ন্যাপ (ভাসানী) এর মার্কা ধানে'র ছড়া'র তেলেসমাতি।



    মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ক্ষমতার শীর্ষে আরোহন করার পর ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার উদ্দেশ্যে ফিল্ড মার্শাল আয়ুব খাঁনের পথ অনূসরণ করেন। প্রথমে তিনি হাঁ-না ভোটের আয়োজন করে তাঁর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকে জায়েজ করার পদক্ষেপ গ্রহন করেন । প্রতারণা পূর্ণ হাঁ-না ভোট দেশে বা বিদেশে কোথাও তেমন গ্রহনযোগ্যতা না পাওয়ায় সঙ্গত কারনে তাঁর রাজনৈতিক দল গঠন করার প্রয়োজন দেখা দেয়।
      তিনি প্রথমবস্থায় বর্তমানে গঠিত ঐক্যফ্রন্টের মতই বিভিন্ন দলের দলচ্যুট নেতা,  মুসলিমলীগ, পিডিপি, ভাসানী ন্যাপ সহ আরো কতিপয় দল নিয়ে 'বিচারপতি আবসুস ছাত্তারের সমন্বয়ক করে জাতীয় গনতান্ত্রিক দল '(জাগদল)' নামে একটি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন করেন। '৭৯ এর দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচন ঘোষিত হওয়ার পুর্বে তাঁর নেতৃত্বে "জাগদল" রাজনৈতিক জোটকে  'বাংলাদেশ ন্যাশানালিষ্ট পার্টি' (বিএনপি) নামে রাজনৈতিক দলে রুপান্তর করেন। এবং  উক্ত দলের চেয়াম্যাপার্সন হিসেবে মেজর জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বেসামরিক রাজনীতিতে  হাতে খড়ি নেন।
 যেহেতু জিয়ার সৃষ্ট দলটি নতুন সৃষ্ট রাজনৈতিক দল ছিল, সেহেতু নির্বাচন কমিশনে উক্ত দলের বিপরীতে কোন নির্বাচনী মার্কা রেজিষ্টার্ড ছিলনা।   মালানা আবদুল হামিদ খাঁন ভাসানী'র দল ন্যাশানাল আওয়ামী পার্টির মার্কা ধানের শীষ ছিল বাংলাদেশের জনগনের নিকট খুবই পরিচিত মার্কা।'৭৩ এর নির্বাচনে ঐ মার্কায় তাঁর দল নির্বাচনে অংশ গ্রহন করায় মার্কাটি নির্বাচন কমিশনে রেজিষ্ট্রি ভুক্ত ছিল।
   মেজর জিয়াউর রহমান উক্ত মার্কাটি তাঁর নির্বাচনী মার্কা বিবেচনা করার জন্যে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠান। মাওলানা সাহেব নিজে এবং তাঁর দল ন্যাপ তখনকার সময় বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী  থাকা সত্বেও, তাঁর মার্কা চিনতাইয়ের আপত্তি জানাতে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার সাহষ দেখাতে পারেননি।
  নির্বাচন পরবর্তিতে  সরকারে থাকাবস্থায় জিয়ার মৃত্যু হলে ক্ষমতার রদবদলে জেঃ এরশাদ বাংলাদেশের ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে আর্বিভূত হন। তাঁর সরকারের নেতৃত্বে '৮৬ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে উক্ত নির্বাচন বিএনপি সহ বেশ কিছু দল অংশগ্রহন করা থেকে বিরত থাকে। '৮৮ সালের সাধারন নির্বাচনে জাসদ রবের নেতৃত্বে বৃহত্তর জোট 'মশাল মার্কায়' আংশ নিলেও আওয়ামীলীগ, বিএনপি সহ প্রতিষ্ঠিত কোন দল উক্ত নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি। ধানের শীষ মার্কাটিও নির্বাচন কমিশনে অব্যাবহৃত  পড়ে থাকে।
   '৯১ এর সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করলে '৭৯ ইং সালের রেজিঃ অনুযায়ী ধানের শীষ বিএনপি'র মার্কা হিসেবে উক্ত দলকেই দেয়া হয়।মার্কাটি মাওলানা ভাসানী প্রথমবস্থায় ভয়ে পরবর্তিতে তাঁর দল আইনগত জটিলতা থাকায় আর পূণঃদ্ধার করতে পারেননি।
     একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গনফোরামের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সাহেবের নেতৃত্বে বিএনপি সহ অপরাপর দল, জোট ও ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট 'ঐক্যফ্রন্ট' গঠিত হয়। ঐক্যফ্রন্ট অধিভূক্ত দল ও জোটের মধ্যে বিএনপি দলের ধানের শীষ, কাদের সিদ্দিকী সাহেবের গামছা, আসম আবদু রবের মাশাল মার্কা ব্যাতিত রেজিঃ ভুক্ত দল ও মার্কার মধ্যে অন্যকোন দলের কোন মার্কা বাংলাদেশের রাজনীতিতে তেমন পরিচিতি নেই।
      তম্মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, জনাব মাহমূদুর রহমান মান্না, ডাঃ জাফর উল্যা সাহেব সহ অনেকগুলী  দলের বিপরীতে নির্বাচন কমিশনে কোন মার্কা রেজিঃ নেই। ইতিপূর্বে তাঁদের দল বাংলাদেশের কোন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহনও করেনি।সঙ্গতকারনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন 'ধানের শীষ অথবা গামছা বা অন্যকোন মার্কা' তাঁর নেতৃত্বের জোটের বরাবরে বরাদ্ধ দেয়ার জন্যে নির্বাচন কমিশনে চিঠি প্রেরণ করবেন বা করতে হবে।
    নির্বাচন কমিশন এইরুপ চিঠি পাওয়ার পর রেজিঃ মার্কার মালিক যদি কোন না থাকে সরাসরি বরাদ্ধ দিতে পারবেন।আর যদি পুর্বে কোন দলের বিপরীতে মার্কাটি রেজিঃ থাকে দলের প্রধান বা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকে চিঠি মারফৎ জানতে চাইবেন তাঁদের কোন আপত্তি আছে কিনা।
  পূর্বের ন্যায় ভয়ভীতির কোন কারন না থাকলেও নির্বাচন কমিশনে রেজিঃ মার্কার মালিক দলের প্রধান বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত নেতা তাঁর দলের পক্ষে অনাপত্তি পত্র প্রদান করবেন। উক্ত অনাপত্তি সনদ নির্বাচন কমিশনে প্রদান করার সাথে সাথে উক্ত দলের রেজিঃ মার্কার উপর দলটির সকল প্রকারের অধিকারের বিলুপ্তি ঘটবে। মার্কাটি নতুন ভাবে দল বা জোটের নামে রেজিঃ ভুক্ত হবে।
   ড. কামাল হোসেন যেহেতু ফ্রন্ট প্রধান সেহেতু তাঁর অনুমতি বা সম্মতি ব্যাতিত নির্বাচন কমিশন আইনতঃ কোন মার্কা ফ্রন্টের বিপরীতে বরাদ্ধ দিতে পারবেন না। তদ্রুপ ঐক্যফ্রন্ট যদি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্টতা লাভ করে তাহলে রাষ্ট্রপতি প্রথমতঃ সংসদীয় দলের প্রধান ঐক্যফ্রন্ট প্রধান ড. কামাল হোসেন সাহেবকে সরকার গঠন করার আহব্বান জানাবেন।
  ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যগন বৈঠকে বসে তাঁদের সংসদ নেতা ড. কামাল হোসেন ব্যাতিত অন্য কাউকে  নির্বাচিত করলেও 'ঐক্যফ্রন্ট' প্রধান ড. কামাল হোসেন সাহেবের স্বাক্ষরিত  চিঠি  রাষ্ট্রপতির হস্তগত হওয়ার পরই কেবলমাত্র নবনির্বাচিত সংসদ নেতাকে সরকার গঠন করার জন্যে রাষ্ট্রপতি আহব্বান জানাতে পারবেন।
  সংখ্যাগরিষ্ট দলের বা জোটের সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যান্ন মন্ত্রীদের নামের তালিকা যতক্ষন না রাষ্ট্রপতি বরাবর প্রেরণ করবেন, ততক্ষন পয্যন্ত বাংলাদেশের নতুন নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ট সংসদ সদস্যদের 'ঐক্যফ্রন্ট সরকার' রাষ্ট্রপতি গঠন করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে বিলম্বে'র কোন কারন উদ্ভব হতে দেখা গেলে, চলমান সরকারকে আরো কিছুদিন দায়িত্ব পালন করার জন্যে রাষ্ট্রপতি অনুরুধ জানাতে হবে।
     নির্বাচন পরবর্তি সময়ে কোন কারনে যদি সংসদ সদস্যগন ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করেন--তাহলে তিনি নির্বাচন কমিশনে তাঁর নেতৃত্বে'র ঐক্যফ্রন্টের রেজিঃ মার্কায় নির্বাচিত উক্ত সংসদ সদস্যদের সদস্যপদ বাতিলের চিঠি প্রেরণ করতে পারবেন। ফলে যে কয়জনের নাম তিনি তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করবেন, সেই কয়জনের সংসদ সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করতে কমিশন বাধ্য থাকবেন।
   নির্বাচন পরবর্তি যদি কোন কারনে ঐক্যফ্রন্টে বিভক্তি ঘটে বা দলগুলী স্ব-স্ব দলের অবস্থানে চলে যায়, সরকার সংখ্যাগরিষ্টতা হারালে রাষ্ট্রপতিকে সরকার প্রধান নতুন নির্বাচন আয়োজনের অনুরুধ করবেন। পরবর্তি নির্বাচনে উক্ত বিভাজন বহাল অনূভব হলে একাদশ সংসদ নির্বাচনের মার্কাটি দ্বাদশ নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বের দল বা জোটের নামে বরাদ্ধা বহাল থাকবে।এক্ষেত্রে একাদশ নির্বাচনে মার্কা সমর্পনকারী দল দ্বাদশ নির্বাচনে নতুন করে অন্য একটি মার্কা বরাদ্ধ পাওয়ার আবেদন করবেন।

     

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা