বাংলাদেশের সমাজে বুদ্ধিজীবিদের অবমূল্যায়ন।

   বাংলাদেশের সমাজে বরেন্য বুদ্ধিজীবিদের লালনে সংকীর্ণতা।


     যে কোন সমাজের বুদ্ধিজীবিরা সেই সমাজের মহামুল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। মূলত: বুদ্ধিজীবিরা রাষ্ট্র ও সমাজের পথপ্রদর্শক--' উন্নতি, অগ্রগতি, প্রগতি'র  সোপান। বুদ্ধিজীবিহীন রাষ্ট্র, জাতী, সমাজ, সরকার বাঁচতে পারেনা। নেতৃত্বহীন দল যেমন আগোছালো--মৃত প্রায়, তেমনি বুদ্ধিজীবিহীন সমাজও মৃত, আগোছালো, দিকভ্রম, অস্থির, অন্ধকারের আবর্তে নিমজ্জিত হতে বাধ্য হয়। মেধাশূন্য জাতী উন্নতি, অগ্রগতি সাধনের কোন উপায় থাকেনা বা করতে পারেনা। যে সমাজ মেধার কদর জানে না, সেই সমাজে মেধাবী'রা জম্মগ্রহন করেনা এবং সে সমাজ অসভ্য সমাজের অন্তভুক্ত।

   বুদ্ধিজীবি'র সংজ্ঞা:--

     দৈহিক শ্রমের বাহিরে মানষিক চিন্তাচেতনার শক্তিতে যে সমস্ত ব্যাক্তিবর্গ জীবন জীবিকা নির্বাহ মরেন তাঁদেরকে বুদ্ধিজীবি বলা হয়। অর্থাৎ জ্ঞান চর্চাকারীরাই বুদ্ধিজীবি।

  সমাজে বুদ্ধিজীবিদের অবদান:--

      মানব সভ্যতা বিকাশের প্রাথমিক যুগ হতে আজকের এই প্রযুক্তি যুগের শিখরে অবস্থান নেয়া মানব সভ্যতা পরিবর্তনের প্রতিটি স্তরে'ই রেয়েছে মেধাবী মানুষদের মেধার অন্যন্ন, অনবদ্য অবদান ও ভুমিকা। মুলত: মেধাবী মানুষেরাই সমাজকে আজকের বিজ্ঞানে'র অত্যাধুনিক আবিস্কার প্রযুক্তি'র সভ্যতার যুগে টেনে তুলেছে। প্রত্যহ-প্রতিনিয়ত মানব সমাজের অতিব প্রয়োজনীয় ও কল্যানকর উপাদান সমূহ যেমন--"জ্ঞান বিজ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি, চিকিৎসা, উদ্ভাবন, ইতিহাস, ঐতিহ্যের বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় বিচরনরত: সৃষ্টিশীল মেধাবী'দের সাধারন ভাবে এক কথায় প্রকাশে বুদ্ধিজীবিদের অবদান অনস্বিকায্য বলা যায়"।

     নির্দিষ্ট একটি দেশের বুদ্ধি চর্চারত: ব্যাক্তি বা মেধাবী জনেরা স্বদেশ ও স্বজাতীর কল্যানে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সঞ্চিত অভিজ্ঞতা, লব্দ জ্ঞানের অলো স্বদেশ, স্বসমাজ, স্বজাতী সহ বিশ্ব সমাজকে আলোকিত করে তোলে। মেধাবীজনের আবিস্কার, উদ্ভাবন, রচনা, গভেষনা 'স্ব-জাতির কল্যান বয়ে আনে এবং চলার পথ নির্দেশ করে, সাথে সাথে 'বিশ্বমানব কুলের কল্যান, উন্নতি, অগ্রগতিতেও অন্যন্ন অবদান রাখে।সেই অর্থে বুদ্ধিজীবি'রা শুধুমাত্র স্ব-জাতী'র বা স্বদেশের সম্পদ বলতে গেলে তাঁদের প্রতি অবিচার করা হবে--'তাঁরা বিশ্ব সমাজেরও অমুল্য সম্পদ'।
 
বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের আলাদা মায্যদা:--
 
    আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবিদের রয়েছে দেশ ও জাতীর নিকট এক আলাদা মায্যদা। দেশ ও জনগনের কল্যানে নিবেদিত আমাদের বুদ্ধিজীবি সমাজ সর্বদাই জাতীর ক্রান্তিকালে জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে রাজপথে নেমে এসেছে। যেমন--'৬৯ এর গনভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহন, '৭১ বাঙ্গালী জাতীর গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধে অকুন্ঠ সমর্থন। '৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশবিরোধী রাজাকার ও দখলদার পাকিস্তানী সেনাদের হাতে অসংখ্য বুদ্ধিজীবির প্রানবলি দান,  '৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে জনগনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ এবং 'গনতন্ত্র পুণ:রোদ্ধারের লক্ষে 'জনতার মঞ্চ' প্রতিষ্ঠা, ৯৪ ইং সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ৭১ইং সালে জাতীর মহান মুক্তিযুদ্ধে 'মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত শীর্ষ রাজাকারদের প্রতিকী বিচারানুষ্ঠান,উক্ত বিচারানুষ্ঠান জাতী'কে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভোদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে, '২০০১ইং সালে জামায়াত শিবির এবং তাঁদের প্রেতাত্বা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবি সমাজের  সম্মিলীত প্রতিবাদী ভূমিকা পালন--"বাঙ্গালী  জাতীর নিকট বুদ্ধিজীবিদের বরেন্য, পুজনীয়, শ্রদ্ধা, সম্মানের সর্ব উচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে"।

বুদ্ধিজীবি'র পরিচয়:--

     সাধারাণত: মানব সভ্যতা বিকাশ, দেশ ও জনগনের কল্যানে নিবেদিত সমাজের মেধাবী এবং বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ, জ্ঞানী, গুনীজনদের বুদ্ধিজীবি বলে। মানব সমাজের  অতিব প্রয়োজনীয় উপাদান সমূহে প্রতিনিয়ত বিচরনরত: এবং বিশেষ ক্ষেত্রে অধিকতর জ্ঞানী, গুনীজনদের বুদ্ধিজীবি হিসেবে অভিহীত করা হয়। তাঁরা সর্বকালে সর্বদেশে রাষ্ট্র, সমাজ ও জনগনের নিকট সম্মানের পাত্র। এইরুপ সম্মানীত ব্যাক্তিবর্গ নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বুদ্ধি চর্চা বা জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে সৃষ্ট উপাদানের উপর জীবন জীবিকা  নির্বাহ করে থাকেন।তাঁরা সভ্যতার বিকাশ, মানবকল্যান, দেশ, জাতী, জনগনের উন্নয়ন অগ্রগতি ভাবনায় নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। দেশ ও জাতীর ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষনে নিবেদিত প্রান ব্যাক্তিবর্গ বুদ্ধিজীবি'র আওতায় পড়ে। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চারত: ব্যাক্তিবর্গ, উৎপাদন ও উন্নয়ন সহযোগী ব্যাক্তিবর্গ দেশ ও জাতীর কল্যানে সদা সর্বদা নিবেদিত  বুদ্ধিজীবি হিসেবে সমাজে পরিচিত।

   বুদ্ধিজীবি'র প্রকারভেদ:--

      বিশেষ একটি বিষয়ে গভেষনার মাধ্যমে বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী ব্যাক্তিদের বিশেষজ্ঞ, পরিক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যমে নতুন নতুন বিষয় আবিস্কারকারীদের আবিস্কারক, উদ্ভাবনকারীদের  উদ্ভাবক, কবিতা রচয়িতাদের কবি, বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষনকারীদের বিশ্লেষক ইত্যাদি প্রকারভেদ রয়েছে। এক কথায় বিশেষ বিষয়ে গভেষনা, উদ্ভাবন, বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষনে পারদর্শী ব্যাক্তিবর্গ'কে বুদ্ধিজীবি বলা যায়।  বিশেষজ্ঞ, উদ্ভাবক, প্রযুক্তিবীদ, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পি, সাংবাদিকেরা স্ব-স্ব পেশা ভিত্তিক উল্লেখিত বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান আহরনের সত্বেও, উক্ত বিষয়টির সম্পর্কে নিয়ন্তর চর্চারত: থাকেন। ফলত: উপলব্দ বিষয়টি'র বহি:রাবরনের  স্বরুপ যেমন উৎঘাটন করেন তেমনি অন্তনিহীত ক্ষতিকর উপাদান সমূহ চিহ্নিত করে বিষয়টি'র সামগ্রিক উপকারীতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে জনসচেতনতায় সৃষ্টিতে ভুমিকা পালন করেন। এককথায় স্ব-স্ব-ক্ষেত্রে স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত বিশেষজ্ঞ, উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবীদ, রাজনীতিবীদ, কৃষিবীদ, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পি, সংস্কৃতি সেবী সহ অন্যান্ন শাখা প্রশাখায় বিচরণ পুর্বক মেধা ও দক্ষতা'য় কায়িক শ্রমে সৃষ্ট  সৃজশীল সৃষ্টি'র উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন--তাঁরা'ই সমাজে বুদ্ধিজীবি হিসেবে পরিচিত।"

   সম্মান ও মায্যদা:--

      এই শ্রেনীর ব্যাক্তিবর্গ রাষ্ট্র ও সমাজে একনম্বর নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন। রাষ্ট্র তাঁদের বিশেষ বিশেষ কাজে অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বিভিন্ন পদক, উপহার, উপঢৌকন, উপাদিতে সম্মানীত করেন।সরকার তাঁদেরকে বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রচলিত বিভিন্ন পদক অথবা সরকারের মায্যদাপূর্ণ উপহার প্রদান করেন। রাষ্ট্রীয় বিশেষ অনুষ্ঠানে এই শ্রেনী'র সম্মানীত নাগরিকগন নিমন্ত্রন পেয়ে থাকেন--নিমন্ত্রিত অতীথিরা রাষ্ট্রীয় অতীথি হিসেবে বিবেচিত হন। বিবিধ গুনে গুনাম্বিত রাষ্ট্রের প্রথম শ্রেনী'র নাগরিক হিসেবে তাঁরা সর্বদা রাষ্ট্র এবং জনকল্যানে নিবেদিত থাকেন। রাষ্ট্রীয় রীতিনীতি পরিবর্তন, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন, সরকার পরিবর্তন সমাজের বুদ্ধিজীবি শ্রেনী'র বিশেষ বিবেচ্য বিষয় নয়। রাষ্ট্র ও সরকার, দেশ ও জনকল্যানে তাঁদের কর্ম, সৃষ্টি, গভেষনা, উদ্ভাবন নিয়ে তাঁরা ব্যাস্ত  থাকতে বেশী পছন্দ করেন।

  মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীর হত্যা তালিকায় বুদ্ধিজীবি:-

     এডওয়ার্ড ডব্লিউ সাইদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে এক আলোচনায় বলেছিলেন, বুদ্ধিজীবী ছাড়া যেমন বড় ধরনের কোন বিপ্লব সংঘটিত হয় নি, তেমনি তাদের ছাড়া কোন বিপ্লববিরোধী আন্দোলনও সংঘটিত হয় নি। এক কথায়, তারাই হচ্ছেন ‘বিপ্লব’ এর প্রাণ। অন্যভাবে বলা যায়, শাসকগোষ্ঠীর টিকে থাকার জন্যে যেমন একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী প্রয়োজন, তেমনি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথা বলার জন্যেও আরেক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদেরকে তাঁদের রোষানলে পড়তে হয়। এ কারণেই দেখা যায় যে, গত শতাব্দীর শুরুতেই আর্মেনিয়ায় গণহত্যা শুরু হয়েছিল ২৫০ জন বুদ্ধিজীবীকে গ্রেফতার ও হত্যার মাধ্যমে। হিটলার ও তার নাৎসি বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করেছিল। এই দিক দিয়ে বিবেচনা করলে ১৯৭১-এ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মোটেই নতুন কিছু নয়, বরং প্রকৃতিগত দিক হতে পূর্বের গণহত্যাগুলোর সাথে এটা সাদৃশ্য পূর্ণই বটে।

     ৭১ এ বাঙ্গালী জাতী'র গৌরবের অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাক বাহিনী ও তাঁদের এদেশীয় দোষর রাজাকার আলবদর, আল শামস বাহিনী'র হত্যা তালিকায় বুদ্ধিজীবিরা ছিলেন অন্যতম নিশানা। যুদ্ধের নয় মাস দেশব্যাপী খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়েছিল বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবিদের।   বাংলাদেশের স্বাধীনতা যখন প্রায় সমাসন্ন, পাকিস্তানী বাহিনী যখন বুঝতে পেরেছে তাঁদের পতন অনিবায্য, তখনই তাঁরা ঢাকা শহরের আনাছে কানাছে যে সমস্ত দেশবরেন্য বুদ্ধিজীবিদের বসবাস ছিল, তাঁদের অনেককে ধরে ধরে অকথ্য নিয্যাতনের পর হাত পা বেঁধে হত্যা করা হয়েছিল।

 হত্যার উদ্দেশ্য:--

  বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করার মুল উদ্দেশ্য ছিল বাঙ্গালী জাতীকে মেধাশুন্য করার মহা পরিকল্পনারই অংশ। মুক্তিযুদ্ধের প্রম্ভে এবং শেষ পয্যায়ে বুদ্ধিজীবি হত্যায় উদ্দেশ্যের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকে বুদ্ধিজীবি হত্যা ছিল বাঙ্গালীর মুক্তি সংগ্রামকে স্তব্দ করে পাশ্চিমা শাষক গোষ্টির শাষন শোষন নিরবচ্ছিন্ন রাখা। এতদ উদ্দেশ্যে হত্যা মিশন ছিল দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের মেধাবী শিক্ষক, নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিগন।

   হত্যাকান্ডের দ্বিতীয় ধাপটি ছিল অত্যান্ত মর্মান্তিক এবং বেদনা দায়ক। ডিসেম্বরের তিন বা চার তারিখ থেকে এই হত্যা মিশনটি কায্যকর করা হয়। লক্ষ করলে দেখা যায় এই হত্যাযজ্ঞটি শুধুমাত্র ঢাকা কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবি সমাজের উপর চালানো হয়েছিল। উক্ত হত্যা মিশনে আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবিদের এককভাবে হত্যা করা হয়নি, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্রদের হত্যা করা হয়েছিল। স্পষ্টত:ই উক্ত হত্যাযজ্ঞের লক্ষ ছিল আগামীর স্বাধীন সার্বভৌম  বাংলাদেশকে মেধাশুন্য করার চক্রান্তের বাস্তবায়ন। বাঙ্গালী জাতীকে জ্ঞান, বিজ্ঞান, আবিস্কার উদ্ভাবন সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধাশুন্য করে অন্ধকারে নিমজ্জিত করার পরিকল্পনা।

   আর একটি বিষয় লক্ষ করলে দেখা যায়--মুক্তিযুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে শিক্ষকদের খুব বেশী হত্যা করেছিল। অর্থাৎ নতুন বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্র ধ্বংস করে দিতে পারলে অনায়াসে বাঙ্গালী জাতীর উপর তাঁর সুদুরপ্রসারী কুপ্রভাব পড়বে, এই চিন্তা চেতনাই তাঁদের মধ্যে কাজ করেছে মনে করি।

  মহান মুক্তিযুদ্ধের নয়মাসে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিতযসা জ্ঞান-গরিমায় অগ্রসরমান,প্রগতির ধারক বাহকদের হত্যা করেছিল।নিম্নে তাঁর একটি তালিকা প্রদান করছি।

শিক্ষাবিদ - ৯৯১ জন।
সাংবাদিক - ১৩ জন।
চিকিৎসক - ৪৯ জন
আইনজীবী - ৪২ জন
অন্যান্য (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী এবং প্রকৌশলী) - ১৬

  বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বুদ্ধিজীবি সমাজ--

  মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে শুরু হওয়া মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবীদ, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রগতিশীল চিন্তাধারার অধিকারীদের উপর আঘাত আজও বন্ধ হয়নি। দেশবিরোধী চক্রটি সুযোগ পেলেই প্রথমে তালিকা প্রকাশ করে--'পরবর্তিতে সুযোগ বুঝে হত্যাকান্ড ঘটায়'। বাংলাদেশের জম্মলগ্ন থেকে  অশুভশক্তি একেক সময় একেক নামে তাঁদের উত্থান ঘটিয়েছে। তাঁরা কখনও গুপ্ত হত্যা, কখনও সভাসমাবেশে বোমা হামলা, কখনও বা প্রতিষ্ঠানে হামলা,কখনও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নির্মম, নিষ্ঠুর ভাবে মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী গুনিজনদের হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের এই ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে চিহ্নিত কয়েকটি প্রেতাত্বার দল ও গোষ্টি। লক্ষ করলে দেখা যায়--'এই সমস্ত প্রেতাত্বা সদৃস রাজনৈতিক দল সমূহের উত্থান ঘটেছে-'জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু'কে স্বপরিবারে হত্যার পর'।

     বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী বুদ্ধিজীবিদের লালন করে থাকে তাঁদের স্বার্থে। আমাদের সমাজে তাঁদের চরিত্র হনন, কুৎসা রটনা, নির্বিচারে হত্যা, গুম চালানো হয়। অশুভ শক্তির হত্যাযজ্ঞে ইতিমধ্যে অগনিত বুদ্ধিজীবি প্রান হারিয়েছে, অসংখ্য দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য পরিস্কার--'প্রগতির ধারা থেকে বাংলাদেশকে বিচ্যুত করে অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নেয়া'।
   
       উপসংহার:---
   
    আমাদের বুদ্ধিজীবি আমাদের সম্পদ। বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নকামী একটি দেশের বুদ্ধি চর্চারত: ব্যাক্তিদের লালন করা প্রয়োজন দেশ ও জাতীর বৃহত্তর স্বার্থে। ইতিমধ্যে প্রমানীত হয়েছে--"এক প্রযুক্তিবীদের চিন্তাধারায় বাংলাদেশের সমাজ স্বল্প সময়ে  উন্নতি, অগ্রগতি'র শিখরে অবস্থান নিয়েছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে 'উন্নত প্রযুক্তি বিশ্বে'র কোন একটি  দেশেও সম্ভব হয়নি"।

    তিনি আর কেউ নন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী'র সুযোগ্য পুত্র জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি উন্নত বিশ্বকে বিস্মিত করে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নেতৃত্বের আসনটি নীজ যোগ্যতায় ইতিমধ্যে দখল করে নিয়েছেন। সুতারাং বলা যায়-- সভ্যতা বিকাশে এবং সমাজ উন্নয়নে বুদ্ধিজীবিদের লালন করা বাংলাদেশের স্বার্থেই প্রয়োজন।তাঁদের জীবন ও সম্পদের নিশ্চয়তা দেয়ার গ্যারান্টি যতক্ষন না আমরা দিতে পারবো ততক্ষন দেশের এই মহামুল্যবান সম্পদ 'মেধা'  পাচার অর্থাৎ বুদ্ধিজীবির দেশত্যাগ বন্ধ করা যাবে না।
   

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা