মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধে অংশনেয়া পাকিস্তানী পেশাদার পুলিশবাহিনী মুজিবনগর সরকারের প্রথম আনুগত্য স্বিকারকারী বাহিনী বটে।


   মুক্তিযুদ্ধে'র চেতনায় সমৃদ্ধ বর্তমানের "পুলিশ বাহিনী"--"মুজিব নগর সরকারের আনুগত্য স্বিকারকারী প্রথম পেশাদার বাহিনী"।


   রুহুল আমিন মজুমদার:--বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দেশের শান্তি, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার প্রতীক। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রদান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষায় পুলিশের প্রতিটি সদস্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সচরাচর এই বাহিনীটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়মিত পেশাদার বাহিনী সত্য বটে কিন্তু এই বাহিনী' অভ্যন্তরের গঠন প্রক্রিয়ায় রয়েছে বাঙ্গালী জাতীর আলাদা গৌরব, শৌয্য বিয্যের ইতিহাস।যার ফলে প্রতিটি বাঙ্গালী'র মনের অজান্তে সদা জাগ্রত আলাদা  একটি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ কাজ করে এই বাহিনী'র প্রতি। বাঙ্গালী জাতী'র মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রক্রিয়ায় গড়ে উঠা 'বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী'র প্রতি জাতি কৃতজ্ঞতার চির ঋনে আবদ্ধ থাকবে চিরকাল।

    বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে পরোক্ষ ভাবে বাঙ্গালী জাতী'র প্রতি স্বাধীনতা' যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহব্বানকে  সর্বপ্রথম পুলিশ বাহিনী কায্যকর করার পদক্ষেপ গ্রহন করে।১৯৭১ সালের ৮ই মার্চ থেকে তৎকালিন পুর্ববাংলায় অবস্থানরত: রাজার বাগ পুলিশ লাইন সহ পুলিশের প্রতিটি ইউনিট বঙ্গবন্ধু'র ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তান সরকারের আদেশ নির্দেশ পালন থেকে বিরত: থাকে। কায্যত: পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রন পেশাদার পুলিশ বাহিনী'র উপর থেকে হারিয়ে ফেলে।

      পাকিস্তানী জান্তা সরকার পুলিশের ভূমিকা উপলব্দি করতে পেরে ২৫  মার্চের দিবাগত কালরাতে প্রথমে'ই রাজারবাগ পুলিশ লাইনে হামলা চালিয়ে বাঙ্গালী'র প্রতিরোধ শক্তি গুড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী' অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের বিরুদ্ধে "থ্রি-নট-থ্রি রাইফেলে"র সাহায্যে আগে থেকে প্রস্তুত দেশ প্রেমিক পুলিশ বাহিনী প্রচন্ড রক্তক্ষয়ি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পূলিশ বাহিনী'র দেখাদেখি ঢাকা ইউনিভারসিটি সহ ঢাকা শহরের স্থানে স্থানে ছাত্র-জনতা গাছের গুটি, রেললাইনের স্লিপার পেলে, পূল কালভার্ট ভেঙ্গে সেই রাতের অন্ধকারে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যায়।

   পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী প্রথমে'ই হামলার নিশানা করে পাকিস্তান সরকারের পেশাদার নিয়মিত সসস্ত্র বিদ্রোহী রাজারবাগ পুলিশ লাইনে অবস্থানরত: পুলিশ বাহিনী, বাঙ্গালী'র আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ আসপাশের এলাকা। ২৫ই মার্চ দিবাগত রাতে এই সমস্ত এলাকা সহ ঢাকার রাজপথে নির্বিচারে বাঙ্গালী হত্যায় মেতে উঠে হানাদার বাহিনী।  পুলিশ  তাঁদের ব্যবহৃত থ্রি নট থ্রি রাইফেলস এবং ছাত্ররা রোভার স্কাউটের প্রশিক্ষনে ব্যবহৃত গাদা বন্ধুকের সাহায্যে প্রতিরোধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

    একদিকে  রাজারবাগ পুলিশ লাইনের পুলিশ বাহিনীর সদস্যগন আ-মৃত্যু প্রতিরোধ যুদ্ধরত:। অপরদিকে পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগারের তালা ভেঙ্গে   অস্ত্র ও গুলি  লুট করে ঢাকা সিটির অভ্যন্তরে প্রতিরোধ যুদ্ধে লিপ্ত ছাত্র জনতার হাতে পৌঁছে দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিল আজকের এই পুলিশ বাহিনীই। ইউনিভারসিটি কেন্দ্রিক ইউ. টি. সি-রোভার স্কাউটের ট্রেনিং সরঞ্জাম নিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধরত: ছাত্র জনতার হাতে পৌঁছে দেয়া "থ্রি নট থ্রি রাইফেলস" যুদ্ধ চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে শোভা পেতে দেখা গেছে।
    হোক না আধুনিক সমরাস্ত্রের মুখে বৃটিশ সরকারের মান্ধাতার আমলের "রাইফেলস" কোনপ্রকার কায্যকর অস্ত্র নয়।তথাপি প্রাথমিকভাবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে অত্যাধিক প্রয়োজন ছিল নিরস্ত্র ছাত্র জনতার হাতে নিজেদের রক্ষা করার একখানা অস্ত্র। ছাত্র-জনতার হাতে প্রয়োজনীয় সেই অস্ত্রটি সীমিতকারে হলেও তুলে দেয়ার অত্যান্ত কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি বিভীষিকাময় ২৫ শে মার্চের দিবাগত কালরাতে জীবনবাজী রেখে দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনীই করেছিল।

   ২৫ মার্চ দিবাগত কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইটের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাঙ্গালী'র প্রতিরোধের দুর্গ নির্মূল করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আকাংক্ষা অংকুরে ধূলিসাৎ করে দেয়া। প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত আধুনিক সেনাবাহিনী'র সাথে অসম প্রতিরোধ যুদ্ধে ২৫শে মার্চ রাতে'ই রাজার বাগ পুলিশ লাইনে অগনিত পুলিশ সদস্য শহিদ হন। অসংখ্য পুলিশ সদস্য শরীরে বিভিন্নস্থানে গুলির আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ক্ষত বিক্ষত শরীর নিয়ে কোনরকমে জীবন রক্ষা করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মুলত: সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে পাকিস্তানী সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ছাত্র জনতাকে প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সাহষ জুগিয়েছিল, উদ্ভোদ্ধ করেছিল রাজার বাগ পুলিশ লাইনের উপস্থিত সদস্যদের বিরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ যুদ্ধ।

      ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে উপস্থিত পুলিশ বাহিনী'র সদস্যদের  সশস্ত্র প্রতিরোধে ঝাঁপিয়ে পড়ার খবর দেশব্যাপী ছড়াতে দেরি হয়নি। বাঙ্গালী জাতী পুলিশের সাহষিকতাপূর্ণ প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনূকরনে দেশব্যাপী গড়ে তুলতে থাকে সসস্ত্র প্রতিরোধ গ্রুপ। রাজারবাগ পুলিশ লাইনের জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা সদস্যগন সহ পূর্ব বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পুলিশ বাহিনীর বিভিন্নস্তরের সদস্যগন দেশব্যাপি গড়ে তোলে ছাত্রজনতার মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি মূলক প্রাথমিক প্রশিক্ষন শিবির।

      আপামর ছাত্রজনতা, পুলিশের প্রতিরোধ যুদ্ধ বাঙ্গালী জাতী'র বহু আক্ষাংকিত স্বাধীনতার অর্জনের নিমিত্তে অপরিহায্য মুক্তিযুদ্ধের দিকে তড়িৎগতিতে দাবিত হতে থাকে। ফলত: যথোপযুক্ত সময় (১৭ই এপ্রিল) পুর্ব বাংলার নির্বাচিত প্রতিনীধি এবং  প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত এম, এল, এ গনের সমন্বয়ে বঙ্গতাজ তাজউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার "মুজিব নগর  সরকার"। এইদিনেই বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার জন্যে মুক্তিযুদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক এবং কাঠামোগত রুপ ধারন করে।

      মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া পুলিশ বাহিনী মেহেরপুরের আম বাগানের নতুন 'নামকরনকৃত মুজিব নগরে'  নবগঠিত "মুজিব নগর সরকার"কে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মায্যাদায়  সালাম ও কুচকাওয়াজ প্রদান করে। সেই অর্থে  "প্রবাসী সরকারে"র  সর্বপ্রথম বশ্যতা স্বীকারকারী এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রকাঠামোর বিরুদ্ধে পেশাদার কোন বাহিনী'র আনুগত্য প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধু'র আহব্বানে সাড়া দিয়ে জনগনের সাথে একাত্মতা প্রকাশকারী  বাহিনী' বর্তমানের সারাদেশে আইন শৃংখলা রক্ষা কাজে কর্মরত: পুলিশ বাহিনী।

    সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়-- মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম সসস্ত্র যুদ্ধের সূচনাকারী ছিল আজকের গৌরবের এই "পুলিশ বাহিনী"। শুধু তাই নয়--মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের সাহষী ভূমিকার পাশাপাশি "মুজিবনগর সরকাররের বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তি ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় অংশগ্রহনকারী বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দের সামগ্রিক নিরাপত্তায় প্রশ্নাতীত সহায়তা প্রদান করে দেশপ্রেমিক আজকে'র এই 'পুলিশ বাহিনী'।
     অন্তদৃষ্টি খোলা রেখে লক্ষ করলে দেখা যায়--"পুলিশ বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতা ব্যাতিরেকে মুজিবনগর সরকার গঠন ও পরিচালনা ছিল তৎসময়ে বঙ্গবন্ধু'র অনুপস্থীতিতে জাতীয় নেতৃবৃন্দের জন্যে পরিস্থীতি বিবেচনায় প্রায় অসম্ভব এবং কষ্টসাধ্য ব্যাপার।"

   মুজিব নগর সরকার গঠনে মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাঙ্গালী জাতীর স্বাধীনতার জন্যে আনুষ্ঠানিক মুক্তিযুদ্ধের কালপর্ব। ভারত সরকারের আন্তরিক সহযোগীতায় পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে অন্যান্য পেশাদার বাহিনী এবং পুর্ববাংলার মুক্তিকামী সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহনে "প্রবাসী সরকারের" নেতৃত্বে পাকিস্তান সরকারের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত: বাঙ্গালী সেনা কর্মকর্তা, মহকুমা কর্মকর্তা,পুলিশের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা, ছাত্র ও যুবনেতাদের একের পর এক দুর্দষ্য মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট গঠন প্রক্রিয়া। একদিকে অ-প্রশিক্ষিত ছাত্রজনতার প্রশিক্ষন ক্যাম্প পরিচালনা অন্যদিকে স্বল্প প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্ববাংলার অভ্যন্তরে পাঠিয়ে চোরাগুপ্তা গেরিলা হামলা পরিচালনা ছিল নবগঠিত মুক্তিবাহিনীর প্রধান কাজ। নগন্য সংখ্যক অপ্রশিক্ষন প্রাপ্ত, ভারীঅস্ত্রহীন মুক্তিযোদ্ধাদের আকস্মিক আক্রমন পরিচালনা এবং নিমিষেই ছিটকে পড়ার রণকৌশল দখলদার বাহিনী'কে যুদ্ধক্ষেত্রে সদা ব্যাতিব্যাস্ত ও তটস্ত রাখতে বেশ কায্যকর ভূমিকা পালন করে।

     মুক্তিযোদ্ধাদের সাহষিকতা ও পারঙ্গমতায় পাকবাহিনী সর্বক্ষেত্রে ১৭০০ মাইলের ভারতীয় সীমান্ত এলাকা ছাড়াও রাজধানী ঢাকা সহ ছোট বড় প্রত্যেক শহর  বন্দর, গ্রামগঞ্জ, সমূদ্রে নাস্তানাবুদ হতে থাকে। কৌশলগত যুদ্ধ পরিচালনা এবং আন্তজাতিক যোগাযোগে একদল জ্ঞানীগুনী বুদ্ধিজীবির  পদচারনায় প্রবাসী অস্থায়ী মুজিব নগর সরকারের প্রতি  সর্বস্তরের বাঙ্গালী ছাত্র জনতার সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিযোদ্ধা, পুর্ব বাংলার অন্যান্ন পেশাদার বাহিনী এবং ভারত সরকার সহ আন্তজাতিক মহলে বিশেষ গ্রহনযোগ্যতা, সম্মান ও মায্যদার আসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
     এই সব কিছুই সম্ভব হয়েছিল বলতে গেলে বর্তমানে সার্বক্ষনিক আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রনে নিয়োজিত বাংলাদেশের আজকের শৌয্য, বিয্য, গৌরবের শীর্ষে অবস্থানকারী বাংলাদেশের জনগনের আস্থার প্রতিক "বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী'র প্রাথমিক প্রতিরোধ যুদ্ধের কৃতিত্বের অনবদ্য ফসল।

     অকুতোভয় পুলিশ সদস্যদের প্রতিরোধ যুদ্ধের পথ ধরে  দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিকামি জনতার সম্মিলীত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানের সরওয়ার্দি উদ্যান) মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী'র যৌথ কমান্ডে গঠিত মিত্রবাহিনীর নিকট আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় দখলদার পাকবাহিনী'র বাঙ্গালী'র মা বোনের উপর লেলিয়ে দেয়া সামরিক বাহিনী। উল্লেখ্য দখলাদার পাকিস্তান সরকারের পেশাদার 'সামরিক বাহিনী'র তিরানব্বই হাজার আধুনিক মারাণাস্ত্র সমৃদ্ধ চৌকস সেনা সদস্য ১৬ই ডিসেম্বর আত্মসমর্পন করেছিল। 

    দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এর পরই বঙ্গবন্ধু 'সারদা পুলিশ একাডেমি পরিদর্শনে' যান।  সেই সময় তিনি পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে আসেন।দেশপ্রেমিক পুলিশবাহিনী বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের একমাত্র আইন শৃংখলা বাহিনীর কাঠামো প্রতিষ্ঠিত করলে মাত্র তিন বছরের মধ্যে পুলিশ বাহিনীর কলেবর বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণাঙ্গ বাহিনীতে রুপান্তরীত হয়। সার্বিক ক্ষেত্রে পুলিশবাহিনীর পেশাদারী মনোভাব পিরে আসে এবং স্বাধীন দেশের উপযোগী  কর্মকান্ড সৃজিত হতে থাকে।

      এরপরই স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধু সরকার 'পুলিশ সপ্তাহ' পালনে'র রীতি প্রচলন করেন।  পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু 'শেখ মুজিবুর রহমান'। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ সপ্তাহের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন--স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর যেসব সদস্য শহীদ হয়েছে তাদের সম্মান রক্ষা করা তাঁর সরকারের প্রধান কাজ।সেদিনের ভাষনে বঙ্গবন্ধু যুগান্তকরি যে  উক্তিটি করেছিলেন তা আজও বাঙ্গালী'র মনে চিরভাস্বর হয়ে আছে। তিনি সেদিন বলেছিলেন--"স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা অনেক বেশী কঠিন"। সেদিনের পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের উপযোগী পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার এবং তাঁদের পেশাগত উন্নয়নে সর্বোচ্ছ রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকারের প্রত্যয় ব্যাক্ত করেছিলেন।

      পরবর্তি ইতিহাস বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে অত্যান্ত করুন,  বেদনাদায়ক সর্বোপরি কলংক জনক অধ্যায়। সেই একই বছরই স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বাঙ্গালী জাতির উম্মেষদাতা, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে  হত্যা করে একদল স্বাধীনতা বিরুধী, নরপিসাচ  ঘাতকচক্র। বঙ্গবন্ধু'কে হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি-- বাঙ্গলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে নেয় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতা বিরুধী সাম্প্রদায়িক চেতনাপুষ্ট ঐ চক্রটি।

      ফলত: মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকারী পুলিশ বাহিনী দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সময় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের পরিচালিত সরকারের পরিচয্যা, উন্নয়ন, আধুনিকায়নের সাজানো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে। এই দীর্ঘ সময় আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে সরকার পরিচালনার অনুপস্থীতিতে রাষ্ট্রের অন্যান্ন পেশাদার বাহিনী'র ন্যায় সম্পূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের পুলিশ বাহিনীতেও স্বাধীনতা বিরুধী অশুভশক্তি একতরফা অপপ্রচার চালিয়ে আওয়ামীলীগ এবং বঙ্গবন্ধুর সদ্যস্বাধীন দেশের নতুন সরকার সম্পর্কে একশ্রেনী'র পুলিশ সদস্যের মনমানষিকতা বিষিয়ে তুলতে সক্ষম হয়।

     অশুভ দেশবিরুধী শক্তির "কাল্পনিক মতাদর্শের গোয়েবলসীয় প্রচারণার" মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামীলীগের আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনক তথা বাঙ্গালী জাতির শৌয্য, বিয্য, হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনীকে বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

    ফলত: মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ভূমিকা পালনকারী পেশাদার দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী'র অভ্যন্তরে মাঝে মধ্যে আইনশৃংখলা অবনতি ঘটানোর উপাদান বিস্তারকারি কতিপয় পুলিশ সদস্যের উপস্থীতি লক্ষ করা যায়। আজও জনগনের একান্ত প্রিয়, আশা ভরসার মধ্যমণি পুলিশের কতিপয় সদস্য  সমাজ বিরুধী কর্মকান্ড ও সাবোটাজের বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে--যাহা মুক্যিযুদ্ধের মাধ্যমে বহু পুলিশ ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশের দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনী'র মধ্যে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির জনগন আদৌ আশা করেনি।

     বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর "জাতীয় পুলিশ সপ্তাহে প্রথম  ভাষন দেয়ার সুযোগ পান। জাতির পিতার প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে তিনি এই বাহিনীর উন্নয়নের সকল প্রকার কায্যকর পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষনা দেন। শুরু হয় পুলিশ সম্পর্কে মান্ধাতার আমলের ধ্যানধারনা পরিবর্তন করে আধুনিক যুগ উপযোগী পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার নিয়ন্তর প্রচেষ্টা। প্রাথমিক অবস্থায় কর্মরত: পুলিশের ঝুঁকি ভাতা, পারিবারিক রেশনিং ব্যাবস্থা চালু করেন। পুলিশ সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে গড়ে তোলা হয় বিশেষায়িত পুলিশ হাসপাতাল। একই সাথে পুলিশের কাজের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এই বাহিনী'র সামগ্রিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাঁর সরকার।

     ২০০০ ইং সালে ঢাকায় বাংলাদেশ পুলিশের একমাত্র স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ  পুলিশের ট্রেনিং সেন্টার টাঙ্গাইল, রংপুর, খুলনা, নোয়াখালীতে বিস্তৃত করা হয়।২০০১ ইং সালের অশুভ শক্তির প্ররোচনায় দেশী বিদেশী শক্তির চক্রান্তে বহু যুগান্তকারী সাফল্য থাকা সত্বেও আওয়ামীলীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে ছিটকে পড়লে এই বাহিনী'র আদুনিকায়ন আবারো থমকে পড়ে। দীর্ঘ আট বছর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটানা আন্দোলন সংগ্রামের পর ২০০৮ইং সালের সাধারন নির্বাচনে ভূমিধ্বস বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলটি এবারই প্রথম  একটানা নয় বছর দেশ ও জনগনের সার্বিক উন্নয়নের সুযোগ পেয়েছে।

      বিগত সরকার সমূহের পৃষ্টপোষকতায় দেশব্যাপী গভীর ভাবে প্রোথিত জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকাশক্তি, অনৈতিকতা,চুরি, ডাকাতি, রাহাজানী ইত্যাদি সমাজবিরুধী কর্মকান্ড বিস্তৃতি লাভ করে। তাছাড়াও সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চরম বিশৃংখল পরিস্থীতি দেশের একমাত্র আইন-শৃংখলা  বাহিনী'র ভুমিকা সর্ব সাধারনে প্রশ্নের সম্মুখ্যিন হতে থাকে। পুলিশ বাহিনীর প্রতি জনগনের আস্থা বিশ্বাসে ফাটল দেখা দেয়।

    বর্তমান সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে প্রথমে'ই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনার প্রতি মনযোগী হন। পুলিশ জনগনের বন্ধু এই আপ্ত বাক্যটি উক্ত বাহিনীর সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করার পদক্ষেপ গ্রহন করেন। তাঁদের পেশাদারী মনোভাব ফিরিয়ে আনতে কায্যকর সংস্কার পদক্ষেপ সফলভাবে বাস্তবায়ন করেন। ব্যাপকহারে নিয়োগ কায্যক্রম অব্যাহত রেখে সরকার পুলিশের জনবল ঘাটতি জনিত অনেকগুলি ক্ষেত্র'কে সচল করে পুলিশের সার্বিক সক্ষমতা ফিরিয়ে আনে। স্বল্প সময়ের মধ্যে পুলিশ বাহিনীতে পেশাগত শৃংখলা ও সেবামূলক দেশপ্রেমের চিত্র ফুটে উঠে।

  অত:পর সরকার বিগত সরকারের শাসনামলের উল্লেখিত সমাজবিরুধী কর্মকান্ড প্রতিরোধে কঠোর মনোভাব প্রদর্শন করলে, পুলিশ তাঁর নিয়মিত নিজস্ব কর্মকান্ড পরিচালনা স্বাধীনভাবে করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।তৎসঙ্গে সরকার সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবক্ষয় রোধে দীর্ঘমেয়াদী কায্যকর সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহন করলে সার্বিকক্ষেত্রে মাত্র দুই বছরের মধ্যে স্থিরতা ফিরে আসে।
     সরকারের সমূদয় জনহিতকর কর্মকান্ডে দেশপ্রেমিক "বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী" যুগান্তকারী এবং গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আপামর জনগনের আস্থা ও বিশ্বাসের স্থানটি পূণ:দখল করতে সক্ষম হয়। একদিকে সরকার সার্বিক ক্ষেত্রে অবক্ষয় রোধ এবং জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, রাহাজানী, চুরি, ডাকাতি প্রতিরোধ করে আইনশৃংখলা, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠায় সফলতা অর্জন করে অপরদিকে পুলিশ বাহিনী উল্লেখিত কাজে চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করে তাঁদের হৃত গৌরব পূর্ণ:দ্ধার করে।

    সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকসহ সামগ্রিক অপরাধ নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য মাত্র তিনবছরের মধ্যে (২০১১ সালে) স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশের সাম্প্রতিক সাফল্যের অন্যতম উপাদান জাতির জনকের কন্যা 'শেখ হাসিনার' উদ্ভাবীত কমিউনিটি পুলিশিং ব্যাবস্থা নি:সন্দেহে কায্যকর ভূমিকা পালন করেছে। পাড়ায়-মহল্লায় ওয়ার্ড ভিত্তিক জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ধারণা বাস্তবায়িত করে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলায় রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করে সরকার।
     সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি দমন অভিযান পরিচালনা, দেশব্যাপী শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ--এই সফলতার পেছনেও রয়েছে কমিউনিটি লুলিশিং এর কায্যকর ভুকিকা। বিগত বছর গুলিতে পুলিশ বাহিনী'র সাফল্যজনক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত "ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাতেও কার্পন্য করেননি"।

    এই কথা অনস্বিকায্য যে--দেশের অভ্যন্তরে জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের বীরত্ব এবং সাফল্য সারা বিশ্বে  আলোচিত এবং প্রসংশিত হচ্ছে। বিশেষ করে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ, শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জঙ্গি হামলা, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান, নারায়ণগঞ্জ, পল্লবী, আজিমপুর ও গাজীপুরে জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান "বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী"র বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা দেশবাসীর মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

     জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গিবাদ ও সমাজের বিভিন্নস্তরের অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দেশপ্রেমিক জনগন জনসমাবেশ অনুষ্ঠান করে পুলিশ বাহিনীকে তাঁদের কাজের স্বীকৃতি ও সাহষ দিতে কার্পন্য করেনি। জনগন কতৃক স্বত:স্ফূর্ত জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত  হওয়া এই বাহিনীর প্রতি অবশ্যই সাধারণ মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ফিরে আসার নিদর্শন নির্দেশ করে।

     বিগত সরকার সমূহের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্ছমহলের পৃষ্টপোষকতা পাওয়া অত্যাধুনিক বিস্ফোরক সমৃদ্ধ উগ্র ধর্মীয় জঙ্গি বাহিনী দমনে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র্যাব, সোয়াত বাহিনী'র ভূমিকা জাতী স্মরণ করবে দীর্ঘকাল। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের গৌরবের পুলিশ বাহিনী দেশে শান্তিশৃংখলা রক্ষার পাসাপাশি অন্তজাতিক অঙ্গনেও শান্তি রক্ষায় অবদান রেখে তাঁদের আধুনিকতা, সক্ষমতা, পারঙ্গমতার উজ্বল দৃষ্টান্ত রেখে চলেছে। শান্তি মিশনে বাংলাদেশের পুলিশের সাফল্য এবং নারী পুলিশের এফপিইউর সাফল্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই বাহিনীর সম্মান অনেকগুন বেড়েছে। শুধু তাই নয়--"বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহুগুন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে"।

    "শেখ হাসিনা'র  সরকার পূরুষতান্ত্রিক সমাজের ধারনাকৃত অবহেলীত, শক্তিহীন, অবলা নারীদের মহিমাম্বিত করার যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ- বাংলার নারীদের পুলিশের ন্যায় চেলেঞ্জিং পেশায় নিয়োগদানের সিদ্ধান্ত। নারীকুলের অনুকুলে নেয়া এই সিদ্ধান্ত তাঁদের সক্ষমতা, পারঙ্গমতার পরিক্ষায় অবতির্ন হওয়ার এবং তাঁদের যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ প্রদান করেছে।

    আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই যুগোপযূগী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের নারীগন চিরাচরিত পারিবারিক ও সামাজিক গন্ডি পেরিয়ে দেশব্যাপী পুরুষ পুলিশদের পাশাপাশি আইনশৃংখলা রক্ষায়  সম সক্ষমতার সাক্ষর রেখে চলেছে।ফলশ্রুতিতে জাতিসংঘ মিশনেও পুরুষ পুলিশের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে  ভূমিকা রাখার সুযোগ পেয়েছে। পুলিশী ব্যাবস্থার সর্বক্ষেত্রে তাদের বীরত্বগাঁথা, ত্যাগ, তিতিক্ষা সর্বক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের সিদ্ধান্তের অনুকূলে বিশেষ ভূমিকা রাখবে আশাকরি। অদূর ভবিষ্যতে দেশসেবার  আরো বহুক্ষেত্র সৃষ্টি করার লক্ষে বর্তমানের নারী পুলিশের সদস্যগন তাঁদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহষিকতার অন্যন্ন উদাহরনও ফলপ্রসূ ভুমিকা রাখবে, এতে কোন সন্দেহ নেই।

 ''ইচডঘ" আয়োজিত ৩৪টি দেশের নারী পুলিশদের নিয়ে সম্মেলনে বাংলাদেশের নারী পুলিশ অংশ নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ স্টাফ কলেজের সার্কভুক্ত দেশের অফিসারদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পুলিশিংয়ের মেথড সম্পর্কে  অভিজ্ঞতা বিনিময় পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি ও জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শুধু আইন পালন আর অপরাধ প্রতিরোধ বা দমনই নয়, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। গত এক দশকে জঙ্গিবাদ দমন এবং নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ পুলিশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।

   বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণরত স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানে গঠন করে ''পর্যটন পুলিশ"। উল্লেখিত পর্যটন পুলিশের কলেবর বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা বিধান কার্যক্রমের আওতায় আনার পরিকল্পনা ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

     সারা দেশে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কার্যক্রম নজরদারি করতেও তাদের ওপর গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করতে "পুলিশের অভ্যন্তরীণ ওয়েবসাইট" নামে একটি বিশেষায়িত বিভাগ ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। উক্ত কায্যক্রমকে বর্তমান সরকার প্রযুক্তি নির্ভর করার পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। পুলিশ সদর দপ্তরের একজন সহকারী মহাপুলিশ পরিদর্শক এই বিভাগের প্রধান এবং তিনি সরাসরি মহাপুলিশ পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট দাখিল করে থাকেন। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি পুলিশ ইউনিট পিআইওর সরাসরি নজরদারির আওতাধীন। পিআইওর এজেন্টরা পুলিশ হেডকোয়ার্টারের পিআইওর ইউনিট হিসেবে গন্য।

     দেশের একমাত্র পুলিশ একাডেমি চারঘাট উপজেলা সদর দপ্তর থেকে এক মাইল দূরে পদ্মা পাড়ে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশে সারদায় দেশের বৃহত্তম পুলিশ একাডেমী প্রতিষ্ঠিত।সারদা পুলিশ একাডেমি পুলিশ প্রশাসনকে গতিশীল ও সচল রাখার ক্ষেত্রে সমসাময়িক ধ্যান-ধারণায় বিভিন্ন ধরনের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে।

   বাংলাদেশ পুলিশ বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন  যানবাহন ব্যবহার করে যা আগে কখনই ছিলনা। মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান, পেট্রোল কার, ট্রাক, বাসও তাদের বহরে সম্প্রতি যুক্ত করা হয়েছে। হেলিকপ্টার, কমান্ড ভেহিক্যালস, ক্রাইম সিন ভেহিক্যালস, এপিসি, রায়ট কার, জলকামান, এভিডেন্স কালেকশন ভ্যানও পুলিশ বহরে  সম্প্রতি যুক্ত করা হয়েছে।গত কিছুদিন আগে সাউন্ড ফায়ারিং সহ সাউন্ড কারও সংযোজিত হয়েছে জন নিরাপত্তাবহরে।
     দেশের আন্ত বিভাগীয় হাইওয়ে যানচলাচল নির্বিঘ্ন এবং ডাকাতি ল্রতিরোধে গঠিত হয়েছে হাইওয়ে পুলিশের একটি ইউনিট।উক্ত হাইওয়ে পুলিশ নিশান পেট্রোল, নিশান সানি, হুন্দাই সোনাটা এবং আরও অনেক রকম যানবাহন ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন থানা পুলিশ জনসাধারণের গাড়ি রিকুইজিশন করে জননিরাপত্তা বিধানে ব্যবহার করার বিধানও রয়েছে।

      বাংলাদেশ পুলিশের কার্যক্রমে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালের অক্টোবরে চালু করা হয় বিডি পুলিশ হেল্পলাইন নামের একটি মোবাইল অ্যাপলিকেশন। এই প্রযুক্তি বাবহারের মাধ্যমে জনগনের কোনো অভিযোগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট থানা থেকে শুরু করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

      ১৯৮৯ সালে নামিবিয়ায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম জাতিসংঘের শান্তি মিশনের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করে। বর্তমানে   বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা আইভরি কোস্ট, সুদান, দারফুর, লাইবেরিয়া, কসোভো, পূর্ব তিমুর, ডিআর কঙ্গো, অ্যাঙ্গোলা, হাইতিসহ অন্যান্য মিশনে কাজ করে চলেছে। ২০০৫ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন আইভরি কোস্টে প্রথম সন্নিবেশিত পুলিশ ইউনিট এফপিইউ কাজ শুরু করে। শান্তিরক্ষী মিশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি বাংলাদেশের। বর্তমানে পৃথিবীর ছয়টি দেশে চলমান সাতটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে দুটি নারী পুলিশ সদস্যের সমন্বিত এফপিইউসহ যার একটি কঙ্গোতে অন্যটি হাইতিতে সর্বমোট ২০৫০ জন কর্মরত আছে। আন্তর্জাতিক মিশনে কাজ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে বাংলাদেশ পুলিশ। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে অপরাধ দমন করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম।

 বিগত নয় বছরের শাসনামলে জাতীর জনকের কন্যার পুলিশ বাহিনী'র প্রতি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি নিবন্দের কারনে--বদলে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর চিরায়ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট। আলোচ্য সময়ে পুলিশ বাহিনীতে উন্নত প্রযুক্তির পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে নতুন ৫টি ইউনিট। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি)। জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক দমনে ব্যাপক সাফল্য দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে এই ইউনিট। এ জন্য ঢাকা মহানগরের এই ইউনিটটি সারাদেশে গঠন করার জন্য পুলিশের ভিতর থেকে দাবি উঠেছে। পুলিশ সপ্তাহ ২০১৭-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই দাবি উত্থাপনের পর সিটি ইউনিটটি সারাদেশে গঠন করার পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৭ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষন দেন। সারাদেশের পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঐ সময় ঢাকায় এসেছিলেন। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ব্যাস্ততম দিন কাটানোর প্রক্রিয়ায় অংশ হিসেবে "পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনে"র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী'র নির্দেশনায় এই বৈঠকে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক দমনে কঠোর হওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের আইজি।

   বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা এক লাখ সত্তর হাজারের অধিক।সর্বমোট ১৮টি ইউনিট দেশব্যাপী জনগনের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।  ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এ বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে বিশেষায়িত ৫টি ইউনিট। এগুলি হচ্ছে-(১) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই),(২) ট্যুরিস্ট পুলিশ,(৩) এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এএপি),(৪) শিল্প পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অধীনে কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি)।

   জনবল ও যানবাহন সঙ্কটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও পুলিশের নব গঠিত ইউনিট গুলির সাফল্য ও সুনাম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছেছে। পুলিশের প্রচলিত পাঁচটি ইউনিটের বাইরে সম্প্রতি পুলিশ বাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সম্প্রতি আরো তিনটি প্রযুক্তি নির্ভর ইউনিট  উদ্ভোধন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এইগুলী হচ্ছে- (১)সিআইডি’র ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি, (২)সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার, (৩)সাইবার ট্রেনিং সেন্টার।

 ব্রিটিশ শাসনামল থেকে অত্রাঞ্চলের জনগন দেখে এসেছে পুলিশ বাহিনী চুরি-ডাকাতি রোধ, ছিনতাই প্রতিরোধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ইত্যাদি সমাজ বিরোধী কর্মকান্ড প্রতিরোধসহ বিভিন্ন কাজে দায়িত্ব পালন করতে। বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গিবাদ নির্মূল সহ প্রযুক্তি নির্ভর অপরাধ দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এতন্ধিত পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি নারী সদস্যরাও সমানতালে কাজ করছে।
    মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত "বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী" বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুলিশ বাহিনীর ন্যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জনগণের জানমাল ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, অপরাধ প্রতিরোধ ও দমনে প্রধান ভূমিকা পালন করে পুলিশের ট্র্যাডিশনাল চরিত্রে বিরাট পরিবর্তন এনেছে। শুধু আইন পালন আর অপরাধ প্রতিরোধ বা দমনই নয় দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। সাম্প্রতিক সময় জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক দমনের অর্জিত সাফল্য বিদেশীদের কাছে শুধু প্রশংসনীয়ই নয়, ঈর্ষণীয় পয্যায় পৌঁছে গেছে গৌরবের "বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী"।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যার সরকার মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যাতত্ব দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস ঐতিহ্যে বিতর্ক উত্থাপনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে বসবাস করে,মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার মত দৃষ্টতা দেখিয়ে নি:সন্দেহে তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এহেন গর্হিত বক্তব্য প্রদানকারী বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখতে পারেননা।মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অঙ্গিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন দল বা জোটের রাজনীতি করারঅধিকার নীতিগতভাবেই থাকতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে সর্বচ্ছ আদালতের রায় অনুযায়ী '৭২এর সংবিধান অবিকল বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।বাংলাদেশেরজনগন চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাক,মুক্তিযুদ্ধে সাগরসম রক্ত ঢেলে সেই অঙ্গিকারের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।স্বাধীন বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বসবাসকরে,পরাধীনতার গান শুনতে দেশ স্বাধীন করেনি বাংলার জনগন। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের বিরামহীন সংগ্রামের ফসল মুক্তিযুদ্ধ।সেইযুদ্ধে উপনিবেশিক পাকিস্তানের আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে নিরস্ত্র বাঙালীরা পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছিল।সেই স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেপরাজিত শক্তির দোষর,তাঁদের প্রেতাত্বাদের রাজনীতি করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।জাতির জনক তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রাজাকারের কোন স্থান দিতে চায়না। তাই খালেদা জিয়ার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টার দৃষ্টান্তমুলক সাজার আশা পোষন করে।কোন রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁদে যেন এই মামলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,তাঁর গ্যারান্টিও সরকারের নিকট বাংলাদেশের জনগন চায়। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু Ruhul Amin ------------------------------ খালেদা জিয়াকে সমাবেশের অনুমতি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি আশাহত----04 /01 / 0016 ইং পোষ্ট -==================================প্রখ্যাত দার্শনিক,চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে কম বেশি আমরা সবাই জানি।সক্রেটিস কোন যুগে জম্মগ্রহন করে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে আজও দেশে দেশে অনুকরনীয় অনুসরনীয় হয়ে আছেন তাও আমরা জানি।নিশ্চয়ই তখনকার সময় থেকে বর্তমানের সমাজ, রাষ্ট্রব্যাবস্থাপনা আরো শত গুন উন্নত,সমৃদ্ধ,সভ্য।সক্রেটিস ছুতোর, কামার ইত্যাদি প্রসঙ্গে এসে প্রশ্ন করতেন, 'তাহলে রাষ্ট্র নামক জাহাজটি বিগড়োলে কাকে দিয়ে সারাইয়ের কাজ করাবো'হাসান আজিজুল হক (সক্রেটিস) পৃ : ১৬ সক্রেটিসের এ বিখ্যাত কথপোকথন কারো অজানা নয়। আদর্শবান ন্যায়নীতিভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবার জন্য সক্রেটিসকে হেমলক পান করতে দেয়া হয়েছিল(বিষ), তারপরও তিনি আইনের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন- এটাও ছিল তার নির্ভীক বিদ্রোহ। তাকে বাঁচবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি আইনঅবজ্ঞা করেননি, আইনে যদি তার মৃত্যুদন্ড হয় তবে তিনি অবশ্যই তা মানতে রাজি। এখানেও তার সমস্ত জীবনকর্মের অনেক গভীর দর্শন কাজ করেছে। তার উপর মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল একথা তিনি ও এথেন্সবাসী জানতেন। কিন্তু যে আইনে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলো- তিনি সে আইনকে শ্রদ্ধা জানালেন এ অর্থে মানুষকে আইনের প্রতি অনুগত থাকতে বললেন। সেই আইন কারা তৈরি করছে তা তিনি জানতেন তাতে তো আর আইন নামক বিষয়টিকে জীবন থেকে বিতাড়িত করা যায় না।"পবিত্র কোরানে পাকে ও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধর্মী কতৃক শাষিত রাষ্ট্র ও সরকার সমুহের আইন মেনে ধর্ম কর্ম করার।এই রুপ রাষ্ট্র ব্যাবস্থায় শুক্রবারের খতবায় বিশেষ আয়াৎ সংযুক্ত আছে এবং নিয়মিত নামাজের সাথে আর ও কয় রাকাত নামাজ আদায় করার নির্দেশনা দেয়া আছে।পরিতাপের বিষয়টি হচ্ছে,গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে একশ্রেনীর মানুষ রাষ্ট্রীয় আইন রীতি নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সর্ব উচ্চ আদালতের রায়কে ও অমান্য করে হরতাল অবরোধ,প্রকাশ্য আদালতের সমালোচনা করতে।শুধু তাই নয় আন্দোলনের নামেপ্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীভর্তি চলন্ত বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে জীবন্ত মানবকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিতে।উল্লেখ করা প্রয়োজন যারা এই সমস্ত আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিলেন,এবং প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন যে আদালতের বিরুদ্ধেও কর্মসূচি দেয়া যায়,বক্তব্য দেয়া যায়,তাঁরা কখনই কোন অপরাধীর বিচার কায্য সম্পাদন করেছেন তদ্রুপ কোন উদাহরন নেই। যেমন আমি প্রথমেই বলতে চাই ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছেন রাতের অন্ধকারে।বঙ্গবন্ধুর অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? পৃথীবিপৃষ্টের সব চাইতে নিরাপদ স্থান জেলখানা।সেখানে রাতের অন্ধকারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করাহল,তাঁরা বন্দি ছিলেন, তারপর ও তাঁদের অপরাধের বিচার কি করা যেতনা? মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে বুদ্ধিজীবিদের বাসা থেকেতুলে নিয়ে জ্যান্ত মানুষকে হত্যা করা হল, তাঁদের অপরাধ কি বিচার করে মিমাংসা করা যেতনা? খালেদ মোশারফ., কর্নেল তাহেরসহ অসংখ্য মুক্তি যুদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়ার নির্দেশে নির্মম নির্দয় ভাবে হত্যা করা হল, অনেককে গুলী করার পর প্রান পাখী উড়াল দেয়ার আগেই জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া হল, তাঁদের বিচার কি প্রচলিত সেনা আইনে করা যেতনা? অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারি,ব্লগার,প্রকাশক,লেখক সাহিত্যিক,সাংবাদিক হত্যা করা হল,তাঁদের অপরাধ কি আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেতনা?আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিয়ে মানুষ হত্যা করা,সম্পদ নষ্ট করা,লুটপাট করা কি মানবতা বিরুধী অপরাধের আওতায় পড়েনা?মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ হত্যা লুটপাট,অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি মানবতা বিরুধী অপরাধের বিচার হতে পারে,যুদ্ধাবস্থা ব্যাতিরেকে ঘোষনা দিয়ে তদ্রুপ কর্মে জড়িতদের এবং হুকুমদাতার বিচার কেন হবেনা? নগদ অপরাধের ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার করা কি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব নয়? নাগরীকদের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া কি রাষ্ট্রের কর্তব্যের মধ্যে পড়েনা? যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন তাঁরা কি বিচার পাওয়ার সাংবিধানীক অধিকারের মধ্যে পড়েনা?সেই যুগের সক্রেটিস যদি নীজের উপর আনীত মিথ্যা অভিযোগ জেনে শুনে মেনে নিতে পারেন,সভ্যতার চরম শীখরে দাঁড়িয়ে যারা এই যুগে আইনকে, রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশ্য আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করেছেন,সম্পদের হানী ঘটিয়েছেন তাঁরা কি সক্রেটিস যুগের আগের অধিবাসি মনে করেন নীজেদের? তাঁরা নীজেরা নিজেদের মনে করুন কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে কোন যুগে ফিরিয়ে নিতে চান?তাঁদের যদি এতই অসহ্য লাগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিশেষ কিছু আদর্শের প্রতিপালনের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে ৩০লক্ষ শহিদের আত্মদান,পৌনে চারলাখ মাবোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস- তবে জনগনকে সংঘটিত করে আর একটি গনবিপ্লব ঘটিয়ে তাঁদের মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে স্বাধীনতার পক্ষের কোন মানুষ বাধাতো দিচ্ছেনা। যাদের নেতৃত্বে, যাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন করা হল, তাঁরাতো ক্ষমতায় আছে,তাঁদের কেন জোর পুর্বক,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে খমতা থেকে নামাতে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে জনজীবন দুর্বিসহ করে তোলার চক্রান্ত করতে দেয়া হবে।এই সেই দিন মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে যিনি বিতর্ক উত্থাপনের বৃথা চেষ্টা করে জনরোষের আওতার মধ্যে এখনও রয়েছেন,তাঁর সৌখিন বাসভবন পাহারায় আপনার সরকার অতিরীক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে,তিনি কি ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে সমাবেশ করার প্রসাশনিক অনুমতি পায়। বর্তমান গনতান্ত্রিক বিশ্বের একটি দেশের উদাহরন কি কেউ দিতে পারবেন,স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে?একটি দেশকি কেউ দেখাতে পারবে যে,সেই দেশের কোনমীমাংসিত এবং প্রতিষ্ঠিত কোন সত্যকে ৩০/৪০ বছর পর আবার জনসমক্ষে উত্থাপন করে লক্ষ লক্ষ শহিদ পরিবারের অন্তরের আগুনে"ঘি "ঢেলে দেয়ার চেষ্টা, কোন প্রতিষ্ঠিত দল বা তাঁর নেতা করেছেন? কেন এই পয্যন্ত সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা না করে উলটো সমাবেশ করে তাঁর মতবাদ প্রচারের অনুমতি দেয়া হল??তাঁরা নীজেদের এত ক্ষমতাবান মনে করেন কিভাবে? তাঁরা কি করে আবার জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়া ছাড়াই প্রকাশ্য সভা সমাবেশ করার অধিকার পায়?কেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সংসদে ঘোষনা দিয়েও এখন পয্যন্ত আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন করছেন না? মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আপনার আশ্বাস বাংলার মানুষ অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে।সুতারাং জনগনকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইবুনাল গঠন কল্পে তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহনকরবেন, জনগনের এই আস্থা বিশ্বাস এখন ও অটুট রয়েছে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,শাপলা চত্বরের সেই দিনের ষড় যন্ত্র মোতাবেক যদি খালেদা জিয়ার ডাকে ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতেন,পরিকল্পনাঅনুযায়ী সেনা বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়েআপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারতো,আপনাকে কি জীবিত বাঁচতে দেয়া হত? আপনার পরিবারের কাওন সদস্যকে বাঁচতে দিত?আওয়ামী লীগের থানা উপজেলা পয্যায়ের কোন নেতা কি বাঁচতে দিত? তাঁরা কি সে দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ম বিদ্বেষী সরকার উৎখাত করে ধর্মধারি সরকার কায়েমের রাজনৈতিক শ্লোগানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নামক মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বাহক জননন্দিত এইসংগঠনটিকেও জ্যান্ত কবর দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল না?আমি আজ আরও একটি বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জাতির জনকের কন্যাকে স্মরন করিয়ে দিতে চাই,সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন চরমপন্থী নেতার অবিকল নকল করা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার--,গনতান্ত্রিকদেশে,গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে, গনতান্ত্রীক সংগঠনের,গনতন্ত্রের পুজারি মনে করা কোন নেতা, রাজপথে আন্দোলন না করে, সীমাবদ্ধ কক্ষে ৪১দিন অবস্থান করে, ৪২ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে,পরবর্তিতে বিচারের সম্মুখ্যিন না হয়ে নিয়মাতান্ত্রীক আন্দোলনের সুযোগ কোন দেশের, কোন নেতা বা কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, এমন উদাহরন কি কেউ দিতে পারবে?? ষড় যন্ত্রের জাল কোথায় বিস্তৃত ছিল তাঁর প্রমান সেই নেত্রী নীজেই তাঁর উষ্মায় প্রকাশ করে দম্ভস্বরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে সুশৃংখল বাহিনীকে তাচ্ছিল্য করে বলে ছিল"সেনাবাহিনী বেঈমান"!!!এর পরও আপনার সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা আনায়ন না করে প্রকাশ্য সভার অনুমতি দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার গুলির মনে আগাত দেয়া হয়েছে আমি মনে করি। গত পৌর নির্বাচনে রায় দিয়েছে তাঁর বিচার করার,তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অর্থই হচ্ছে জনগনের ক্ষোভ তাঁর উপর থেকে এখনও কমেনি,বরঞ্চ কয়েক গুন বেড়ে জনরোষের পয্যায় পৌছে গেছে।আপনার সরকারের তাঁকে দেয়া বাড়তিনিরাপত্তাই তা প্রমান করে।সুতারাং দেশ ও জাতি এই রাজনৈতিক লাশের ভার বইবার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।দেশের এবং জাতির প্রয়োজন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক,প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত সমৃদ্ধ জাতি গঠনে জ্ঞানসমৃদ্ধ, আধুনিক সভ্য দুনিয়ার নেতৃত্ব গ্রহন করার মত গুনাবলি সমৃদ্ধ নেতার। কোন অবস্থায় সক্রেটিসের আগের যুগে জাতি ফেরৎ যেতে চায়না।পরিশেষে বলতে চাই,আর কোন সংগাত নয়,এবার চাই সমৃদ্ধি।আর নয় জঙ্গিপনা,এবার চাই ধর্মনিরপেক্ষতা।আর নয় সাম্প্রদায়ীকতা,এবার চাই অসম্প্রদায়ীক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।আর নয় পাকি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা,এবার চাই মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকারের সফল বাস্তবায়ন। জয় আমাদের হবেই হবে, অশুভ অপশক্তির পরাজয় অবশ্যাম্ভাবি। জয় বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু জয়তু দেশরত্ম শেখ হাসিনা