কালের অহংকার---

কালের অহংকার।
প্রাচীন,মধ্য ও আধুনিক সময়েরস্রোতধারায় জন্মেছে কীর্তিমান মানব মানবীগন।তাঁদের নিজ নিজ চিন্তনের দর্শনে ও দর্পনে আলোকিত হয়েছে,ব্যক্তি সমাজ ও দেশ।জগতজুড়ে কীর্তিমানদের নতুন  নতুন দর্শন ও  উদ্ভাবনীর দিকপালে প্রকটিত হয়ে লাভ করেছে, সন্মান ও সামাজিক বন্ধন।সামাজিক ও পারিবারিক  মর্যাদাপুর্ণ দৃঢ় বন্ধন ব্যতীত কোন জাতি সন্মানের অলংকৃত আসনে উপবেশন করতে পারেন না।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে ও যখন নারী পুরুষের জেন্ডার সমতায় কথা বলি,তখন-মনের অবগুণ্ঠনে থাকা, সাহিত্যরসের ভরা কোনো এক জমজমাট মজমা মনে করিয়ে দেয়--------১/-করিতে পারিনা কাজ,সদা ভয়,সদা লাজ,----পাছে লোকে কিছু বলে।২/পরের কারনে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও,তার মত সুখ কোথাও কি আছে?আপনার কথা ভুলিয়া যাও।।
দুটি কবিতার চয়নই ঊনিশ শতকের শ্রেষ্ঠ মহিলা কবি,কামিনী রায়ের।নারী জাগরনের অপর পথিকৃৎ নারীবাদী লেখিকা বেগম রোকেয়া লিখেছেন,""মেয়েদের এমন শিক্ষায় শিক্ষিত করিয়া তুলিতে হইবে,যাহাতে তাহারা ভবিষ্যৎ জীবনে আদর্শ গৃহিনী,আদর্শ জননী,এবং আদর্শ নারীরুপে পরিচিত হইতে পারে।জেন্ডার সমতায় বেগম রোকেয়া আরো বলেন--""দেহের দু'টি চক্ষুস্বরুপ,মানুষের সব রকমের কাজকর্মের প্রয়োজনে দুটি চক্ষুর গুরুত্ব সমান।
কবি বুঝিয়েছেন, সমাজের উন্নতিতে জেন্ডার সমতায় প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ যদি মিলেমিশে কাজ করে,তাহলে সমাজে পরিবর্তন আসবেই।নারীবাদী লেখিকা কবি কামিনী রায়ের কবিতার ভাব পরিমন্ডল,প্রকৃতিবোধ, স্বদেশপ্রেম,গ্রার্হস্হ্য জীবন,মৃত্যুচেতনা,নীতিচিন্তা,নারীবাদীচিন্তা এসব বিষয় নিয়ে গড়ে উঠলে ও নারীবাদের কথা প্রধান হয়ে উঠেছে।তবে শতবর্ষের পূর্বে ও কামিনীরায়ের সাহিত্যকর্মে লিঙ্গ বৈষম্য ও সচেতনতার যে পরিচয় পাওয়া যায়,তা রীতিমতো বিস্ময়কর ও কল্পনাতীত!নারীদের শিক্ষার প্রসারে বেগম রোকেয়া আমৃত্যু কাজ করে গিয়েছেন।নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা,নারীর ক্ষমতায়ন,ভোটাধিকারের জন্যে লড়াইটা প্রথমে শুরু করেছিলেন,বেগম রোকেয়া। রোকেয়া তাঁর জীবন সংগ্রামের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছিলেন যে,শিক্ষা ছাড়া  নারীর মুক্তি নেই।
এখন আসি একবিংশ শতাব্দীর নারী জাগরনের পথিকৃৎ ও নারীজাগরণ ব্যক্তিত্ব পুলিশ সুপার,গাজীপুর শামসুন্নাহার পিপিএম এঁর কথায়,তাঁর মননে ও লালনে জেন্ডার সমতা।সমাজের অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ঘিরেই তাঁর পথচলা।তাঁর চিন্তনের ধারাবাহিকতায় আইনী জনবান্ধব পুলিশিংয়ের পাশাপাশি নারীদের কে জেন্ডার সচেতনতায় উদ্বুদ্ধ করা।যাতে তাঁরা একটি সচেতনতার মুল থিমে যোগ হয়ে শিক্ষা,চিকিৎসা,নাগরিকদায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ পারিবারিক গন্ডিতে নিজেদের কে মর্যাদাপুর্ণ অবস্হানে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
এর পাশাপাশি গোঁড়ামি, কুশিক্ষা,আইনী পরিমন্ডলের বিচ্ছিন্নতা রোধে পরম আপনজনের ভুমিকায় থেকে প্রতি ক্ষনে  কাউন্সেলিং করে চলেছেন।তাঁর একটাই চাওয়া---
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে থাকা অশিক্ষা,কুশিক্ষা,ধর্মীয় গোঁড়ামি, মাদক,বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং,জংগীবাদের সমূলোৎপাট করা।সমাজসংস্কারক বেগম রোকেয়ার শিক্ষার আলোর দিশারী  মতে বিভিন্ন সভা সেমিনার, সাক্ষাতের  পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে পর্যন্ত র্আইনী, ও মানবীয় সামাজিক কাউন্সেলিং করে চলেছেন।প্রতিটি  মহল্লা,গ্রামের প্রান্তিক  অসহায় নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় অাশার আলোক বর্তিকা হয়ে ক্লান্তির পরোয়া না করে ছুটে চলেছেন অবিরত।
সমাজের প্রতিটি কমিউনিটি কে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি গড়তে, নিরাপদ বলয় তৈরীতে নিজস্ব মনন ও প্রজ্ঞায়  সুদুরপ্রসারী চিন্তনে প্রতি ঘরে ঘরে তৈরি করেছেন,মাদক,বাল্যবিবাহ ও জংগীবাদবিরোধী যোদ্ধা।
সকল দল মতের উর্দ্ধে থেকে ক্ষুরধার ব্যাক্তিত্বের সম্মোহনীতে কমিউনিটির প্রতিক্ষেত্রে সবাইকে একাট্টা করে কাজ করে চলেছেন জনবান্ধব পুলিশিং। স্কুল,কলেজ মাদ্রাসায়  ছাত্র ছাত্রীদের  নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি জংগীবাদ,ইভটিজিং,মাদক ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আংগিকে  কাজ করে চলেছেন অবিরত।ছাত্রছাত্রীদের সচেতনতায় তারা আগামী দিনের ভবিষ্যত""ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে, এমনি আশা সঞ্চারে নবযুগের তাগিদে,  অনুভবে শিক্ষক,ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আয়োজন করে চলেছেন,মাদকের বিরুদ্ধে রচনা প্রতিযোগীতা। ছাত্র ছাত্রীদের  উজ্জীবিত রাখার জন্যে রেখেছেন পুরস্কারের ব্যবস্হা।সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির  প্রবর্তনে ও তাগিদে আইনী সেবার পাশাপাশি মানবীয় সেবা,কাউন্সেলিং নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় কাজ করে চলেছে অবিরত।এ ছাড়া জেন্ডার সচেতনতা, জনবান্ধব পুলিশিং,সমাজের প্রতিক্ষেত্রে  কমিউনিটির  দৃষ্টিভঙ্গির তাগিদে পুলিশিং দৃষ্টিভঙ্গির হারের সমতা তারতম্যের বিশ্লেষন, গ্রাফে জনবান্ধব সফলতার তাগিদে নতুন নতুন চিন্তনের অগ্রযাত্রায় সফলতার কেতন উড়িয়ে চলেছেন।
নারীজাগরনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া পিপাসা নামক একটি গল্প লিখে বাংলা সাহিত্য জগতে তাঁর পথচলা শুরু করেছিলেন।বেগম রোকেয়া তাঁর প্রবন্ধ, গল্প,উপন্যাসের মধ্যে তিনি নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আর জেন্ডার সমতার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন।ঊনিশ শতকের শ্রেষ্ঠ মহিয়সীরা  সমাজ সংস্কারক হয়ে আমৃত্যু লড়াই করেছেন,অসত্য রুগ্ন ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্হার বিরুদ্ধে।
আজ একবিংশ শতাব্দীতে এসেও সে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, জনবান্ধব পুলিশিং ব্যবস্হাপনার সফল ব্যাক্তিত্ব  পুলিশ সুপার গাজীপুর,শামসুন্নাহার পিপিএম। অবিরত কালজয়ী এ সফল ব্যক্তিত্ব,সাদামনের মানুষ  হিসেবে একবিংশ শতাব্দীর গ্লোবালাইজেশন চ্যালেন্জ মোকাবেলা করে সামনের পথচলাকে আরো মসৃণ করে একদিন স্বপ্নের সমান উচ্চতায় বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে " পরের কারনে স্বার্থ দিয়ে " অগ্রজদের পাশে অত্যুজ্জ্বল  হয়ে থাকবেন সুদুর নীহারিকায়।
লিখেছেন-
রাজীব কুমার দাশ
পুলিশ ইন্সপেক্টর,বাংলাদেশ পুলিশ।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg