মাননীয় মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি সাহেব--"ত্যাগীদের পূর্ণবাসন চিন্তা বাদ দিয়ে আগত 'কাউয়া'দের আদর্শীক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নিন"।
  Md Ruhul Amin Mojumdar

       জনাব 'ওবায়দুল কাদের' এমপি দক্ষিন-পুর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী দল 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে'র সাধারন সম্পাদক।তিনি নোয়াখালী জেলার বসুর হাট এলাকা থেকে  আওয়ামীলীগ মনোনীত  জাতীয় সংসদ সদস্য। সারকারের  প্রধানমন্ত্রী 'শেখ হাসিনা' গনপ্রজাতন্ত্রী  বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁকে। উক্ত মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বের বাহিরে গুরুত্বপূর্ণ সেতু মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। সংক্ষীপ্তকারে মাত্র কয়েকটি শব্দের সমাহারে সেতু মন্ত্রনালয়ের কথাটি বললে তার সততা, কর্মদক্ষতা, বিচক্ষনতা, আন্তরীকতার প্রতি মনে হয় অবিচার করা হবে, সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কীত বিষয়টির তাৎপয্য  সম্পন্ন হবেনা। কারন বিশেষ একমূহুর্তে জাতির জনকের কন্যা মাননীয় 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা" তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি  দিয়েছিলেন, তাঁর প্রতি আস্থা স্থাপন করেছিলেন।

      আমরা জানি দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা "পদ্মাসেতু"কে কেন্দ্র করে মন্ত্রনালয়টির সংঙ্গে বাংলাদেশের মান সম্মান, বিশেষ করে--'আওয়ামীলীগ সরকারের শক্তি, সামর্থ্য এবং কি জাতির জনকের কন্যা 'শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারে'র দেশে-বিদেশে ভাবমূর্তি উজ্বল বা ম্লান হওয়ার বিষয়টি জড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমি মনে করি--"মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর  পরিবার, তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং বাংলাদেশের পারঙ্গমতা উজ্বলাকারে বিশ্ব দরবারে তোলে ধরার আলোচিত উপকরন 'পদ্মাসেতু'র বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জনাব 'ওবায়দুল কাদের এমপি'।অদ্যাবদি নেত্রীর আস্থার মায্যদা তিনি উজ্বলাকারে ধরে রাখতে পেরেছেন-- আমি মনে করি।

       জনাব 'ওবায়দুল কাদের এমপি' সরকারের মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব নেয়ার কিছুদিন পর থেকে বাংলাদেশের জনগন ভারতীয় বাংলা ছবির একটি বিশেষ চরিত্রের সঙ্গে(বাংলার ফাটাকেষ্ট) তাঁর নামটি ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালবাসার বহি:প্রকাশ ঘটাতে জড়িয়ে গর্ববোধ, অহংবোধ অনূভব করতে  দেখা গেছে। দলমত নির্বিশেষে সরকারে তাঁর দায়িত্ব পালনের আন্তরীকতা, তৎপরতা, সততা সম্পর্কে আলোচনা--সমালোচনায় অংশ নিতে দেখা গেছে। প্রত্যহ গ্রাম গঞ্জে, শহরে বন্দরে, পাড়া মহল্লায়, হাট বাজারে, চায়ের টেবিলের আড্ডায়, সভা, সমিতি, এবং কি  অনলাইন, অপলাইন মিডিয়ায় তাঁকে নিয়েই মাতামাতি। তাঁর গুনকীর্তনের ফিরিস্তি নিয়ে আলোচনানায় দিনাতিপাত করেছে  বর্তমান যুগের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী, জনগন সম্পৃত্ত সামাজিক মাধ্যম  পেইছবুকে  কখন, কোথায়, কার সঙ্গে, কি ভাবে বসেছেন--কার নিকট থেকে চা খেয়েছেন, কাকে কি বলেছেন  এই সমস্ত বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন,জীবন্ত ছবি আপলোড দিয়ে। তাঁর মহত্ব, উদারতা, শ্রেষ্ঠত্ব, দলীয় আনুগত্যতা, ত্যাগ, ভালবাসা, দেশপ্রেম ইত্যাদি গুনাবলীর ফিরিস্তি বর্ণনা করতে দেখা যেত সর্বক্ষন পেইছবুকের অধিকাংশ বন্ধুদের।

     সেই একই ব্যাক্তি 'ওবায়দুল কাদের এমপি' যখন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হলেন--খুব অল্প সময়ের মধ্যে তীথি সম্পূর্ণ পালটে বিপরীত আকার ধারন করতে সময় লাগেনি। লক্ষ করলে দেখা যায়--মন্ত্রী হওয়ার পর যাঁরা  তাঁর গুনকীর্তনে সদা মগ্ন থাকতেন, অহংবোধ অনূভব করতেন, তাঁরাই তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতি, কর্মকান্ড, দল ও সরকারে তৎপরতা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য, সমালোচনা করছেন।  ইহা একান্ত বাস্তব সত্য যে--'অতীতের কোন আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক এবং মন্ত্রীর এত বেশী তৃনমূলের নেতাকর্মীবাহিনীর সমালোচনার সম্মুখ্যীন হতে দেখা যায়নি।

        অবশ্য ইহাও সত্য--অতীতে কখনও সামাজিক মাধ্যমগুলী এতবেশী শক্তিশালী ছিলনা। নেতাকর্মীগন সরাসরি, নিয়মিত, প্রত্যহ ক্ষোভ, দু:খ্য, যাতনা, অত্যাচার, নিপীড়ন, পাওয়া না পাওয়ার বেদনা প্রকাশ করার তেমন কোন সুযোগ ছিলনা। পত্র-পত্রিকা, ইলেকট্রোনিক মিডিয়া ইত্যাদি যা ছিল তাতে সর্ব সাধারনের মতামত ব্যাক্ত করার কোন সুযোগ আগেও  ছিলনা, এখনও নেই। আধুনিক যুগের মিডিয়া কতিপয় বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ, বিদ্যান, শুশীল, বুদ্ধিজীবিদের বুদ্ধিমত্তা প্রকাশের বাহন হিসেবেই যুগেযুগে  ভূমিকা পালন করে এসেছে। যদিও প্রকাশনার সংখ্য, প্রকাশ সংখ্যা, পাতায়, দৈর্ঘ-প্রস্থে, ওজনে, টাকার অংকে কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলেকট্রোনিক্স মিডিয়ার অবস্থাও তথৈবছ--এককের স্থান দখল করেছে বহুত্ব, ছয় ঘন্টার অনুষ্ঠান মালা  চব্বিশ ঘন্টায় (দিবারাত্র)উন্নতি হয়েছে কিন্তু সাধারনের প্রবেশ অবারীত হয়নি।

       অতীতের সকল মাধ্যমকে ছাড়িয়ে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে নিকটতম, সহজসাধ্য, সহজলভ্য, শক্তিশালী, কর্মক্ষম, যথোপযুক্ত, হাতের পাঁছ আঙ্গুলের মধ্যে চলে এসেছে ইন্টারনেটের কল্যানে  :সামাজিক মাধ্যম পেইছবুক'। প্রযুক্তির কল্যানকর অন্যান্ন বিষয়াদির মধ্যে সর্বশ্রেনীর মানুষের ভাববিনিময়ের সহজতায় প্রতিটি মানুষ তাঁর পছন্দ, অপছন্দ,  মতামত, অভিজ্ঞতা, আনন্দ, বেদনা প্রকাশের সুযোগ অবারীত থাকায় যত্রতত্র, যেমনখুশী তেমন ভাবে মানুষ ব্যাবহারও করছে মাধ্যটিকে।এক কথায় বলা যায়  মাধ্যমটি বর্তমানে জনমানুষের  নিত্যসঙ্গী।

       জনাব 'ওবায়দুল কাদের এমপি' 'বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে'র সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার কয়েক বছর আগে থেকে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমটি শক্তিশালী  হিসেবে আর্বিভূত হয়েছিল ঠিকই কিন্তু "আওয়ামীলীগের  "সাধারন সম্পাদক নতুন করে উল্লেখিত সময় কোন নেতা নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাননি। তারপরও যে কয়বছর সময় পার হয়েছে সেই কয়বছরের মধ্যেও আওয়ামীলীগের সভানেত্রী জাতির জনকের কন্যার মনোনীত সাধারন সম্পাদক ১৫ আগষ্টের বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঘাতকদের হাতে ৩রা নভেম্বর জেল অভ্যন্তরে নিহত চার জাতীয় নেতার অন্যতম একজনের সুযোগ্য পুত্র জনাব আশরাফুল ইসলাম এমপি সাহেবের দায়িত্ব পালনকালীন সময় পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা কেবল কম হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁর নিত্যনৈমত্তিক অলসতায় কয়েকবার ক্ষোভ ও দু:খ্য প্রকাশ করতে দেখা গেছে। ইহা সত্য যে--দল ও সরকারে তাঁর নিয়মিত অনুপস্থীতি সর্বত্র অনেকটা স্থবীরতা এসেছিল। ব্যাক্তি জীবনাচার, সততা, মহত্বগুন, নেতৃত্ব, সাংগঠনিক দক্ষতা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ইত্যাদি  গুনাবলী অতুলনীয়।অনন্য ব্যাক্তিত্বগুনে সর্বমহলে তিনি প্রসংশীত হলেও সময়জ্ঞান তাঁকে অনেকটা কলংকিত, সমালোচিত করেছে সর্বদা।

       জনাব 'ওবায়দুল কাদের এমপি' এমন এক সময় দলের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন--"যখন 'বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ' মহাজোটের অন্যান্ন শরিক দলকে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রায় আট বছর অতিবাহিত করেছে। বিশেষ করে দলটির ক্ষমতা প্রাপ্তির দ্বিতীয় মেয়াদের আগে দেশের বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী 'সাধারন নির্বাচন' অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আগে-পরে বৃহৎ দল "বিএনপি ও তাঁর অশুভ চারদলীয় জোট শরিকদল সহ দেশব্যাপী অরাজকতা, সন্ত্রাস, রাহাজানী, লুটপাট, আগুন সন্ত্রাস, পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যাজনিত হঠকারী, অপরাজনীতির কারনে রাজপথ, সংসদ, রাজনীতি সহ ঘরে বাইরে সর্বত্র জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তখন।

     বিরুধীদলহীন দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করার অব্যবহিত পর--দলটির অভ্যন্তরে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য দুবৃত্ত, লুটেরা, সন্ত্রাসী, মাস্তান শ্রেনীর নেতৃবৃন্দ তাঁদের সৃষ্ট নীজস্ব বলয় আরো শক্তিশালী, অ-প্রতিরোধ্য করার মানসে বিভিন্ন দলের রাজনীতির অচলাবস্থায় হতাশাগ্রস্ত মাস্তান, সন্ত্রাসী, লুটেরাদের  আওয়ামীলীগে অনূপ্রবেশ করার সুযোগ অবারীত করে দেয়। এবং কি তাঁদেরকে দলের বিভিন্ন পয্যায়ের 'সৎ, ত্যাগী, আদর্শীক, শিক্ষিত, মেধাবী নেতাদের পুর্বের রাজনৈতিক দক্ষতা, নিয়ন্তর আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহনের পুরস্কার স্বরূপ তৃনমূল কর্মীদের নিকট থেকে পাওয়া উপহার দলের পদ-পদবী জোরপূর্বক, অনেক ক্ষেত্রে কৌশলে বিচ্যুত, বিতাড়িত করে তদস্থলে আগত বিভিন্ন দলের সন্ত্রাসী, মাস্তান, লুটেরা কর্মীদেরকে নেতা বানিয়ে বসিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়--তাঁদের চতুদিকে পূর্বে সৃষ্ট নীজ সমর্থক গোষ্টির বলয় সৃষ্টি করে তাঁদের ভীত মজবুত ও শক্তিশালী করে দিতেও কার্পন্য করেনি।

       উল্লেখিত দলীয় রাজনীতির কুৎসীত অপকর্মটি আওয়ামীলীগ দলের  অভ্যন্তরে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা অথবা অন্য তদ্রুপ নেতার সঙ্গে নেতিবাচক কর্মকান্ডের প্রতিযোগীতায় টিকে থাকার মানসেই করেছেন। অন্যভাবে বলতে গেলে অবৈধ অর্থাগম, দখলবাজী, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজীর ভাগ বাটোয়ারার সঠিক হিস্যা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার  উদ্দেশ্যে করেছেন। তাঁদের ব্যাক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে তাঁরা দলকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে তাঁদের নামের সংঙ্গে দলকে জড়াতেও লজ্জাবোধ করেনি। এমনতর নাম সর্বস্ব 'গ্রুপ নেতৃবৃন্দ' নিজেদের লাভালাভকে দলীয় সুদূর প্রসারী ক্ষতির কারনের চেয়ে অনেক বড় করে দেখেছেন। রাজনীতিকে অর্থ আয়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যাবহার করার জন্য দীর্ঘদিন আগে থেকে ওৎপেতে প্রস্তুতিতে সময় ব্যয় করেছেন,  অপেক্ষায় ছিলেন দল কখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে।

        প্রথবার জনগনের বিপুল সমর্থন নিয়ে আওয়ামীলীগ সফল রাষ্ট্র পরিচালনার পর যখন অহেতুক বিরুধীদল নির্বাচন বর্জন করে দেশব্যাপি অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আইনশৃংখলার অবনতি ঘটানো চেষ্টায় ব্রতি হয়, তখনই কেবল আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরের দুষ্টচক্রটি সুযোগ গ্রহন করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ দ্বিতীয় বার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পাওয়ার পর উক্ত সুযোগ ক্ষনস্থায়ী বিবেচনায় স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের পথ সুগম করার বাসনায় দুষ্টচক্রটি অনুপ্রবেশ ঘটানোর প্রতি ঝুঁকে পড়ে।  যিনি যেই ভাবে সুযোগ পেয়েছেন--তিনি সেই সুযোগ হাতছাড়া করেননি। তাঁরা অবাধে  অনাদর্শীক, রাজাকার, আলবদর, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত এবং শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী নিপীড়ক পরিবারের সন্তানদের দলে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করে নেয়। যে সমস্ত এলাকায় ঘটা করে যোগদান উৎসব করেছে কেবলমাত্র সেই এলাকার অনুপ্রবেশের বিষয়টি মিডিয়ায় এসেছে। তারচেয়ে দ্বিগুনেরও অধিক এলাকায় নীরবে, নির্বিত্তে, একান্ত সংগোপনে অনাদর্শীক আত্মীয়করন, স্বজনপ্রীতির ন্যাক্কারজনক উদাহরণ রয়েছে। রাজাকার, আলবদর, আওয়ামী নিপীড়ক পরিবারের সন্তাদের অনুপ্রবেশ ঘটানো-- সেতো কেবলমাত্র নস্যি ব্যাপার ক্ষমতাধর নেতাদের।    

       এমত:বস্থায় সম্মানীত সাধারন সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি সাহেব 'হাইব্রিড বা তাঁর ভাষায় কাউয়া'দের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহনের যতই হম্বিতম্বি করেন--বাস্তবে কায্যকর করার কোন সুযোগ আছে বলে আমি মনে করিনা। আমি মনে করি--"এইসমস্ত হুমকী ধমকী কেবলমাত্র রাজনীতি বিমূখ পরিক্ষিত, ত্যাগী, আদর্শিক নেতাকর্মীদের খুশী রেখে আগামী নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার রাজনৈতিক কৌশল"। উধ্বতন নেতৃবৃন্দ জানেন এবং অনেকেরই অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে--"দলের দু:সময়ে সমস্ত 'কাউয়া' খাদ্যের চাহিদা মেটাতে আপন আবাসস্থলে ফিরে যায়। অতীতেও অনেক "কাউয়া" এসেছিল-- খানাপিনাও পেয়েছিল পেটপুরে। তারপরও দেখাগেছে দু:সময়ে চলে গেছে, তাঁদের আপন ঠিকানায়।

       তবে স্বস্তির বিষয়টি হচ্ছে-- বঙ্গবন্ধু কন্যার একাগ্রতা, সাহষী পদক্ষেপের কারনে অতীতের দু:সময় হয়তোবা আর আওয়ামী পরিবারে আসবেনা। না আসার কারন ইতিমধ্যে শকূনীদের প্রধান পালক বঙ্গবন্ধুকন্যা অনেকটা চাঁটাই করে দিয়েছেন । শকূনীদের রক্ষক  প্রেতাত্বার মূখোশও তিনি অনেকটা খুলে দিতে পেরেছেন। বাংলাদেশের জনগন প্রেতাত্বার মূখোশ খোলার পর আসল চেহারা দেখে অবাক, হতবিব্বল, আশ্চায্য। জনগন  শুধু দেখছে মেকআপের আবরণে মুখোষের আড়ালে কুৎসীত, বিভৎস, রক্তপিপাসু  দানবরুপী এক মনুষ্যকে।

       যাহোক প্রসঙ্গে ফিরে আসি--'মাননীয় মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি' দলকে সুসংগঠিত করার নিয়ন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন, অস্বীকার করিনা। আওয়ামীলীগকে তাঁর নিজস্ব কক্ষপথে ফিরিয়ে আনার যত প্রতিশ্রুতি তিনি  এযাবৎকাল দিয়েছেন 'দৃশ্যত: তাঁর কোন প্রভাব দলের কোন পয্যায় তৃনমূলের চোখে  পড়ে না। মূলত: এই মহুর্তে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের "কাউয়ামুক্তির" সিদ্ধান্ত  তৃনমূল থেকে জেলা পয্যায় বাস্তবায়ীত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও আমি মনে করিনা।

        মাননীয় সভানেত্রী বা সাধারন সম্পাদক দলীয়  আদেশ, নির্দেশ, সিদ্ধান্ত, পরামর্শ নিয়মিত আগেও দিয়েছেন--এখনও দিচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে তাঁদের উক্ত আদেশ, নির্দেশ, সিদ্ধান্ত মাঠপয্যায়ে বাস্তবায়ন করার সাংগঠনীক  দায়ীত্ব যাদের হাতে তারা জেলা, উপজেলা কমিটি এবং বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কায্যকরি কমিটির।কায্যকরি কমিটির  সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অথবা কোথাও কোথাও জোর পূর্বক শীর্ষ স্থানীয় নেতার অধিকার হস্তগতকারী এক বা একাধিক নেতার দায়ীত্বের মধ্যে পড়বে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ।

       গঠনতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত অথবা গায়ের জোরে ক্ষমতাসীন ব্যাক্তিরাই কিন্তু প্রতিযোগীতা করে আওয়ামীলীগ এবং তাঁর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে অনুপ্রবেশ করার সুযোগ দিয়েছেন এবং এখনও  দিচ্ছেন। প্রশ্নটি হচ্ছে-- যাঁদের ঈশারায় রাজাকার, আলবদর অনুপ্রবেশ করতে পেরেছে তাঁদের হাতের ঈশারায় আবার তাঁরা আওয়ামীলীগের পদপদবী ছেড়ে সোজা চলে যাবে, এমনটি ভাবা ঠিক হবেনা।ইতিমধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের অনেকেই যাদের হাত ধরে দলে প্রবেশ করেছিল তাঁদের চেয়ে অনেক বেশী শক্তি সামথ্য অর্জন করে শীরদাঁড়া সোজা করে দলের বড় চেয়ারটি দখল করে বসে গেছেন।সুতারাং  ইচ্ছা করলেই তাঁদেরকে চিহ্নিত করা যাবে বা দলের কায্যক্রম থেকে বিরত রাখা যাবে--ইহা নিতান্তই অলীক কল্পনা মাত্র। সুতারাং বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্য,বিবৃতি প্রকাশ থেকে মাননীয় সাধারন সম্পাদক জনাব 'ওবায়দুল কাদের এমপি' সাহেব বিরত থাকলেই তৃনমূলের ত্যাগী কর্মীরা অধিকতর সাচ্ছন্দবোধ করবেন--আমি মনে করি।

      দু:খ্যজনক হলেও সত্য আওয়ামীলীগ তাঁর কক্ষপথ অনেক আগেই হারিয়েছে। ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতাপশালী এমপি, মন্ত্রী, জেলা, উপজেলার নেতৃবৃন্দ "কাউয়া'র অনুপ্রবেশ এবং তাঁদেরকে পদ-পদবী দিয়ে সাময়িক ব্যাক্তিগত প্রভাব প্রতিপত্তি, শক্তিসামর্থ্য, অর্থকড়ি বৃদ্ধি করেছেন অন্যদিকে জাতির জনকের আদর্শের 'আওয়ামীলীগ' অন্যভাবে বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির শেষ আশ্রয়স্থলের ক্ষতি করে দিয়েছেন অনন্তকালের। এখানে  আমি সকলের অবগতির জন্যে ছোট্র একটি উদাহরন দিতে চাই। এটি আওয়ামী লীগের তৃনমূলে আদর্শচ্যুতির নগদ একটি প্রমান বলা যেতে পারে---

      প্রধান বিচারপতি জনাব 'সুরেন্দ্র সিনহা'কে নিয়ে গত রবিবার  আমি দু''টি পোষ্ট দিয়েছিলাম। দু'টি পোষ্টেই বন্ধুদের ব্যাপক ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করেছি। অনেক বন্ধু ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটাতে জামায়াত শিবিরের হরহামেসা ব্যবহৃত সংখ্যালুঘুদের প্রতি ধর্মীয় ঘৃনা প্রকাশ করার প্রতিকী শব্দ  "মালু"  শব্দটি ব্যবহার করেছেন।  কমেন্টকারী মুজিবাদর্শের বন্ধুদের একবারও চিন্তায় আসেনি--'তিনি যে দলটি ভালবাসেন বলে জনসমক্ষে প্রচার করেন সেই দলটি বঙ্গবন্ধুর ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শ থেকে এখনো সরে আসেনি, আসবেও না'। বর্তমান সময় পয্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় আদর্শের 'চার স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি স্তম্ভ "ধর্মনিরপেক্ষতা।ধর্মনিরপেক্ষ দলের আদর্শে বিশ্বাসী কোন আওয়ামী কর্মীর মূখে জামায়াত শিবিরের বহুল ব্যবহৃত শব্দ আসতে পারেনা, আসা উচিৎ নয়। ঘৃনা প্রকাশে বাংলা শব্দভান্ডারে শব্দের অভাব হয়নি নিশ্চয়ই। যারফলে জামায়াত শিবিরের মূখের 'শব্দরাশি' হাওলাত করে আওয়ামী কর্মীরা ব্যবহার করতে হবে। নি:সন্দেহে বলা যায়--দলীয় আদর্শ ধারনে হয়তোবা উল্লেখিত বন্ধুদের ঘাটতি আছে নয়তোবা স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উল্লেখিত বন্ধুদেরকে দলে প্রবেশ করিয়েছেন সত্য এখনো মোটিভেশন করেননি। দলে প্রবেশ করিয়েছেন ভাল করেছেন, ভোট বেড়েছে-- আদর্শীক শিক্ষায় শিক্ষিত না করতে পারলে, তারা কি আপনার দলে থাকবে?

      সর্বোচ্ছ সরকারী পদে অবস্থান করে বিচারপতি 'সুরেন্দ্র সিনহা' একক বঙ্গবন্ধুর অবদান খাটোকারি, কটাক্ষকারী বিশিষ্ট ব্যাক্তি নন। অতীতে আরো অনেক বড় বড় মনিষী, বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ, প্রথিতযসা মুসলিম মনিষী,বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিক, সাবেক রাষ্ট্রশাষক "বঙ্গবন্ধু'র অবদান অস্বীকার করেছেন, কটাক্ষ করেছেন। বিভিন্নভাবে তাঁর অবদানকে খাটো করার চেষ্টায় ব্রতি ছিলেন এবং এখনো অনেকেই আছেন। এবং কি বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবার  সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট, অত্যান্ত কুরুচিপুর্ণ বক্তৃতা, বিবৃতি দিয়েছেন এবং এখনো দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কাউকে কেউ কোনদিনও  নামের আগে পরে বিশেষ শব্দ "ডান্ডি" বা অন্যকোন বিশেষ 'শব্দমালা' যুক্ত করে কোন উক্তি,  কেউ প্রকাশ করেনি। প্রধান বিচারপতি 'সুরেন্দ্র সিন'হা'কে "মালু" বলতে হবে কেন? তাঁদেরকে বলেননি কেন? নাকি মুসলিম বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ ব্যাক্তিদের কটাক্ষ করার যুৎসই শব্দমালার অভাব আছে "বাংলা শব্দকোষে''?

        ইহা কি যথেষ্ট নয়--ঐ সমস্ত বন্ধুরা, অন্তরে সাম্প্রদায়ীকতার 'বিষবাষ্প সমৃদ্ধ? সংখ্যালুঘু সম্প্রদায়ের প্রতি ধর্মীয় বিদ্বেস প্রসূত মনোভাব সম্পন্ন আওয়ামী কর্মীবাহিনী ? জনাব 'ওবায়দুল কাদের এমপি' সাহেব--আমি আপনার নিকট সবিনয় জানতে চাই---এই সমস্ত আওয়ামীকর্মীরাই কি 'ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপকার দেশরত্ম শেখ হাসিনার কাংক্ষীত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সারথী?  এই আওয়ামী কর্মীবাহিনীই কি মুজিবাদর্শের পুজারী আগামী দিনের অসাম্প্রদায়িক, সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে বিভোর 'বঙ্গবন্ধুকন্যার' সংগ্রামের সহযাত্রী?

     মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়- আমি জানি আপনি নিয়মিত পেইছবুকিং করেন। আরো জানি আপনি কমপক্ষে ১৪/১৫টি পাবলিক গ্রুপে ইতিমধ্যে এড নিয়েছেন।শুধুমাত্র এড নিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি--ইতিমধ্যে পোষ্ট দিয়ে প্রমান করেছেন আপনার সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা সংরক্ষন করেন।আমি লক্ষ করেছি জনাব-- 'সরকার ও দলের কাজে সার্বক্ষনিক ব্যাস্ততার মধ্যেও আপনার এন্ড্রয়েড ফোনের স্ক্রিনের উপর চোখ পড়ে থাকে।' খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আপনাকে দেয়া পেইছবুক বন্ধুদের  গালিগালাজ পড়ে হজম করে চলেছেন। আপনার কোন রাগ হয়না, অভিমান হয়না,- নিয়ন্তর আপনি আপনার কাজ করে চলেছেন।এই বন্ধুরাই আপনাকে ভালবেসে "ফাটাকেষ্ট" উপাধি দিয়েছিল।আবারো যুৎসই কোন উপাধি দেয়ার জন্যে হয়তোবা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়  আছে।

      জনাব, চিরন্তন সত্যটি হচ্ছে আপনি অত্যান্ত বৈরি পরিবেশে দলের দায়িত্ব কাঁধে তোলে নিয়েছেন।গ্রাম্য একজন বঙ্গবন্ধুর অদর্শের অতি সাধারন কর্মী হয়ে আপনাকে উপদেশ দেয়া কোন অবস্থায় আমার  সাজেনা।আশা করি ছোটভাইটির কথায় মনে কষ্ট নিবেননা। আপনি ত্যাগী নেতাকর্মীদের মুল্যায়নের পোঁকা, পূর্ণবাসনের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন দয়া করে, তাঁদের মনের আগুন দ্বিগুন করা থেকে বিরত থাকার বিনীত অনুরুধ করি। তারচেয়ে বরং নতুন আগত 'কাউয়া''দের পরিচর্য্যায় মনোনিবেশ করলেই ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে। তাঁদেরকে আদর্শীক শিক্ষায় শিক্ষিত করার পদক্ষেপ গ্রহন করুন।

মাননীয় সাধারন সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি সাহেব-- "আপনার প্রতি বিনীত অনুরুধ--"বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে অনন্তকাল বাংলাদেশের জনগনের মনে জীবিত রাখার এখনই ব্যবস্থা করুন। নচেৎ "মালু" সম্বোধনকারী নেতাকর্মীদের পদভারে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অচিরেই তলিয়ে যাবে।  ত্যাগী, সর্বস্বহারা মুজিবাদর্শের কর্মীরা ক্ষোভ, দু:খ্য, বেদনা নিয়েই আওয়ামীলীগে আছে এবং থাকবে।দলের প্রয়োজনে কেউ ঘরে বসে থাকবেনা, অতীতেও ছিলনা। নেতারা পালিয়েছিল--কর্মীরা  বঙ্গবন্ধুর বাংলার মাটি কামড়ে পড়েছিল।বঙ্গবন্ধু পরিবারের একজন সদস্যও জীবিত বাংলার মাটিতে থাকলে তাঁর আদর্শের কর্মীরা কোথাও যাবেনা। যতদিন বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ পরিবার থাকবে ততদিন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আপামর জনগন, ত্যাগী, সর্বস্বহারা, নিবেদীত, আদর্শীক নেতাকর্মীরা  ঐ পরিবারের প্রতি অনূগত থাকবে, এতে কোন সন্দেহ নেই, জনাব।

          ruhulaminmujumder27@gmail.com
       "জয়বাংলা     জয়বঙ্গবন্ধু"

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মুখস্ত বিদ্যার অর্থই হল, জোর করে গেলানো---- লিখেছেন--Nipa Das ________________________________________________ দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে প্রমথ চৌধুরীর " বই পড়া " নামক একটা প্রবন্ধ রয়েছে ! প্রবন্ধ টিতে মুখস্থ বিদ্যার কুফল তুলে ধরা হয়েছিল , সেখানে বলা হয়েছিল , পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , পাঠ্যবই মুখস্থ করে পাস করে শিক্ষিত হওয়া যায় না , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে ! আমি সবসময় এই প্রবন্ধটা পড়তাম ! এই প্রবন্ধটি আমার প্রিয় ছিল কারণ এতে আমার মনের কথাগুলো উল্লেখ করা ছিল ! মুখস্থ বিদ্যা সম্পর্কে আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই -- মুখস্থ বিদ্যা মানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যা গেলানো হয় , তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর না পারুক ! এর ফলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণ শক্তি হীন হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে ! উদাহরণ :: আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন যারা শিশু সন্তানকে ক্রমান্বয়ে গরুর দুধ গেলানোটাই শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার ও বলবৃদ্ধির উপায় মনে করেন ! কিন্তু দুধের উপকারিতা যে ভোক্তার হজম করবার শক্তির ওপর নির্ভর করে তা মা জননীরা বুঝতে নারাজ ! তাদের বিশ্বাস দুধ পেটে গেলেই উপকার হবে ! তা হজম হোক আর না হোক ! আর যদি শিশু দুধ গিলতে আপত্তি করে তাহলে ঐ শিশু বেয়াদব , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ! আমাদের স্কুল - কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থাও ঠিক এরকম , শিক্ষার্থীরা মুখস্থ বিদ্যা হজম করতে পারুক আর না পারুক , কিন্তু শিক্ষক তা গেলাবেই ! তবে মাতা এবং শিক্ষক দুজনের উদ্দেশ্যেই কিন্তু সাধু , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই ! সবাই ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা দিতে ব্যস্ত , পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে শেখার অনেক কিছু আছে তা জেনেও , শিক্ষার্থীদের তা অর্জনে উৎসাহিত করে না , কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষা অর্থ অর্জনে সাহায্য করে না , তাই পাঠ্যবইয়ের বাইরের শিক্ষার গুরুত্ব নেই ! শুধু পাঠ্যবই পড়ে কেবল একের পর এক ক্লাস পাস করে যাওয়াই শিক্ষা না ! আমরা ভাবি দেশে যত ছেলে পাশ হচ্ছে তত শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে ! পাশ করা আর শিক্ষিত হওয়া এক বস্তু নয় , এ সত্য স্বীকার করতে আমরা কুণ্ঠিত হই ! বিঃদ্রঃ মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিকের জিপিএ ফাইভ নিয়ে প্রতিবেদনের সাথে আমার পোস্টের কোনো সম্পর্ক নেই ! http://maguratimes.com/wp-content/uploads/2016/02/12743837_831291133666492_4253143191499283089_n-600x330.jpg

ছবি

বেয়োনেটের খোঁচায় জিয়াই শুরু করেন রাজাকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতপন বিশ্বাসদৈনিক জনকন্ঠ(মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩, ১৭ পৌষ ১৪২০)পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য কোন সরকার আর এই বিচার কার্যক্রম চালাতে পারেনি। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে আবারও যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দেশজুড়ে।স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা নিয়ে নানান মিথ্যাচার করে চলেছে। ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ২৬ হাজারকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। বাকি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ক্ষমার আওতামুক্তরয়ে যায়। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) মেজর জেনারেল(অব) জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেয়। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেন। এর পরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।রাজাকার পুনর্বাসনের প্রথম ধাপে শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। দ্বিতীয় সামরিক ফরমান দিয়েসংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে ধর্মীয় রাজনীতি তথা রাজাকারদের প্রকাশ্য রাজনীতির পথ উন্মুক্তকরেন। ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দল প্রকাশ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ লাভ করে।১৯৭৫ সালের এই দিনে (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সায়েম এক সামরিক ফরমান বলে ‘দালাল আইন, ১৯৭২’ বাতিল করেন। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত সারাদেশের ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বিলুপ্ত করা হয়। একই সামরিক ফরমানে জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই দালাল আইন বাতিলের ফলেট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সহস্রাধিক মামলা বাতিল হয়ে যায় এবং এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রায় ১১ হাজার দালাল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস মুক্তি পেয়ে যায়। এর মধ্যে ২০ মৃত্যুদ-প্রাপ্ত, ৬২ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীও মুক্তি পেয়ে যায় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত রাজাকাররা বীরদর্পে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসে।প্রকৃতপক্ষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতা বহির্ভূত ছিল। ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর সরকারী যে ঘোষণার মাধ্যমে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছিল তার মুখবন্ধে এবং উক্ত ঘোষণার ৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যারা বাংলাদেশের দন্ডবিধি আইন, ১৮৬০ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে দ-বিধি আইন, ১৮৬০ এর অধীন নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তারা এ আদেশ দ্বারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় পড়বেন না। এগুলো হলো- ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো); ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র); ১২৪ক (রাষ্ট্রদোহিতা); ৩০২ (হত্যা); ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা); ৩৬৩ (অপহরণ); ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ); ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা); ৩৭৬ (ধর্ষণ); ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি); ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তির কালে আঘাত); ৩৯৫ (ডাকাতি); ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি); ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি); ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন); ৪৩৬ (বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার) এবং ৪৩৭ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে যে কোন জলযানের ক্ষতি সাধন অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান, পৃষ্ঠপোষকতা বা নেতৃত্ব দেয়া বা প্ররোচিত করা)।সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার অভিযুক্ত দালাল আইন, ১৯৭২ সালে বাতিল হওয়ার পরও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে রয়ে যাওয়া আরেকটি শক্তিশালী আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এ দুর্বল ভাষার ব্যবহার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার বিলম্বের একটি কারণ। আইনটির ৬ ধারায় বলা হয়েছে “দ্য গবর্নমেন্ট মে, বাই নোটিফিকেশন ইন দ্য অফিসিয়াল গেজেট, সেট আপ ওয়ান অর মোর ট্রাইব্যুনালস” অর্থাৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এই আইনের কার্যকারিতা। সরকার ইচ্ছা করলে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে। কিন্তু এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইন শর্তসাপেক্ষে প্রণয়ন করারফলে এর কার্যকারিতা দুর্বল হয়। যদি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়া হতো তা হলে এটি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বাড়ত। আইনটি কার্যকর বা বলবত করতে তারিখ দিয়ে যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন ছিল ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদের আগে তা করা হয়নি।১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকারের সময় প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে দালাল আইন, ১৯৭২ বাতিল করা হয়। এতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও দালাল আইনে আটক প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রেক্ষিতে পূর্বেই বেকসুর খালাসপেলেও সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতার বাইরে থাকা পূর্বোল্লিখিত গুরুতর কয়েকটি অপরাধে অভিযুক্ত ও আটকঅবশিষ্ট প্রায় ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদেরও জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে। সে সময় এদের মধ্যে যেসব অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনতার পর পঁচাত্তর পরবর্তী কোন কোন সরকারের শাসনকালে রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হয়ে গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়েছে, যারা বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডই চায়নি।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ‘বাংলাদেশ দালাল আইন, ১৯৭২” প্রণয়ন করে এবং যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে। ১৯৭৩ সালে ৩০ নবেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পূর্বে ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দালাল আইনে অভিযুক্ত ও আটক মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অপরাধীর মধ্যে ২ হাজার ৮৪৮ জনের মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর মধ্যে দণ্ড প্রাপ্তহয়েছিল ৭৫২ অপরাধী। বাকি ২ হাজার ৯৬ ব্যক্তি বেকসুর খালাস পায়। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ২০ রাজাকারকে। পরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এবং দালালির দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কিংবা তাদের বিচার বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি ১৯৭৫ সালে সরকার পরিবর্তনের ফলে ধামাচাপা পড়ে যায়। ২০০৯ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারের আর কোন ঘটনা বাংলাদেশে ইতোপূর্বে ঘটেন