শেখহাসিনার নেতৃত্বে ১৪দলীয় জোটের অনড় অবস্থান,মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নপূরণের দ্বার উম্মুক্ত প্রায়।

   বাংলাদেশের আপামর জনগনের মনেপ্রানে কামনা ছিল--মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে'র সরকার পরিচালনাকারী জোট ও দল এবং সরকারের বাইরে'র একাধিক বিরোধী দল ও জোট, দেশপ্রেমিক এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি'র অভ্যন্তরের হবে।  জনগন নির্ভয়ে তাঁদের প্রতিনীধি নির্বাচনার্থে ভোট কেন্দ্রে যাবে, তাঁর পছন্দের প্রার্থিকে ভোট দিয়ে এসে নিজ বাসগৃহে নাকে তেল দিয়ে সারারাত ঘুমাবে।  সকালে ঘুম থেকে উঠে নির্ভয়ে  জানতে পারবে, তাঁর প্রদত্ত ভোটে, তাঁর প্রার্থি জিতেছে, নাকি হেরে গেছে। জিতলেও উৎফুল্লতার কিছুই থাকবেনা, হারলেও উৎকন্ঠার কোন ব্যাপার তাঁকে স্পর্ষ করবেনা।
  নির্বাচনের আগে ও পরে কোন দেশবিরোধী অশুভশক্তি  তাঁর ভোটের নাগরিক অধিকার চিনিয়ে নিতে তান্ডব চালাবেনা। মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীন বাংলাদেশের জনগন আরও কামনা করে, কোনদিন কোন জাতীয়, স্থানীয় বিষয় তাঁকে কখনও আশংকিত হতে হবে না। ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট, স্বজনপ্রীতি চিরতরে উচ্ছেদের লক্ষে তাঁর নির্বাচিত সরকার সকল দলের জনপ্রতিনীধিদের সমন্বয়ে সদা সর্বদা কায্যকর ভূমিকা পালন করবে।
  বাংলাদেশের জনগন আরো কামনা করে, বিশ্বের অন্যান্ন দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহনকারীদের বিরুদ্ধে গৃহিত ব্যাবস্থা অনুযায়ী, বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ে বিরূধী শক্তি রাজাকার, শান্তি কমিটি, আলবদর, আলশামস সহ অপরাপর ব্যাক্তি' ও গোষ্টির তালিকা প্রকাশ করা হবে। উল্লেখযোগ্য বা সকলের মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হবে। ৭৫ পরবর্তি সকল খুনের খুনীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে এবং বিচারে প্রাপ্ত শাস্তি রাষ্ট্র যথাযথ কায্যকর করবে। পরবর্তিতে দেশের প্রচলিত আইন ও বিচারের প্রতি  যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে, শাস্তিপ্রাপ্ত সকল ব্যাক্তি ও গোষ্টির সম্পত্তি সরকার রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করবে। প্রকাশিত দেশদ্রোহীদের তালিকানুযায়ী তাঁদের প্রত্যেকে'র বংশ পরম্পরায় শিক্ষা, চাকুরি  সহ অন্যান্ন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত করার আইন সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের ঐক্যমতে অনুমোদন পাবে। সরকারের প্রনীত আইনানুযায়ী রাষ্ট্র অন্ধভাবে ব্যাবস্থা গ্রহন করবে।
   বাংলাদেশের জনগন আরো কামনা করে,তাঁর নির্বাচিত সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষানীতি, আইন ও প্রশাসন গড়ে তুলতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধের উম্মেষদাতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষে দারিদ্রমুক্ত, বৈশম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, গনতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মানে সরকার সর্বতো সচেষ্ট থাকবে। হত্যা, গুম, খুন, দখলবাজী, লুটপাট, ঘুষ, দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর নির্বাচিত  সরকার আন্তরিক হবে। আপামর জনগনের জীবনমান উন্নয়নে তাঁর নির্বাচিত  সরকার সর্বদাই সচেষ্ট থাকবে।
    উল্লেখিত অফুরন্ত, অপরিসীম জনচাহিদা পূরনার্থে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির একমাত্র অবলম্বন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং তাঁর নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির ১৪ দলীয় জোটের গড়া মহাজোট সরকার কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছিল? শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত মহাজোট সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ রাষ্ট্র যথাযথ বাস্তবায়ন করেছে কিনা? বাস্তবায়িত পদক্ষেপ সমূহের ফলাফল সমাজে, রাষ্ট্রে ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটাত্তে পেরেছে কিনা? দীর্ঘযুগের চলমান অশুভ চক্রের রাজনীতি  কল্যানকর রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনে উক্ত পদক্ষেপ সমূহ সহায়ক ভুমিকা পালন করেছে কিনা? রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি সহ রাষ্ট্রের সর্বত্র গুনগত পরিবর্তন দৃশ্যমান হচ্ছে, নাকি অদৃশ্য, অপরিবর্তনীয় রয়ে গেছে??
  মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির অভিজ্ঞজনদের উক্ত বিষয় সমূহের চুলচেরা বিশ্লেষন, পয্যালোচনা করার এখনই সময়। আগামী একাদশ নির্বাচনে বিজয় অর্জনের লক্ষে অতীতের শুভ উদ্যোগ সমূহকে অধিকতর প্রাধান্য এবং অশুভ উদ্যোগ সমূহ পরিহার করে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের সময় ঘনিয়ে এসেছে।
  উল্লেখিত বিষয়ে জোটের বিজ্ঞ, অভিজ্ঞজনদের চুলচেরা বিশ্লেষন ও আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণের সুবিধার্থে অজপাঁড়াগায়ের মুজিবাদর্শের এক নগন্য কর্মির সীমিত জ্ঞানে পুর্বাপর সঞ্চিত অভিজ্ঞতা, মহাজোট সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ সমূহের ইতিবাচক মুল্যায়ন এবং উক্ত রাজনৈতিক পদক্ষেপ সমূহের  সামাজিক প্রতিক্রিয়া কিঞ্চিত তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করি।
  এখানে উল্লেখ করতে চাই--যেহেতু নবম সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ১৪দলীয় জোটের প্রকাশিত নির্বাচনী ইশতেহারের আবেদন বর্তমান সময়ও বিদ্যমান রয়ে গেছে। তদানুযায়ী দল, জোট ও সরকারের কর্মকান্ড অদ্যাবদি পরিচালিত হচ্ছে। সেহেতু নবম সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের গৃহিত নির্বাচনী ইশতেহারে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখাই যৌক্তিক মনে করি।
    ১৪ দলীয় জোট ২০০৮ইং সালের ঘোষিত সাধারন নির্বাচনে'র পুর্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে রাজপথেই গড়ে উঠেছিল। ১৪ দলীয় জোটের নির্বাচনী ইশতেহারে'র অন্যতম বৈশিষ্ট ছিল আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।'৭৫ পরবর্তি সময় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে জনগনের চাহিদাও ছিল সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার করার কামনা, বাসনা, ইচ্ছা। ২০০৮ ইং সালে এসে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার গনদাবীটি বিস্ফোরণোম্মুখ আকার ধারন করে। এমনিতে  দীর্ঘকাল আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে হত্যা, গুম, খুন, লুটপাট, দখলবাজী, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, ঘুষ ইত্যাদি অনৈতিক কর্মকান্ড উদ্ভেগজনক ভাবে বেড়ে গিয়েছিল।২০০১--০৬ ইং সালের জোট সরকারের শাসনামলে এসে বাংলাদেশ পরপর ৪বার তাবৎ বিশ্বের দেশ সমূহের মধ্যে দুর্নীতির তালিকায় শীর্ষস্থানে অবস্থান করে। দেশবিরূধী অশুভশক্তির জোট সরকার ২০০১ ইং সালে ষড়যন্ত্রের পথ অনুসরণ করে ক্ষমতায় এসে, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।
  উল্লেখিত সময়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম, এস, কিবরিয়া হত্যা, আহসান উল্যা মাষ্টার হত্যা, ২১শে আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিন্যুয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলায় আই ভি রহমান সহ ২৯ নেতাকর্মীর হত্যা মামলা ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা, সারাদেশে একযোগে ৬৪ জেলায় বোমা হামলা সহ অসংখ্য হত্যা গুম, খুনের বিচার অনুষ্ঠানে সরকারের অনিহা, সমাজের সর্বস্তরে রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবীদ এবং আইনের শাসনের প্রতি জনগনের অনাস্থা, অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা দাঁনা বেঁধে উঠেছিল। সরকারের শীর্ষ পয্যায় দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজী, ঘুষ অনৈতিকতা'র অশুভ ছায়া দেশের রাজনীতি, রাজনীতিবীদদের প্রতি অবিশ্বাস, অনাস্থা, অশ্রদ্ধা, অস্বস্তি, ঘৃনার আগুন প্রজ্বলিত হয়ে উঠেছিল।
    রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিকদের প্রতি অবিশ্বাস, অনাস্থা, ঘৃনার সাময়িক সংকটকে কাজে লাগিয়ে, বাংলাদেশের শাসনব্যাবস্থা, সমাজ, সরকার, রাষ্ট্র, শিক্ষাঙ্গন বিরাজনীতিকরণের প্রস্তাব কোন কোন মহল থেকে প্রকাশ্যে,অপ্রকাশ্যে উত্থাপন করা হচ্ছিল। অশুভ শক্তির এক প্রেতাত্বা জেনারেল 'এরশাদ' ষড়যন্ত্রকারীদের প্রস্তাবনায় সায় দিয়ে, তাঁর দলের ছাত্র সংগঠনের কায্যক্রম শিক্ষাঙ্গনে নিষিদ্ধ করে, তাঁদের প্রচারণায় উৎসাহ দিতে কার্পন্য করেনি।
একশ্রেনীর অদৃষ্টবাদী, নিয়তিবাদী, হতাশাগ্রস্ত মানুষ এবং দেশবিরুধী বিদেশী শক্তির পেইড এজেন্ট সম্মিলীতভাবে সৃষ্ট চক্রান্তের প্রতি একযোগে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছিল। ঢালাও ভাবে রাজনৈতিক দল ও নেতাদের চরিত্র হননের হিড়িক পড়েছিল চতুর্দিকে। উপরিক্তো সময় জোট সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট দেশদ্রোহী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রচারণায় আগুনে ঘৃতাহুতির ভুমিকা পালন করে যাচ্ছিল। জোট সরকার ২০০৬ সালের নবম সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এলে, সংবিধানের রীতিনীতি তোয়াক্কা না করে, একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবারের লুটপাট জায়েজ করার ফন্দি ফিকিরে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিল।
  দেশীবিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিক এই সময়টির অপেক্ষায় ছিলেন। অনৈতিকতায় ভরপুর জোট সরকারের দুর্বলতার সুযোগে সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় ষড়যন্ত্রকারীগন বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে। প্রারম্ভিক সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যধিক্য আশাবাদী, বাস্তবতাবাদী জনগন এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি দীর্ঘকাল সামরিক, বেসামরিক স্বৈরশাসকদের অপশাসনে অতিষ্ট মৌনতাকে ক্ষমতালিপ্সু অরাজনৈতিক সুশীল শ্রেনীর ষড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা গঠিত স্বল্পকালীন সরকার, তাঁদের পক্ষে অন্ধ সমর্থন ভেবে নিয়েছিল।
  জোর পুর্বক ক্ষমতা দখলকারী তিনমাসের অরাজনৈতিক সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার, তাঁদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষে ২বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে তাঁরা বাংলাদেশকে সর্বক্ষেত্রে বিরাজনীতিকীকরণ করার আপ্রান প্রচেষ্টা চালায়।লক্ষপূরণে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের জননন্দিত নেতাদের কারাগারে নিক্ষেপ, দেশত্যাগে বাধ্য করার উদ্যোগ গ্রহন ও বাস্তবায়নের সাহষ দেখাতে তাঁরা কুন্ঠিত বা ভীত হয়নি।
  তাঁদের ভীত হওয়ার কোন কারনও তখনকার পরিবেশে বিদ্যমান ছিলনা। তাঁদের ঝুলিতে তখনকার প্রেক্ষাপটে জোট সরকারের অপশাসনের ফিরিস্তি, রাজনীতিবীদদের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যার্থতার খতিয়ান, পরস্পর বিপরীতধর্মী আদর্শের রাজনৈতিক দলের অনৈক্যের দলিল, জোট সরকারের শীর্ষ নেতাদের লুটপাটের তথ্যচিত্র হালনাগাদ বিদ্যমান ছিল।
  ইতিপূর্বে জোট সরকারের অপশাসন, দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনে রাজপথে গড়ে উঠেছিল আওয়ামীলীগ নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমমনা দলের সমন্বয়ে ১৪ দলীয় জোট। উল্লেখ্য আওয়ামীলীগ সভানেত্রী 'শেখহাসিনা' বাংলাদেশ অভ্যুদ্বয়ের নেতৃত্বদানকারী এককনেতা জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর জৈষ্ঠকন্যা। তাঁর ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছিল আপোষহীনতা, কৌশলগত অভিজ্ঞতা, জন আকাংক্ষার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ।
  উল্লেখিত  শিক্ষা বাল্যকাল হতে বয়োসন্ধিকাল অবদি পরিবারীক পরিমন্ডল  থেকে তিনি পেয়েছিলেন। এতদ্বতীত পাকিস্তানী শাসক ও শোষক গোষ্ঠির বিরুদ্ধে পুর্ববাংলার উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের নেত্রীত্ব প্রদানের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ ছিল শেখ হাসিনার অভিজ্ঞতার ঝুলি।সুতারাং তাঁকে ভীতি প্রদর্শনার্থে জেলে প্রেরণ, দেশে প্রত্যাবর্তনে বাঁধা প্রদান, রাজনীতি পরিত্যাগে অনৈতিক চাপ প্রয়োগে কায্যসিদ্ধি কখনই সম্ভব নয়। বিরাজনীতিকরনের উদ্যোক্তাদেরও শেখ হাসিনার বেলায় সকল চেষ্টাই ব্যার্থতায় পয্যবসিত হয়। অবশেষে সাধারন নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে ষড়যন্ত্রের সরকারে জড়িত সকলেই কোনরকম জীবন রক্ষা করে দেশে-বিদেশে পালিয়ে বাঁচেন।
   ষড়যন্ত্র, সংকট, সমস্যা মোকাবেলার প্রাক্কালে দুরদর্শি নেত্রী ষড়যন্ত্রের উৎস মুলের অনুসন্ধান, দীর্ঘ আন্দোলনের পথপরিক্রমায় বারবার তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার উৎসের পেছনের শক্তি চিহ্নিতকরণ, আওয়ামীলীগ নেতাদের হত্যা, গুম, খুনের উৎসের সন্ধান সহ সংগঠিত অপরাপর ঘটনা সমূহের উপর গবেষনা ও পয্যালোচনা করতে ক্ষনিকের জন্যেও ভুলে যাননি। বাস্তবতার নিরীখে অনুসন্ধান, উপলব্দি, গবেষনায় প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা একিভূত করে চুড়ান্ত বিচারে শেখহাসিনা পরিবার ও আওয়ামীলীগ দলের রাজনৈতিক শত্রু মিত্র চিহ্নিত করণে সামান্যতম ভুলের প্রশ্রয় দেননি।
  অতঃপর শেখ হাসিনা সমমনা ১৪টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে মিত্রশক্তির   দুর্ভেদ্য রাজনৈতিক জোট গড়ে তুলেন। ১৪ দল যুগৎপৎভাবে  সামরিক শাসকদের উত্থানের নেপৈথ্য কারন, তথাকথিত নব্য লুটেরা ধনিক শ্রেনীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট, মুক্তিযুদ্ধের বিরুধী শক্তি'র অপ্রতিরোধ্য উত্থানের নেপৈথ্য শক্তি চিহ্নিতকরণ এবং তাঁদের আস্ফালন রোধে করণীয়, জনমনে রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট সম্পর্কে গড়ে উঠা নেতিবাচক ধ্যানধারনা প্রতিরোধের উপায় সহ রাজনৈতিক, সামাজিক,  নির্বাচন,  সরকার গঠন ও রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয় সমূহ আলোচনান্তে ঐক্যমতে পৌঁছে।  উদ্দেশ্যে সাধনে অতঃপর ১৪ দলীয় জোটে সুদৃড, লৌহকঠিন ঐক্যমতে ঘোষিত নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
   বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ১৪ দলীয় জোট গড়ে উঠার প্রারম্ভিক সময়কাল হতে  দল ও জোটের অভ্যন্তরে এবং কি দেশী, বিদেশী শক্তির ষড়যন্ত্রের মূখামূখি হতে হয়েছে। জোটের শরিক দল ও নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে সম্পৃত্ত থাকার একাধিক প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য অভিযোগ  উত্থাপনের মাধ্যমে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সাময়িকভাবে ব্যাক্তি, দল, জোট শরিকদের মধ্যে একাধিকবার বিভ্রান্তি ঘটাতে সক্ষম হলেও শেখ হাসিনার লৌহ কঠিন নেতৃত্ব, উদ্দেশ্য সাধনে অবিচল মনোভাব, দৃড়তা এবং গবেষনালব্দ ফলাফলের নির্যাসে গড়ে উঠা জোটের অভিষ্ট লক্ষ পূরণের একাগ্রতায় কোনপ্রকার প্রভাব অদ্যাবদি বিস্তার করতে পারেনি।
    সময়ের পরিক্ষায় উত্তিন্ন ১৪ দলীয় জোট এযাবৎ বাংলাদেশের পূর্বাপর রাজনৈতিক, সামাজিক প্রেক্ষাপট গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যত নীতি ও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে কোনপ্রকার বিতর্কের সম্মুখ্যিন হতে হয়েছে এযাবৎ খবর পাওয়া যায়নি। জোটের গৃহিত পরিকল্পনার অন্যতম বিষয়--
 (১) জনমনের আক্ষাংকানুযায়ী  সর্বাজ্ঞে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কায্যকর ব্যাবস্থা গ্রহন।
 (২) সদ্য মাথাছাড়া দিয়ে উঠা বিরাজনীতিকরনের ধ্যান ধারনার উৎসমূল অনুযায়ী--রাজনীতি, রাজনীতিবীদদের প্রতি জনমনে ভুলন্ঠিত জনআস্থা ফিরিয়ে আনতে কায্যকর উদ্যোগ গ্রহন।
(৩) অদৃশ্যবাদী, নিয়তিবাদী, অশুভ দেশ বিরুধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি' এবং তাঁদের প্রকাশ্য প্রেতাত্বাদের কবল থেকে সমাজকে মুক্ত করার লক্ষে কায্যকর উদ্যোগ গ্রহন। এক্ষেত্রে দেশের  প্রকৃত শ্রদ্ধাভাজন আলেম উলামাদের রাষ্ট্রীয় প্রনোদনার উদ্যোগ গ্রহন, আধুনিক, উন্নত বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যাবস্থাপনার সঙ্গে তালমিলিয়ে অত্যাধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক, উন্নত ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি' প্রনয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
   ১৪ দলীয় জোটের দীর্ঘ আন্দোলনের গবেষনালব্দ ফলাফলের ভিত্তিতে ২০০৮ ইং সালের নির্বাচনী ইশতাহার প্রনয়ন করা হয়। উপরে উল্লেখিত ঐক্যমত্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এবং সুস্পষ্টভাবে নির্বাচনী অঙ্গিকারে ব্যাখ্যাসহ সংযোজন করা হয়।
  প্রথমতঃ--সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিলুপ্তির অঙ্গিকারে অত্যান্ত দৃড়তার সঙ্গে এবং পরিস্কারভাবে '৭৫ পরবর্তি চাঞ্চল্যকর সকল হত্যা মামলা পুণঃজীবিত এবং দ্রুত নিস্পত্তি'র অঙ্গিকার ব্যাক্ত করে। ৪দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে হত্যা, গুমখুন, লুটপাট, দুর্নীতিতে জড়িত ব্যাক্তিদের বিচারের মুখামূখি করার সুস্পষ্ট অঙ্গিকার ব্যাক্ত করে।
  দ্বিতীয়তঃ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির দীর্ঘদিনের আন্দোলন, সংগ্রামের প্রতি সম্মান এবং দেশবিরুধী অশুভশক্তির আস্ফালন নিস্তেজ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের সমাজ থেকে সকল অপশক্তি নিচ্ছিন্ন করার লক্ষে '৭১এ মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরুধী অপরাধে জড়িত শীর্ষ ব্যাক্তিদের বিচার অনুষ্ঠানের অঙ্গিকার স্পষ্ট এবং দৃড়তার সঙ্গে ব্যাক্ত করে।
  তৃতীয়তঃ আধুনিক বিশ্বব্যাবস্থার সঙ্গে তালমিলিয়ে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, জনগনের উন্নত জীবনমান নিশ্চিতকল্পে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার অঙ্গিকার ব্যাক্ত করে।
   আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের প্রকাশিত নির্বাচনী ইশতেহার বাংলাদেশের আপামর জনগনের আকাংক্ষার সহিত যথাযথ সামঞ্জস্যতা পরিস্ফুটিত হওয়ায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচনকালীন গঠিত মহাজোট  অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় ভুমিধ্বস বিজয় অর্জন করে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা "শেখ হাসিনা'র নেতৃত্বে সরকার গঠন করে।
  সরকার গঠন করার পর কালবিলম্ব নাকরে নির্বাচনী অঙ্গিকার পূরণে নতুন সরকার মনযোগ প্রদান করে। প্রথমেই রাষ্ট্রীয় জটিল বিষয় সমূহ নিস্পন্ন করে  আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকল্পে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মকান্ড পরিচালিত করতে সরকার অধিনস্ত দপ্তর সমূহে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা সমূহ পূর্ণজ্জিবিত করার আদেশ, নির্দেশ প্রদান করেন।সরকারের আদেশে আদিষ্ট হয়ে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্র সকল চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা পূণঃজ্জিবিত করে প্রচলিত আইনানুযায়ী ব্যাবস্থার উদ্যোগ গ্রহন করে। মানবতা বিরুধী অপরাধ বিচার প্রক্রিয়া সম্পাদনের উদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, জোট সরকারের হত্যা গুম, খুন লুটপাটের বিরুদ্ধে ইতিপুর্বে সেনাসমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের আনীত মামলা সমূহ যথারীতি বিচারের উদ্যোগ গ্রহন, অর্থ দুর্বৃত্তদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন সহ চতুর্মূখি কায্যক্রম গ্রহন করে।
 উল্লেখিত কায্য সম্পাদনে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র, মোড়ল রাষ্ট্রের রক্তচক্ষু ওপেক্ষা করে সরকার নির্বাচনী অঙ্গিকারের প্রতি তাঁর  দৃড় অবস্থান অটুট রেখে বাংলাদেশের জনগনের সক্ষমতা, মনোভাব আন্তজাতিক মহলে তুলে ধরে অসীম সাহষিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে "ভিশন ২০২১' ঘোষনা পুর্বক স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পিত পরিকল্পনায় ছোট, মাঝারী, বড় ও মেঘা প্রকল্প  গ্রহন করে।
   ১৪ দলীয় জোটের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখিত জনগনকে দেয়া অঙ্গিকারের ঘুর্নায়নে দেশবিরুধী অশুভশক্তি' সমূহের সাংগঠনিক শক্তি, অর্থবল, জনবলে প্রচন্ড আঘাত  স্পষ্টতঃই দৃশ্যমান হয়ে উঠে। জামায়াতে ইসলামী সহ অপরাপর শীর্ষ মানবতা বিরুধী অপরাধীদের দন্ডাদেশ কায্যকরের ফলে নিমিষেই বৃহৎ রাষ্ট্রবিরুধী শক্তির সাংগঠনিক কায্যক্রমে ধ্বস নামে। সংগঠনটি আদালত কতৃক নিষিদ্ধ হওয়ার পর সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করেছে।
 ৭৫ পরবর্তি বিচারহীনতায় মুখ থুবড়ে পড়া চাঞ্চল্যকর হত্যামামলা সমূহের রায় পরবর্তি ,২০০৪ এর খুনীদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্নের ফলে অশুভশক্তির প্রেতাত্বাদের ২০ দলীয় বৃহৎ রাজনৈতিক জোটের শক্তিতে  ধ্বস পরিলক্ষিত। জোটের শীর্ষ  নেতাদের আদালতের বিচারে দন্ডাদেশ নিশ্চিত হওয়ায় তাঁদের নেতৃত্ব বাংলাদেশের সমাজে--নিস্তেজ, অপাংক্তেয়, অপ্রয়োজনীয়, বেআইনী হয়ে পড়ে।
  ফলতঃ বিএনপি দলের গ্রামগঞ্জে লক্ষলক্ষ সমর্থক, নেতাকর্মী সক্রিয় থাকাবস্থায়--জনবলহীন, কর্মীহীন, নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকাহীন একক ব্যাক্তি বিশেষ সম্বলীত সামাজিক সংগঠনের কতিপয় নেতার সাথে ঐক্যবদ্ধ জোট গঠন করতে বাধ্য হয়। তদ্রুপ সামাজিক সংগঠন গনফোরামের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের কাঁধে জোটের নেতৃত্বের ভার তুলে দিয়ে তাঁর আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনরকম টিকে থাকার পথ অবলম্বন করে।
  সদ্য গঠিত ঐক্যফ্রন্টের রাজনৈতিক গতিবিধি লক্ষ করে অনুমান করা যায়--বুর্জুয়া রাজনীতিবীদ ড. কামাল হোসেন সাহেবও এমন একটি দলের পাইকারী নেতাকর্মী সম্বলীত শক্তিশালী দলের নেতৃত্ব করায়ত্ব করার কামনা, বাসনা অনেক আগে থেকে মনে মনে পোষন করছিলেন। বিএনপি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একের পর এক আদালতের সাজাপ্রাপ্ত হলেও দেশের কোন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সুশীল সমাজ, বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্রের সরকার প্রধান এবং কি সদ্য গঠিত ঐক্য ফ্রন্টের বৃহৎ দল বিএনপি হওয়া সত্বেও ফ্রন্টের শীর্ষ নেতার পক্ষে কোন বিবৃতি, নন্যুন্নতম সমবেদনা এখন পয্যন্ত জানানোর প্রয়োজন অনূভব করেননি। এই থেকেই অনুমেয় বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব বাংলাদেশের সমাজে ইতিমধ্যেই গুরুত্বহীন, অপাংক্তেয়, অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।সঙ্গত কারনে তাঁদের সৃষ্ট দল এবং জোটেও অপাংক্তেয় হওয়ার সুচনাপর্ব ইতিমধ্যেই লক্ষনীয় হয়ে ফুটে উঠেছে।
   এই প্রথমবারের মত অর্থলোপাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন ও জড়িতদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন সরকারের সৎ সাহষের এক অনন্য নজির বাংলাদেশে স্থাপিত হল। সরকারের সাঁড়াষী অভিযানে দুর্বৃত্তদের দীর্ঘ দিনের গড়ে উঠা সিন্ডিকেট তছনছ, দুর্বৃত্তগন দিক বিদিক জ্ঞান শুন্যবস্থায় দেশ ছেড়ে অনেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। অনেকেই উচ্চ আদালতের আশ্রয়ে মুক্ত জীবন যাপন করলেও বেশীরভাগই জেলের অভ্যন্তরে দিনাতিপাত করছে।
 রাষ্ট্র ও সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি বিরুধী অভিযান পরিচালনায় বড় বড় দুর্নীতির ঘটনা লোক চক্ষুর সামনে এই প্রথম প্রকাশ করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। বিবেকহীন ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ন্তর উক্ত ঘটনা সমূহে সরকারের গাঁয়ে কালিমালেপনের দুরভিসন্ধি'র প্রানান্তকর চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও, সেদিকে সরকার ও জনগনের কোনপ্রকার ভ্রুক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। জনগনের মনোভাবের উপর ভিত্তি করে এবং নিবৃত্তে দুর্নীতি বিরোধী সামাজিক আন্দোলনের প্রতি সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর লক্ষে, দ্বিগুন উৎসাহে সরকার দুর্নীতি দমনে কায্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।
  ফলতঃ একদা বিশ্বে ৪ বারের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশের অবস্থান  বিশ্বব্যাপী অকল্পনীয় তো বটেই, সমসাময়িক সময়ে প্রকাশিত ফোবর্সের বার্ষিক রিপোর্টে এশিয়া অঞ্চলের দেশ সমূহের তালিকায়ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়ন পরিকল্পনায় ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ দারিদ্রতার বদনাম ঘুছিয়ে নিম্ন মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল বাংলাদেশের মায্যদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।অচিরেই মধ্যম আয়ের উন্নত দেশের তালিকায় স্বর্ণাক্ষরে বাংলাদেশের নাম জ্বল জ্বল করে জ্বলবে,এমন আভাসই মিলছে দেশী বিদেশী অর্থনীতি বিশারদ গনের অভিমতে। 
  এতকিছুর পরও বাংলাদেশের জনগন ২০০৯ ইং সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সুচিত গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে কি থাকবেনা সন্দিহান হয়ে উঠতে দেখা যায়।  দশম নির্বাচন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার রক্ষার অজুহাতে সর্বগ্রাহ্য করা সম্ভব হলেও; একাদশ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছিল মানুষের উৎকন্ঠা তত'ই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। জনমনে উৎকন্ঠার বৃদ্ধির অন্যতম কারন সমশক্তি সম্পন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব শুন্যতা, বিদ্যমান রাজনৈতিক দল সমূহের নির্বাচনে অংশ গ্রহনে দোদল্যমানতা, বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে সরকার বিরুধী নেতৃবৃন্দের আহব্বানে সরকার এবং সরকারী দলের সাড়া না দেয়ায় জনগনের উৎকন্ঠার মাত্রা তিব্রতর করে তুলেছিল।
  ২০১৩ ইং সালে  দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বিরুধী অশুভ জোটের প্রধান খালেদা জিয়ার সাথে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে নীজ উদ্যোগে কয়েকবার যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তৎসময়ে তিনি বিরুধীদলীয় নেত্রী ছিলেন এবং আদালতের দন্ড তার উপর ছিলনা। সঙ্গত কারনে বিরুধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে বার বার আহব্বান, প্রধানমন্ত্রীর স্বেচ্ছায় তাঁর বাসভবনে গমন দুষনীয় না হয়ে,  গনতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মানে সরকারের আন্তরিকতা দেশে বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিল।
  একাদশ সংসদ নির্বাচনের পুর্বে আদালত কতৃক দন্ডপ্রাপ্তির পর, সরকার প্রধান শেখ হাসিনা আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষায়াদি আলোচনার আহব্বানে সদা সর্বদা মৌনতার পথ অবলম্বন করেন। তাঁর এই মৌনতার ব্যাখ্যা তিনি কোনদিন ঘুনাক্ষরেও প্রকাশ করেননি। সরকারের মন্ত্রীগন সরকার বিরুধীদের আহব্বান লাগাতার প্রত্যাখ্যান অব্যাহত রাখে। এবং কি জোটের নেতাদের জন্যে আলোচনার দরজা বন্ধ মনোভাব প্রদর্শন করতে থাকে।  বিষয়টি নিয়ে আন্তজাতিক মহলেও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি। অতীতের নির্বাচন সমূহের ন্যায় বছর খানেক পুর্ব হতে দুতিয়ালি করার জন্যে কোন মোড়ল রাষ্ট্র দূত প্রেরণ করেনি। যতই দিন গড়াচ্ছিল, মনে হচ্ছিল দেশ দশম নির্বাচনের আবহের দিকেই এগুচ্ছিল। জনমনে উদ্ভেগ, উৎকন্টার মাত্রা তিব্র থেকে তিব্রতর হচ্ছিল।
 এমনি সময় সদ্য গঠিত ফ্রন্ট তাঁর রাজনৈতিক পরিপক্কতার পরিচয় তুলে ধরে তাঁরা  একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, গ্রহনযোগ্য করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্যে আলোচনার আগ্রহ ব্যাক্ত করে। এই মর্মে সরকারের শীর্ষ মহলে  জোটের দাবী সম্বলিত এক চিঠি প্রেরণ করে। সরকারের শীর্ষ মহলে চিঠি পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে দিন তারিখ সময় উল্লেখ করে তৎক্ষনাৎ প্রতিত্তোর প্রদান করে। সরকারের আচরণে এমন মনোভাবই ফুটে উঠে যেন-- এই সময় এবং এমন একজন গ্রহনযোগ্য, জনগ্রাহ্য নেতৃত্বের পথ চেয়ে তাঁরা অনেক দিন আগে থেকে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন।
    প্রকৃতপক্ষে ড. কামাল হোসেন সাহেব  দেশের স্বনামধন্য, অভিজ্ঞ, প্রতিতযষা রাজনীতিবীদ ও আইনজ্ঞ। বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সাথে মতের অমিল থাকলেও তিনি যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির পরিক্ষিত ও নিবেদিত প্রান, এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। একজন পরিপক্ক রাজনীতিবীদের সরকার বিরুধী বৃহৎ জোটের নেতৃত্ব গ্রহনে বাংলাদেশের জনগনও নতুন করে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে।
   বাংলাদেশের জনগনের মনে প্রানে বিশ্বসের বীজ বপন শুরু হয়েছে, তাঁদের  দীর্ঘ যুগের কামনা এবং বাসনা পূর্ণতা প্রাপ্তির দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। সরকার পরিচালনাকারী দল ও জোট এবং সরকার বিরুধী জোট ও দল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির আক্ষাংকা পূর্ণতার দিকে ধাবিত হচ্ছে।  যে দল বা জোটই সরকার পরিচালনার অধিকারী হোকনা কেন, বিরুধী জোট ও দল সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারকে সঠিক পথ দেখাবে। ক্ষমতাসীন সরকারের গন বিরুধী আইন নীতি রীতির বিরুদ্ধে নিয়মাতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলবে। রাষ্ট্র, সরকার ও জাতির বিতর্কিত বিষয় সমূহ সংসদে প্রানবন্ত আলোচনার ভিত্তিতে ঐক্যমতে পৌঁছে মিমাংসা করবে। সদা সর্বদা দলীয় স্বার্থের উধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে স্ব-স্ব দল ও জোটের আদর্শ সমুন্নত রেখে রাজনীতি পরিচালনা করবে। উল্লেখিত জনগনের একান্ত ইচ্ছা সমূহ পূর্ণতা প্রাপ্তির আলোকচ্ছটা সরকার ও সরকার বিরোধী জোটের রাজনৈতিক তৎপরতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
   মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনক কন্যার দুরদর্শিতা, ১৪ দলীয় জোটের বিগত ১০ বছর অনড় রাজনৈতিক অবস্থানের ফসল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে নতুন সুর্যের আলোকরশ্মির আভা পরিলক্ষিত হচ্ছে।বিচক্ষন প্রধানমন্ত্রী উদিত সুয্যের আভা, যে কোন মুল্যে, যে  কোন অবস্থায় জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন, এই বিশ্বাস জনগনের আছে। যা কিছু উজাড় করে দেয়া সম্ভব তার সবটুকু দিয়ে হলেও ম্লান হওয়ার সুযোগ তিনি দিবেন না, এই সত্যটি  বাংলাদেশের জনগন মনেপ্রানে বিশ্বাস করে। জনগন আস্থা রাখে জনককন্যার সততা, প্রাজ্ঞতা, বিচক্ষনতা, দুরদর্শিতার উপর।

 
   

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন