্কালে পাকিস্থান সৃষ্ট্রিতে গুরুত্ব পূর্ণ ভুমিকা রেখেছিলেন। ১৯৪০সালের লাহোর প্রস্তাবের ৩নং ধারায় পরিষ্কার উল্লেখ ছিল, ভারতবর্ষকে এমন ভাবে ভাগ করতে হবে, উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে একাধিক মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা সমুহে,একাধিক স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হবে।এই ধারাটিকে বাস্তবে রুপ দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু ছাত্র থাকা অবস্থায় পাকিস্থান সৃষ্টির পক্ষে জোরালো ভুমিকা রেখেছিলেন।তাঁর সমসাময়ীক নেতা কাস্মীরের শেখ আবদুল্ল্যা 'কংগ্রেস' পক্ষে থাকায় স্বাধীনতা দুরের কথা, জীবনের সবচেয়ে মুল্যবান সময় জেলেই কাটাতে হয়েছে।তাঁরই একান্ত বন্ধু রাজনৈতিক গুরু নেহেরুর শাষনামলে কাস্মীরের স্বাধীনতা দাবি করায়। ১৯৪৫ ইং সালে দিল্লি কনভেনশনে কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যদি 'দ্বিজাতী তত্ব' প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য 'বঙ্গবভঙ্গ 'সংশোধন না করতেন তাহলে ১৯৪৭ ইং সালেই পুর্ববঙ্গ-পশ্চিমবঙ্গ মিলে একটি অথবা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র সৃষ্ট্রি হত।জিন্নাহ পরবর্তীতে তাঁর ভুল বুঝতে পেরে মৃত্যুর আগে আপসোসও করেছেন।তাঁর প্রমান পাওয়া যায় তাঁর 'ব্যাক্তিগত চিকিৎসক কর্নেল এলাহী বক্সের নিকট থেকে।' বিশিষ্ট সাংবাদিক মোহাম্মদ মোদাব্বের হোসেন করাচিতে অনুষ্ঠিত 'সম্পাদকদের সম্মেলনে' এই তথ্য প্রকাশ করেন।তথ্যসুত্র:-(সাংবাদিকের রোজনামচা)। ছাত্র মুজিব বাঙ্গালীর স্বাতন্ত্রতা বুঝতে তখন ভুল করেনি-পরিপক্ষ মুজিব দেশ গড়ায় ভুল করবেন!! যারা বলেন বাকশাল' একদলীয় শাষন-তাঁরা হয় বোকা নয়তো বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি, এছাড়া আর কিছুই নয়। নির্বাচিত সরকার ও সেই সরকারের পাহাড়সম জনপ্রীয় নেতাকে উৎখাত ও হত্যার পাপ মোচন করার জন্য আঁতুড় ঘরের বাসিন্দা 'বাকশাল' সম্পর্কে অপপ্রচার চালিয়েছে।,বর্তমানের লেখক বুদ্ধিজীবি, আওয়ামী লীগের নেতারা কেন বঙ্গবন্ধুর জীবনের সবচেয়ে স্বর্ণালী অধ্যায়,আজীবনের লালিত স্বপ্ন,বঙ্গবন্ধুর মৌলিক রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে আলোকপাত করেন না--তা বোধগম্য নয়।যে আদর্শকে কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহল এখনও তাঁদের গলার ফাঁস মনে করে সর্বদাই জনমনে আতংক সৃষ্টির কৌশল হিসেবে ব্যাবহার করে চলেছে। "জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু"

  বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ সংক্ষেপে"বাকশাল" বঙ্গবন্ধুর পরিপক্ক রাজনৈতিক জীবনের অমূল্য রাজনৈতিক দর্শন। বিশ্বের শোষিত বঞ্চিত স্বাধীনতাকামী জনগন মুক্তির দিশা বাকশালে খুঁজে পেলেও প্রচারের অভাবে বাংলাদেশে আতংকের নামেই পরিচিতি পেয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন