শেখহাসিনার নেতৃত্বে ১৪দলীয় জোটের অনড় অবস্থান,মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নপূরণের দ্বার উম্মুক্ত প্রায়।

   বাংলাদেশের আপামর জনগনের মনেপ্রানে কামনা ছিল--মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে'র সরকার পরিচালনাকারী জোট ও দল এবং সরকারের বাইরে'র একাধিক বিরোধী দল ও জোট, দেশপ্রেমিক এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি'র অভ্যন্তরের হবে।  জনগন নির্ভয়ে তাঁদের প্রতিনীধি নির্বাচনার্থে ভোট কেন্দ্রে যাবে, তাঁর পছন্দের প্রার্থিকে ভোট দিয়ে এসে নিজ বাসগৃহে নাকে তেল দিয়ে সারারাত ঘুমাবে।  সকালে ঘুম থেকে উঠে নির্ভয়ে  জানতে পারবে, তাঁর প্রদত্ত ভোটে, তাঁর প্রার্থি জিতেছে, নাকি হেরে গেছে। জিতলেও উৎফুল্লতার কিছুই থাকবেনা, হারলেও উৎকন্ঠার কোন ব্যাপার তাঁকে স্পর্ষ করবেনা।
  নির্বাচনের আগে ও পরে কোন দেশবিরোধী অশুভশক্তি  তাঁর ভোটের নাগরিক অধিকার চিনিয়ে নিতে তান্ডব চালাবেনা। মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীন বাংলাদেশের জনগন আরও কামনা করে, কোনদিন কোন জাতীয়, স্থানীয় বিষয় তাঁকে কখনও আশংকিত হতে হবে না। ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট, স্বজনপ্রীতি চিরতরে উচ্ছেদের লক্ষে তাঁর নির্বাচিত সরকার সকল দলের জনপ্রতিনীধিদের সমন্বয়ে সদা সর্বদা কায্যকর ভূমিকা পালন করবে।
  বাংলাদেশের জনগন আরো কামনা করে, বিশ্বের অন্যান্ন দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহনকারীদের বিরুদ্ধে গৃহিত ব্যাবস্থা অনুযায়ী, বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ে বিরূধী শক্তি রাজাকার, শান্তি কমিটি, আলবদর, আলশামস সহ অপরাপর ব্যাক্তি' ও গোষ্টির তালিকা প্রকাশ করা হবে। উল্লেখযোগ্য বা সকলের মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হবে। ৭৫ পরবর্তি সকল খুনের খুনীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে এবং বিচারে প্রাপ্ত শাস্তি রাষ্ট্র যথাযথ কায্যকর করবে। পরবর্তিতে দেশের প্রচলিত আইন ও বিচারের প্রতি  যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে, শাস্তিপ্রাপ্ত সকল ব্যাক্তি ও গোষ্টির সম্পত্তি সরকার রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করবে। প্রকাশিত দেশদ্রোহীদের তালিকানুযায়ী তাঁদের প্রত্যেকে'র বংশ পরম্পরায় শিক্ষা, চাকুরি  সহ অন্যান্ন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত করার আইন সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের ঐক্যমতে অনুমোদন পাবে। সরকারের প্রনীত আইনানুযায়ী রাষ্ট্র অন্ধভাবে ব্যাবস্থা গ্রহন করবে।
   বাংলাদেশের জনগন আরো কামনা করে,তাঁর নির্বাচিত সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষানীতি, আইন ও প্রশাসন গড়ে তুলতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধের উম্মেষদাতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষে দারিদ্রমুক্ত, বৈশম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, গনতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মানে সরকার সর্বতো সচেষ্ট থাকবে। হত্যা, গুম, খুন, দখলবাজী, লুটপাট, ঘুষ, দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর নির্বাচিত  সরকার আন্তরিক হবে। আপামর জনগনের জীবনমান উন্নয়নে তাঁর নির্বাচিত  সরকার সর্বদাই সচেষ্ট থাকবে।
    উল্লেখিত অফুরন্ত, অপরিসীম জনচাহিদা পূরনার্থে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির একমাত্র অবলম্বন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং তাঁর নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির ১৪ দলীয় জোটের গড়া মহাজোট সরকার কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছিল? শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত মহাজোট সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ রাষ্ট্র যথাযথ বাস্তবায়ন করেছে কিনা? বাস্তবায়িত পদক্ষেপ সমূহের ফলাফল সমাজে, রাষ্ট্রে ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটাত্তে পেরেছে কিনা? দীর্ঘযুগের চলমান অশুভ চক্রের রাজনীতি  কল্যানকর রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনে উক্ত পদক্ষেপ সমূহ সহায়ক ভুমিকা পালন করেছে কিনা? রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি সহ রাষ্ট্রের সর্বত্র গুনগত পরিবর্তন দৃশ্যমান হচ্ছে, নাকি অদৃশ্য, অপরিবর্তনীয় রয়ে গেছে??
  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির অভিজ্ঞজনদের উক্ত বিষয় সমূহের চুলচেরা বিশ্লেষন, পয্যালোচনা করার এখনই সময়। আগামী একাদশ নির্বাচনে বিজয় অর্জনের লক্ষে অতীতের শুভ উদ্যোগ সমূহকে অধিকতর প্রাধান্য এবং অশুভ উদ্যোগ সমূহ পরিহার করে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের সময় ঘনিয়ে এসেছে।
  উল্লেখিত বিষয়ে জোটের বিজ্ঞ, অভিজ্ঞজনদের চুলচেরা বিশ্লেষন ও আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণের সুবিধার্থে অজপাঁড়াগায়ের মুজিবাদর্শের এক নগন্য কর্মির সীমিত জ্ঞানে পুর্বাপর সঞ্চিত অভিজ্ঞতা, মহাজোট সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ সমূহের ইতিবাচক মুল্যায়ন এবং উক্ত রাজনৈতিক পদক্ষেপ সমূহের  সামাজিক প্রতিক্রিয়া কিঞ্চিত তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করি।
  এখানে উল্লেখ করতে চাই--যেহেতু নবম সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ১৪দলীয় জোটের প্রকাশিত নির্বাচনী ইশতেহারের আবেদন বর্তমান সময়ও বিদ্যমান রয়ে গেছে। তদানুযায়ী দল, জোট ও সরকারের কর্মকান্ড অদ্যাবদি পরিচালিত হচ্ছে। সেহেতু নবম সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের গৃহিত নির্বাচনী ইশতেহারে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখাই যৌক্তিক মনে করি।
    ১৪ দলীয় জোট ২০০৮ইং সালের ঘোষিত সাধারন নির্বাচনে'র পুর্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে রাজপথেই গড়ে উঠেছিল। ১৪ দলীয় জোটের নির্বাচনী ইশতেহারে'র অন্যতম বৈশিষ্ট ছিল আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।'৭৫ পরবর্তি সময় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে জনগনের চাহিদাও ছিল সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার করার কামনা, বাসনা, ইচ্ছা। ২০০৮ ইং সালে এসে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার গনদাবীটি বিস্ফোরণোম্মুখ আকার ধারন করে। এমনিতে  দীর্ঘকাল আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে হত্যা, গুম, খুন, লুটপাট, দখলবাজী, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, ঘুষ ইত্যাদি অনৈতিক কর্মকান্ড উদ্ভেগজনক ভাবে বেড়ে গিয়েছিল।২০০১--০৬ ইং সালের জোট সরকারের শাসনামলে এসে বাংলাদেশ পরপর ৪বার তাবৎ বিশ্বের দেশ সমূহের মধ্যে দুর্নীতির তালিকায় শীর্ষস্থানে অবস্থান করে। দেশবিরূধী অশুভশক্তির জোট সরকার ২০০১ ইং সালে ষড়যন্ত্রের পথ অনুসরণ করে ক্ষমতায় এসে, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।
  উল্লেখিত সময়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম, এস, কিবরিয়া হত্যা, আহসান উল্যা মাষ্টার হত্যা, ২১শে আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিন্যুয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলায় আই ভি রহমান সহ ২৯ নেতাকর্মীর হত্যা মামলা ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা, সারাদেশে একযোগে ৬৪ জেলায় বোমা হামলা সহ অসংখ্য হত্যা গুম, খুনের বিচার অনুষ্ঠানে সরকারের অনিহা, সমাজের সর্বস্তরে রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবীদ এবং আইনের শাসনের প্রতি জনগনের অনাস্থা, অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা দাঁনা বেঁধে উঠেছিল। সরকারের শীর্ষ পয্যায় দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজী, ঘুষ অনৈতিকতা'র অশুভ ছায়া দেশের রাজনীতি, রাজনীতিবীদদের প্রতি অবিশ্বাস, অনাস্থা, অশ্রদ্ধা, অস্বস্তি, ঘৃনার আগুন প্রজ্বলিত হয়ে উঠেছিল।
    রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিকদের প্রতি অবিশ্বাস, অনাস্থা, ঘৃনার সাময়িক সংকটকে কাজে লাগিয়ে, বাংলাদেশের শাসনব্যাবস্থা, সমাজ, সরকার, রাষ্ট্র, শিক্ষাঙ্গন বিরাজনীতিকরণের প্রস্তাব কোন কোন মহল থেকে প্রকাশ্যে,অপ্রকাশ্যে উত্থাপন করা হচ্ছিল। অশুভ শক্তির এক প্রেতাত্বা জেনারেল 'এরশাদ' ষড়যন্ত্রকারীদের প্রস্তাবনায় সায় দিয়ে, তাঁর দলের ছাত্র সংগঠনের কায্যক্রম শিক্ষাঙ্গনে নিষিদ্ধ করে, তাঁদের প্রচারণায় উৎসাহ দিতে কার্পন্য করেনি।
একশ্রেনীর অদৃষ্টবাদী, নিয়তিবাদী, হতাশাগ্রস্ত মানুষ এবং দেশবিরুধী বিদেশী শক্তির পেইড এজেন্ট সম্মিলীতভাবে সৃষ্ট চক্রান্তের প্রতি একযোগে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছিল। ঢালাও ভাবে রাজনৈতিক দল ও নেতাদের চরিত্র হননের হিড়িক পড়েছিল চতুর্দিকে। উপরিক্তো সময় জোট সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট দেশদ্রোহী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রচারণায় আগুনে ঘৃতাহুতির ভুমিকা পালন করে যাচ্ছিল। জোট সরকার ২০০৬ সালের নবম সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এলে, সংবিধানের রীতিনীতি তোয়াক্কা না করে, একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবারের লুটপাট জায়েজ করার ফন্দি ফিকিরে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিল।
  দেশীবিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিক এই সময়টির অপেক্ষায় ছিলেন। অনৈতিকতায় ভরপুর জোট সরকারের দুর্বলতার সুযোগে সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় ষড়যন্ত্রকারীগন বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে। প্রারম্ভিক সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যধিক্য আশাবাদী, বাস্তবতাবাদী জনগন এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি দীর্ঘকাল সামরিক, বেসামরিক স্বৈরশাসকদের অপশাসনে অতিষ্ট মৌনতাকে ক্ষমতালিপ্সু অরাজনৈতিক সুশীল শ্রেনীর ষড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা গঠিত স্বল্পকালীন সরকার, তাঁদের পক্ষে অন্ধ সমর্থন ভেবে নিয়েছিল।
  জোর পুর্বক ক্ষমতা দখলকারী তিনমাসের অরাজনৈতিক সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার, তাঁদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষে ২বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে তাঁরা বাংলাদেশকে সর্বক্ষেত্রে বিরাজনীতিকীকরণ করার আপ্রান প্রচেষ্টা চালায়।লক্ষপূরণে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের জননন্দিত নেতাদের কারাগারে নিক্ষেপ, দেশত্যাগে বাধ্য করার উদ্যোগ গ্রহন ও বাস্তবায়নের সাহষ দেখাতে তাঁরা কুন্ঠিত বা ভীত হয়নি।
  তাঁদের ভীত হওয়ার কোন কারনও তখনকার পরিবেশে বিদ্যমান ছিলনা। তাঁদের ঝুলিতে তখনকার প্রেক্ষাপটে জোট সরকারের অপশাসনের ফিরিস্তি, রাজনীতিবীদদের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যার্থতার খতিয়ান, পরস্পর বিপরীতধর্মী আদর্শের রাজনৈতিক দলের অনৈক্যের দলিল, জোট সরকারের শীর্ষ নেতাদের লুটপাটের তথ্যচিত্র হালনাগাদ বিদ্যমান ছিল।
  ইতিপূর্বে জোট সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনে রাজপথে গড়ে উঠেছিল আওয়ামীলীগ নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমমনা দলের সমন্বয়ে ১৪ দলীয় জোট। উল্লেখ্য আওয়ামীলীগ সভানেত্রী 'শেখহাসিনা' বাংলাদেশ অভ্যুদ্বয়ের নেতৃত্বদানকারী এককনেতা জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর জৈষ্ঠকন্যা। তাঁর ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছিল আপোষহীনতা, কৌশলগত অভিজ্ঞতা, জন আকাংক্ষার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ।
  উল্লেখিত  শিক্ষা বাল্যকাল হতে বয়োসন্ধিকাল অবদি পরিবারীক পরিমন্ডল  থেকে তিনি পেয়েছিলেন। এতদ্বতীত পাকিস্তানী শাসক ও শোষক গোষ্ঠির বিরুদ্ধে পুর্ববাংলার উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের নেত্রীত্ব প্রদানের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ ছিল শেখ হাসিনার অভিজ্ঞতার ঝুলি।সুতারাং তাঁকে ভীতি প্রদর্শনার্থে জেলে প্রেরণ, দেশে প্রত্যাবর্তনে বাঁধা প্রদান, রাজনীতি পরিত্যাগে অনৈতিক চাপ প্রয়োগে কায্যসিদ্ধি কখনই সম্ভব নয়। বিরাজনীতিকরনের উদ্যোক্তাদেরও শেখ হাসিনার বেলায় সকল চেষ্টাই ব্যার্থতায় পয্যবসিত হয়। অবশেষে সাধারন নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে ষড়যন্ত্রের সরকারে জড়িত সকলেই কোনরকম জীবন রক্ষা করে দেশে-বিদেশে পালিয়ে বাঁচেন।
   ষড়যন্ত্র, সংকট, সমস্যা মোকাবেলার প্রাক্কালে দুরদর্শি নেত্রী ষড়যন্ত্রের উৎস মুলের অনুসন্ধান, দীর্ঘ আন্দোলনের পথপরিক্রমায় বারবার তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার উৎসের পেছনের শক্তি চিহ্নিতকরণ, আওয়ামীলীগ নেতাদের হত্যা, গুম, খুনের উৎসের সন্ধান সহ সংগঠিত অপরাপর ঘটনা সমূহের উপর গবেষনা ও পয্যালোচনা করতে ক্ষনিকের জন্যেও ভুলে যাননি। বাস্তবতার নিরীখে অনুসন্ধান, উপলব্দি, গবেষনায় প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা একিভূত করে চুড়ান্ত বিচারে শেখহাসিনা পরিবার ও আওয়ামীলীগ দলের রাজনৈতিক শত্রু মিত্র চিহ্নিত করণে সামান্যতম ভুলের প্রশ্রয় দেননি।
  অতঃপর শেখ হাসিনা সমমনা ১৪টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে মিত্রশক্তির   দুর্ভেদ্য রাজনৈতিক জোট গড়ে তুলেন। ১৪ দল যুগৎপৎভাবে  সামরিক শাসকদের উত্থানের নেপৈথ্য কারন, তথাকথিত নব্য লুটেরা ধনিক শ্রেনীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট, মুক্তিযুদ্ধের বিরুধী শক্তি'র অপ্রতিরোধ্য উত্থানের নেপৈথ্য শক্তি চিহ্নিতকরণ এবং তাঁদের আস্ফালন রোধে করণীয়, জনমনে রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট সম্পর্কে গড়ে উঠা নেতিবাচক ধ্যানধারনা প্রতিরোধের উপায় সহ রাজনৈতিক, সামাজিক,  নির্বাচন,  সরকার গঠন ও রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয় সমূহ আলোচনান্তে ঐক্যমতে পৌঁছে।  উদ্দেশ্যে সাধনে অতঃপর ১৪ দলীয় জোটে সুদৃড, লৌহকঠিন ঐক্যমতে ঘোষিত নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
   বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ১৪ দলীয় জোট গড়ে উঠার প্রারম্ভিক সময়কাল হতে  দল ও জোটের অভ্যন্তরে এবং কি দেশী, বিদেশী শক্তির ষড়যন্ত্রের মূখামূখি হতে হয়েছে। জোটের শরিক দল ও নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে সম্পৃত্ত থাকার একাধিক প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য অভিযোগ  উত্থাপনের মাধ্যমে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সাময়িকভাবে ব্যাক্তি, দল, জোট শরিকদের মধ্যে একাধিকবার বিভ্রান্তি ঘটাতে সক্ষম হলেও শেখ হাসিনার লৌহ কঠিন নেতৃত্ব, উদ্দেশ্য সাধনে অবিচল মনোভাব, দৃড়তা এবং গবেষনালব্দ ফলাফলের নির্যাসে গড়ে উঠা জোটের অভিষ্ট লক্ষ পূরণের একাগ্রতায় কোনপ্রকার প্রভাব অদ্যাবদি বিস্তার করতে পারেনি।
    সময়ের পরিক্ষায় উত্তিন্ন ১৪ দলীয় জোট এযাবৎ বাংলাদেশের পূর্বাপর রাজনৈতিক, সামাজিক প্রেক্ষাপট গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যত নীতি ও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে কোনপ্রকার বিতর্কের সম্মুখ্যিন হতে হয়েছে এযাবৎ খবর পাওয়া যায়নি। জোটের গৃহিত পরিকল্পনার অন্যতম বিষয়--
 (১) জনমনের আক্ষাংকানুযায়ী  সর্বাজ্ঞে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কায্যকর ব্যাবস্থা গ্রহন।
 (২) সদ্য মাথাছাড়া দিয়ে উঠা বিরাজনীতিকরনের ধ্যান ধারনার উৎসমূল অনুযায়ী--রাজনীতি, রাজনীতিবীদদের প্রতি জনমনে ভুলন্ঠিত জনআস্থা ফিরিয়ে আনতে কায্যকর উদ্যোগ গ্রহন।
(৩) অদৃশ্যবাদী, নিয়তিবাদী, অশুভ দেশ বিরুধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি' এবং তাঁদের প্রকাশ্য প্রেতাত্বাদের কবল থেকে সমাজকে মুক্ত করার লক্ষে কায্যকর উদ্যোগ গ্রহন। এক্ষেত্রে দেশের  প্রকৃত শ্রদ্ধাভাজন আলেম উলামাদের রাষ্ট্রীয় প্রনোদনার উদ্যোগ গ্রহন, আধুনিক, উন্নত বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যাবস্থাপনার সঙ্গে তালমিলিয়ে অত্যাধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক, উন্নত ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি' প্রনয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
   ১৪ দলীয় জোটের দীর্ঘ আন্দোলনের গবেষনালব্দ ফলাফলের ভিত্তিতে ২০০৮ ইং সালের নির্বাচনী ইশতাহার প্রনয়ন করা হয়। উপরে উল্লেখিত ঐক্যমত্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এবং সুস্পষ্টভাবে নির্বাচনী অঙ্গিকারে ব্যাখ্যাসহ সংযোজন করা হয়।
  প্রথমতঃ--সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিলুপ্তির অঙ্গিকারে অত্যান্ত দৃড়তার সঙ্গে এবং পরিস্কারভাবে '৭৫ পরবর্তি চাঞ্চল্যকর সকল হত্যা মামলা পুণঃজীবিত এবং দ্রুত নিস্পত্তি'র অঙ্গিকার ব্যাক্ত করে। ৪দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে হত্যা, গুমখুন, লুটপাট, দুর্নীতিতে জড়িত ব্যাক্তিদের বিচারের মুখামূখি করার সুস্পষ্ট অঙ্গিকার ব্যাক্ত করে।
  দ্বিতীয়তঃ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির দীর্ঘদিনের আন্দোলন, সংগ্রামের প্রতি সম্মান এবং দেশবিরুধী অশুভশক্তির আস্ফালন নিস্তেজ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের সমাজ থেকে সকল অপশক্তি নিচ্ছিন্ন করার লক্ষে '৭১এ মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরুধী অপরাধে জড়িত শীর্ষ ব্যাক্তিদের বিচার অনুষ্ঠানের অঙ্গিকার স্পষ্ট এবং দৃড়তার সঙ্গে ব্যাক্ত করে।
  তৃতীয়তঃ আধুনিক বিশ্বব্যাবস্থার সঙ্গে তালমিলিয়ে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, জনগনের উন্নত জীবনমান নিশ্চিতকল্পে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার অঙ্গিকার ব্যাক্ত করে।
   আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের প্রকাশিত নির্বাচনী ইশতেহার বাংলাদেশের আপামর জনগনের আকাংক্ষার সহিত যথাযথ সামঞ্জস্যতা পরিস্ফুটিত হওয়ায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচনকালীন গঠিত মহাজোট  অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় ভুমিধ্বস বিজয় অর্জন করে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা "শেখ হাসিনা'র নেতৃত্বে সরকার গঠন করে।
  সরকার গঠন করার পর কালবিলম্ব নাকরে নির্বাচনী অঙ্গিকার পূরণে নতুন সরকার মনযোগ প্রদান করে। প্রথমেই রাষ্ট্রীয় জটিল বিষয় সমূহ নিস্পন্ন করে  আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকল্পে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মকান্ড পরিচালিত করতে সরকার অধিনস্ত দপ্তর সমূহে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা সমূহ পূর্ণজ্জিবিত করার আদেশ, নির্দেশ প্রদান করেন।সরকারের আদেশে আদিষ্ট হয়ে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্র সকল চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা পূণঃজ্জিবিত করে প্রচলিত আইনানুযায়ী ব্যাবস্থার উদ্যোগ গ্রহন করে। মানবতা বিরুধী অপরাধ বিচার প্রক্রিয়া সম্পাদনের উদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, জোট সরকারের হত্যা গুম, খুন লুটপাটের বিরুদ্ধে ইতিপুর্বে সেনাসমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের আনীত মামলা সমূহ যথারীতি বিচারের উদ্যোগ গ্রহন, অর্থ দুর্বৃত্তদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন সহ চতুর্মূখি কায্যক্রম গ্রহন করে।
 উল্লেখিত কায্য সম্পাদনে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র, মোড়ল রাষ্ট্রের রক্তচক্ষু ওপেক্ষা করে সরকার নির্বাচনী অঙ্গিকারের প্রতি তাঁর  দৃড় অবস্থান অটুট রেখে বাংলাদেশের জনগনের সক্ষমতা, মনোভাব আন্তজাতিক মহলে তুলে ধরে অসীম সাহষিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে "ভিশন ২০২১' ঘোষনা পুর্বক স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পিত পরিকল্পনায় ছোট, মাঝারী, বড় ও মেঘা প্রকল্প  গ্রহন করে।
   ১৪ দলীয় জোটের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখিত জনগনকে দেয়া অঙ্গিকারের ঘুর্নায়নে দেশবিরুধী অশুভশক্তি' সমূহের সাংগঠনিক শক্তি, অর্থবল, জনবলে প্রচন্ড আঘাত  স্পষ্টতঃই দৃশ্যমান হয়ে উঠে। জামায়াতে ইসলামী সহ অপরাপর শীর্ষ মানবতা বিরুধী অপরাধীদের দন্ডাদেশ কায্যকরের ফলে নিমিষেই বৃহৎ রাষ্ট্রবিরুধী শক্তির সাংগঠনিক কায্যক্রমে ধ্বস নামে। সংগঠনটি আদালত কতৃক নিষিদ্ধ হওয়ার পর সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করেছে।
 ৭৫ পরবর্তি বিচারহীনতায় মুখ থুবড়ে পড়া চাঞ্চল্যকর হত্যামামলা সমূহের রায় পরবর্তি ,২০০৪ এর খুনীদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্নের ফলে অশুভশক্তির প্রেতাত্বাদের ২০ দলীয় বৃহৎ রাজনৈতিক জোটের শক্তিতে  ধ্বস পরিলক্ষিত। জোটের শীর্ষ  নেতাদের আদালতের বিচারে দন্ডাদেশ নিশ্চিত হওয়ায় তাঁদের নেতৃত্ব বাংলাদেশের সমাজে--নিস্তেজ, অপাংক্তেয়, অপ্রয়োজনীয়, বেআইনী হয়ে পড়ে।
  ফলতঃ বিএনপি দলের গ্রামগঞ্জে লক্ষলক্ষ সমর্থক, নেতাকর্মী সক্রিয় থাকাবস্থায়--জনবলহীন, কর্মীহীন, নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকাহীন একক ব্যাক্তি বিশেষ সম্বলীত সামাজিক সংগঠনের কতিপয় নেতার সাথে ঐক্যবদ্ধ জোট গঠন করতে বাধ্য হয়। তদ্রুপ সামাজিক সংগঠন গনফোরামের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের কাঁধে জোটের নেতৃত্বের ভার তুলে দিয়ে তাঁর আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনরকম টিকে থাকার পথ অবলম্বন করে।
  সদ্য গঠিত ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক গতিবিধি লক্ষ করে অনুমান করা যায়--বুর্জুয়া রাজনীতিবীদ ড. কামাল হোসেন সাহেবও এমন একটি দলের পাইকারী নেতাকর্মী সম্বলীত শক্তিশালী দলের নেতৃত্ব করায়ত্ব করার কামনা, বাসনা অনেক আগে থেকে মনে মনে পোষন করছিলেন। বিএনপি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একের পর এক আদালতের সাজাপ্রাপ্ত হলেও দেশের কোন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সুশীল সমাজ, বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্রের সরকার প্রধান এবং কি সদ্য গঠিত ঐক্য ফ্রন্টের বৃহৎ দল বিএনপি হওয়া সত্বেও ফ্রন্টের শীর্ষ নেতার পক্ষে কোন বিবৃতি, নন্যুন্নতম সমবেদনা এখন পয্যন্ত জানানোর প্রয়োজন অনূভব করেননি। এই থেকেই অনুমেয় বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব বাংলাদেশের সমাজে ইতিমধ্যেই গুরুত্বহীন, অপাংক্তেয়, অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।সঙ্গত কারনে তাঁদের সৃষ্ট দল এবং জোটেও অপাংক্তেয় হওয়ার সুচনাপর্ব ইতিমধ্যেই লক্ষনীয় হয়ে ফুটে উঠেছে।
   এই প্রথমবারের মত অর্থলোপাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন ও জড়িতদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন সরকারের সৎ সাহষের এক অনন্য নজির বাংলাদেশে স্থাপিত হল। সরকারের সাঁড়াষী অভিযানে দুর্বৃত্তদের দীর্ঘ দিনের গড়ে উঠা সিন্ডিকেট তছনছ, দুর্বৃত্তগন দিক বিদিক জ্ঞান শুন্যবস্থায় দেশ ছেড়ে অনেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। অনেকেই উচ্চ আদালতের আশ্রয়ে মুক্ত জীবন যাপন করলেও বেশীরভাগই জেলের অভ্যন্তরে দিনাতিপাত করছে।
 রাষ্ট্র ও সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি বিরুধী অভিযান পরিচালনায় বড় বড় দুর্নীতির ঘটনা লোক চক্ষুর সামনে এই প্রথম প্রকাশ করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। বিবেকহীন ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ন্তর উক্ত ঘটনা সমূহে সরকারের গাঁয়ে কালিমালেপনের দুরভিসন্ধি'র প্রানান্তকর চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও, সেদিকে সরকার ও জনগনের কোনপ্রকার ভ্রুক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। জনগনের মনোভাবের উপর ভিত্তি করে এবং নিবৃত্তে দুর্নীতি বিরোধী সামাজিক আন্দোলনের প্রতি সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর লক্ষে, দ্বিগুন উৎসাহে সরকার দুর্নীতি দমনে কায্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।
  ফলতঃ একদা বিশ্বে ৪ বারের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশের অবস্থান  বিশ্বব্যাপী অকল্পনীয় তো বটেই, সমসাময়িক সময়ে প্রকাশিত ফোবর্সের বার্ষিক রিপোর্টে এশিয়া অঞ্চলের দেশ সমূহের তালিকায়ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়ন পরিকল্পনায় ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ দারিদ্রতার বদনাম ঘুছিয়ে নিম্ন মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল বাংলাদেশের মায্যদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।অচিরেই মধ্যম আয়ের উন্নত দেশের তালিকায় স্বর্ণাক্ষরে বাংলাদেশের নাম জ্বল জ্বল করে জ্বলবে,এমন আভাসই মিলছে দেশী বিদেশী অর্থনীতি বিশারদ গনের অভিমতে। 
  এতকিছুর পরও বাংলাদেশের জনগন ২০০৯ ইং সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সুচিত গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে কি থাকবেনা সন্দিহান হয়ে উঠতে দেখা যায়।  দশম নির্বাচন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার রক্ষার অজুহাতে সর্বগ্রাহ্য করা সম্ভব হলেও; একাদশ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছিল মানুষের উৎকন্ঠা তত'ই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। জনমনে উৎকন্ঠার বৃদ্ধির অন্যতম কারন সমশক্তি সম্পন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব শুন্যতা, বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমূহের নির্বাচনে অংশ গ্রহনে দোদল্যমানতা, বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে সরকার বিরুধী নেতৃবৃন্দের আহব্বানে সরকার এবং সরকারী দলের সাড়া না দেয়ায় জনগনের উৎকন্ঠার মাত্রা তিব্রতর করে তুলেছিল।
  ২০১৩ ইং সালে  দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বিরুধী অশুভ জোটের প্রধান খালেদা জিয়ার সাথে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে নীজ উদ্যোগে কয়েকবার যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তৎসময়ে তিনি বিরুধীদলীয় নেত্রী ছিলেন এবং আদালতের দন্ড তার উপর ছিলনা। সঙ্গত কারনে বিরুধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে বার বার আহব্বান, প্রধানমন্ত্রীর স্বেচ্ছায় তাঁর বাসভবনে গমন দুষনীয় না হয়ে,  গনতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মানে সরকারের আন্তরিকতা দেশে বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিল।
  একাদশ সংসদ নির্বাচনের পুর্বে আদালত কতৃক দন্ডপ্রাপ্তির পর, সরকার প্রধান শেখ হাসিনা আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষায়াদি আলোচনার আহব্বানে সদা সর্বদা মৌনতার পথ অবলম্বন করেন। তাঁর এই মৌনতার ব্যাখ্যা তিনি কোনদিন ঘুনাক্ষরেও প্রকাশ করেননি। সরকারের মন্ত্রীগন সরকার বিরুধীদের আহব্বান লাগাতার প্রত্যাখ্যান অব্যাহত রাখে। এবং কি জোটের নেতাদের জন্যে আলোচনার দরজা বন্ধ মনোভাব প্রদর্শন করতে থাকে।  বিষয়টি নিয়ে আন্তজাতিক মহলেও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি। অতীতের নির্বাচন সমূহের ন্যায় বছর খানেক পুর্ব হতে দুতিয়ালি করার জন্যে কোন মোড়ল রাষ্ট্র দূত প্রেরণ করেনি। যতই দিন গড়াচ্ছিল, মনে হচ্ছিল দেশ দশম নির্বাচনের আবহের দিকেই এগুচ্ছিল। জনমনে উদ্ভেগ, উৎকন্টার মাত্রা তিব্র থেকে তিব্রতর হচ্ছিল।
 এমনি সময় সদ্য গঠিত ফ্রন্ট তাঁর রাজনৈতিক পরিপক্কতার পরিচয় তুলে ধরে তাঁরা  একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, গ্রহনযোগ্য করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্যে আলোচনার আগ্রহ ব্যাক্ত করে। এই মর্মে সরকারের শীর্ষ মহলে  জোটের দাবী সম্বলিত এক চিঠি প্রেরণ করে। সরকারের শীর্ষ মহলে চিঠি পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে দিন তারিখ সময় উল্লেখ করে তৎক্ষনাৎ প্রতিত্তোর প্রদান করে। সরকারের আচরণে এমন মনোভাবই ফুটে উঠে যেন-- এই সময় এবং এমন একজন গ্রহনযোগ্য, জনগ্রাহ্য নেতৃত্বের পথ চেয়ে তাঁরা অনেক দিন আগে থেকে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন।
    প্রকৃতপক্ষে ড. কামাল হোসেন সাহেব  দেশের স্বনামধন্য, অভিজ্ঞ, প্রতিতযষা রাজনীতিবীদ ও আইনজ্ঞ। বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সাথে মতের অমিল থাকলেও তিনি যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির পরিক্ষিত ও নিবেদিত প্রান, এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। একজন পরিপক্ক রাজনীতিবীদের সরকার বিরুধী বৃহৎ জোটের নেতৃত্ব গ্রহনে বাংলাদেশের জনগনও নতুন করে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে।
   বাংলাদেশের জনগনের মনে প্রানে বিশ্বসের বীজ বপন শুরু হয়েছে, তাঁদের  দীর্ঘ যুগের কামনা এবং বাসনা পূর্ণতা প্রাপ্তির দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। সরকার পরিচালনাকারী দল ও জোট এবং সরকার বিরুধী জোট ও দল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির আক্ষাংকা পূর্ণতার দিকে ধাবিত হচ্ছে।  যে দল বা জোটই সরকার পরিচালনার অধিকারী হোকনা কেন, বিরুধী জোট ও দল সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারকে সঠিক পথ দেখাবে। ক্ষমতাসীন সরকারের গন বিরুধী আইন নীতি রীতির বিরুদ্ধে নিয়মাতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলবে। রাষ্ট্র, সরকার ও জাতির বিতর্কিত বিষয় সমূহ সংসদে প্রানবন্ত আলোচনার ভিত্তিতে ঐক্যমতে পৌঁছে মিমাংসা করবে। সদা সর্বদা দলীয় স্বার্থের উধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে স্ব-স্ব দল ও জোটের আদর্শ সমুন্নত রেখে রাজনীতি পরিচালনা করবে। উল্লেখিত জনগনের একান্ত ইচ্ছা সমূহ পূর্ণতা প্রাপ্তির আলোকচ্ছটা সরকার ও সরকার বিরোধী জোটের রাজনৈতিক তৎপরতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
   মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনক কন্যার দুরদর্শিতা, ১৪ দলীয় জোটের বিগত ১০ বছর অনড় রাজনৈতিক অবস্থানের ফসল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে নতুন সুর্যের আলোকরশ্মির আভা পরিলক্ষিত হচ্ছে।বিচক্ষন প্রধানমন্ত্রী উদিত সুয্যের আভা, যে কোন মুল্যে, যে  কোন অবস্থায় জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন, এই বিশ্বাস জনগনের আছে। যা কিছু উজাড় করে দেয়া সম্ভব তার সবটুকু দিয়ে হলেও ম্লান হওয়ার সুযোগ তিনি দিবেন না, এই সত্যটি  বাংলাদেশের জনগন মনেপ্রানে বিশ্বাস করে। জনগন আস্থা রাখে জনককন্যার সততা, প্রাজ্ঞতা, বিচক্ষনতা, দুরদর্শিতার উপর।

 
   

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা