জাতির জনক হত্যায় জিয়ার সম্পৃত্ততা যাছাইয়ে কমিশন গঠনের উদ্যোগ---


বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার সম্পৃত্ততা যাছাইয়ে কমিশন গঠন।
আগুন সন্ত্রাস, লুটতরাজ,বিচার বিভাগকে অবজ্ঞার অপরাধে"সাংবিধানীক বাধ্যবাধকতার"প্রতি নজর দিন।
==================

              পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে-মেজর জিয়ার বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে কতটুকু সম্পৃত্ততা আছে তা যাচাইয়ের জন্য সরকার একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন  করার উদ্যোগ নিচ্ছেন।খবরটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যে কোন ব্যাক্তি বা দলকে উজ্জীবিত করবে নি:সন্দেহে। এই ধরনের কমিশন অনেক আগেই করা উচিৎ ছিল-যাইহোক দেরীতে হলেও সরকারের বোধদয় হয়েছে এতেও জনগন খুশী। বিভিন্ন সভা সমাবেশে বিগত চল্লিশ বছর শুধু বলেই আসছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যাক্তি এবং দলগুলী জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের মুল কুশীলব এবং নেপথ্যের প্রধান নায়ক।কোন সরকার বক্তব্যটির সত্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহন করেনি-বর্তমান সরকার জনগনের নাড়ীর খবর হয়ত বুঝতে পেরে দেরীতে হলেও উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন।আমি মনে করি বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকার  জন্যেও বিতর্কটির মীমাংসার প্রশ্নে সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত: জানানো উচিৎ-আশা করা যায় জানাবেও।
   এই প্রসঙ্গে আরো কতিপয় বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন-বিএনপিকে স্বচ্ছ, গনমূখী, গনতান্ত্রীক রাজনৈতিক দলে রুপান্তরের জন্য।যেহেতু গনতান্ত্রীক দেশে একাদিক গনতান্ত্রীক দেশপ্রেমী রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব থাকা একান্ত বাঞ্চনীয় সেই বিবেচনায় সামরিক চাউনী থেকে জম্ম নেয়া বিএনপি সামরিক উর্দী পরিহার করলেও আচার আচরন, দলীয় কর্মকান্ড, সরকার পরিচালনা, নেতা নির্বাচন, পারিবারীকিকরন, লুটপাট  ইত্যাদি আবশ্যকীয় বিষয়গুলীতে একনায়কতান্ত্রীকতা  এবং দেশের সম্পদ ব্যাক্তিগত সম্পদ বিবেচনা পরিহার করতে পারেনি। দেশের প্রচলিত আইন-আদালতকে অবজ্ঞা করার মানষিকতা থেকেও দলটিকে বের করে আনার প্রয়োজনে বর্তমান সরকারের কিছু পদক্ষেপ নেয়া অতীব প্রয়োজন আছে বলে- আমি মনে করি। যেহেতু-যেভাবেই হোকনা কেন রাজনৈতীক দল হিসেবে বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি প্রতিষ্ঠিত শক্তি -এই সত্যটি অস্বীকার করার কোন উপায় আছে বলে আমি মনে করিনা।সুতারাং দলটিকে স্বচ্চতায় ফিরিয়ে আনতে নিম্নের বিষয়াবলী গুলীর প্রতি বর্তমান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি--
    ইহা একান্ত সত্যযে-দেশের প্রচলীত আইন-আদালতকে অবজ্ঞা করে দীর্ঘ বছর অবৈধ ভাবে বিদেশে বসবাস করে তারেক আদালতের এবং বালাদেশের ভাবমুতি নষ্ট করছেন।একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের পুত্র পরবর্তীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পূত্র আইনের সম্মুখীন না হয়ে বিদেশে অবৈধ ভাবে বসবাস করা কতটুকু যুক্তিপুর্ন হচ্ছে-তা দেশের বিবেক বান মানুষের নিকট বিরাট প্রশ্ন হিসাবে দেখা দিয়েছে।
     ১ /১১ এর সময় সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ও  ২য় ছেলে মরহুম কোকো বাংলাদেশ সরকারকে কর দিয়ে কাল টাকা সাদা করেছেন।একজন প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবার দেশের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এত বিশাল অংকের কাল টাকার মালিক কিভাবে হলেন দেশ বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। বিষয়টি বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি দারুন ভাবে প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছিল। একটা পরিবারের জন্য বাঙলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগন বার বার লজ্জায় মাথা হেট করে বিদেশীদের চোর আখ্যা শুনতে হবে ইহা কি করে সম্ভব। শীর্ষ রাজনীতিবীদ বা কোন দলের শীর্ষনেতা যদি নীতিহীন-দুনীতিগ্রস্ত হয়, সেই দলের অপরাপর নেতারাও দুনীতি পরায়ন হওয়া স্বাভাবিক।শীর্ষনেতারা দুনীতি করে বা অনৈতিক ভাবে টাকা রোজগারে লিপ্ত থাকে-এইরুপ সমসাময়িক বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। দুর্নীতিবাজ নেতা খুজে নিতে সময়ের প্রয়োজন হতে পারে-কোন দুনীতিতে লিপ্ত নেই, এই প্রকৃতির নেতা খুজে নিতে সময়ক্ষেপনের প্রয়োজন হয় না।
      অনেকের নিকট কথাটার সত্যতা নাও থাকতে পারে-তাদেরকে গভীরভাবে বর্তমান বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবীদ ও সরকার সমুহের প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ করার অনুরোধ করবো। আমাদের দেশের বেশীরভাগ  নাগরিকের চিন্তা চেতনায় গভীর ভাবে প্রোথিত যে-নেতাই দুনীতিবাজ, নেতা হয় শুধু দুনীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, কমিশন, টেন্ডারবাজী, সরকারি সম্পত্তি দখল ইত্যাদি কর্মকান্ডের মাধ্যমে টাকা রোজগারের জন্য। নাগরিকদের মনে এই ধারনা বদ্ধমুল হওয়ার পিছনে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করে সামরিক, বেসামরীক আমলা, ব্যবসায়ীদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার অথবা ব্যাংকে জনগনের গচ্ছিত অর্থ  এবং সরকারি সম্পদ ব্যবহার করে রাজনৈতিক দল গঠন অন্যতম কারন।  বাংলাদেশের জনগন নীজেদের চোখে যাহা দেখেছে তাহাই তাঁদের পক্ষে অবশ্যই অকাট্য যুক্তি।
  নিয়মতান্ত্রীক রাজনীতি এবং জনগনের মধ্য থেকে রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি হলে এমনটি হ'তনা।বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং অন্যান্ন গুটিকতক সামরিক সরকার কতৃক শাষিত দেশ ব্যাতিরেকে গনতান্ত্রীক দেশের ক্ষেত্রে সর্বাংশে তদ্রুপ নয়-তাহা একটু গভীর মনোযোগে চিন্তায় নিলে স্পষ্ট ধারনা পাওয়া যেতে পারে।সারা বিশ্বের দেশ সমুহ শাষন করে কোন না কোন ভাবে রাজনীতিবীদরাই।আবহমান কাল থেকেই নিয়মটি প্রত্যেক দেশেই কমবেশী ক্ষনকালের বিরতিতে হলেও পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের বিএনপির শীষনেতা ও তালঁর পরিবার এবং ফিলিফিন্সের মার্কোস পরিবার ব্যাতিরেকে দুর্নীতিবাজ সরকার বা রাজনীতিবীদ কয়টি আছে  কেউ কি বলতে পারবেন? যে দেশে- যে শীষনেতা বা তাঁর পরিবার দুনীতিতে জড়িয়েছেন-তার দল বা তার পরিবার রাজনীতি থেকে ছিটকে ইতিহাসের অতলগব্বরে হারিয়ে গেছেন।ফিলিফাইনের মাকোস পরিবার প্রমানীত দুনীতিবাজ হওয়ার পর ফিলিফাইনের রাজনীতি থেকে ঐ পরিবার হারিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।তবে তৃতীয় বিশ্বের নেতাদের মধ্যে দুনীতির কিছুটা উদাহরন থাকলেও উন্নত বিশ্বে ছিটে ফোঁটাও মেলানো দুষ্কর বলা যায়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিক্সনের ওয়াটারগেট কেলেংকারির কথাটি কারো মনে জাগতে পারে তবে ইহা কোন প্রকার অর্থসংক্রান্ত বিষয় নয়। রাজনীতির শীর্ষ পয্যায়ে থেকে ভোগ বিলাশের নিমিত্তে অনৈতিক টাকা আহরনের বিষয়ই আমার প্রতিপাদ্য। প্রায় দেশের রাষ্ট্র নায়কদের বহু ধরনের কেলেংকারি পাওয়া যেতে পারে-অথনৈতিক বিষয়ক কেলেংকারী খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য-'আমার আলোচ্য বিষয়।" রাষ্ট্র পরিচালক সে যে দেশেরেই হোক, অর্থবিষয়ক কেলেংকারিতে জড়িত আছে প্রমানিত হলেই--তারপরিবারের জন্য রাজনীতির কবর হতে বাধ্য। রাজনৈতিক অংগন থেকে অসম্মান-অপদস্ত হয়ে বিদায় নিতে হয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে উক্ত নিয়মের ব্যতিক্রম হবে আশা করা যায়না।দীঘ নয় বছর দেশ শাষন করার পর-'জাতীয়পাটি চেয়ারম্যান জনাব এরশাদ দুনীতির কারনে গনআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা চ্যুতির প্রায় ৩০বছর অতিক্রান্ত হ'তে চলেছে -ক্ষমতাসীন সরকারের আনুকুল্য পাওয়া সত্বেও রাজনীতিতে ভাল অবস্থানে পৌছাতে পারেননি'।দিন যতই গড়াচ্ছে ততই তার দল বা তিনি নিজেও অন্য দল বা ব্যক্তির উপর নিভর হয়ে রাজনৈতিক ময়দানে উপস্থীতি জানান দিচ্ছে। দিনেদিনে দল ছোট হয়ে বিলিন হুওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।রাজনীতিতে বারংবার ভুলের কারনেও একসময়ের গনমুখী রাজনৈতিক দল এবং জনগন নির্ভর রাজনৈতিক দল রাজনীতির ময়দান থেকে হারিয়ে যাওয়ার উদাহরন এই উপ মহাদেশেই বিদ্যমান আছে। পাকিস্তান রাষ্টের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দানকারি দল মুসলীম লীগ-বাংলাদেশের স্বার্থ এবং সর্বশেষ মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থানের কারনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দান থেকে অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে-ইহা কিন্তু বেশিদিন আগের কথা নহে।মেজর জিয়া কতৃক প্রতিষ্ঠিত বিএনপি যে ভাবেই ক্ষমতায় আসুকনা কেন -কয়েক বারই বাংলাদেশের সরকার পরিচালনা করেছে। ভাল করেছে মন্দ করেছে আমি সে দিকে আলোকপাত করবো না। জিয়া পরিবার ২০০৬ইং সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর, খালেদা জিয়া এবং তার সন্তান তারেক জিয়া ও কোকো সরকারকে যথা রীতি টেক্স প্রদান করে কালোটাকা সাদা করেছেন- 'প্রমানীত চিরন্তন সত্য।' যে পরিবারের বাংলাদেশ কয়েকবার শাষন করার সৌভাগ্য হয়েছে-একটা বৃহৎ দলের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন দুই যুগেরও অধিক সময়-সেই দলের প্রধান বা তার পরিবার কাল টাকা সাদা করতে পারে ইহা সপ্তম আচায্য থেকেও আরও বড় বিষ্ময় সৃষ্টিকারি ঘটনা। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজীর আছে কিনা আমার জানা নেই-যদি থেকে থাকে বলতেভপারেন। এখানে বিষয়টা অনেকেরই জানার বাহিরে রয়ে গেছে বা সঠিকভাবে অনেকেই বুঝতে পারেননি-'আসলে কাল টাকা কি?' আমার ক্ষুদ্রজ্ঞানে আমি যতটুকু বুঝি-''কাল টাকা হচ্ছে সেই টাকা- আইনসিদ্ধ কোন আয়ের উৎস না থাকা সত্বেও বহু টাকার মালিক হওয়া' অর্থাৎ আইনসিদ্ধ'আয় বহিভুত টাকা"।"
   আরো সহজ ভাবে বলা যেতে পারে-' নিদিষ্ট বা ঘোষিত সম্পদ থেকে বছরান্তে যে আয় আসার কথা তার চাইতে বেশী টাকা যদি কারো নিয়ন্ত্রনে বা হেফাজতে থাকে- 'তাকেই কালো টাকা হিসেবে অভিহীত করা হয়।'
     এখন প্রশ্ন হল জিয়া পরিবারের নিকট কাল টাকা জমা হওয়ার উৎস কোথায় থেকে এল? কি ভাবে এত কাল টাকার মালিক হলেন?কি করে সম্ভব হল?একটা দেশের প্রধান এবং পরিবারের সকল সদস্য কালটাকা আহরনের রাস্তাই বা কি করে পেলেন?কোন রকমেই বিশ্বাস করার কোন কারনই হত না-"যদি তারা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে সরকারী কোষাগারে নিদিষ্ট পরিমান কর পরিশোদান্তে কালটাকা সাদা না করতেন"।    
       এরশাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুনীতির  অভিযোগ ছিল।  আইনী লড়াই করে অনেক অভিযোগ থেকে নিস্কৃতিও পেয়েছেন- কিন্তু মানুষের মন থেকে দুর্নীতির অভিযোগ দুরীভুত করতে পারেননি। এরশাদের ক্ষেত্রেও কাল টাকা সাদা করার প্রমান-আমার মনে হয় নেই। জিয়া পরিবারের ক্ষেত্রে তাঁরা নীজেরাই স্বীকৃতি দিয়েছে -"তাঁরা দুর্নীতিবাজ"।উন্নত বিশ্বের কোন দেশে এমনটি যদি হত-" কত বছর জেলে থাকতে হত- তার কোন হিসাব করা যেতনা।"
    জিয়া পরিবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবার ফিরে আসতে পারবে-'কস্মিন কালেও বিশ্বাস করার কোন কারন নেই'। জনস্বার্থে জিয়া চ্যারিটেবল ফান্ড গঠন করেছে-'ইহা প্রসংশার দাবী রাখে নি:সন্দেহে।' ঈজেদের পারিবারীক টাকা হলেও চ্যারিটেবল ঘোষনার সাথে সাথে  ইহা জনগনের সম্পদে রুপান্তরীত হয়ে গেছে। স্বেচ্ছাচারীতার মাধ্যমে সেই ফান্ড থেকে টাকা উত্তলন করে নীজের ভোগ বিলাসের জন্য খরছ করার অধিকার চ্যারিটেবল ফান্ড গঠনকারীর থাকেনা। বর্তমানে তদ্রুপ মামলায় যদি শাস্তি হয়, খালেদা জিয়া জেলে যেতে হয় তাঁর দায় কি বাংলাদেশ সরকারের? মামলায় যথারীতি হাজিরা না দেয়া কি অনৈতিকতার মধ্যে পড়ে না?এই ব্যাপারে আমাদের সংবিধান কি বলে দেখা যাক-(ধারা ২০)অধিকার ও কর্তব্যরূপে কর্ম--(১) কর্ম হচ্ছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরীকের পক্ষে অধিকার- কর্তব্যও সম্মানের বিষয়, এবং “প্রত্যেকের নিকট হইতে যোগ্যতানুসারে ও প্রত্যেককে কর্মানুযায়ী”-এই নীতির ভিত্তিতে প্রত্যেকে স্বীয়কর্মের জন্য পারিশ্রমিক লাভ করবেন৷ (২) রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করিবেন-'যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোন ব্যক্তি অনুপার্জীত কোন আয় ভোগ করিতে সমর্থ হবে না এবং যেখানে বুদ্ধিবৃত্তিমূলক ও কায়িক-সকল প্রকার শ্র্রম, সৃষ্টিধর্মী প্রয়াস ও মানবিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণতার অভিব্যক্তিতে পরিণত হবে ৷ নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য-(ধারা ২১) এর (১) সংবিধানও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা-নাগরীক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরীকের কর্তব্য৷ (২) সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ব্যক্তির কর্তব্য৷। (২০)১এ কর্মকে সম্মানের আসনে স্থান দেয়ার কথা বলা আছে। কর্মের জন্য নির্দিষ্ট বেতন ভাতার পাওয়ার অধিকারের কথা বলা আছে। (২০) ২ এ পরিষ্কার বলা আছে অনৈতিক উপার্জন কোন অবস্থায় ব্যক্তি ভোগ করিতে পারবে না। (২১) ১এ কি লিখা আছে সবাই আমরা দেখতেই পাচ্ছি। জিয়া চ্যারিটেবল বা জিয়া অর্ফানেজ বাংলাদেশ সরকারের দুটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান।অনৈতিক ভাবে বা যথেচ্ছভাবে দু'টি প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করা বা অর্থ আত্মসাৎ করা আইনের দৃষ্টিতে-বাংলাদেশের সংবিধানের দৃষ্টিতে বেআইনী।
    সুতারাং জিয়া পরিবার প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের প্রতিষ্ঠাতা হলেও তা যথেচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারেননা। উল্লেখীত মামলায় যদি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বেগম জিয়া ভোটে দাঁড়ানোর সুযোগ হারান-তাঁর দায় আওয়ামী লীগকে কেন নিতে হবে? সংবিধানের প্রস্তাবনায় পরিষ্কার ভাবেই উল্লেখ আছে-'প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক নাগরীক আইনের দৃষ্টিতে সমান'।যদি মনে করা হয়-খালেদা জিয়া বাংলাদেশের বিশেষ নাগরীক-বিশেষ নাগরীকের কোন সংজ্ঞা কি বিদ্যমান সংবিধানে আছে? যদি তদ্রুপ না থাকে-খালেদা জিয়াকে বারংবার মামলার তারিখ পেছানোর সুযোগ দিয়ে আদালত কি সংবিধানের সমান সুযোগের প্রস্তাবনার ধারাকে উপেক্ষা করছে না? তারেক জিয়াকে পালিয়ে থাকার সুযোগ দিয়ে এবং বৃটিশ সরকার কতৃক তাঁর চলাচলে বিভিন্ন নিষেদাজ্ঞা আরোপ করে বাংলাদেশকে কি অপমানিত করা হচ্ছেনা ? একব্যাক্তির জন্য বাংলাদেশ বিদেশী কোন রাষ্ট্রের নিকট হেয় প্রতিপন্ন হতে হবে ইহার কি কোন বিহীত রাষ্ট্রের করার নেই? রাষ্ট্র কেন এতগুলী মামলার আসামী হওয়ার পরও তাঁকে বিদেশের মাটিতে অবস্থানের সুযোগ দিচ্ছে--রাষ্ট্রের নাগরীকদের কি ইহা জানার অধিকার নেই?
    কেন তারেক জিয়াকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে না? ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মানবতা বিরুধী অপরাধের সাথে জড়িত ছিল-দীর্ঘ বছর পর হলেও জাতী তাঁদেরকে বিচারের আওতায় এনেছে। বি,ডি,আর বিদ্রোহের মানবতা বিরুধীদের বিচারও হচ্ছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারার জন্য কি মানবতা বিরুধী অপরাধ হয়নি?
     মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার অপরাধে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচারের ব্যাবস্থা করবেন মহান সংসদে বলেছিলেন।সেই ট্রাইবুনাল কবে নাগাদ হবে জাতী কি জানার অধিকার নেই? কেন - কি কারনে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বীত  হচ্ছে জাতী  জানতে চায়। কোন পরিবারের সদস্য বিদেশে পালিয়ে থাকা অবস্থায়ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে, ক্ষমতায় থেকে বিশাল কাল টাকার মালিক হবে,দিনের পর দিন মামলায় হাজিরা না দিয়ে আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাবে, আন্দোলনের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করবে,  মানুষ কে আগুন দিয়ে জ্যান্ত মেরে পেলবে-'তারপরেও রাষ্ট্র তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিবে না!' -ইহা কি সংবিধানের সুস্পষ্ট লংঙ্গন নহে? সংবিধানের অঙ্গীকারনামায় সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ আছে যে,- "আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে-'আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রীক পদ্ধতীতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রীক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;"। সংবিধানের প্রস্তাবনায় রাষ্ট্রের অঙ্গীকারের উল্লেখীত ধারাটি- 'জিয়া পরিবারের ক্ষেত্রে কি কায্যকর হচ্ছে?
    উপসংহারে বলতে চাই-আইনের শাষন সর্বস্তরে প্রতিফলনের লক্ষে এবং আগামী প্রজম্মের জন্য দুর্নীতিমুক্ত রাজনৈতিক দল ও ব্যাক্তির উত্থানের নিমিত্তে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়া এখনি প্রয়োজন। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দ্বারা গঠিত সরকার-সুতারাং মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন বর্তমান সরকারের অন্যতম নৈতিক দায়িত্ব-জনগন আশাও করে তাই।নির্ভেজাল একাধিক গনতান্ত্রীক রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠায় পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি বিদ্যমান দলগুলীকেও গনমুখী, গনতন্ত্রীক, সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান একান্ত জরুরী।
 
              "জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু"



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন